আওরঙজীব এ সংবাদে সম্ভবত অপমানিত বোধ করেন। তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ বাঞ্ছায় শায়েস্তা খানের নেতৃত্বে এক বিরাট বাহিনী প্রেরণ করেন। ১৬৬৬ সনে ২৭ শে জানুয়ারি শায়েস্তা খানের পুত্র বুজর্গ উমেদ খান চট্টগ্রাম দখল করেন। অবশ্য মুঘল বাহিনী এগিয়ে যেয়ে রামু অবধি গোটা চট্টগ্রামই অধিকার করেছিল। কিন্তু বর্ষাকাল উপস্থিত হওয়ায় জল-কাদার জীবনে অনভ্যস্ত মুঘল বাহিনী চট্টগ্রামে ফিরে আসে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে আবার আরাকান- অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এ অধিকার ১৭৫৬ সাল অবধি বহাল থাকে। আবদুল করিম খোন্দকার রচিত দুল্লা মজলিসে রামুর আরাকানী শাসকের প্রশস্তি আছে। সহস্রেক সাথে শতেক সাত মঘীসনে তথা (১১০৭+ ৬৩৮) ১৭৪৫ খ্রীস্টাব্দে এই গ্রন্থ রচিত। তখনো মাতামুহুরী নদীর দক্ষিণতীর তথা আধুনিক কক্সবাজার মহকুমা অঞ্চল আরাকান অধিকারে ছিল। সম্ভবত মুঘল সীমান্ত সেনানী আধু খাঁ-ই চট্টগ্রামেরদক্ষিণ প্রান্তে মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত করেন।
ড. ঈসা খান :কিংবদন্তি অনুসারে ভূঁইয়া-শ্রেষ্ঠ ঈসা খান চট্টগ্রামে কিছুকাল আত্মগোপন করে ছিলেন। চট্টগ্রামে তার বাসস্থান ঈসাপুর নামে খ্যাত হয়। এটি এখনো একটি সমৃদ্ধ গ্রাম এবং ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত। ঈসাপুরের পাশেই আছে কবি শা বারিদ খানের পূর্বপুরুষ নানুরাজা মহল্লিকের নামের নানুপুর। ঈসা খান যে চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন এবং সদর জাহাকে পীর কিংবা বন্ধু করেছিলেন, তা মুক্তল হোসেন কাব্যেও রয়েছে। এমনও অনুমতি হয় যে মুঘল সেনাপতি শাহবাজ কামু কর্তৃক বিতাড়িত হয়ে ঈসা খান (১৫৮৩) ত্রিপুরা রাজ্যান্তৰ্গত উত্তর চট্টগ্রামে বসতি-বিরল এক গ্রামে বাস করতে থাকেন।কিংবদন্তি অনুসারে ১৫২৫ সালে যখন নুসরৎ শাহ উত্তর চট্টগ্রাম দখল করেন, তখন এই অঞ্চলের আরাকানী মগেরা আরাকান অধিকারে চলে যায়। একে মগ ধাওনী তথা মগ-ধাওয়া বলে উল্লেখ করা হয়। ফলে উক্ত স্থানটি জনবিরল হয়েছিল। রাজামালা মতে অমর মাণিক্যের সৈনাপত্য করেছেন ঈসা খানই। ঈসা খান চট্টগ্রামে সংগৃহীত সৈন্য দিয়েই সোনারগাঁয়ে মুঘলদের এবং কোচবিহারের রাজাকে পরাজিত করেন।
চট্টগ্রামে পর্তুগীজদের ভূমিকা
১৪৯৮ সাল পৃথিবীর ইতিহাসে একটি স্মরণীয় বছর। এই বছরেই ভাস্কো-ডা-গামা ভারতের উপকূলের সন্ধান পান। তখন থেকেই ভারতের সম্পদে রিক্ত আর অন্তরে ঋদ্ধ হওয়ার পালা শুরু। ১৪৯২ সনে স্পেন থেকে মুসলিমরা বিতাড়িত হয়, আর সঙ্গে সঙ্গেই পর্তুগীজরা সুদূরের ডাকে মুক্ত-পক্ষ বিহঙ্গের মতো দিকবিদিকে ছুটে চলল চোখে তাদের আনন্দিত দিনের স্বপ্ন, বুকে তাদের হিম্মত, মাটি তাদের পায়ের নিচে, সমুদ্র তাদের দাঁড়ের আঘাতে বিক্ষত, বাতাস তাদের পালে ধরা, আকাশ তাদের মাথার ছাতা। আরব-ইরানের নামনিশানা রাখবে না তারা নীলসমুদ্রে। কেবল তাদের জাহাজই পাল তুলবে সাতসাগরে। হাঁসের মতো তারাই হবে জলচর। এ উদ্দেশ্য সাধনে তারা দৃঢ়পণ। তাদের নিয়ন্তা হবে লোভ, পাথেয় হবে বাহুবল ও মনের জোর। ন্যায়-নিয়ম-নীতির পরওয়া তারা করবে না। তাই
On reaching portugal the next spring (1499) da Gama advised the king that provided sufficiently strong force were sent, the Moslems could be driven off the sea and the Trade divcerted from the Persian Gulf to the cape route. Emanuel accepted this advice and in the following years put it into operation… built fortresses from Africa to Malacca …
পর্তুগীজরা গোড়া থেকেই এ লক্ষ্যে কাজ করেছে এবং প্রায় আড়াইশ বছর ধরে সর্বপ্রকার অপকর্মে লিপ্ত ছিল। বাঙালির কাছে পর্তুগীজ তথা হার্মাদ ( Armadan) নামটি ত্রাস ও বীভৎসতার প্রতীক। এমন পুরুষানুক্রমিক ভয়ঙ্কর রাক্ষুসে আচরণের নজির ইতিহাসে বিরল। আরো আশ্চর্যের কথা, এর মধ্যেও নাকি মহৎ উদ্দেশ্য ছিল- There was religious zeal to enslave people and convert them to christianity. Their, abduction, ruin, enslavement, degradation were spiritually an extra-ordinary piece of good fortune for them .. .. Manriqe gives statistics : 3400 persons were kidnapped annually and brought to Dianga. Of these he was able to baptize some 2000 a year. He goes on to say these that it was easier to convince these wretched beings than the residents in the Chittagong Province among whom the annual average of conversion was not more than 400. Their (kidnapped persons) misery and despair did not shock Manriqe because his mind was fixed on saving their soul by baptizing.
এমনিভাবে পর্তুগীজদের কেউ পার্থিব, কেউ অপার্থিব সম্পদ লাভের লোভে পড়ে সহজ স্বাভাবিক মনুষ্যত্ব হারিয়ে আড়াইশ বছর ধরে মানুষের দেহ-মনের উপর সীমাহীন পীড়ন চালিয়েছে।
গামা ভারতের উপকূলেই নৌকা ভিড়িয়েছিলেন বটে, কিন্তু খবর নিয়ে গিয়েছিলেন তিন সাগরের। বাঙলা সম্বন্ধে (১৪৯৯) রাজার কাছে তার প্রতিবেদন ছিল এরূপ :
Bengal has moorish king and mixed population of Christians and moors, Its army may be about 24000 strong, 10000 being cavlry and the rest infantry with 400 war elephants. The country could export quantities of wheat and very valuable cotton goods, clothes which sell on the spot for 225-6d fetch 90 s. in calicut. It abounds in silver.