When Bengal was annexed to the Mughal Empire. Chatgaon was entered in the papers of Bengal as one of the defaulting and unsettled districts. When the Mutasaddis did not really wish to pay any man whose salary was due, they gave him an assignment on the revenue of Chatgaon.
দক্ষিণ চট্টগ্রামের শাসনকেন্দ্র ছিল রামু। ম্যানরিক ও রালফ ফিচ রামুকে শাসনকেন্দ্র দেখেছেন। রামকোটে তার ধ্বংসাবশেষ আছে।
রাজোয়াঙে বর্ণিত যে রনবী দ্বীপে আরব জাহাজ ভেঙে ছিল, তাও সম্ভবত রামু। সম্ভবত উত্তর চট্টগ্রামের অধিকার নিয়ে ত্রিপুরা ও আরাকানে দীর্ঘস্থায়ী বিবাদ চলছিল। এই যুদ্ধে সৈনাপত্য পান ত্রিপুরার রাজকুমার রাজ্যধর। ইনি রামু অবধি অগ্রসর হন। উঁকিয়ার শাসনকর্তা আদমের এলাকার সীমায় আরাকানীরা তাকে বাধা দিল। রসদ যোগাড়ে অসমর্থ হয়ে রাজ্যধর চট্টগ্রামে ফিরে আসতে বাধ্য হন। আরাকান পক্ষ উঁকিয়ার সামন্তের মধ্যস্থতায় সন্ধির প্রস্তাব পাঠালে অমর মাণিক্য তা গ্রহণ করেন। রাজ্যধর ত্রিপুরায় চলে গেলে সন্ধিভঙ্গ করে আরাকানীরা চট্টগ্রাম দখল করে। অমর মাণিক্য আবার রাজ্যধরকে পাঠালেন। আরাকানরাজ চালাকি করে গজদন্ত নির্মিত মুকুট উপহার দিয়ে সন্ধির জন্যে দূত প্রেরণ করলেন। রাজ্যধরের সঙ্গে আরো দুইজন রাজপুত্র এসেছিলেন। মুকুটের দাবী নিয়ে তিনজনের মধ্যে বিবাদ শুরু হল। আর আরাকানরাজ এ সুযোগে তাদের চট্টগ্রাম থেকে বিতাড়িত করলেন। সেনাপতি রাজ্যধর শামুক ফুটে পঙ্গু হলেন। অপর রাজপুত্র যুঝামাণিক্য নিজের মত্ত হাতীর আক্রমণে প্রাণ হারালেন।
এ কাহিনীতে সত্য আছে কিনা জানিনে। তবে ১৫৮৫ সনে রালফ ফিচ চট্টগ্রামকে আরাকান অধিকারে দেখলেও ত্রিপুরার সঙ্গে আরাকানের স্থায়ী সংগ্রামের কথাও শুনেছিলেন। অবশ্য রাজমালা মতে অমর মাণিক্য (সম্ভবত ১৫৮৫ সালে) আরাকানরাজ থেকে চট্টগ্রাম ছিনিয়ে নেন। আবার আরাকানী সূত্রে জানা যায় ১৫৮৬ সালে রাজা মঙ ফাল ত্রিপুরারাজ থেকে চট্টগ্রাম জয় করে নেন। আইন-ই-আকবরীর সমাপ্তিকাল ১৫৯৮ সন। এই গ্রন্থে বলা হয়েছে : To the south-east of Bengal is a considerable Tract called Arakan which possesses the port of Chittagong। কাজেই ১৫৯৮ সাল অবধি অন্তত চট্টগ্রাম আরাকান অধিকারে যে ছিল, তা নিশ্চিত।
জ. আগেই বলেছি রাস্তিখানের সন্তান মীনাখান ও তার বংশধরগণ অন্তত ১৬৬৫ সাল অবধি চট্টগ্রামের শাসনকার্যে উচ্চপদে নিযুক্ত ছিলেন। মীনা খার পৌত্র হামজা খান (মসনদ-ই-আলা– মছলন্দ) গিয়াসুদ্দীন মাহমুদ শাহর আমলে (১৫৩৮ খ্রী. অবধি) চট্টগ্রামের শাসনকর্তা ছিলেন। খুদাবখশ খান নামে অপর ব্যক্তিও তার সহকারী বা তার সমকক্ষ অপর পদে নিযুক্ত ছিলেন। এই হামজা খানকে পর্তুগীজরা আমীরজা খান বলে উল্লেখ করেছে। গিয়াসুদ্দীন মাহমুদ শাহর সময়ে এ দুইজনের মধ্যে সদভাব ছিল না একজন ছিলেন পর্তুগীজদের বশে, অপরজন পর্তুগীজ-বিদ্বেষী। দুইজনের দ্বন্দ্বের সুযোগে শেরশাহ প্রেরিত নোগাজিল ( নিয়াম; খিজিরঃ) সহজেই চট্টগ্রাম দখল করে নিলেন। এ সময় পর্তুগীজ কেপ্টেন সেমপাউ মনস্থির করে কিছুই করতে পারলেন না, ফলে চট্টগ্রাম স্বাধিকারে পাওয়ার সুযোগ হারালেন : Castanheda তাই বলেছেন …through the folly and indiscretion of Sampayo, the king of Portugal lost Chittagong which could easily have been taken possession of considering that Sher Shah was busily engaged on the other side of bengal.
হামজা খান সম্বন্ধে মঞ্জুল হোসেন গ্রন্থে বলা হয়েছে যে তিনি ত্রিপুরা জয় করেন এবং তিনি পাঠান বিজয়ীও। এতে কিছু সত্য নিহিত রয়েছে বলে মনে করি। হামজা খান শের শাহর সেনাপতি চট্টগ্রাম বিজেতা নোগাজিলের ( নিযাম খিজির?) সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন, তাই বোধ হয় গৌরব-গর্বী উত্তরপুরুষ মুহম্মদ খানের বর্ণনায় লীলায় পাঠানগণ জিনি পাচ্ছি। আর ১৫৫৩-৫৫ সালে বিজয় মাণিক্যকে বিতাড়িত করেন বলেই কবি করিয়া বিষম রণ জিনিয়া ত্রিপুরাগণ লিখেছেন। এতে বোঝা যায় নোগা- জিলের বিজয়ের পরেও তিনি স্বপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। হামজা খানের পর তাঁর পুত্র নসরত খানও পিতৃপদ প্রাপ্ত হন। আরাকানী সূত্রে জানা যায়, নসরত খান গৌড়ের পাঠান সুলতানের তথা শামসুদ্দীন বাহাদুর শাহর (ওফেঁ খিজির খান ১৫৫৬-৬০) আমল থেকে সোলায়মান কররানীর (১৫৬৫-৭২) আমলের মাঝামাঝি কাল অবধি (১৫৬৯-৭০) চট্টগ্রামের শাসক ছিলেন। কিন্তু নসরত খানের সময় চট্টগ্রাম ত্রিপুরার অধিকারে ছিল–গৌড়ের নয়। ত্রিপুরারাজের উজির নসরত খান আরাকানরাজ সউলাহর (১৫৬৩-৬৪) কাছে আত্মরক্ষামূলক সাময়িক বশ্যতা স্বীকার করে সউলাহকে ভেট পাঠিয়ে তুষ্ট রাখেন। কিন্তু সউলাহর মৃত্যুর পর তার পুত্র মঙসিইটা বা মঙসিতা (১৫৬৪-৭১) সম্ভবত নসরত খানের আনুগত্য দাবী করেন। তখন দেয়াঙ্গ ও চট্টগ্রামের পর্তুগীজেরা ছিল আরাকানরাজের বশে। আরাকানরাজের ইঙ্গিতেই নসরত খানের সঙ্গে পর্তুগীজদের বিবাদ বাধে এবং পর্তুগীজদের হাতেই ১৫৬৯-৭০ সালে তিনি প্রাণ হারান। উদয় মাণিক্যের (১৫৮৫-৯৬) সময়ে ঈসা খান সম্ভবত ত্রিপুরা রাজ্যের সৈনাপত্য গ্রহণ করেন এবং চট্টগ্রামে কিছুকাল অবস্থান করে সৈন্য সংগ্রহ করতে থাকেন। তাঁর বাসভূমি আজো ঈসাপুর নামে পরিচিত। আগেই উল্লেখ করেছি ১৫৮৫-৮৬ সনে আরাকানের ও ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরার রাজকুমার রাজ্যধরের সৈনাপত্যে কয়েকটি যুদ্ধ ঘটে। রামু-চকরিয়ার আরাকানী সামন্ত আদম আরাকানরাজের বিরাগভাজন হয়ে আশ্রয় নিলেন অমর মাণিক্যের। আরাকানরাজ আদমকে ফিরিয়ে দেবার দাবী জানালে অমর মাণিক্য আশ্রিতকে সমর্পণ করতে অস্বীকার করেন। এতে তৃতীয়বার ত্রিপুরা বাহিনী চট্টগ্রামে প্রেরিত হয়। এবার ত্রিপুরা বাহিনীতে পাঠান সৈন্যও (সম্ভবত ঈসা খানের নেতৃত্বে) নিযুক্ত ছিল, তারা দুই লক্ষ আরাকানী সৈন্যের বাহিনী দেখে ভয় পেয়ে গেল এবং বিশ্বাসভঙ্গ করে ত্রিপুরা সৈন্যদের সম্পদাদি লুট করে পালিয়ে যায়। অমর মাণিক্য এ আকস্মিক বিপর্যয়ে বিভ্রান্ত হয়ে ঈসাপুর থেকে ধুমঘাট হয়ে পালিয়ে যান এবং অপমানে আত্মহত্যা করেন (১৫৮৬)। মঘেরা রাজধানী উদয়পুর লুট করে সেখানে পনরো দিন অবস্থান করে। তার পর আরাকানরাজ মঙ ফালঙ (১৫৭১-৯৩) যুগদিয়া, আলমদিয়া প্রভৃতি জয় করে ঢাকাও দখল করেন। এভাবে ঢাকা-ত্রিপুরা ও নোয়াখালীর কতেকাংশ ও চট্টগ্রাম অধিকৃত হওয়ায় আরাকানরাজের গৌরব বৃদ্ধি পেল। এ যুদ্ধে আরাকানের চট্টগ্রামস্থ উজির (শাসক) নসরত খান-পুত্র জালাল খান গোপনে ত্রিপুরা রাজের সহায়ক ছিলেন। অমর মাণিক্যের পরাজয়ে ও আত্মহত্যার সংবাদে তিনি নাকি ভয়েই প্রাণ হারান (১৫৮৬)। ১৫৮৫ সালে মুঘল সেনাপতি শাহবাজ কামুও চট্টগ্রাম জয়ের চেষ্টা করেন।