মিলন: আপনি বললেন যে, বেশ কয়েকবার মৃতু্য খুব কাছ থেকে দেখেছেন৷ যখন আপনার বাইপাস সার্জারিটা হলো, যখন আপনাকে এনেসথেশিয়া দেয়া হচ্ছে, আপনার সেন্সটা অন্য জগতে চলে যাচ্ছে৷ এই যে ঘুমে তলিয়ে যাবার সময়টা, যতৰণ পর্যনত্ম আপনার চেতনা ছিল, সেই মুহূর্তে আপনি বিশেষ কিছু কি ভেবেছেন? আপনার মনে পড়ে?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি তো মুসলমানের ছেলে৷ ধর্ম-বিশ্বাসটা জন্মের পর থেকেই খুব শক্তভাবে মাথায় ঢোকানো৷ সেই মুহূর্তে আমি যে ক’টা সুরা জানতাম, বারবার সেগুলোই মনে মনে পড়ার চেষ্টা করেছি এবং সুরা পাঠের সঙ্গে সঙ্গে বেঁচে যাবার প্রার্থনা করছিলাম৷ পুত্র-কন্যা-স্ত্রী-ভাই-বোন এদের কারোর কথাই মনে হয়নি৷
মিলন: আচ্ছা হুমায়ূন ভাই, বাংলাদেশ নিয়ে আপনি কী ধরনের স্বপ্ন দেখেন? এই দেশের স্বাধীনতার জন্য একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, এই মুক্তিযুদ্ধে আপনার বাবা প্রাণ দিয়েছিলেন৷ বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এই দেশের আজকের প্রেৰাপটে আপনি অনেক বড় লেখক৷ এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি বাংলাদেশ নিয়ে কী স্বপ্ন দেখছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি আমার নিজের দেশ নিয়ে অসম্ভব রকম আশাবাদী৷ আমাকে যদি একলৰবার জন্মাবার সুযোগ দেয়া হয় আমি একলৰবার এই দেশেই জন্মাতে চাইব৷ এই দেশের বৃষ্টিতে ভিজতে চাইব৷ এই দেশের বাঁশবাগানে জোছনা দেখতে চাইব৷
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, নভেম্বর ০৭, ২০০৮