হালদারমশাই স্যালুট ঠুকে বললেন, ব্লু মুন ক্যান স্যার? দা মুন ইজ গোল্ডেন!
অরিজিৎ চোখ কটমটিয়ে বললেন, সাইলেন্স ইজ গোল্ডেন! হালদারমশাই ভড়কে গিয়ে কর্নেলের সঙ্গ ধরলেন। চাপাস্বরে বললেন, ডি সি ডি ডি সায়েব আমারে লাইক করেন না ক্যান, বুঝি না। ব্লু মুন ক্যান কর্নেলস্যার?
কর্নেল হাসলেন। সরকারি আমলাতন্ত্রে ভাষা বোঝার সাধ্য আমারও নেই হালদারমশাই! ওসব নাকি কোড ল্যাংগোয়েজ ওঁদের শাস্ত্রে। ছেড়ে দিন। চলুন। আমার ঘরে গিয়ে ঘন দুধের কফি খাবেন। এস সুব্রত!
.
কর্নেলের ড্রইংরুমে পপ মিউজিক বাজছিল। থামল। ষষ্ঠী চুপিচুপি কর্নেলকে বলে গেল, এও এক মেম। সে কী নাচ, বাবামশাই! আবার, আমাকেও ডেকে বলে, এস ষষ্ঠীদা, নাচি! খি খি খি……
কর্নেল বললেন, কলি। তোমার জাস্ট আ ফ্রেন্ড-কে আস্ত ফিরিয়ে দিলুম। দেখ, অক্ষত আছে নাকি।
কথাকলি সলজ্জ হাসল। বলল, ধরা পড়েছে?
সুব্রত বলল, হ্যাঁ, তবে এক সেকেন্ড দেরি হলে ভোজালি ঝাড়ত। ওঃ! এখনও বুক ঢিপঢিপ করছে। আলো না জ্বালা অব্দি আমি চিনতেই পারিনি লোকটা যুধিষ্ঠির। কর্নেলের কথামতো আমি ড্যানসায়েবের নামে চিঠি লিখে রেখে এসেছিলুম রয়সায়েবের কাছে। কিন্তু আশ্চর্য! যুধিষ্ঠির…..
কর্নেল বললেন, কোনও লোকের চেহারায় কিছু থাকে, দেখেই মনে খটকা বাধে। তবে আমার মূল পয়েন্ট ছিল, খুনী এমন কেউ, যে টিনির সুপরিচিত। টিনি খুব কাছের লোকের সাহায্য চাইবে পাথরটা হাতাতে। পাথরটা খুঁড়ে কবর থেকে ছাড়ানো ওর কর্ম নয়। এমন লোক দরকার, যে নিপুণভাবে আস্ত ফলক ওপড়াতে পারবে। অর্থাৎ সে হাতুড়ি চালাতে জানে। সেকেন্ড পয়েন্ট, টাকার বখরা কম দিতে হলেও টিনির ঘনিষ্ঠ লোক দরকার। এই ক্ষেত্রে টিনির অতি ঘনিষ্ঠ ছিল দুজন। সুব্রত আর যুধিষ্ঠির। সুব্রতকে খুনী সাব্যস্ত করা যায় না। তা হলে সে টিনির জীবনচরিত লিখে ক্লু দিত না। বাকি রইল যুধিষ্ঠির। যুধিষ্ঠির রোজ তাকে বারে পৌঁছে দিত এবং বাড়ি ফেরত আনত। স্বভাবত সুব্রত টিনিকে নিষেধ করায় সে যুধিষ্ঠিরকে বেছে নিতে বাধ্য। তার বাবার বন্ধু যুধিষ্ঠির। তাদের বাড়িতেই থাকে। কিন্তু টাকার লোভে বড় লোভ। মানুষ ক্রমশ টাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। টাকা টাকা টাকা! গোমেশও ফলকটা বেচে টাকা পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর দুর্ভাগ্য! যাই হোক, এবার কফি! ষষ্ঠী!
হালদারমশাই আড়চোখে সুব্রত এবং কথাকলিকে দেখতে দেখতে ফাঁচ করে হাসলেন। কর্নেলস্যার! আমি ঘটকালি করুম! মাইয়াডা আর পোলাডারে যা মানায়!
কথাকলি ফুঁসে উঠল, ডোন্ট টক লাইক দ্যাট! উই আর জাস্ট ফ্রেন্ডস।
হালদারমশাই দ্রুত নস্যি নিয়ে বললেন, হঃ!
কর্নেল বিশাল অট্টহাসি হাসলেন। তারপর আবার হাঁকলেন, ষষ্ঠী! কফি!…