সারা পৃথিবীতে ঈশ্বর বিশ্বাসীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁদের বলি আস্থা রাখুন ঈশ্বরের প্রতি। মৃত্যুদণ্ড দিলে তিনিই দেবেন, আপনি নন। আর যাই করুন, কারোকে হত্যা করবেন না। ঈশ্বর কারোকে হত্যা করার অধিকার দেননি, এমন কোনো দলিলও নেই মানুষের হাতে। সুস্থ সমাজের জন্য আপনি বড়োজোর সেই সংশ্লিষ্ট মানুষটিকে সংশোধনের সবরকমের ব্যবস্থা করতে পারেন। আপনার উপযুক্ত করে পুনর্বাসনও দিতে পারেন। যেদিন মানুষ একটা জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে সেদিন মানুষ অবশ্যই জীবন নেবে। একজন অসুস্থ মানুষ হঠকারিতা করে ফেলেছে বলে অন্য একজন সুস্থ বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সেই একই হঠকারিতা করবে?
মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে John Bright বলেছেন– “Capital punishment, while pretending to support reverence for human life, does in fact, tend to destroy.” Samuel Romilly বলেছেন “Capital punishments have an inevitable tendency to produce cruelty in people.” Shakespeare বলেছেন –“When punishment exceeds its bounds, the offender’s Scourage is weighed, but never the offence.” ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট বলেছেন– “Deaths caused by an accused should not necessarily end in the end of the accused. Destruction of an individual by the king is not his virtuous act.”
পরিশেষে ইতালির ২৬ বর্ষীয় আইনজীবী মাকুইস সিজার বেক্যেরিয়ার লেখা ‘of Crime and Punishment’ গ্রন্থ থেকে তাঁর বক্তব্য দিয়ে শেষ করি– যেহেতু মানুষ নিজেকে সৃষ্টি করে না, সেহেতু মানুষের কোনো অধিকার নেই কোনো মানুষের জীবন ধ্বংস করার। উপরন্তু কোনো ব্যক্তি তৃতীয় ব্যক্তি (রাষ্ট্র) কোনো ক্ষমতা/অধিকার দেয়নি দোষীকে হত্যা করার। তাঁর মতে সাধারণ সময়ে শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ এই শাস্তির কোনো প্রতিরোধক প্রভাব নেই সমাজে। প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দর্শকদের মনে শুধুমাত্র ক্ষণিকের ছাপ ফেলে, তা স্থায়ী ছাপ ফেলতে পারে না। তাঁর ভাষায় –“The death penalty becomes a spectacle and for some of these object of compassion mixed with abhorrence both of these sentiments dominate the minds of the spectators more than the salutory terror which the law wants to inspire.”
———–
সাহায্যকারী তথ্যসূত্র :
(১) রাজা এবং রাষ্ট্রের ধর্ম: দণ্ডনীতির উৎপত্তির গল্প— অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন, (
২) প্রাণদণ্ড— ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেশ
(৩) মনুসংহিতা (সপ্তম অধ্যায়),
(৪) সেতু– ১৫ জুলাই, ১৯৯৯,
(৫) মানবাধিকার ও সিক্রেট পুলিশ –প্রদীপচন্দ্র বসু,
(৬) লাঞ্ছিত মানবাত্মা– সৌমেন নাগ,
(৭) মাসিক বাঙলাদেশ– মে ২০০৩,
(৮) Wikipedia,
(৯) WikiLeaks,
(১০) অর্থশাস্ত্রম্ –কৌটিল্য,
(১১) দেশ –চিঠিপত্র –৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৩,
(১২) এবেলা –৮ আগস্ট, ২০১৫।
(১৩) of Crime and Punishment– Marquis Cesare Beccaria
(১৪) মৃত্যুদণ্ড ইতিহাস নৈতিকতা বিতর্ক
(সমাপ্ত)