হ্যাঁ, উৎসাহে উজ্জ্বল হয়ে উঠল সুকান্ত, মানুষের সে আবাস স্থানে নয়, কি বলেন—
হ্যাঁ, মনে।
লাফিয়ে উঠল সুকান্ত। তার মানেই হৃদয়ে। তার মানেই স্থির হয়ে তাকাল লিটম্যানের দিকে। বললে, ঠিক আছে। চোখের ইঙ্গিত করলে।
লিফ্ট উঠতে শুরু করল।
ব্যস্ত হয়ে কাকলি বললে, চট করে আপনার ঠিকানাটা বলুন এবার।
আমার ঠিকানা? লিফ্ট কি বাড়ি ছাড়িয়ে শূন্যে উঠে যাচ্ছে নাকি? এমনি হতচেতন চেহারা করল সুকান্ত।
আপনার ঠিকানা না পেলে আমার ঠিকানা আপনাকে জানাব কি করে? কি, বলছেন না কেন? খুব কঠিন? মনে রাখতে পারব না? ঠিক আঁচল বেঠিক করে আবার ঠিক করল কাকলি।
না, একটুও কঠিন নয়, খুব সোজা। দু নম্বর কাঁটালতলা লেনা?
লিফট থামল তেতলায়। এক দঙ্গল লোক দাঁড়িয়ে আছে, সবাই হৈ-হৈ করে উঠল।
যান্ত্রিক গোলমাল। কিছু বলবার নেই। স্বয়ং লিফটম্যানই তার প্রবক্তা। আর এ দুজনকে যে একসঙ্গে দেখছ এও যান্ত্রিক গোলযোগ ছাড়া আর কিছু নয়।
দুজন বেরিয়ে এসে দুদিকে,পালাল। একটা দুর্ঘটনার বেশি কিছু নয় এমনি ভাব দেখিয়ে একসঙ্গে হাঁটল কয়েক পা। যা দৈবের ব্যাপার, অপ্রতিকার্য, তার সম্পর্কে অভিযোগ করে লাভ নেই।
ফাঁকায় এসে, চলতে চলতে ব্যান কত বড় হয়ে গিয়েছে সেটা লক্ষ্য করে গলার স্বর চড়া করল কাকলি। বললে, অমন বিচ্ছিরি গলির নাম এখনো আছে নাকি? আপনাদের অঞ্চলে কোনো গ্রেট ম্যান হয় নি?
গ্রেট ম্যান মানে?
কোনো মন্ত্রী-টন্ত্রী? নিদেন কোনো কাউন্সিলর—
গলিটা আমার জন্যে অপেক্ষা করছে। উপর-ঠোঁটের উপর দুটো আঙুল বুলোল সুকান্ত।
আর আপনি অপেক্ষা করাবার জিনিস পেলেন না? একটা হতচ্ছাড়া গলি–
গলিটা বিচ্ছিরি হতে পারে, কিন্তু যাই বলুন, বাড়ির নম্বরটা ভালো।
নম্বরটা?
নম্বরটা দুই। ভুলে গেলেন এরই মধ্যে? খুব ভালো নম্বর। কিছুতেই ভোলা যায় না। দুই। দ্বৈত, দুই। এক আর দুই। সুকান্ত আঙুল দিয়ে নিজেকে দেখিয়ে পরে লক্ষ্য করল কাকলিকে : আমি আর আপনি।
কি বুদ্ধি! শব্দ করে হেসে উঠল কাকলি, দুইয়ে বুঝি আমি আর আপনি হয়? দুইয়ে আমি আর তুমি।
ক্লাসে ঢুকে পড়ল কাকলি।