“আমি কি এখন যেতে পারি?”
“অবশ্যই। পুলিশে সত্যিই খবর দেওয়া হয়েছে কি না তা অবশ্য আমি জানি না। তুমি বরং আর বেশি দেরি না করে রওনা হয়ে পড়ো। এই নাও তোমার পিস্তল।”
“ধন্যবাদ।”
“পিস্তলটা দেখে মনে হচ্ছে খুব দামি।”
“হ্যাঁ। পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা পিস্তলগুলোর একটা।”
“তুমি কি খুব বিপজ্জনক জীবনযাপন করো?”
“আমার কাজ কিছুটা হ্যাঁজার্ডাস। তা হলে আমি…!”
“এসো গিয়ে।” বিজয়বাবু অগ্নিকে সঙ্গে নিয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। উদ্বিগ্ন মুখে সবাই বাইরে অপেক্ষা করছে দেখে বললেন, “একে তোমরা ছেড়ে দাও। এ কোনও বদ মতলবে এ বাড়িতে আসেনি।”
অগ্নিকে ফটক পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন বিজয়বাবু। অগ্নি চলে যাওয়ার পর তাঁর কপালে জাকুটি দেখা দিল।
বীরেনবাবু বললেন, “লোকটাকে ছেড়ে দিয়ে ভাল কাজ করলে না দাদা।”
“ছেড়ে দিয়েছি কে বলল?”
“এই যে গটগট করে হেঁটে চলে গেল?”
“ও আবার আসবে। এবার অন্য মূর্তি ধরে। ওর সন্দেহ যায়নি।”
“কিন্তু পুলিশে তো দেওয়া যেত!”
“কোন আইনে? অপরাধ তো কিছু করেনি। তুই ওকে বাড়িতে ঢুকতে দিয়েছিস, সুতরাং ট্রেসপাসার নয়, চুরি-ডাকাতি করেনি, কারও উপর হামলাও করেনি। বরং নিজেই মারধর খেয়েছে।”
“কিন্তু বেআইনি পিস্তলটা?”
“আমার যতদূর ধারণা, পিস্তলের লাইসেন্স ওর আছে। তা তুই-ই বা ওকে রাস্তা থেকে ডেকে ঘরে আনতে গেলি কেন?”
বীরেনবাবু বললেন, “সব দোষ ওই বটুর। ও এসে বলল, লোকটা নাকি ওকে ভেকুড়ি দেখিয়েছে।”
বিজয়বাবু ভ্রু কুঁচকে বললেন, “ভেচকুড়ি! সেটা আবার কী?” বীরেনবাবু মাথা নেড়ে বললেন, “আমি জানি না, বটু জানে।”
বটু তাড়াতাড়ি বলল, “ওঃ, ভেকুড়ি বড্ড ভয়ের জিনিস মশাই। চোখ দুটো তাড়াং তাড়াং হয়ে যায়, মুখোনা যেন দুনো ফুলে যায়, আর হাঁ-এর ভিতর দিয়ে যেন আলজিভ অবধি দেখা যায়…! না, সে বলা যায় না।” বিজয়বাবু বললেন, “বাচ্চারা তো ওরকম করেই এ-ওকে ভ্যাঙায়। তাতে ভয় পাওয়ার কী আছে?”