এবার জোর করে চোখ খুলে রাখল বুহের, দ্বিতীয় ড্যাগারটা ঢুকিয়ে দিল লাশের গায়ে। তারপর তৃতীয়টা, এবং চার নম্বরটা…প্রতিটি ফলা ঢুকে যাচ্ছে ডেমিয়েনের শরীরে আর আর্তনাদ করে উঠছে ছেলেটা। এখন আর মানুষের মত শোনাচ্ছে না তার গলা, যেন একটা শেয়াল মরণ আর্তনাদ করে চলেছে।
শেষে একটা ড্যাগার রয়ে গেল। বুহের বাঁটে, যীশুর প্রতিমূর্তির দিকে তাকিয়ে বুকে ক্রুশ আঁকল। মনে পড়ে গেল ওর ধর্মান্তকরণের কথা, এক তরুণ, নামটা মনে নেই, বলেছিল তিন কুড়ি দশের কথা, বুড়ি নার্সের জন্যে হঠাৎ মায়া লাগল তার, আতঙ্ক জাগল মরা মেয়েটার সেই ছবিটার কথা মনে করে, উপলব্ধি করল আসলে সারাটা জীবন সে কাটিয়েছে প্রতারণার শিকার হয়ে।
ড্যাগারটা সর্বশক্তি দিয়ে লাশের পেটে ঢুকিয়ে দিল বুহের। দীর্ঘশ্বাস ফেলল ডেমিয়েন থর্ন, খোলা মুখ দিয়ে শেষবারের মত হিস্ করে বেরিয়ে এল গ্যাস। বুহের স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল লাশের দিকে। দুই সারিতে বেঁধা ড্যাগারগুলো ক্রুশের আকার পেয়েছে। চোখ বুজল সে, হতাশার দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলার শব্দ শুনল, চোখ মেলে দেখল লাশটা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, হাড়গোড়ের মধ্যে পড়ে আছে ড্যাগারগুলো। সিধে হলো বুহের, শেয়ালের খুলি আর চোয়ালের দিকে তাকিয়ে আবার ক্রুশ আঁকল।
ঘুরল বুহের, ধীর পায়ে এগোল দরজার দিকে, বোল্ট খুলল, বেরিয়ে এল। ছেলেটা হাঁটু মুড়ে বসে আছে। জ্বলন্ত চোখে তার দিকে তাকাল বুহের। ছেলেটাকে দেখলে মায়া লাগে। তার সমস্ত শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেছে। মরা মানুষের দৃষ্টিতে বুহেরের দিকে তাকাল সে, তারপর হামাগুড়ি দিয়ে সরে গেল। ছেলেটার পাশে পড়ে আছে কুকুরটা। মৃত।
শীলা গেটের সামনে দাঁড়ানো, রক্তাক্ত হাত দুটোর দিকে তাকিয়ে আছে আতঙ্ক নিয়ে, বারবার রক্ত মোছার চেষ্টা করছে, যেন এইমাত্র দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠেছে।
রুহের শীলার কাছে গেল। নরম গলায় বলল, ‘কাপড় পরো।’
শীলা বুহেরের দিকে তাকাল, যেন চিনতে পারছে না। তারপর জামা দিয়ে বুক ঢাকল।
‘কাজ শেষ,’ বলল বুহের।
এক সাথে দু’জনে পা বাড়াল বাড়ির উদ্দেশে। আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেছে, ঝিলমিল করছে তারার আলোয়। কেয়ামতের দিন শেষ, রক্ষা পেয়েছে পৃথিবী।
***