হইয়েৎসুঁন হাসতে হাসতে বলল, কী, শুনলে তাদের মনের কথা?
হুঁ।
জাহাজের খালাসি হবার পরিকল্পনা এখনো আছে?
জ্বি না।
ভাল। খুব ভাল। তা বাবলু সাহেব, আমার তো এখন যেতে হয়।
আরেকটু বসুন।
না, আর বসা যাচ্ছে না। তোমার বাবা আর তোমার স্যার এদিকেই আসছেন। আমাকে দেখলে ব্যাপারটা ভাল হবে না। যাই তাহলে, কেমন?
তার কথা শেষ হবার আগেই বাবাকে এবং ধীরেন স্যারকে দেখা গেল। দপ্তরি আনিস মিয়া একটি হারিকেন হাতে আগে আগে আসছে। বাবলু ভিন গ্রহের লোকটিকে আর দেখতে পেল না।
বাবা এসেই প্রচণ্ড একটা চড় বসালেন। রাগী গলায় বললেন, এই বয়সে বদরামি শিখেছিস। বাড়ি না গিয়ে গাছের নিচে বসে ধ্যান করা হচ্ছে। তোর পিঠের ছাল তুলব আজকে।
ধীরেন স্যার থমথমে স্বরে বললেন, খারাপ পরীক্ষা হয়েছে—কোথায় তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে বই নিয়ে বসবি তা না, সাপখোপের আড়ার মধ্যে এসে বসা। আগামীকাল তুই সারা পিরিয়ড আমার ক্লাসে নিলডাউন হয়ে থাকবি। গবু কি আর সাধে লিখেছি?
বাবলু এদের কথায় একটুও রাগ করল না। কারণ, এখন সে নিশ্চিত জানে। এসব তাদের মনের কথা নয়। তাছাড়া সে হারিকেনের আলোয় স্পষ্ট দেখল বাবার চোখ ভেজা। কাঁদতে কাঁদতেই তাকে খুঁজছিলেন।