দ্রোনম্ চ ভীস্মম্ চ জয়দ্রথম্ চ
কর্নম্ তথা অন্যান্ অপি যোধবিরান্ ।
যথা হতান্ ত্বম্ জহি মা ব্যাথিষ্ঠাঃ
যুধ্যস্ব জেতাসি রনে সপত্না্ ।।৩৪
অর্থ-ভগবান বললেন – দ্রোন ভীস্ম কর্ন জয়দ্রথ এবং অন্যান্য বীর যোদ্ধাদের আমি নিহত করেছি। তুমি মৃতদেরই বধ কর। তুমি যুদ্ধ কর শত্রুদের নিশ্চয়ই জয় করবে, অতএব যুদ্ধ কর।
সঞ্জয় উবাচ
এতত্ শ্রূত্বা বচনম্ কেশবস্য
কৃতাঞ্জলীঃ বেপমানঃ কিরীটী ।
নমস্কৃত্বা ভুয়ঃ এব আহ কৃষ্ণম্
সগদগদম্ ভীতভীতঃ প্রনম্য ।।৩৫
অর্থ- সঞ্জয় ধৃতরাষ্টকে বললেন -হে রাজন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই বাণী শ্রবন করে অত্যন্ত ভীত হয়ে কম্পিত কলেবরে কৃতাঞ্জলী পুটে প্রনাম করে গদগদভাবে অর্জুন বললেন-
অর্জুন উবাচ
স্থানে হৃষীকেশ তব প্রকীর্ত্যা
জগত্ প্রহৃষ্যতি অনুরজ্যতে চ ।
রক্ষাংসি ভীতানি দিশঃ দ্রবন্তি
সর্বে নমস্যন্তি চ সিদ্ধসঙ্ঘাঃ ।।৩৬
অর্থ-অর্জুন বললেন – হে হৃষীকেশ, তোমার মহিমা কির্তনে জগত্ প্রহৃষ্ট ও তোমার প্রতি অনুরক্ত হচ্ছে। রাক্ষসেরা ভীত হয়ে নানান দিকে পলায়ন করছে এবং সিদ্ধেরা তোমাকে নমস্কার করছে।এই সমস্তই যুক্তিযুক্ত।
কস্মাত্ চ তে ন নমেরন মহাত্মন
গরিয়সে ব্রহ্মণঃ অপি আদিকর্ত্রে
অনন্ত দেবেশ জগন্নিবাস
ত্বম অক্ষরম্ সদসত্ তত্ পরম্ যত্ ।।৩৭
অর্থ-হে মহাত্মন, তুমি ব্রহ্মার গুরু ও আদি কারণ। হে অনন্ত সকলে কেন তোমাকে নমস্কার কওেবেন না ? হে জসন্নিবাস, তুমি সত্ ও অসত্ উভয়ের অতীত তত্ত্ব,এবং সর্ব কারণের পরম কারণ।
ত্বম আদিদেবঃ পুরুষ পুরান্
তম্ অস্য বিশ্বস্য পরম নিধানম্ ।
বেত্তা অসি বেদ্যম চ পরম্ চ ধাম্
ত্বয়া ততম্ বিশ্বম্ অনন্তরুপ ।।৩৮
অর্থ-হে অনন্ত রুপ, তুমি আদিদেব ও অনাদি পুরুষ এবং বিশ্বের পরম আশ্রয়। তুমি সবকিছুর জ্ঞাতা, এবং তুমিই জ্ঞাতব্য। তুমিই গুণাতীত, এবং এই জগত্ তোমার দ্বারা পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে।
বায়ুঃ যমঃ অগ্নিঃ বরুনঃ শশাঙ্কঃ
প্রজাপতিঃ ত্বম্ প্রপিতামহঃ চ ।
নমঃ নমস্তে অস্তু সহস্র কৃতঃ
পুনঃ চ ভূয় অপি নমঃ নমস্তে ।।৩৯
অর্থ-তুমি বায়ু, যম, অগি, চন্দ্র,্ন প্রজাপতি ব্রহ্মা, অতএব তোমাকে আমি
সহস্রবার প্রনাম করি এবং পুনরায় নমস্কার করি।
নমঃ পুরস্তাত্ অত পৃষ্ঠতঃ তে
নমঃ অস্তু তে সর্বতঃ এব সর্ব ।
অনন্ত বীর্য অমিত বিক্রমঃ তমঃ
সর্বম্ সমাপ্নোষি ততঃ অসি সর্বঃ ।।৪০
অর্থ-হে সর্বাত্মা,তোমাকে সম্মুখে নমস্কার করছি, তোমাকে পশ্চাতে নমস্কার করছি
তোমাকে সবদিক থেকে নমস্কার করছি।হে অনন্ত বীর্য তুমি অসিম বিক্রমশালী। তুমি সমগ্র জগতে ব্যাপ্ত অতএব তুমিই সর্ব স্বরুপ।
সখা ইতি মত্বা প্রসভম্ যত্ উত্তম্
হে কৃষ্ণ হে যাদব হে সখেতি ।
অজানতা মহিমানম্ তব ইদম্
এয়া প্রমাদাত্ প্রনয়েন বা অপি ।।৪১
যত্ চ অবহাসার্থম্ অসত্কৃতঃ অসি
বিহার শয্যা আসন ভোজনেষু ।
একঃ অথবা অপি অচ্যুত তত্সমক্ষম্
তত্ ক্ষাময়ে ত্বাম অহম্ অপ্রমেয়ম ।।৪২
অর্থ-পুবে আমি তোমার মহিমা না জেনে তোমাকে “হে কৃষ্ণ”, “হে যাদব” “হে সখা” বলে সম্বধন করেছি। প্রমাদবসত এবং প্রনয়বসত যা কিছু করেছি তা তুমি দয়া করে ক্ষমা কর। বিহার, শয়ন ভোজনের সময়, কখনো একাকি কখনো অন্যদের সমক্ষে, আমি যে অসম্নান করেছি, সে সমস্ত অপরাধ দয়াকরে ক্ষমা কর।
পিতা অসি লোকস্য চরাচরস্য
ত্বম্ অস্য পূজ্যঃ চ গুরুঃ গরীয়ান ।
ন তত্সমঃ অস্তি অব্যধিকঃ কুতঃ অন্যঃ
লোকত্রয়ে অপি অপ্রতিম্ প্রভাব ।।৪৩
অর্থ-হে অমিতপ্রভাব, তুমি এই চরাচর জগতের পিতা, পুজ্যগুরু এবং গুরুর গুরু। অতএব, ত্রিভূবনে তোমার মত আর কেউ নাই। তোমার থেকে শ্রেষ্ঠ অন্য কে হতে পারে?
তস্মাত্ প্রণম্য প্রণিধায় কায়ম্
প্রসাদয়ে ত্বাম অহম্ ঈশম্ ঈড্যম্ ।
পিতা-ইব পুত্রস্য সখাঃ ইব সখ্যুঃ
প্রিয় প্রিয়ায়াঃ অহর্সি দেব সোঢম ।।৪৪
অদৃষ্টপুর্বম্ হৃষিতঃ অস্মি দৃষ্টা
ভয়েন চ প্রব্যথিতম্ মনঃ মে ।
তত্ এব মে দর্শয় দেব রূপম
প্রসীদ দেবেশ জগন্নিবাস ।।৪৫।
অর্থ-হে পরম পূজ্য ভগবান, তাই আমি তোমাকে তন্ডবত্ প্রনাম করে তোমার কৃপা ভিক্ষা করছি। পিতা যেমন পুত্রের, সখা যেমন সখায়, প্রিয় যেমন প্রিয়ার অপরাধক্ষমা করেন, তুমিও সেই ভাবে আমার অপরাধ ক্ষমা কর। তোমার এই বিশ্বরুপ যা পুর্বে আর ককনো দেখিনি তা দর্শন করে আমার কৌতুহল চরিতার্থ হয়েছে। তা সত্তেও আমার মন ভয়ে ব্যথিত হয়েছে। তাই হে দেবেশ, হে জসন্নিবাস, আমার প্রতি প্রসন্ন হও এবং পুনরায় তোমার সেই পুর্ব রুপই দেখাও।
কিরিটিনম্ গদিনম্ চক্রহন্তুম্
ইচ্ছামি ত্বাম দ্রষ্টুম্ অহম্ তথা এব ।
তেন এব রূপেন চতুর্ভুজেন
সহস্রবাহো ভব বিশ্বমুর্তে ।।৪৬
অর্থ-হে সহস্রবাহো, আমি তোমাকে সেই কিরিটি, গদা ও চক্রধারি রুপে দেখতে ইচ্ছা করি। হে বিশ্বমুর্তি এখন তুমি তোমার সেই চতুর্ভূজ মুর্তি ধারন কর।
ভগবান উবাচ
ময়া প্রসয়েন তব অর্জুন ইদম্
রুপম্ পরম্ দর্শিতম্ আত্মযোগাত্ ।
তেজময়ম্ বিশ্বম্ অনন্তম্ আদ্যম্
যত্ মে ত্বত্ অন্যেন ন দৃষ্ট পুর্বম্ ।।৪৭
অর্থ-ভগবান বললেন-তোমার প্রতি প্রসন্ন হয়ে আমি তোমাকে জড় জগতের অন্তর্গত আত্মযোগ স্বরুপ শ্রেষ্ঠরুপ দেখালাম। তুমিছাড়া পুর্বে আর কেউই সেই অননত আদি তেজময় রুপ দেখেনি।