নন্দিনী আর থাকতে পারল না হাত দিয়ে হামিদার মুখ বন্ধ করতে গিয়ে বলল, আর বলো না দিদি, তোমার দুঃখ আমি আর সইতে পারছি না। তোমার তো যাওয়ার প্রশ্নই আসে না বরং তুমি দয়া করে তোমার সেবার সুযোগ দিলে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সেবা করে জীবন কাটিয়ে দেব। ভাবব, আমার সীমাদি শত্রুর গুলীতে পঙ্গু হয়ে আমার ঘরে আছে। কবির কাছে নিশ্চয়ই শুনেছ আমার হতভাগিনী দিদির কথা? আজ থেকে তুমিই আমার সেই দিদি। বলেই নন্দিনী হামিদাকে আকড়ে ধরে কাঁদতে লাগল। এ অবস্থায় হামিদার পিঠের নিচে থেকে হাতের ঠেকনা ছেড়ে দিয়ে আমি রেজা ভাইয়ের দিকে তাকালে রেজা ভাই হাসলেন, আমরা তা হলে আসি কবি সাহেব। পরে কোথাও না কোথাও আপনার সাথে দেখা হয়ে যাবে। ঠিকানা রেখে যেতে পারব না। জানেনই তো আসলে আমাদের কোনো ঠিকানা নেই। আমরা এই বিশাল উপমহাদেশের সর্বত্রই আছি। আপনি তো আমাদের দেখেছেন। বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে যেমন দেখেছেন, তেমনি দেখেছেন আসামে, মেঘালয়ে, আগরতলায় আর পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র। আমাদের যুদ্ধটা কার সাথে তা আপনার জানা। আমি ভাবতাম দ্বান্দ্বিক নিয়মেই সবকিছুর সমাধান সম্ভব। কিন্তু আজ এ মুহূর্তে সামাজিক একটি সমস্যার সমাধান দেখলাম। এটা যে কোনো বস্তুতান্ত্রিক দ্বান্দ্বিক সমাধান নয় তা মানতে আমি বাধ্য। আমি তাহলে আসি কবি ভাই।