সাধ হয়
সাধ হয় পরিপাটি জ্যোৎস্না থেকে, পাতার মর্মর থেকে মুখ
একটু ফিরিয়ে যাই, অশত্থের প্রতিষ্ঠিত অন্ধকারে বুক
ভরিয়ে উৎসুক যাই সেখানে মন্ত্রণালয়ে। যাবো?
বড়ো উঁচু দেয়াল, কী করে টপকাবো?
বেজায় গম্ভীর সিংহ-সিংহ দরজা সেখানে; ঢুকে
পড়া সহজ তো নয়। দৈবারিক, পাগড়ি-পরা, পাকা লাঠি ঠুকে
নির্ঘাৎ আগলাবে পথ। ভেতরে হুল্লোড়, হাসি, পরামর্শ এবং বচসা
ক্ষণে ক্ষণে, আর মগজের ক্ষেত চষা
চলছে আহলাদে মাঝে-মাধ্যে। এ যে, নাট্য
অপরূপ, নেমেছে লাস্যের ঢল, চলে ঠাট্রা, কখনও-বা শাঠ্য।
সাধ হয়, সেখানেই যাই। অবশ্য সেখানে গেলে চোখে ঠুলি
বেঁধ বিবেচনা দৈবারিকের কাছেই জমা রেখে তৈরি চিন্তার পিটুলি
গিলে যেতে হবে। ওরা গলায় বকলেশ সুনিপুণ
পরিয়ে ভেতরে দেবে ছেড়ে, দেখবে তুমি বিবেকের গুম খুন।
না, আমি কখনও গলা দেবো না বাড়িয়ে; প্রতিবাদে
উঠবো দুলে বুকময় বকুল-বিছানো পথ গভীর বিষাদে।
হঠাৎ করে মাঝে মধ্যে
হঠাৎ করে মাঝে মধ্যে
একটা কিছু ঘটে গেলে,
একটা কিছু কেমনতরো,
তখন আমার হয় যে যেতে
সব কিছু হায় ফেলে টেলে।
চক্ষু-পুকুর সকাল নিয়ে
শাপলা সমেত, ফচ্কে পাখির
শিসটি নিয়ে
টলমলালে, মন্দ তো নয়
জীবনযাপন, দিব্যি বুঝি।
হঠাৎ করে ঘোর বিহানে
একটা কিছু যায় তো ঘটে।
তখন আমার হয় যে যেতে
সব কিছু হায় ফেলে টেলে।
করুণাময় আঁধার তুমি
হঠাৎ সামনে মেলে ধরো
দাবার রঙিন ছকটি ওহে।
তোমার কাছে থাকে জমা
সপ্নটপ্ন অনেক কিছু।
যখন তখন কৃপা করো
চির-নতুন আঁধার তুমি।
পায়ের কাঁটা নিচ্ছো তুলে,
রক্ত ধুয়ে
পথ্য দিচ্ছো সাঁঝ সকালে।
যখন তখন কৃপা করো
চির নতুন আঁধার তুমি।
হঠাৎ করে আঁধারজোড়া
প্রহর ছিঁড়ে
একটা কিছু যায় তো ঘটে।
তখন আমায় হয় যে যেতে
সব কিছু হায় ফেলে-টেলে।
জননীগো দুপুর বেলা
জুঁইয়ের মতো ভাত বেড়ে দাও
গ্রীষ্ম তাড়াও পাখা নেড়ে।
জননীগো ইলিশ মাছের
উজ্জ্বলতা ছড়াও পাতে।
হঠাৎ করে দ্বিপ্রহরে
একটা কিছু যায় তো ঘটে!
তখন আমায় হয় যে যেতে
সব কিছু হায় ফেলে-টেলে।
তোমার খেলা খুকুমণি
অনেক রাঙা বড্ড ভালো।
তোমার খেলার সাথী হলে
সত্যি সত্যি বর্তে যাবো।
কিন্তু খেলা ভাঙার আগেই
একটা কিছু যায় তো ঘটে,
তখন আমায় হয় যে যেতে
সব কিছু হায় ফেলে টেলে।