আরে যাবে কোথা মিয়াঁ? চৌদিক ঘিরে
টিকি বেঁধে শিরে কাফের হায়,
খাই আমরা হারাম সুদ? আরে যাও,
ওরা যে তেমনি ক্যাঁকড়া খায়!
দ্যাখো ষাড়-পোড়া খেলে হাড় মোটা হয়,
সোজা কথাটা কি বুঝিলে ছাই!
আর খাসি নাহি করে বোদা পাঁঠা ধরে
কেটে খায়, করে নাকো জবাই॥
কোরাস :
আরে তৌবা! আরে তৌবা!!
দ্যাখো মেয়েরা ওদের বোরকা না দিয়ে
রেল ও জাহাজে চড়িয়া যায়,
মোদের বোরকা দেখিলে ছেলেরা ওদের
জুজুবুড়ি বলে ভিরমি খায়।
আরে ইজ্জত তবু থাকে তো মোদের
যক্ষ্মায় নয় মরে শতক,
ওরে উহাদের মতো বেরুলে বিবিরা
যদি কেউ দেখে হয় ‘আশক’॥
কোরাস :
আরে তৌবা! আরে তৌবা!!
আরে আমাদের মতো দাড়ি কই ওদের?
লাগিলে যুদ্ধ নাড়িবে কী?
আর উহাদের মতো কাছা কোঁচা নাই,
ধরিলে মোদের ফাড়িবে কী?
ছার অস্ত্র লইয়া কী হবে, আমরা
বস্ত্র যা পরি থান খানিক,
তাতে তৌবা তৌবা করি যদি, যাবে
কামানের গোলা আটকে ঠিক
কোরাস :
সোবহান আল্লা! সোবহান আল্লা!!
দ্যাখো তুর্কিরা বটে ছাঁটিয়া ফেলেছে
তুর্কি নূর ও মাথার ফেজ,
আর ‘দীন-ই-ইসলাম’ছেড়ে দিয়ে শুধু
তলোয়ারে তারা দিতেছে তেজ!
আরে বাপ-দাদা করে গিয়েছে লড়াই,
আমরা খামখা কেন লড়ি!
দেহে ইসলামি জোশ আনাগোনা করে
‘ছহি জঙনামা’ যবে পড়ি॥
কোরাস : সোবহান আল্লা! সোবহান আল্লা!!
মোরা মসজিদে বসি নামাজ পড়ি যে,
রক্ষা কি আছে বিধর্মীর?
ওরা ‘কাফুরের’ মতো যাইবে ফুরায়ে’
অভিশাপ যদি হানেন পির!
দ্যাখো পায়জামা চেপে রেখেছি আজিও
আমাদের এই পায়ের জোর,
আরে অক্কাই যদি পেতে হয় – দিব
মক্কার পানে সরল দৌড়॥
কোরাস :
মাশাআল্লা ! ইন্শাআল্লা !!
জানো, দুনিয়ায় মোরা যত পাব দুখ,
বেহেশতে পাব ততই সুখ,
আর মেরে যদি হাত-চুলকুনি মেটে,
নে বাবা, তোদেরই আশ মিটুক!
সবে পশ্চাৎ দিয়ে করিব জবাই,
আসুন ‘মেহেদি’ ,থাম দুদিন!
বাবা মুষল লইয়া কুশল পুছিতে
আসিছে কাবুলি মুসলেমিন॥
কোরাস :
আল্লাহু আকবর ! আল্লাহু আকবর !!
নমো নমো নমো নমঃ হে নটনাথ
দুর্গা – গীতাঙ্গী
নমো নমো নমো নমঃ হে নটনাথ!
নব ভবনে করো শুভ চরণ-পাত।
নৃত্য-ভঙ্গিতে সৃজন-সংগীতে
বিশ্বজন-চিতে আনো নব-প্রভাত॥
তোমার জটাজূটে বহে যে জাহ্নবী
তাহারই সুরে প্রাণ জাগাও, আদি কবি!
শুচি ললাটতলে
যে শিশু শশী ঝলে,
তারই আলোকে হরো দুখ-তিমির-রাত॥
হে চির-সুন্দর, দেহো আশীর্বাদ –
হউক দূর সব অতীত অবসাদ।
লঙ্ঘি সব বাধা
তব পতাকা বহি,
ফুল্লমুখে সহি সকল সংঘাত॥
নব জীবনে লয়ে আশা অভিনব
ভুলি সকল লাজ গ্লানি পরাভব,
এ নাট-নিকেতনে আরতি করি তব
হে শিব, করো নব-জীবন সঞ্জাত॥
নাচে মাড়োয়ার লালা
তাকিয়া নৃত্য
হিন্দোল – কাওয়ালি
নাচে মাড়োয়ার লালা
নাচে তাকিয়া।
(নাচে) ভোঁদড় হিন্দোলে
ঝোপে থাকিয়া॥
পায়জামা পরে যেন
নাচে গান্ডার,
নাচে সাড়ে পাঁচ মনি
ভুঁড়ি পাণ্ডার!
গঙ্গার ঢেউ নাচে,
বয়া ঝাঁকিয়া।
গামা নাচে, ধামা নাচে,
মুটকি নাচে,
জামা পরে ভল্লুক
নাচিছে গাছে!
ঝগড়েটে বামা নাচে
থিয়া তাথিয়া॥
ছোটো মিয়াঁ’‘বড়ো মিয়াঁ’
বলি কোলা ব্যাং
বৃষ্টিতে নাচে, নাড়ি
নড়বড় ঠ্যাং!
(নাচে) গুজরাতি হাতি
কর্দম মাখিয়া॥
নাহি ভয় নাহি ভয়
টোড়ি – একতালা
নাহি ভয় নাহি ভয় ।
মৃত্যুসাগর মন্থন শেষ,
আসে মৃত্যুঞ্জয়॥
হত্যায় আসে হত্যানাশন,
শৃঙ্খলে তার মুক্তিভাষণ,
অন্ধ কারায় তমোবিদারণ
জাগিছে জ্যোতির্ময়॥
ব্যথিত হৃদয়-শতদল তাঁর
আঁখি-জল-ঘেরা আসন বিথার।
ব্যাথা-বিহারীরে দেখিবি কে আয়,
ধ্বংসের বুকে শঙ্খ বাজায়!
নিখিলের হৃদিরক্ত-আভায়।
নবীন অভ্যুদয়॥
নিশুতি রাতের শশী গো
খাম্বাজ-পিলু – ঠুংরি
নিশুতি রাতের শশী গো।
ঘুমায়ে সকলে নিশীথ নিঝুম,
হরিল কে তব নয়নের ঘুম,
কার অভিসারে জাগো গগন-পারে
চাঁদ-ভোলানো সে কোন রূপসি॥
লুকায়ে হেরি আমি অভিসার তব,
তারকারা হেরে লুকায়ে নীরব,
কপট ঘুম ভাঙি হেরো হাসিছে সব
দূর অলকার বাতায়নে বসি॥
নীরন্ধ্র মেঘে মেঘে অন্ধ গগন
মল্লার – কাওয়ালি
নীরন্ধ্র মেঘে মেঘে অন্ধ গগন।
অশান্ত-ধারে জল ঝর ঝরে অবিরল,
ধরণি ভীতি-মগন॥
ঝঞ্ঝার ঝল্লরি বাজে ঝননননন,
দীর্ঘশ্বসি কাঁদে অরণ্য শনশন,
প্রলয়-বিষাণ বাজে বজ্রে ঘনঘন,
মূর্ছিত মহাকাল-চরণে মরণ॥
শুধিবে না কেহ কি গো এই পীড়নের ঋণ,
দুঃখ-নিশি-শেষে আসিবে না শুভ দিন?
দুষ্কৃতি বিনাশায় যুগ-যুগ-সম্ভব,
অধর্মনিধনে এসো অবতার নব!
‘আবিরাবির্ম এধি’ওই ওঠে রব,
জাগৃহি ভগবন, জাগৃহি ভগবন॥
নয়নে ঘনাও মেঘ, মালবিকা
মালবশ্রী – কাওয়ালি
নয়নে ঘনাও মেঘ, মালবিকা!
গগনে জাগাও তব নীরদ-লিখা॥
বিদ্যুৎ হানে যদি গরজায় বাজ,
সুন্দর মৃত্যুরে নাহি ভয় আজ,
আমার এ বনে এসো মনোবালিকা॥
ঝরুক এ শিরে মোর ঘন বরষা,
ফুটিবে কাননে ফুল, আছে ভরসা।
এসো জল-ছলছল পথে অভিসারিকা॥
পূজা-দেউলে মুরারি
তিলং–সাদ্রা
পূজা-দেউলে মুরারি,
শঙ্খ নাহি বাজে,
বন্ধ দ্বার, নির্বাপিত দীপ লাজে॥
ভগ্ন ঘট, শূন্য থালা,
পুণ্য-লোক রক্তে ঢালা
দৈত্য সেথা নৃত্য করে মৃত্যু-সাজে,
দাও শরণ তব চরণ মরণ-মাঝে॥
প্রণমি তোমায় বন-দেবতা
দুর্গা – দাদরা
প্রণমি তোমায় বন-দেবতা।
শাখে শাখে শুনি তব ফুল-বারতা–
দেবতা॥
তোমার ময়ূর তোমার হরিণ
লীলা-সাথি রয় নিশিদিন,
বিলায় ছায়া বাণীবিহীন
তরু ও লতা–
দেবতা॥