• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
বৃহস্পতিবার, মে 15, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

জিঞ্জির – কাজী নজরুল ইসলাম

Jinjir by Kazi Nazrul Islam

এ মোর অহংকার

এ মোর অহংকার

নাই বা পেলাম আমার গলায় তোমার গলার হার,
তোমায় আমি করব সৃজন, এ মোর অহংকার!
এমনই চোখের দৃষ্টি দিয়া
তোমায় যারা দেখল প্রিয়া,
তাদের কাছে তুমি তুমিই। আমার স্বপনে
তুমি নিখিল রূপের রানি মানস-আসনে! –

সবাই যখন তোমায় ঘিরে করবে কলরব,
আমি দূরে ধেয়ান-লোকে রচব তোমার স্তব।
রচব সুরধুনী-তীরে
আমার সুরের উর্বশীরে,
নিখিল কণ্ঠে দুলবে তুমি গানের কন্ঠ-হার –
কবির প্রিয়া অশ্রুমতী গভীর বেদনার!

যেদিন আমি থাকব নাকো, থাকবে আমার গান,
বলবে সবাই, “কে সে কবির কাঁদিয়েছিল প্রাণ?”
আকাশ-ভরা হাজার তারা
রইবে চেয়ে তন্দ্রাহারা,
সখার সাথে জাগবে রাতে, চাইবে আকাশে,
আমার গানে পড়বে মনে আমায় আভাসে!

বুকের তলা করবে ব্যথা, বলবে কাঁদিয়া,
“বন্ধু! সে কে তোমার গানের মানসী প্রিয়া?”
হাসবে সবাই, গাইবে গীতি,–
তুমি নয়ন-জলে তিতি
নতুন করে আমার গানে আমার কবিতায়
গহিন নিরালাতে বসে খুঁজবে আপনায়!

রাখতে যেদিন নারবে ধরা তোমায় ধরিয়া,
ওরা সবাই ভুলবে তোমায় দুদিন স্মরিয়া,
আমার গানের অশ্রুজলে
আমার বাণীর পদ্মদলে
দুলবে তুমি চিরন্তনী চির-নবীনা!
রইবে শুধু বাণী, সেদিন রইবে নাকো বীণা!

তৃষ্ণা-‘ফোরাত’-কূলে কবে ‘সাকিনা’১ -সমা
এক লহমার হলে বধূ, হায় মনোরমা!
মুহূর্ত সে কালের রেখা
আমার গানে রইল লেখা
চিরকালের তরে প্রিয়! মোর সে শুভক্ষণ
মরণ-পারে দিল আমায় অনন্ত জীবন।

নাই বা পেলাম কণ্ঠে আমার তোমার কণ্ঠহার,
তোমায় আমি করব সৃজন এ মোর অহংকার!
এই তো আমার চোখের জলে,
আমার গানে সুরের ছলে,
কাব্যে আমার, আমার ভাষায়, আমার বেদনায়,
নিত্যকালের প্রিয়া আমায় ডাকছ ইশারায়!…

চাই না তোমায় স্বর্গে নিতে, চাই না এ ধুলাতে
তোমার পায়ে স্বর্গ এনে ভুবন ভুলাতে!
ঊর্ধ্বে তোমার – তুমি দেবী,
কি হবে মোর সে-রূপ সেবি!
চাই না দেবীর দয়া, যাচি প্রিয়ার আঁখিজল,
একটু দুঃখে অভিমানে নয়ন টলমল!

যেমন করে খেলতে তুমি কিশোর বয়সে –
মাটির মেয়ের দিতে বিয়ে মনের হরষে,
বালু দিয়ে গড়তে গেহ,
জাগত বুকে মাটির স্নেহ,
ছিল না তো স্বর্গ তখন সূর্য তারা চাঁদ,
তেমনি করে খেলবে আবার পাতবে মায়া-ফাঁদ!

মাটির প্রদীপ জ্বালবে তুমি মাটির কুটিরে,
খুশির রঙে করবে সোনা ধূলি-মুঠিরে।
আধখানা চাঁদ আকাশ পরে
উঠবে যবে গরব-ভরে
তুমি বাকি আধখানা হাসবে ধরাতে,
তড়িৎ ছিঁড়ে পড়বে তোমার খোঁপায় জড়াতে!

তুমি আমার বকুল যূথী – মাটির তারা-ফুল
ঈদের প্রথম চাঁদ গো তোমার কানের পারসি দুল!
কুসমি-রাঙা শাড়িখানি
চৈতি সাঁঝে পড়বে রানি,
আকাশ-গাঙে জাগবে জোয়ার রঙের রাঙা বান,
তোরণ-দ্বারে বাজবে করুণ বারোয়াঁ মুলতান।

আমার-রচা গানে তোমায় সেই বেলাশেষে
এমনই সুরে চাইবে কেহ পরদেশি এসে!
রঙিন সাঁঝে ওই আঙিনায়
চাইবে যারা, তাদের চাওয়ায়
আমার চাওয়া রইবে গোপন! – এ মোর অভিমান,
যাচবে যারা তোমায়, রচি তাদের তরে গান!

নাই বা দিল ধরা আমায় ধরার আঙিনায়,
তোমায় জিনে গেলাম সুরের স্বয়ংবর-সভায়!
তোমার রূপে আমার ভুবন
আলোয় আলোয় হল মগন,
কাজ কি জেনে কাহার আশায় গাঁথছ ফুল-হার
আমি তোমায় গাঁথছি মালা এ মোর অহংকার!
কৃষ্ণনগর
২৬ চৈত্র, ১৩৩৪

খালেদ

খালেদ! খালেদ! শুনিতেছে নাকি সাহারার আহা-জারি?
কত ‘ওয়েসিস’ রচিল তাহার মরু-নয়নের বারি।
মরীচিকা তার সন্ধানী-আলো দিকে দিকে ফেরে খুঁজি
কোন নিরালায় ক্লান্ত সেনানী ডেরা গাড়িয়াছ বুঝি!
বালু-বোররাকে সওয়ার হইয়া ডাক দিয়া ফেরে ‘লু’,
তব তরে হায়! পথে রেখে যায় মৃগীরা মেশক-বু!
খর্জুর-বীথি আজিও ওড়ায় তোমার জয়ধ্বজা,
তোমার আশায় বেদুইন-বালা আজিও রাখিছে রোজা।
‘মোতাকারিব’-এর ছন্দে উটের সারি দুলে দুলে চলে,
দু-চোখ তাদের দিশাহারা পথে আলেয়ার মতো জ্বলে।
‘খালেদ! খালেদ!’পথ-মঞ্জিলে ক্লান্ত উটেরা কহে,
“বণিকের বোঝা বহা তো মোদের চিরকেলে পেশা নহে!”
‘সুতুর-বানের’ বাঁশি শুনে উট উল্লাস-ভরে নাচে,
ভাবে, নকিবের বাঁশরির পিছে রণ-দামামাও আছে।
ন্যুব্জ এ পিঠ খাড়া হত তার সওয়ারের নাড়া পেয়ে,
তলওয়ার তির গোর্জ নেজায় পিঠ যেত তার ছেয়ে।
খুন দেখিয়াছে, তূণ বহিয়াছে, নুন বহেনিকো কভু!

* * *

বালু ফেড়ে ওঠে রক্ত-সূর্য ফজরের শেষে দেখি,
দুশমান-খুনে লাল হয়ে ওঠে খালেদি আমামা এ কী!
খালেদ! খালেদ! ভাঙিবে নাকি ও হাজার বছরি ঘুম?
মাজার ধরিয়া ফরিয়াদ করে বিশ্বের মজলুম!–
শহিদ হয়েছ? ওফাত হয়েছে? ঝুটবাত! আলবত!
খালেদের জান কব‍্‍জ করিবে ওই মালেকুল-মৌত?
বছর গিয়াছে গেছে শতাব্দী যুগযুগান্ত কত,
জালিম৯ পারসি রোমক রাজার জুলুম সে শত শত
রাজ্য ও দেশ গেছে ছারেখারে! দুর্বল নরনারী
কোটি কোটি প্রাণ দিয়াছে নিত্য কত‍্‍ল-গাহেতে তারই!
উৎপীড়িতের লোনা আঁসু-জলে গলে গেল কত কাবা,
কত উজ তাতে ডুবে মলো হায়, কত নূহ্ হল তাবা!

সেদিন তোমার মালেকুল-মৌত কোথায় আছিল বসি?
কেন সে তখন জালিম রাজার প্রাসাদে প্রাসাদে পশি
বেছে বেছে ওই ‘সঙ্গ্-দিল’দের কব‍্‍জ করেনি জান?
মালেকুল-মৌত সেদিনও মেনেছে বাদশাহি ফরমান!–
মক্কার হাতে চাঁদ এল যবে তকদিরে আফতাব
কুল-মখলুক দেখিতে লাগিল শুধু ইসলামি খাব,
শুকনো খবুজ খোর্মা চিবায়ে উমর দারাজ-দিল
ভাবিছে কেমন খুলিবে আরব দিন-দুনিয়ার খিল, –
এমন সময় আসিল জোয়ান হাথেলিতে হাথিয়ার,
খর্জুর-শিষে ঠেকিয়াছে গিয়া উঁচা উষ্ণীয় তার!
কব‍্‍জা তাহার সব‍্‍জা হয়েছে তলওয়ার-মুঠ ডলে,
দু-চোখ ঝালিয়া আশায় দ‍জ‍্‍লা ফোরাত পড়িছে গলে!
বাজুতে তাহার বাঁধা কোর-আন, বুকের দুর্মদ বেগ,
আলবোরজের‍ চূড়া গুঁড়া-করা দস্তে দারুণ তেগ।
নেজার৪ ফলক উল্কার সম উগ্রগতিতে ছোটে,
তির খেয়ে তার আশমান-মুখে তারা-রূপে ফেনা ওঠে।
দারাজ দস্ত যেদিকে বাড়ায় সেইদিক পড়ে ভেঙে,
ভাস্কর-সম যেদিকে তাকায় সেইদিক ওঠে রেঙে!
ওলিদের বেটা খালেদ সে বীর যাহার নামের ত্রাসে
পারস্য-রাজ নীল হয়ে উঠে ঢলে পড়ে সাকি-পাশে!
রোম-সম্রাট শারাবের জাম -হাতে থরথর কাঁপে,
ইস্তাম্বুলি বাদশার যত নজ্জুম আয়ু মাপে!
মজলুম যত মোনাজাত করে কেঁদে কয় “এয়্ খোদা,
খালেদের বাজু-শমশের রেখো সহি-সালামতে সদা।”
আজরাইলও সে পারেনি এগুতে যে আজাজিলের আগে,
ঝুঁটি ধরে তার এনেছে খালেদ, ভেড়ি ধরে যেন বাঘে!
মালেকুল-মৌত করিবে কব‍্‍জ রু্হ্ সেই খালেদের?–
হাজার হাজার চামড়া বিছায়ে মাজারে ঘুমায় শের!

খালেদ! খালেদ! ফজর হল যে, আজান দিতেছে কৌম,
ওই শোনো শোনো –”আস‍্‍সালাতু খায়র মিনান্নৌম!”
যত সে জালিম রাজা-বাদশারে মাটিতে করেছে গুম
তাহাদেরই সেই খাকেতে খালেদ করিয়া তয়ম্মুখ
বাহিরিয়া এসো, হে রণ-ইমাম, জামায়েত আজ ভারী!
আরব, ইরান, তুর্ক, কাবুল দাঁড়ায়েছে সারি সারি!
আব-জমজম উথলি উঠিছে তোমার ওজুর তরে,
সারা ইসলাম বিনা ইমামেতে আজিকে নামাজ পড়ে!
খালেদ! খালেদ! ফজরে এলে না, জোহরকাটানু কেঁদে,
আসরে ক্লান্ত ঢুলিয়াছি শুধু বৃথা তহ‍্‍রিমা বেঁধে!
এবে কাফনের খেলকা পরিয়া চলিয়াছি বেলা-শেষে,
মগ‍্‍রেবের আজ নামাজ পড়িব আসিয়া তোমার দেশে!
খালেদ! খালেদ! সত্য বলিব, ঢাকিব না আজ কিছু,
সফেদ দেও আজ বিশ্ববিজয়ী, আমরা হটেছি পিছু!
তোমার ঘোড়ার খুরের দাপটে মরেছে যে পিপীলিকা,
মোরা আজ দেখি জগৎ জুড়িয়া তাহাদেরই বিভীষিকা!
হঠিতে হঠিতে আসিয়া পড়েছি আখেরি গোরস্থানে,
মগ‍্‍রেব-বাদে এশার১ নামাজ পাব কিনা কে সে জানে!
খালেদ! খালেদ! বিবস্ত্র মোরা পরেছি কাফন শেষে,
হাথিয়ার-হারা, দাঁড়ায়েছি তাই তহ‍্‍রিমা বেঁধে এসে!

ইমামতি তুমি করিবে না জানি, তুমি গাজি মহাবীর,
দিন-দুনিয়ার শহিদ নোয়ায় তোমার কদমে শির!
চারিটি জিনিস চিনেছিলে মতুমি, জানিতে না হের-ফের,
আল্লা, রসুল, ইসলাম আর শের-মারা শমশের!
খিলাফত তুমি চাওনিকো কভু চাহিলে – আমরা জানি, –
তোমার হাতের বে-দেরেগ৩ তেগ অবহেলে দিত আনি!

উমর যেদিন বিনা অজুহাতে পাঠাইল ফরমান, –
“সিপাহ্-সালার খালেদ পাবে না পূর্বের সম্মান,
আমার আদেশ – খালেদ ওলিদ সেনাপতি থাকিবে না,
সাদের অধীনে করিবে যুদ্ধ হয়ে সাধারণ সেনা!”
ঝরা জলপাই-পাতার মতন কাঁপিতে কাঁপিতে সাদ,
দিল ফরমান, নফসি নফসি জপে, গণে পরমাদ!
খালেদ! খালেদ! তাজিমের সাথে ফরমান পড়ে চুমি
সিপাহ-সালারের সকল জেওরখুলিয়া ফেলিলে তুমি।
শিশুর মতন সরল হাসিতে বদন উজালা করি
একে একে সব রেখে দিলে তুমি সাদের চরণ পরি!
বলিলে, “আমি তো সেনাপতি হতে আসিনি, ইবনে সাদ,
সত্যের তরে হইব শহিদ, এই জীবনের সাধ!
উমরের নয়, এ যে খলিফার ফরমান, ছি ছি আমি
লঙ্ঘিয়া তাহা রোজ-কিয়ামতে হব যশ-বদনামি?”
মার মুখো যত সেনাদলে ডেকে ইঙ্গিতে বুঝাইলে,
কুর্নিশ করি সাদেরে, মামুলি সেনাবাসে ডেরা নিলে!
সেনাদের চোখে আঁসু ধরে না কো, হেসে কেঁদে তারা বলে, –
“খালেদ আছিল মাথায় মোদের, এবার আসিল কোলে!”
মক্কায় যবে আসিলে ফিরিয়া, উমর কাঁদিয়া ছুটে,
এ কী রে, খলিফা কাহার বক্ষে কাঁদিয়া পড়িল লুটে!
“খালেদ! খালেদ!” ডাকে আর কাঁদে উমর পাগল-প্রায়
বলে, “সত্যই মহাবীর তুই, বুসা দিই তোকে, আয়!
তখ‍্‍তের পর তখ‍্‍ত যখন তোমার তেগের আগে
ভাঙিতে লাগিল, হাতুড়ি যেমন বাদামের খোসা ভাঙে, –
ভাবিলাম বুঝি তোমারে এবার মুগ্ধ আরব-বাসী
সিজদা করিবে, বীরপূজা বুঝি আসিল সর্বনাশী!
পরীক্ষা আমি করেছি খালেদ, ক্ষমা চাই ভাই ফের,
আজ হতে তুমি সিপাহ-সালার ইসলাম জগতের!”

খালেদ! খালেদ! কীর্তি তোমার ভুলি নাই মোরা কিছু,
তুমি নাই তাই ইসলাম আজ হটিতেছে শুধু পিছু।
পুরানো দামামা পিটিয়া পিটিয়া ছিঁড়িয়ে গিয়াছে আজ,
আমামা অস্ত্র ছিল নাকো তবু দামামা ঢাকিত লাজ!
দামামা তো আজ ফাঁসিয়া গিয়াছে, লজ্জা কোথায় রাখি,
নামাজ রোজার আড়ালেতে তাই ভীরুতা মোদের ঢাকি!
খালেদ! খালেদ! লুকাব না কিছু, সত্য বলিব আজি,
ত্যাগী ও শহিদ হওয়া ছাড়া মোরা আর সব হতে রাজি!
রীশ-ই বুলন্দ্, শেরওয়ানি, চোগা, তসবি ও টুপি ছাড়া
পড়ে নাকো কিছু, মুসলিম-গাছ ধরে যত দাও নাড়া!

* * *

খালেদ! খালেদ! সবার অধম মোরা হিন্দুস্থানি,
হিন্দু না মোরা মুসলিম তাহা নিজেরাই নাহি জানি!
সকলে শেষে হামাগুড়ি দিই, –না, না, বসে বসে শুধু
মুনাজাত৬করি, চোখের সুমুখে নিরাশা-সাহারা ধুধু!
দাঁড়ায়ে নামাজ পড়িতে পারি না, কোমর গিয়াছে টুটি,
সিজদা করিতে ‘বাবা গো’বলিয়া ধূলিতলে পড়ি লুটি!
পিছন ফিরিয়া দেখি লাল-মুখ আজরাইলের ভাই,
আল্লা ভুলিয়া বলি, “প্রভু মোর তুমি ছাড়া নাই।”
টক্কর খেতে খেতে শেষে এই আসিয়া পড়েছি হেথা,
খালেদ! খালেদ! রি রি করে বুকে পরাধীনতার ব্যথা!
বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা তখনও বসে
বিবি-তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি ফেকা ও হাদিস চষে!
হানফী, ওহাবী, লা-মজহাবীর৯ তখনও মেটেনি গোল,
এমন সময় আজাজিল এসে হাঁকিল, ‘তল্পি তোল!’

ভিতরের দিকে যত মরিয়াছি, বাহিরের দিকে তত
গুনতিতে মোড়া বাড়িয়া চলেছি গোরু ছাগলের মতো!
খালেদ! খালেদ! এই পশুদের চামড়া দিয়ে কি তবে
তোমার পায়ের দুশমন-মারা দুটো পয়জারও হবে?
হায় হায় হায়, কাঁদে সাহারায় আজিও তেমনই ও কে?
দজলা-ফোরাত নতুন করিয়া মাতম করিছে শোকে!
খর্জুর পেকে খোর্মা হইয়া শুকায়ে পড়েছে ঝুরে
আঙুর বেদানা নতুন করিয়া বেদনার রসে পুরে।
এক রাশ শুখো আখরোট আর বাদাম ছাড়াতে লয়ে
আঙুল ছেঁচিয়া মুখ দিয়া চুষে মৌনা আরবি-বউয়ে!
জগতের সেরা আরবের তেজি যুদ্ধ-তাজির চালে
বেদুইন-কবি সংগীত রচি নাচিতেছে তালে তালে!
তেমনই করিয়া কাবার মিনারে চড়িয়া মুয়াজ্জিন
আজানের সুরে বলে, কোনোমতে আজও বেঁচে আছে দ্বীন!
খালেদ! খালেদ! দেখো দেখো ওই জমাতের পিছে কারা
দাঁড়ায়ে রয়েছে, নড়িতে পারে না, আহা রে সর্বহারা!
সকলের পিছে নহে বটে তবু জমাত-শামিল নয়,
উহাদের চোখে হিন্দের মতো নাই বটে নিদ‍্‍-ভয়!
পিরানের সব দামন ছিন্ন, কিন্তু সে সম্মুখে
পেরেশান৪ ওরা তবু দেখিতেছি ভাঙিয়া পড়েনি দুখে!
তকদির বেয়ে খুন ঝরে ওই উহারা মেসেরি বুঝি।
টলে তবু চলে বারে বারে হারে বারে বারে ওরা যুঝি।
এক হাতে বাঁধা হেম-জিঞ্জির আর এক হাত খোলা
কী যেন হারামি নেশার আবেশে চক্ষু ওদের ঘোলা!

ও বুঝি ইরাকি? খালেদ! খালেদ! আরে মজা দেখো, ওঠো,
শ্বেত-শয়তান ধরিয়াছে আজ তোমার তেগের মুঠো!
দুহাতে দুপায়ে আড়-বেড়ি দেওয়া ও কারা চলিতে নারে,
চলিতে চাহিলে আপনার ভায়ে পিছন হইতে মারে।
মরদের মতো চেহারা ওদের স্বাধীনের মতো বুলি,
অলস দু-বাজু দু-চোখ সিয়াহ অবিশ্বাসের ঠুলি!
শামবাসী৭ ওরা সহিতে শেখেনি পরাধীনতার চাপ,
তলওয়ার নাই, বহিছে কটিতে কেবল শূন্যে খাপ!
খালেদ! খালেদ! মিসমার হল তোমার ইরাক শাম,
জর্ডন নদে ডুবিয়াছে পাক জেরুজালেমের নাম!
খালেদ! খালেদ! দুধারি তোমার কোথা সেই তলোয়ার?
তুমি ঘুমায়েছ, তলোয়ার তব সে তো নহে ঘুমাবার!
জং ধরেনিকো কখনও তাহাতে জঙ্গের খুনে নেয়ে,
হাথেলিতে তব নাচিয়া ফিরেছে যেন বেদুইন মেয়ে!
খাপে বিরামের অবসর তার মেলেনি জীবনে কভু,
জুলফিকার৩ সে দুখান হয়েছে, ও তেগ টুটেনি তবু।
তুমি নাই তাই মরিয়া গিয়াছে তরবারিও কি তব?
হাত গেছে বলে হাত-যশও গেল? গল্প এ অভিনব!
খালেদ! খালেদ! জিন্দা হয়েছে আবার হিন্দা৪ বুড়ি,
কত হামজারে মারে জাদুকরি, দেশে দেশে ফেরে উড়ি!

ও কারা সহসা পর্বত ভেঙে তুহিন স্রোতের মতো,
শত্রুর শিরে উন্মদবেগে পড়িতেছে অবিরত!
আগুনের দাহে গলিছে তুহিন আবার জমিয়া উঠে,
শির উহাদের ছুটে গেল হায়! তবু নাহি পড়ে টুটে!
ওরা মরক্কো মরদের জাত মৃত্যু মুঠার পরে,
শত্রুর হাতে শির দিয়া ওরা শুধু হাতে পায়ে লড়ে!
খালেদ! খালেদ! সর্দার আর শির পায় যদি মূর
খাসা জুতো তারা করিবে তৈরি খাল দিয়া শত্রুর!

খালেদ! খালেদ! জাজিরাতুল সে আরবের পাক মাটি
পলিদ হইল, খুলেছে এখানে যুরোপ পাপের ভাঁটি!
মওতের দারু পিইলে ভাঙে না হাজার বছরি ঘুম?
খালেদ! খালেদ! মাজার আঁকড়ি কাঁদিতেছে মজলুম।

খোদার হাবিব বলিয়া গেছেন আসিবেন ইসা ফের,
চাই না মেহেদি, তুমি এসো বীর হাতে নিয়ে শমশের।

কৃষ্ণনগর,
২১ অগ্রহায়ণ, ’৩৩

Page 4 of 7
Prev1...345...7Next
Previous Post

ঝিঙেফুল – কাজী নজরুল ইসলাম

Next Post

ছায়ানট – কাজী নজরুল ইসলাম

Next Post

ছায়ানট - কাজী নজরুল ইসলাম

চিত্তনামা - কাজী নজরুল ইসলাম

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In