কীভাবে গর্দান নেবে,
ভাবছো? তুমি কি সেই অস্ত্রধারী, আধিকারিক?
আজ রাতে পাখিদের উৎসব চলছিল
আমন্ত্রিত আমাকে একটি খড়কুটো দিল,
তাই নিয়ে উৎসাহে মেতে উঠি
−লক্ষ করি, চারপাশে বিরুদ্ধ ভ্রুকুটি
নিরস্ত্রীকরণে কেন আমি পাখির সঙ্গ নিয়েছিলাম
কেন বলেছিলাম, চাই বনজঙ্গলঘেরা একটি সবুজ গ্রাম?
তোমার কথা
মাঝে মাঝে তোমার কথা ভাবি
আকাশে জমেছে মেঘ, বাতাসে বৃষ্টির গান
রাত্তির বড় দীর্ঘ; কিছুতেই
ঘুম আর আসছে না ।একবার এপাশ, একবার ওপাশ, আর
বিশ্বচরাচর জুড়ে… নিথির স্তব্ধতা ।
মাঝে মাঝে মনে হয়
অসীম শূন্যের ভেতর উড়ে যাই ।
মেঘের মতন ভেসে ভেসে, একবার
বাংলাদেশে ঘুরে আসি ।
মনে হয়,মনুমেন্টের চূড়ায় উঠে
চিৎকার ক’রে
আকাশ ফাটিয়ে বলি;
দ্যাখো, সীমান্তে ওইপাশে আমার ঘর
এইখানে আমি একা, ভীনদেশী
ধৃতরাষ্ট্র-বিলাপ
জন্মান্ধ বললে ভুল হবে৷ ইদানীং আমার চোখ
ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে
বাতাস কি মুখরিত, আর্তনাদে?
সঞ্জয়, যুদ্ধের গতি কোন দিকে?
পাণ্ডবরা কী রচনা করেছে বূ্হ্য? অর্জুণ কী এখনো
কুরুক্ষেত্রে?
কোন্ মন্ত্রবলে প্রতিপক্ষ দুর্জয়, সঞ্জয়?
বলো, তবে কী শূন্য হাতে কেবলি বিলাপ, আমার? গর্ভগৃহে
পালিয়ে জীবন? না-কি
অন্ধতাই জীবন, করুণাঘন মৃত্যু?
প্রেম
প্রেম দ্যাখো বয়স মানেনা কোনদিন
ছোটবড় তালার মতো সব বয়সের কপাটে ঝুলে পড়ে হঠাৎ
প্রেম, সবুজ নিসর্গ থেকে পলাতক কয়েদীর মতোন নিঃশব্দে বেরিয়ে
আসে দ্রুত
ঠাঁই নেয় বিভিন্ন লোকালয়ে; খেলা করে সকাল বিকাল
তোলপাড়ে ভেঙে যায় নীলিমার আজীবন আশীর্বাদ-গড়ে তোলে
সুখ-দুঃখ
পড়ে থাকে বয়স্কদের দারুণ চোখ
প্রেম, সেতো বয়স মানে নি কোনদিন- বুঝি তাই
তীক্ষ্ণ চকচকে সোনার ছুরি এনে বসিয়ে দেয় সকল প্রহরে
মেতে ওঠে ভয়াবহ বন্যার জলের মতো বাদশাহী হৃদয়ে-এবং
ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় পারিবারিক স্নেহ-মমতা
অথচ শুধু বেঁচে থাকে পরস্পর হৃদয়ের সুন্দর দৃশ্যাবলী !
।২।
প্রেম, একটা ক্ষুধার্ত হিংস্র বাঘ; নিমেষে গ্রাস করে দীর্ঘকায় শরীর
প্রচণ্ড থাবায় কখনো আবার ছিড়ে নেয় লালিত মাংস-ছিটিয়ে দেয়
বিষাক্ত লবণ
জ্বলতে থাকে আজীবন !
প্রেম; য্যানো গোলাপ-নীলিমা-নিসর্গ-নক্ষত্রে মোড়া আদুরে পুতুল-
নির্জনে থাকেনা পড়ে; অথচ একবার উপযুক্ত হৃদয়ে ঠাঁই পেলে কেউই
রুখতে পারেনা সহজে এবং
সৃষ্টি করে বিশাল বাগান
যা কখনো ফেলে রেখে কোথাও যাওয়া যায় না; শুধু ঈশ্বরের মতো
ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে যায়মুহূর্তে !
বলেছিলাম
সমস্ত আবর্ত থেকে ফিরে আসো, বলেছি কি ?
সে কথা বলিনি৷
বলেছিলাম, আমাদের কালপর্বে যে-ভাঙন
উৎস কোথায় এই চণ্ড-সামাজিকতার ?
আজকে যে-স্তরগুলি তৈরি হয়ে আছে
আমরাই কি নির্মাণ করিনি ঘূর্ণিপাক ?
শববাহকেরা এখন বৃত্তের ভিতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে
শ্মশানযাত্রীরা নদীর ঠিকানা ভুলে
দণ্ডকারণ্যের দিকে ধাবমান
আর দেখো,
ভূমিকে নির্ভূম করে ভূস্বামীরা আগুন দিচ্ছে চুল্লীতে
সব প্রতিরোধ ভেঙে গেলে
কোনো সূচনা, প্রবাহ থাকবে না?
বলেছিলাম, বজ্র-ভরা দিনগুলো আবার ফিরে আসুক, স্রোতের
বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চাই।
বৃষ্টির সন্ধ্যায়
ভীষণ ক্ষুধার্ত, ভীষণ তৃষিত।
দিন যায় অনাহারে। অক্ষর বর্জিত
জ্বলন্ত সময়। ব্রাত্য মানুষের গল্প
কে লেখে?_ যেটুকু লেখা হয় অতীব সামান্য, অল্প
নিকট স্মৃতির মধ্যে জেগে আছে একটি ঘটনা। বাকি সব গৌণ।
মাতৃভাষায় যে শব্দ কাম, তথা যৌন
উথালপাতাল হলো বৃষ্টির সন্ধ্যায়।
মেঘের গর্জন। জলের নষ্টামি। বারান্দায়।
নস্টালজিয়ার নিম্নচাপ-উচ্চচাপ আছে। ভাবানুষঙ্গে হঠাৎ
জড়ো হলে বেড়ে যায় প্রবণতাময় সন্ধ্যা, রাত