সিদ্ধান্ত নিতে এক মুহূর্ত দেরি হয় না। একবার ঘুমন্ত রোকসানাব দিকে তাকিয়ে দেখেন। কাল—হ্যাঁ, কালই তিনি নতুন বাড়িটা বিক্রি করে দেবেন। টাকা নিয়ে কালই আলীজাহ্কে লাহোর যেতে হবে।
ফজরের নামাজ আদায় করে শাহ সাদেক আলী আলীজাহ্ কামরার কাছে এলেন। দেখা পেলেন না। এত ভোরে ও উঠেছে দেখে আশ্চর্য হলেন তিনি।
তারপর এদিকের বারান্দা ঘুরে আসতেই চোখে পড়ল–এই ভোর সকালেই আলীজাহ্ আর জরিনা ব্যাডমিন্টন খেলছে মাঠে। অস্পষ্ট আলোর ভেতরে একটা শাদা পাখির মতো কর্কটা উড়ছে, তাড়া খেয়ে ফিরে যাচ্ছে, আবার ফিরে আসছে। আর ভোরের দিকে সূর্য উঠে আসছে তার রক্তিম রাজকীয়তা নিয়ে। চারদিকের সবকিছু সেই আভায় বহ্নি হয়ে উঠেছে যেন–যে বহ্নির মতো এখনি সব আরো উর্ধ্বে উঠে যাবে–এই গাছগুলো, ফটক, বাড়ি, ল্যাম্পোস্ট সবকিছু। আর ওরা দুজন হাসছে নিৰ্বরের মতো। লাফিয়ে উঠছে মাটি ছেড়ে সেই রহস্যময় পাখিটাকে তাড়া করবার জন্য। যেন ওরাও আরো একটু পরে পাখনা মেলে। উড়তে থাকবে।
স্বপ্নের মতো চেনা অথচ অচেনা এই ছবিটার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলেন শাহ সাদেক আলী।
.
লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা
রচনাকাল : ১৯৬১ **