• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর 26, 2023
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result
  • বইয়ের নামঃ বিবিধ রচনা
  • লেখকের নামঃ সৈয়দ শামসুল হক
  • বিভাগসমূহঃ প্রবন্ধ

আমার তীর্থসন্ধান এখনো চলছে

সৈয়দ শামসুল হক এবারের বইমেলায় ভালোবাসার রাতে কবি সৈয়দ শামসুল হকের নতুন বই। এই বইয়ে ৭৬ বছর বয়সেও কবি প্রেম যৌনতা নিয়ে অনেক বেশি সপ্রতিভ খোলামেলা। এক আগ্রহী পাঠকের কৌতূহল নিয়ে কবির মুখোমুখি হয়েছেন তরুণ কবি পিয়াস মজিদ

প্রশ্ন: এ বছর আপনার চারটি কবিতার বই বেরিয়েছে? প্রতিটি বইয়েই দেখা যাচ্ছে প্রেমের একচ্ছত্র প্রতাপ। এই বিপুল প্রেমের উৎ সভূমি কোথায়?
সৈয়দ শামসুল হক: উৎ স হচ্ছে মানবজীবন। প্রেম বলতেই আমাদের এখানে তরুণ-যুবা-অবিবাহিত ব্যক্তিদের ব্যাপার বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রেম তো একটি জীবনব্যাপী ক্রিয়া। জীবনের নানা পর্যায়ে প্রেমের প্রতি অবলোকন পরিবর্তিত হয়। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানে দেখা যাবে প্রেমের কত বিচিত্র রূপ সেখানে প্রকাশিত। ‘মৃত্যুর মুখে দাঁড়ায়ে বলিব তুমি আছ, আমি আছি’ এই উচ্চারণ যুবা বয়সে সম্ভব নয়। আমার এখন ৭৬ চলছে। প্রেমকে এখন ঘন অনুভূতির ধরনে দেখছি। কবিতার বিষয় তো আর আকাশ থেকে আসে না। প্রেম বলতেই আমরা নরনারীকেন্দ্রিক প্রেমকে বুঝে থাকি, কিন্তু ঈশ্বরপ্রেম, ভ্রাতৃপ্রেম, দেশপ্রেম, ভাষাপ্রেম ইত্যাদি প্রেম তো মিথ্যা নয়। আমার নিজের কথা বলতে পারি? বায়ান্ন সালে ভাষা আন্দোলনের সময়, আটান্নর সামরিক শাসন জারির পর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়, পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অর্থাৎ জাতীয় জীবনের সংকটে-সংগ্রামে দেশমাতাকে নিয়ে যে প্রেম অনুভব করেছি, তা নারীপ্রেমের চেয়েও মহত্তর প্রেম বলে মনে করি।
আমি প্রেমিক। এমনকি এখন যখন আমার নাতনিও প্রেমে পড়ার বয়সে এসে উপনীত, তখনো আমার প্রেম-তৃষ্ণা নিবৃত্ত হয়নি। তাই আমি যে প্রেমের কবিতা লিখব, তা খুবই স্বাভাবিক। আমার প্রেমের উৎ স আমি নিজেই। উৎ স আমার বোধ, অভিজ্ঞতা।
প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে খণ্ড কবিতার বদলে সিরিজ কবিতার প্রতি আপনার আগ্রহ লক্ষণীয়। তবে শুধু প্রেমকে ভিত্তিভূমে রেখে একসঙ্গে এত কবিতার জন্ম বিস্ময়কর মনে হয়। আপনার কী মত?
সৈয়দ হক: বিস্ময়কর হচ্ছে, এখনো আমি নতুন নতুন ধারণা পাই। এখনো আমি ২০ বছরের সবুজ তরুণ।
বাংলা কবিতা এখন এক কানাগলিতে এসে ঠেকেছে। আমি মনে করি, দীর্ঘ কবিতার বিস্তৃত পরিসরে কবিতাকে ছড়িয়ে দিতে হয়। একটি বিষয়কে অনেক আলোয় দেখতে হয়। ভাস্কর্যকে যেমন নানা কোণ থেকে দেখা লাগে। ভাস্কর্যের কোনো সম্মুখ নেই, পশ্চাৎ নেই—সবটাই প্রদর্শ্য। বাংলা কবিতাকে এমনই নানা কোণ থেকে দেখা দরকার। নানা আঙ্গিকে কাজ করা দরকার।
খণ্ড কবিতায় আমরা প্রচুর সময় দিয়েছি। এখন প্রয়োজন দীর্ঘ ক্যানভাসে কাজ করা। মরচে পড়া আঙ্গিক, তেতো হওয়া ভাষাকে পরিত্যাগ করে নতুন কবিতা কাঠামোর জন্ম দিতে হবে। রবীন্দ্রনাথ এক জীবনে চার লাইনের কবিতা যেমন লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন ৪০০ লাইনের কবিতা। নাট্যকাব্য-কাব্যনাট্য কত কিছু! হালকা প্রেমের কবিতা যেমন লিখেছেন, তেমনি লিখেছেন ‘তারকার আত্মহত্যা’র মতো কবিতা।
প্রশ্ন: ভালোবাসার রাতের উৎ সর্গপত্রে আপনি লিখেছেন?
‘আমার পায়ে বরফ ভেঙে চলার তুমি পথ
ব্যপ্ত আমার সমতলের তুমিই পর্বত।’
বোঝা যায় অজস্র পর্যটন শেষে কবি তাঁর তীর্থের সন্ধান পেয়েছেন।
সৈয়দ হক: পর্যটন তো বটেই। কতগুলো বৈপরীত্যে পর্যটন। আলো-অন্ধকার, পাহাড়-সমতল, পৌষ-বৈশাখ মিলিয়ে প্রেমের পূর্ণাঙ্গ রূপ আস্বাদনের অর্থে যদি বলি, তবে আমার তীর্থসন্ধান এখনো চলছে।
প্রশ্ন: ভালোবাসার রাতের ২২তম কবিতায় দেখছি অনন্তকাল কবির কাছে এক মুহূর্ত বলে প্রতিভাত। আবার আরেকটি কবিতায় দেখছি প্রেমের মৌসুমে ‘তখন’ হয়ে যায় ‘এখন’ এবং ‘এখন’ হয়ে যায় ‘তখন’। প্রেম তবে কবিকে কালাকালহীন করে তোলে?
সৈয়দ হক: নিশ্চয়ই। প্রেমের প্রধান কাজ হচ্ছে কালচিহ্ন মুছে দেওয়া। পিকাসোকে তাঁর ৭০ বছর বয়সে প্রেমে পড়তে দেখব। প্রকৃত প্রেমে পতিত হলে ব্যক্তি স্বয়ং ভুলে যায় কোন কালে তার বাস।
প্রশ্ন: এক কবিতায় দেখা যাচ্ছে আপনার নারী প্রণতির ফুল চায় না। চায় তাকে নিবেদিত পদাবলি। বাস্তবেও কি তা-ই?
সৈয়দ হক: ‘দেওয়া-নেওয়া’ কথাগুলো বহু ব্যবহূত হলেও হালকা নয়। পারিতোষিক তো দিতে হয় প্রেমাস্পদকে। প্রেমের ক্ষেত্রে কী পাওয়া গেল, তা বড় নয়। কী দিতে পারছি তা-ই বড় হয়ে প্রতিভাত হয়।
প্রেমের ভেতরে শ্রদ্ধা আছে, স্নেহ, মায়া, মমতা, বন্ধুত্ব আছে। প্রেম এসবের মিলিত রসায়ন। শুধু দেহজ ব্যাপারে আবদ্ধ প্রেম পানসে হতে বাধ্য।
প্রশ্ন: আরেকটি কবিতায় আছে ‘হূদয়-দেশে হূদয়ের দরজা এখনো খোলেনি’। একে শুধু ব্যক্তিগত প্রেম-অপ্রেম হিসেবে নয় বরং আমরা কি বর্তমান হূদয়হীন সময় হিসেবেও ভাবতে পারি?
সৈয়দ হক: অবশ্যই। প্রেম হচ্ছে সে ধরনের উপভোগ, যা আমাকে উত্তোলিত করবে। মানুষ প্রেমে পড়লে উত্তোলিত হয়, দৈর্ঘ্যে বাড়ে। আমি আমার প্রেমের কবিতায় বারবার সে সর্বজনীন বিস্তারের কথা বলে আসছি। আমি হূদয়হীন যুগে বসে আমাদের হূদয়ের দরজা খুলে যাওয়ার প্রতীক্ষায় থাকি।
প্রশ্ন: কবিতাগুলো ঢাকা, কক্সবাজার, সিলেট, চট্টগ্রাম, লন্ডন, দুবাই, নিউইয়র্কে লেখা। দেশ-দেশান্তরে প্রেম আপনাকে তা হলে মুহুর্মুহু তাড়িয়ে বেড়ায়?
সৈয়দ হক: আমি সব সময় লিখি। ভ্রমণকালেও। ভ্রমণও আমার প্রেম। সেই ১৯৫৩ সালে বুদ্ধদেব বসুর কবিতা পত্রিকায় কবিতা লেখার শুরু। তার পর থেকে আমি সব সময় লিখি। দেশ-দেশান্তরে কবিতাও আমার সঙ্গে চলে। আমার কবিতার অনিবার্য বিষয় প্রেমও থাকে করোটিতে আমার ভ্রমণসঙ্গী হয়ে।
প্রশ্ন: ‘তুমি-আমি’কেন্দ্রিক প্রেম পঙিক্তমালায় বাংলা কবিতা জীর্ণ। আমরা কি প্রেমের কবিতায় নতুন কোনো মাত্রা পেতে পারি না?
সৈয়দ হক: ভেবে দেখা উচিত। আমি শুধু কবিতায় নয়, নৃত্যে, সংগীতে, চিত্রকলায়—সব শিল্পমাধ্যমে নিরীক্ষাকে গুরুত্ব দিই। নতুন কিছুর জন্য দরজা খোলা রাখতে হবে।
প্রশ্ন: এক বিষয়ে বহু কবিতা রচনার ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করেন কি?
সৈয়দ হক: আমি সচেতন থাকি। সচেতনভাবে বলতে পারি আমি পুনরাবৃত্তি করিনি। আমি বরং নিত্য পরিব্রাজক এবং সৃষ্টিশীল মানুষের ক্ষেত্রে সেটাই স্বাভাবিক। নতুন সময়, নতুন পরিবেশ, নতুন সংকট, নতুন অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নবায়ন করতে হয়।
প্রশ্ন: আপনি কবি। ভাষামাধ্যমে প্রকাশ করেন অন্তরের সংবেদ। আপনার কাছে কাব্যভাষা কি কবির অন্তর্গত আবেগ পুরোপুরি প্রকাশক্ষম?
সৈয়দ হক: ভাষা তো বাহন মাত্র। আমি ভাষাকে নিজস্ব অধিগত করতে চাই। একদিকে ভাষা ভীষণ বলিবর্দ, অন্যদিকে আমার ভাবনাসমুদয় ভাষা সব সময় ধরতে পারে বলে মনে হয় না। কবিকে অনবরত ভাষার সে রহস্য নিয়ে কাজ করতে হয়। জয়নুল আবেদিন একদা আমাকে বললেন, ‘এই যে গাছের সারির সবুজটি যতই আকাশের দিকে যাচ্ছে ততই নীল হয়ে যাচ্ছে।’ তো সাধারণ চোখে তা ধরা পড়ে না। শিল্পীর চোখে রঙের এই রূপান্তর যেমন ধরা দেয়, কবির কাছেও তার ব্যবহার্য ভাষা নানা মাত্রায় ধরা দেয়। ভাষার সীমাবদ্ধতা হয়তো কবিই দূর করতে পারেন তাঁর অনুভবের গাঢ়তার দ্বারা।
প্রশ্ন: ‘তবুও শেষ আমার নয়
তোমার উদ্দেশ ’
প্রেমের দিকে আপনার পরিব্রাজনের তা হলে কোনো শেষ নেই?
সৈয়দ হক: আসলেই শেষ নেই। প্রতিদিনই নতুনভাবে এই পরিব্রাজন শুরু হচ্ছে। কিন্তু কোথায় যে এর শেষ, তা বোধ হয় মানবজন্মে ঠাহর করা অসম্ভব।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০১০

জেব্রা! – সৈয়দ শামসুল হক

বাংলার প্রান্তরে হঠাৎ আফ্রিকার সাভানার রোদ ঝলসে ওঠে।
তুমিই কি? থেকে থেকে লাফিয়ে উঠতে চাও কোলে।
আমি স্তম্ভিত। এই তুমি! বন্য ও উদ্দাম! এবং উৎকর্ণ।
চাবুকের শব্দ সপাং সপ। বাতাস হচ্ছে রক্তাক্ত।
তোমার ভীতিগুলোই কালো কালো ডোরা—
তোমার মখমল শুভ্রতায় সেই কালো ডোরা—
পোষ-না-মানা তোমার সত্তাকে যারা
চাবুকের তাড়নায় ছিন্ন করে,
তাদেরই তো দাগ তোমার কালোসাদা শাড়িতে।
এবং লাল ফোঁটা মাঝে মাঝে!
তোমার তো রক্তাক্ত হবার কথা নয়।
বরং তুমিই সেই উজ্জ্বল লোহিতের দিকে চোখ পেতে আছো
যা নববধূর অঙ্গে ভোরের নদীটির স্রোতের মতো
প্রবাহিত হয় শাড়ি থেকে!
তুমি এখন শব্দিত হয়ে উঠছ।
তুমি বারবার লাফিয়ে উঠতে চাইছো আমার নিঃসঙ্গ কোলে।
ও আমি তোমার সবুজ প্রান্তর! তোমার অবাধ বিচরণভূমি!
রোদ গলে পড়া জলাশয় যে আমি তোমারই।
আমি তোমার ঘুমিয়ে পড়বার ছায়া-বিতান।
তোমার খুরের দাপট!
তোমার জন্মসহচর স্বাধীনতা।
জেব্রা! অরণ্য থেকে প্রান্তরে!
প্রান্তর থেকে সত্তার এখনো সবুজ চত্বরে।
এবং সেই চত্বরেও তুমি শমিত বা শান্ত নও,
আমার মানব-শরীরে
তুমি জেব্রা উপগত! তুমি ও আমি!
আমাদের ভেতরে জেব্রার দুরন্ত বন্যা—জেব্রাপালের বিশুদ্ধতা
এবং গতিবেগ—মহাদেশ ভেঙে এই বদ্বীপেই তো—
এই গতিবেগেই তো লাফিয়ে ওঠে অক্ষর আমার কলমে
এবং লিখিত হয়ে চলে আমাদের ভালোবাসার বিদ্যুতলেখা।।

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২৩, ২০১১

দরজা – সৈয়দ শামসুল হক

তাহলে দরজারই সমুখে! সেই দরজা! তোমার দরজা!
একদিন যে-দরজা ছিল গরমের খরতাপে বন্ধ ও রঙচটা!
কত সড়কেই না আমি সন্ধান করেছি এমন একটি দরজা
যার পাল্লার কাঠে এসে পড়বে শ্রাবণ-বৃষ্টির সন্তাপহর ধারা।
কিন্তু বিবর্ণ এই সময়, আর আমিও দেখো কী রকম বটে—
তিমির পেটের ভেতরে প্রত্যাদিষ্ট একজন আছি অপেক্ষায়,
কখন বেরুব! তাঁর অপেক্ষারই চাপ আমার সব উচ্চারণে।
একটি বেদনাবৃক্ষ লেবু ফলিয়ে চলেছে জ্যোৎস্নার ভেতরে,
আর সেই জ্যোৎস্না তো আসলে ছিল তোমার ভালোবাসা।
তোমাকে ভালোবেসেই তো আমি দূরপাল্লার যাত্রী, আমি
লেবুগন্ধে মাতাল, আমি প্রতি স্বজনেরই তো দৈনন্দিন পাতে।
সন্ধান আমার শেষ হয় না। দাঁড়াও!—আমি নিজেকে বলছি!
আর এটাও বলে চলেছি, সড়ক তোমাকে একদিন তো ঠিক
ফেরাবেই তোমার প্রার্থিত দরজায়, না হয় এখন খরায়!
নিপুণ তীর, তীক্ষ তীর, রক্তমুখী ভোর, নির্জন সব সড়ক।
এই সব দেখে দেখে নিজের ভেতরেই এক বিচলন আমি
নীলগাইয়ের মতো অনুভব করে চলেছি সেই কতকাল থেকে!
কাল? তার বর্ণটাই বা কেমন? সে কি ঘোর কৃষ্ণলেপিত?
পাটল যেন জমাট রক্ত? নাকি মাঠ ভেসে যাওয়া সর্ষে ফুল?
এই আয়না! ওই দৃশ্যপট! এই সড়ক! আর, ওই দরজা!
নীলগাইয়ের খুরে খুরে উৎপাটিত নক্ষত্র থেকে অগ্নিকণা
এখন আমার সর্বাঙ্গে। কালের আয়নায় আমার চিত্রিত শরীর।
উৎসুক দুটি চোখ, ত্বরিত আমার চলা, পায়ের নিচে পাথর—
আমি তো পৌঁছে যাবারই স্বপ্ন দেখেছি চিরকাল—দরজায়—
তোমারই দরজায়—এখন বৃষ্টিভেজা, শ্রাবণের তুলিতে তার
পাল্লার কাঠে সজল পুষ্পের ছবি ফুটছে একটির পর একটি—
এখনই তো! বৃষ্টিমাথায় দাঁড়িয়ে আছি—খোলো! খুলবে না?

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ২৩, ২০১১

নিঃসঙ্গ কবি, নির্জন রেস্তোরাঁ

মাথার ভেতরে লেখা। অদূরে রেস্তোরাঁ।
আষাঢ় সেজেছে খুব মেঘে মেঘে-মনে সে করাবে
বিরহ বিপন্ন দিন-রাস্তাঘাট আদ্যোপান্ত খোঁড়া।
মাটির পাহাড়গুলো কতদিনে কে জানে সরাবে!

এরই মধ্যে পথ করে নিতে হবে আজ।
অপেক্ষায় কবিতা ও কফি।
হঠাৎ বৃষ্টির শুরু, ধমকাল বাজ।
পিছলে পা পড়ে গেল কবি।

সমস্ত শরীরে কাদা। এভাবে কি যাওয়া যেতে পারে?
বিমূঢ় দাঁড়িয়ে থেকে কেটে যায় কাল।
তবুও কি প্রেম কিছু ছাড়ে?
বিরহেও রয়েছে বহাল!

যদিও পিছল পথ, জামা কাদা লেপা।
হেঁটে চলো, হেঁটে চলো, দাঁড়িয়ে থেকো না।
সময় যতই হোক বিরুদ্ধ বা খেপা-
কবিতাকে ঠেকিয়ে রেখো না।

কবিতা কি থেমে থাকবার!
দুর্গতির একশেষ, খাতা তবু শক্ত হাতে ধরা।
হাতছানি দেয় কফি, আলো রেস্তোরাঁর,
দুধের বদলে ্নৃতি, কালো কফি, শব্দের শর্করা ু

২
বৃষ্টিভেজা গন্ধ ছড়ায় ফুলদানিতে ফুল।
ঘটিয়ে দেয় ইন্দ্রজাল রাতের রেস্তোরাঁয়।
একলা বুকে আছড়ে পড়ে ও কার খোলা চুল।
আষাঢ় এলে পদ্মা পাগল-পেলেই ভূমি খায়!

আগুন ওঠে দপদপিয়ে, লাফাতে চায় খাড়া-
ভোলা তো খুব সহজ নয় চিরে ফেলার ধাঁচ।
অতীতও নয় গেছেন কবি নক্ষত্রের পাড়া,
সেদিন কবি জেনেছিলেন স্বর্গীয় তার আঁচ।

ফুলের সাথে চুলের গন্ধ এখন একাকার।
এখন শুধু গন্ধটুকুই-এবং অন্ধকার ু

৩
কফির গরম গন্ধ। পেয়ালায় আঁকা দুটি ফুল
দীর্ঘ দুটি বৃন্তে তারা পরস্পর জড়িয়ে রয়েছে।
কত দীর্ঘদিন কবি রেস্তোরাঁয় এসেছে ও
একাকী সহেছে
বিরহ বিচ্ছেদ তার। আষাঢ়ের বৃষ্টিপাত হয়েছে তুমুল।

কবিতার খাতাটি পাশেই।
রেস্তোরাঁয় একা কবি চুমুকে চুমুকে
পান করে চলে কফি।
পৃথিবী বিপুল আর লেখার বিষয় তার
হতে পারে সবই।
কিন্তু আজ সেই মুখ-একটি সে মুখ ছাড়া
আর কিছু নেই।

ভোরের প্রথম আলো প্রতি ভোরে পড়ে সেই মুখে।
ফুরোয় না ভালোবাসা-কফি শেষ হয়ে যায়
চুমুকে চুমুকে

৪
সে নেই, তবুও কবি আসে রেস্তোরাঁয়।
ধীরে কালো কফি ঢালে শাদা পেয়ালায়।
এই সে চেয়ার আর এই সে টেবিল।
জানালার পর্দা ওড়ে এখনো তো নীল।
শূন্যতার রং শাদা, মৃত্যু ঘন কালো।
যা ছিল জীবনব্যাপী-মুহূর্তে মিলাল।

এখনো টেবিলে ফুল-ছাইদান পড়ে।
কেবল সে নেই আর। ্নৃতি হয়ে ওড়ে
ছাইদানে ছাই আজ করুণ বাতাসে।
রেস্তোরাঁয় সেদিনের ফুলগন্ধ ভাসে।
স্মৃতির নদীতে নেভা আলোর বিকন।
কালির কলমে লেখা জলের লিখন

সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০৩, ২০০৯

Previous Post

সীমানা ছাড়িয়ে – সৈয়দ শামসুল হক

Next Post

সৈয়দ শামসুল হকের গল্প

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

No Result
View All Result
  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
Next Post
সৈয়দ শামসুল হকের গল্প

সৈয়দ শামসুল হকের গল্প

  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Go to mobile version