আমি বলি, ‘বেশ, আলহামদুলিল্লা।’
আমার মোবাইল বেজে ওঠে, ঢাকা থেকে আমার বড়ো খলিফা।
খলিফা বলেন, ‘কাইল হইব ইছলামের জিহাদের, আমাগো পাকিস্থানের জইন্যে একটা বড় দিন, সেইভাবে কাজ করবা, ডরাইও না, আল্লার রহমত তোমাগো উপরে আছে।’
আমি বলি, ‘হুজুর, ডরানের কোন কারণই নেই, আল্লার রহমতে দেখবেন কালকে আমরা ইখতিয়ারউদ্দিন বিন বকতিয়ার খিলজিকেও ছাড়িয়ে গেছি, পরের দিন পত্রিকা ভ’রে আমরাই থাকবো, ইনশাল্লা।’
খলিফা বলেন, ‘মাশাল্লা, থাকার সঙ্গে আমরা কতা বইল্যা রাখছি, আর পাওয়ারফুল তিন চাইরডা মিনিস্টারগো সঙ্গেও কতা বলছি, তারা এক সোম আর আমাগো প্যাট্রন এমবেছেডারগো লগেও কতা কইছি, ডোনারগো সঙ্গেও কতা বলছি। তারাও তোমাগো দিকে তাকাই আছে।’
আমি বলি, ‘আমরা সব ট্যাকটিক্স ঠিক ক’রে ফেলেছি, আল্লার রহমতে কোনো চিন্তা নাই, ইনশাল্লা কালকে দেখবেন। হুজুর, আপনি মেইন পাটিরে বোঝাবেন।’
খলিফা বলেন, ‘মেইন পার্টিরে বুজাইতে হইব না, তারাই এইখন আমাগো কাছে বুজতেছে। যেইর লিগা ফোন করলাম সেই কথাটা শোনো, ঘণ্টা দুইয়ের মইদ্যেই তোমার কাছে বিশ তিরিশজন ট্রেনিং পাওয়া জিহাদি যাইব, তাগো তালেবানের ট্রেইনিং আছে, আপগানিস্থানে এক বছর আছিল, তাগো পাঠাই দিছি, লগে দশ লাক ট্যাকাও দিছি তোমারে দেওনের জইন্যে।’
আমি বলি, ‘আলহামদুলিল্লা, সোভানাল্লা।‘
খলিফা বলেন, ‘মনে রাইখ্যো আমাগো মিডিল ইস্টের ভাইগো আমরিকার ইহুদিরা শ্যাষ কইর্যা দিতেছে, সেইজন্য এইখানে নতুন মিডিল ইস্ট বানাইতে হইব, আমাগো ডোনাররা আমাগো দিকে চাইয়া আছে।’
আমি বলি, ‘ইনশাল্লা, কাল আর পরশু হবে আমাদের দিন, আমেরিকারে আমরা বুঝিয়ে দেবো জিহাদ কাকে বলে। অগো অ্যামবেসিটাকে একদিন জ্বালিয়ে দিতে হবে।’
খলিফা বলেন, ‘সেইটা পরে হইব, ইনশাল্লা, অখন আমরিকারে খোপান আক্কেলের কাম হইব না, তা তো তুমি বুঝ।’
আমি বলি, ‘হুজুর, আমাদের দোয়া করবেন।‘
খলিফা বলেন, ‘তোমার জইন্য দোয়া রইল, আইজ রাইতে ছুরা ইয়াছিন পাচবার পইর্যো; আল্লা হাফেজ।’
মোঃ হাফিজুদিনের সঙ্গে আরো আলোচনা করি, কিন্তু আমরা জিহাদের ও পাটির নিয়ম মেনে চলি, নেতার ওপর আর কোনো কথা নেই, তাই আমি যা বলবো, তাই হবে। কৌশল আমি আগেই ঠিক করে রেখেছি, তাতে জিহাদি মোঃ হাফিজুদিনের কৌশলগুলোও আছে, আর আমার নিজের কৌশলগুলো।
কালকের দিনটিকে জিহাদের শ্রেষ্ঠ দিন ক’রে রাখতে হবে, যাতে বছর বছর তা আমরা পালন করতে পারি, আমাদের একটি চিরস্মরণীয় শহিদাও দরকার।
আমাদের কাটা এম-১৬ গুলো, রাইফেলগুলো, পিস্তলগুলো, গ্রেনেডগুলো, দাও, শরকিগুলো ঠিক আছে, কয়েক শো বোমাও প্রস্তুত আছে; কে কী করবে: তাও ঠিক করা আছে। তীক্ষ ক্ষুদ্রগুলোও আছে; ওগুলো গোখরোর জিভের মতো, ভেতরের দাঁতের মতো, কিন্তু কাজ করে মনোরমভাবে হাত আর পায়ের রাগ কাটে নিঃশব্দে, আমাদের রয়েছে একদল দক্ষ ক্ষৌরকার। সব কাজে এটম হাইড্রোজেন বোমা দরকার হয় না, আমাদের নানা কাজে ক্ষুর এটম হাইড্রোজেন বোমার থেকেও শক্তিশালী আর নিপুণ; ওগুলো আমাদের পকেটে রাখা এটম হাইড্রোজেন বোমা দরকার হয় না, আমাদের নানা কাজে ক্ষুর এটম হাইড্রোজেন বোমার থেকেও শক্তিশালী আর নিপুণ; ওগুলো আমাদের পকেটে রাখা এটম হাইড্রোজেন বোমা। আমাদের জিহাদিরা সবাই খালেদ ইবনে ওয়ালিদ, মুহম্মদ বিন কাশিম, ইখতিয়ারউদ্দিন বিন বখতিয়ার, তারিক, ওসামা লাদেন, তাদের ওপর আমার ভরসা আছে; যাকে যা কাজ দিয়েছি, তা ঠিক মতো করবে। এইটাই পছন্দ আমার জামাঈদ জিহাদে ইছলামের।
আমরা সব এলাকার নেতারাই থাকি মাদ্ৰাছায়।
এখানে নদীর পারে লম্বা একটি মাদ্ৰাছা ক’রে দিয়েছে আমাদের দলেরই এক মহান সেবক আলহজ কোরবান আলি ব্যাপারি, ইছলাম আর পাকিস্থান যার প্ৰিয় ধন, যে গার্মেন্টস, কন্ট্রাকটরি, এনজিও, সোনা ও অন্যান্য সোনার থেকে দামি জিনিশ চোরাচালানি করে কোটি কোটি টাকা করেছে; প্রত্যেক বছরই হজে যায়, আমি গেছি। একবার। মাদ্ৰাছটির নাম মাদ্ৰাছা-ই-মদিনাতুন্নবি; সে অবশ্য তার জান্নাতবাসিনী মায়ের নামেই এটির নাম রাখতে চেয়েছিলো, কিন্তু আমার পরামর্শে সে এ-নামটি রাখে, রেখে ধন্য হয়।
সে অবশ্য নিজের টাকায় মাদ্ৰাছা করে নি, লিবিয়া, ইরাক, আর সৌদি এনজিও থেকে টাকা পেয়েছে, এটা আমি জানি, আল কায়েদার টাকা পেয়েছে কি না জানি না; যতো টাকা পেয়েছে ততোটা খরচও করে নি, আমাকে বেশ কিছু দিয়েছে, এখানকার অন্যরা জানে না; তাই সে আমাকে মান্য করে। মাদ্ৰাছার সঙ্গেই আছে মসজিদ, সেটিও কোরবান আলি ব্যাপারিই করেছে। এতো পরহেজাগার, ঈমানদার, ও পাক স্তান প্ৰিয় আদমি কমই আছে।
ব্ল্যাক লেবেল, ব্যালেনটাইন, সিভাস রিগ্যালের সাপ্লাইটাও সাধারণত সেই দেয়, এক্সএক্সএক্সও সেই নিয়ে আসে, আমার সঙ্গে পান করতে করতে এক্সএক্সএক্স দেখতে তার ভালো লাগে; তার পছন্দ আবার ব্যাংককের মেয়েগুলো, তার মতে মেয়েগুলোকে চেপে ভর্তা বানালেও তারা বাধা দেয় না, তারা রসগোল্লার মতো নরম, জিভের নিচে রেখে চিপলে রস বেরোয়।
সে একটু মুশকিলে পড়েছিলো, সেটা থেকে তাকে আমি বঁচিয়েছি।
আল্লায়ই আপদ দেন, আর মহান আল্লাতালাই তার বান্দাদের আপদমছিবত থেকে বাঁচান; তার জন্যে সে আমাকে মাঝেমাঝে ‘হুজুর’ বলে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। একেকবার একেকটি পাজেরো নিয়ে আসে, আমার মাত্র একটি পাজেরো, তাও পুরোনো মডেলের। একটি নতুন মডেল চাইলেই পাবো, তবে চাইতে ইচ্ছে করে না।