• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
বুধবার, জুন 11, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

Meku Kahini by Muhammed Zafar Iqbal

দুপুর বেলা আম্মা মেকুকে বগলে নিয়ে বের হলেন, তাকে খাওয়ানোর সময় হয়েছে, কোনো একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে দুধ খাওয়ানোর আগে নিচে ডাটা-এন্ট্রি ঘরে যে সব মহিলারা কাজ করছে তাদের এক নজর দেখে আসতে চান।
নিচের ঘরটিতে প্রায় পঞ্চাশটা কম্পিউটার টার্মিনালের সামনে বসে মহিলারা কাজ করছে, আম্মা ভিতরে ঢুকেছেন সেটা কেউ লক্ষ্য করল না। আম্মা মেকুকে বগলে নিয়ে হেঁটে হেঁটে তাদের কাজ দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন হঠাৎ করে কমবয়সী একজন তরুণী মাথা ঘুরিয়ে আম্মাকে দেখে আনন্দে চিৎকার করে উঠল, “আপা, আপনি এসেছেন?”
তরুণীর চিৎকার শুনে প্রায় সবাই মাথা ঘুরিয়ে আম্মার দিকে তাকাল, আম্মাকে দেখে তারা আনন্দের একটা শব্দ করল এবং মেকুকে দেখে তারা আনন্দের একটা চিৎকার করল। আম্মা হাসিমুখে তাদের আনন্দটুকু গ্রহণ করে বললেন, “তোমাদের কাজ কর্ম কেমন চলছে?”
সবাই কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে । আমতা আমতা করে একজন বলল, “মোটামুটি ভালোই হচ্ছিল, কিন্তু —”
“কিন্তু কী?”
একজন ইতস্তত করে তার সমস্যাটি বলতে শুরু করে তখন আরেক জন তার সমস্যাটা বলতে শুরু করে, সে শুরু করার আগেই আরেক জন তার সমস্যা বলতে শুরু করে এবং কিছুক্ষণের মাঝেই ঘরের সবাই কিছু না কিছু বলতে আরম্ভ করে। আম্মা হাত তুলে থামালেন, বললেন, “মনে হচ্ছে কাজে কিছু সমস্যা আছে।”
সবাই মাথা নাড়লেন। আম্মা বললেন, “সেটা নিয়ে চিন্তা করো না, এখন আমি এসেছি দেখব যেন কোনো সমস্যা না হয়।”
সবাই মিলে আবার একটা আনন্দধ্বনি করল, আনন্দধ্বনিটা নিশ্চয়ই একটু জোরে হয়ে গিয়েছিল কারণ সেটা শেষ হবার সাথে সাথে একটা বাচ্চার কান্না শোনা গেল। আম্মা মাথা ঘুরিয়ে মেকুর দিকে তাকালেন। মেকু নয় অন্য কোনো বাচ্চা কাঁদছে। আম্মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কে, কাঁদে?”
কম বয়সী একটা মেয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়াল, দুর্বল গলায় বলল, “আমার মেয়ে!”
“কোথায় তোমার মেয়ে?”
মেয়েটি নিচু হয়ে তার টেবিলের তলা থেকে একটা বড় কার্ডবোর্ডের বাক্স বের করল, সেখানে কাঁথা মুড়ি দিয়ে একটা ছোট বাচ্চাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। উপস্থিত সবার মুখ থেকে একটা বিস্ময়ের ধ্বনি বের হয়ে আসে। আম্মা কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেলেন। কমবয়সী মেয়েটি অপরাধীর মতো মুখ করে বলল, “ভুল হয়ে গেছে আপা, আর কোনোদিন আনব না। আজকের মতো মাপ করে দেন।”
আম্মা কী বলবেন বুঝতে পারলেন না, তিনি নিজের বাচ্চাকে বগলে ধরে আছেন এরকম অবস্থায় আরেক জন মা’কে তার বাচ্চা আনার জন্যে দোষী করতে পারেন না। কার্ডবোর্ডের বাক্সে বাচ্চাটা গলা ফাটিয়ে তারস্বরে চিৎকার করতে লাগল, এবং সেটা দেখে মেকুকে খুব উত্তেজিত দেখা গেল। সে যে কোনোভাবেই আম্মার বগল থেকে মুক্তি পেয়ে বাচ্চাটার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। আম্মা অবশ্যি মেকুকে ছাড়লেন না, কম বয়সী মা’টিকে বললেন, “তোমার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে শান্ত কর।”
কম বয়সী মা সাথে সাথে নিচু হয়ে বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিতেই বাচ্চাটি ম্যাজিকের মতো শান্ত হয়ে গেল। আম্মা সবার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমাদের আর কতজনের এরকম বাচ্চা আছে?”
পাঁচজন হাত তুলল। আম্মা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তাদের কার কাছে রেখে এসেছ?”
একেক জন একেক রকম উত্তর দিল। কেউ নানির কাছে, কেউ পাশের বাসায়, কেউ ছোট মেয়ে কিংবা ছেলের কাছে। শুনে আম্মা লম্বা নিশ্বাস ফেললেন। কাছাকাছি বসে থাকা একজন মহিলা বলল, আমাদের দুইজন কোনো উপায় না দেখে কাজে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
আম্মা মেকুকে বগলে নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়েই একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। বললেন, কাল থেকে সবাই নিজের ছোট বাচ্চাকে নিয়ে আসবে, আমরা নিচে একটা ঘর ঠিক করব সেখানে আমরা সবাই আমাদের ছোট বাচ্চাদের রাখব। আমাদের ভিতর থেকে একজন সেই বাচ্চাদের দেখে রাখবে।”
বাচ্চাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মা এবং অন্য পাঁচ জন আনন্দে এত জোরে চিৎকার করে উঠল যে কোলের বাচ্চাটি ভয় পেয়ে আবার তারস্বরে কাঁদতে শুরু করল।

রাত্রিবেলা আম্মা আব্বাকে বললেন, “মেকুকে দেখে শুনে রাখার সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি।”
আব্বা অবাক হয়ে বললেন, “কীভাবে?”
আম্মা সবকিছু খুলে বলে চিন্তিত মুখে বললেন, “শুধু একটা জিনিস নিয়ে আমার চিন্তা।”
“কী নিয়ে চিন্তা?”
“মেকুকে নিয়ে। সে যে কী অঘটন ঘটাবে কে জানে!”
আম্মা মেকুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কী রে তোর মাথায় কি কোনো দুষ্টু মতলব আছে?”
মেকু কোনো কথা বলল না, মাড়ি বের করে হাসল। আম্মা সেই হাসি দেখে আরো ভয় পেয়ে গেলেন।

০৩. অফিস – মেকু কাহিনী

আম্মার অফিসের নিচে একটা ঘর পরিষ্কার করে সেখানে মেঝেতে নরম কার্পেট বসানো হয়েছে। খানিকটা অংশ ঘিরে রেখে সেখানে আটটা বাচ্চা ছেড়ে দেওয়ার পর সেখানে বিচিত্র একটা দৃশ্য দেখা গেল। বাচ্চাগুলি কিলবিল করে সেখানে নড়তে শুরু করে। যেগুলি বেশি ছোট সেগুলি চিৎ হয়ে শুয়ে রইল। যেগুলি একটু বড় হয়েছে তার উপুড় হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল, কেউ কেউ উপুড় হয়ে সাংঘাতিক একটা কাজে করে ফেলেছে সেরকম ভান করে মাথা নাড়াতে শুরু করল। যারা আরো একটু বড় হয়েছে তারা হাচড় পাচড় করে কিংবা গড়িয়ে গড়িয়ে নড়তে চড়তে শুরু করে। আকজনের উপর দিয়ে আরেক জন পিছলে বের হয়ে যাচ্ছে, একজন গড়িয়ে যাচ্ছে, এক জন আরেক জনের পা ধরে রেখেছে, কান মাড়ি দিয়ে কামড়ে ধরার চেষ্টা করছে, নাকের মাঝে আঙুল ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে – সব মিলিয়ে একটি অত্যন্ত বিচিত্র দৃশ্য। কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর থেকেক শুরু করে দারোয়ান পর্যন্ত সবাই এই মজার দৃশ্য দেখতে এল। এসে কেউ সেখান থেকে সরে যেতে চাইল না, দাঁড়িয়ে হি হি করে হাসতে লাগল। শেষ পর্যন্ত আম্মা এসে সবাইকে বললেন, “এখানে কী হচ্ছে? সবাই মনে হচ্ছে তামাশা দেখতে এসেছেন? আপনারা কখনো বাচ্চা দেখেন নি?”
বয়স্ক ম্যানেজিং ডিরেক্টর হি হি করে হাসতে হাসতে কোনোমতে হাসি থামিয়ে বললেন, “দেখব না কেন? এক শ বার দেখেছি। কিন্তু আটটা এক সাথে ছেড়ে দিলে যে এরকম মজা হয় তা কখনো দেখি নি!”
দেখা গেল এরকম সময়ে একটা ছোট বাচ্চার উপর চেপে বসে আরেকটা বাচ্চা তার নাক কামড়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। নেহায়েৎ ছোট বাচ্চা বলে দাঁত গজায় নি এবং মাড়ি দিয়ে কোনো কিছু কামড়ে ধরা বেশ কঠিন ব্যাপার কাজেই সে বিশেষ সুবিধে করতে পারল না, এবং সেই দৃশ্য দেখে ম্যানেজিং ডিরেক্টর থেকেক শুরু করে দারোয়ান পর্যন্ত সবাই হো হো করে হেসে উঠল। আম্মা তখন রেগে উঠে বললেন, “ব্যাস অনেক হয়েছে। এখন সবাই নিজের কাজ কর্ম করতে যান।”
সবাই বেশ মনক্ষুণ্ণ হয়েই নিজের কাজে ফিরে গেল। এই ঘরটিতে আটটা বাচ্চাকে দেখে শুনে রাখার জন্যে রেনু নামে কমবয়সী মা’টিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সে খুব খুশি হয়ে এই কাজটি করতে রাজি হয়েছে। কাজ শুরু করার একটু পরেই অবশ্য রেনু আবিষ্কার করেছে কাজটি খুব সহজ নয়। আট জন বাচ্চার মাঝে একজন না হয় অন্য একজন খানিকক্ষণ পর পরই কোনো কারণ ছাড়াই গলা ছেড়ে কাঁদতে শুরু করে। তাকে দেখে বা তার কান্না শুনে তখন অন্য আরেক জন কাঁদতে শুরু করে এবং তাকে দেখে আরেকজন। কিছুক্ষণের মাঝেই সবাই মিলে গলা ছেড়ে কাঁদতে শুরু করে, তখন তাদের সামলানো খুব দুরূহ ব্যাপার। রেনু অবশ্যি বাচ্চাদের শান্ত করার কায়দা কানুন খুব ভালো জানে কিছুক্ষণের মাঝেই তাদের শান্ত করে ফেলতে পারে। এক দুই দিনের মাঝেই সে আট জন বাচ্চাকে দেখে শুনে রাখার ব্যাপারে মোটামুটি একটা রুটিন দাঁড় করিয়ে ফেলল। কখন কে ঘুমাবে কে জেগে থাকবে, কার মা এসে দুধ খাওয়াবে এই ব্যাপারগুলিও সে আগে থেকে ঠিক করে ফেলল। দেখতে দেখতে কোম্পানির সবাই ব্যাপারগুলিতে মোটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেল। আম্মাও মেকুকে নিয়ে নিশ্চিত হয়ে গেলেন। রোজ অফিস থেকে বাসায় যাবার সময় মেকুকে বগল দাবা করে নিয়ে যান। গাড়িতে বসে কোলে নিয়ে জিজ্ঞেস করেন, “কীরে মেকু সোনা? তোদের বাচ্চাদের হাট কেমন চলছে?”
মেকু তখন মাড়ি বের করে একটা হাসি আম্মাকে উপহার দেয়। আম্মা বুঝতে পারে সবকিছু ভালোভাবে চলছে।
তবে দেখা গেল পৃথিবীতে কোনো ভালো জিনিসই একটানা চলতে পারে না। মেকুর বেলাতেও সেটা সত্যি প্রমাণিত হল। সপ্তাহ দুয়েক পর দেখা গেল প্রজেক্ট শেষ করার জন্যে কাজের চাপ অনেক বেড়েছে, রেনুকে আর বাচ্চাদের কাছে বসিয়ে রাখা যাচ্ছে না – তাকেও ডাটা এন্ট্রি শুরু করতে হবে। বাচ্চাদের দেখে শুনে রাখার জন্যে সেলস ডিপার্টমেন্ট থেকে দুরানী নামে এক মহিলাকে আনা হল, কাজ বুঝিয়ে দিতে এল অফিস সেক্রেটারি। দুরানী ছোট ঘরটিতে আটটি বাচ্চাকে এভাবে কিলবিল করতে দেখে রীতিমত আঁতকে উঠল, বলল, “এগুলি কী?”
সেক্রেটারি মহিলাটি বলল, “বাচ্চা।”
“বাচ্চা এত ছোট হয় নাকি?”
“হ্যা। আরো ছোট হয় এখন একটু বড় হয়েছে।”
“এদেরকে এখানে আনার দরকার কী ছিল?”
সেক্রেটারি মহিলা একটু অধৈর্য হয়ে বলল, “আরেকটু হলে আমাদের প্রজেক্টের বারটা বেজে যেত। শাহানা ম্যাডাম এই ব্যবস্থা করে কোনোমতে কাজ উদ্ধার করেছেন।”
দুরানী মাথা নাড়ল, বলল, “আমার আন্দাজ করা উচিত ছিল। নিশ্চয়ই শাহানা ম্যাডামের কাণ্ড।” তারপর গলা নামিয়ে বলল, “পুরোপুরি মাথা খারাপ।”
“কেন? মাথা খারাপ হবে কেন?”
“আরে, তিন মাসের ম্যাটারনিটি লিভ পেয়েছে, কোথায় শুয়ে বসে কাটাবে তা না একমাস পরে বাচ্চাকে বগলে নিয়ে অফিসে চলে এসেছে!”
“না এলে কী বিপদ হত, জান?”
“আমার এত কিছু জানার দরকার নেই। কী করতে হবে বল?”
“এই বাচ্চাদের দেখে শুনে রাখ। ঘুমের সময় হলে ঘুম পাড়িয়ে দাও। বাথরুম করে দিলে কাপড় বদলে দাও।”
দুরানী চিৎকার করে বলল, “বাথরুম করে দিলে – এই গুলি বাথরুমও করে নাকি?”
সেক্রেটারি মেয়েটা হেসে বলল, “ছোট বাচ্চা বাথরুম করবে না? ঘণ্টায় ঘণ্টায় এরা বাথরুম করে।”
দুরানী মুখ শক্ত করে বলল, “ছোট বাথরুম নাকি বড় বাথরুম?”
“ছোট বড় মাঝারী সবরকম বাথরুম।”
“মাঝারী? মাঝারী মাথ্রুম আবার কোনটা?”
“খাওয়ার সময় ছোট বাচ্চাদের কোনো হিসেব থাকে না, যেটুক দরকার তার থেকে বেশি খেয়ে হাঁসফাঁস করতে থাকে। তখন ঢেকুর তোলাতে হয়, ঢেকুর না তুললে অনেক সময় খাবার উগলে দেয়।”
দুরানী কেমন যেন শিউরে উঠল। বলল, “ তার মানে দাঁড়াল এই বুয়াদের আণ্ডা বাচ্চাদের পেশাব বাথরুম বমি আমাকে পরিষ্কার করতে হবে?”
“বুয়া? বুয়া বলছ কেন? শাহানা ম্যাডামের বাচ্চাটাও আছে এখানে।”
“শাহানা ম্যাডামের বাচ্চার কথা ছেড়ে দাও। শাহানা ম্যাডাম হচ্ছে পাগল। বাচ্চার নাম রেখেছে মেকু। মেকু একটা নাম হল?”
সেক্রেটারি মহিলা বলল, “কেন? খারাপ কী নামটা। মেকু শুনতে তো আমার ভালোই লাগে।”
“তোমার ভালো লাগলেই তো হবে না। সবার ভালো লাগতে হবে। শুধু মেকু নাম রাখে নি, মেকু নাম রেখে সেই বাচ্চাকে বুয়াদের বাচ্চাদের সাথে ছেড়ে দিয়েছে। সেখানে অন্য বাচ্চাদের সাথে কিলবিল করছে!” দুরানী আঙুল দিয়ে বাচ্চাদের দেখিয়ে বলল, “ দেখো, এখানে দেখে বোঝা যায় কোনটা শাহানা ম্যাডামের বাচ্চা আর কোনটা বুয়াদের বাচ্চা? বোঝা যায়?”
সেক্রেটারি মহিলা মাথা নেড়ে বলল, “না, বোঝা যায় না। গরিবের বাচ্চা আর বড়লোকের বাচ্চার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।”
“ছিঃ ছিঃ ছিঃ ! বুয়াদের বাচ্চার সাথে কামড়া কামড়ি করছে।”
সেক্রেটারি মহিলা ভুরু কুঁচকে বলল, “আমি একটা জিনিষ বুঝতে পারছি না। তুমি একটু পরে পরে বুয়াদের বাচ্চা বলছ কেন? এরা কেউ বুয়া নয়। সবাই ডাটা এন্ট্রি অপারেটর।”
দুরানী নাক দিয়ে ফোঁস করে নিশ্বাস ফেলে বলল, “রাখো তোমার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। এরা সবগুলি ছিল কাজের বুয়া। তোমার মাথা খারাপ শাহানা ম্যাডাম ট্রেনিং দিয়ে এদেরকে তৈরি করেছে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। লাভের মাঝে লাভ কী হল? এখন ঢাকা শহরে আর কাজের বুয়া পাওয়া যায় না।”
সেক্রেটারি মহিলা বলল, “তোমার যা খুশি হয় বল। কিন্তু আমাকে বলা হয়েছে তোমাকে তোমার কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যে। আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি। তুমি এই বাচ্চাগুলি দেখে রাখ।”
সেক্রেটারি মহিলা চলে যাবার পর দুরানী চোখে বিষ ঢেলে বাচ্চাগুলির দিকে তাকাল। ঠিক তখন একটি বাচ্চা আরেকটি বাচ্চার পেটে খামচি দিয়ে তাকে কাদিয়ে দিল। তার কান্না শুনে পাশের বাচ্চাটি কেঁদে উঠল, এবং এই দুজনের কান্না শুনের এক সাথে অন্য সবাই কাঁদতে শুরু করে – একেবারে শেয়ালের ডাকের মত। দুরানী কী করবে বুঝতে না পেরে মুখ বিকৃত করে একটা ধমক দিয়ে বলল, “চোপ । আমি বলছি চোপ! টু শব্দ করলে আমি কিন্তু গলা চেপে ধরব।”
বাচ্চাগুলি দুরানীর কথায় কোনো গুরুত্ব না দিয়ে মুখ হাঁ করে বিকট গলায় কাদতেই লাগল।
সেদিন সন্ধেবেলা বাসায় যাবার সময় আম্মা মেকুকে বগলদাবা করে জিজ্ঞেস করলেন, “ মেকু, তোদের নতুন মহিলাটি কী রকম?”
মেকু মুখ ভেংচে জিব বের করে ভ্যারররররররর ধরনের একটা শব্দ করল। আম্মা বুঝতে পারলেন দুরানীকে পছন্দ হয় নি – হওয়ার কথাও না। সব সময়ে সবজায়গাতেই যে পছন্দের মানুষ পাওয়া যাবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই।

Page 10 of 19
Prev1...91011...19Next
Previous Post

বৃষ্টির ঠিকানা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

Next Post

যখন টুনটুনি তখন ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

Next Post

যখন টুনটুনি তখন ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

রাজু ও আগুনালির ভূত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In