মরণ ডালি লজ্জা পেয়ে বললে, কি যে কন? এইগুলো অইলো গিয়া আপনের ভক্কর-চক্কর, ঠ্যাকার কাম চালাইন্যা পাক…
দুপুর শেষ হবার আগেই নৌকো ছাড়ে মরণ ঢালি। জাঙ্গাইলা বোলতলী, বাইল্যাগাঁও, ভোগদা, একটার পর একটা গ্রামের পাশ কাটিয়ে নৌকো এগোয়। নৌকোর ভেতরে দালামোচড়া হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল রেখা। মরণ ঢালি ছইয়ের মুখে একটা ছালা টানিয়ে দিয়েছিল। গলুইয়ে বসে থাকতে থাকতে আবদুল খালেকেরও যেন কেমন একটু তন্দ্রার ভাব এলো।
একটু পরে মরণ ঢালি বললে, ভিতরে গিয়ে বহেন স্যার। পাথাইল্য হোত। এলা ভান কইরা মান্দার বনে নাও ঢুকায়া দিবার পারে।
একটু একটু করে বিকেল মরে আসে। খালের ঘোলা পানি আর কলরব দেখে আবদুল খালেক বোঝে, এখন তারা পদ্মার খুব কাছে।
মরণ ঢালি একটা বাঁক পার হবার পর পানির তোড়ের দিকে চোখ রেখে বললে, রাগ দেখছেন নি!
বিকেল শেষ হবার আগেই লৌহজং পৌঁছায় নৌকো। আবদুল খালেক গায়ে হাত দিয়ে রেখাকে জাগায়। রেখা বললে, আমার তো আর বেরুনোর উপায় নেই–
নৌকোর ওপরে বসে দ্যাখো–
শাড়ির আঁচলে কানমাথা সব টেকে ছইয়ের মুখে নেমে বসে রেখা। আবদুল খালেক নৌকো থেকে নেমে হাঁটতে থাকে।
এখন তাহলে এই! এই অবস্থা!
বেশ দূরে সরে গেছে পদ্মা। পালতোলা নৌকোর বহর আবছা আবছা দেখা যায়। যা ভেবেছিল এখন আর তার কিছুই নেই। হাজা-মজা, শুকনো। এই লৌহজং নামটা তার মাথার ভেতরে অন্ধকারে দোলা দূর নৌকোর বাতির মতো এখন টিপ টিপ করে জ্বলে। গোয়ালন্দ, আরিচা, ভাগ্যকুল, তার পাশা, ষাটনল, এই নামগুলোর ভেতরে এখন সে দারুণ এক দীর্ঘশ্বাস শুনতে পায়।
ভাবতেই পারে নি আবদুল খালেক, এমনভাবে তাকে হতাশ হতে হবে। তার সব উৎসাহে ভাটা পড়ে। কেন এলো এতোদূর, শুধু একটা নামের জন্যে, লৌহজং একটা নাম, এই নামের জন্যে।
কতোকাল আগেকার কথা সেসব, মাঝরাতে হঠাৎ এক শোরগোল তার কানে এলো, ভাগ্যকুল, ভাগ্যকুল! তারপাশা, তারপাশা!
কতোকাল আগেকার কথা সেসব? সেই অস্ট্রিচ, সেই এমু, সেই কিউই, সেই সব ইস্টিমার, কতোকাল আগের কথা সে সব?
আবদুল খালেকের মনে হলো, তার ভেতরের সব ঘোলা পানি এখন শান্ত, তাতে আর ঢেউ নেই। এক একটা বড় ফ্ল্যাট, ক্যান্টারবেরি, পোর্টমাউথ, লীখ, হালোয়ারা, তার দেহের ওপরে থরথর করে ভেসে আসে।
এইভাবে সবকিছু একদিন গল্প হয়ে যায়। জীবনে সেই প্রথম, এক গভীর রাতে, তার কানে বেজে উঠেছিল–লৌহজং, লৌহজং। পাশে দাঁড়িয়ে মনি ভাইজান, মনি ভাইজানের জামার পকেটে একটা ফিতে, ফিতেয় চুলের গন্ধ, যে গন্ধে অনেক দুঃখ, যে দুঃখে অনেক ভালোবাসা, যে ভালোবাসায় অনেক ছেলেবেলা…।
এইভাবে সবকিছু একদিন গল্প হয়ে যায়। জীবনে সেই প্রথম, এক অন্ধকার রাতে তার কানে বেজে উঠেছিল—তারপাশা তারপাশা! পাশে দাঁড়িয়ে মনি ভাইজান, মনি ভাইজানের হাতে একটা লোহার ক্লিপ। মনি ভাইজান বিড়বিড় করে হাওয়ার কানে কানে বললে, আমরা যি কোথায় যাচ্ছি!
কে জানে, কে কোথায় যায়!
গোয়ালন্দ থেকে নারায়ণগঞ্জ–পথ যেন আর শেষই হতে চায়। মনি ভাইজানকে দেখা যাচ্ছিল কুয়াশাছন্ন। কেউ যেন তাকে মুছে দিয়েছে। ঝাপসা, অস্পষ্ট। এইসব ভাবলো আবদুল খালেক। নৌকোয় ফিরে এলো।
তাকে ফিরতে দেখে মরণ ঢালি বললে, নাওয়ের ইলশা পাইলেন নি?
তুমি নৌকো ছাড়ো–-
আবদুল খালেক ছইয়ের ভেতরে ঢুকে কাত হয়ে শুলো।
রেখা বললে, তোমাকে অমন দেখাচ্ছে কেন?
কেমন দেখাচ্ছে? অন্যমনস্কভাবে জিগ্যেস করে আবদুল খালেক।
কই দেখি—কপালে হাত দিয়ে দেখে রেখা বললে, গা তো ঠিকই আছে, ভেবেছিলাম বুঝি জ্বর এসেছে–
আবদুল খালেক কিছুটা পরে বললে, এই লৌহজং আমি আগেও একবার দেখেছি, এখন যেন অন্যরকম, না এলেই বোধহয় ভালো ছিল—
মরণ ঢালি নৌকো ছেড়ে দিয়েছিল আগেই। আবদুল খালেক লম্বা হয়ে শুয়ে হাতের ওপর মাথা রেখে বলতে থাকলো, দেখেছিলাম স্টিমার থেকে, তখন এই এতটুকু, সঙ্গে মনি ভাইজান–
রেখা বললে, আজ তোমার মনি ভাইজানের কথা বলো, কতো কথা তো হয়, কিন্তু আসল কথা তো একদিনও বললে না! আমার খুব ইচ্ছে করে জানতে–
কি বলবো, কি আছে বলার। ভাঙাচোরা মানুষকে নিয়ে কি-ইবা এমন থাকে বলবার, সে তোমার ভালো লাগবে না–
রেখা অনুনয় করে বললে, তবু তুমি বলো, লক্ষ্মীটি—
আবদুল খালেক বললে, তখন তো কিছু বুঝতাম না, একটা শালিক পাখির জন্যে কি হাহাকারটাই না ছিলো বুকের ভেতর। একদিন দেখা না পেলে সবকিছু মিথ্যে হয়ে যেত, একটা ভাঙা কাচের শেকলকে কতো যত্ন করেই না লুকিয়ে রেখেছি। এখন কাচের সেই শেকল গলায়, না পারি খুলতে, না ফেলতে, খুলতে গেলে যদি গলা কেটে যায়—
রেখা বললে, এই বুঝি তোমার মনি ভাইজানের কথা হচ্ছে?
কিভাবে বলবো, কি এমন জানতাম, না, কিছু না। আমি ছিলাম সকলের ছায়ায় ছায়ায়, কেউ চাইতো না সামান্য একটু রোদ লাগুক গায়ে, রাতে ঘুমের ঘোরেও খুঁজতাম, বিছানা হাতড়ে দেখতাম কাছে কেউ আছে কি না, এইভাবে গায়ে গায়ে, ছায়ায় ছায়ায় আমি বড় হচ্ছিলাম। কলেজে ভর্তি হয়ে যাবার পর থেকে টিপু ভাইজান হয়ে গিয়েছিল দূরের মানুষ, নাগাল পাওয়া খুব শক্ত ছিল। আমার ছিল মনি ভাইজান। যখন একা একা বসে থাকতাম চোখ ভরে আসতো পানিতে, কেবলই মনে হতো যদি কোনোদিন মনি ভাইজানের কিছু হয়ে যায় আর যদি ঘরে না ফেরে। কেন যে এরকম মনে হতো! অথচ মনি ভাইজান ছিল একেবারে উল্টো ধাচের। বকাঝকা করলে, সেদিন হাঁড়ি উল্টে আরো বেশি করে খেত। মা বলতো, বেহায়া তোর যে কি হবে! রেগে গেলে আব্বা বলতো, কি আবার হবে, পুঁতলে চারা হবে। এসব যে গ্রাহ্য করার ব্যাপার, মনি ভাইজানকে দেখে কখনই তা মনে হতো না। এরপর হুট করে একদিন পাকিস্তান হয়ে গেল। কি হলো না হলে অতো বুঝতাম না, কেবল মনে আছে আমাদের বাড়িতে একটা অস্বাভাবিক নীরবতা নেমে এলো সেদিন। বাইরে রাস্তায় হুড়োহুড়ি রসগোল্লা ছোঁড়াছুঁড়ি বহু কিছু চলছিল, অথচ আমাদের কিছু করবার নেই, আব্বা বললে, কেউ বাইরে যেও না, ঘরে থাক সবাই। তা আমরা ঘরেই থাকতাম। দুএকদিনের মধ্যেই বুঝলাম এমন একটা কিছু ঘটে গেছে যাতে আমরা কেউই ভালো নেই, আমাদের আর ভালো থাকা সম্ভব নয়, আমাদের পরিবারের সুখ-শান্তি চুরি হয়ে গেছে। আব্বাকে সবসময় দেখতাম থমথমে। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে তর্ক হতো। আর অনেকের সঙ্গেই তর্ক হতো। শেষে সকলের অমতে আব্বা পাকিস্তানে চলে এলেন। এতদিন তবু একরকম ছিল। আমরা ইস্কুলে যেতাম, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতাম, কেউ কেউ এসে ডাকতো। এই ডাকাডাকিটা কেন যেন বন্ধ হয়ে গেল। এক সময় দেখি আর কেউ আসে না, আর কেউ এসে বাইরে যাবার জন্যে ডাকে না। কি সব কানাঘুষো হয়, হারিকেন জ্বেলে সারারাত বিছানায় বসে বসে মা আমাদের পাহারা দ্যায়, কিছু বুঝি না কেন। আব্বা পাকিস্তানে চলে আসাটাকে কেউ ভালো চোখে দেখে নি। আব্বা বলতো মাথা উঁচু করে চলতে পারাটাই বড় কথা। যেখানে মাথা উঁচু করে থাকতে পারবো, সেটাই দেশ। মা বলতো তাই বলে সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে অজানা এক দেশে আমাদের থাকতে হবে। এটা কোন কথা। আমি কোথাও যাবো না, মরতে হলে এইখানেই মরবো, কপালে যা থাকে তা হবে। এ কথায় খেপে উঠতো আব্বা। বলতো দেশ আবার কি, এক দেশ না ছাড়লে আরেক দেশ পাওয়া যায় না। সকলের জীবনেই একবার হিজরত আছে। রুসুলুল্লার কথা ভুলে গেলে? তিনি মদিনা শরীফকেই বেছে নিয়েছিলেন— কেনারাম কাকা মাকে প্রবোধ দিয়ে বলতেন, আমরা সবাই তো আছিই, দেশ ছেড়ে যাবে কেন, আজন্মকালের সম্পর্ক! কিভাবে যে চলছিল, মনেও নেই সব। সবসময় ঘরের ভেতর গুমোট, কারো মুখের দিকে তাকানো যায় না, এক এক সময় টিপ ভাইজান এক একটা খবর নিয়ে আসে, তাই নিয়ে সলাপরামর্শ হয়, গুজগুজ হয়, অতশত আমাদের মাথায় ঢুকে না। কেবল এটুকুই বুঝতাম, কোথাও না কোথাও একটা জটিল গলদ দেখা দিয়েছে, কারো কোনো কিছুতেই কোনো স্বস্তি নেই, কেউ মন খুলে কথা বলে না, এই রকম। মাঝে মাঝে দুএকজন জিজ্ঞেস করে, হ্যারে তোর বাবা পাকিস্তানে গেল কেনরে, তোর বাবা নাকি ভালো লোক নয়? এইসব শুনে মন খারাপ হয়ে যায় ভীষণ, ইচ্ছে করে না কারো সঙ্গে মিশি, কারো সঙ্গে কথা বলি। আমি যে মুসলমান, ধীরে ধীরে তা বুঝতে পারার জন্যে কষ্টো হয়, নিজেকে অপরাধী মনে হয়। এইভাবেই চলছিল, কোনো একভাবে চলছিল, হঠাৎ টিপু ভাইজানের কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। ঘরের বাইরে বেরুনো বারণ হয়ে গেল আমাদের। কেনারাম কাকা মাকে এসে কি কোথায় সব বললো। এলেন দুর্গাদাস বাবু, নির্মল কাকা। কি কোথায় সব বোঝালেন টিপু ভাইজানকে, মাকে। আমরা অন্য কেউ কিছু বুঝলাম না। মনি ভাইজান টিপু ভাইজানকে জিগ্যেস করলে, এত গুজগুজ কিসের, কি ব্যাপার। খেপে গিয়ে টিপু ভাইজান বললে, তোর অতো মাথা ঘামানোর কি আছে, সব কথা তোকে শুনতে হবে। আমরা থাকি দূরে দূরে, ভয়ে; যখন এইসব কথা হয় ধারে কাছে থাকলে টিপু ভাইজান খাউ করে ওঠে। হঠাৎ একরাতে এলো একটা ট্রাক। তাড়াহুড়ো করে কিছু বাঁধাছাদা হলো। ট্রাকে বসে নির্মল কাকা। বললেন, দেরি করো না, দেরি করাটা উচিত হবে না। বেশকিছু মালপত্র তোলা হলো ট্রাকে। টিপু ভাইজান বললে, তোরা সবাই এক এক করে ট্রাকে ওঠ, মালপত্রের সাথে বসে থাক। মা বললে, আমরা পাকিস্তান যাচ্ছি বাবা। মনি ভাইজান বললে, তোমরা যাও আমি যাবো না। মা মনি ভাইজানের পিঠে হাত রেখে বললে, টিপু যা বলছে তাই কর, চারদিকে খুনোখুনি হচ্ছে, ট্রাকে গিয়ে বোস, এই বলে মা দেয়ালে মাথা রেখে কান্না শুরু করলে। মনি ভাইজান চুপিচুপি আমাকে বললে, পোকা শোন, আমার সঙ্গে চল কাজ আছে। আমি মনি ভাইজানের চোখ দেখে ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। আমার হাত ধরে মনি ভাইজান দৌড়তে শুরু করলো। বললে আরো জোরে ছোট, পা চালা। বারবার আমি পেছনে যাই। মনি ভাইজান আবার দাঁড়িয়ে পড়ে। ধমক মারে আর বলে এক গাট্টা মেরে খুলি উড়িয়ে দেবো তোর মাথার, শুয়োর কোথাকার, আরো জোরে দৌড়ো, আরো জোরে। মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে আমি দম নিয়ে নিই, আবার ছুটতে থাকি, ছোটা যেন আর শেষই হয় না। শেষে ছবিদিদের বাগানে পৌঁছে আমরা থামি। মনি ভাইজান বললে, একটু জিরিয়ে নে, কেউ কিছু জিগ্যেস করলে কিছু বলবি না, বলবি রানির কথা, রানি একটা বই নিতে পাঠিয়েছে। চুপি চুপি ছবিকে বলবি আমার কথা, আমি এইখানে। পারবি তো? বললাম, পারবো। সেই অন্ধকারে ছবিদিদের বাড়ির পেছনের বাগানে ডেকে আনলাম। ছবিদি পড়ার ঘরে একা বসেছিল একটা বই নিয়ে। বললাম, মনি ভাই তোমাকে ডাকে ছবিদি, পেছনের বাগানে দাঁড়িয়ে। ছবিদি চোরের মতো পা টিপে টিপে মনি ভাইজানের সামনে এসে দাঁড়ালো। মনি ভাইজান, পুকুরে ডুবে যাওয়ার মতো হাঁসফাস করে বললে, ছবি, আমরা চলে যাচ্ছি। ছবি, আমরা আর এখানে আসবো না, আমাকে মাফ করে দাও। কোনো কথা না বলে মাটির ওপরে বসে পড়লো ছবিদি, ফুপিয়ে উঠলো। মনি ভাইজান আবার বললে, আমরা চলে যাচ্ছি ছবি। ছবিদি বললে, মনিদা কোনোদিন মন থেকে তোমাকে গাল দিই নি–। মনি ভাইজান বললে, আমাকে কিছু দাও ছবি, আমাকে কিছু দাও। উঠে দাঁড়িয়ে ছবিদি বললে, কি নেবে মনিদা, কি নেবে তুমি? মনি ভাইজান বললে, তোমার যা খুশি, যা দিতে পারো, হাতে সময় নেই, দেরি হয়ে যাচ্ছে, দাও। ফস করে মাথা থেকে ফিতে খুলে দিল ছবিদি। বললে, এটা নেবে? মনি ভাইজান ভিক্ষা নেওয়ার মতো দুহাত পেতে বললে, তোমার মাথার কাটা, ক্লিপ, যা পারো,সব দাও। ছবিদি দিলো। দিয়ে হু-হু করে কেঁদে উঠলো। বললে, মনিদা, আমি মরে যাবো, আমি মরে যাবো। মনি ভাইজান অন্যদিকে তাকিয়ে বললে, আমি আসবো, যে করেই হোক আমি আসবো ছবি, তুমি থেকো। তারপর আবার ছোটা। ছুটতে ছুটতে আবার ফিরে আসি দুজনে। সকলে ট্রাকে। টিপু ভাইজান আমাদের জন্যে ছটফট শুরু করে দিয়েছে। কাছে আসতেই ঠাস করে একটা চড় মারলো মনি ভাইজানের গালে। বললে, শুয়োর কোথাকার, কোথায় গিয়েছিলি, লাট সাহেবের জন্যে সবাই বসে থাকবে। কোনো কথা না বলে মনি ভাইজান ট্রাকে উঠলো। কেনারাম কাকা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, ভালো থেকো, যেখানেই যাও ভালো থেকো, মানুষ হয়ো–