কোথায় গেছে?
প্রথমে বারহাট্টা। সেখান থেকে যাবেন মেঘালয়ে। তাঁর কোন জ্ঞাতি খুঁড়ো থাকেন তার কাছে যাচ্ছে। ঐখানেই থাকবে।
আমার অবাক হওয়ার ক্ষমতাই নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকক্ষণ কোনো কথাই বলতে পারলাম না। সফিক বললো, কী জন্যে থাকবে সে? তিন পুরুষের কুলধৰ্ম ছাড়তে পারে কেউ?
আর আসবে না ফিরে?
না।
সফিক হঠাৎ বিছানায় উঠে বসে উত্তেজিত স্বরে বলল, নিশানাথ না থাকুক তুই তো আছিস। দুজনে মিলে দেখা না কী কাণ্ড করি। আমি চুপ করে রইলাম। সফিক শুয়ে পড়ল। গায়ে হাত দিয়ে দেখি বেশ জ্বর। সফিক আচ্ছন্নের মত বলল, জ্যোতির্ষিণব কিন্তু সত্যি ভাল হাত দেখে। আজ আমি অবাক হয়েছি –খুব অবাক হয়েছি তার ক্ষমতা দেখে।
আমি কৌতূহলী হয়ে বললাম, কী বলেছে জ্যোতির্ষিণব?
সফিক সে কথার জবাব দিল না। আমি অবাক হয়ে দেখি তার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়ছে। অশ্রু গোপন করবার জন্যে সে দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মৃদু স্বরে বলল, শুধু জ্যোতির্ষিণব কেন তুই নিজেও যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাস আমার তাতে কিছুই যাবে আসবে না। আমি ঠিক উঠে দাঁড়াব।
সেই রাত্রে একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। যেন আদিগন্ত বিস্তৃত একটি সবুজ মাঠ। মাঠের ঠিক মাঝখানে সফিক দাঁড়িয়ে আছে একা একা। তার গায়ে মুকুট নাটকের মধ্যম রাজকুমারের পোশাক। আকাশ ভরা জ্যোৎস্না। জ্যোৎস্না ভেজা সেই রাতে সবুজ মাঠের মাঝখান থেকে সফিক যেন হঠাৎ ভয় পেয়ে ছুটতে শুরু করল।
ঘুম ভেঙে গেল আমার। বাইরে এসে দেখি ফকফকা জ্যোৎস্না হয়েছে। বারান্দার মেঝেতে অপূর্ব সব নকশা। পায়ে পায়ে এগিয়ে উঁকি দিলাম। সফিকের ঘরে।
সফিক অন্ধকারে বসে চা খাচ্ছে একা একা। আমাকে দেখে সে হাসি মুখে ডাকল, চা খাবি রঞ্জু? আয় না, জ্বরটা সেরে গেছে। আমার বেশ লাগছে এখন।
অকারণেই আমার চোখে জল আসল।