বাংলার ভূতের শুরুটা এ রকম–
“Because the ghosts are mot there” might be
reason enough to write a book about ghosts. But
fortunately, there are better reasons than that.
Ghosts in its various guises, has been a subject
of enduring faciantion for millennia.
বই লেখা শুরু হয়েছে, এই সুসংবাদটা বাংলা একাডেমীর ডিজি সাহেবকে দেওয়ার জন্যে টেলিফোন করেছিলাম। তিনি মনে হয় খুবই বিরক্ত হয়েছেন।
কর্কশ গলায় বললেন, আপনি হিমু? সেই হিমু যে অসময়ে টেলিফোন করে আমাকে বিরক্ত করে?
জি স্যার। একটা সুসংবাদ দেওয়ার জন্যে টেলিফোন করেছি। বই লেখা শুরু হয়ে গেছে স্যার।
কী বই লেখা শুরু হয়েছে?
‘বাংলার ভূত’ নামের বইটা। ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে, আপনাদের কষ্ট করে বাংলায় অনুবাদ করে নিতে হবে।
ডিজি সাহেব দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন। আমি বললাম, ইংরেজি ভার্সানটা আমরা পেঙ্গুইন থেকে বের করতে চাচ্ছি। স্যার, ওদের কোনো নম্বর কি আপনার কাছে আছে?
না।
বইটার ইংরেজি ভার্সান যদি পড়তে চান চলে আসবেন। আমার ঠিকানাটা কি দেব?
ডিজি সাহেব কঠিন গলায় বললেন, হ্যাঁ ঠিকানা লাগবে। আমি আসব। আমি অবশ্যই আসব। তোমার সঙ্গে আমার বোঝাপড়া আছে।
আরেকটা ছোট কথা স্যার। একটা বাংলা শব্দের মানে জানা অতীব প্রয়োজন। বল্টু স্যার চাচ্ছেন। শব্দটা হলো ‘অনিকেত’। স্যার, এই শব্দের অর্থ কি আপনাদের জানা আছে?
ডিজি স্যার বললেন, এর অর্থ তোমার মাথা।
খালু সাহেব রাগকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজ বাড়িতে ঢুকতে গিয়েছিলেন। অনেকবার বেল টেপার পরও মাজেদা খালা দরজা খুলেন নি। দরজার ফাঁক দিয়ে বললেন, Go to hell.
খালু সাহেব মিনমিন করে বললেন, যা হওয়ার হয়েছে। বাদ দাও। আমি নিজের বিছানা ছাড়া সারা রাত এক মাজারে না ঘুমিয়ে বসে ছিলাম।
মাজেদা খালা বললেন, শুনে খুশি হয়েছি। এখন আবার মাজারে চলে যাও। আমি তুতুরিকে দিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে ঠিক করব, তখন এসো বিবেচনা করব।
মাজেদা। আমি সরি। মাজারে আমার পক্ষে ঘুমানো অসম্ভব ব্যাপার।
তাহলে ফুটপাতে ঘুমাও। কিংবা রেলস্টেশনের প্লাটফরমে চলে যাও। খবরের কাগজ বিছিয়ে ঘুমাও। পুরানো খবরের কাগজ আছে। দেব?
খালু সাহেব ফিরে এসেছেন। নিমগাছের নিচে বসে আছেন। তাঁর চেহারায় তীব্ৰ বৈরাগ্য প্রকাশিত হয়েছে। যে-কোনো মুহূর্তে নিমগাছ ছেড়ে হাঁটা শুরু করতে পারেন। কিংবা নিমগাছে চড়ে বসতে পারেন। দুই ক্ষেত্রেই ফিফটি ফিফটি সম্ভাবনা ৷
হুজুর আনন্দে আছেন। তাঁর মাথার ওপর সিলিং ফ্যান ঘুরছে। বল্টু স্যার সিলিং ফ্যান কিনে দিয়েছেন। হুজুর আমাকে ডেকে কানে কানে বলেছেন, তোমার এই স্যার মাসুক আদমি। উনার জন্যে খাসদিলে দোয়া করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় জ্বিন দিয়ে দেয়া করালে। আগামী শনিবার বাদ এশা জিনের মাধ্যমে দোয় করাব।
আমি বললাম, ইনশাল্লাহ।
তোমার খালুকে বলো আমি একটা তাবিজ লিখে দিব। এই তাবিজ গলায় পরে স্ত্রী বা হাকিমের সামনে উপস্থিত হলে তাদের দিল নরম হয়।
সকাল দশটার দিকে চোখে সানগ্লাস পরা একজন এসে আমাকে বলল, এক্সকিউজ মি! আমি একটি মেয়ের খোঁজ করছি। তার নাম তুতুরি। সে আমার ছাত্রী। তার আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা।
আমি বললাম, তুতুরি এখনো আসে নি। নিশ্চয়ই চলে আসবে। আপনি হুজুরের সঙ্গে বসুন। ফ্যান আছে, আরাম পাবেন।
তুতুরির যে নম্বর আমার কাছে আছে, সেটা ধরছে না। আপনার কাছে তার অন্য কোনো নম্বর কি আছে?
জি-না। আপনি হুজুরের ঘরে বসুন। এত অস্থির হবেন না। আপনি আসল জায়গায় চলে এসেছেন। এই জায়গা থেকে কেউ খালি হাতে ফিরে না। আপনিও তুতুরি ছাড়া ফিরবেন না। জনাব, আপনার নামটা বলুন।
জহির।
জহির সন্দেহজনক দৃষ্টিতে মাজাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি বললেন, কার মাজার?
পীর বাচ্চাবাবার মাজার। তবে আমার ধারণা ঘটনা অন্য।
কী ঘটনা?
আমি গলা নামিয়ে বললাম, মাজারের প্রধান খাদেমকে দেখছেন না? উনার দুই পা কাটা পড়েছিল। আমার ধারণা কাটা দুই পা কবর দিয়ে তিনি মাজার সাজিয়ে বসেছেন।
জহির বললেন, মাজারের সাইজ অবশ্যি খুবই ছোট। টাউটে দেশ ভর্তি হয়ে গেছে। কাটা পায়ের ওপর মাজার তুলে ফেলা বিচিত্র কিছু না। এদের ক্রসফায়ারে দেওয়া উচিত।
আমি বললাম, আমাদের হুজুরের অবশ্য কেরামতিও আছে।
কী কেরামতি?
উনার যেখানে পায়ের আঙুল থাকার কথা সেখানে টান দিলে আঙুল ফুটে।
জহির বললেন, এই সব বুলশীট আমাকে শুনিয়ে লাভ নেই। আপনি কে?
আমি খাদেমের প্রধান খাদেম। আমার কাজ উনার পা টিপা। পায়ের যেখানে আঙুল ছিল সেই আঙুল ফুটানো।
উদ্ভট কথাবার্তা আমার সঙ্গে বলবেন না। আমি শিশি খাওয়া পাবলিক না।
আমি বললাম, জগতটাই উদ্ভট। হার্ভার্ডের ফিজিক্সের Ph.D. বলেছেন, আমরা কিছু না। আমরা সবাই স্ট্রিং-এর কম্পন।
জহির বললেন, ননসেন্স কথাবার্তা বন্ধ রাখুন।
আমি বললাম, জি আচ্ছ। বন্ধ।
জহির ঘড়ি দেখে বিড়বিড় করে বললেন, দেরি করছে কেন বুঝলাম না।
আমি বললাম, পটাসিয়াম সায়ানাইড জোগাড় করতে মনে হয় দেরি হচ্ছে।
পটাসিয়াম সায়ানাইড?
জি। খাওয়ামাত্র সব শেষ।
কে খাবে?
আপনি খাবেন। আর আপনার বন্ধু খাবেন। আপনাদের দু’জনকে খাওয়ানোর জন্যেই তুতুরি এই জিনিস জোগাড় করছে। কেমিষ্ট্রির এক টিচার তুতুরির বান্ধবী। তিনি একগ্রাম পটাসিয়াম সায়ানাইড দিতে রাজি হয়েছেন। মাগরিটা নামের এক ধরনের ককটেলের সঙ্গে মিশিয়ে আপনাদের খাইয়ে দেওয়া হবে। মার্গারিটার নাম শুনেছেন?? টাকিলা দিয়ে বানানো হয়।