ঝড়ের রেজাল্ট শুনবে না?
না বললে শুনব কী করে?
ঝড় বিশ পঁচিশ মাইল বেগে বইতে শুরু করলে, তোমার শেখান কথাগুলো বলতে ঝড় থেমে গিয়ে বৃষ্টি হয়েছে।
বুঝলাম না।
তা হলে তুমিও মাঝে মাঝে কম বোঝ?
তোমার ধারণা ভুল।
কেন? এক্ষুনি তো আমার কথা বুঝতে পার নি বললে?
আমার অনুমান সত্য কিনা জানার জন্য বলেছি।
তা হলে বল, কী বুঝেছ?
আমার শেখান কথাগুলো শুনে তোমার আব্ব মত পাল্টেছেন।
বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাসনিম অনেকক্ষণ কথা বলতে পারল না।
কী হল? আমার অনুমান সত্য কিনা বললে না যে?
সত্য। কিন্তু খবু অবাক হচ্ছি, তুমি বুঝলে কী করে?
এতে অবাক হওয়ার কী আছে? ঝড় অর্থ দুর্যোগ, আর বৃষ্টি অর্থ শান্তি। আর বলা লাগবে?
না।
তা হলে এবার ঝড় বৃষ্টির ঘটনাটা বল।
তাসনিম আমেরিকার ছেলেটার কথা থেকে শুরু করে আব্বুর মত পাল্টান ও তারপর যা কিছু বলেছে বলে বলল, খালাআম্মার অসুখের খবর শুনে আব্বু তোমার আব্ব আম্মুর কাছে মাফ চাইতে দু’একদিনের মধ্যে দেশের বাড়িতে যাবে বলল। আর আম্মু কালকেই তোমাকে বাসায় নিয়ে আসতে বলল।
আব্দুস সাত্তার আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলল, এতক্ষণ কথাটা না বলে যে অন্যায় করেছ, তার শাস্তির জন্য প্রস্তুত থেক।
শাস্তি দেওয়ার সময়টা না বললে প্রস্তুত থাকব কী করে? বাসর রাতে।
দুষ্ট।
কী? আমি দুষ্টু? নিজে অন্যায় করে আমাকে দুষ্ট বলা হচ্ছে?
শুধু দুষ্টু নয়, অসভ্যও।
অন্যায়টা বেশি হয়ে যাচ্ছে। মনে রেখ, শাস্তির পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু।
শাস্তির ভয় অত দেখিও না। যে নাকি একটা মেয়েকে ভালবেসে দু’বছর মুখোমুখি হতে ভয় পায়, সে কত বড় বীরপুরুষ জানা হয়ে গেছে।
বীরপুরুষ কিনা বাসর রাতে টের পাবে।
আমিও টের পাওয়াব।
তুমি আবার কী টের পাওয়াবে?
বাসর রাতে দাদি আম্মার সেবা শুশ্রুষা করে কাটাব।
তা হলে আমাকে ভীতু বললে কেন? তুমিই তো আমার থেকে আরো বেশি ভীতু?
ঠিক আছে, কে ভীতু আরা কে বীরপুরুষ, বাসর রাতেই বোঝা যাবে।
এমন সময় সায়মা খপ করে তাসনিমের হাত থেকে রিসিভার কেড়ে নিয়ে বলল, এই যে মিস্টার হবু দুলাভাই, এই রুমে যে আপনার একজন ম্যাচিওর অবিবাহিতা হবু শালীও থাকে, তা জেনেও বাসর রাতের গোপন কথাবার্তা বলতে বিবেকে বাধছে না? না বাসর রাতের স্বপ্নে মশগুল হয়ে বাস্তব জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন?
স্বপ্নগুলো বাসর রাতের জন্য রিজার্ভ রেখে যা বলছি শুনুন, কাল সকাল আটটায় আসবেন। সবার সঙ্গে নাস্তা খাবেন। আলু আম্মু আসতে বলেছেন। এখন। সুবোধ ছেলের মতো ফোন রেখে ঘুমিয়ে পড়ুন। তারপর আব্দুস সাত্তারকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রিসিভার ক্যাডেলে রেখে তাসনিমকে জড়িয়ে ধরে বলল, “থ্রি চিয়ার্স ফর তাসনিম আপু, হীপ হপ হুর-রে।”
———–
(১) বর্ণনায় : হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ)-আহমদ, আবু দাউদ
(২) সূরা হুজুরাত, আয়াত-১০, পারা-২৬
(৩) বর্ণনায় : হযরত আবু বাকরাহ (রাঃ)-আবু দাউদ