- বইয়ের নামঃ মেঘের কোলে রোদ
- লেখকের নামঃ কাসেম বিন আবুবাকার
- প্রকাশনাঃ বিশ্বসাহিত্য ভবন
- বিভাগসমূহঃ উপন্যাস
০০. মেঘের কোলে রোদ
মেঘের কোলে রোদ
কাসেম বিন আবুবাকার
বিশ্ব সাহিত্য ভবন ৩৮/৪ বাংলাবাজার ঢাকা ১১০০
প্রকাশকাল – আগস্ট ২০০১
প্রকাশক – তোফাজ্জল হোসেন বিশ্ব সাহিত্য ভবন ৩৮/৪ বাংলাবাজার ঢাকা ১১০০
অক্ষরবিন্যাস – কমপিউটার ল্যান্ড ৩৮/২খ বাংলাবাজার ঢাকা ১১০০
মুদ্রণ – সালমানী মুদ্রণ সংস্থা ৩০/৫ নয়াবাজার ঢাকা ১১০০
প্রচ্ছদ – ধ্রুব এষ
স্বত্ব – লেখক
মূল্য – ৭০ টাকা মাত্র
উৎসর্গ স্বনামধন্য সাংবাদিক ও লেখক
আনিসুল হক স্নেহবরেষু
১. “তোমরা উত্তম সম্প্রদায়, যে সম্প্রদায়কে প্রকাশ করা হইয়াছে মানবমণ্ডলীর জন্য। তোমরা নেক কাজের আদেশ কর এবং মন্দ কাজ হইতে নিবৃত্ত রাখ এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখ।”—আল কুরআন, সূরা-আল ইমরান, ১০৯নং আয়াতের প্রথম দিকের অংশ, পারা—৪।
২. “যার বাড়িতে একটি লাইব্রেরি আছে মানসিক দিক দিয়ে সে অনেক বড়।”–দার্শনিক ইবসেন
৩. “রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে; কিন্তু বই অনন্ত যৌবনা—যদি তেমন বই হয়।”—ওমর খৈয়াম
লেখকের অন্যান্য বই
মেঘলা আকাশ
ভালবাসার নিমন্ত্রণ
ফুলের কাঁটা
আজরাইল (আঃ) এর কান্না কিশোর গল্প)
সে কোন বনের হরিণ
প্রতিবেশিনী
ফুটন্ত গোলাপ
পল্লীবালা
বিদেশী মেম
আধুনিকা
ক্রন্দসী প্রিয়া
ধনীর দুলালী
কি পেলাম।
হঠাৎ দেখা
জ্যোৎস্না রাতে কালো মেঘ
কেউ ভোলে কেউ ভোলে না
প্রেমের পরশ
প্রেম যেন এক সোনার হরিণ
বিলম্বিত বাসর
যেতে নাহি দেব
স্বনির্বাচিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস
শরীফা
অনন্ত প্রেম
শ্রেয়সী
শেষ উপহার
একটি ভ্রমর পাঁচটি ফুল
কলঙ্কের ফুল
প্রেম বেহেস্তের ফল
শহরের মেয়ে
বিদায় বেলায়
তুমি সুন্দর
পাহাড়ী ললনা
বিয়ে বিভ্রাট
বাসর রাত
কালো মেয়ে
বালিকার অভিমান
পলাতকা
অবাঞ্ছিত উইল
বিয়ের খোঁপা (ছোট গল্প)
চেনা মেয়ে
বিকেলে ভোরের ফুল
সংসার। কামিনী কাঞ্চন।
কাক্ষিত জীবন
প্রেম ও স্বপ্ন
অলৌকিক প্রেম
তোমার প্রত্যাশায়
মানুষ অমানুষ
হৃদয়ে আঁকা ছবি
প্রতীক্ষা ভাঙ্গাগড়া।
অবশেষে মিলন
কে ডাকে তোমায়
অসম প্রেম
স্বর্ণ তুমি
ভালবাসি তোমাকেই
বধূয়া
প্রেম
বহুরূপিনী
হৃদয় যমুনা
অচেনা পথিক
বড় আপা
আমি তোমার
প্রেমের ফসল (ছোট গল্প)
শ্রাবণী
পথে পরিচয়
ধূমায়িত পথ
অমর প্রেম
আমিও মানুষ
তুমিও মানুষ
রাগ অনুরাগ
সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে
০১. কার্পাসডাঙ্গা হেলথ কমপ্লেক্স
কার্পাসডাঙ্গা হেলথ কমপ্লেক্স-এর হাবিব ডাক্তার কুতুবপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় রুগী দেখতে গিয়েছিল। ফেরার পথে পিছনের চাকায় হাওয়া নেই দেখে। সাইকেল হাতে ধরে হেঁটে আসার সময় ভাবল, হয়তো রাস্তার পাশে বাবলা গাছের কাঁটা অথবা অন্য কিছু টায়ার ভেদ করে টিউবে ঢুকে চোরা লিক হয়েছে।
খাঁপাড়ার নাদের আলি দুধেল গাভীর জন্য ক্ষেতের আল থেকে কাঁচা ঘাস কেটে রাস্তায় জমা করছিল। দূর থেকে হাবিব ডাক্তারকে সাইকেল ধরে হেঁটে আসতে দেখে তার দিকে তাকিয়ে ভাবল, উনি ডাক্তার না হয়ে মাওলানা বা পীর সাহেব হলেই ভালো হত। পাজামা-পাঞ্জাবী, টুপি-দাড়িওয়ালাও যে ডাক্তার হয়, ইনাকে না দেখলে বিশ্বাসই করত না। রুগীকে ওষুধও দেন, আবার পানিপড়াও দেন, ঝাড়ফুকও করেন। রুগী দেখতে গেলে দেখার আগেই রুগী অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। গরিবদের কাছ থেকে ফি নেন না, বরং রুগীর পথ্য ও ওষুধ কেনার টাকা দেন। তাই গ্রামের অধিকাংশ মানুষের মতো নাদের আলির বিশ্বাস, ইনি নিশ্চয় কামেল লোক।
ততক্ষণে হাবিব ডাক্তার কাছে এসে যেতে বলল, স্লামালেকুম ডাক্তার সাহেব।
ওয়া আ’লায়কুমুস সালাম বলে হাবিব ডাক্তার বলল, নাদের আলি, তোমার কিন্তু সালাম দেয়া ঠিক হয় নি।
নাদের আলি অবাক হয়ে বলল, কেন? আপনিই তো সেদিন বললেন, এক মুসলমান আর এক মুসলমানের ভাই। দেখা হলে একে অপরকে সালাম দেবে। আরো বললেন, যে আগে দেবে তার সওয়াব বেশি।
হ্যাঁ, তা বলেছি।
তা হলে আমার সালাম দেয়া ঠিক হয় নি বলছেন কেন?
হাবিব ডাক্তার জানে নাদের আলি অল্প শিক্ষিত সহজ-সরল ছেলে। তাই মৃদু হেসে বলল, সালাম দেয়া ঠিক হলেও তোমার উচ্চারণ ঠিক হয় নি।
কিন্তু আজকাল শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাইতো এই কথা বলে সালাম দেয়। আমি তাদেরটা শুনে শিখেছি।
তাদেরটাও ঠিক হয় নি। আমি শুদ্ধ উচ্চারণ করছি শিখে নাও, “আস সালামু আলায়কুম।”
নাদের আলির স্মরণশক্তি ভালো। মনে মনে কয়েকবার উচ্চারণ করে বলল, “আস সালামু আলায়কুম।”
হাবিব ডাক্তার আবার মৃদু হেসে বলল, হ্যাঁ, এবার ঠিক হয়েছে।
নাদের আলি হাবিব ডাক্তারকে কদমবুসি করে বলল, আপনি না শেখালে চিরকাল ভুল সালাম দিতাম।
তুমি কিন্তু আবার একটা ভুল করে ফেললে।
কি ভুল করলাম বলুন, আমি শুধরে নেব।
মা-বাবা ও মুরুব্বীদের অথবা আল্লাহওয়ালা লোকদের ছাড়া যাকে তাকে কদমবুসি করতে নেই। আমি একজন সামান্য ডাক্তার, আমাকে করা ঠিক হয় নি।
গ্রামের লোকজন আপনাকে খুব কামেল ও আল্লাহওয়ালা বলে মনে করে। আমিও মনে করি। আপনার মতো ভালো মানুষ জীবনে দেখি নি। আপনাকে কদমবুসি করব নাতো কাকে করব? ওকথা বাদ দেন, সাইকেল থাকতে হেঁটে আসছেন কেন বলুন। তারপর পিছনের চাকায় হাওয়া নেই দেখে আবার বলল, মনে হয় যখন রুগী দেখছিলেন তখন কোনো দুষ্টু ছেলে হাওয়া ছেড়ে দিয়েছে।