৯। আল্লাহ্ কেবল তাদের সাথে [ বন্ধুত্ব ] করতে নিষেধ করেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং তোমাদের স্বদেশ থেকে বহিষ্কার করেছে এবং বহিষ্কারে যারা সাহায্য করেছে। তাদের সাথে যারা বন্ধুত্ব করে তারা তো পাপ করে।
১০। হে বিশ্বাসীগণ ! যখন তোমাদের নিকট মুমিন নারীগণ হিজরত করে আসে ৫৪২২, তাদের পরীক্ষা করে নেবে। আল্লাহ্ তাদের ঈমান সম্বন্ধে সবচেয়ে ভালো জানেন। যদি তোমরা নিশ্চিত হও যে ৫৪২৩, তারা মুমিন, তাহলে তাদের আর অবিশ্বাসীদের নিকট পাঠিও না। তারা অবিশ্বাসীদের জন্য বৈধ [ স্ত্রী ] নহে, এবং অবিশ্বাসীরা তাদের জন্য বৈধ [ স্বামী ] নহে। অবিশ্বাসীরা [ মোহর হিসেবে ] তাদের জন্য যা ব্যয় করেছে, তা তাদের পরিশোধ করো। অতঃপর যদি তোমরা মোহর আদায় করে তাদের বিবাহ কর, তোমাদের কোন দোষ হবে না ৫৪২৪। কিন্তু তোমরা অবিশ্বাসী নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক ধরে রেখো না ৫৪২৫। তোমরা যা ব্যয় করেছে মোহর হিসেবে তা ফেরত চাইবে, এবং অবিশ্বাসীরা যা ব্যয় করেছে তারা তা ফেরত চাইবে। ইহাই আল্লাহ্র বিধান। তিনি তোমাদের মাঝে [ ন্যায়ের সাথে ] বিচার করে থাকেন এবং তিনি জ্ঞান এবং প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ।
৫৪২২। হুদায়বিয়ার সন্ধির জন্য দেখুন ৪৮নং সূরার ভূমিকার ৪র্থ অনুচ্ছেদের ৩ নম্বর শর্ত। হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্ত অনুযায়ী স্বামী বা অন্য কোনও অভিভাবকের অধীনের কোনও স্ত্রীলোক যদি মক্কা থেকে পালিয়ে মদিনাতে গমন করে রাসুলের নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করে, তবে সন্ধির শর্ত অনুযায়ী রাসুল (সা) তার প্রার্থনা মঞ্জুর না করে তাঁকে পুণরায় তার অভিভাবকের নিকট মক্কায় ফেরত পাঠাতে বাধ্য থাকবেন। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বেই মক্কার কোরাইশরা পুনঃপুনঃ তাদের সন্ধির শর্ত সমূহ ভঙ্গ করে থাকে। এরই প্রেক্ষাপটে মদিনার মুসলিমদের জন্য আল্লাহ্র পরবর্তী নির্দ্দেশ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিলো। সে সময়ে অনেক মোশরেক মক্কাবাসীদের স্ত্রীরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, ফলে তারা স্বামীগৃহে এবং সমাজে তাদের বিশ্বাসের জন্য নিগৃহীত হতেন। এদেরই কিছু মুসলিম নারী মক্কা থেকে পালিয়ে মদিনাতে এসে রাসুলের (সা) নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করেন। এই আয়াতের পরে এসব মহিলাদের মক্কাতে তাদের স্বামীদের নিকট ফেরত পাঠানো বৈধ নয়। কারণ মুসলিম মহিলার সাথে অমুসলিম ব্যক্তির বিবাহ বৈধ নয়। সুতারাং অমুসলিম স্বামী মুসলিম মহিলার অভিভাবক হতে পারে না। তখনই তাঁর স্বামী অভিভাবক হতে পারবেন যখন তিনি ইসলাম গ্রহণ করবেন। এ সব মহিলাদের স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের দেয়া মোহরানা হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বিক্ষুব্ধ হতে পারেন। আর্থিক ক্ষতির কারণে তারা যাতে খারাপ অনুভব না করেন সে কারণে তাদের আর্থিক ক্ষতিকে পরিশোধ করার বন্দোবস্ত করা হয়। এ সব অসহায় মুসলিম নারীদের এ ভাবেই মুসলমানদের আর্থিক খরচের বিনিময়ে রক্ষা করা হয়।
৫৪২৩। মহিলাদের মক্কাতে তাদের অভিভাবকদের নিকট ফেরত না পাঠানোর একটাই শর্ত, আর তা হচ্ছে তারা হবে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। তারা যে প্রকৃতই মুসলিম তার প্রমাণ কি ? এমনও তো হতে পারে যে একজন অমুসলমান মহিলা তার অত্যাচারী স্বামীর কবল মুক্ত হওয়ার জন্য মিথ্যাচারের আশ্রয় গ্রহণ করছেন। তার মনোজগতের খবর জানবেন একমাত্র আল্লাহ্। যদি তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ হয় যে তিনি একজন প্রকৃত মুসলিম নারী, তবে মুসলমানদের কর্তব্য তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এই তদন্তের ভিত্তি অন্যান্য সংবাদের সাথে যে বিষয়গুলির সংযুক্তি ঘটবে তার উল্লেখ আছে নীচের আয়াত নং ১২ তে।
৫৪২৪। যেহেতু মুসলিম নারীর সাথে অমুসলমানের বিবাহ বৈধ নয়, সুতারাং তাদের কৃত বিবাহ চুক্তি বহাল থাকে না। এক্ষেত্রে তাদের পুনঃর্বিবাহে কোন আইনসঙ্গত বাধা নাই। দেখুন টিকা ৫৪২২।
৫৪২৫। বিশ্বাসী মুসলিম সমাজে অমুসলিম নারীর অবস্থান হবে প্রতিবন্ধী মানুষের ন্যায়। সমাজের কোন কল্যাণকর বা মঙ্গলজনক কাজে সে অবদান রাখতে হবে অক্ষম, তার জন্য সমাজ জীবনের সংস্কৃতি ও কৃষ্টির সাথে একাত্বতা বোধ করা অসম্ভব। আর সামাজিক একাত্বতা ব্যতীত সমাজে সে হয়ে পড়ে একা। এ সব নারীদের সাথে মুসলমানদের বিবাহ আর বৈধ থাকে না। তাদের মক্কাতে ফেরত পাঠাতে হবে এবং তাদের জন্য যে দেনমোহর খরচ করা হয়েছিলো, তা মক্কাতে যিনি তার অভিভাবক তিনি ফেরত দেবেন। মুসলিম নারী, যার কাফের স্বামী, তার জন্য দেনমোহরের যে বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো, এ ব্যবস্থা ঠিক তার বিপরীত।
আয়াতঃ 060.011
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফেরদের কাছে থেকে যায়, অতঃপর তোমরা সুযোগ পাও, তখন যাদের স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে গেছে, তাদেরকে তাদের ব্যয়কৃত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাস রাখ।
And if any of your wives have gone from you to the disbelievers, and you have an accession (by the coming over of a woman from the other side), then pay to those whose wives have gone, the equivalent of what they had spent (on their Mahr). And fear Allâh in Whom you believe.