আয়াতঃ 090.004
নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
Verily, We have created man in toil.
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ
Laqad khalaqna al-insana fee kabadin
YUSUFALI: Verily We have created man into toil and struggle.
PICKTHAL: We verily have created man in an atmosphere:
SHAKIR: Certainly We have created man to be in distress.
KHALIFA: We created the human being to work hard (to redeem himself).
৪। মানুষকে আমি সৃষ্টি করেছি কষ্ট ও সংগ্রামের জন্য ৬১৩৩
৬১৩৩। “Man is born unto troubles as the sparks fly upward” [ Job. V. 7] ; “ For all his days are sorrows , and his travail grief” [Ecclesiastes , ii 23 ] । উপরের ধর্মগ্রন্থসমূহের বক্তব্য থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, মানুষের সমগ্র জীবন হচ্ছে দুঃখ ও কষ্টের। কিন্তু ইসলামের বক্তব্য ভিন্নধর্মী। এই আয়াতে আল্লাহ্ সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন যে, মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছে শ্রমের মাধ্যমে জীবন সংগ্রামের জন্য। জীবনে চলার পথে যদি তাকে কষ্টকর পথকে অতিক্রম করতে হয়,তবে সে আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা প্রদর্শন করে ধৈর্য্য ধারণ করবে। ফলে আল্লাহ্ তার জীবনে চলার পথকে মসৃণ করে দেবেন [ ৬৫ : ৭ ; ৯৪ : ৫- ৬ ]। ধৈর্য্য ও নির্ভরশীলতাই হচ্ছে সংগ্রামের কষ্ট থেকে অব্যহতি লাভের উপায়। নীচের আয়াত নং [ ৫ – ৭] উপদেশ দান করা হয়েছে যে মানুষ যেনো পর্থিব সম্পদের অহংকার বা গর্ব না করে কারণ তার দ্বারা আত্মিক মুক্তি লাভ সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 090.005
সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ?
Thinks he that none can overcome him?
أَيَحْسَبُ أَن لَّن يَقْدِرَ عَلَيْهِ أَحَدٌ
Ayahsabu an lan yaqdira AAalayhi ahadun
YUSUFALI: Thinketh he, that none hath power over him?
PICKTHAL: Thinketh he that none hath power over him?
SHAKIR: Does he think that no one has power over him?
KHALIFA: Does he think that no one will ever call him to account?
৫। সে কি মনে করে, তার উপরে কারও ক্ষমতা নাই ? ৬১৩৪
৬১৩৪। দেখুন পূর্বের টিকার শেষাংশ। আল্লাহ্ যদি কাউকে অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতা, প্রভাব, প্রতিপত্তি দান করেন, সে যেনো কখনও মনে না করে যে এসব অনন্ত কালের জন্য তাকে বরাদ্দ করা হয়েছে এবং এসব সম্পদ তার নিজস্ব এ সবের জন্য তার কোন দায় দায়িত্ব নাই। সুতারাং এসব সম্পদ দ্বারা সে যা খুশী তা করার অধিকার রাখে। মনে রাখতে হবে আল্লাহ্ তাঁর নেয়ামত বিভিন্ন বান্দার জন্য বিভিন্ন ভাবে বন্টন করে থাকেন। এ সব নেয়ামতের সুষ্ঠু ব্যবহারই হবে তার জন্য মহা পরীক্ষা। যিনি এসব দান করেন, কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা তারই। যদি ব্যক্তি বা জাতি আল্লাহ্র এই পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে না পারে, তবে অবশ্যই আল্লাহ্ সেই ব্যক্তি বা জাতির নিকট থেকে তাঁর নেয়ামত সমূহ কেড়ে নেবেন। আল্লাহ্ সবার উপরে ক্ষমতাবান।
আয়াতঃ 090.006
সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।
He says (boastfully): ”I have wasted wealth in abundance!”
يَقُولُ أَهْلَكْتُ مَالًا لُّبَدًا
Yaqoolu ahlaktu malan lubadan
YUSUFALI: He may say (boastfully); Wealth have I squandered in abundance!
PICKTHAL: And he saith: I have destroyed vast wealth:
SHAKIR: He shall say: I have wasted much wealth.
KHALIFA: He boasts, “I spent so much money!”
৬। সে [ অহংকার করে ] বলতে পারে, ” আমি তো রাশি রাশি ধন ব্যয় করেছি।” ৬১৩৫
৬১৩৫। মক্কার কোরাইশ সরদারগণ ইসলাম ও মুসলিমকে ধ্বংস করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতো। আর তা নিয়ে গর্ব করতো। তবে এই আয়াতের আবেদন বিশ্বজনীন সর্বকালের, সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। যারা অজ্ঞ তারাই আল্লাহ্র দেয়া নেয়ামত সমূহের যোগ্য হতে পারে না। তারা মনে করে এ সব নেয়ামত তার নিজস্ব এবং সে এর দ্বারা যা খুশী করার ক্ষমতা রাখে। এ সম্বন্ধে তার কোনও জবাবদিহিতা নাই। সে তার সম্পদের জন্য গর্ব করে,তা সে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে এবং মনে করে এভাবেই সে পৃথিবীতে তার প্রভাব প্রতিপত্তি ও সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হবে। হয়তো তার এই ধারণা স্বল্পকালের জন্য স্থায়ী হতে পারে। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে তাকে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ প্রকৃত সত্যের উপরে ভিত্তি না করে সে মিথ্যার উপরে তার কর্ম প্রচেষ্টার ভিত্তি স্থাপন করেছিলো। সে তার নেয়ামত সমূহ ও সম্পদকে শুধুমাত্র নিজস্ব ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য ব্যয় করেছে, তার ফলে নিজের মাঝে সংযমের যে পরিশুদ্ধতার ছাঁকনী তা সে নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ আত্ম সংযমই মানুষকে প্রবৃত্তির ফাঁদ থেকে অব্যহতি দান করতে সক্ষম এবং পরিণতিতে আত্মা মুক্তি লাভ করে। যে এই আত্মসংযমের ক্ষমতা রাখে না সে হতভাগ্য। কারণ এর ফলে তার চরিত্র ধীরে ধীরে উচ্ছৃঙ্খল ও সংযমহীন হয়ে ওঠে এবং জীবনের সর্ব প্রচেষ্টা শুধুমাত্র আত্মসুখের পিছনে ব্যয় করে যা হচ্ছে পৃথিবীতে শয়তানের ফাঁদ। আর একবার যে শয়তানের ফাঁদে পড়ে সে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলে। মানুষের মনঃস্তাত্বিক বিশ্লেষণ এই আয়াতে করা হয়েছে।