- সূরার নাম: সূরা বালাদ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা বালাদ
আয়াতঃ 090.001
আমি এই নগরীর শপথ করি
I swear by this city (Makkah);
لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ
La oqsimu bihatha albaladi
YUSUFALI: I do call to witness this City;-
PICKTHAL: Nay, I swear by this city –
SHAKIR: Nay! I swear by this city.
KHALIFA: I solemnly swear by this town.
==============
সূরা বালাদ বা নগর – ৯০
২০ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপঃ একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। এই সূরাতে মক্কা নগরীর সাথে রাসুলের (সা) সর্ম্পকের উল্লেখ করা হয়েছে। মক্কা নগরী রাসুলের (সা) জন্মের বহু পূর্ব থেকে পবিত্র নগরী হিসেবে পরিচিত। এই পবিত্র নগরীতে বিশ্বনবীর জন্ম হয়। তিনি এই নগরীর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যে পরিবারের হাতে পবিত্র কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়োজিত ছিলো। বিশ্ব নবী খুব অল্প বয়েসেই পিতা ও মাতা হারা এতিম শিশুতে পরিণত হন। শিশু বয়েস থেকেই তাঁর হৃদয় মন এক স্রষ্টার এবাদতে নিমগ্ন থাকতো। পরিণত বয়েসে তিনি পৌত্তলিক এবাদতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। ফলে তাঁর জন্মস্থানের অধিবাসীরা তাঁর প্রতি নির্যাতনের খড়গ চালনা করে। যার ফলে জন্মভূমি থেকে বিতারিত হয়ে ইয়াথরিব শহরে গমন করেন এবং সেখান থেকে ধর্ম প্রচার করেন। পরবর্তীতে এই শহরের নাম হয় ‘মদিনাত্ -উন-নবী ‘ বা নবীর শহর। সেই থেকে বর্তমানেও এই শহরকে বলা হয় মদিনা। মদিনাকে রাসুলের শিশু হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। কিন্তু রাসুলের (সা ) হৃদয় সর্বদা তাঁর মাতৃভূমির জন্য আকুতি করতো এবং তাঁর দায়িত্ব কর্তব্য সমাপন অন্তে তিনি পূণরায় তার মাতৃভূমিতে প্রত্যার্পন করেন বিজয়ী রূপে। তিনি কাবা শরীফকে পৌত্তলিক মুক্ত করেন এবং এক আল্লাহ্র উপাসনা চালু করেন। তিনি স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে মুসলিম বিশ্বে ন্যায়বান ও যোগ্য ব্যক্তির শাসন চালু করেন, সেই সাথে দাস মুক্তি, গরীবের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেন। অনুধাবন করার বিষয় হচ্ছে পবিত্র মক্কাকে কেন্দ্র করে কি অপূর্ব ন্যায়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। পৃথিবীর আধ্যাত্মিক ইতিহাসে কাবা হচ্ছে আধ্যাত্মিক মুক্তির প্রতীক স্বরূপ।
সূরা বালাদ বা নগর – ৯০
২০ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। শপথ করছি এই নগরের ৬১৩০।
৬১৩০। এখানে শপথ করা হয়েছে রাসুলের (সা) মাতৃভূমি মক্কা নগরী ও রাসুলের (সা) সম্পর্কের মধ্যে। মক্কা নগরীর পটভূমি এই সূরার ভূমিকাতে বর্ণনা করা হয়েছে। মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের মুক্তির প্রতীক হচ্ছে এই শহর। মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে সংগ্রাম করার জন্য। এটাই হচ্ছে শপথের বিষয়বস্তু [ আয়াত ৯০ : ৪ ]।
আয়াতঃ 090.002
এবং এই নগরীতে আপনার উপর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।
And you are free (from sin, to punish the enemies of Islâm on the Day of the conquest) in this city (Makkah) ,
وَأَنتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ
Waanta hillun bihatha albaladi
YUSUFALI: And thou art a freeman of this City;-
PICKTHAL: And thou art an indweller of this city –
SHAKIR: And you shall be made free from obligation in this city–
KHALIFA: The town where you live.
২। এবং [ শপথ ] তুমি এই নগরীর স্বাধীন অধিবাসী ৬১৩১।
৬১৩১। ‘Hillum’ অর্থ : অধিবাসী, যার আইনগত অধিকার আছে, ইত্যাদি। জন্মসূত্রে রাসুল মক্কা নগরীর অধিবাসী, সুতারাং অধিবাসীদের উচিত ছিলো তাঁকে সম্মান করা। তার পরিবর্তে মক্কাবাসীরা তাঁকে নির্যাতিত করে, তাঁকে এবং তাঁর অনুসারীদের হত্যার পরিকল্পনা করে। তিনি মদিনাতে নির্বাসিত হন। তবে সময়ের পরিক্রমায় তিনি বিজয়ী বেশে মক্কাতে প্রত্যার্পন করেন, কিন্তু মদিনা শহর পৃথিবীর বুকে রাসুলের (সা) কর্মস্থল এবং জীবন যাপনের পবিত্র স্থান হিসেবে চিরদিনের জন্য পৃথিবীতে অম্লান হয়ে রইল।
আয়াতঃ 090.003
শপথ জনকের ও যা জন্ম দেয়।
And by the begetter (i.e. Adam ) and that which he begot (i.e. his progeny);
وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ
Wawalidin wama walada
YUSUFALI: And (the mystic ties of) parent and child;-
PICKTHAL: And the begetter and that which he begat,
SHAKIR: And the begetter and whom he begot.
KHALIFA: The begetting and the begotten.
৩। এবং [ শপথ ] পিতা-মাতা ও সন্তানের [ রহস্যময় বন্ধনের ] ৬১৩২
৬১৩২। পিতা মাতা সন্তানকে প্রাণাধিক ভালোবাসে। পিতা সন্তানের সাফল্যে গর্বিত হয়। মাতা প্রচন্ড শারীরিক কষ্টের মধ্য দিয়ে সন্তান লাভ করে সত্য, তবে সন্তানকে বক্ষে ধারণ করার যে আনন্দ তার নিকট শারীরিক যন্ত্রণা তুচ্ছ। পিতা -মাতা ও সন্তানের মধ্যে যে বন্ধন সে বন্ধন পবিত্র ও স্নেহ ভালোবাসায় ধন্য। তবে অস্বাভাবিক ক্ষেত্রে অনেক সময়ে বিপরীত অবস্থাও বিরাজ করতে পারে,যখন পিতা মাতা ও সন্তানের মাঝে ভালোবাসার বন্ধনের পরির্বতে ঘৃণার সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। রাসুলের বেলাতে এরূপ অস্বাভাবিক ব্যাপারই ঘটেছিলো। মক্কার সবচেয়ে গৌরবান্বিত সন্তানকে মক্কা নগরী থেকে বের করে দেয় অত্যাচার, নির্যাতন করে। তবে তা ছিলো স্বল্প কালের জন্য। অন্যায়কারী, স্বৈরাচার, যারা অন্যায় ভাবে ক্ষমতা দখল করে ছিলো তাদের অপসারণের পরে মক্কা আবার তার গৌরবান্বিত সন্তানকে ফিরে পায়, তাঁকে স্বাগত জানায়। এর পর থেকে,মক্কা নগরী ইসলামের কেন্দ্র ভূমিরূপে তার বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে।
আয়াতঃ 090.004
নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
Verily, We have created man in toil.
لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي كَبَدٍ
Laqad khalaqna al-insana fee kabadin
YUSUFALI: Verily We have created man into toil and struggle.
PICKTHAL: We verily have created man in an atmosphere:
SHAKIR: Certainly We have created man to be in distress.
KHALIFA: We created the human being to work hard (to redeem himself).
৪। মানুষকে আমি সৃষ্টি করেছি কষ্ট ও সংগ্রামের জন্য ৬১৩৩
৬১৩৩। “Man is born unto troubles as the sparks fly upward” [ Job. V. 7] ; “ For all his days are sorrows , and his travail grief” [Ecclesiastes , ii 23 ] । উপরের ধর্মগ্রন্থসমূহের বক্তব্য থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, মানুষের সমগ্র জীবন হচ্ছে দুঃখ ও কষ্টের। কিন্তু ইসলামের বক্তব্য ভিন্নধর্মী। এই আয়াতে আল্লাহ্ সুস্পষ্ট ভাবে ঘোষণা করেছেন যে, মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছে শ্রমের মাধ্যমে জীবন সংগ্রামের জন্য। জীবনে চলার পথে যদি তাকে কষ্টকর পথকে অতিক্রম করতে হয়,তবে সে আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতা প্রদর্শন করে ধৈর্য্য ধারণ করবে। ফলে আল্লাহ্ তার জীবনে চলার পথকে মসৃণ করে দেবেন [ ৬৫ : ৭ ; ৯৪ : ৫- ৬ ]। ধৈর্য্য ও নির্ভরশীলতাই হচ্ছে সংগ্রামের কষ্ট থেকে অব্যহতি লাভের উপায়। নীচের আয়াত নং [ ৫ – ৭] উপদেশ দান করা হয়েছে যে মানুষ যেনো পর্থিব সম্পদের অহংকার বা গর্ব না করে কারণ তার দ্বারা আত্মিক মুক্তি লাভ সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 090.005
সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ?
Thinks he that none can overcome him?
أَيَحْسَبُ أَن لَّن يَقْدِرَ عَلَيْهِ أَحَدٌ
Ayahsabu an lan yaqdira AAalayhi ahadun
YUSUFALI: Thinketh he, that none hath power over him?
PICKTHAL: Thinketh he that none hath power over him?
SHAKIR: Does he think that no one has power over him?
KHALIFA: Does he think that no one will ever call him to account?
৫। সে কি মনে করে, তার উপরে কারও ক্ষমতা নাই ? ৬১৩৪
৬১৩৪। দেখুন পূর্বের টিকার শেষাংশ। আল্লাহ্ যদি কাউকে অর্থ, সম্পদ, ক্ষমতা, প্রভাব, প্রতিপত্তি দান করেন, সে যেনো কখনও মনে না করে যে এসব অনন্ত কালের জন্য তাকে বরাদ্দ করা হয়েছে এবং এসব সম্পদ তার নিজস্ব এ সবের জন্য তার কোন দায় দায়িত্ব নাই। সুতারাং এসব সম্পদ দ্বারা সে যা খুশী তা করার অধিকার রাখে। মনে রাখতে হবে আল্লাহ্ তাঁর নেয়ামত বিভিন্ন বান্দার জন্য বিভিন্ন ভাবে বন্টন করে থাকেন। এ সব নেয়ামতের সুষ্ঠু ব্যবহারই হবে তার জন্য মহা পরীক্ষা। যিনি এসব দান করেন, কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা তারই। যদি ব্যক্তি বা জাতি আল্লাহ্র এই পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে না পারে, তবে অবশ্যই আল্লাহ্ সেই ব্যক্তি বা জাতির নিকট থেকে তাঁর নেয়ামত সমূহ কেড়ে নেবেন। আল্লাহ্ সবার উপরে ক্ষমতাবান।
আয়াতঃ 090.006
সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।
He says (boastfully): ”I have wasted wealth in abundance!”
يَقُولُ أَهْلَكْتُ مَالًا لُّبَدًا
Yaqoolu ahlaktu malan lubadan
YUSUFALI: He may say (boastfully); Wealth have I squandered in abundance!
PICKTHAL: And he saith: I have destroyed vast wealth:
SHAKIR: He shall say: I have wasted much wealth.
KHALIFA: He boasts, “I spent so much money!”
৬। সে [ অহংকার করে ] বলতে পারে, ” আমি তো রাশি রাশি ধন ব্যয় করেছি।” ৬১৩৫
৬১৩৫। মক্কার কোরাইশ সরদারগণ ইসলাম ও মুসলিমকে ধ্বংস করার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতো। আর তা নিয়ে গর্ব করতো। তবে এই আয়াতের আবেদন বিশ্বজনীন সর্বকালের, সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। যারা অজ্ঞ তারাই আল্লাহ্র দেয়া নেয়ামত সমূহের যোগ্য হতে পারে না। তারা মনে করে এ সব নেয়ামত তার নিজস্ব এবং সে এর দ্বারা যা খুশী করার ক্ষমতা রাখে। এ সম্বন্ধে তার কোনও জবাবদিহিতা নাই। সে তার সম্পদের জন্য গর্ব করে,তা সে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে এবং মনে করে এভাবেই সে পৃথিবীতে তার প্রভাব প্রতিপত্তি ও সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হবে। হয়তো তার এই ধারণা স্বল্পকালের জন্য স্থায়ী হতে পারে। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে তাকে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ প্রকৃত সত্যের উপরে ভিত্তি না করে সে মিথ্যার উপরে তার কর্ম প্রচেষ্টার ভিত্তি স্থাপন করেছিলো। সে তার নেয়ামত সমূহ ও সম্পদকে শুধুমাত্র নিজস্ব ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য ব্যয় করেছে, তার ফলে নিজের মাঝে সংযমের যে পরিশুদ্ধতার ছাঁকনী তা সে নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ আত্ম সংযমই মানুষকে প্রবৃত্তির ফাঁদ থেকে অব্যহতি দান করতে সক্ষম এবং পরিণতিতে আত্মা মুক্তি লাভ করে। যে এই আত্মসংযমের ক্ষমতা রাখে না সে হতভাগ্য। কারণ এর ফলে তার চরিত্র ধীরে ধীরে উচ্ছৃঙ্খল ও সংযমহীন হয়ে ওঠে এবং জীবনের সর্ব প্রচেষ্টা শুধুমাত্র আত্মসুখের পিছনে ব্যয় করে যা হচ্ছে পৃথিবীতে শয়তানের ফাঁদ। আর একবার যে শয়তানের ফাঁদে পড়ে সে নিজেকে ধ্বংস করে ফেলে। মানুষের মনঃস্তাত্বিক বিশ্লেষণ এই আয়াতে করা হয়েছে।
আয়াতঃ 090.007
সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি?
Thinks he that none sees him?
أَيَحْسَبُ أَن لَّمْ يَرَهُ أَحَدٌ
Ayahsabu an lam yarahu ahadun
YUSUFALI: Thinketh he that none beholdeth him?
PICKTHAL: Thinketh he that none beholdeth him?
SHAKIR: Does he think that no one sees him?
KHALIFA: Does he think that no one sees him?
৭। সে কি মনে করে যে, তাকে কেহ দেখে নাই ? ৬১৩৬
৬১৩৬। উপরে বর্ণিত লোকেরা সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেয় এবং মনে করে তারা খুব বুদ্ধিমান। তাদের ধারণা এই ধোঁকা কেউ সনাক্ত করতে সক্ষম হবে না। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে অলক্ষ্যে থেকে আল্লাহ্ আমাদের সকল কর্ম, সকল কর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য, গোপন চিন্তা ভাবনা, প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সকল কথা সব কিছু রেকর্ড করে রাখছেন। তাঁর অজ্ঞাত কিছুই নাই। যদি সে সামান্য পরিমাণও বোধশক্তি সম্পন্ন হয় তবে বুঝতে সক্ষম হতো যে সেই মহাশক্তিধর প্রভুর অস্তিত্ব সর্বত্র বিদ্যমান।
আয়াতঃ 090.008
আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়,
Have We not made for him a pair of eyes?
أَلَمْ نَجْعَل لَّهُ عَيْنَيْنِ
Alam najAAal lahu AAaynayni
YUSUFALI: Have We not made for him a pair of eyes?-
PICKTHAL: Did We not assign unto him two eyes
SHAKIR: Have We not given him two eyes,
KHALIFA: Did we not give him two eyes?
৮। আমি কি তার জন্য সৃষ্টি করি নাই দুইটি চক্ষু ?
৯। এবং একটি জিহ্বা ৬১৩৭, এবং দুইটি ওষ্ঠ ?
৬১৩৭। কেন মানুষ আত্মার মাঝে মহাশক্তিধর প্রভুর ক্ষমতাকে উপলব্ধি করবে না ? এই উপলব্ধির জন্য আল্লাহ্ আমাদের মাঝে যে সব মানসিক দক্ষতা সমূহ দিয়েছেন তার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। চক্ষুদ্বারা আমরা পৃথিবীর আলো দর্শন করি। দৈহিক ভাবে দেখা ব্যতীতও আল্লাহ্ মানুষকে আর এক ভাবে চক্ষুর ব্যবহার দান করেছেন – অন্তর্জগতে। মনের সে চোখ প্রকৃত সত্যের আলোকে সনাক্ত করতে পারে। বিশ্ব জগতের সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্র হাতের শিল্প নৈপুন্যকে অনুধাবন করতে পারে। বিশ্ব ভূবন ও বিশাল নভোমন্ডলের মাঝে স্রষ্টার সৃষ্টির যে সমন্বিত শৃঙ্খলা যা সঙ্গীতের ন্যায় নিজস্ব লয়ে গতিময় তা অর্ন্তজগতের চক্ষু দ্বারা উপলব্ধির মাধ্যমে দেখতে পায়। একই ভাবে জিহ্বা ও ওষ্ঠ যা হচ্ছে কথা বলার ও খাবারের স্বাদ গ্রহণের মাধ্যম। এই মাধ্যমকে জৈবিক ভাবে ব্যবহার করা যায় আবার মহত্তর উদ্দেশ্য সাধনের জন্যও ব্যবহার করা যায়। এর দ্বারা সত্য পথের সন্ধান করা যায় এবং সত্যকে অনুভব করা যায়, জীবনের দিক্ নির্দ্দেশনার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করা যায়। মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান করা যায়। আল্লাহ্র গুণগান করা যায় ইত্যাদি। এই দুটি মানসিক দক্ষতার উল্লেখের মাধ্যমে এ সত্যকেই তুলে ধরা হয়েছে যে, মানসিক দক্ষতা সমূহ জৈবিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবহার করা যায়,আবার জীবনের মহত্তর পরিণতির জন্যও ব্যবহার করা যায়। এটি একটি রূপক বর্ণনা যার দ্বারা আল্লাহ্র সৃষ্টি নৈপূণ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 090.009
জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয় ?
And a tongue and a pair of lips?
وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ
Walisanan washafatayni
YUSUFALI: And a tongue, and a pair of lips?-
PICKTHAL: And a tongue and two lips,
SHAKIR: And a tongue and two lips,
KHALIFA: A tongue and two lips?
৮। আমি কি তার জন্য সৃষ্টি করি নাই দুইটি চক্ষু ?
৯। এবং একটি জিহ্বা ৬১৩৭, এবং দুইটি ওষ্ঠ ?
৬১৩৭। কেন মানুষ আত্মার মাঝে মহাশক্তিধর প্রভুর ক্ষমতাকে উপলব্ধি করবে না ? এই উপলব্ধির জন্য আল্লাহ্ আমাদের মাঝে যে সব মানসিক দক্ষতা সমূহ দিয়েছেন তার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। চক্ষুদ্বারা আমরা পৃথিবীর আলো দর্শন করি। দৈহিক ভাবে দেখা ব্যতীতও আল্লাহ্ মানুষকে আর এক ভাবে চক্ষুর ব্যবহার দান করেছেন – অন্তর্জগতে। মনের সে চোখ প্রকৃত সত্যের আলোকে সনাক্ত করতে পারে। বিশ্ব জগতের সৃষ্টির মাঝে আল্লাহ্র হাতের শিল্প নৈপুন্যকে অনুধাবন করতে পারে। বিশ্ব ভূবন ও বিশাল নভোমন্ডলের মাঝে স্রষ্টার সৃষ্টির যে সমন্বিত শৃঙ্খলা যা সঙ্গীতের ন্যায় নিজস্ব লয়ে গতিময় তা অর্ন্তজগতের চক্ষু দ্বারা উপলব্ধির মাধ্যমে দেখতে পায়। একই ভাবে জিহ্বা ও ওষ্ঠ যা হচ্ছে কথা বলার ও খাবারের স্বাদ গ্রহণের মাধ্যম। এই মাধ্যমকে জৈবিক ভাবে ব্যবহার করা যায় আবার মহত্তর উদ্দেশ্য সাধনের জন্যও ব্যবহার করা যায়। এর দ্বারা সত্য পথের সন্ধান করা যায় এবং সত্যকে অনুভব করা যায়, জীবনের দিক্ নির্দ্দেশনার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করা যায়। মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান করা যায়। আল্লাহ্র গুণগান করা যায় ইত্যাদি। এই দুটি মানসিক দক্ষতার উল্লেখের মাধ্যমে এ সত্যকেই তুলে ধরা হয়েছে যে, মানসিক দক্ষতা সমূহ জৈবিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবহার করা যায়,আবার জীবনের মহত্তর পরিণতির জন্যও ব্যবহার করা যায়। এটি একটি রূপক বর্ণনা যার দ্বারা আল্লাহ্র সৃষ্টি নৈপূণ্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 090.010
বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি।
And shown him the two ways (good and evil)?
وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ
Wahadaynahu alnnajdayni
YUSUFALI: And shown him the two highways?
PICKTHAL: And guide him to the parting of the mountain ways?
SHAKIR: And pointed out to him the two conspicuous ways?
KHALIFA: Did we not show him the two paths?
১০। এবং দেখাইনি কি দুটি পথ ? ৬১৩৮
৬১৩৮। মানব জীবনের প্রধান দুটি পথ হচ্ছে : ১ ) চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনের পথ। এই পথকে বলা হয়েছে ‘বন্ধুর গিরিপথ ‘ অর্থাৎ সুউচ্চ খাড়া পর্বতে আরোহণের ন্যায় কষ্ট সাধ্য, অর্থাৎ কষ্ট সাধ্য পথ। যার বর্ণনা নিম্নের আয়াতে করা হয়েছে। ২) পাপের পথ এবং আল্লাহ্র বিধানকে প্রত্যাখান করার প্রবণতা যা অত্যন্ত সহজ ও সাময়িক আরামদায়ক। আল্লাহ্ আমাদের ন্যায় অন্যায়, ভালো -মন্দ, পাপ -পূণ্য, সত্য -মিথ্যার মধ্যে প্রভেদ করার মত বিবেক, বুদ্ধি ও মানসিক দক্ষতা সমূহ দান করেছেন। আমাদের ‘স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ‘ প্রয়োগের মাধ্যমে এই দুটি পথের যে কোন একটি পথকে আমরা নিজেদের জন্য পছন্দ করতে পারি। আমাদের এ ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য আল্লাহ্ আমাদের জন্য যুগে যুগে নবী রসুলদের প্রেরণ করেছেন, প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করেছেন যেনো আমরা সঠিক পথের সন্ধান লাভ করতে পারি।
আয়াতঃ 090.011
অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি।
But he has made no effort to pass on the path that is steep.
فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ
Fala iqtahama alAAaqabata
YUSUFALI: But he hath made no haste on the path that is steep.
PICKTHAL: But he hath not attempted the Ascent –
SHAKIR: But he would not attempt the uphill road,
KHALIFA: He should choose the difficult path.
১১। কিন্তু সে তো দুর্গম [ গিরি ] পথে প্রবেশে ত্বরা করে নাই ৬১৩৯
৬১৩৯। মানুষকে আল্লাহ্ বিবেক, বুদ্ধি, মানসিক দক্ষতা সমূহ দান করা সত্বেও সাধারণ মানুষ সঠিক পথ অবলম্বনের প্রতি অমনোযোগী। সে কোনও অবস্থাতেই বন্ধুর গিরিপথ বা কষ্টসাধ্য পথ অবলম্বনে আগ্রহী হয় না যদিও এই পথ তার আধ্যাত্মিক ও পারলৌকিক কল্যাণ বয়ে আনবে। বাইবেলে আছে, “Strait is the gate, and narrow is the way, which leadeth unto life, and few there be that find it.” [ Matt vii 14 ] ।
আয়াতঃ 090.012
আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কি?
And what will make you know the path that is steep?
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ
Wama adraka ma alAAaqabatu
YUSUFALI: And what will explain to thee the path that is steep?-
PICKTHAL: Ah, what will convey unto thee what the Ascent is! –
SHAKIR: And what will make you comprehend what the uphill road is?
KHALIFA: Which one is the difficult path?
১২। তুমি কি জান দুর্গম [গিরি ] পথ কি ?
১৩। [ তা হচ্ছে ] ; দাসমুক্তি ৬১৪০ ;
৬১৪০। চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনের পথ হচ্ছে সৎকর্ম সম্পাদন করা যা সব সময়েই খুব কষ্টকর পথ। এ পথের একটাই মানদন্ড আর তা হচ্ছে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও এই ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দান করা। এই মানদন্ডকে তিনটি উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১) দাস মুক্তি, ২) এতিমকে আহার্য দান ও ৩) দরিদ্র নিষ্পেষিত ব্যক্তিকে আহার্য দান করা। এই মানদন্ড প্রতিটিই প্রতীকধর্মী, যার আক্ষরিক ও রূপক উভয় অর্থই বিদ্যমান। যদিও পৃথিবীতে ক্রীতদাস প্রথা বিদ্যমান নাই, তবুও তা সমাজে অন্যভাবে বর্তমান। যেখানেই মানবতা লাঞ্ছিত হয় সেখানেই তা ক্রীতদাস প্রথায় পর্যবেসিত হয়। যেমন বাংলাদেশে নারীদের অবস্থানকে ক্রীতদাসের সাথে তুলনা করা চলে। ঠিক সেভাবেই বসনিয়াতে বা অন্যান্য স্থানে যেখানে মানবতা লুণ্ঠিত হয় সে সকলই ক্রীতদাস প্রথার প্রতীক। দাস মুক্তি দ্বারা মানবতার মুক্তি বুঝানো হয়। এ ব্যতীত ব্যক্তিগত জীবনে মানুষ লোভের দাস, অজ্ঞতার দাস, সম্পদের মোহে সম্পদের দাস, কুসংস্কারের দাস, তীব্র আবেগের দাস, ক্ষমতার দাস ইত্যাদি বিভিন্ন দাসের পরিণতিতে আত্মার স্বচ্ছতা হারায়। যারা পূণ্যাত্মা, তাদের দায়িত্ব হচেছ মানুষের এসব আত্মার দাসত্ব থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা – যদিও কাজটি তার জন্য সুখকর নয়, বরং কঠিন ও বিপদজনক। তবে তখনই সে এ কাজ করতে সক্ষম হবে যখন সে নিজেকে বা নিজের আত্মাকে মুক্ত করতে সক্ষম হবে।
আয়াতঃ 090.013
তা হচ্ছে দাসমুক্তি
(It is) Freeing a neck (slave, etc.)
فَكُّ رَقَبَةٍ
Fakku raqabatin
YUSUFALI: (It is:) freeing the bondman;
PICKTHAL: (It is) to free a slave,
SHAKIR: (It is) the setting free of a slave,
KHALIFA: The freeing of slaves.
১২। তুমি কি জান দুর্গম [গিরি ] পথ কি ?
১৩। [ তা হচ্ছে ] ; দাসমুক্তি ৬১৪০ ;
৬১৪০। চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনের পথ হচ্ছে সৎকর্ম সম্পাদন করা যা সব সময়েই খুব কষ্টকর পথ। এ পথের একটাই মানদন্ড আর তা হচ্ছে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও এই ভালোবাসা প্রকাশের জন্য দান করা। এই মানদন্ডকে তিনটি উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১) দাস মুক্তি, ২) এতিমকে আহার্য দান ও ৩) দরিদ্র নিষ্পেষিত ব্যক্তিকে আহার্য দান করা। এই মানদন্ড প্রতিটিই প্রতীকধর্মী, যার আক্ষরিক ও রূপক উভয় অর্থই বিদ্যমান। যদিও পৃথিবীতে ক্রীতদাস প্রথা বিদ্যমান নাই, তবুও তা সমাজে অন্যভাবে বর্তমান। যেখানেই মানবতা লাঞ্ছিত হয় সেখানেই তা ক্রীতদাস প্রথায় পর্যবেসিত হয়। যেমন বাংলাদেশে নারীদের অবস্থানকে ক্রীতদাসের সাথে তুলনা করা চলে। ঠিক সেভাবেই বসনিয়াতে বা অন্যান্য স্থানে যেখানে মানবতা লুণ্ঠিত হয় সে সকলই ক্রীতদাস প্রথার প্রতীক। দাস মুক্তি দ্বারা মানবতার মুক্তি বুঝানো হয়। এ ব্যতীত ব্যক্তিগত জীবনে মানুষ লোভের দাস, অজ্ঞতার দাস, সম্পদের মোহে সম্পদের দাস, কুসংস্কারের দাস, তীব্র আবেগের দাস, ক্ষমতার দাস ইত্যাদি বিভিন্ন দাসের পরিণতিতে আত্মার স্বচ্ছতা হারায়। যারা পূণ্যাত্মা, তাদের দায়িত্ব হচেছ মানুষের এসব আত্মার দাসত্ব থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা – যদিও কাজটি তার জন্য সুখকর নয়, বরং কঠিন ও বিপদজনক। তবে তখনই সে এ কাজ করতে সক্ষম হবে যখন সে নিজেকে বা নিজের আত্মাকে মুক্ত করতে সক্ষম হবে।
আয়াতঃ 090.014
অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে অন্নদান।
Or giving food in a day of hunger (famine),
أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ
Aw itAAamun fee yawmin thee masghabatin
YUSUFALI: Or the giving of food in a day of privation
PICKTHAL: And to feed in the day of hunger.
SHAKIR: Or the giving of food in a day of hunger
KHALIFA: Feeding, during the time of hardship.
১৪। অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে আহার্যদান ৬১৪১,
৬১৪১। এখানে আহার্য দান বাক্যটি প্রতীক ধর্মী। আহার্য হচ্ছে মানুষের মৌলিক চাহিদা যার প্রতি সামর্থবান প্রতিটি মানুষের সাহায্যের হস্ত সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। এখানে দুর্ভিক্ষের দিনে শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে দুর্ভিক্ষের দিনে খাদ্য সাহায্য যেরূপ অতীব প্রয়োজনীয় সেরূপ যে কোন মৌলিক চাহিদার ক্ষেত্রে যেমন শিক্ষা, অসুখে চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক চাহিদার সময়েও সাহায্য করা মানুষের অবশ্য কর্তব্য। যার খাদ্যের প্রয়োজন তাকেই দান করতে বলা হয়েছে। এই বাক্যটি প্রতীক ধর্মী যা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। এর আক্ষরিক ও রূপক উভয় অর্থই বিদ্যমান। বিশেষ ভাবে আহার্য দান করতে বলা হয়েছে দুর্ভিক্ষের দিনে। অর্থাৎ যখন দেশব্যপী খাদ্য শষ্যের অপ্রতুলতা বিরাজ করে; অর্থাৎ যে কোন মৌলিক প্রয়োজনে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করতে হবে।
আয়াতঃ 090.015
এতীম আত্বীয়কে
To an orphan near of kin.
يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ
Yateeman tha maqrabatin
YUSUFALI: To the orphan with claims of relationship,
PICKTHAL: An orphan near of kin,
SHAKIR: To an orphan, having relationship,
KHALIFA: Orphans who are related.
১৫। ইয়াতীম, আত্মীয়কে, ৬১৪২,
৬১৪২। যে কোন এতিমকে আহার্য দান করা অবশ্য কর্তব্য। এখানে আহার্য্য শব্দটি প্রতীক ধর্মী। যার সাহায্যে সাহায্য করাকে বুঝানো হয়েছে। সমাজে এতিমদের সুষ্ঠূ ও সম্মান জনক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে সাহায্যই করা হোক না কেন তা এর আওতায় অন্তর্ভূক্ত। তবে এখানে বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে নিজ আত্মীয়ের মাঝে এরূপ এতিমদের সর্বাগ্রে সাহায্য করতে হবে। ইংরেজীতে প্রবাদ আছে Charity begins at home . সে ভাবেই এখানে আল্লাহ্ আদেশ দান করেছেন।
আয়াতঃ 090.016
অথবা ধুলি-ধুসরিত মিসকীনকে
Or to a Miskîn (poor) afflicted with misery.
أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ
Aw miskeenan tha matrabatin
YUSUFALI: Or to the indigent (down) in the dust.
PICKTHAL: Or some poor wretch in misery,
SHAKIR: Or to the poor man lying in the dust.
KHALIFA: Or the poor who is in need.
১৬। অথবা পথের ধূলায় যে কাঙ্গাল থাকে তাকে, ৬১৪৩
৬১৪৩। সমাজে যারা দারিদ্র নিষ্পেষিত নিঃস্ব তাদের উন্নতির জন্য আন্তরিক চেষ্টা করার অপর নাম দারিদ্র নিষ্পেষিতদের আহার্য দান করা। এখানে প্রশংসা বা প্রতিদানের আকাঙ্খা করে না। এরূপ দানের প্রতিদান একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র নিকট চাওয়া হবে। এরূপ সাহায্যই প্রকৃত সাহায্য যার সাহায্যে সমাজ উপকৃত হয়, সমাজ থেকে দারিদ্রের অভিশাপ একমাত্র এরূপ সাহায্য দ্বারাই দূরীভূত হতে পারে। ‘আহার্য ‘ প্রতীক শব্দটি যে কোন প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
আয়াতঃ 090.017
অতঃপর তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সবরের ও উপদেশ দেয় দয়ার।
Then he became one of those who believed, and recommended one another to perseverance and patience, and (also) recommended one another to pity and compassion.
ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ
Thumma kana mina allatheena amanoo watawasaw bialssabri watawasaw bialmarhamati
YUSUFALI: Then will he be of those who believe, and enjoin patience, (constancy, and self-restraint), and enjoin deeds of kindness and compassion.
PICKTHAL: And to be of those who believe and exhort one another to perseverance and exhort one another to pity.
SHAKIR: Then he is of those who believe and charge one another to show patience, and charge one another to show compassion.
KHALIFA: And being one of those who believe, and exhorting one another to be steadfast, and exhorting one another to be kind.
১৭। এরপরে সে সেই সব লোকের দলভূক্ত হতে পারে ৬১৪৪ যারা ঈমান আনে; এবং ধৈর্য্য [ দৃঢ়তা ও আত্ম সংযম ] এবং দয়া ও সহানুভূতির উপদেশ দেয়।
৬১৪৪। উপরের আয়াত সমূহে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার যে বর্ণনা দান করা হয়েছে তা হচ্ছে ঈমানের এসিড পরীক্ষা। খাঁটি সোনা যেরূপ কষ্টিপাথরে ঘষে পরীক্ষা করা হয়, প্রকৃত সৎ কাজও সেরূপ ঈমানের এসিড পরীক্ষা যা চারিত্রিক গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে অর্জন করা যায়। বিশেষ চারিত্রিক গুণাবলীকে সারসংক্ষেপ করা হয়েছে নিম্নোক্ত ভাবে। ১) ধৈর্য বা সবর আরবীতে যার অর্থ ব্যপক [ সংযম, অধ্যাবসায় যার অর্ন্তভূক্ত দেখুন টিকা নং ৬১ ] ২) দয়া সহানুভূতি ও আন্তরিকতার সাথে কাউকে সাহায্য করার ইচ্ছা বা দয়া, শুধু মাত্র তাদের বিশ্বাসের আন্তরিকতাই বিচার করা হবে না ; তাদের কর্মের পরিণামও বিচার করা হবে।
আয়াতঃ 090.018
তারাই সৌভাগ্যশালী।
They are those on the Right Hand (the dwellers of Paradise),
أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ
Ola-ika as-habu almaymanati
YUSUFALI: Such are the Companions of the Right Hand.
PICKTHAL: Their place will be on the right hand.
SHAKIR: These are the people of the right hand.
KHALIFA: These have deserved happiness.
১৮। এরাই হলো ডানদিকের [ সৌভাগ্যবান ] লোক ৬১৪৫।
৬১৪৫। উপরে বর্ণিত মোমেন বান্দাদের কথাই বলা হয়েছে যে, তারাই সৌভাগ্যশালী। দেখুন [৫৬ : ৩ ] ও টিকা ৫২২৩। এরাই তারা যারা আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভ করবেন।
আয়াতঃ 090.019
আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা।
But those who disbelieved in Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), they are those on the Left Hand (the dwellers of Hell).
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ
Waallatheena kafaroo bi-ayatina hum as-habu almash-amati
YUSUFALI: But those who reject Our Signs, they are the (unhappy) Companions of the Left Hand.
PICKTHAL: But those who disbelieve Our revelations, their place will be on the left hand.
SHAKIR: And (as for) those who disbelieve in our communications, they are the people of the left hand.
KHALIFA: As for those who disbelieved in our revelations, they have incurred misery.
১৯। কিন্তু যারা আমার নিদর্শন সমূহ প্রত্যাখান করেছে, তারা হচ্ছে [ হতভাগ্য ] বা দিকের লোক ৬১৪৬।
৬১৪৬। দেখুন সূরা [৫৬ : ৪১ – ৫৬ ] ও টিকা ৫২২৩। যারা আল্লাহ্র বর্ণিত নির্দ্দেশাবলীকে প্রত্যাখান করে দুভার্গ্য তাদের। তারা অগ্নি কুন্ড দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়বে।
আয়াতঃ 090.020
তারা অগ্নিপরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দী থাকবে।
The Fire will be shut over them (i.e. they will be enveloped by the Fire without any opening or window or outlet.
عَلَيْهِمْ نَارٌ مُّؤْصَدَةٌ
AAalayhim narun mu/sadatun
YUSUFALI: On them will be Fire vaulted over (all round).
PICKTHAL: Fire will be an awning over them.
SHAKIR: On them is fire closed over.
KHALIFA: They will be confined in the Hellfire.
২০। তাদের জন্য রয়েছে [ চারিদিক থেকে ] কুন্ডলীকৃত আগুনের ব্যবস্থা।