আয়াতঃ 089.003
যা জোড় ও যা বিজোড়
And by the even and the odd (of all the creations of Allâh) .
وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ
WaalshshafAAi waalwatri
YUSUFALI: By the even and odd (contrasted);
PICKTHAL: And the Even and the Odd,
SHAKIR: And the even and the odd,
KHALIFA: By the even and the odd.
৩। জোড় ও বিজোড়ের শপথ, ৬১১০
৬১১০। সংখ্যাতত্ব নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা জোড় ও বিজোড় সংখ্যার গুণাগুণ ব্যক্ত করবেন। সাধারণ ভাবে বলা যায় জোড় ও বিজোড় সংখ্যা পরস্পর সর্ম্পকযুক্ত; একে অপরের পরেই আগমন করে থাকে। তবুও এরা প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র সংখ্যা। তবুও দুটি বিজোড় সংখ্যার সমষ্টি জোড় সংখ্যা। এখানে জোড় বলে সমগ্র সৃষ্ট জগতকে বোঝানো হয়েছে। কেননা আল্লাহ্ সমস্ত সৃষ্ট জগতকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন ; দেখুন [৩৬: ৩৬] আয়াত ও টিকা ৩৯৮১।জীব জগতে ‘জোড়া ‘ শব্দটি দ্বারা দুজনকে বুঝানো হয়। যদিও তারা ভিন্ন ব্যক্তিসত্ত্বা; তবুও নারী ও পুরুষ এই মিলে একক মানুষ সত্ত্বা [ বিজোড় ] ; কারণ তারা একে অপরের সম্পুরক। এভাবেই জোড় থেকে বিজোড় হয়। সৃষ্টিতে নারী পুরুষের ন্যায় বহু জিনিষ বিদ্যমান যা একে অপরের সম্পুরক হয়ে একক সত্ত্বার ন্যায় বিরাজ করে। যেমন পরমাণুর মৌলিক উপাদান প্রোটন ও ইলেক্ট্রন জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে, যদিও তারা একক ভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মাম্বলী। সুতারাং ইহকাল ও পরকালকে ভিন্ন ভাবে চিন্তা না করে পরকালকে ইহকালের পটভূমিতে বিচার করতে হবে। ইহকালের কর্মফলই হবে পরকালের জীবনের পটভূমি। ইহকাল ও পরকাল মিলে একক সত্ত্বা। এখানে যে বিষয়ের জন্য শপথ করা হয়েছে তা এই যে, মানুষের প্রত্যেক কর্মের পরকালে হিসাব নেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী তার শাস্তি ও পুরষ্কার হওয়া সন্দেহ ও সংশয়ের উর্দ্ধে, তবুও কেন আমরা পরকালে অবিশ্বাস করি ?
আয়াতঃ 089.004
এবং শপথ রাত্রির যখন তা গত হতে থাকে
And by the night when it departs.
وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ
Waallayli itha yasri
YUSUFALI: And by the Night when it passeth away;-
PICKTHAL: And the night when it departeth,
SHAKIR: And the night when it departs.
KHALIFA: By the night as it passes.
৪। এবং শপথ রজনীর যখন তা অপসৃয়মান হয়; ৬১১১
৬১১১। রজনী যখন গত হয়, অর্থাৎ রাত্রির শেষ যাম অর্থাৎ সূর্যদয়ের পূর্বে রাত্রির যে অংশ থাকে। শপথ বাক্যগুলির ধারাবাহিকতা গুলির সৌন্দর্য লক্ষ্য করুণ। প্রথমে বলা হয়েছে রাত্রির অন্ধকার ভেদ করে প্রথম আলোক রশ্মির ঘোষণা ; দ্বিতীয়ত : বলা হয়েছে ধর্মের যে আনুষ্ঠানিককতা আছে সে সম্বন্ধে যেমন জুল -হজ্ব মাসের প্রথম দশ রাত্রি তীর্থযাত্রীদের নিকট ; তৃতীয়তঃ বলা হয়েছে যখন ইহকাল ও পরকালের বৈষম্য দূর হয়ে যাবে ; চতুর্থতঃ শেষ শপথে বলা হয়েছে রাত্রির শেষ যামের, যার পরেই আসবে দিনের আলো। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে যখন এই পৃথিবী অদৃশ্য হয়ে যাবে পরলোকের প্রকৃত জীবন তখন দিবালোকের ন্যায় সত্য বলে প্রতিভাত হবে।
আয়াতঃ 089.005
এর মধ্যে আছে শপথ জ্ঞানী ব্যক্তির জন্যে।
There is indeed in them (the above oaths) sufficient proofs for men of understanding (and that, they should avoid all kinds of sins and disbeliefs, etc.)!
هَلْ فِي ذَلِكَ قَسَمٌ لِّذِي حِجْرٍ
Hal fee thalika qasamun lithee hijrin
YUSUFALI: Is there (not) in these an adjuration (or evidence) for those who understand?
PICKTHAL: There surely is an oath for thinking man.
SHAKIR: Truly in that there is an oath for those who possess understanding.
KHALIFA: A profound oath, for one who possesses intelligence.
৫। নিশ্চয়ই এর মাঝে শপথ রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য, ৬১১২
৬১১২। এ সব পবিত্র শপথের মাধ্যমে আমাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনের গুরুত্বের প্রতি। আধ্যাত্মিক অজ্ঞতা, বিভ্রান্তি ও ধ্বংসের অন্ধকার থেকে মানব আত্মা কিভাবে প্রত্যাদেশের আলোতে গৌরবময় আলোকজ্জ্বল আধ্যাত্মিক আলোর সন্ধান লাভ করবে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। আবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে সে সব জাতির প্রতি যারা আল্লাহ্র বিধানকে অস্বীকার করার ফলে নিজেদের ধ্বংস নিজেরাই ডেকে এনেছিলো। উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়েছে আ’দ ও সামুদ জাতির কথা যারা নিজেদের গৌরব ও শ্রেষ্ঠত্ব সত্ত্বেও তাদের ধ্বংস কেউ রোধ করতে পারে নাই। এ সব উদাহরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ মানুষের সীমিত পার্থিব জ্ঞানের সীমানার সীমারেখাকে বিস্তৃত করতে চেয়েছেন। যতক্ষণ আত্মা নশ্বর দেহকে ধারণ করে থাকে ততক্ষণ আত্মা তার জ্ঞানের সীমারেখাকে পরলোক পর্যন্ত বিস্তৃত করতে পারে না। শুধুমাত্র উপলব্ধি ও অনুভবই পারে এই সীমাকে অতিক্রম করে সসীমকে অসীমে পরিণত করতে। সুতারাং আমাদের সেই বিশ্ব স্রষ্টার নিকট প্রার্থনা করা প্রয়োজন যেনো আমরা আমাদের সসীম জ্ঞানের সীমারেখাকে অতিক্রম করে “বোধ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষে পরিণত হতে পারি।