৫৯৭৯। ১০) ‘আসমান’ দ্বারা জাহান্নামের আগুন, বেহেশত উভয়কেই বুঝানো হয়েছে। এ দুটি হবে পরলোকে পাপী ও পূণ্যাত্মাদের বাসস্থান। “আকাশের আবরণ অপসারণ ” বাক্যটি রূপক ধর্মী। পশুর চামড়া ছাড়িয়ে নেবার পরে তার দেহের অভ্যন্তরের প্রতিটি বস্তু যেমন রক্ত, মাংস, ভিতরের অংগ প্রত্যঙ্গ দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। কারণ সেগুলি ধরে রাখার মত কোন আবরণ থাকে না। ঠিক সেরূপ হবে প্রতিটি আত্মার অবস্থা।
আয়াতঃ 081.012
যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে
And when Hell-fire shall be kindled to fierce ablaze.
وَإِذَا الْجَحِيمُ سُعِّرَتْ
Wa-itha aljaheemu suAAAAirat
YUSUFALI: When the Blazing Fire is kindled to fierce heat;
PICKTHAL: And when hell is lighted,
SHAKIR: And when the hell is kindled up,
KHALIFA: Hell is ignited.
১২। যখন জাহান্নামের আগুনকে উদ্দীপিত করা হবে ; ৫৯৮০
৫৯৮০। ১১) জাহান্নামের অগ্নি হবে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর আুগনের থেকেও ভয়ঙ্কর। এ আগুন অন্তরের অন্তঃস্থলকে পুড়িয়ে দেবে। পাপকে অনুধাবনের তীব্র গ্লানি, অনুতাপ, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, আত্মার অন্তঃস্থলে তীব্র দহনের সৃষ্টি করবে।
আয়াতঃ 081.013
এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে,
And when Paradise shall be brought near,
وَإِذَا الْجَنَّةُ أُزْلِفَتْ
Wa-itha aljannatu ozlifat
YUSUFALI: And when the Garden is brought near;-
PICKTHAL: And when the Garden is brought nigh,
SHAKIR: And when the garden is brought nigh,
KHALIFA: Paradise is presented.
১৩। এবং যখন বেহেশতকে ৫৯৮১ নিকটে আনা হবে ; ৫৯৮২
৫৯৮১। ১২) শেষে বলা হয়েছে জান্নাতের কথা – যা দৃষ্টিগোচর হবে বা কাছে আনা হবে কিন্তু বেহেশতে দাখিল করার কথা বলা হয় নাই। কারণ তাদের চোখের আবরণ সরে যাবে ফলে তারা প্রকৃত অবস্থা দেখতে ও বুঝতে পারবে। প্রতিটি আত্মাই তা জানতে ও বুঝতে পারবে।
৫৯৮২। প্রাচ্যে সাহিত্যে বিশেষভাবে ধর্মীয় সাহিত্যে সর্বদা রূপক বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এই রূপক বর্ণনাকে অন্তরের দৃষ্টিতে দেখে বুঝে নিতে হয়। কোরাণের বিভিন্ন বর্ণনায় এই রূপকের ব্যবহার প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এ সব বর্ণনায় স্বাভাবিক অর্থ ব্যতীতও সমান্তরাল অর্থ বিদ্যমান থাকে। যেমন আয়াত [ ১ – ৬ ] পর্যন্ত সুফীদের ধারণাকে নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করা হয়।
১) সূর্য যেরূপ সৌরমন্ডলের কেন্দ্রে অবস্থান করে, ঠিক সেরূপ হচ্ছে আমাদের প্রবৃত্তি। আমাদের পার্থিব চাওয়া পাওয়ার কেন্দ্র হচ্ছে আমাদের প্রবৃত্তি। প্রবৃত্তির এই কামনার আগুন নিভিয়ে দিলেই প্রকৃত সত্যের আলোর উন্মেষ ঘটে আত্মার মাঝে। শেষ বিচারের দিনে এই প্রবৃত্তির আগুন নিভে যাবে।
২) তারার আলোকে তুলনা করা যায় পৃথিবীর সাধারণ জ্ঞান ও বিজ্ঞতার সাথে। সূর্যের আগমনে যেরূপ তারারা অর্ন্তহিত হয়, ঠিক সেরূপ আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও ও প্রজ্ঞার আলোতে পার্থিব জ্ঞান অন্তর্হিত হয়। শেষ বিচারের দিনে পার্থিব জ্ঞান হবে মূল্যহীন।
৩) মানুষের পার্থিব আশা আকাঙ্খা পর্বতের ন্যায় সুউচ্চ। আধ্যাত্মিক জ্ঞানে যে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা যায় তার দ্বারা পার্থিব আশা আকাঙ্খাকে মূল্যহীন মনে হবে। শেষ বিচারের দিনে প্রকৃত সত্য পার্থিব আশা আকাঙ্খাকে মূল্যহীন করে দেবে।
৪) শাবকসহ উষ্ট্র হচ্ছে সম্পদের প্রতীক, যা মানুষের আকাঙ্খার বস্তু। প্রকৃত সত্য জ্ঞান লাভের জন্য সম্পদের আকাঙ্খাকে ত্যাগ করতে হবে। সেদিন সকলেই প্রকৃত সত্যকে প্রত্যক্ষ করতে পারবে সুতারাং সম্পদের আশা- আকাঙ্খা তিরোহিত হয়ে পড়বে।
৫) তীব্র আবেগ হচ্ছে বন্য পশুর ন্যায়। তীব্র আবেগ সম্পন্ন লোক হয় ন্যায় অন্যায় বিবর্জিত। প্রকৃত সত্যের জ্ঞান তখনই লাভ করা যায় যখন তীব্র আবেগকে সংযত করা সক্ষম হয়। সেদিন সত্যের আলোতে বন্য পশুর ন্যায় আবেগের তীব্রতা হ্রাস পেয়ে শান্ত হয়ে পড়বে।
৬) সমুদ্র যেরূপ উদ্বেলিত হয়ে সব কিছুকে আচ্ছাদিত করে ফেলে; ঠিক সেরূপ হচ্ছে আল্লাহ্র করুণা, ভালোবাসা, দয়া, মহিমা। আল্লাহ্র ক্ষমতা সব কিছুকে আচ্ছাদিত করে ফেলবে।
এর সব কিছু যে কোনও মূহুর্তে ঘটতে পারে। ব্যক্তির জীবনে যখন তা ঘটে, তখন আল্লাহ্র মহিমা তার উপরে পূর্ণ জ্যোতিতে বিকশিত হয়।
কোন কোন তফসীরকারের মতে এই বর্ণনা হবে কবর আযাবের জন্য যখন আত্মা দেহ ত্যাগ করে চলে যাবে। দেখুন [ ৭৫ : ২২ ] ও টিকা ৫৮২২ ; আয়াত [ ৭৮: ৪০ ] ও টিকা ৫৯১৪ এবং আয়াত [ ৭৯ : ১৪ ] ও টিকা ৫৯২৬।
আয়াতঃ 081.014
তখন প্রত্যেকেই জেনে নিবে সে কি উপস্থিত করেছে।
(Then) every person will know what he has brought (of good and evil).
عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا أَحْضَرَتْ
AAalimat nafsun ma ahdarat
YUSUFALI: (Then) shall each soul know what it has put forward.
PICKTHAL: (Then) every soul will know what it hath made ready.
SHAKIR: Every soul shall (then) know what it has prepared.
KHALIFA: Every soul will know everything it brought.
১৪। [ তখন ] প্রতিটি আত্মা জানতে পারবে [মৃত্যুর ] পূর্বে সে কি প্রেরণ করেছে ৫৯৮৩