- সূরার নাম: সূরা তাকভীর
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা তাকভীর
আয়াতঃ 081.001
যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে,
When the sun Kuwwirat (wound round and lost its light and is overthrown ).
إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ
Itha alshshamsu kuwwirat
YUSUFALI: When the sun (with its spacious light) is folded up;
PICKTHAL: When the sun is overthrown,
SHAKIR: When the sun is covered,
KHALIFA: When the sun is rolled.
==============
সূরা তাকভীর অথবা ভাঁজ করা -৮১
২৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এটা একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। সম্ভবতঃ ধারাবাহিকতায় এটি ষষ্ঠ বা সপ্তম। পৃথিবী ও বিশ্বভূবনের শেষ পরিণতির বা ধ্বংসের চিত্র আঁকা হয়েছে এই সূরাতে [ ১ – ৩ ]। সেই সাথে ব্যক্তিগত দায় দায়িত্বকে তুলে ধরা হয়েছে [১৪ নং ] আয়াত। এই বর্ণনার পরেই বলা হয়েছে যে কোরাণের প্রত্যাদেশ সত্য, এবং তা অবতীর্ণ করা হয়েছে জিব্রাইল ফেরেশতার মাধ্যমে। এটা কোন আবেগে আচ্ছন্নকারী কবির অসংলগ্ন রচনা নয়। প্রত্যাদেশকে প্রেরণ করা হয়েছে মানুষের আধ্যাত্মিক সমৃদ্ধির জন্য [ ১৪ -২৯]।
এই সূরাটি ৮২নং সূরার সাথে তুলনা করা চলে। ৮২নং সূরাটি ও এই সূরাটি এক সাথে পাঠ করা উচিত।
সূরা তাকভীর অথবা ভাঁজ করা -৮১
২৯ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। যখন সূর্য ৫৯৬৯ [ তার অত্যুজ্জ্বল আলোসহ ] ভাঁজ করা হবে ৫৯৭০;
৫৯৬৯। এই সূরাতে [ ১ – ১৩ ] পর্যন্ত আয়াত সমূহ ‘যখন’ শব্দটি দ্বারা শর্তাধীন করা হয়েছে ১৪ নং স্বতন্ত্র বাক্যের অধীনে। এমন একটি সময় আসবে যখন এই চেনা জানা পৃথিবীর সকল কাজ স্তব্ধ হয়ে যাবে। সেদিন প্রতিটি আত্মা জানতে পারবে তাঁর কর্মফল। পুণরুত্থান হবে প্রতিটি আত্মার ব্যক্তিগত বিপদ। সেই বিপদের দিনে সারা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এবং মানুষের সম্মুখে তাঁর কৃতকর্মের বিবরণ উম্মুক্ত করা হবে।
৫৯৭০। শর্তাধীন বাক্যগুলির সংখ্যা ১২। এই ১২টি বাক্য দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ছয়টি মানুষের বাহ্যিক বা শারিরীক অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। শেষের ছয়টি অন্তরের বা আত্মার সাথে সম্পৃক্ত। আসুন আমরা একটা একটা করে বিশ্লেষণ করি। ১) প্রকৃতিতে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আলো, তাপ এবং শক্তি [ বিদ্যুৎ বা চুম্বক শক্তি ] যার সবই আমরা লাভ করি সূর্য থেকে। সূর্য পৃথিবীর সকল আলো, তাপ ও শক্তির উৎস। যার ফলে পৃথিবীর সকল প্রাণ সূর্যের উপরে নির্ভরশীল। যদিও সূর্যের সাথে পৃথিবীর প্রাণের অস্তিত্ব ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তবুও সূর্যের দূরত্ব আমাদের থেকে যোজন যোজন মাইল দূরে। সেদিন সূর্য তার জ্যোতি হারাবে। বর্তমান জ্যোতির্বিজ্ঞান বলে যে, এমন একদিন আসবে যেদিন সূর্য নিভে যাবে অর্থাৎ নক্ষত্রের মৃত্যু ঘটবে। বিজ্ঞানের এই বর্তমান তত্ব কোরাণের আয়াতেরই প্রতিধ্বনি মাত্র। যেদিন সূর্যের মৃত্যু ঘটবে সেদিন সে তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি হারাবে। ফলে সূর্যের সাথে সাথে সারা সৌরমন্ডল লন্ডভন্ড হয়ে পড়বে। কিন্তু আত্মা হবে অক্ষয় ও অমর।
আয়াতঃ 081.002
যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে,
And when the stars shall fall;
وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ
Wa-itha alnnujoomu inkadarat
YUSUFALI: When the stars fall, losing their lustre;
PICKTHAL: And when the stars fall,
SHAKIR: And when the stars darken,
KHALIFA: The stars are crashed into each other.
২। যখন নক্ষত্র রাজি তাদের দীপ্তি হারিয়ে খসে পড়বে; ৫৯৭১
৫৯৭১। ২) সূর্যের আলোর পরেই আলোর উৎস হচ্ছে তারার আলো। পৃথিবীর চন্দ্রের কথা বলা হয় নাই কারণ, চাঁদের আলো সূর্যেরই প্রতিফলিত রশ্মিমাত্র। পৃথিবীর আদি যুগ থেকে নভোমন্ডলে তারাদের অবস্থান স্থির হয়ে আছে। কিন্তু সেদিন তারারাও স্থির থাকবে না। বিশ্বভূবনের সাথে সাথে সারা নভোমন্ডল লন্ডভন্ড হয়ে পড়বে, তারারাও তাদের জ্যোতি হারাবে।
আয়াতঃ 081.003
যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে,
And when the mountains shall made to pass away;
وَإِذَا الْجِبَالُ سُيِّرَتْ
Wa-itha aljibalu suyyirat
YUSUFALI: When the mountains vanish (like a mirage);
PICKTHAL: And when the hills are moved,
SHAKIR: And when the mountains are made to pass away,
KHALIFA: The mountains are wiped out.
৩। যখন পর্বতসমূহ [ মরিচীকার ন্যায় ] অদৃশ্য হয়ে যাবে ৫৯৭২ ;
৫৯৭২। দেখুন [ ৭৮: ২০ ] আয়াত। ৩) পৃথিবীতে পর্বত হচ্ছে স্থায়ীত্ব ও কাঠিন্যের প্রতীক। সুউচ্চ কঠিন শিলার পর্বতমালা যুগ যুগ ধরে অটল অনড় ভাবে পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে। সেদিন তারাও,মরিচীকার ন্যায় অদৃশ্য হয়ে যাবে। তাদের স্থায়ীত্ব বা কাঠিন্যের কোন মূল্য থাকবে না।
আয়াতঃ 081.004
যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীসমূহ উপেক্ষিত হবে;
And when the pregnant she-camels shall be neglected;
وَإِذَا الْعِشَارُ عُطِّلَتْ
Wa-itha alAAisharu AAuttilat
YUSUFALI: When the she-camels, ten months with young, are left untended;
PICKTHAL: And when the camels big with young are abandoned,
SHAKIR: And when the camels are left untended,
KHALIFA: The reproduction is halted.
৪। যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রী বাচ্চাসহ পরিত্যাগ করা হবে ; ৫৯৭৩
৫৯৭৩। ৪) উষ্ট্র হচ্ছে আরবদেশের গৃহপালিত পশু ও সম্পদের প্রতীক। গর্ভবতী উষ্ট্র আরবে সে সময়ে অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদরূপে পরিগণিত হতো – কারণ দুধ ও বাচ্চা। সে কারণেই উষ্ট্রের উপমা দান করা হয়েছে। সাধারাণতঃ গর্ভবতী উষ্ট্রকে অত্যন্ত যত্নের সাথে রাখা হয়। সেদিন যখন পৃথিবীর পরিচিত সকল বস্তু অদৃশ্য হয়ে যাবে, মানুষ তার সম্পদের হিসাব রাখতেও ভুলে যাবে। গর্ভবতী উষ্ট্রও উপেক্ষিত হবে। অর্থাৎ মানুষ সেদিন মূল্যবান সম্পদও উপেক্ষা করবে। সেদিনের চিত্র কোন ভাবেই বর্তমান পৃথিবীর কোন কিছুর সাথেই তুলনীয় হবে না।
আয়াতঃ 081.005
যখন বন্য পশুরা একত্রিত হয়ে যাবে,
And when the wild beasts shall be gathered together;
وَإِذَا الْوُحُوشُ حُشِرَتْ
Wa-itha alwuhooshu hushirat
YUSUFALI: When the wild beasts are herded together (in the human habitations);
PICKTHAL: And when the wild beasts are herded together,
SHAKIR: And when the wild animals are made to go forth,
KHALIFA: The beasts are summoned.
৫। যখন বন্য পশুসকল [ মানুষের সাথে ] একত্র করা হবে ; ৫৯৭৪
৫৯৭৪। ৫) সেদিনের চিত্র বর্তমান পৃথিবীর চিত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। সাধারণ ভাবে বন্য পশুরা ও মানুষ একে অপরকে ভয় করে। তারা মানুষের বাসভূমি থেকে দূরে থাকতে ভালোবাসে। কিন্তু সেদিন মানুষের আবাসস্থল ও পশুর আবাসস্থলের মাঝে কোনও পার্থক্য থাকবে না। আতঙ্ক, ভয়, শঙ্কা মানুষ ও পশু উভয়কে সন্ত্রস্ত করে তুলবে যার ফলে পরস্পরের অস্তিত্ব তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে না। মানুষ পশু সব একাকার হয়ে মিলে মিশে যাবে।
আয়াতঃ 081.006
যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
And when the seas shall become as blazing Fire or shall overflow;
وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَتْ
Wa-itha albiharu sujjirat
YUSUFALI: When the oceans boil over with a swell;
PICKTHAL: And when the seas rise,
SHAKIR: And when the seas are set on fire,
KHALIFA: The oceans are set aflame.
৬। যখন সমুদ্র সকল ফুটতে থাকবে ও উথলিয়ে উঠবে ; ৫৯৭৫
৫৯৭৫। দেখুন [ ৫২ : ৬ ] আয়াত ও টিকা ৫০৪১। ৬) পৃথিবী ধ্বংসের বর্ণনা প্রসঙ্গে সমুদ্রের বর্ণন করা হয়েছে। ধবংসের সেই প্রচন্ডতাতে সমুদ্র যে রূপ ধারণ করবে তারই সংক্ষিপ্ত চিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণভাবে সমুদ্র তার সীমা কখনও অতিক্রম করে না। জলভাগ ও স্থলভাগের সীমা নির্ধারিত আছে। কিন্তু সেদিন প্রচন্ড রোষে সমুদ্র ফুঁসে উঠবে। উত্তাল তরঙ্গ স্থলভাগের সকল বাঁধাকে অতিক্রম করে আছড়ে পড়বে। স্থলভাগ ও জলভাগের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পড়বে। স্থায়ী বা নূতন পৃথিবী সৃষ্টির প্রাক্কালে এ ভাবেই পুরাতন পৃথিবী টুকরা টুকরা হয়ে ভেঙ্গে পড়বে। কিন্তু এগুলি সবই হচ্ছে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবর্তন যে পরিবর্তন রোজ কেয়ামতের প্রতীক। এই পরিবর্তনকে মানুষের বাহ্যিক বা শারীরিক পরিবর্তনের সাথে তুলনা করা হয়েছে। পরবর্তী [ ৭- ১২ ] আয়াত পর্যন্ত নূতন পৃথিবীর বর্ণনা করা হয়েছে, যেখানে বর্তমান পৃথিবীর অসামঞ্জস্য থাকবে না।
আয়াতঃ 081.007
যখন আত্মাসমূহকে যুগল করা হবে,
And when the souls shall be joined with their bodies;
وَإِذَا النُّفُوسُ زُوِّجَتْ
Wa-itha alnnufoosu zuwwijat
YUSUFALI: When the souls are sorted out, (being joined, like with like);
PICKTHAL: And when souls are reunited,
SHAKIR: And when souls are united,
KHALIFA: The souls are restored to their bodies.
৭। যখন আত্মাসমূহকে বাছাই করা হবে [ সমগোত্রীয়কে একত্রে সংযুক্ত করার জন্য ]; ৫৯৭৬
৫৯৭৬। এই আয়াতটি বিভিন্ন বাংলা অনুবাদে বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজীতে অনুবাদ হয়েছে নিম্নরূপঃ ” When the souls are sorted out [ Being joined , like with like ]।” পূর্বের আয়াতে [ ৫৬ : ৭ ] বলা হয়েছে যে, মানুষকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হবে যথা, আল্লাহ্র সান্নিধ্য প্রাপ্ত ব্যক্তিরা, ডানদিকের দল ও বামদিকের দল। এই শ্রেণী বিভাগ হচ্ছে প্রধান শ্রেণী বিভাগ। এই আয়াত দ্বারা ব্যপক ভাবে পৃথিবীর অবস্থাকে বুঝানো হয়েছে। ৭) পৃথিবীর এই শিক্ষানবীশকালে ভালো-মন্দ, পাপ-পূণ্য, জ্ঞান-অজ্ঞতা,ক্ষমতা-দম্ভ ইত্যাদি পরস্পর মিশে থাকে ওতপ্রেতভাবে। কিন্তু নূতন পৃথিবী, যা সৃষ্টি হবে,সেখানে এরূপ মিশ্রণ থাকবে না। সকলেরই পূর্ণ সত্য প্রকাশিত হবে, প্রকৃত মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রত্যেকের শ্রেণী বিভাগ করা হবে। কারণ নূতন পৃথিবীতে ভালো-মন্দ, বা পাপ – পূণ্যের সংঘর্ষে শান্তি ও শৃঙ্খলা বারে বারে বিঘ্নিত হবে না। সে পৃথিবী হবে শান্তি ও শৃঙ্খলার পরিপূর্ণ চিত্র।
আয়াতঃ 081.008
যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,
And when the female (infant) buried alive (as the pagan Arabs used to do) shall be questioned.
وَإِذَا الْمَوْؤُودَةُ سُئِلَتْ
Wa-itha almawoodatu su-ilat
YUSUFALI: When the female (infant), buried alive, is questioned –
PICKTHAL: And when the girl-child that was buried alive is asked
SHAKIR: And when the female infant buried alive is asked
KHALIFA: The girl who was buried alive is asked:
৮। যখন [ সদ্যজাত ] জীবন্ত সমাধিস্ত কন্যা সন্তানকে জিজ্ঞাসা করা হবে ;
৯। কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিলো ; ৫৯৭৭
৫৯৭৭। ৮) পৃথিবীতে যুগে যুগে যারা অসহায় তারা অন্যায় ও অবিচারের দ্বারা নিগৃহিত হয়ে থাকে। কত নিরপরাধ জীবন পাপের যুপকাষ্ঠে বলি হয়ে যায়, বিচারের বাণী নিরবে নিভৃত কাঁদে, প্রতিকার বিহীন ভাবে। এ সব পাপ ও অন্যায় এমন ভাবে সংঘটিত হয়ে থাকে যে বাইরের পৃথিবীতে তার কোনও চিহ্নমাত্র থাকে না, যার সাহায্যে অপরাধীকে শাস্তি দান করা যায়। কোরেশদের জন্য এরূপ একটি পাপ ছিলো মেয়ে শিশু হত্যা : দেখুন [ ১৫ : ৫৮- ৫৯ ] এবং টিকা ২০৮৪। এই পাপকে তারা পাপ মনে করতো না, কারণ সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপাতঃদৃষ্টিতে তা ছিলো ন্যায়সঙ্গত গোপন ষড়যন্ত্র। এবং এ ব্যাপারে তাদের কোনও জবাবদিহিতা ছিলো না। পৃথিবীর কোন কাজই মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাবে না। বিচার দিবসে সকল কর্মই ন্যায় বিচারের সম্মুখীন হবে। নিহত শিশুকেই জিজ্ঞাসা করা হবে যে, কি অপরাধে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিলো ? সে তো কোনও অপরাধ করে নাই, অপরাধীর গোপন সকল কর্ম-কান্ডই তার অপরাধের সাক্ষী হবে। এ ভাবেই মানুষের সকল গোপন পাপ সেদিন গোপন থাকবে না। প্রকাশ্য হয়ে পড়বে ও ন্যায় বিচারের সম্মূখীন হবে।
আয়াতঃ 081.009
কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?
For what sin she was killed?
بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ
Bi-ayyi thanbin qutilat
YUSUFALI: For what crime she was killed;
PICKTHAL: For what sin she was slain,
SHAKIR: For what sin she was killed,
KHALIFA: For what crime was she killed?
৮। যখন [ সদ্যজাত ] জীবন্ত সমাধিস্ত কন্যা সন্তানকে জিজ্ঞাসা করা হবে ;
৯। কি অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিলো ; ৫৯৭৭
৫৯৭৭। ৮) পৃথিবীতে যুগে যুগে যারা অসহায় তারা অন্যায় ও অবিচারের দ্বারা নিগৃহিত হয়ে থাকে। কত নিরপরাধ জীবন পাপের যুপকাষ্ঠে বলি হয়ে যায়, বিচারের বাণী নিরবে নিভৃত কাঁদে, প্রতিকার বিহীন ভাবে। এ সব পাপ ও অন্যায় এমন ভাবে সংঘটিত হয়ে থাকে যে বাইরের পৃথিবীতে তার কোনও চিহ্নমাত্র থাকে না, যার সাহায্যে অপরাধীকে শাস্তি দান করা যায়। কোরেশদের জন্য এরূপ একটি পাপ ছিলো মেয়ে শিশু হত্যা : দেখুন [ ১৫ : ৫৮- ৫৯ ] এবং টিকা ২০৮৪। এই পাপকে তারা পাপ মনে করতো না, কারণ সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আপাতঃদৃষ্টিতে তা ছিলো ন্যায়সঙ্গত গোপন ষড়যন্ত্র। এবং এ ব্যাপারে তাদের কোনও জবাবদিহিতা ছিলো না। পৃথিবীর কোন কাজই মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাবে না। বিচার দিবসে সকল কর্মই ন্যায় বিচারের সম্মুখীন হবে। নিহত শিশুকেই জিজ্ঞাসা করা হবে যে, কি অপরাধে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিলো ? সে তো কোনও অপরাধ করে নাই, অপরাধীর গোপন সকল কর্ম-কান্ডই তার অপরাধের সাক্ষী হবে। এ ভাবেই মানুষের সকল গোপন পাপ সেদিন গোপন থাকবে না। প্রকাশ্য হয়ে পড়বে ও ন্যায় বিচারের সম্মূখীন হবে।
আয়াতঃ 081.010
যখন আমলনামা খোলা হবে,
And when the written pages of deeds (good and bad) of every person shall be laid open;
وَإِذَا الصُّحُفُ نُشِرَتْ
Wa-itha alssuhufu nushirat
YUSUFALI: When the scrolls are laid open;
PICKTHAL: And when the pages are laid open,
SHAKIR: And when the books are spread,
KHALIFA: The records are made known.
১০। যখন আমলনামা সকল উন্মোচন করে রাখা হবে ; ৫৯৭৮
৫৯৭৮। ৯) আমলনামা দ্বারা মানুষের জীবনের যাবতীয় কর্ম যাতে সংরক্ষিত হয়, তাকেই বুঝানো হয়। মানুষের জীবনের ভালো কাজ ও মন্দ কাজ সবই উম্মোচিত হয়ে পড়বে শেষ বিচারের দিনে। দেখুন [ ৫০ : ১৭-১৮ ] আয়াত ও টিকা ৪৯৫৪ ; আরও দেখুন সূরা [৮২ : ১১ – ১২ ] আয়াত। পার্থিব জীবনে গোপনীয়তা অবলম্বন করা সম্ভব, কিন্তু পারলৌকিক জীবনে কোনও কিছুই গোপন থাকবে না। পৃথিবীর প্রতিটি গোপনীয়তা, ভালো বা মন্দ কাজ সব কিছু সেখানে প্রকাশ পাবে,সর্বত্র প্রকাশিত হবে চরম সত্য। জীবনের চলার পথে ছোট ছোট ঘটনাবলী যা মানুষ ভুলে যায়, মনের গোপন রাখা উদ্দেশ্য, মর্মবেদনা যা প্রকাশ্য ছিলো না, অবহেলা, অনাদর বা সাহায্য সহযোগীতা এক কথায় জীবন ছন্দের প্রতিটি মূহুর্ত রেকর্ড হয়ে থাকবে আর বিচার দিবসে সেই রেকর্ড বা আমলনামা সর্ব সমক্ষে উম্মোচিত হবে।
আয়াতঃ 081.011
যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে,
And when the heaven shall be stripped off and taken away from its place;
وَإِذَا السَّمَاء كُشِطَتْ
Wa-itha alssamao kushitat
YUSUFALI: When the world on High is unveiled;
PICKTHAL: And when the sky is torn away,
SHAKIR: And when the heaven has its covering removed,
KHALIFA: The heaven is removed.
১১। যখন উচ্চ আসমানের আবরণ অপসারিত করা হবে ; ৫৯৭৯
৫৯৭৯। ১০) ‘আসমান’ দ্বারা জাহান্নামের আগুন, বেহেশত উভয়কেই বুঝানো হয়েছে। এ দুটি হবে পরলোকে পাপী ও পূণ্যাত্মাদের বাসস্থান। “আকাশের আবরণ অপসারণ ” বাক্যটি রূপক ধর্মী। পশুর চামড়া ছাড়িয়ে নেবার পরে তার দেহের অভ্যন্তরের প্রতিটি বস্তু যেমন রক্ত, মাংস, ভিতরের অংগ প্রত্যঙ্গ দৃশ্যমান হয়ে পড়ে। কারণ সেগুলি ধরে রাখার মত কোন আবরণ থাকে না। ঠিক সেরূপ হবে প্রতিটি আত্মার অবস্থা।
আয়াতঃ 081.012
যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে
And when Hell-fire shall be kindled to fierce ablaze.
وَإِذَا الْجَحِيمُ سُعِّرَتْ
Wa-itha aljaheemu suAAAAirat
YUSUFALI: When the Blazing Fire is kindled to fierce heat;
PICKTHAL: And when hell is lighted,
SHAKIR: And when the hell is kindled up,
KHALIFA: Hell is ignited.
১২। যখন জাহান্নামের আগুনকে উদ্দীপিত করা হবে ; ৫৯৮০
৫৯৮০। ১১) জাহান্নামের অগ্নি হবে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর আুগনের থেকেও ভয়ঙ্কর। এ আগুন অন্তরের অন্তঃস্থলকে পুড়িয়ে দেবে। পাপকে অনুধাবনের তীব্র গ্লানি, অনুতাপ, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, আত্মার অন্তঃস্থলে তীব্র দহনের সৃষ্টি করবে।
আয়াতঃ 081.013
এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে,
And when Paradise shall be brought near,
وَإِذَا الْجَنَّةُ أُزْلِفَتْ
Wa-itha aljannatu ozlifat
YUSUFALI: And when the Garden is brought near;-
PICKTHAL: And when the Garden is brought nigh,
SHAKIR: And when the garden is brought nigh,
KHALIFA: Paradise is presented.
১৩। এবং যখন বেহেশতকে ৫৯৮১ নিকটে আনা হবে ; ৫৯৮২
৫৯৮১। ১২) শেষে বলা হয়েছে জান্নাতের কথা – যা দৃষ্টিগোচর হবে বা কাছে আনা হবে কিন্তু বেহেশতে দাখিল করার কথা বলা হয় নাই। কারণ তাদের চোখের আবরণ সরে যাবে ফলে তারা প্রকৃত অবস্থা দেখতে ও বুঝতে পারবে। প্রতিটি আত্মাই তা জানতে ও বুঝতে পারবে।
৫৯৮২। প্রাচ্যে সাহিত্যে বিশেষভাবে ধর্মীয় সাহিত্যে সর্বদা রূপক বর্ণনা করা হয়ে থাকে। এই রূপক বর্ণনাকে অন্তরের দৃষ্টিতে দেখে বুঝে নিতে হয়। কোরাণের বিভিন্ন বর্ণনায় এই রূপকের ব্যবহার প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এ সব বর্ণনায় স্বাভাবিক অর্থ ব্যতীতও সমান্তরাল অর্থ বিদ্যমান থাকে। যেমন আয়াত [ ১ – ৬ ] পর্যন্ত সুফীদের ধারণাকে নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করা হয়।
১) সূর্য যেরূপ সৌরমন্ডলের কেন্দ্রে অবস্থান করে, ঠিক সেরূপ হচ্ছে আমাদের প্রবৃত্তি। আমাদের পার্থিব চাওয়া পাওয়ার কেন্দ্র হচ্ছে আমাদের প্রবৃত্তি। প্রবৃত্তির এই কামনার আগুন নিভিয়ে দিলেই প্রকৃত সত্যের আলোর উন্মেষ ঘটে আত্মার মাঝে। শেষ বিচারের দিনে এই প্রবৃত্তির আগুন নিভে যাবে।
২) তারার আলোকে তুলনা করা যায় পৃথিবীর সাধারণ জ্ঞান ও বিজ্ঞতার সাথে। সূর্যের আগমনে যেরূপ তারারা অর্ন্তহিত হয়, ঠিক সেরূপ আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও ও প্রজ্ঞার আলোতে পার্থিব জ্ঞান অন্তর্হিত হয়। শেষ বিচারের দিনে পার্থিব জ্ঞান হবে মূল্যহীন।
৩) মানুষের পার্থিব আশা আকাঙ্খা পর্বতের ন্যায় সুউচ্চ। আধ্যাত্মিক জ্ঞানে যে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা যায় তার দ্বারা পার্থিব আশা আকাঙ্খাকে মূল্যহীন মনে হবে। শেষ বিচারের দিনে প্রকৃত সত্য পার্থিব আশা আকাঙ্খাকে মূল্যহীন করে দেবে।
৪) শাবকসহ উষ্ট্র হচ্ছে সম্পদের প্রতীক, যা মানুষের আকাঙ্খার বস্তু। প্রকৃত সত্য জ্ঞান লাভের জন্য সম্পদের আকাঙ্খাকে ত্যাগ করতে হবে। সেদিন সকলেই প্রকৃত সত্যকে প্রত্যক্ষ করতে পারবে সুতারাং সম্পদের আশা- আকাঙ্খা তিরোহিত হয়ে পড়বে।
৫) তীব্র আবেগ হচ্ছে বন্য পশুর ন্যায়। তীব্র আবেগ সম্পন্ন লোক হয় ন্যায় অন্যায় বিবর্জিত। প্রকৃত সত্যের জ্ঞান তখনই লাভ করা যায় যখন তীব্র আবেগকে সংযত করা সক্ষম হয়। সেদিন সত্যের আলোতে বন্য পশুর ন্যায় আবেগের তীব্রতা হ্রাস পেয়ে শান্ত হয়ে পড়বে।
৬) সমুদ্র যেরূপ উদ্বেলিত হয়ে সব কিছুকে আচ্ছাদিত করে ফেলে; ঠিক সেরূপ হচ্ছে আল্লাহ্র করুণা, ভালোবাসা, দয়া, মহিমা। আল্লাহ্র ক্ষমতা সব কিছুকে আচ্ছাদিত করে ফেলবে।
এর সব কিছু যে কোনও মূহুর্তে ঘটতে পারে। ব্যক্তির জীবনে যখন তা ঘটে, তখন আল্লাহ্র মহিমা তার উপরে পূর্ণ জ্যোতিতে বিকশিত হয়।
কোন কোন তফসীরকারের মতে এই বর্ণনা হবে কবর আযাবের জন্য যখন আত্মা দেহ ত্যাগ করে চলে যাবে। দেখুন [ ৭৫ : ২২ ] ও টিকা ৫৮২২ ; আয়াত [ ৭৮: ৪০ ] ও টিকা ৫৯১৪ এবং আয়াত [ ৭৯ : ১৪ ] ও টিকা ৫৯২৬।
আয়াতঃ 081.014
তখন প্রত্যেকেই জেনে নিবে সে কি উপস্থিত করেছে।
(Then) every person will know what he has brought (of good and evil).
عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا أَحْضَرَتْ
AAalimat nafsun ma ahdarat
YUSUFALI: (Then) shall each soul know what it has put forward.
PICKTHAL: (Then) every soul will know what it hath made ready.
SHAKIR: Every soul shall (then) know what it has prepared.
KHALIFA: Every soul will know everything it brought.
১৪। [ তখন ] প্রতিটি আত্মা জানতে পারবে [মৃত্যুর ] পূর্বে সে কি প্রেরণ করেছে ৫৯৮৩
৫৯৮৩। এই আয়াতে এসে পরিসমাপ্তি বা সিদ্ধান্ত টানা হয়েছে। যে অবস্থার বর্ণনা উপরের আয়াত সমূহে করা হয়েছে সেই অবস্থাতে এসে আত্মার পরিপূর্ণ উপলব্ধি ঘটে। সে তখন জানতে পারে ” সে কি প্রেরণ করেছে।” [ ৭৮ : ৪০ ] আয়াত।
আয়াতঃ 081.015
আমি শপথ করি যেসব নক্ষত্রগুলো পশ্চাতে সরে যায়।
So verily, I swear by the planets that recede (i.e. disappear during the day and appear during the night).
فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ
Fala oqsimu bialkhunnasi
YUSUFALI: So verily I call to witness the planets – that recede,
PICKTHAL: Oh, but I call to witness the planets,
SHAKIR: But nay! I swear by the stars,
KHALIFA: I solemnly swear by the galaxies.
১৫। সুতারাং আমি শপথ করি ৫৯৮৪ অপসৃয়মান নক্ষত্রের ; ৫৯৮৫
১৬। যারা সোজা চলে অথবা লুকিয়ে থাকে ;
৫৯৮৪। দেখুন [ ৫৬ : ৭৫ ] আয়াত ও টিকা ৫২৫৮। শপথ করা হয়েছে আকাশের নক্ষত্রের ও অন্যান্য স্বর্গীয় বস্তুর যা আল্লাহ্র ক্ষমতা, মহত্ব ও সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে। এ সব শপথের সাথে প্রত্যাদেশের আবির্ভাবকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দেখুন সূরা [ ৭৪ : ৩২ ] আয়াতের টিকা ৫৭৯৮ যেখানে এই সব শপথের অন্তর্নিহিত সত্যকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
৫৯৮৫। এখানে তিনটি বস্তুর প্রতি শপথের আবেদন করা হয়েছে : নক্ষত্র, রাত্রি ও ঊষার লগ্ন। ১) নক্ষত্র যে গতিপথ অনুসরণ করে তার দরুণ কখনও সে আমাদের দৃষ্টিপথে ভাস্বর হয়, কখনও দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়, কখনও স্থির মনে হয়। লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের জন্য আছে লক্ষ লক্ষ গতিপথ, তবুও তারা সুশৃঙ্খল এবং তারা সর্বদা নির্দ্দিষ্ট আইন মেনে চলে। স্রষ্টার রাজত্বে কোন বিশৃঙ্খলা নাই। এ সবই তো আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর।
আয়াতঃ 081.016
চলমান হয় ও অদৃশ্য হয়,
And by the planets that move swiftly and hide themselves,
الْجَوَارِ الْكُنَّسِ
Aljawari alkunnasi
YUSUFALI: Go straight, or hide;
PICKTHAL: The stars which rise and set,
SHAKIR: That run their course (and) hide themselves,
KHALIFA: Precisely running in their orbits.
১৫। সুতারাং আমি শপথ করি ৫৯৮৪ অপসৃয়মান নক্ষত্রের ; ৫৯৮৫
১৬। যারা সোজা চলে অথবা লুকিয়ে থাকে ;
৫৯৮৪। দেখুন [ ৫৬ : ৭৫ ] আয়াত ও টিকা ৫২৫৮। শপথ করা হয়েছে আকাশের নক্ষত্রের ও অন্যান্য স্বর্গীয় বস্তুর যা আল্লাহ্র ক্ষমতা, মহত্ব ও সৌন্দর্যকে প্রকাশ করে। এ সব শপথের সাথে প্রত্যাদেশের আবির্ভাবকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দেখুন সূরা [ ৭৪ : ৩২ ] আয়াতের টিকা ৫৭৯৮ যেখানে এই সব শপথের অন্তর্নিহিত সত্যকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
৫৯৮৫। এখানে তিনটি বস্তুর প্রতি শপথের আবেদন করা হয়েছে : নক্ষত্র, রাত্রি ও ঊষার লগ্ন। ১) নক্ষত্র যে গতিপথ অনুসরণ করে তার দরুণ কখনও সে আমাদের দৃষ্টিপথে ভাস্বর হয়, কখনও দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়, কখনও স্থির মনে হয়। লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের জন্য আছে লক্ষ লক্ষ গতিপথ, তবুও তারা সুশৃঙ্খল এবং তারা সর্বদা নির্দ্দিষ্ট আইন মেনে চলে। স্রষ্টার রাজত্বে কোন বিশৃঙ্খলা নাই। এ সবই তো আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর।
আয়াতঃ 081.017
শপথ নিশাবসান ও
And by the night as it departs;
وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ
Waallayli itha AAasAAasa
YUSUFALI: And the Night as it dissipates;
PICKTHAL: And the close of night,
SHAKIR: And the night when it departs,
KHALIFA: By the night as it falls.
১৭। এবং [ শপথ] নিশার যখন তা ক্রমশঃ অবসান হয় ; ৫৯৮৬
৫৯৮৬। রাত্রির অন্ধকার সর্বোচ্চ গাঢ় হয় রাত্রির মধ্যযামে। এর পরে ধীরে ধীরে অন্ধকার ফিকে হয়ে আসে এবং ঊষালগ্নে প্রত্যুষের আলোর রেখা দেখা দেয়। ঊষা হচ্ছে দিন ও রাত্রির সন্ধিক্ষণ। এই ক্ষণের শপথ উচ্চারণ করা হয়েছে। ঊষার লগ্ন ধীরে ধীরে দিনের আলোকে উদ্ভাসিত হয় এবং ঊষা লগ্ন দিনের আলোতে অন্তর্হিত হয়ে পড়ে। ঠিক সেরূপ আধ্যাত্মিক জগতের অবস্থান। আল্লাহ্র হেদায়েত বিহীন আত্মা থাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত ঘুমন্ত। প্রত্যাদেশের আলোতে আত্মার জাগরণ ঘটে। এই জাগরণকে তুলনা করা যায় ঊষা লগ্নের সাথে – যে লগ্ন রাত্রির অন্ধকারকে বিদূরিত করে দিনের আলোর সূচনা করে। ঠিক সেরূপ প্রত্যাদেশ আত্মার অন্ধকারকে বিদূরিত করে আত্মাকে হেদায়েতের আলোতে নিয়ে আসে।
আয়াতঃ 081.018
প্রভাত আগমন কালের,
And by the dawn as it brightens;
وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ
Waalssubhi itha tanaffasa
YUSUFALI: And the Dawn as it breathes away the darkness;-
PICKTHAL: And the breath of morning
SHAKIR: And the morning when it brightens,
KHALIFA: And the morn as it breathes.
১৮। এবং [শপথ ] ঊষার আবির্ভাবের যখন তা মৃদু বাতাসের নিঃশ্বাসে অন্ধকারকে তাড়িয়ে দেয় ; ৫৯৮৭
৫৯৮৭। এখানে সুন্দর বর্ণনার মাধ্যমে ঊষার আগমনকে প্রকাশ করা হয়েছে। আবির্ভাব শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে অন্ধকার থেকে প্রভাতের প্রথম আলোর ধীরে ধীরে প্রকাশ। ধীরে ধীরে অপঃসৃয়মান অন্ধকারকে সুন্দর রূপকের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। রাত্রির অন্ধকার থেকে ঊষার আলোতে প্রবেশ লাভ হচ্ছে আধ্যাত্মিক অন্ধকার থেকে হেদায়েতের আলোতে ধীরে ধীরে প্রবেশ লাভের সমতুল্য, যা শুধুমাত্র আল্লাহ্র করুণা ও সদয় তত্বাবধানেই সম্ভব। আল্লাহ্র হেদায়েতের আলোর সাথে, অশুভ শক্তি, বা যাদুবিদ্যা বা ডাকিনী যোগীনীর কোনও সম্পর্ক নাই। সে সময়ে আরবের মোশরেক অজ্ঞ লোকেরা তিনটি প্রশ্নের উত্থাপন করেছিলো।
১) সত্যিই কি রাসুলের (সা) প্রচারিত বাণী আল্লাহ্র নিকট থেকে আগত ?
২) রাসুল (সা) কি উম্মাদ না অশুভ শক্তি দ্বারা আক্রান্ত ? সে সময় পাগল লোককে অশুভ শক্তির দ্বারা আক্রান্ত বলে ভাবা হতো।
৩) অথবা রাসুল (সা) কোন জ্যোতিষ বা যাদুকর বা গণক ? কারণ সাধারণ লোকের উপরে তার যাদুকরী প্রভাব এসব অজ্ঞ কোরাইশদের হতবুদ্ধি করে দিত। তারা এর কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পেতো না।
আয়াতঃ 081.019
নিশ্চয় কোরআন সম্মানিত রসূলের আনীত বাণী,
Verily, this is the Word (this Qur’ân brought by) a most honourable messenger [Jibrael (Gabriel), from Allâh to the Prophet Muhammad (Peace be upon him)].
إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ
Innahu laqawlu rasoolin kareemin
YUSUFALI: Verily this is the word of a most honourable Messenger,
PICKTHAL: That this is in truth the word of an honoured messenger,
SHAKIR: Most surely it is the Word of an honored messenger,
KHALIFA: This is the utterance of an honorable messenger.
১৯। নিশ্চয়ই এই [ কুরআন ] একজন সম্মানীত বার্তাবহের আনীত বাণী ; ৫৯৮৮ –
৫৯৮৮। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, তাদের এই মনগড়া তত্বের কোনও প্রকৃত ভিত্তি নাই। তাদের এসব তত্ব হচ্ছে নির্বোধের কল্পনা প্রসূত তত্ব। তারা আশ্চর্য হতো না যদি তারা প্রকৃতির মাঝে আল্লাহ্র ক্ষমতাকে অনুধাবনের চেষ্টা করতো। আল্লাহ্র বাণীর বাহক হচ্ছে ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) তিনি কোনও অশুভ শক্তি নয়। আল কুরাণ আল্লাহ্র বাণী, ফেরেশতারও নয় বা রাসুলও (সা) নন। ফেরেশতার মাধ্যমে রাসুল (সা) আল্লাহ্র বাণী প্রাপ্ত হন।
আয়াতঃ 081.020
যিনি শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাশালী,
Owner of power, and high rank with (Allâh) the Lord of the Throne,
ذِي قُوَّةٍ عِندَ ذِي الْعَرْشِ مَكِينٍ
Thee quwwatin AAinda thee alAAarshi makeenin
YUSUFALI: Endued with Power, with rank before the Lord of the Throne,
PICKTHAL: Mighty, established in the presence of the Lord of the Throne,
SHAKIR: The processor of strength, having an honorable place with the Lord of the Dominion,
KHALIFA: Authorized by the Possessor of the Throne, fully supported.
২০। আরশের অধিপতির নিকট যে ক্ষমতা ও মর্যদায় ভূষিত ; ৫৯৮৯
২১। যাকে সেখানে মান্য করা হয় [ এবং ] যে তার আমানতে বিশ্বাসভাজন।
৫৯৮৯। জিব্রাইল ফেরেশতা শুধুমাত্র আল্লাহ্র বাণীর বাহকই নন তিনি আল্লাহ্র নিকট অতীব সম্মানীয়। আল্লাহ্র নিকট তিনি অতীব মর্যদাবান, ফেরেশতাদের রাজত্বে তাঁর আছে বিশেষ পদমর্যদা, তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্ তাঁর বাণীসমূহ পৃথিবীতে প্রেরণ করে থাকেন। জিব্রাইল (আ) এর বৈশিষ্ট্য পরবর্তী আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে তিনি আল্লাহ্র বিশেষ বিশ্বাসভাজন, তাঁর প্রতি দেয় কর্তব্যে তিনি আন্তরিকভাবে নিবেদিত। সুতারাং আল্লাহ্ যেভাবে ইচ্ছা করেন সেভাবেই তাঁর বাণী পৃথিবীতে তিনি বহন করে আনেন। জিব্রাইল (আ) সম্বন্ধে প্রযোজ্য এই গুণবাচক বিশেষণ, রাসুল (সা) এর জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু নীচের ২৩ নং আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই আয়াতের বক্তব্য জিব্রাইল (আ) সম্বন্ধে।
আয়াতঃ 081.021
সবার মান্যবর, সেখানকার বিশ্বাসভাজন।
Obeyed (by the angels), trustworthy there (in the heavens).
مُطَاعٍ ثَمَّ أَمِينٍ
MutaAAin thamma ameenin
YUSUFALI: With authority there, (and) faithful to his trust.
PICKTHAL: (One) to be obeyed, and trustworthy;
SHAKIR: One (to be) obeyed, and faithful in trust.
KHALIFA: He shall be obeyed and trusted.
২০। আরশের অধিপতির নিকট যে ক্ষমতা ও মর্যদায় ভূষিত ; ৫৯৮৯
২১। যাকে সেখানে মান্য করা হয় [ এবং ] যে তার আমানতে বিশ্বাসভাজন।
৫৯৮৯। জিব্রাইল ফেরেশতা শুধুমাত্র আল্লাহ্র বাণীর বাহকই নন তিনি আল্লাহ্র নিকট অতীব সম্মানীয়। আল্লাহ্র নিকট তিনি অতীব মর্যদাবান, ফেরেশতাদের রাজত্বে তাঁর আছে বিশেষ পদমর্যদা, তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ্ তাঁর বাণীসমূহ পৃথিবীতে প্রেরণ করে থাকেন। জিব্রাইল (আ) এর বৈশিষ্ট্য পরবর্তী আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে তিনি আল্লাহ্র বিশেষ বিশ্বাসভাজন, তাঁর প্রতি দেয় কর্তব্যে তিনি আন্তরিকভাবে নিবেদিত। সুতারাং আল্লাহ্ যেভাবে ইচ্ছা করেন সেভাবেই তাঁর বাণী পৃথিবীতে তিনি বহন করে আনেন। জিব্রাইল (আ) সম্বন্ধে প্রযোজ্য এই গুণবাচক বিশেষণ, রাসুল (সা) এর জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু নীচের ২৩ নং আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই আয়াতের বক্তব্য জিব্রাইল (আ) সম্বন্ধে।
আয়াতঃ 081.022
এবং তোমাদের সাথী পাগল নন।
And (O people) your companion (Muhammad (Peace be upon him)) is not a madman;
وَمَا صَاحِبُكُم بِمَجْنُونٍ
Wama sahibukum bimajnoonin
YUSUFALI: And (O people!) your companion is not one possessed;
PICKTHAL: And your comrade is not mad.
SHAKIR: And your companion is not gone mad.
KHALIFA: Your friend (Rashad) is not crazy.
২২। এবং [ হে মক্কাবাসীগণ ] তোমাদের সাথী উম্মাদ নয় ; ৫৯৯০
৫৯৯০। জিব্রাইল ফেরেশতা সম্বন্ধে আলোচনার পরে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে রাসুল (সা ) এর প্রতি। রাসুল তাদের মাঝে জন্মগ্রহণ করেন, প্রতিপালিত হন, এবং সত্যবাদী, সম্মানীয় এবং বিশ্বস্ত রূপে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সুতারাং সেরূপ ব্যক্তি মিথ্যা দাবী করতে পারেন না, বা কোন অশুভ শক্তিদ্বারা আক্রান্ত হতেও পারেন না। এখানে ‘সাথী’ অর্থে হযরত মুহম্মদ (সা)। রাসুল তাঁর দ্বিব্য দৃষ্টিতে “স্পষ্ট দিগন্তে” জিব্রাইলকে দেখেছেন।
আয়াতঃ 081.023
তিনি সেই ফেরেশতাকে প্রকাশ্য দিগন্তে দেখেছেন।
And indeed he (Muhammad (Peace be upon him)) saw him [Jibrael (Gabriel)] in the clear horizon (towards the east).
وَلَقَدْ رَآهُ بِالْأُفُقِ الْمُبِينِ
Walaqad raahu bialofuqi almubeeni
YUSUFALI: And without doubt he saw him in the clear horizon.
PICKTHAL: Surely he beheld Him on the clear horizon.
SHAKIR: And of a truth he saw himself on the clear horizon.
KHALIFA: He saw him at the high horizon.
২৩। নিঃসন্দেহে সে তাকে [ জিব্রাইলকে] দেখেছে সুস্পষ্ট দিগন্তরেখায়। ৫৯৯১
৫৯৯১। এই আয়াতের সাথে অনুরূপ সূরা [ ৫৩ : ১- ১৮ ] আয়াত সমুহ এবং এদের টিকা সমূহ পাঠ করুন। বিশেষ ভাবে টিকা নং ৫০৯২, যেখানে দুইটি সময়ের উল্লেখ আছে যখন দিব্য দৃষ্টিতে রাসুল (সা ) প্রত্যক্ষ করেছিলেন জিব্রাইল ফেরেশতাকে।
আয়াতঃ 081.024
তিনি অদৃশ্য বিষয় বলতে কৃপনতা করেন না।
And he (Muhammad (Peace be upon him)) withholds not a knowledge of the unseen.
وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ
Wama huwa AAala alghaybi bidaneenin
YUSUFALI: Neither doth he withhold grudgingly a knowledge of the Unseen.
PICKTHAL: And he is not avid of the Unseen.
SHAKIR: Nor of the unseen is he a tenacious concealer.
KHALIFA: He is not holding back any news.
২৪। সে অদৃশ্যের জ্ঞান কৃপণের ন্যায় ধরে রাখে না। ৫৯৯২
৫৯৯২। জ্যোতিষ বা ভবিষ্যত বক্তারা যখন কোনও ভবিষ্যত বাণী করে বা কিছু বলে বিশেষতঃ তা হয় দ্বৈর্থবোধক এবং অস্পষ্ট। এই আয়াতে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, রাসুল অদৃশ্যের জ্ঞান সম্বন্ধে কৃপণ ছিলেন না। অর্থাৎ এমন ভাবে তা প্রকাশ করতেন না যা মনে হবে অস্পষ্ট ও দ্বৈর্থবোধক। তাঁর প্রচার ছিলো সুস্পষ্ট এবং তাঁর প্রচারিত বাণী ছিলো পরিষ্কার, সত্যভাষণ যা আল্লাহ্র নিকট থেকে দৈব শক্তিবলে প্রাপ্ত।
আয়াতঃ 081.025
এটা বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়।
And it (the Qur’ân) is not the word of the outcast Shaitân (Satan).
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَيْطَانٍ رَجِيمٍ
Wama huwa biqawli shaytanin rajeemin
YUSUFALI: Nor is it the word of an evil spirit accursed.
PICKTHAL: Nor is this the utterance of a devil worthy to be stoned.
SHAKIR: Nor is it the word of the cursed Shaitan,
KHALIFA: It is not the talk of a rejected devil.
২৫। ইহা অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়। ৫৯৯৩
৫৯৯৩। “অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য ” শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে প্রবৃত্তির পাপ কামনা বাসনাকে, যা মানুষকে পাপের পথে পরিচালিত কর যেমনঃ হিংসা, দ্বেষ, লোভ,স্বার্থপরতা ইত্যাদি। অপরপক্ষে পবিত্র কোরাণের বাণী হচ্চে আল্লাহ্র মঙ্গলময় ইচ্ছার প্রকাশ বান্দার জন্য যা পালনে মানব জীবন হয় ধন্য ও সার্থক। জীবনের চলার পথকে পবিত্র রাখতে কোরাণ নির্দ্দেশ দান করে থাকে, যে পথ আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথ। ‘‘Rajim’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে পাথর দ্বারা বিতারিত করা ; ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করা। দেখুন সূরা [ ১৫ : ১৭ ] আয়াত। হজ্জ্বের সময়ে তীর্থযাত্রীরা মীনার প্রান্তরে যে কঙ্কর নিক্ষেপ করে [ দেখুন সূরা ২ : ১৯৭ আয়াতের টিকা ২১৭], এই আনুষ্ঠানিকতা দ্বারা হজ্বযাত্রীরা এই মনোভাবই প্রকাশ করে থাকে যে, পাথর ছোড়া প্রতীকের মাধ্যমে তারা প্রবৃত্তির রীপু যা শয়তানের কুমন্ত্রণা তা প্রত্যাখান করলো।
আয়াতঃ 081.026
অতএব, তোমরা কোথায় যাচ্ছ?
Then where are you going?
فَأَيْنَ تَذْهَبُونَ
Faayna tathhaboona
YUSUFALI: When whither go ye?
PICKTHAL: Whither then go ye?
SHAKIR: Whither then will you go?
KHALIFA: Now then, where will you go?
২৬। সুতারাং তোমরা কোথায় চলেছ ? ৫৯৯৪
৫৯৯৪। কোরাণের শিক্ষা কোন পৃথিবীর মানুষের শিক্ষা নয়, প্রকৃত পক্ষে এই পবিত্র গ্রন্থ জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ। এই প্রত্যাদেশের শিক্ষা কোন উম্মাদের প্রলাপ নয়, বরং তা হচ্ছে মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের শান্তির পথ প্রদর্শক। পার্থিব জীবনে যে পথ অনুসরণ দ্বারা আত্মিক সমৃদ্ধি লাভ করা যায়, পবিত্র কোরাণ আমাদের সেই পথের সন্ধান দান করে এবং যে পথে আমাদের আধ্যাত্মিক জগত ধ্বংস হবে, সে পথকে পরিহার করতে উপদেশ দেয়। এর পরেও মানুষ কেন ইতঃস্তত করে কোরাণের বাণীকে গ্রহণ করতে ? আল্লাহ্ মানুষকে কৃত পাপের জন্য অনুতাপ করতে বলেছেন এবং আল্লাহ্র করুণা লাভে উচ্চতর মহৎ জীবনের সন্ধান লাভ করতে আদেশ দিয়েছেন।
আয়াতঃ 081.027
এটা তো কেবল বিশ্বাবাসীদের জন্যে উপদেশ,
Verily, this (the Qur’ân) is no less than a Reminder to (all) the ’Alamîn (mankind and jinns) .
إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ
In huwa illa thikrun lilAAalameena
YUSUFALI: Verily this is no less than a Message to (all) the Worlds:
PICKTHAL: This is naught else than a reminder unto creation,
SHAKIR: It is naught but a reminder for the nations,
KHALIFA: This is a message for all the people.
২৭। ইহা [ কুর-আন ] তো [ সকল ] বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ; ৫৯৯৫
৫৯৯৫। কোরাণের উপদেশ শুধুমাত্র কোন গোত্র, গোষ্ঠি বা সম্প্রদায়ের জন্য নয়। এই উপদেশ বিশ্বের সকল মানুষের কল্যাণের জন্য। কোরাণের মাধ্যমে আল্লাহ্ বিশ্ব মানব সম্প্রদায়কে আহ্বান করেছেন এর উপদেশকে গ্রহণ করার জন্য।
আয়াতঃ 081.028
তার জন্যে, যে তোমাদের মধ্যে সোজা চলতে চায়।
To whomsoever among you who wills to walk straight,
لِمَن شَاء مِنكُمْ أَن يَسْتَقِيمَ
Liman shaa minkum an yastaqeema
YUSUFALI: (With profit) to whoever among you wills to go straight:
PICKTHAL: Unto whomsoever of you willeth to walk straight.
SHAKIR: For him among you who pleases to go straight.
KHALIFA: For those who wish to go straight.
২৮। তোমাদের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায়, তার জন্য ; ৫৯৯৬
৫৯৯৬। দেখুন সূরা [ ৭৪ : ৫৫ – ৫৬ ] আয়াত। আল্লাহ্ জগতসমূহের প্রতিপালক, পরম করুণাময় ও দয়াময়। যে আল্লাহ্র রাস্তায় জীবন যাপন করতে ইচ্ছা করে, আল্লাহ্র উপদেশ তাদের সকলের জন্য অবারিত। এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, আল্লাহ্র রাস্তায় তখনই সাফল্য ও আত্মিক সমৃদ্ধি লাভে জীবন ধন্য করা সম্ভব যখন ব্যক্তি তাঁর নিজস্ব ইচ্ছাকে আল্লাহ্র ইচ্ছার সাথে সমন্বিত করতে সক্ষম হয় [ ২৯ নং আয়াত ]। আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ আত্মোসমর্পনের নামই হচ্ছে ইসলাম। ২৮নং আয়াতে বলা হয়েছে, ” তোমাদিগের মধ্যে যে সরল পথে চলতে চায় ” এই বাক্যটি দ্বারা ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে এবং এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের যে দায়িত্ব তা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। ২৯ নং আয়াতে ইচ্ছা শক্তির সীমা নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। অর্থাৎ নিজস্ব বিবেককে আল্লাহ্র বাণীর আলোয় বা আল্লাহ্র ইচ্ছায় পথ চলতে নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। বিবেক, বুদ্ধি ত্যাগ করে কঠোর মতবাদ অনুসরণ করা বা সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে নিজস্ব ইচ্ছামত নিজেকে নিয়ন্ত্রিত করা, উভয়ই আল্লাহ্র চোখে নিন্দনীয়।
আয়াতঃ 081.029
তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অভিপ্রায়ের বাইরে অন্য কিছুই ইচ্ছা করতে পার না।
And you will not, unless (it be) that Allâh wills, the Lord of the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).
وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاء اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
Wama tashaoona illa an yashaa Allahu rabbu alAAalameena
YUSUFALI: But ye shall not will except as Allah wills,- the Cherisher of the Worlds.
PICKTHAL: And ye will not, unless (it be) that Allah willeth, the Lord of Creation.
SHAKIR: And you do not please except that Allah please, the Lord of the worlds.
KHALIFA: Whatever you will is in accordance with the will of GOD, Lord of the universe.
২৯। কিন্তু জগত সমূহের প্রতিপালকের ইচ্ছা ব্যতীত তোমরা [ সোজা পথে ] যেতে ইচ্ছা করবে না।