- সূরার নাম: সূরা তাগাবুন
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা তাগাবুন
আয়াতঃ 064.001
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।
Whatsoever is in the heavens and whatsoever is on the earth glorifies Allâh. His is the dominion, and to Him belong all the praises and thanks, and He is Able to do all things.
يُسَبِّحُ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Yusabbihu lillahi ma fee alssamawati wama fee al-ardi lahu almulku walahu alhamdu wahuwa AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: Whatever is in the heavens and on earth, doth declare the Praises and Glory of Allah: to Him belongs dominion, and to Him belongs praise: and He has power over all things.
PICKTHAL: All that is in the heavens and all that is in the earth glorifieth Allah; unto Him belongeth Sovereignty and unto Him belongeth praise, and He is Able to do all things.
SHAKIR: Whatever is in the heavens and whatever is in the earth declares the glory of Allah; to Him belongs the kingdom, and to Him is due (all) praise, and He has power over all things.
KHALIFA: Glorifying GOD is everything in the heavens and everything on earth. To Him belongs all kingship, and to Him belongs all praise, and He is Omnipotent.
===============
সূরা তাগাবুন বা পারস্পরিক লাভ-ক্ষতি – ৬৪
১৮ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা : এইটি মদিনাতে অবতীর্ণ সূরার শ্রেণীর অষ্টম সূরা। শ্রেণীর প্রতিটি সূরা সমাজের জীবন ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক আলোচনা করেছে।
এই সূরার মাধ্যমে যে বিশেষ বিষয়বস্তুর উপরে আলোকপাত করা হয়েছে, তা হচ্ছে পারস্পরিক লাভ এবং ক্ষতি। পাপকে উপস্থাপন করা হয়েছে পরলোকের জীবনের পটভূমিতে ইহজীবনকে।
এই সূরাটির সময়কাল সম্বন্ধে বলা হয় যে, তা হচ্ছে মদিনাতে রাসুলের হিজরতের প্রথম দিকে অবতীর্ণ, আবার অনেকে বলেন সম্ভবতঃ হিজরতের পূর্বে মক্কাতে অবতীর্ণ [ দেখুন টিকা ৫৪৯৪ ]।
সার সংক্ষেপ : বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী সকলের স্রষ্টা এক আল্লাহ্। তিনি সকলের সম্পর্কেই পরিজ্ঞাত। বিশ্বাসী বা মোমেন বান্দাদের পরলোকে যে সমৃদ্ধ জীবন তার পটভূমিতে পাপী ও অবিশ্বাসীদের পার্থিব লাভ সত্বেও পরলোকের জীবনে তারা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে। [ ৬৪ : ১ – ১৮ ]
সূরা তাগাবুন বা পারস্পরিক লাভ-ক্ষতি – ৬৪
১৮ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে; সব কিছুই আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে ৫৪৭৯। আধিপত্য তাঁহারই এবং প্রশংসা তাঁহারই। এবং তিনি সকল বস্তুর উপরে ক্ষমতাবান।
৫৪৭৯। দেখুন [ ৬২ : ১ ] আয়াত ও টিকা ৫৪৪৯। সকল কিছুর অস্তিত্ব আল্লাহ্র মহিমা এবং প্রশংসা ঘোষণা করে। তিনি সব কিছুর উপরে কর্তৃত্বশীল, তাঁর রাজত্ব ন্যায়ের উপরে প্রতিষ্ঠিত এবং তিনি প্রশংশিত। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশীল, সুতারাং তিনি ন্যায় ও দয়াকে সমন্বিত করার ক্ষমতা রাখেন। তাঁর রাজত্বে মন্দ কখনও ভালোকে পরাভূত করতে পারবে না।
আয়াতঃ 064.002
তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ কাফের এবং কেউ মুমিন। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
He it is Who created you, then some of you are disbelievers and some of you are believers. And Allâh is All-Seer of what you do.
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ فَمِنكُمْ كَافِرٌ وَمِنكُم مُّؤْمِنٌ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Huwa allathee khalaqakum faminkum kafirun waminkum mu/minun waAllahu bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: It is He Who has created you; and of you are some that are Unbelievers, and some that are Believers: and Allah sees well all that ye do.
PICKTHAL: He it is Who created you, but one of you is a disbeliever and one of you is a believer, and Allah is Seer of what ye do.
SHAKIR: He it is Who created you, but one of you is an unbeliever and another of you is a believer; and Allah sees what you do.
KHALIFA: He is the One who created you, then among you there is the disbeliever, and the believer. GOD is fully Seer of everything you do.
২। তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। তোমাদের মধ্যে কেহ কেহ হয় অবিশ্বাসী এবং কিছুসংখ্যক হয় বিশ্বাসী বা মুমিন ৫৪৮০। তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা সব দেখেন।
৫৪৮০। আল্লাহ্ কাফের, বিদ্রোহী ও পাপীদের সম্বন্ধে সম্যক অবগত, এ কথা যেনো কেউ মনে না করে যে, তিনি এদের শাস্তি দানের ক্ষমতা রাখেন না। সকল মানুষকেই আল্লাহ্ পূত পবিত্র ভাবে সৃষ্টি করে থাকেন। মানুষ আল্লাহ্র দেয়া সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অপব্যবহার দ্বারা নিজেকে অপবিত্র ও পাপী করে ফেলে। তাঁদের এই অবাধ্যতা ও পাপ আল্লাহ্র জ্ঞানের সীমার বাইরে নয়। তবে আল্লাহ্ মানুষকে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দান করেন না। অনুতপ্ত হয়ে সঠিক রাস্তায় ফিরে আসার জন্য অবসর দান করে থাকেন। আল্লাহ্র বিচক্ষণ পরিকল্পনার এও এক অংশ বৈকি যা মানুষকে বারে বারে সুযোগ দান করে থাকে মন্দ থেকে জীবনের মহত্তর পরিণতির দিকে অগ্রসর হওয়ার।
আয়াতঃ 064.003
তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর সুন্দর করেছেন তোমাদের আকৃতি। তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন।
He has created the heavens and the earth with truth, and He shaped you and made good your shapes, and to Him is the final Return.
خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِالْحَقِّ وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ
Khalaqa alssamawati waal-arda bialhaqqi wasawwarakum faahsana suwarakum wa-ilayhi almaseeru
YUSUFALI: He has created the heavens and the earth in just proportions, and has given you shape, and made your shapes beautiful: and to Him is the final Goal.
PICKTHAL: He created the heavens and the earth with truth, and He shaped you and made good your shapes, and unto Him is the journeying.
SHAKIR: He created the heavens and the earth with truth, and He formed you, then made goodly your forms, and to Him is the ultimate resort.
KHALIFA: He created the heavens and the earth for a specific purpose, designed you and perfected your design, then to Him is the final destiny.
৩। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী তিনি সৃষ্টি করেছেন সুসমভাবে। তিনি তোমাদের আকৃতি দান করেছেন ৫৪৮১ এবং তোমাদের আকৃতিকে করেছেন সৌন্দর্যমন্ডিত। এবং তার নিকটই হচ্ছে শেষ প্রত্যাবর্তন ৫৪৮২।
৫৪৮১। দেখুন [ ৪০ : ৬৪ ] আয়াত ও টিকা ৪৪৪০ এবং [ ৭ : ১১ ] আয়াত ও টিকা ৯৯৬। এই বিরাট বিশ্বভূবন আল্লাহ্র শিল্পী সত্ত্বার এক অনবদ্য প্রকাশ। সৃষ্টির প্রতিটি জিনিষই অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত সন্দেহ নাই, তবে মানুষকে আল্লাহ্ সর্বোচ্চ সৌন্দর্যমন্ডিত করেছেন। এ সৌন্দর্য যে শুধু দৈহিক তা নয়, তাঁকে দান করা হয়েছে মানসিক সৌন্দর্যের ভান্ডার। মানুষকে দান করা হয়েছে বিশেষ মানসিক দক্ষতা – ফলে তাদের কেউ শিল্পী, কেউ সাহিত্যিক, কেউ বিজ্ঞানী, ইত্যাদি বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত। এ সব গুণাবলীর মাধ্যমেই মানুষ প্রাণী জগত থেকে নিজেকে বৈশিষ্ট্য মন্ডিত করতে সক্ষম হয়েছে। এ সব বিশেষ গুণাবলীর জন্যই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ পৃথিবীতে মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। এই আয়াতে মানুষের বর্ণনার জন্য ” তোমাদের আকৃতি করেছেন সৌন্দর্যমন্ডিত” বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে “সৌন্দর্যমন্ডিত ” দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, মানুষের জীবন মহত্তর বিকাশের উপযুক্ত।
৫৪৮২। “তার নিকটেই হচ্ছে শেষ প্রত্যাবর্তন ” – এ কথা মানুষের জন্যই শুধুমাত্র প্রযোজ্য নয়। আল্লাহ্র সৃষ্টির সকল পদার্থের জন্যই প্রযোজ্য। মূর্ত, বিমূর্ত, জড়, জীব। প্রকৃতির সকল কিছুরই প্রত্যাবর্তন তাঁরই নিকট। কারণ সকল কিছুর সৃষ্টির তিনিই মালিক আবার সকল কিছুর প্রত্যাবর্তন তারই নিকট।
আয়াতঃ 064.004
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা গোপনে কর এবং যা প্রকাশ্যে কর। আল্লাহ অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।
He knows what is in the heavens and on earth, and He knows what you conceal and what you reveal. And Allâh is the All-Knower of what is in the breasts (of men).
يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُسِرُّونَ وَمَا تُعْلِنُونَ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
YaAAlamu ma fee alssamawati waal-ardi wayaAAlamu ma tusirroona wama tuAAlinoona waAllahu AAaleemun bithati alssudoori
YUSUFALI: He knows what is in the heavens and on earth; and He knows what ye conceal and what ye reveal: yea, Allah knows well the (secrets) of (all) hearts.
PICKTHAL: He knoweth all that is in the heavens and the earth, and He knoweth what ye conceal and what ye publish. And Allah is Aware of what is in the breasts (of men).
SHAKIR: He knows what is in the heavens and the earth, and He knows what you hide and what you manifest;and Allah is Cognizant of what is in the hearts.
KHALIFA: He knows everything in the heavens and the earth, and He knows everything you conceal and everything you declare. GOD is fully aware of the innermost thoughts.
৪। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তিনি তা জানেন। যা গোপন করা হয় এবং যা প্রকাশ করা হয় তিনি তা জানেন ৫৪৮৩। হ্যাঁ, সকল হৃদয়ের [ গোপন ] কথা তিনি জানেন।
৫৪৮৩। সাধারণ মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানে মানুষ দৃষ্টিসীমার বাইরে কিছুই দেখতে অক্ষম। আগামী ভবিষ্যত তাঁর নিকট অন্ধকার। সে অতীত ও বর্তমানের লুক্কায়িত ঘটনা অনুধাবনে অপারগ। কিন্তু যিনি সকল কিছুর স্রষ্টা, তিনি সৃষ্টি করেন, প্রতিপালন করেন, রক্ষা করেন -শুধু তাই নয়, তিনি মানুষের গোপন চিন্তা, কাজের প্রকৃত উদ্দেশ্য, মনের বিভিন্ন অনুভূতি, পরিকল্পনা, ইত্যাদি যা সাধারণ্যে প্রকাশ্য নয়, তা তাঁর কাছে খোলা বইএর ন্যায় প্রকাশ্য। আল্লাহ্ অর্ন্তযামী। সুতারাং পৃথিবীর জীবনে যদি দেখা যায় যে পাপী তার উপযুক্ত শাস্তি এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, তবে একথা কেউ যেনো মনে না করে যে, আল্লাহর দৃষ্টিকে সে ফাঁকি দিতে পেরেছে এবং শাস্তিকে এড়াতে সক্ষম হয়েছে। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ্কে ফাঁকি দেবার সাধ্য কারও নাই, আল্লাহ্র পরিকল্পনা সময়ের বৃহত্তর পরিসরে যা বোঝার বা অনুধাবনের ক্ষমতা আমাদের নাই। আমাদের নিকট দূর ভবিষ্যত ঘন অন্ধকারে ঢাকা। সুতারাং যে পরিকল্পনা অতীত থেকে সূদূর ভবিষ্যত পর্যন্ত বিস্তৃত সে পরিকল্পনা বোঝার জ্ঞান সাধারণ মানুষের নাই। আল্লাহ্র জ্ঞান, প্রজ্ঞা, কল্যাণ, মঙ্গল সম্পূর্ণ রূপে অনুধাবন করা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় – কারণ আমরা শুধু মাত্র অতীত ও বর্তমানকে দেখতে পাই যা সমগ্র পরিকল্পনার অংশ মাত্র। আমাদের সীমিত জ্ঞান ও প্রচেষ্টা আল্লাহ্র সম্পূর্ণ জ্ঞানকে উপলব্ধিতে অক্ষম।
আয়াতঃ 064.005
তোমাদের পুর্বে যারা কাফের ছিল, তাদের বৃত্তান্ত কি তোমাদের কাছে পৌছেনি? তারা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করেছে, এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
Has not the news reached you of those who disbelieved aforetime? And so they tasted the evil result of their disbelief, and theirs will be a painful torment.
أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَأُ الَّذِينَ كَفَرُوا مِن قَبْلُ فَذَاقُوا وَبَالَ أَمْرِهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
Alam ya/tikum nabao allatheena kafaroo min qablu fathaqoo wabala amrihim walahum AAathabun aleemun
YUSUFALI: Has not the story reached you, of those who rejected Faith aforetime? So they tasted the evil result of their conduct; and they had a grievous Penalty.
PICKTHAL: Hath not the story reached you of those who disbelieved of old and so did taste the ill-effects of their conduct, and theirs will be a painful doom.
SHAKIR: Has there not come to you the story of those who disbelieved before, then tasted the evil result of their conduct, and they had a painful punishment?
KHALIFA: Have you noted those who disbelieved in the past, then suffered the consequences of their decision? They incurred a painful retribution.
৫। পূর্বে যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করেছিলো, তাদের বৃত্তান্ত কি তোমাদের নিকট পৌঁছায় নাই ? তারা তাদের আচরণের মন্দ ফল আস্বাদন করেছিলো ৫৪৮৪। তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।
৫৪৮৪। “মন্দ ফল আস্বাদন করেছিলো।” পাপীরা তাদের পাপের ফল এই পৃথিবীতেই লাভ করতে থাকে। কখনও তা ঘটে বাইরের বিপদ ও বিপর্যয়ের মাধ্যমে, কখনও তা ঘটে আত্মার মাঝে, লোকচক্ষুর অন্তরালে। আত্মার মাঝে পাপ কার্যের দহন দ্বারা তারা বিবেকের পীড়নে ভোগে, ফলে অস্থিরতা, ভয়, আশংকা, তাদের সর্বসত্তাকে গ্রাস করে ফেলে। কিন্তু পরকালে তাদের জন্য রয়েছে প্রকৃত শাস্তি যা মর্মন্তুদ।
আয়াতঃ 064.006
এটা এ কারণে যে, তাদের কাছে তাদের রসূলগণ প্রকাশ্য নিদর্শনাবলীসহ আগমন করলে তারা বলতঃ মানুষই কি আমাদেরকে পথপ্রদর্শন করবে? অতঃপর তারা কাফের হয়ে গেল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। এতে আল্লাহর কিছু আসে যায় না। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী প্রশংসিত।
That was because there came to them their Messengers with clear proofs (signs), but they said: ”Shall mere men guide us?” So they disbelieved and turned away (from the truth), and Allâh was not in need (of them). And Allâh is Rich (Free of all wants), Worthy of all praise.
ذَلِكَ بِأَنَّهُ كَانَت تَّأْتِيهِمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَقَالُوا أَبَشَرٌ يَهْدُونَنَا فَكَفَرُوا وَتَوَلَّوا وَّاسْتَغْنَى اللَّهُ وَاللَّهُ غَنِيٌّ حَمِيدٌ
Thalika bi-annahu kanat ta/teehim rusuluhum bialbayyinati faqaloo abasharun yahdoonana fakafaroo watawallaw waistaghna Allahu waAllahu ghaniyyun hameedun
YUSUFALI: That was because there came to them messengers with Clear Signs, but they said: “Shall (mere) human beings direct us?” So they rejected (the Message) and turned away. But Allah can do without (them): and Allah is free of all needs, worthy of all praise.
PICKTHAL: That was because their messengers (from Allah) kept coming unto them with clear proofs (of Allah’s Sovereignty), but they said: Shall mere mortals guide us? So they disbelieved and turned away, and Allah was independent (of them). Allah is Absolute, Owner of Praise.
SHAKIR: That is because there came to them their messengers with clear arguments, but they said: Shall mortals guide us? So they disbelieved and turned back, and Allah does not stand in need (of anything), and Allah is Self-sufficient, Praised.
KHALIFA: This is because their messengers went to them with clear proofs, but they said, “Shall we follow humans like us?” They disbelieved and turned away. GOD does not need them; GOD is in no need, Praiseworthy.
৬। এর কারণ হচ্ছে; তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ রসুল এসেছিলো ; কিন্তু তারা বলেছিলো, ” [ শুধু মাত্র] মানুষই আমাদের পরিচালিত করবে ৫৪৮৫ ? ” সুতারাং তারা [ উপদেশ বাণী ] প্রত্যাখান করে মুখ ফিরিয়ে নিল। কিন্তু আল্লাহ্ [ তাদের ] ছাড়াও চলতে পারেন। এবং আল্লাহ্ সকল অভাবমুক্ত ৫৪৮৬, সকল প্রশংসার যোগ্য।
৫৪৮৫। এই ঘটনার বিষদ বিবরণ আছে [ ১৪ : ৯- ১১ ] আয়াতে।
৫৪৮৬। মানুষকে আল্লাহ্ সঠিক পথের সন্ধান দান করেছেন যুগে যুগে। যে আল্লাহ্র আনুগত্য করে সে নিজের জন্যই করে। আল্লাহ্র কারও আনুগত্য প্রয়োজন নাই। তিনি অভাবমুক্ত। সত্যকে প্রত্যাখান দ্বারা সত্যের বৈধতা নষ্ট হয়ে যায় না বা সত্যের অগ্রগতিকে প্রতিহত করা সম্ভব হয় না। মানুষের এই ক্ষুদ্র প্রতিরোধ বা প্রত্যাখান সত্যের অগ্রযাত্রাতে কোনও প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করতে পারে না, আল্লাহ্ অভাবমুক্ত, তিনি কারও উপরে নির্ভরশীল নন। তিনি শুধুমাত্র মানুষের মঙ্গলের জন্য তাঁর সত্যকে প্রেরণ করে থাকেন। যে গ্রহণ করে সে ধন্য, যে প্রত্যাখান, প্রতিরোধ এবং অবজ্ঞা করে সে কষ্ট পায়।
আয়াতঃ 064.007
কাফেররা দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন, অবশ্যই হবে, আমার পালনকর্তার কসম, তোমরা নিশ্চয় পুরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে অবহিত করা হবে যা তোমরা করতে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
The disbelievers pretend that they will never be resurrected (for the Account). Say (O Muhammad SAW): ”Yes! By my Lord, you will certainly be resurrected, then you will be informed of (and recompensed for) what you did, and that is easy for Allâh.
زَعَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَن لَّن يُبْعَثُوا قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْ وَذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ
ZaAAama allatheena kafaroo an lan yubAAathoo qul bala warabbee latubAAathunna thumma latunabbaonna bima AAamiltum wathalika AAala Allahi yaseerun
YUSUFALI: The Unbelievers think that they will not be raised up (for Judgment). Say: “Yea, By my Lord, Ye shall surely be raised up: then shall ye be told (the truth) of all that ye did. And that is easy for Allah.”
PICKTHAL: Those who disbelieve assert that they will not be raised again. Say (unto them, O Muhammad): Yea, verily, by my Lord! ye will be raised again and then ye will be informed of what ye did; and that is easy for Allah.
SHAKIR: Those who disbelieve think that they shall never be raised. Say: Aye! by my Lord! you shall most certainly be raised, then you shall most certainly be informed of what you did; and that is easy to Allah.
KHALIFA: Those who disbelieved claim that they will not be resurrected! Yes indeed, by my Lord, you will be resurrected, and you will be held accountable for everything you have done. This is easy for GOD to do.
৭। অবিশ্বাসীরা মনে করে তারা শেষ বিচারের জন্য উত্থিত হবে না ৫৪৮৭। বল, ” আমার প্রভুর শপথ, তোমরা নিশ্চয়ই উত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদের বলা হবে তোমরা যা করতে [ তার সত্যতা সম্বন্ধে ]। আল্লাহ্র জন্য তা করা অতি সহজ।
৫৪৮৭। কাফেররা পরলোকে বিশ্বাসী নয়। তাদের বক্তব্যের গুঢ় অর্থ হচ্ছে, তারা পরলোকের অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়। তাদের ধারণা যে ‘পরলোক’ বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নাই, বর্তমানের কোনও কাজের জন্য কোনও ভবিষ্যত দায়িত্ব বোধ নাই কারণ বর্তমান জীবনের পরে আর কোনও জীবন নাই। যদি তাই হতো তবে মন্দ ও পাপীদের প্রাচুর্য, ক্ষমতা ও দম্ভ এবং মোমেন বান্দাদের বিশ্বস্ততা, ও দুঃখ কষ্টে আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীলতার মাধ্যমে ধৈর্য্য ধারণের প্রচেষ্টার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা থাকতো না। কারণ তাদের এই ত্যাগ তিতিক্ষা ও ধৈর্য্যের কোনও যোগ্য পুরষ্কার তাহলে থাকতো অনুপস্থিত। আল্লাহ্র রাজত্বে ন্যায়নীতি বলে কোনও শব্দ থাকতো না। আমাদের আল্লাহ্ বলেছেন যে, পরলোকের জীবনকে ইহলোকের কাজের ভিত্তিতে পুনর্বিন্যাস করা হবে। সেদিন আজকে যাদের আমরা মৃত বলি তাদের পুণরুত্থান ঘটবে। সেদিন আমরা পৃথিবীতে কৃত আমাদের কৃতকর্মকে অনুধাবন করতে পারবো এবং আমাদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দায়িত্ব সম্বন্ধে সজাগ করা হবে।
আয়াতঃ 064.008
অতএব তোমরা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং অবতীর্ন নূরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।
Therefore, believe in Allâh and His Messenger (Muhammad SAW), and in the Light (this Qur’ân) which We have sent down. And Allâh is All-Aware of what you do.
فَآمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالنُّورِ الَّذِي أَنزَلْنَا وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
Faaminoo biAllahi warasoolihi waalnnoori allathee anzalna waAllahu bima taAAmaloona khabeerun
YUSUFALI: Believe, therefore, in Allah and His Messenger, and in the Light which we have sent down. And Allah is well acquainted with all that ye do.
PICKTHAL: So believe in Allah and His messenger and the light which We have revealed. And Allah is Informed of what ye do.
SHAKIR: Therefore believe in Allah and His Messenger and the Light which We have revealed; and Allah is Aware of what you do.
KHALIFA: Therefore, you shall believe in GOD and His messenger, and the light that we have revealed herein. GOD is fully Cognizant of everything you do.
৮। সুতারাং আল্লাহ্তে এবং তাঁর রসুলে এবং যে আলো আমি প্রেরণ করেছি, তাতে বিশ্বাস স্থাপন কর ৫৪৮৮। এবং তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
৫৪৮৮। “যে আলো আমি প্রেরণ করেছি।” এই বাক্যটিতে ‘আলো’ দ্বারা আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ কুরআন বা বিবেকের আলো বা ন্যায় সঙ্গত যুক্তির তীব্রতা, এবং সকল সত্যের আলো যার দ্বারা আমরা আল্লাহ্র নির্দ্দেশিত পথকে চিনে নিতে পারি বুঝানো হয়েছে। যদি আমরা সত্যকে ত্যাগ করে মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করি এবং আল্লাহ্র যে কোনও আলোকে অবগুণ্ঠিত করার প্রয়াস পাই, আমাদের কৃতকর্ম সর্ম্পকে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
আয়াতঃ 064.009
সেদিন অর্থাৎ, সমাবেশের দিন আল্লাহ তোমাদেরকে সমবেত করবেন। এ দিন হার-জিতের দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তার পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। যার তলদেশে নির্ঝরিনীসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তথায় চিরকাল বসবাস করবে। এটাই মহাসাফল্য।
(And remember) the Day when He will gather you (all) on the Day of Gathering, that will be the Day of mutual loss and gain (i.e. loss for the disbelievers as they will enter the Hell-fire and gain for the believers as they will enter Paradise). And whosoever believes in Allâh and performs righteous good deeds, He will remit from him his sins, and will admit him to Gardens under which rivers flow (Paradise) to dwell therein forever, that will be the great success.
يَوْمَ يَجْمَعُكُمْ لِيَوْمِ الْجَمْعِ ذَلِكَ يَوْمُ التَّغَابُنِ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
Yawma yajmaAAukum liyawmi aljamAAi thalika yawmu alttaghabuni waman yu/min biAllahi wayaAAmal salihan yukaffir AAanhu sayyi-atihi wayudkhilhu jannatin tajree min tahtiha al-anharu khalideena feeha abadan thalika alfawzu alAAatheemu
YUSUFALI: The Day that He assembles you (all) for a Day of Assembly,- that will be a Day of mutual loss and gain (among you), and those who believe in Allah and work righteousness,- He will remove from them their ills, and He will admit them to Gardens beneath which Rivers flow, to dwell therein for ever: that will be the Supreme Achievement.
PICKTHAL: The day when He shall gather you unto the Day of Assembling, that will be a day of mutual disillusion. And whoso believeth in Allah and doeth right, He will remit from him his evil deeds and will bring him unto Gardens underneath which rivers flow, therein to abide for ever. That is the supreme triumph.
SHAKIR: On the day that He will gather you for the day of gathering, that is the day of loss and gain; and whoever believes in Allah and does good, He will remove from him his evil and cause him to enter gardens beneath which rivers flow, to abide therein forever; that is the great achievement.
KHALIFA: The day will come when He summons you to the Day of Summoning. That is the Day of Mutual Blaming. Anyone who believes in GOD and leads a righteous life, He will remit his sins, and will admit him into gardens with flowing streams. They abide therein forever. This is the greatest triumph.
৯। স্মরণ কর, সমাবেশ দিবসে, যেদিন তিনি তোমাদের সমবেত করবেন সেদিন হবে [ তোমাদের ] পারস্পরিক লাভ -লোকসানের দিন ৫৪৮৯। যারা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে, তিনি তাদের পাপ মোচন করে দেবেন ৫৪৯০। এবং তিনি তাদের বেহেশতে প্রবেশ করাইবেন, পাদদেশে যার নদী প্রবাহিত ৫৪৯১, সেথায় তারা চিরদিন বাস করবে। সেটাই হবে সর্বোচ্চ সাফল্য।
৫৪৮৯। শেষ বিচারের দিনকে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে “লাভ-লোকসানের দিন” হিসেবে যা হচ্ছে এই সূরাটির নাম বা উপাধি। পাপের পথে প্রচুর ধন-সম্পদ অর্জন করে পৃথিবীতে যারা স্বর্গসুখ উপভোগ করছে, সেদিন তারা ভিখারীতে পরিণত হবে। কারণ পরলোকের মুক্তির জন্য তারা কোনও পূণ্যই সঞ্চয় করে নাই পৃথিবীর জীবনে, যারা মন্দ কাজকে সফলতা মনে করে, পৃথিবীর জীবন, শেষে তারা দেখবে তাদের সকল সফলতা ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে। দেখুন [ ১৮ : ১০৪ ] আয়াত। অপরপক্ষে বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণ পরলোকের জীবনে অশেষ সম্মানের অধিকারী হবেন, আল্লাহ্র রাস্তায় কাজ করার দরুণ এই পার্থিব জীবনে যারা অবহেলিত ও অবজ্ঞার পাত্র বলে পরিগণিত হয়েছিলেন তারা পরলোকের জীবনে হবেন সর্বাপেক্ষা গ্রহণীয় ব্যক্তি। যে পূণ্যাত্মা ব্যক্তি সত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নির্যাতিত হন, তিনি পরলোকের জীবনে অনন্ত শান্তির সন্ধান লাভ করবেন। প্রকৃত ঘটনা হবে এই যে পাপী ও পূণ্যাত্মা দুপক্ষেরই অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
৫৪৯০। “পাপ মোচন করে দেবেন” – কোনও মানুষই দোষত্রুটির উর্দ্ধে নয়। সংসার জীবনে প্রতিটি মানুষকেই প্রলোভন, আসক্তি, দোষত্রুটি, পাপের প্রতি প্রবণতার পিচ্ছিল পথকে অতিক্রম করতে হয়। আল্লাহ্ পরম করুণাময়। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, তিনি আমাদের এসব ছোট খাট পাপ ক্ষমা করে দেবেন, দোষত্রুটি দূর করে দেবেন। অন্যথায় আমাদের মত পাপীদের জীবন দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে পড়তো। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে ঘোরতর পাপীকেও পূণ্যাত্মাতে রূপান্তরিত করতে পারেন। আজকে যা মনে হবে দুর্যোগ, বিপর্যয়, আগামীতে তাই পরিগণিত হবে আধ্যাত্মিক সফলতার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে। দেখুন [ ২৫ : ৭০ ] আয়াত। কারণ তাদের আল্লাহ্র প্রতি আন্তরিক বিশ্বাসই তাদের অন্তরকে অনুতাপের মাধ্যমে সংশোধন করে সফলতার স্বর্ণ দুয়ার খুলে দেয়।
৫৪৯১। ” বেহেশতের বাগান ” হচ্ছে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক শান্তির প্রতীক।
আয়াতঃ 064.010
আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তথায় অনন্তকাল থাকবে। কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল এটা।
But those who disbelieved (in the Oneness of Allâh – Islâmic Monotheism) and denied Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.), they will be the dwellers of the Fire, to dwell therein forever. And worst indeed is that destination.
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ خَالِدِينَ فِيهَا وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
Waallatheena kafaroo wakaththaboo bi-ayatina ola-ika as-habu alnnari khalideena feeha wabi/sa almaseeru
YUSUFALI: But those who reject Faith and treat Our Signs as falsehoods, they will be Companions of the Fire, to dwell therein for aye: and evil is that Goal.
PICKTHAL: But those who disbelieve and deny Our revelations, such are owners of the Fire; they will abide therein – a hapless journey’s end!
SHAKIR: And (as for) those who disbelieve and reject Our communications, they are the inmates of the fire, to abide therein and evil is the resort.
KHALIFA: As for those who disbelieve and reject our revelations, they are the dwellers of the Hellfire; they abide therein forever. What a miserable destiny!
১০। কিন্তু যারা ঈমানকে প্রত্যাখান করেছিলো, এবং আমার নিদর্শন সমূহ মিথ্যা জেনেছিলো, তারা হবে আগুনের অধিবাসী। সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। কি মন্দ সেই শেষ প্রত্যাবর্তন।
আয়াতঃ 064.011
আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।
No calamity befalls, but with the Leave [i.e. decision and Qadar (Divine Preordainments)] of Allâh, and whosoever believes in Allâh, He guides his heart [to the true Faith with certainty, i.e. what has befallen him was already written for him by Allâh from the Qadar (Divine Preordainments)], and Allâh is the All-Knower of everything.
مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَمَن يُؤْمِن بِاللَّهِ يَهْدِ قَلْبَهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
Ma asaba min museebatin illa bi-ithni Allahi waman yu/min biAllahi yahdi qalbahu waAllahu bikulli shay-in AAaleemun
YUSUFALI: No kind of calamity can occur, except by the leave of Allah: and if any one believes in Allah, (Allah) guides his heart (aright): for Allah knows all things.
PICKTHAL: No calamity befalleth save by Allah’s leave. And whosoever believeth in Allah, He guideth his heart. And Allah is Knower of all things.
SHAKIR: No affliction comes about but by Allah’s permission; and whoever believes in Allah, He guides aright his heart; and Allah is Cognizant of all things.
KHALIFA: Nothing happens to you except in accordance with GOD’s will. Anyone who believes in GOD, He will guide his heart. GOD is fully aware of all things.
রুকু – ২
১১। আল্লাহ্র অনুমতি ব্যতীত কোন বিপর্যয় ঘটতে পারে না। এবং কেউ যদি আল্লাহতে বিশ্বাস করে ৫৪৯২, [আল্লাহ্ ] তার হৃদয়কে সুপথে পরিচালিত করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সব কিছু জানেন।
৫৪৯২। আজকে যা বিপদ বা বিপর্যয়, হয়তো ভবিষ্যতের জন্য তা আর্শীবাদ স্বরূপ যা আমাদের অজ্ঞাত। জ্বর বা ব্যাথা ইত্যাদি উপসর্গ যেরূপ নির্দ্দেশ করে শরীরের অভ্যন্তরে কঠিন রোগের সূচনা। সূচনা লগ্নেই যাতে ব্যক্তি সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে তারই পূর্বাভাষ। ঠিক সেরূপ হচ্ছে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জগত। জাগতিক জীবনের বিপদ বিপর্যয়ের মাধ্যমেই আমাদের আধ্যাত্মিক জগতের বিপদের সংকেত দান করেন। এ সবের মাধ্যমেই বিশ্বাসের পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ্র প্রতি যদি আমরা দৃঢ় ভাবে আল্লাহ্র মঙ্গলময় ইচ্ছার নিকট আত্মসমর্পন করি এবং বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ্র ইচ্ছা ব্যতীত কোনও কিছুই সংঘটিত হতে পারে না, তবে স্বাভাবিকভাবে আমাদের অন্তরে এ সত্যও জাগরিত হবে যে সকল বিপদ ও বিপর্যয়ের মাঝেও আল্লাহ্র প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও ন্যায়, কাজ করে যাবে যা সেই মূহুর্ত হয়তো বা আমরা অনুধাবনে অক্ষম যা হবে আমাদের বৃহত্তর মহত্তর কল্যাণের জন্য, আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধতার জন্য প্রয়োজন। সময়ের বৃহত্তর পরিসরে আল্লাহ্র পরিকল্পনা অনুধাবন বা উপলব্ধির ক্ষমতা আমাদেন নাই। বিপদ বিপর্যয়ে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে আত্ম অনুসন্ধান করা, কেন আমাদের এই বিপর্যয়। নিজেদের দোষত্রুটি খুঁজে বের করা এবং তা সংশোধন করা। যদি আমাদের এই চেষ্টা আন্তুরিক হয় তবে আল্লাহ্ বলেছেন যে, তিনি আমাদের হেদায়েত করবেন ও সত্য পথের সন্ধান দেবেন।
আয়াতঃ 064.012
তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলুল্লাহর আনুগত্য কর। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমার রসূলের দায়িত্ব কেবল খোলাখুলি পৌছে দেয়া।
Obey Allâh, and obey the Messenger (Muhammad SAW), but if you turn away, then the duty of Our Messenger is only to convey (the Message) clearly.
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَإِنَّمَا عَلَى رَسُولِنَا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
WaateeAAoo Allaha waateeAAoo alrrasoola fa-in tawallaytum fa-innama AAala rasoolina albalaghu almubeenu
YUSUFALI: So obey Allah, and obey His Messenger: but if ye turn back, the duty of Our Messenger is but to proclaim (the Message) clearly and openly.
PICKTHAL: Obey Allah and obey His messenger; but if ye turn away, then the duty of Our messenger is only to convey (the message) plainly.
SHAKIR: And obey Allah and obey the Messenger, but if you turn back, then upon Our Messenger devolves only the clear delivery (of the message).
KHALIFA: You shall obey GOD and you shall obey the messenger. If you turn away, then the sole mission of our messenger is to deliver the message.
১২। সুতারাং আল্লাহকে মান্য কর, এবং রসুলকে মান্য কর। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। রসুলের দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্টভাবে ও প্রকাশ্যভাবে প্রচার করা ৫৪৯৩।
৫৪৯৩। রাসুলের (সা) দায়িত্ব শুধুমাত্র হেদায়েত করা। ধর্মকে গ্রহণ করবে লোকে নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপরে, সেখানে কোন জোর জবরদস্তি নাই। রাসুল (সা) যা প্রচার করেন এবং শিক্ষা দান করেন তা অতি সুস্পষ্ট, কোন অস্পষ্টতা সেখানে নাই। তাঁর প্রচারিত শিক্ষার আলো সবার জন্য উন্মুক্ত।
আয়াতঃ 064.013
আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। অতএব মুমিনগণ আল্লাহর উপর ভরসা করুক।
Allâh! Lâ ilâha illa Huwa (none has the right to be worshipped but He), and in Allâh (Alone), therefore, let the believers put their trust.
اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ
Allahu la ilaha illa huwa waAAala Allahi falyatawakkali almu/minoona
YUSUFALI: Allah! There is no god but He: and on Allah, therefore, let the Believers put their trust.
PICKTHAL: Allah! There is no Allah save Him. In Allah, therefore, let believers put their trust.
SHAKIR: Allah, there is no god but He; and upon Allah, then, let the believers rely.
KHALIFA: GOD: there is no other god besides Him. In GOD the believers shall trust.
১৩। আল্লাহ্ ! তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নাই। সুতারাং বিশ্বাসীরা আল্লাহ্র উপরে তাদের সকল বিশ্বাস স্থাপন করুক।
১৪। হে বিশ্বাসীগণ ! প্রকৃত পক্ষে, তোমাদের স্ত্রীগণের মধ্যে এবং সন্তানদের মধ্যে [ কেহ কেহ ] তোমাদের শত্রু ৫৪৯৪। সুতারাং তাদের সম্বন্ধে সাবধান থেকো। কিন্তু যদি তোমরা তাদের ক্ষমা কর, তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা কর এবং লুকিয়ে রাখ, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময় ৫৪৯৫।
৫৪৯৪। সাধারণ মানুষ পার্থিব জীবন নিয়ে এতটাই উন্মত্ত হয়ে পড়ে যে পরলোকের জীবনের কথা সে ভুলে যায়। পাশ্চাত্য সভ্যতার ভোগ বিলাসের জীবন, পরিবার সন্তান -সন্ততিকে করে আকর্ষিত ফলে অনেক সময়েই তাদের অতিরিক্ত আকাঙ্খা মিটাতে যেয়ে পরিবার প্রধানের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাদের প্রতি অতিরিক্ত স্নেহ -মমতার কারণে প্রায়ই পার্থিব জীবনের প্রতি অধিক আকৃষ্ট হয়ে, অধিক উপার্জন ও অধিক সঞ্চয়ের আকাঙ্খা জন্মে। ফলে আখিরাতের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করে। সেই জন্য তাদের ব্যাপারেও সংযম অবলম্বন করতে ও বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানেও আল্লাহ্ বলেছেন যে, তাদের সাথে যেনো দুর্ব্যবহার করা না হয়। তাদের ভদ্র জীবন যাপন ও পরিমিত আরাম আয়েশের বন্দোবস্ত করবে কিন্তু এর পরেও তারা যদি তাঁকে প্ররোচিত করতে থাকে অন্যায় পথে পার্থিব ভোগবিলাসের জীবনের উপকরণ সংগ্রহের জন্য এবং আধ্যাত্মিক ক্রিয়া কর্মে অবহেলা করার জন্য আল্লাহ্ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার না করে ক্ষমা করতে বলেছেন। তাদের জন সমক্ষে হাস্যস্পদ করা চলবে না কিন্তু একই সাথে সে তার আধ্যাত্মিক জীবনে কর্তব্য সম্বন্ধে হবে যত্নশীল। হযরতের অনুসারীগণ, যারা হযরতের (সা) সাথে মক্কা থেকে মদিনাতে হিজরত করেছিলেন, তাদের জীবনে এরূপ সমস্যার উদ্ভব ঘটেছিলো। অনেকের পরিবার পরিজন নির্বাসনের কঠোর জীবনকে মেনে নিতে পারছিলেন না – কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব ঠিক হয়ে যায়।
৫৪৯৫। “ক্ষমা করা ” শব্দটির জন্য অন্য অপর একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, তার জন্য দেখুন [ ২ : ১০৯ ] আয়াত ও টিকা ১১০।
আয়াতঃ 064.014
হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।
O you who believe! Verily, among your wives and your children there are enemies for you (i.e. may stop you from the obedience of Allâh), therefore beware of them! But if you pardon (them) and overlook, and forgive (their faults), then verily, Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلَادِكُمْ عَدُوًّا لَّكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ وَإِن تَعْفُوا وَتَصْفَحُوا وَتَغْفِرُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Ya ayyuha allatheena amanoo inna min azwajikum waawladikum AAaduwwan lakum faihtharoohum wa-in taAAfoo watasfahoo wataghfiroo fa-inna Allaha ghafoorun raheemun
YUSUFALI: O ye who believe! Truly, among your wives and your children are (some that are) enemies to yourselves: so beware of them! But if ye forgive and overlook, and cover up (their faults), verily Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: O ye who believe! Lo! among your wives and your children there are enemies for you, therefor beware of them. And if ye efface and overlook and forgive, then lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: O you who believe! surely from among your wives and your children there is an enemy to you; therefore beware of them; and if you pardon and forbear and forgive, then surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: O you who believe, your spouses and your children can be your enemies; beware. If you pardon, forget, and forgive, then GOD is Forgiver, Most Merciful.
১৩। আল্লাহ্ ! তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নাই। সুতারাং বিশ্বাসীরা আল্লাহ্র উপরে তাদের সকল বিশ্বাস স্থাপন করুক।
১৪। হে বিশ্বাসীগণ ! প্রকৃত পক্ষে, তোমাদের স্ত্রীগণের মধ্যে এবং সন্তানদের মধ্যে [ কেহ কেহ ] তোমাদের শত্রু ৫৪৯৪। সুতারাং তাদের সম্বন্ধে সাবধান থেকো। কিন্তু যদি তোমরা তাদের ক্ষমা কর, তাদের দোষত্রুটি উপেক্ষা কর এবং লুকিয়ে রাখ, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময় ৫৪৯৫।
৫৪৯৪। সাধারণ মানুষ পার্থিব জীবন নিয়ে এতটাই উন্মত্ত হয়ে পড়ে যে পরলোকের জীবনের কথা সে ভুলে যায়। পাশ্চাত্য সভ্যতার ভোগ বিলাসের জীবন, পরিবার সন্তান -সন্ততিকে করে আকর্ষিত ফলে অনেক সময়েই তাদের অতিরিক্ত আকাঙ্খা মিটাতে যেয়ে পরিবার প্রধানের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবন সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাদের প্রতি অতিরিক্ত স্নেহ -মমতার কারণে প্রায়ই পার্থিব জীবনের প্রতি অধিক আকৃষ্ট হয়ে, অধিক উপার্জন ও অধিক সঞ্চয়ের আকাঙ্খা জন্মে। ফলে আখিরাতের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করে। সেই জন্য তাদের ব্যাপারেও সংযম অবলম্বন করতে ও বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানেও আল্লাহ্ বলেছেন যে, তাদের সাথে যেনো দুর্ব্যবহার করা না হয়। তাদের ভদ্র জীবন যাপন ও পরিমিত আরাম আয়েশের বন্দোবস্ত করবে কিন্তু এর পরেও তারা যদি তাঁকে প্ররোচিত করতে থাকে অন্যায় পথে পার্থিব ভোগবিলাসের জীবনের উপকরণ সংগ্রহের জন্য এবং আধ্যাত্মিক ক্রিয়া কর্মে অবহেলা করার জন্য আল্লাহ্ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার না করে ক্ষমা করতে বলেছেন। তাদের জন সমক্ষে হাস্যস্পদ করা চলবে না কিন্তু একই সাথে সে তার আধ্যাত্মিক জীবনে কর্তব্য সম্বন্ধে হবে যত্নশীল। হযরতের অনুসারীগণ, যারা হযরতের (সা) সাথে মক্কা থেকে মদিনাতে হিজরত করেছিলেন, তাদের জীবনে এরূপ সমস্যার উদ্ভব ঘটেছিলো। অনেকের পরিবার পরিজন নির্বাসনের কঠোর জীবনকে মেনে নিতে পারছিলেন না – কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব ঠিক হয়ে যায়।
৫৪৯৫। “ক্ষমা করা ” শব্দটির জন্য অন্য অপর একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, তার জন্য দেখুন [ ২ : ১০৯ ] আয়াত ও টিকা ১১০।
আয়াতঃ 064.015
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহাপুরস্কার।
Your wealth and your children are only a trial, whereas Allâh! With Him is a great reward (Paradise).
إِنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ وَاللَّهُ عِندَهُ أَجْرٌ عَظِيمٌ
Innama amwalukum waawladukum fitnatun waAllahu AAindahu ajrun AAatheemun
YUSUFALI: Your riches and your children may be but a trial: but in the Presence of Allah, is the highest, Reward.
PICKTHAL: Your wealth and your children are only a temptation, whereas Allah! with Him is an immense reward.
SHAKIR: Your possessions and your children are only a trial, and Allah it is with Whom is a great reward.
KHALIFA: Your money and children are a test, and GOD possesses a great recompense.
১৫। তোমাদের ঐশ্বর্য ও তোমাদের সন্তান-সন্ততি তো তোমাদের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ। কিন্তু আল্লাহ্র উপস্থিতিতে রয়েছে সর্বোচ্চ পুরষ্কার ৫৪৯৬।
৫৪৯৬। সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ্র বিশেষ নেয়ামত।আবার অনেক ক্ষেত্রে এরা “পরীক্ষা বিশেষ”। যথা :
১) বর্তমান জীবন ও পরলোকের জীবন সম্বন্ধে সন্তানদের ধারণার সাথে অভিভাবকদের ধারণা সম্পৃক্ত নাও হতে পারে, সে ক্ষেত্রে বিপরীত ধারণার স্রোত তার আধ্যাত্মিক জীবনের ধারাকে ব্যহত করতে পারে।
২) সন্তানকে মানুষ পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা বেশী ভালোবাসেন। সুতারাং সাধারণ মানুষের সাথে মনোমালিন্য তাকে যতটা না বিব্রত ও মানসিক দিক থেকে বিপর্যস্ত করে সন্তানের সাথে মনোমালিন্য ব্যক্তিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত করে ফেলে। এ ভাবেই আল্লাহ্ বান্দার ঈমানের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন যার মাপকাঠি হচ্ছে চরিত্রের দৃঢ়তা এবং কর্তব্যবোধ আল্লাহ্র প্রতি।
৩) সন্তানের সাথে মনোমালিন্য [ দেখুন টিকা ৫৪৯৫ ] ব্যক্তিকে বিরক্ত ও বিক্ষুব্ধ করতে পারে অনেক সময়েই, কিন্তু সে সময়ে তাকে আত্ম অনুসন্ধান করতে হবে সত্যের আলোকে যে, আল্লাহ্র প্রতি প্রকৃতপক্ষে সে কতটুকু অনুরক্ত। এবং
৪) সন্তানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং আমাদের প্রতি তাদের ভালোবাসা হচ্ছে সংসার জীবনে এক মরুদ্যান বা বেহেশতের উদ্যান, যদি তা হয় পরিশুদ্ধ, পবিত্র, স্বার্থহীন ভালোবাসা। এই ভালোবাসা হচ্ছে শক্তির প্রতীক। কিন্তু যদি এই ভালোবাসার ভিত্তি হয় স্বার্থপরতা উদ্দেশ্য প্রণোদিত – তবে তার ফলাফল বিষময়। উপরের সকল বক্তব্য যেমন সন্তানদের জন্য প্রযোজ্য ঠিক সমভাবে প্রযোজ্য পার্থিব ধনসম্পদের জন্য।
আয়াতঃ 064.016
অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর, শুন, আনুগত্য কর এবং ব্যয় কর। এটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। যারা মনের কার্পন্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম।
So keep your duty to Allâh and fear Him as much as you can; listen and obey; and spend in charity, that is better for yourselves. And whosoever is saved from his own covetousness, then they are the successful ones.
فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوا وَأَطِيعُوا وَأَنفِقُوا خَيْرًا لِّأَنفُسِكُمْ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
Faittaqoo Allaha ma istataAAtum waismaAAoo waateeAAoo waanfiqoo khayran li-anfusikum waman yooqa shuhha nafsihi faola-ika humu almuflihoona
YUSUFALI: So fear Allah as much as ye can; listen and obey and spend in charity for the benefit of your own soul and those saved from the covetousness of their own souls,- they are the ones that achieve prosperity.
PICKTHAL: So keep your duty to Allah as best ye can, and listen, and obey, and spend; that is better for your souls. And whoso is saved from his own greed, such are the successful.
SHAKIR: Therefore be careful of (your duty to) Allah as much as you can, and hear and obey and spend, it is better for your souls; and whoever is saved from the greediness of his soul, these it is that are the successful.
KHALIFA: Therefore, you shall reverence GOD as much as you can, and listen, and obey, and give (to charity) for your own good. Anyone who is protected from his own stinginess, these are the successful ones.
১৬। সুতারাং আল্লাহকে যথাসাধ্য ভয় কর ৫৪৯৭। [ তার হুকুম ] শোন, এবং মান্য কর এবং নিজ আত্মার কল্যাণের জন্য দানে ব্যয় কর ৫৪৯৮। যারা নিজ আত্মাকে লোভ-লালসা থেকে রক্ষা করতে পারে, তারাই সমৃদ্ধি লাভ করে। ৫৪৯৯
৫৪৯৭। ” ভয় কর” এই শব্দটিকে “যথাসাধ্য ” শব্দটির সাথে সংযুক্ত করার ফলে এর অর্থ সুস্পষ্টভাবে বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে, ” আল্লাহ্র ভয়ে তোমরা যথাসাধ্যরূপে সংযমী ও পূণ্যাত্মা জীবন যাপন কর। তাকওয়া শব্দটির অর্থের জন্য দেখুন [ ২ : ২ ] আয়াতের টিকা নং ২৬।
৫৪৯৮। ‘ব্যয় কর ‘ শব্দটি মওলানা ইউসুফ আলী সাহেব ইংরেজীতে লিখেছেন, ‘Charity’ এবং যাকাতকে লিখেছেন “Compulsory Charity” হিসেবে। “ব্যয় কর” শব্দটি দানের খুব ব্যপক সংগা। শুধুমাত্র দুঃস্থদের মাঝে অর্থ সাহায্যের মাঝেই তা সীমাবদ্ধ নয়। এর অর্থ মানুষকে তার যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করা, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা। যারা এরূপ দান করে থাকেন, তাদের জন্য আছে আধ্যাত্মিক পুরষ্কার। এরূপ দান দাতার আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে আত্মার মাঝে আল্লাহ্র হেদায়েতের আলো প্রবেশের পথকে উন্মুক্ত করে দেয়। গ্রহীতার জন্য যে ভালোবাসা ও করুণা তাঁর হৃদয়কে সিক্ত করে সেই করুণা ধারা তার নিজের আধ্যাত্মিক জগতের মাটিকে সঞ্জিবীত করে তাকওয়ার বীজ অঙ্কুরোদ্গমে সাহায্য করে, আত্মিক পরিশুদ্ধতার মাধ্যমে আত্মিক বিকাশে সাহায্য করে। Coleridge এর ভাষায় এর বর্ণনা নিম্নরূপ ; “He prayeth best who loveth best all things both great and small , for the Great God who loveth us, who made and loveth all”।
৫৪৯৯। দেখুন [ ৫৯: ৯ ] আয়াত। “অন্তরের লোভ-লালসা হইতে মুক্ত ” বাক্যটি গভীর অর্থবোধক। আধ্যাত্মিক জগতের উন্নতির পথে মানুষের সর্বাপেক্ষা বড় শত্রু মানুষ নিজে। জন্মগত ভাবে মানুষ স্বার্থপর। অন্যকে অধিকার বঞ্চিত করে সব কিছু একা ভোগ করার প্রবণতা থেকে সে অন্যায়ের আশ্রয় নিতে দ্বিধা বোধ করে না। আমরা যদি আমাদের অন্তরের এই স্বার্থপরতা ত্যাগ করতে সক্ষম হই তবে আমরা ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে জীবনের সকল সমস্যার সমাধানে সক্ষম হব যার ফলে আমরা প্রকৃত পরহেজগারীর পথে সফলতা লাভ করতে পারবো।
আয়াতঃ 064.017
যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর, তিনি তোমাদের জন্যে তা দ্বিগুণ করে দেবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, সহনশীল।
If you lend to Allâh a goodly loan (i.e. spend in Allâh’s Cause) He will double it for you, and will forgive you. And Allâh is Most Ready to appreciate and to reward, Most Forbearing,
إِن تُقْرِضُوا اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا يُضَاعِفْهُ لَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ
In tuqridoo Allaha qardan hasanan yudaAAifhu lakum wayaghfir lakum waAllahu shakoorun haleemun
YUSUFALI: If ye loan to Allah, a beautiful loan, He will double it to your (credit), and He will grant you Forgiveness: for Allah is most Ready to appreciate (service), Most Forbearing,-
PICKTHAL: If ye lend unto Allah a goodly loan, He will double it for you and will forgive you, for Allah is Responsive, Clement,
SHAKIR: If you set apart for Allah a goodly portion, He will double it for you and forgive you; and Allah is the Multiplier (of rewards), Forbearing,
KHALIFA: If you lend GOD a loan of righteousness, He will multiply the reward for you manifold, and forgive you. GOD is Appreciative, Clement.
১৭। যদি তুমি আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর, ৫৫০০ তিনি তোমার জমার খাতায় দ্বিগুণ করে দেবেন, এবং তিনি তোমার জন্য ক্ষমা মঞ্জুর করবেন। আল্লাহ্ তো [ এবাদতের ] উচ্চ মর্যদা দিতে সর্বদা প্রস্তুত; তিনি বড়ই ধৈর্যশীল ৫৫০১।
৫৫০০। দেখুন [ ২ : ২৪৫ ] আয়াতের টিকা ২৭৬। আল্লাহকে ভালোবেসে আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য, তার সৃষ্ট জীবের কল্যাণের জন্য যা কিছু করা হয় তাই হচ্ছে দান। একে আল্লাহ্ “উত্তম ঋণ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ্ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, আমাদের নিকট কৃত আল্লাহ্র ঋণ তিনি বহুগুণ করে বান্দাকে ফেরত দেবেন। শুধু তাই-ই নয়, তিনি আমাদের পাপ তার ক্ষমা ও করুণাতে বিধৌত করবেন।
৫৫০১। দেখুন [ ১৪ : ৫ ] আয়াতের টিকা নং ১৮৭৭। এবং [ ৩৫ : ৩০ ] আয়াতের টিকা নং ৩৯১৭। আমাদের ক্ষুদ্র দান কিংবা যে কোন ক্ষুদ্র মহৎ প্রচেষ্টা মহান আল্লাহ্র নিকট হারিয়ে যায় না। তিনি ‘গুণগ্রাহী” – বান্দার সকল প্রচেষ্টার মূল্যায়ন করেন। আমাদের ক্ষুদ্রতম প্রচেষ্টাও করুণাময়ের করুণা ধারায় প্লাবিত হয়ে আমাদের প্রাপ্তিকে অতিক্রম করে যায়। তার পুরষ্কার আমাদের যোগ্যতাকে ও দোষত্রুটিকে অতিক্রম করে নেয়। আল্লাহ্ আমাদের কর্মফল দ্বারা বিচার করবেন না। তিনি আমাদের বিচার করবেন কর্মের নিয়ত দ্বারা। আল্লাহ্ আমাদের নিয়ত খোলা বইএর ন্যায় পাঠ করতে পারেন। দেখুন পরবর্তী টিকা।
আয়াতঃ 064.018
তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
All-Knower of the unseen and seen, the All-Mighty, the All-Wise.
عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
AAalimu alghaybi waalshshahadati alAAazeezu alhakeemu
YUSUFALI: Knower of what is open, Exalted in Might, Full of Wisdom.
PICKTHAL: Knower of the Invisible and the Visible, the Mighty, the Wise.
SHAKIR: The Knower of the unseen and the seen, the Mighty, the Wise.
KHALIFA: The Knower of all secrets and declarations; the Almighty, Most Wise.
১৮। তিনি দৃশ্য, অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, ক্ষমতায় পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ। ৫৫০২
৫৫০২। আমাদের জন্য আল্লাহ্র গুণগ্রাহীতা দয়া ও করুণাতে এতটাই বিধৌত যে তা আমাদের যোগ্যতাকে অতিক্রম করে যায়। কারণ :
১) তিনি ” অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা ” তাঁর জ্ঞান সকল গোপন উদ্দেশ্য অবগত যা অন্যেরা বুঝতে অক্ষম।
২) তিনি এতটাই “পরাক্রমশালী ‘ যে,তিনি ইচ্ছা করলে অযোগ্যকেও পুরষ্কার দান করতে পারেন। ; এবং
৩) তিনি প্রজ্ঞাময় – তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এত গভীর যে, তিনি আমাদের দুর্বলতাকেও শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারেন।