১৭। তাদের পূর্বে আমি তো ফেরাউনের সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছিলাম ৪৭০০। এবং তাদের নিকটেও এসেছিলো এক সম্মানিত রাসুল ৪৭০১।
৪৭০০। এই আয়াতে ফেরাউন ও মিশরবাসীদের পরীক্ষার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মুসার কাহিনীর বর্ণনা নয় ফেরাউন ও তার অনুসারীদের গর্ব ও অহংকার এবং তার দরুণ পতনের উল্লেখের মাধ্যমে তাদের বিচারের পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে। ঠিক সেই ভাবে [ ৪৪ : ৩০ -৩৩ ] আয়াতে ইসরাঈলীদের উপরে আল্লাহ্র অনুগ্রহের উল্লেখ করা হয়েছে তাদের গর্ব, অহংকার , অবিশ্বাস ও পতনের বিপরীতে। এবং আয়াত [ ৪৪ : ৩৭ ] উল্লেখ করা হয়েছে ইয়েমেনের প্রাচীন শক্তিশালী ‘হিমাইর’ রাজবংশের যাদেরও পতনও ঘটেছিলো একই ভাবে।
৪৭০১। ‘সম্মানিত রাসুল’ এই সম্ভাষণ হযরত মুসার জন্য প্রয়োগ করা হয়েছে। এখানে হযরত মুসার সত্যসহ অবতীর্ণ হওয়ার বিপরীতে ফেরাউনের মিথ্যা শ্রেষ্ঠত্বের দাবীকে তুলনা করা হয়েছে। দেখুন আয়াত [ ৪৩ :৫২] যেখানে ফেরাউন নিজস্ব মিথ্যা শ্রেষ্ঠত্বের দাবীতে মুসাকে সম্বোধন করেছিলো, ” আমি তো শ্রেষ্ঠ এই ব্যক্তি থেকে , যে হীন এবং স্পষ্ট ভাবে কথা বলতেও অক্ষম।”
উপদেশ : যুগে যুগে যারা অহংকারী ও মিথ্যাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ অলংকার বলে পরিগণিত করে থাকে, তাদের দৃষ্টিতে সত্যের প্রকৃতরূপ কখনও ধরা দেবে না। পৃথিবীর সকল যুগের সকল মানুষের জন্য এই সত্য প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 044.018
এই মর্মে যে, আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার কাছে অর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য প্রেরীত বিশ্বস্ত রসূল।
Saying: ”Restore to me the slaves of Allâh (i.e. the Children of Israel). Verily! I am to you a Messenger worthy of all trust,
أَنْ أَدُّوا إِلَيَّ عِبَادَ اللَّهِ إِنِّي لَكُمْ رَسُولٌ أَمِينٌ
An addoo ilayya AAibada Allahi innee lakum rasoolun ameenun
YUSUFALI: Saying: “Restore to me the Servants of Allah: I am to you an messenger worthy of all trust;
PICKTHAL: Saying: Give up to me the slaves of Allah. Lo! I am a faithful messenger unto you.
SHAKIR: Saying: Deliver to me the servants of Allah, surely I am a faithful messenger to you,
KHALIFA: Proclaiming: “Listen to me, servants of GOD. I am an honest messenger to you.”
১৮। সে বলেছিলো , ” আল্লাহ্র বান্দাদের আমার নিকট প্রত্যার্পন কর ৪৭০২। আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল ; ৪৭০৩
৪৭০২। ইসরাঈলীদের উপরে হযরত মুসার কাহিনী ও আইনসঙ্গত অধিকার সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে নিম্নলিখিত আয়াত সমূহে [ ৭ : ১০৪ -১০৮, ১২০-১২৬, ১৩০ – ১৩৭ ]। এই আয়াতে হযরত মুসার বক্তব্য থেকে পরিষ্ফুট হয় যে কত পরিপূর্ণভাবে তিনি তাঁর প্রতি অর্পিত দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বক্তব্যকে তিনি উপস্থাপন করেছেন এভাবে, ” আল্লাহ্র বান্দাদিগের ” শব্দটি দ্বারা। এর দ্বারা তিনি বুঝাতে চেয়েছেন , প্রকৃত আল্লাহ্ প্রেমিকদের এরা ইসরাঈলীও হতে পারে আবার মিশরীয় হতে পারে। কারণ তাঁর প্রতি আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দ্দিষ্ট দায়িত্ব ইসরাঈলী ও মিশরবাসী উভয়ের জন্য প্রযোজ্য ছিলো। ফেরাউনের ঔদ্ধত্যকে অস্বীকার করে মুসা খোদা প্রেমিকদের তাঁর হস্তে অর্পন করার দাবী জানান।
৪৭০৩। ‘Amin’ বা বিশ্বস্ত – এই উপাধিটি আল্লাহ্র রসুলদের জন্য প্রযোজ্য দেখুন আয়াত [ ২৬ : ১০৭ ]। আমাদের মহান রাসুল [ সা ] ঐতিহাসিক এই উপাধি লাভ করেন তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট থেকে। এখানে হযরত মুসার কাহিনীর স্মৃতিচারণ করা হয়েছে হযরত রাসুলে করীমের কর্ম জীবনকে কোরেশদের উদ্ধত ও অন্ধ আক্রোশের বিপরীতে তুলে ধরার জন্য।
আয়াতঃ 044.019
আর তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করো না। আমি তোমাদের কাছে প্রকাশ্য প্রমাণ উপস্থিত করছি।
”And exalt not (yourselves) against Allâh. Truly, I have come to you with a manifest authority.
وَأَنْ لَّا تَعْلُوا عَلَى اللَّهِ إِنِّي آتِيكُم بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
Waan la taAAloo AAala Allahi innee ateekum bisultanin mubeenin
YUSUFALI: “And be not arrogant as against Allah: for I come to you with authority manifest.
PICKTHAL: And saying: Be not proud against Allah. Lo! I bring you a clear warrant.
SHAKIR: And that do not exalt yourselves against Allah, surely I will bring to you a clear authority:
KHALIFA: And, “Do not transgress against GOD. I bring to you powerful proofs.
১৯। ” এবং তোমরা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করো না ; আমি তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট দলিল সহই এসেছি।
২০। ” তোমরা যাতে আমাকে আঘাত করতে না পার সেজন্য আমি আমার প্রভু ও তোমাদের প্রভুর নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি ৪৭০৪ ,৪৭০৫।
৪৭০৪। “আঘাত” – এই শব্দটি প্রতীক অর্থে এখানে ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ যে কোনও রূপ শারীরিক আঘাত বা মানহানিকর কার্য।
৪৭০৫। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, মুসাকে হত্যা করার বা মানহানির পরিকল্পনা করে কোনও লাভ নাই। কারণ হযরত মুসার নিরাপত্তার দায়িত্ব আল্লাহ্ গ্রহণ করেছেন। হযরত মুসা সে কারণেই বলেছেন যে, ” আমি আমার প্রতিপালক ও তোমাদিগের প্রতিপালকের নিকট নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি।” লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে তিনি বলেছেন সকলেরই প্রতিপালক একজনই। কিন্তু মানুষ বিভ্রান্তির আশ্রয় অবলম্বন করে স্রষ্টার একত্বে অংশীদার কল্পনা করে। আল্লাহ্ শুধু মুসারই নয়, মিশরবাসীদেরও সেই একই আল্লাহ্। সুতারাং এ ব্যাপারে তাদেরও দায়িত্ব বর্তমান।