- সূরার নাম: সূরা হা-মীম সেজদাহ
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা হা-মীম সেজদাহ
আয়াতঃ 041.001
হা-মীম।
HâMîm. [These letters are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings.]
حم
Ha-meem
YUSUFALI: Ha Mim:
PICKTHAL: Ha. Mim.
SHAKIR: Ha Mim!
KHALIFA: H. M.
০১। হা – মীম
০২। দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে ৪৪৬৩, –
৪৪৬৩। পূর্বের সূরাতে [ ৪০ নং ] বলা হয়েছে যে কোরাণ এসেছে মহাপরাক্রমশালী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ্র নিকট থেকে। সেখানে কোরাণের উল্লেখের সাথে আল্লাহ্র গুণাবলীর উল্লেখ আছে। এই সূরার আয়াতে কেরাণের বিষয় বস্তুর উল্লেখ করা হয়েছে।
১) কোরাণ হচ্ছে সুসংবাদ দাতা ও সর্তককারী।
২) এই কিতাবে কোন কিছু অস্পষ্টরূপে বলা হয় নাই , এখানে সকল কিছু সুস্পষ্টরূপে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিভিন্ন আঙ্গিকে।
৩) এই কিতাব আরবী ভাষাতে অবতীর্ণ হয়েছে , এর একমাত্র কারণ এই ঐশী বাণী প্রথম যাদের মাঝে প্রচারিত হবে তারা সকলে আরবী ভাষী। সুতারাং মাতৃভাষাতে আল্লাহ্র বাণীর নূর, বক্তব্য, অনুধাবন করা তাদের পক্ষে অনেক সহজ হবে।যদি তারা তা করতে চায়।
৪) এই কিতাব অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতার কথা বলে এবং আধ্যাত্মিক জগতের বিপদ সম্বন্ধে সর্তক করে।
আয়াতঃ 041.002
এটা অবতীর্ণ পরম করুণাময়, দয়ালুর পক্ষ থেকে।
A revelation from Allâh, the Most Beneficent, the Most Merciful.
تَنزِيلٌ مِّنَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
Tanzeelun mina alrrahmani alrraheemi
YUSUFALI: A Revelation from (Allah), Most Gracious, Most Merciful;-
PICKTHAL: A revelation from the Beneficent, the Merciful,
SHAKIR: A revelation from the Beneficent, the Merciful Allah:
KHALIFA: A revelation from the Most Gracious, Most Merciful.
০১। হা – মীম
০২। দয়াময় পরম করুণাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে ৪৪৬৩, –
৪৪৬৩। পূর্বের সূরাতে [ ৪০ নং ] বলা হয়েছে যে কোরাণ এসেছে মহাপরাক্রমশালী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ্র নিকট থেকে। সেখানে কোরাণের উল্লেখের সাথে আল্লাহ্র গুণাবলীর উল্লেখ আছে। এই সূরার আয়াতে কেরাণের বিষয় বস্তুর উল্লেখ করা হয়েছে।
১) কোরাণ হচ্ছে সুসংবাদ দাতা ও সর্তককারী।
২) এই কিতাবে কোন কিছু অস্পষ্টরূপে বলা হয় নাই , এখানে সকল কিছু সুস্পষ্টরূপে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিভিন্ন আঙ্গিকে।
৩) এই কিতাব আরবী ভাষাতে অবতীর্ণ হয়েছে , এর একমাত্র কারণ এই ঐশী বাণী প্রথম যাদের মাঝে প্রচারিত হবে তারা সকলে আরবী ভাষী। সুতারাং মাতৃভাষাতে আল্লাহ্র বাণীর নূর, বক্তব্য, অনুধাবন করা তাদের পক্ষে অনেক সহজ হবে।যদি তারা তা করতে চায়।
৪) এই কিতাব অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতার কথা বলে এবং আধ্যাত্মিক জগতের বিপদ সম্বন্ধে সর্তক করে।
আয়াতঃ 041.003
এটা কিতাব, এর আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত আরবী কোরআনরূপে জ্ঞানী লোকদের জন্য।
A Book whereof the Verses are explained in detail; A Qur’ân in Arabic for people who know.
كِتَابٌ فُصِّلَتْ آيَاتُهُ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
Kitabun fussilat ayatuhu qur-anan AAarabiyyan liqawmin yaAAlamoona
YUSUFALI: A Book, whereof the verses are explained in detail;- a Qur’an in Arabic, for people who understand;-
PICKTHAL: A Scripture whereof the verses are expounded, a Lecture in Arabic for people who have knowledge,
SHAKIR: A Book of which the verses are made plain, an Arabic Quran for a people who know:
KHALIFA: A scripture whose verses provide the complete details, in an Arabic Quran, for people who know.
০৩। একটি কিতাব , যার আয়াত সমূহ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ; – [ ইহা ] আরবী ভাষার কুর-আন যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য ; –
০৪। সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারী স্বরূপ, তথাপি অধিকাংশ লোক মুখ ফিরিয়ে নেয়, সুতারাং তারা [ কিছুই] শোনে না ৪৪৬৪।
৪৪৬৪। যদি কেউ আন্তরিক ভাবে কোরাণের বাণী অনুধাবন করার ইচ্ছা রাখে তবে কোরাণ পাঠ তার আধ্যাত্মিক জগতের প্রভূত উপকার সাধিত করবে। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছা পোষণ না করে তবে কোরাণ পাঠের দ্বারা সে কোন আত্মিক উপকার লাভ করবে না। কোরাণ পাঠের দ্বারা আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ না করার কারণ তাদের ইচ্ছার অভাব। ফলে তারা আত্মার মাঝে আল্লাহ্র হেদায়েত অনুভবে অক্ষম হয়।
আয়াতঃ 041.004
সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে, অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা শুনে না।
Giving glad tidings [of Paradise to the one who believes in the Oneness of Allâh (i.e. Islâmic Monotheism) and fears Allâh much (abstains from all kinds of sins and evil deeds) and loves Allâh much (performing all kinds of good deeds which He has ordained)], and warning (of punishment in the Hell Fire to the one who disbelieves in the Oneness of Allâh), but most of them turn away, so they listen not.
بَشِيرًا وَنَذِيرًا فَأَعْرَضَ أَكْثَرُهُمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ
Basheeran wanatheeran faaAArada aktharuhum fahum la yasmaAAoona
YUSUFALI: Giving good news and admonition: yet most of them turn away, and so they hear not.
PICKTHAL: Good tidings and a warning. But most of them turn away so that they hear not.
SHAKIR: A herald of good news and a warner, but most of them turn aside so they hear not.
KHALIFA: A bearer of good news, as well as a warner. However, most of them turn away; they do not hear.
০৩। একটি কিতাব , যার আয়াত সমূহ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ; – [ ইহা ] আরবী ভাষার কুর-আন যারা বুঝতে পারে তাদের জন্য ; –
০৪। সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারী স্বরূপ, তথাপি অধিকাংশ লোক মুখ ফিরিয়ে নেয়, সুতারাং তারা [ কিছুই] শোনে না ৪৪৬৪।
৪৪৬৪। যদি কেউ আন্তরিক ভাবে কোরাণের বাণী অনুধাবন করার ইচ্ছা রাখে তবে কোরাণ পাঠ তার আধ্যাত্মিক জগতের প্রভূত উপকার সাধিত করবে। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছা পোষণ না করে তবে কোরাণ পাঠের দ্বারা সে কোন আত্মিক উপকার লাভ করবে না। কোরাণ পাঠের দ্বারা আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ না করার কারণ তাদের ইচ্ছার অভাব। ফলে তারা আত্মার মাঝে আল্লাহ্র হেদায়েত অনুভবে অক্ষম হয়।
আয়াতঃ 041.005
তারা বলে আপনি যে বিষয়ের দিকে আমাদের কে দাওয়াত দেন, সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আবৃত, আমাদের কর্ণে আছে বোঝা এবং আমাদের ও আপনার মাঝখানে আছে অন্তরাল। অতএব, আপনি আপনার কাজ করুন এবং আমরা আমাদের কাজ করি।
And they say: ”Our hearts are under coverings (screened) from that to which you invite us, and in our ears is deafness, and between us and you is a screen, so work you (on your way); verily, we are working (on our way).”
وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ وَفِي آذَانِنَا وَقْرٌ وَمِن بَيْنِنَا وَبَيْنِكَ حِجَابٌ فَاعْمَلْ إِنَّنَا عَامِلُونَ
Waqaloo quloobuna fee akinnatin mimma tadAAoona ilayhi wafee athanina waqrun wamin baynina wabaynika hijabun faiAAmal innana AAamiloona
YUSUFALI: They say: “Our hearts are under veils, (concealed) from that to which thou dost invite us, and in our ears in a deafness, and between us and thee is a screen: so do thou (what thou wilt); for us, we shall do (what we will!)”
PICKTHAL: And they say: Our hearts are protected from that unto which thou (O Muhammad) callest us, and in our ears there is a deafness, and between us and thee there is a veil. Act, then. Lo! we also shall be acting.
SHAKIR: And they say: Our hearts are under coverings from that to which you call us, and there is a heaviness in our ears, and a veil hangs between us and you, so work, we too are working.
KHALIFA: They said, “Our minds are made up, our ears are deaf to your message, and a barrier separates us from you. Do what you want, and so will we.”
০৫। তারা বলে, ” তুমি যার দিকে আমাদের আহ্বান করছো সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে -আচ্ছাদিত ৪৪৬৫। আমাদের কর্ণে আছে বধিরতা , এবং আমাদের ও তোমার মাঝে আছে পর্দা। সুতারাং [ যা করতে চাও ] তুমি তা কর ; [ আমাদের যা করার ] আমরা করবো ৪৪৬৬।
৪৪৬৫। ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে প্রত্যাখান করার ফলে আল্লাহ্র বাণীর মর্মার্থ ও প্রত্যাখানকারীর মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয় ; বাঁধার প্রাচীর তৈরী হয়। সে বাধার প্রাচীর অতিক্রম করে, দূরত্বকে অতিক্রম করে আল্লাহ্র বাণী তাদের আত্মার মাঝে স্থান করে নিতে পারে না। তাদের আত্মিক জগত ধীরে ধীরে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।তাদের কান থাকতেও সত্যের আহ্বান শুনতে পাবে না। তারা হবে বধিরের ন্যায় – সত্যের আহ্বান তাদের শ্রবণে ধীরে ধীরে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে যাবে। তারা আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুলের সাথে নিজেদের দুস্তর ব্যবধানের সৃষ্টি করবে। কারণ আল্লাহ্ ” সীমালঙ্ঘনকারী ও মিথ্যাবাদীকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।” [ ৪০ : ২৮ ] ও টিকা ৪৩৯৮।
৪৪৬৬। সম্পূর্ণ আয়াতটির বক্তব্য সম্ভবতঃ অবিশ্বাসীদের বিদ্রূপাত্মক ব্যঙ্গক্তি, অথবা আধ্যাত্মিক শিক্ষার প্রতি অনীহার প্রকাশ। এই মানসিকতার প্রেক্ষিতেই তারা রাসুলকে [ সা ] বলেছিলো , ” আমাদের হৃদয় ও মন তোমার মহৎ বাণী শোনার বা বোঝার উপযুক্ত নয়; তোমার ব্যাখ্যা শোনার জন্য আমাদের শ্রবণ শক্তি এতটা তীক্ষ্ণ নয় ; তুমি আমাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ; তোমার সাথে আমাদের দুস্তর ব্যবধান। আমাদের জন্য তোমার চিন্তার কোনও কারণ নাই। তুমি তোমার পথে যাও আমরা আমাদের পথে যাব।”
উপরের বক্তব্য হচ্ছে আধ্যাত্মিক অন্ধত্বের প্রকাশ। এই প্রকাশ রাসুলের সময়ে যেরূপ বিদ্যমান ছিলো , অদ্যাবধি সমভাবে বিদ্যমান আছে অবিশ্বাসী ও অংশীবাদীদের মাঝে।
আয়াতঃ 041.006
বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ, আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের মাবুদ একমাত্র মাবুদ, অতএব তাঁর দিকেই সোজা হয়ে থাক এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর মুশরিকদের জন্যে রয়েছে দুর্ভোগ,
Say (O Muhammad SAW): ”I am only a human being like you. It is inspired in me that your Ilâh (God) is One Ilâh (God – Allâh), therefore take Straight Path to Him (with true Faith Islâmic Monotheism) and obedience to Him, and seek forgiveness of Him. And woe to Al-Mushrikûn (the disbelievers in the Oneness of Allâh, polytheists, idolaters, etc. – see V.2:105).
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَاسْتَقِيمُوا إِلَيْهِ وَاسْتَغْفِرُوهُ وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِينَ
Qul innama ana basharun mithlukum yooha ilayya annama ilahukum ilahun wahidun faistaqeemoo ilayhi waistaghfiroohu wawaylun lilmushrikeena
YUSUFALI: Say thou: “I am but a man like you: It is revealed to me by Inspiration, that your Allah is one Allah: so stand true to Him, and ask for His Forgiveness.” And woe to those who join gods with Allah,-
PICKTHAL: Say (unto them O Muhammad): I am only a mortal like you. It is inspired in me that your Allah is One Allah, therefor take the straight path unto Him and seek forgiveness of Him. And woe unto the idolaters,
SHAKIR: Say: I am only a mortal like you; it is revealed to me that your Allah is one Allah, therefore follow the right way to Him and ask His forgiveness; and woe to the polytheists;
KHALIFA: Say, “I am no more than a human being like you, who has been inspired that your god is one god. You shall be devoted to Him, and ask His forgiveness. Woe to the idol worshipers.
০৬। তুমি বল, ” আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই ৪৪৬৭। ওহীর মাধ্যমে আমাকে প্রত্যাদেশ দেয়া হয়েছে যে, তোমাদের উপাস্য এক আল্লাহ্। সুতারাং তাঁর দিকে সত্য পথে চল; এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর।” যারা আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করে তাদের দুর্ভাগ্য , – ৪৪৬৮
০৭। তারা যাকাত দেয় না এবং তারা পরকালকে অস্বীকার করে।
৪৪৬৭। অবিশ্বাসী ও অংশীবাদীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপের উত্তরে এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল [ সা ] কোনও ফেরেশতা বা অতিমানব নন। তিনি আর দশজনের মতই সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে তাঁর ও অন্যের মধ্যে কোনও ব্যবধান নাই। আল্লাহ্ তাঁকে মনোনীত করেছেন সত্যকে প্রচারের জন্য এবং নিরাশ হৃদয়ে আশার বাণী শোনানোর জন্য। সুতারাং তাদের উচিত আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা এবং অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা আল্লাহ্র করুণা ও ক্ষমালাভ করা।
৪৪৬৮। যারা আল্লাহ্র সত্যকে অস্বীকার করে এবং মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করে তাদের জন্য করুণা প্রকাশ ব্যতীত আর কিছু করার থাকে না। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে , এরা অংশীবাদী হয়, অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপরে নির্ভরশীল। নিজ সম্প্রদায়ের জন্য এদের কোনও সহানুভূতি থাকে না ফলে তারা যাকাত দেয় না বা দান করে না। এমন কি এরা পরকালেও বিশ্বাসী নয়।
আয়াতঃ 041.007
যারা যাকাত দেয় না এবং পরকালকে অস্বীকার করে।
Those who give not the Zakât and they are disbelievers in the Hereafter.
الَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُم بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ
Allatheena la yu/toona alzzakata wahum bial-akhirati hum kafiroona
YUSUFALI: Those who practise not regular Charity, and who even deny the Hereafter.
PICKTHAL: Who give not the poor-due, and who are disbelievers in the Hereafter.
SHAKIR: (To) those who do not give poor-rate and they are unbelievers in the hereafter.
KHALIFA: “Who do not give the obligatory charity (Zakat), and with regard to the Hereafter, they are disbelievers.”
০৬। তুমি বল, ” আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই ৪৪৬৭। ওহীর মাধ্যমে আমাকে প্রত্যাদেশ দেয়া হয়েছে যে, তোমাদের উপাস্য এক আল্লাহ্। সুতারাং তাঁর দিকে সত্য পথে চল; এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর।” যারা আল্লাহ্র সাথে অংশীদার করে তাদের দুর্ভাগ্য , – ৪৪৬৮
০৭। তারা যাকাত দেয় না এবং তারা পরকালকে অস্বীকার করে।
৪৪৬৭। অবিশ্বাসী ও অংশীবাদীদের ব্যঙ্গ বিদ্রূপের উত্তরে এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল [ সা ] কোনও ফেরেশতা বা অতিমানব নন। তিনি আর দশজনের মতই সাধারণ মানুষ। সেক্ষেত্রে তাঁর ও অন্যের মধ্যে কোনও ব্যবধান নাই। আল্লাহ্ তাঁকে মনোনীত করেছেন সত্যকে প্রচারের জন্য এবং নিরাশ হৃদয়ে আশার বাণী শোনানোর জন্য। সুতারাং তাদের উচিত আল্লাহ্র একত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা এবং অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের দ্বারা আল্লাহ্র করুণা ও ক্ষমালাভ করা।
৪৪৬৮। যারা আল্লাহ্র সত্যকে অস্বীকার করে এবং মিথ্যা উপাস্যের উপাসনা করে তাদের জন্য করুণা প্রকাশ ব্যতীত আর কিছু করার থাকে না। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে , এরা অংশীবাদী হয়, অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর উপরে নির্ভরশীল। নিজ সম্প্রদায়ের জন্য এদের কোনও সহানুভূতি থাকে না ফলে তারা যাকাত দেয় না বা দান করে না। এমন কি এরা পরকালেও বিশ্বাসী নয়।
আয়াতঃ 041.008
নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।
Truly, those who believe (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism, and in His Messenger Muhammad SAW) and do righteous good deeds, for them will be an endless reward that will never stop (i.e. Paradise).
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ
Inna allatheena amanoo waAAamiloo alssalihati lahum ajrun ghayru mamnoonin
YUSUFALI: For those who believe and work deeds of righteousness is a reward that will never fail.
PICKTHAL: Lo! as for those who believe and do good works, for them is a reward enduring.
SHAKIR: (As for) those who believe and do good, they shall surely have a reward never to be cut off.
KHALIFA: As for those who believe and lead a righteous life, they receive a well deserved recompense.
০৮। যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে পুরষ্কার যা কখনো কম পড়বে না ৪৪৬৯।
৪৪৬৯। ইসলাম ধর্মের মর্মার্থকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহ্র প্রতি ঈমান ও অন্তরের বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসেবে সৎকর্মে যারা আত্মনিবেদিত তারাই ধন্য। তাদের জন্য রয়েছে ” নিরবচ্ছিন্ন পুরষ্কার “।
আয়াতঃ 041.009
বলুন, তোমরা কি সে সত্তাকে অস্বীকার কর যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দু’দিনে এবং তোমরা কি তাঁর সমকক্ষ স্থীর কর? তিনি তো সমগ্র বিশ্বের পালনকর্তা।
Say (O Muhammad SAW): ”Do you verily disbelieve in Him Who created the earth in two Days and you set up rivals (in worship) with Him? That is the Lord of the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).
قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِالَّذِي خَلَقَ الْأَرْضَ فِي يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُ أَندَادًا ذَلِكَ رَبُّ الْعَالَمِينَ
Qul a-innakum latakfuroona biallathee khalaqa al-arda fee yawmayni watajAAaloona lahu andadan thalika rabbu alAAalameena
YUSUFALI: Say: Is it that ye deny Him Who created the earth in two Days? And do ye join equals with Him? He is the Lord of (all) the Worlds.
PICKTHAL: Say (O Muhammad, unto the idolaters): Disbelieve ye verily in Him Who created the earth in two Days, and ascribe ye unto Him rivals? He (and none else) is the Lord of the Worlds.
SHAKIR: Say: What! do you indeed disbelieve in Him Who created the earth in two periods, and do you set up equals with Him? That is the Lord of the Worlds.
KHALIFA: Say, “You disbelieve in the One who created the earth in two days, and you set up idols to rank with Him, though He is Lord of the universe.”
রুকু – ২
০৯।বল, ” যিনি দুই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করছো ? ৪৪৭০ এবং তোমরা কি তাঁর সাথে সমকক্ষ দাঁড় করাচ্ছ ? তিনি [ সমস্ত ] জগতসমূহের প্রভু।
৪৪৭০। ব্যাখ্যাদানকারীদের জন্য এই আয়াতটি ব্যাখ্যা করা কঠিন। কারণ এই আয়াতে মহাকাশ ও আমাদের চারিপাশের দৃশ্যমান পৃথিবীর সৃষ্টির বিবরণ আছে। এই আয়াতে [ ৯ নং ] পৃথিবী সৃষ্টির সময়কাল বলা হয়েছে দুইদিন, পরের আয়াতে [১০ নং ] উল্লেখ করা হয়েছে চার দিনের এবং ১২ নং আয়াতে উল্লেখ আছে দুই দিনের। তাহলে মোট দিনের সংখ্যা দাঁড়ায় আট দিন। কিন্তু কোরাণশরীফের বহুস্থানে আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির সময় কালকে বলা হয়েছে ছয় দিন। দেখুন নিম্নোক্ত আয়াত সমূহ যেখানে ছয়দিনের উল্লেখ আছে ; [ ৭ : ৫৪ ] ও টিকা ১০৩১, [ ৩২ : ৪ ] ও টিকা ৩৬৩২ ; [ ১০ : ৩ ] ; [১১ : ৭] ; [ ২৫ : ৫৯ ] ; [ ৫৭ : ৪ ]। তফসীরকারদের মতে [ ৪১ : ১০ ] আয়াতে যে চারদিনেরউল্লেখ আছে, এই চারদিনের মধ্যে [ ৪১ : ৯ ] আয়াতেরদুই দিন অর্ন্তভূক্ত। তাহলেই আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির সর্বমোট সংখ্যা দাঁড়াবে ছয়দিন। এই বিবরণ যুক্তিগ্রাহ্য, কারণ , প্রকৃত পক্ষে ১০ নং আয়াতটি ৯নং আয়াতের ধারাবাহিকতা। পৃথিবী সৃষ্টির চারদিনের মধ্যে দুদিন [ ৯ নং আয়াত ] ছিলো পৃথিবীর উপকরণ সৃষ্টি, পরবর্তীতে বিবর্তনের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের সৃজন যথাঃ পর্বত , সমুদ্র এবং এর প্রাণী ও উদ্ভিদ জগত এবং সেই সাথে তাদের প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণ সৃষ্টি। দেখুন আয়াত [ ১৫ : ১৯ – ২০]।
আয়াতঃ 041.010
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন-পূর্ণ হল জিজ্ঞাসুদের জন্যে।
He placed therein (i.e. the earth) firm mountains from above it, and He blessed it, and measured therein its sustenance (for its dwellers) in four Days equal (i.e. all these four ’days’ were equal in the length of time), for all those who ask (about its creation).
وَجَعَلَ فِيهَا رَوَاسِيَ مِن فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَاء لِّلسَّائِلِينَ
WajaAAala feeha rawasiya min fawqiha wabaraka feeha waqaddara feeha aqwataha fee arbaAAati ayyamin sawaan lilssa-ileena
YUSUFALI: He set on the (earth), mountains standing firm, high above it, and bestowed blessings on the earth, and measure therein all things to give them nourishment in due proportion, in four Days, in accordance with (the needs of) those who seek (Sustenance).
PICKTHAL: He placed therein firm hills rising above it, and blessed it and measured therein its sustenance in four Days, alike for (all) who ask;
SHAKIR: And He made in it mountains above its surface, and He blessed therein and made therein its foods, in four periods: alike for the seekers.
KHALIFA: He placed on it stabilizers (mountains), made it productive, and He calculated its provisions in four days, to satisfy the needs of all its inhabitants.
১০। তিনি [ পৃথিবীর ] উপরিভাগে সৃষ্টি করেছেন সুদৃঢ় পবর্তমালা ৪৪৭১ এবং পৃথিবীতে দিয়েছেন কল্যাণ এবং চারি দিনের ৪৪৭২ মধ্যে তাদের পুষ্টির জন্য সকল জিনিষের ব্যবস্থা করেছেন পরিমিত পরিমাণে , [জীবনোপকরণ ] যাচ্নাকারীদের [ প্রয়োজন ] অনুযায়ী ৪৪৭৩।
৪৪৭১। দেখুন আয়াত [ ১৩ : ৩ ] এবং [ ১৬ : ১৫ ] ও টিকা ২০৩৮। এই আয়াতটি ইংরেজী ও বিভিন্ন বাংলা অনুবাদে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজী অনুবাদ হচ্ছে “He set on [ earth ] mountains standings firm , high above” ইংরেজী সুউচ্চ শব্দটির স্থলে বাংলা “অটল ” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৯০০০ ফিট এবং সমুদ্রের সর্বোচ্চ গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩১,০০০ ফিট। সুতারাং সর্বোচ্চ স্থান ও সর্বনিম্ন স্থানের মধ্যে দূরত্ব হচ্ছে ১১১/২ মাইল। পৃথিবীর মানচিত্রে আমরা দেখতে পাই যে, নদী সমূহের উৎপত্তিস্থল হচ্ছে পর্বতসমূহ। নদী হচ্ছে পৃথিবীর সকল প্রাণী জগত ও উদ্ভিদ জগতের পানীয় জলের এবং সর্বপ্রকার জীবন ধারণের পানির উৎস।সুতারাং পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের পানির সুচারুরূপে বিতরণের জন্য পর্বতের কার্যকারিতা অপরিসীম। আবার সুউচ্চ পর্বতসমূহ পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ চলমান শিলাস্তরকে স্থির রাখে ফলে ভূপৃষ্ঠে অহরহ ভূকম্পনের হাত থেকে রক্ষা পায়। এভাবেই আল্লাহ্ পর্বতসমূহে মানুষের জন্য “কল্যাণ রেখেছেন।”
৪৪৭২। দেখুন উপরের টিকা নং ৪৪৭০।
৪৪৭৩। ‘Sa-ilin’ সম্ভাব্য অর্থ ; ১) যারা যাঞ্চা করে ; ২) যারা অনুসন্ধান করে। যদি ১নং অর্থটিকে প্রয়োগ করা হয় তবে অর্থ দাঁড়ায় ; আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট জীব জগতের জন্য যারা যাঞ্চা করে তাদের প্রয়োজনীয় ও উপযোগী খাদ্যের সৃষ্টি করেছেন। ৩) যদি ২নং অর্থটিকে প্রয়োগ করা হয়, তবে অর্থ দাঁড়ায় অনুসন্ধানকারীদের প্রয়োজন পর্যাপ্তভাবে মেটানো হয়।
আয়াতঃ 041.011
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
Then He Istawâ (rose over) towards the heaven when it was smoke, and said to it and to the earth: ”Come both of you willingly or unwillingly.” They both said: ”We come, willingly.”
ثُمَّ اسْتَوَى إِلَى السَّمَاء وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ اِئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ
Thumma istawa ila alssama-i wahiya dukhanun faqala laha walil-ardi i/tiya tawAAan aw karhan qalata atayna ta-iAAeena
YUSUFALI: Moreover He comprehended in His design the sky, and it had been (as) smoke: He said to it and to the earth: “Come ye together, willingly or unwillingly.” They said: “We do come (together), in willing obedience.”
PICKTHAL: Then turned He to the heaven when it was smoke, and said unto it and unto the earth: Come both of you, willingly or loth. They said: We come, obedient.
SHAKIR: Then He directed Himself to the heaven and it is a vapor, so He said to it and to the earth: Come both, willingly or unwillingly. They both said: We come willingly.
KHALIFA: Then He turned to the sky, when it was still gas, and said to it, and to the earth, “Come into existence, willingly or unwillingly.” They said, “We come willingly.”
১১। উপরন্তু , তিনি তাঁর পরিকল্পনায় আকাশকে অর্ন্তভূক্ত করলেন ৪৪৭৪, ৪৪৭৫ এবং তা ছিলো ধোঁয়া [ বিশেষ ]। তিনি উহাকে এবং পৃথিবীকে বলেছিলেন , ” তোমরা ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক একসাথে এসো। ” তারা বলেছিলো , ” আমরা ইচ্ছায় আনুগত্যের মাধ্যমে [ একসাথে ] আসলাম ৪৪৭৬।”
৪৪৭৪। ‘Istawa’ শব্দটির জন্য দেখুন [ ১০: ৩ ] আয়াতের টিকা ১৩৮৬ এবং আয়াত [ ২ : ২৯ ]।
৪৪৭৫। [ ৭৯ : ২৭ – ৩০ ] আয়াতের বর্ণনা অনুযায়ী , প্রথমে আকাশমন্ডল সৃষ্টি করা হয়, তৎপর পৃথিবী সৃষ্টি করা হয়। বর্তমান সূরাতে পৃথিবীর সৃষ্টি ও তৎপর পৃথিবীতে জীবনের বিবর্তনকে প্রথমে বর্ণনা করা হয় ; অতঃপর আসমানকে সপ্তস্তরে বিন্যস্ত করার বর্ণনা করা হয়। কেউ যেনো এই দুই বর্ণনাকে অসঙ্গতিপূর্ণ মনে না করে। কারণ বর্তমান আয়াতের [ ৪১ : ১১ ] বর্ণনা অনুযায়ী আকাশকে সপ্ত আকাশে বিন্যস্ত করার পূর্বেও এর অবস্থান ছিলো তবে তা ছিলো ধূম্রকুন্ডের ন্যায় বা বাষ্পের ন্যায় কুয়াশাচ্ছন্ন। বিভিন্ন আয়াতে আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির বর্ণনাকে একত্রীকরণ করলে এই সিন্ধান্তে আসা যায় যে , আল্লাহ্ প্রথমে বস্তুর আদি অবস্থা সৃষ্টি করেন যা তখনওনির্দ্দিষ্ট আকার বা সামঞ্জস্য বা শৃঙ্খলার জন্য বিন্যস্ত করা হয় নাই। নিখিল বিশ্ব সৃষ্টির পূর্বের বিশৃঙ্খল অবস্থা যা পরবর্তীতে সুশৃঙ্খল সৃষ্টি রহস্যে পর্যবসিত করা হয়। বিশৃঙ্খল অবস্থার পরে পরবর্তী ধাপে ধীরে ধীরে স্থিতি লাভ করে এবং ঠান্ডা হয়ে আদি বস্তু সমূহে পরিণত হয় যেমন : গ্যাস, তরলপদার্থ, কঠিন পদার্থ ইত্যাদি। পৃথিবী সৃষ্টি সম্বন্ধে বলা হয়েছে চারটি ধাপ বা দিন এবং আকাশ সৃষ্টি সম্বন্ধে বলা হয়েছে দুইটি ধাপ বা দিন। এখানে দিনের ধারণা আমাদের দিন ও রাত্রির ধারণার মত নয়। সে কারণেই দিনকে ধাপ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সময়ের ধারণা হচ্ছে একটি আপেক্ষিক ধারণা মাত্র। দেখুন টিকা ৪৪৭৭। বর্তমান বিজ্ঞান এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম।
৪৪৭৬। এই আয়াতটি মওলানা ইউসুফ আলী সাহেব এ ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। নিখিল বিশ্ব সৃষ্টির পরিকল্পনাতে আল্লাহ্র ইচ্ছা ছিলো যে, পৃথিবী ও নভোমন্ডল আলাদা অবস্থান করবে না। বরং তারা পৃথিবী ও আকাশ এক সাথে অবস্থান করবে। অবশ্যই পৃথিবী সৌর জগতের ও মহাবিশ্বের একটি অংশ হবে। অনন্ত মহাকাশে পৃথিবীসহ সৌরমন্ডল সাঁতরে চলেছে , অতিক্রম করে চলেছে ধুমকেতুদের গতিপথ। মহাকাশের যাবতীয় সৃষ্ট পদার্থ স্ব-ইচ্ছায় স্রষ্টার নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে পালন করে থাকে।
আয়াতঃ 041.012
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দু’দিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেন। আমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছি। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।
Then He completed and finished from their creation (as) seven heavens in two Days and He made in each heaven its affair. And We adorned the nearest (lowest) heaven with lamps (stars) to be an adornment as well as to guard (from the devils by using them as missiles against the devils). Such is the Decree of Him the All-Mighty, the All-Knower.
فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَى فِي كُلِّ سَمَاء أَمْرَهَا وَزَيَّنَّا السَّمَاء الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
Faqadahunna sabAAa samawatin fee yawmayni waawha fee kulli sama-in amraha wazayyanna alssamaa alddunya bimasabeeha wahifthan thalika taqdeeru alAAazeezi alAAaleemi
YUSUFALI: So He completed them as seven firmaments in two Days, and He assigned to each heaven its duty and command. And We adorned the lower heaven with lights, and (provided it) with guard. Such is the Decree of (Him) the Exalted in Might, Full of Knowledge.
PICKTHAL: Then He ordained them seven heavens in two Days and inspired in each heaven its mandate; and We decked the nether heaven with lamps, and rendered it inviolable. That is the measuring of the Mighty, the Knower.
SHAKIR: So He ordained them seven heavens in two periods, and revealed in every heaven its affair; and We adorned the lower heaven with brilliant stars and (made it) to guard; that is the decree of the Mighty, the Knowing.
KHALIFA: Thus, He completed the seven universes in two days, and set up the laws for every universe. And we adorned the lowest universe with lamps, and placed guards around it. Such is the design of the Almighty, the Omniscient.
১২। সুতারাং তিনি দুই দিনে তাদেরকে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন ৪৪৭৭। এবং তিনি প্রত্যেক আসমানকে তার কর্তব্য ও বিধান নির্দ্দিষ্ট করে দিলেন। এবং নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালার দ্বারা এবং [ শয়তানের থেকে ] করলাম সুরক্ষিত ৪৪৭৮। এরূপই ছিলো [তাঁর ] বিধান, [ যিনি ] ক্ষমতায় মহাপরাক্রমশালী , জ্ঞানে পরিপূর্ণ।
৪৪৭৭। ‘দিনের বা সময়ের ধারণা হচ্ছে আপেক্ষিক। কোরাণের বর্ণিত “দিন” আমাদের দিন-রাত্রির ধারণাতে সহস্র সহস্র বৎসরের সমান। [ ৭০ : ৪ ] আয়াতে বলা হয়েছে আমাদের পঞ্চাশ হাজার [ ৫০,০০০ ] বৎসরের সমান একদিন। বাইবেলের সৃষ্টিতত্বের সাথে [ Gen :i and ii, 1-7 ] প্রাচীন ব্যবিলন সভ্যতার সৃষ্টিতত্বের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে দিনকে আক্ষরিক ভাবেই দিন গণনা করা হয়েছে। তাদের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম দিন ঈশ্বর আলোর সৃষ্টি করেন, দ্বিতীয় দিনে আকাশের স্তর, তৃতীয় দিনে পৃথিবী ও পৃথিবীর উদ্ভিদ, চর্তুথ দিনে তারা ও গ্রহ , নক্ষত্র ; পঞ্চম দিনে সমুদ্র থেকে মাছ ও পক্ষীকূল ;ষষ্ঠদিনে পশু ; প্রাণী ইত্যাদি এবং মানুষ ; সপ্তম দিনে ঈশ্বর তাঁর কর্ম শেষে বিশ্রামে যান। মুসলিম দর্শনে কোরাণের বর্ণনা সম্পূর্ণ আলাদা। ১) আল্লাহ্ এই বিশাল নভোমন্ডল , বিশ্ব-ভূবন ,বিশ্ব চরাচরের সকল সৃষ্টিকে সর্বদা পরিবেষ্টন করে আছেন। এবং সর্বদা সেখানে সৃষ্টি প্রক্রিয়া অব্যাহত গতিতে চলে আসছে। এক মূহুর্তের জন্যও তা থেমে থাকে না। এই অবিরাম সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় তিনি কখনও ক্লান্ত বোধ করেন না বা তাঁর কোনও বিশ্রামের প্রয়োজন হয় নাই। আল্লাহ্ অতন্দ্র ভাবে তার সৃষ্টিকে রক্ষা করে চলেছেন। [ আয়াতল কুরশীতে আল্লাহ্র এই গুণবাচক বর্ণনাটি তুলে ধরা হয়েছে ]। ২) আল্লাহ্র সৃষ্টি শেষ হয়ে যায় নাই। প্রতিনিয়ত তা অব্যাহত গতিতে চলছে। নভোমন্ডল থেকে মাটির পৃথিবী সর্বত্রই একই গতিতে নূতন সৃষ্টি প্রক্রিয়া অব্যাহত গতিতে চলে আসছে সেই অনাদি কাল থেকে, ভবিষ্যতেও চলবে। [৩২ : ৫ ; ৭: ৫৪ ] আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এই সমুদয় বিষয় আল্লাহ্র আয়ত্বাধীন। ৩) মানুষ অন্যান্য প্রাণীদের সাথে একই সময়ে পৃথিবীতে আগমন করে নাই। তার আগমন প্রাণীদের আগমনের বহু পরে। ৪) বাইবেলের বর্ণনার মাঝে বহু অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায় যেমন : চর্তুথদিনের গ্রহ নক্ষত্রের সৃষ্টি হলে প্রথম তিন দিনের হিসাব মেলানো কঠিন। কঠিন হয়ে পড়ে উদ্ভিদের সৃষ্টিতত্ব। এ ব্যাপারে মরিস বুকাইলির বিখ্যাত গ্রন্থে আলোকপাত করা হয়েছে। কোরাণের সৃষ্টিতত্বের যে ছয়টি ধাপ বর্ণনা করা হয়েছে তা অবাধ ও উন্মুক্ত সেগুলি হলো : ১) আমাদের ও অন্যান্য গ্রহের সৃষ্টি ‘Cosmic Matter’ বা পদার্থের আদিরূপের বিষ্ফোরণ থেকে ; ২) ধীরে ধীরে ঠান্ডা হওয়া থেকে ৩) ও ৪) উদ্ভিদের উৎপত্তি ও প্রাণীর সৃষ্টি ; ৫) এবং ৬) সমান্তরাল ভাবে সপ্ত আকাশের সৃষ্টি। কোরাণের সৃষ্টিতত্বের এই বর্ণনা বিজ্ঞানের তত্বের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ।
৪৪৭৮। দেখুন আয়াত [ ১৫ : ১৭ ] ও টিকা ১৯৫১ এবং আয়াত [ ৩৭ : ৬-৯ ]। লক্ষ্য করুন আয়াত সমূহে যতক্ষণ সৃষ্টিতত্বের বর্ণনা করা হয়েছে, ততক্ষণ ‘তিনি ‘ বা তৃতীয় পুরুষ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এই বাক্যে তৃতীয় পুরুষ ‘তিনি’ র স্থলে প্রথম পুরুষ ‘আমি ‘ ব্যবহার করা হয়েছে। সৃষ্টি প্রক্রিয়া নৈবর্ত্তিক বা অব্যক্তিগত। কিন্তু সুশোভিত ও সুরক্ষিত করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কাজ। সৃষ্টিকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্র করুণার সাক্ষর হিসেবে সৃষ্ট পদার্থ ও প্রাণের জন্য আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ বর্ণনা করা হয়েছে। সেই কারণে ভাষাকে সৌন্দর্যমন্ডিত ও গুরুত্ব আরোপ করার জন্য তৃতীয় পুরুষ থেকে প্রথম পুরুষে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
আয়াতঃ 041.013
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলুন, আমি তোমাদেরকে সতর্ক করলাম এক কঠোর আযাব সম্পর্কে আদ ও সামুদের আযাবের মত।
But if they turn away, then say (O Muhammad SAW): ”I have warned you of a Sâ’iqah (a destructive awful cry, torment, hit, a thunderbolt) like the Sâ’iqah which overtook ’Ad and Thamûd (people).”
فَإِنْ أَعْرَضُوا فَقُلْ أَنذَرْتُكُمْ صَاعِقَةً مِّثْلَ صَاعِقَةِ عَادٍ وَثَمُودَ
Fa-in aAAradoo fuqul anthartukum saAAiqatan mithla saAAiqati AAadin wathamooda
YUSUFALI: But if they turn away, say thou: “I have warned you of a stunning Punishment (as of thunder and lightning) like that which (overtook) the ‘Ad and the Thamud!”
PICKTHAL: But if they turn away, then say: I warn you of a thunderbolt like the thunderbolt (which fell of old upon the tribes) of A’ad and Thamud;
SHAKIR: But if they turn aside, then say: I have warned you of a scourge like the scourge of Ad and Samood.
KHALIFA: If they turn away, then say, “I am warning you of a disaster like the disaster that annihilated `Aad and Thamoud.”
১৩। কিন্তু তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তুমি বল ; ” আমি তোমাদের [ বজ্র ও বিদ্যুতের মত ] বিহ্বলকারী শাস্তি সম্বন্ধে সর্তক করছি , যেরূপ [ শাস্তি ] আদ ও সামুদ জাতিকে [ ধ্বংস ] করেছিলো ৪৪৭৯।
৪৪৭৯। দেখুন আয়াত নং ১৭।
আয়াতঃ 041.014
যখন তাদের কাছে রসূলগণ এসেছিলেন সম্মুখ দিক থেকে এবং পিছন দিক থেকে এ কথা বলতে যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও পূজা করো না। তারা বলেছিল, আমাদের পালনকর্তা ইচ্ছা করলে অবশ্যই ফেরেশতা প্রেরণ করতেন, অতএব, আমরা তোমাদের আনীত বিষয় অমান্য করলাম।
When the Messengers came to them, from before them and behind them (saying): ”Worship none but Allâh” They said: ”If our Lord had so willed, He would surely have sent down the angels. So indeed! We disbelieve in that with which you have been sent.”
إِذْ جَاءتْهُمُ الرُّسُلُ مِن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا اللَّهَ قَالُوا لَوْ شَاء رَبُّنَا لَأَنزَلَ مَلَائِكَةً فَإِنَّا بِمَا أُرْسِلْتُمْ بِهِ كَافِرُونَ
Ith jaat-humu alrrusulu min bayni aydeehim wamin khalfihim alla taAAbudoo illa Allaha qaloo law shaa rabbuna laanzala mala-ikatan fa-inna bima orsiltum bihi kafiroona
YUSUFALI: Behold, the messengers came to them, from before them and behind them, (preaching): “Serve none but Allah.” They said, “If our Lord had so pleased, He would certainly have sent down angels (to preach). Now we reject your mission (altogether).”
PICKTHAL: When their messengers came unto them from before them and behind them, saying: Worship none but Allah! they said: If our Lord had willed, He surely would have sent down angels (unto us), so lo! we are disbelievers in that wherewith ye have been sent.
SHAKIR: When their messengers came to them from before them and from behind them, saying, Serve nothing but Allah, they said: If our Lord had pleased He would certainly have sent down angels, so we are surely unbelievers in that with which you are sent.
KHALIFA: Their messengers went to them, as well as before them and after them, saying, “You shall not worship except GOD.” They said, “Had our Lord willed, He could have sent angels. We are disbelievers in what you say.”
১৪। দেখো, তাদের নিকট রাসুলগণ এসেছিলো তাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ দিক থেকে [ এ কথা প্রচার করে যে] ৪৪৮০ : ” আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না।” তারা বলেছিলো , ” আমাদের প্রভু যদি তাই-ই ইচ্ছা করতেন তবে তিনি প্রচার কার্যের জন্য ফেরেশতাদের নিয়োজিত করতেন ৪৪৮১। অতএব , তোমাদের যা সহ প্রেরণ করা হয়েছে আমরা তা[ সব ] প্রত্যাখান করলাম।”
৪৪৮০। “সম্মুখ ও পশ্চাৎ দিক থেকে ” অর্থাৎ সকল দিক থেকে জীবনের চলার পথের প্রতিটি দিক্ থেকে তাদের সর্তক করা হয়েছিলো সেই কথাকেই এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
৪৪৮১। দেখুন আয়াত [ ১৫ : ৭ ] ও টিকা ১৯৪১ ; আয়াত [ ৬: ৮-৯ ] ও টিকা ৮৪১ – ৪২। রাসুলের [ সা ] সমসাময়িক আরব মোশরেকদের তুলনায় আদ্ জাতি, সম্পদ , ক্ষমতা ও শক্তিতে ছিলো শ্রেষ্ঠ। বলা চলে তুলনাহীন। জাগতিক সম্পদের যত প্রাচুর্য ঘটে, তত মানুষের মাঝে দম্ভ , অহংকার উদ্ধতপনার জন্ম হয়।
আয়াতঃ 041.015
যারা ছিল আদ, তারা পৃথিবীতে অযথা অহংকার করল এবং বলল, আমাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিধর কে? তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, যে আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিধর ? বস্তুতঃ তারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করত।
As for ’Ad, they were arrogant in the land without right, and they said: ”Who is mightier than us in strength?” See they not that Allâh, Who created them was mightier in strength than them. And they used to deny Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, revelations, etc.)!
فَأَمَّا عَادٌ فَاسْتَكْبَرُوا فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَقَالُوا مَنْ أَشَدُّ مِنَّا قُوَّةً أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَهُمْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُمْ قُوَّةً وَكَانُوا بِآيَاتِنَا يَجْحَدُونَ
Faamma AAadun faistakbaroo fee al-ardi bighayri alhaqqi waqaloo man ashaddu minna quwwatan awa lam yaraw anna Allaha allathee khalaqahum huwa ashaddu minhum quwwatan wakanoo bi-ayatina yajhadoona
YUSUFALI: Now the ‘Ad behaved arrogantly through the land, against (all) truth and reason, and said: “Who is superior to us in strength?” What! did they not see that Allah, Who created them, was superior to them in strength? But they continued to reject Our Signs!
PICKTHAL: As for A’ad, they were arrogant in the land without right, and they said: Who is mightier than us in power? Could they not see that Allah Who created them, He was mightier than them in power? And they denied Our revelations.
SHAKIR: Then as to Ad, they were unjustly proud in the land, and they said: Who is mightier in strength than we? Did they not see that Allah Who created them was mightier than they in strength, and they denied Our communications?
KHALIFA: As for `Aad, they turned arrogant on earth, opposed the truth, and said, “Who is more powerful than we?” Did they not realize that GOD, who created them, is more powerful than they? They were unappreciative of our revelations.
১৫। আ’দ সম্প্রদায় পৃথিবীতে ঔদ্ধত্যে [সকল ] সত্য এবং যুক্তির বিরুদ্ধে দম্ভ প্রকাশ করতো ৪৪৮২ , এবং বলতো, ” আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে ?” কি ! তারা কি লক্ষ্য করে নাই যে আল্লাহ্, যিনি উহাদের সৃষ্টি করেছেন , তিনি উহাদের অপেক্ষা শক্তিতে শ্রেষ্ঠতর ? কিন্তু তারা ক্রমাগত আমার নির্দেশনাবলী প্রত্যাখান করতে লাগলো।
৪৪৮২। “দম্ভ প্রকাশ করত ” ; দেখুন আয়াত [৭ : ৩৩ ]। পার্থিব দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের সম্পদ , ক্ষমতা, শক্তির দম্ভ হয়তো যুক্তিসঙ্গত ছিলো। কিন্তু তাদের সকল ক্ষমতা ও শক্তিকে একত্রীভূত করলেও কি তা আল্লাহ্র শক্তির সাথে তুলনীয় ?
উপদেশ : পার্থিব ধন সম্পদ ও ক্ষমতা এভাবেই মানুষকে উদ্ধত ও একগুয়ে পরিণত করে। দম্ভ , অহংকার তার সর্ব সত্ত্বাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ফলে তার চরিত্র থেকে বিনয় ও আনুগত্য লোপ পায় এবং সে এক আল্লাহ্র এবাদতে বিমুখ হয়।
আয়াতঃ 041.016
অতঃপর আমি তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার আযাব আস্বাদন করানোর জন্যে তাদের উপর প্রেরণ করলাম ঝঞ্ঝাবায়ু বেশ কতিপয় অশুভ দিনে। আর পরকালের আযাব তো আরও লাঞ্ছনাকর এমতাবস্থায় যে, তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।
So We sent upon them furious wind in days of evil omen (for them) that We might give them a taste of disgracing torment in this present worldly life, but surely the torment of the Hereafter will be more disgracing, and they will never be helped.
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا صَرْصَرًا فِي أَيَّامٍ نَّحِسَاتٍ لِّنُذِيقَهُمْ عَذَابَ الْخِزْيِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَخْزَى وَهُمْ لَا يُنصَرُونَ
Faarsalna AAalayhim reehan sarsaran fee ayyamin nahisatin linutheeqahum AAathaba alkhizyi fee alhayati alddunya walaAAathabu al-akhirati akhza wahum la yunsaroona
YUSUFALI: So We sent against them a furious Wind through days of disaster, that We might give them a taste of a Penalty of humiliation in this life; but the Penalty of a Hereafter will be more humiliating still: and they will find no help.
PICKTHAL: Therefor We let loose on them a raging wind in evil days, that We might make them taste the torment of disgrace in the life of the world. And verily the doom of the Hereafter will be more shameful, and they will not be helped.
SHAKIR: So We sent on them a furious wind in unlucky days, that We may make them taste the chastisement of abasement in this world’s life; and certainly the chastisement of the hereafter is much more abasing, and they shall not be helped.
KHALIFA: Consequently, we sent upon them violent wind, for a few miserable days. We thus afflicted them with humiliating retribution in this life, and the retribution of the Hereafter is more humiliating; they can never win.
১৬। সুতারাং এই [ পৃথিবীর ] জীবনে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তির আস্বাদন করাবার জন্য ওদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝা বায়ু এক বিপর্যয়ের দিনে ৪৪৮৩। কিন্তু পরকালের শাস্তি হবে অধিকতর লাঞ্ছনাদায়ক। এবং তারা কোন সাহায্য লাভ করবে না।
৪৪৮৩। আদ জাতি ও তাদের পাপের পূর্ণ বিবরণ এবং তাদের নিকট আল্লাহ্র বাণী প্রচার করেছিলেন যে হুদ নবী তার বিবরণ আছে [ ২৬ : ১২৩ -১৪০ ] ; ৭ : ৬৫-৭২ ] আয়াত ও টিকা ১০৪০। “ঝঞ্ঝাবায়ু” এর জন্য দেখুন [ ৫৪ : ১৯ ] আয়াত।
আয়াতঃ 041.017
আর যারা সামূদ, আমি তাদেরকে প্রদর্শন করেছিলাম, অতঃপর তারা সৎপথের পরিবর্তে অন্ধ থাকাই পছন্দ করল। অতঃপর তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদেরকে অবমাননাকর আযাবের বিপদ এসে ধৃত করল।
And as for Thamûd, We showed and made clear to them the Path of Truth (Islâmic Monotheism) through Our Messenger, (i.e. showed them the way of success), but they preferred blindness to guidance, so the Sâ’iqah (a destructive awful cry, torment, hit, a thunderbolt) of disgracing torment seized them, because of what they used to earn.
وَأَمَّا ثَمُودُ فَهَدَيْنَاهُمْ فَاسْتَحَبُّوا الْعَمَى عَلَى الْهُدَى فَأَخَذَتْهُمْ صَاعِقَةُ الْعَذَابِ الْهُونِ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
Waamma thamoodu fahadaynahum faistahabboo alAAama AAala alhuda faakhathat-hum saAAiqatu alAAathabi alhooni bima kanoo yaksiboona
YUSUFALI: As to the Thamud, We gave them Guidance, but they preferred blindness (of heart) to Guidance: so the stunning Punishment of humiliation seized them, because of what they had earned.
PICKTHAL: And as for Thamud, We gave them guidance, but they preferred blindness to the guidance, so the bolt of the doom of humiliation overtook them because of what they used to earn.
SHAKIR: And as to Samood, We showed them the right way, but they chose error above guidance, so there overtook them the scourge of an abasing chastisement for what they earned.
KHALIFA: As for Thamoud, we provided them with guidance, but they preferred blindness over guidance. Consequently, the disastrous and shameful retribution annihilated them, because of what they earned.
১৭। সামুদ জাতিদের ব্যাপার এই যে , ৪৪৮৪ আমি ওদের পথনির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সৎ পথের পরিবর্তে [আত্মার ] অন্ধত্ব কামনা করেছিলো। সুতারাং এক বিহ্বলকারী শাস্তির লাঞ্ছনা তাদের গ্রাস করলো, কারণ তারা তা অর্জন করেছিলো ৪৪৮৫।
৪৪৮৪। সাধারণতঃ কোরাণ শরীফে সর্বদা সামুদ জাতির কাহিনী আ’দ জাতির সাথেই বর্ণনা করা হয়েছে। দেখুন সূরা [ ২৬ : ১৪০ – ৫৯ ] আয়াত এবং সূরা [ ৭ : ৭৩ -৭৯ ] আয়াত ও টিকা ১০৪৩।
৪৪৮৫। এই আয়াতে শাস্তির বর্ণনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে যে তা ছিলো “লাঞ্ছনাদায়ক ” – ইংরেজী অনুবাদে অনুবাদ করা হয়েছে “Thunderbolt of the Chastisement”। সামুদ জাতির ধ্বংস হয়েছিলো কর্ণ বিদায়ক শব্দ সহ বজ্র ও বিদ্যুৎ অথবা ভূমিকম্পের বিকট শব্দ সহ শাস্তি। সূরা [ ৭ : ৭৮ ] এর বর্ণনা অনুযায়ী তা ছিলো ভূমিকম্প দেখুন আয়াতের টিকা ১০৪৭।
আয়াতঃ 041.018
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল ও সাবধানে চলত, আমি তাদেরকে উদ্ধার করলাম।
And We saved those who believed and used to fear Allâh, keep their duty to Him and avoid evil.
وَنَجَّيْنَا الَّذِينَ آمَنُوا وَكَانُوا يَتَّقُونَ
Wanajjayna allatheena amanoo wakanoo yattaqoona
YUSUFALI: But We delivered those who believed and practised righteousness.
PICKTHAL: And We delivered those who believed and used to keep their duty to Allah.
SHAKIR: And We delivered those who believed and guarded (against evil).
KHALIFA: We always save those who believe and lead a righteous life.
১৮। কিন্তু যারা বিশ্বাস করতো এবং পূণ্যাত্মা ছিলো আমি তাদের উদ্ধার করলাম।
রুকু – ৩
১৯। যেদিন আল্লাহ্র শত্রুদের[ জাহান্নামের ] আগুনের দিকে সমবেত করা হবে, তারা সারিবদ্ধ ভাবে অগ্রসর হবে ৪৪৮৬।
৪৪৮৬। ” তারা সারিবদ্ধভাবে অগ্রসর হবে ” – বর্ণনার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে পাপীদের অবমাননাকর শাস্তির চিত্র। বন্দীদের যেরূপ শাস্তির জন্য সারিবদ্ধভাবে লওয়া হয় এ যেনো তারই প্রতিচ্ছবি।
আয়াতঃ 041.019
যেদিন আল্লাহর শত্রুদেরকে অগ্নিকুন্ডের দিকে ঠেলে নেওয়া হবে। এবং ওদের বিন্যস্ত করা হবে বিভিন্ন দলে।
And (remember) the Day that the enemies of Allâh will be gathered to the Fire, so they will be collected there (the first and the last).
وَيَوْمَ يُحْشَرُ أَعْدَاء اللَّهِ إِلَى النَّارِ فَهُمْ يُوزَعُونَ
Wayawma yuhsharu aAAdao Allahi ila alnnari fahum yoozaAAoona
YUSUFALI: On the Day that the enemies of Allah will be gathered together to the Fire, they will be marched in ranks.
PICKTHAL: And (make mention of) the day when the enemies of Allah are gathered unto the Fire, they are driven on
SHAKIR: And on the day that the enemies of Allah shall be brought together to the fire, then they shall be formed into groups.
KHALIFA: The day will come when the enemies of GOD will be summoned to the hellfire, forcibly.
১৮। কিন্তু যারা বিশ্বাস করতো এবং পূণ্যাত্মা ছিলো আমি তাদের উদ্ধার করলাম।
রুকু – ৩
১৯। যেদিন আল্লাহ্র শত্রুদের[ জাহান্নামের ] আগুনের দিকে সমবেত করা হবে, তারা সারিবদ্ধ ভাবে অগ্রসর হবে ৪৪৮৬।
৪৪৮৬। ” তারা সারিবদ্ধভাবে অগ্রসর হবে ” – বর্ণনার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে পাপীদের অবমাননাকর শাস্তির চিত্র। বন্দীদের যেরূপ শাস্তির জন্য সারিবদ্ধভাবে লওয়া হয় এ যেনো তারই প্রতিচ্ছবি।
আয়াতঃ 041.020
তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছাবে, তখন তাদের কান, চক্ষু ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে।
Till, when they reach it (Hell-fire), their hearing (ears) and their eyes, and their skins will testify against them as to what they used to do.
حَتَّى إِذَا مَا جَاؤُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَارُهُمْ وَجُلُودُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
Hatta itha ma jaooha shahida AAalayhim samAAuhum waabsaruhum wajulooduhum bima kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: At length, when they reach the (Fire), their hearing, their sight, and their skins will bear witness against them, as to (all) their deeds.
PICKTHAL: Till, when they reach it, their ears and their eyes and their skins testify against them as to what they used to do.
SHAKIR: Until when they come to it, their ears and their eyes and their skins shall bear witness against them as to what they did.
KHALIFA: Once they get there, their own hearing, eyes, and skins will bear witness to everything they had done.
২০। অবশেষে তারা যখন [ আগুনের ] কাছে উপস্থিত হবে, তাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, এবং দেহের ত্বক , তাদের[ সকল ] কাজের জন্য, তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে ৪৪৮৭।
৪৪৮৭। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ও মনের বিভিন্ন দক্ষতা , আল্লাহ্ যা তাদের দান করেছিলেন -সব তাদের অপব্যবহারের জন্য পাপীদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দান করবে। একই ভাষ্য লক্ষ্য করা যায় সূরা [ ৩৬: ৬৫ ] আয়াতে যেখানে বলা হয়েছে , তাদের হস্তদ্বয় ও পদদ্বয় তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দান করবে।ত্বক অপব্যবহারের বিভিন্ন ধরণ আছে তার মাঝে প্রধান হচ্ছে স্পর্শ যা যৌন আবেদন ও যৌন অপকর্মের সময়ে প্রধানতঃ ব্যবহার হয়। এ ব্যতীত জিহ্বার স্বাদ, ঘ্রাণের অনুভূতি, এগুলিকেও স্পর্শের অনুভূতির পর্যায়ে একই শ্রেণীভুক্ত বলা চলে। এক কথায় বলা চলে , তাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য শরীরের সকল অংশ, বুদ্ধিমত্তার সকল দক্ষতা , আবেগ ও অনুভূতির সকল দরজা , সব কিছুই সেদিন আল্লাহ্র দরবারে ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দান করবেন। পৃথিবীতে এ সব আল্লাহ্র দান, ব্যক্তি তার নিজস্ব সম্পদরূপে পরিগণিত করতো। তার পার্থিব উন্নতির জন্য সে এসব অহরহ ব্যবহার করেছে। এই ব্যবহারের সময়ে সে পাপ বা পূণ্য কোনও কিছুরই বিচার করে নাই। পৃথিবীতে যার সাহায্যে সে জাগতিক উন্নতি সাধন করে থাকে শেষ বিচারের দিনে, হিসাব গ্রহণের দিনে সে সব সম্পদের সঠিক হিসাব দাখিল করতে হবে। জবাবদিহি করতে হবে অপব্যবহারের।
আয়াতঃ 041.021
তারা তাদের ত্বককে বলবে, তোমরা আমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিলে কেন? তারা বলবে, যে আল্লাহ সব কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন, তিনি আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনিই তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।
And they will say to their skins, ”Why do you testify against us?” They will say: ”Allâh has caused us to speak, as He causes all things to speak, and He created you the first time, and to Him you are made to return.”
وَقَالُوا لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدتُّمْ عَلَيْنَا قَالُوا أَنطَقَنَا اللَّهُ الَّذِي أَنطَقَ كُلَّ شَيْءٍ وَهُوَ خَلَقَكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
Waqaloo lijuloodihim lima shahidtum AAalayna qaloo antaqana Allahu allathee antaqa kulla shay-in wahuwa khalaqakum awwala marratin wa-ilayhi turjaAAoona
YUSUFALI: They will say to their skins: “Why bear ye witness against us?” They will say: “Allah hath given us speech,- (He) Who giveth speech to everything: He created you for the first time, and unto Him were ye to return.
PICKTHAL: And they say unto their skins: Why testify ye against us? They say: Allah hath given us speech Who giveth speech to all things, and Who created you at the first, and unto Whom ye are returned.
SHAKIR: And they shall say to their skins: Why have you borne witness against us? They shall say: Allah Who makes everything speak has made us speak, and He created you at first, and to Him you shall be brought back.
KHALIFA: They will say to their skins, “Why did you bear witness against us?” They will reply, “GOD made us speak up; He is the One who causes everything to speak. He is the One who created you the first time, and now you have been returned to Him.”
২১। তারা তাদের গাত্র-ত্বককে বলবে, ৪৪৮৮ : ” তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন ? ” তারা বলবেঃ ” আল্লাহ্ আমাদের কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছেন ; যিনি সকল কিছুকে বাক্শক্তি দান করেন। তিনি প্রথমবারে তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই নিকটে তোমাদের প্রত্যাবর্তন।
৪৪৮৮। হাশরের ময়দানে পাপীরা নূতন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবে। পৃথিবীতে তাদের ধারণা ছিলো যে যদি তারা তাদের কুকর্মকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখতে সক্ষম হয়, তবে পৃথিবীর কেউ তাদের পাপের বিবরণ জানতে পারবে না।ফলে তারা কোনওরূপ ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। তারা আল্লাহ্র ক্ষমতার কথা ভুলে গিয়েছিলো। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে বৃক্ষের জবান দিতে পারেন। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। মানুষের জীবনের জানা ও অজানা সকল তথ্য আল্লাহ্র নিকট স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংগ্রীহিত হয়ে থাকে। আমাদের শরীর , মন , আত্মা, সব কিছুই আমাদের কর্মের সাথী হয়ে অনন্তের মাঝে সংরক্ষিত হয়। আর এই সাক্ষীই সত্যকে তুলে ধরে ন্যায় বিচারকে স্পষ্ট করবে। যখন আমরা পাপের নিকট আত্মসমর্পন করি, আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ , আমাদের বুদ্ধিমত্তা , কর্মদক্ষতা, স্রষ্টা প্রদত্ত সকল অনুগ্রহ পাপে সহায়তা করতে বাধ্য হয় কিন্তু শেষ বিচারের দিনে এরাই সাক্ষী হিসেবে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।
আয়াতঃ 041.022
তোমাদের কান, তোমাদের চক্ষু এবং তোমাদের ত্বক তোমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবে না ধারণার বশবর্তী হয়ে তোমরা তাদের কাছে কিছু গোপন করতে না। তবে তোমাদের ধারণা ছিল যে, তোমরা যা কর তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেন না।
And you have not been hiding against yourselves, lest your ears, and your eyes, and your skins testify against you, but you thought that Allâh knew not much of what you were doing.
وَمَا كُنتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلَا أَبْصَارُكُمْ وَلَا جُلُودُكُمْ وَلَكِن ظَنَنتُمْ أَنَّ اللَّهَ لَا يَعْلَمُ كَثِيرًا مِّمَّا تَعْمَلُونَ
Wama kuntum tastatiroona an yashhada AAalaykum samAAukum wala absarukum wala juloodukum walakin thanantum anna Allaha la yaAAlamu katheeran mimma taAAmaloona
YUSUFALI: “Ye did not seek to hide yourselves, lest your hearing, your sight, and your skins should bear witness against you! But ye did think that Allah knew not many of the things that ye used to do!
PICKTHAL: Ye did not hide yourselves lest your ears and your eyes and your skins should testify against you, but ye deemed that Allah knew not much of what ye did.
SHAKIR: And you did not veil yourselves lest your ears and your eyes and your skins should bear witness against you, but you thought that Allah did not know most of what you did.
KHALIFA: There is no way you can hide from your own hearing, your eyes, or your skins. In fact, you thought that GOD was unaware of much of what you do.
আয়াতঃ 041.023
তোমাদের পালনকর্তা সম্বন্ধে তোমাদের এ ধারণাই তোমাদেরকে ধ্বংস করেছে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছ।
And that thought of yours which you thought about your Lord, has brought you to destruction, and you have become (this Day) of those utterly lost!
وَذَلِكُمْ ظَنُّكُمُ الَّذِي ظَنَنتُم بِرَبِّكُمْ أَرْدَاكُمْ فَأَصْبَحْتُم مِّنْ الْخَاسِرِينَ
Wathalikum thannukumu allathee thanantum birabbikum ardakum faasbahtum mina alkhasireena
YUSUFALI: “But this thought of yours which ye did entertain concerning your Lord, hath brought you to destruction, and (now) have ye become of those utterly lost!”
PICKTHAL: That, your thought which ye did think about your Lord, hath ruined you; and ye find yourselves (this day) among the lost.
SHAKIR: And that was your (evil) thought which you entertained about your Lord that has tumbled you down into perdition, so are you become of the lost ones.
KHALIFA: This kind of thinking about your Lord will cause you to fall, and then you become losers.
২৩। ” কিন্তু তোমাদের প্রভুর সম্বন্ধে তোমরা যে ধারণা পোষণ করতে, এই ধারণাই তোমাদের ধ্বংস এনেছে ; এবং[ যার ফলে ] তোমরা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছ।” ৪৪৯০
৪৪৯০। উপরের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা এই আয়াত। বক্তব্য হচ্ছে : ” এখন দেখ অবস্থা কিরূপ ? আমাদের তোমাদের সাথে যুক্ত করে দেয়া হয়েছিলো আমাদের ব্যবহারের মাধ্যমে আত্মিক সমৃদ্ধি লাভ করা ও আত্মিক মুক্তির অনুসন্ধান করার জন্য। কিন্তু তোমরা আমাদের অপব্যবহার করেছ। ফলে তোমরা তোমাদের ধ্বংস ডেকে এনেছ।”
আয়াতঃ 041.024
অতঃপর যদি তারা সবর করে, তবুও জাহান্নামই তাদের আবাসস্থল। আর যদি তারা ওযরখাহী করে, তবে তাদের ওযর কবুল করা হবে না।
Then, if they have patience, yet the Fire will be a home for them, and if they beg for to be excused, yet they are not of those who will ever be excused.
فَإِن يَصْبِرُوا فَالنَّارُ مَثْوًى لَّهُمْ وَإِن يَسْتَعْتِبُوا فَمَا هُم مِّنَ الْمُعْتَبِينَ
Fa-in yasbiroo faalnnaru mathwan lahum wa-in yastaAAtiboo fama hum mina almuAAtabeena
YUSUFALI: If, then, they have patience, the Fire will be a home for them! and if they beg to be received into favour, into favour will they not (then) be received.
PICKTHAL: And though they are resigned, yet the Fire is still their home; and if they ask for favour, yet they are not of those unto whom favour can be shown.
SHAKIR: Then if they will endure, still the fire is their abode, and if they ask for goodwill, then are they not of those who shall be granted goodwill.
KHALIFA: If they continue the way they are, Hell will be their destiny, and if they make up excuses, they will not be excused.
২৪। [ এখন ] যদি তারা ধৈর্য ধারণ করে [ তবুও ] আগুনই হবে তাদের জন্য বাসস্থান। এবং তারা যদি অনুগ্রহ ভিক্ষা করে [ তবুও ] তারা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবে না ৪৪৯১।
৪৪৯১। ” যদি তারাধৈর্য্য ধারণ করে তবুও ” – এই বাক্যটি ব্যঙ্গ বিদ্রূপ অর্থে ব্যক্ত করা হয়েছে , যার অর্থ ” এখন আর অধৈর্য হয়ে লাভ নাই। কারণ শীঘ্রই তারা তাদের শেষ নিবাস জাহান্নামের আগুন দেখতে পাবে। তারা যদি তখন আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও করুণা ভিক্ষা করে , তবে তা পাবে না , কারণ অনুগ্রহ লাভের জন্য তা হবে অনেক দেরী।
আয়াতঃ 041.025
আমি তাদের পেছনে সঙ্গী লাগিয়ে দিয়েছিলাম, অতঃপর সঙ্গীরা তাদের অগ্র-পশ্চাতের আমল তাদের দৃষ্টিতে শোভনীয় করে দিয়েছিল। তাদের ব্যাপারেও শাস্তির আদেশ বাস্তবায়িত হল, যা বাস্তবায়িত হয়েছিল তাদের পূর্ববতী জিন ও মানুষের ব্যাপারে। নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত।
And We have assigned them (devils) intimate companions (in this world), who have made fair-seeming to them, what was before them (evil deeds which they were doing in the present worldly life and disbelief in the Reckoning and the Resurrection, etc.) and what was behind them (denial of the matters in the coming life of the Hereafter as regards punishment or reward, etc.). And the Word (i.e. the torment) is justified against them as it was justified against those who were among the previous generations of jinns and men that had passed away before them. Indeed they (all) were the losers.
وَقَيَّضْنَا لَهُمْ قُرَنَاء فَزَيَّنُوا لَهُم مَّا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَحَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ فِي أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِم مِّنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ إِنَّهُمْ كَانُوا خَاسِرِينَ
Waqayyadna lahum quranaa fazayyanoo lahum ma bayna aydeehim wama khalfahum wahaqqa AAalayhimu alqawlu fee omamin qad khalat min qablihim mina aljinni waal-insi innahum kanoo khasireena
YUSUFALI: And We have destined for them intimate companions (of like nature), who made alluring to them what was before them and behind them; and the sentence among the previous generations of Jinns and men, who have passed away, is proved against them; for they are utterly lost.
PICKTHAL: And We assigned them comrades (in the world), who made their present and their past fairseeming unto them. And the Word concerning nations of the jinn and humankind who passed away before them hath effect for them. Lo! they were ever losers.
SHAKIR: And We have appointed for them comrades so they have made fair-seeming to them what is before them and what is behind them, and the word proved true against them– among the nations of the jinn and the men that have passed away before them– that they shall surely be losers.
KHALIFA: We assign to them companions who adorn everything they do in their eyes. Thus, they end up incurring the same fate as the previous communities of jinns and humans, who were also losers.
২৫। এবং আমি[ একই চরিত্র বিশিষ্ট ] অন্তরঙ্গ সহচর তাদের ভাগ্যে নির্দ্দিষ্ট করেছিলাম ৪৪৯২, যারা উহাদের সম্মুখে ও পশ্চাতের যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভন করে দেখিয়েছিলো ৪৪৯৩।এবং তাদের প্রতি সাব্যস্ত হয়ে গেছে সেই শাস্তি , যা জ্বিন ও মানুষের যে সকল দল তাদের পূর্বে গত হয়েছে , তাদের প্রতি সাব্যস্ত হয়েছিলো ৪৪৯৪। নিশ্চয়ই তারা ছিলো ক্ষতিগ্রস্থ ৪৪৯৫।
৪৪৯২। বেহেশতের বর্ণনায় সঙ্গীর কথা উল্লেখ আছে। সুখ-শান্তি একা ভোগ করে তৃপ্তি লাভ করা যায় না। তাই বেহেশতের বর্ণনায় অন্যান্য জিনিষের সাথে সাথীর উল্লেখও আছে। কারণ মানুষ সামাজিক জীব সগোত্র সমাজে বাসে তার সুখ শান্তির অনুভূতি আরও তীব্র করবে। অপরপক্ষে দোযখের শাস্তি আরও তীব্র ভাবে অনুভূত হবে মন্দ সঙ্গীর অবস্থানে। মন্দ সেখানে মন্দের সঙ্গ লাভ করবে। পৃথিবীর জীবনে যারা পাপ কার্যকে তাদের চোখে মনোহর করেছিলো ; পরলোকে জাহান্নামে তারাই হবে তাদের সাথী – যারা পরস্পর পরস্পরের প্রতি অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে দুঃখের বোঝাকে আরও ভারী করে তুলবে। প্রকৃত পক্ষে “হা-মিম” শ্রেণীর সূরাগুলিতে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে, পূণ্যাত্মার জন্য আছে ভালো সঙ্গ এবং পাপীদের জন্য তাদের কৃতকর্মের দোসর ; যা প্রতিটি সূরার বক্তব্যে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।
৪৪৯৩। পৃথিবীতে পাপীদের সহচররা পাপ কাজকে মনোহর করে চিত্রিত করেছিলো এবং ভবিষ্যতকেও তারা আশা আকাঙ্খা ; সুখ ও শান্তির প্রতীকরূপে উপস্থাপন করে। এভাবেই তাদের সহচররা বর্তমান ও ভবিষ্যত উভয়কে পাপের পথে প্রতারিত করে। পরলোকে এই সব প্রতারণা তাদের চোখে ভাস্বর হবে। “সম্মুখ ও পশ্চাত” অর্থ ভবিষ্যত ও অতীতের কার্য।
৪৪৯৪। “জ্বিন” সম্পর্কে দেখুন আয়াত [৬ : ১০০ ] ও টিকা ৯২৯। সকল মন্দ ও দুষ্ট আত্মা , অতীতে যারা পাপের নিকট আত্মসমর্পন করেছিলো এবং বর্তমানের লোকেরা , সকলেই সমভাবে শাস্তি ভোগ করবে। এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের যারা পাপের পথ অবলম্বন করবে, তাদেরও ঐ একই পরিণতি।
৪৪৯৫। এই লাইনটি ২৩নং আয়াতের ন্যায়। এখানে যুক্তিকে শেষ করা হয়েছে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে।
আয়াতঃ 041.026
আর কাফেররা বলে, তোমরা এ কোরআন শ্রবণ করো না এবং এর আবৃত্তিতে হঞ্জগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হও।
And those who disbelieve say: ”Listen not to this Qur’ân, and make noise in the midst of its (recitation) that you may overcome.”
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَسْمَعُوا لِهَذَا الْقُرْآنِ وَالْغَوْا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَغْلِبُونَ
Waqala allatheena kafaroo la tasmaAAoo lihatha alqur-ani wailghaw feehi laAAallakum taghliboona
YUSUFALI: The Unbelievers say: “Listen not to this Qur’an, but talk at random in the midst of its (reading), that ye may gain the upper hand!”
PICKTHAL: Those who disbelieve say: Heed not this Qur’an, and drown the hearing of it; haply ye may conquer.
SHAKIR: And those who disbelieve say: Do not listen to this Quran and make noise therein, perhaps you may overcome.
KHALIFA: Those who disbelieved said, “Do not listen to this Quran and distort it, that you may win.”
রুকু – ৪
২৬।অবিশ্বাসীরা বলে, ” এই কুর-আন শ্রবণ করো না ৪৪৯৬। এবং ইহার [ আবৃত্তি কালের ] মাঝে শোরগোলের সৃষ্টি করো ,যেনো তোমাদের প্রাধান্য বজায় থাকে।”
৪৪৯৬। যারা আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে অস্বীকার করে , তাদের একটি প্রধান কূটকৌশল ছিলো যে, তারা কোরাণ আবৃত্তি শুনতো না। শুধু তাই-ই নয় , অন্য কেউ যাতে শুনতে না পারে সে জন্য সে সময়ে তারা উচ্চস্বরে কথা বলতো এবং উদ্ধতভাবে গন্ডগোলের সৃষ্টি করে, যেনো যারা প্রকৃত শ্রোতা তারা কোরাণ আবৃত্তি বুঝতে না পারে। এবং কোরাণ থেকে কোনও শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারে। তারা মনে করতো এভাবে তারা আল্লাহ্র বাণীর মাহত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সক্ষম হবে। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ্র বাণীকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নাই। অপর পক্ষে এসব ব্যক্তিরা নিজের দুঃখ কষ্টের বোঝা নিজেই বৃদ্ধি করে।
মন্তব্য :মাইকে সর্বক্ষণ কোরাণ আবৃত্তির যে রেওয়াজ আমাদের দেশে চালু আছে তা কোরাণের প্রতি অবমাননাকর।
আয়াতঃ 041.027
আমি অবশ্যই কাফেরদেরকে কঠিন আযাব আস্বাদন করাব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে তাদের মন্দ ও হীন কাজের প্রতিফল দেব।
But surely, We shall cause those who disbelieve to taste a severe torment, and certainly, We shall requite them the worst of what they used to do.
فَلَنُذِيقَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا عَذَابًا شَدِيدًا وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَسْوَأَ الَّذِي كَانُوا يَعْمَلُونَ
Falanutheeqanna allatheena kafaroo AAathaban shadeedan walanajziyannahum aswaa allathee kanoo yaAAmaloona
YUSUFALI: But We will certainly give the Unbelievers a taste of a severe Penalty, and We will requite them for the worst of their deeds.
PICKTHAL: But verily We shall cause those who disbelieve to taste an awful doom, and verily We shall requite them the worst of what they used to do.
SHAKIR: Therefore We will most certainly make those who disbelieve taste a severe punishment, and We will most certainly reward them for the evil deeds they used to do.
KHALIFA: We will certainly afflict these disbelievers with a severe retribution. We will certainly requite them for their evil works.
২৭। কিন্তু আমি অবশ্যই অবিশ্বাসীদের কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাব এবং আমি তাদের জঘন্য কাজের প্রতিফল পরিশোধ করবই ৪৪৯৭।
২৮। আগুন ! – এই-ই হবে আল্লাহ্র শত্রুদের জন্য পরিশোধ। সেখানে তাদের জন্য থাকবে অনন্ত কালের আবাস। [ উপযুক্ত ] পরিশোধ , কারণ তারা অভ্যস্ত ছিলো আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখান করতে।
৪৪৯৭। পাপীদের শেষ পরিণাম ভয়াবহ। সেদিন কোন কিছুই তাদের আল্লাহ্র শাস্তি থেকে অব্যহতি দান করতে পারবে না। কারণ পৃথিবীতে তারা আল্লাহ্র নিদর্শনকে প্রত্যাখান করেছিলো , যার পরিণতিতে তাদের জন্য আল্লাহ্র সকল করুণা , দয়া ও অনুগ্রহের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
আয়াতঃ 041.028
এটা আল্লাহর শত্রুদের শাস্তি-জাহান্নাম। তাতে তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করার প্রতিফলস্বরূপ।
That is the recompense of the enemies of Allâh: The Fire, therein will be for them the eternal home, a (deserving) recompense for that they used to deny Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc.).
ذَلِكَ جَزَاء أَعْدَاء اللَّهِ النَّارُ لَهُمْ فِيهَا دَارُ الْخُلْدِ جَزَاء بِمَا كَانُوا بِآيَاتِنَا يَجْحَدُونَ
Thalika jazao aAAda-i Allahi alnnaru lahum feeha daru alkhuldi jazaan bima kanoo bi-ayatina yajhadoona
YUSUFALI: Such is the requital of the enemies of Allah,- the Fire: therein will be for them the Eternal Home: a (fit) requital, for that they were wont to reject Our Signs.
PICKTHAL: That is the reward of Allah’s enemies: the Fire. Therein is their immortal home, payment forasmuch as they denied Our revelations.
SHAKIR: That is the reward of the enemies of Allah– the fire; for them therein shall be the house of long abiding; a reward for their denying Our communications.
KHALIFA: Such is the requital that awaits GOD’s enemies. Hell will be their eternal abode; a just requital for discarding our revelations.
২৭। কিন্তু আমি অবশ্যই অবিশ্বাসীদের কঠিন শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাব এবং আমি তাদের জঘন্য কাজের প্রতিফল পরিশোধ করবই ৪৪৯৭।
২৮। আগুন ! – এই-ই হবে আল্লাহ্র শত্রুদের জন্য পরিশোধ। সেখানে তাদের জন্য থাকবে অনন্ত কালের আবাস। [ উপযুক্ত ] পরিশোধ , কারণ তারা অভ্যস্ত ছিলো আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখান করতে।
৪৪৯৭। পাপীদের শেষ পরিণাম ভয়াবহ। সেদিন কোন কিছুই তাদের আল্লাহ্র শাস্তি থেকে অব্যহতি দান করতে পারবে না। কারণ পৃথিবীতে তারা আল্লাহ্র নিদর্শনকে প্রত্যাখান করেছিলো , যার পরিণতিতে তাদের জন্য আল্লাহ্র সকল করুণা , দয়া ও অনুগ্রহের পথ বন্ধ হয়ে যায়।
আয়াতঃ 041.029
কাফেররা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! যেসব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, তাদেরকে দেখিয়ে দাও, আমরা তাদেরকে পদদলিত করব, যাতে তারা যথেষ্ট অপমানিত হয়।
And those who disbelieve will say: ”Our Lord! Show us those among jinns and men who led us astray, we shall crush them under our feet, so that they become the lowest.”
وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا رَبَّنَا أَرِنَا الَّذَيْنِ أَضَلَّانَا مِنَ الْجِنِّ وَالْإِنسِ نَجْعَلْهُمَا تَحْتَ أَقْدَامِنَا لِيَكُونَا مِنَ الْأَسْفَلِينَ
Waqala allatheena kafaroo rabbana arina allathayni adallana mina aljinni waal-insi najAAalhuma tahta aqdamina liyakoona mina al-asfaleena
YUSUFALI: And the Unbelievers will say: “Our Lord! Show us those, among Jinns and men, who misled us: We shall crush them beneath our feet, so that they become the vilest (before all).”
PICKTHAL: And those who disbelieve will say: Our Lord! Show us those who beguiled us of the jinn and humankind. We will place them underneath our feet that they may be among the nethermost.
SHAKIR: And those who disbelieve will say: Our Lord! show us those who led us astray from among the jinn and the men that we may trample them under our feet so that they may be of the lowest.
KHALIFA: Those who disbelieved will say, “Our Lord, show us those among the two kinds – jinns and humans – who misled us, so we can trample them under our feet, and render them the lowliest.”
২৯। এবং অবিশ্বাসীরা বলবে, ” হে আমাদের প্রভু ! জ্বিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিলো ,তাদেরকে আমাদের দেখাও। আমরা তাদের আমাদের পায়ের তলায় পিষে ফেলবো। যেনো তারা [সকলের সম্মুখে ] নীচতমদের অন্তর্ভূক্ত হয়।” ৪৪৯৮
৪৪৯৮। দুষ্ট ও পাপীদের চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্যকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। দুষ্ট ও পাপীরা যখন দুঃখ বিপর্যয়ে নিপতিত হয়, তখন তার মনে উদগ্র আকাঙ্খা থাকে অপরেও তাদের পর্যায়ে নিপতিত হোক।অন্যের অবমাননা ও অপমান তাদের চিত্তকে উৎফুল্ল করে। মন্দ ও দুষ্ট লোকদের মানসিক এই প্রতিক্রিয়া যে, শুধুমাত্র পরলোকেই ঘটবে তাই নয়, তাদের মানসিকএই প্রতিক্রিয়া ইহলোকেও সমভাবে বিদ্যমান। এ সব মন্দ লোক পৃথিবীতে সাধারণতঃ খুবই পরশ্রীকাতর হয়। অপরপক্ষে , যারা ভালো লোক , পূণ্যাত্মা লোক, তারা অন্যকে সাহায্য করে আনন্দ লাভ করে এবং অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারলে তারা সুখী হন। দেখুন আয়াত [ ৬ : ১১২ – ১১৩ ]।
আয়াতঃ 041.030
নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন।
Verily, those who say: ”Our Lord is Allâh (Alone),” and then they Istaqâmû , on them the angels will descend (at the time of their death) (saying): ”Fear not, nor grieve! But receive the glad tidings of Paradise which you have been promised!
إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
Inna allatheena qaloo rabbuna Allahu thumma istaqamoo tatanazzalu AAalayhimu almala-ikatu alla takhafoo wala tahzanoo waabshiroo bialjannati allatee kuntum tooAAadoona
YUSUFALI: In the case of those who say, “Our Lord is Allah”, and, further, stand straight and steadfast, the angels descend on them (from time to time): “Fear ye not!” (they suggest), “Nor grieve! but receive the Glad Tidings of the Garden (of Bliss), the which ye were promised!
PICKTHAL: Lo! those who say: Our Lord is Allah, and afterward are upright, the angels descend upon them, saying: Fear not nor grieve, but hear good tidings of the paradise which ye are promised.
SHAKIR: (As for) those who say: Our Lord is Allah, then continue in the right way, the angels descend upon them, saying: Fear not, nor be grieved, and receive good news of the garden which you were promised.
KHALIFA: Those who proclaim: “Our Lord is GOD,” then lead a righteous life, the angels descend upon them: “You shall have no fear, nor shall you grieve. Rejoice in the good news that Paradise has been reserved for you.
৩০।এ ক্ষেত্রে যারা বলে, ” আমাদের প্রভু আল্লাহ্ ” , এবং উপরন্তু ৪৪৯৯ [তাতেই ] স্থির ও অবিচল থাকে, তাদের নিকট [ সময়ে সময়ে ] ফেরেশতারা অবতীর্ণ হয়। [ তারা বলে ] , ” তোমরা ভীত হয়ো না ,দুঃখিত হয়ো না। বরং সুসংবাদ গ্রহণ কর সে [ শান্তির ] বেহেশতের যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হয়েছে।
৪৪৯৯। যারা পরলোকের অনন্ত জীবনে সাফল্য লাভে আগ্রহী , তারা এই শ্বাসত সত্যকে হৃদয়ঙ্গম করে যে আল্লাহ্-ই একমাত্র চিরন্তন সত্য। সুতারাং তারা তাদের পৃথিবীর শিক্ষানবীশ কালকে দৃঢ়তার সাথে ও অধ্যবসায়ের সাথে আল্লাহ্র আইনকে তাদের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করে। এরাই মোমেন ব্যক্তি। এদের সম্বন্ধে এই আয়াতে সুসংবাদ দান করা হয়েছে।মোমেন ব্যক্তিদের সাথে থাকবে ফেরেশতা যারা তাদের বন্ধুরূপে রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। চিত্রটি পাপীদের চিত্রের ঠিক বিপরীত।পাপীরা সেদিন শয়তানের ভর্ৎসনা ব্যতীত আর কোন সাহায্যকারী বন্ধু বা রক্ষাকারী লাভ করবে না।
আয়াতঃ 041.031
ইহকালে ও পরকালে আমরা তোমাদের বন্ধু। সেখানে তোমাদের জন্য আছে যা তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্যে আছে তোমরা দাবী কর।
”We have been your friends in the life of this world and are (so) in the Hereafter. Therein you shall have (all) that your inner-selves desire, and therein you shall have (all) for which you ask for.
نَحْنُ أَوْلِيَاؤُكُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَشْتَهِي أَنفُسُكُمْ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَدَّعُونَ
Nahnu awliyaokum fee alhayati alddunya wafee al-akhirati walakum feeha ma tashtahee anfusukum walakum feeha ma taddaAAoona
YUSUFALI: “We are your protectors in this life and in the Hereafter: therein shall ye have all that your souls shall desire; therein shall ye have all that ye ask for!-
PICKTHAL: We are your protecting friends in the life of the world and in the Hereafter. There ye will have (all) that your souls desire, and there ye will have (all) for which ye pray.
SHAKIR: We are your guardians in this world’s life and in the hereafter, and you shall have therein what your souls desire and you shall have therein what you ask for:
KHALIFA: “We are your allies in this life, and in the Hereafter. You will have in it anything you wish for; you will have anything you want.
৩১। ” আমরা ইহ্ জীবনে তোমাদের বন্ধু এবং পরলোকেও ৪৫০০। সেখানে তোমাদের প্রাণ যা চায় তার সব কিছু তোমরা পাবে ৪৫০১।তোমরা যা কিছুর জন্য বলবে সেখানে তার সব কিছু পাবে।
৪৫০০। ‘বন্ধু’ – দেখুন আয়াত নং [ ৪১ : ২৫ ] যেখানে “সহচর” শব্দটি বলা হয়েছে ও টিকা ৪৪৯২। আরও দেখুন নীচের আয়াত [ ৪১ : ৩৪ ] ও টিকা ৪৫০৫।
৪৫০১। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ২১ : ১০২ ] ; [ ৪৩ : ৭১ ] ; [ ৫২ : ২২ ]।
আয়াতঃ 041.032
এটা ক্ষমাশীল করুনাময়ের পক্ষ থেকে সাদর আপ্যায়ন।
”An entertainment from (Allâh), the Oft-Forgiving, Most Merciful.”
نُزُلًا مِّنْ غَفُورٍ رَّحِيمٍ
Nuzulan min ghafoorin raheemin
YUSUFALI: “A hospitable gift from one Oft-Forgiving, Most Merciful!”
PICKTHAL: A gift of welcome from One Forgiving, Merciful.
SHAKIR: A provision from the Forgiving, the Merciful.
KHALIFA: “(Such is your) ultimate abode, from a Forgiver, Most Merciful.”
৩২। “বারে বারে ক্ষমাশীল , পরম করুণাময় আল্লাহ্র নিকট থেকে এটা হচ্ছে আতিথেয়তা ৪৫০২।”
৪৫০২। দেখুন আয়াত [ ৩ : ১৯৮ ]। আল্লাহ্র অসীম করুণা ও অনুগ্রহের ফলে মোমেন বান্দারা আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করবে। পরলোকে তাদেরই অবস্থান এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্র পক্ষ থেকে তাদের সম্মানীয় অতিথিরূপে আপ্যায়ন করা হবে।
আয়াতঃ 041.033
যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?
And who is better in speech than he who [says: ”My Lord is Allâh (believes in His Oneness),” and then stands straight (acts upon His Order), and] invites (men) to Allâh’s (Islâmic Monotheism), and does righteous deeds, and says: ”I am one of the Muslims.”
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
Waman ahsanu qawlan mimman daAAa ila Allahi waAAamila salihan waqala innanee mina almuslimeena
YUSUFALI: Who is better in speech than one who calls (men) to Allah, works righteousness, and says, “I am of those who bow in Islam”?
PICKTHAL: And who is better in speech than him who prayeth unto his Lord and doeth right, and saith: Lo! I am of those who are muslims (surrender unto Him).
SHAKIR: And who speaks better than he who calls to Allah while he himself does good, and says: I am surely of those who submit?
KHALIFA: Who can utter better words than one who invites to GOD, works righteousness, and says, “I am one of the submitters”?
রুকু – ৫
৩৩। কথায় তার থেকে কে বেশী উত্তম যে [লোকদের ] আল্লাহ্র দিকে ডাকে , সৎ কাজ করে এবং বলে , “যারা ইসলামে আত্মসমর্পন করে আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত।” ৪৫০৩
৪৫০৩। এখানে আয়াটিতে পূণ্যাত্মা রাসুলের [ সা ] জীবনাদর্শের প্রতি সাধারণ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে। রাসুলের [ সা ]জীবনের তিনটি প্রধান দিককে বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
১) তিনি আল্লাহ্র সত্যের প্রতি মানুষকে আহ্বান করেন। তাঁর চিন্তা ও বাক্য মানুষের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য নিয়োজিত এই সত্যকেই তাঁর প্রচারিত বাণীতে প্রকাশ পায়।
২) তাঁর জীবন, কর্ম, সবই সৎকর্ম , মানুষের সেবায় নিয়োজিত। এই তথ্য এ কথাই প্রমাণ করে যে, তাঁর কথা ও কাজের মধ্যে কোনও ব্যবধান নাই।
৩) তিনি সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পিত ছিলেন। উপরের তিনটি বিশেষণের মাধ্যমে রাসুলের [সা] জীবনকে চিত্রিত করা হয়েছে, যা ছিলো ইসলামের মূর্ত প্রকাশ। যে প্রকাশ হচ্ছে মানুষের অনুধাবন ক্ষমতার সর্বোচ্চ অনুভূতি।
উপদেশ : সাধারণ মানুষ তাদের জীবনে এই সর্বোচ্চ অনুভূত প্রকাশের জন্য চেষ্টা করে যাবে।
আয়াতঃ 041.034
সমান নয় ভাল ও মন্দ। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু।
The good deed and the evil deed cannot be equal. Repel (the evil) with one which is better (i.e. Allâh ordered the faithful believers to be patient at the time of anger, and to excuse those who treat them badly), then verily! he, between whom and you there was enmity, (will become) as though he was a close friend.
وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ
Wala tastawee alhasanatu wala alssayyi-atu idfaAA biallatee hiya ahsanu fa-itha allathee baynaka wabaynahu AAadawatun kaannahu waliyyun hameemun
YUSUFALI: Nor can goodness and Evil be equal. Repel (Evil) with what is better: Then will he between whom and thee was hatred become as it were thy friend and intimate!
PICKTHAL: The good deed and the evil deed are not alike. Repel the evil deed with one which is better, then lo! he, between whom and thee there was enmity (will become) as though he was a bosom friend.
SHAKIR: And not alike are the good and the evil. Repel (evil) with what is best, when lo! he between whom and you was enmity would be as if he were a warm friend.
KHALIFA: Not equal is the good response and the bad response. You shall resort to the nicest possible response. Thus, the one who used to be your enemy, may become your best friend.
৩৪। ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না ৪৫০৪। মন্দকে প্রতিহত কর ভালোর দ্বারা। তাহলে যার সাথে তোমার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে বন্ধু এবং অন্তরঙ্গ ৪৫০৫।
৪৫০৪। ভালো মন্দের মধ্যে কোনও তুলনা হতে পারে না। কারণ দুটি বস্তুর মধ্যে তুলনা তখনই হয়, যখন তাদের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে। ভালো ও মন্দ দুটির অবস্থান দুই মেরুতে। মন্দকে ভালে দ্বারা প্রতিহত করতে বলা হয়েছে ; তা হবে অতি উত্তম যেমন উত্তম হচ্ছে বিষের প্রতিষেধক দ্রব্য উত্তম বিষের থেকে। ভালো দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করার ফলে , বিদ্বেষ ভালোবাসাতে রূপান্তরিত হবে। শত্রু হয়ে যাবে বন্ধু। জ্ঞান দ্বারা অজ্ঞানতাকে দূর করতে, দুষ্ট ও পাপীকে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ দ্বারা সংশোধন করতে বলা হয়েছে।যে মানুষ পাপের দাসত্বে আবদ্ধ তাকে সেই দাসত্ব থেকে মুক্ত করলে সে রূপান্তরিত হবে সর্বশ্রেষ্ট বন্ধু রূপে। আল্লাহ্র রাস্তায় সে হবে শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী। এভাবেই আল্লাহ্র বাণীর মাহত্ব্য যুগে যুগে মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন ঘটায়।
৪৫০৫। ‘হা-মিম’দেখুন ৪০নং সূরাটির ভূমিকা।
আয়াতঃ 041.035
এ চরিত্র তারাই লাভ করে, যারা সবর করে এবং এ চরিত্রের অধিকারী তারাই হয়, যারা অত্যন্ত ভাগ্যবান।
But none is granted it (the above quality) except those who are patient, and none is granted it except the owner of the great portion (of the happiness in the Hereafter i.e. Paradise and in this world of a high moral character).
وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا الَّذِينَ صَبَرُوا وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا ذُو حَظٍّ عَظِيمٍ
Wama yulaqqaha illa allatheena sabaroo wama yulaqqaha illa thoo haththin AAatheemin
YUSUFALI: And no one will be granted such goodness except those who exercise patience and self-restraint,- none but persons of the greatest good fortune.
PICKTHAL: But none is granted it save those who are steadfast, and none is granted it save the owner of great happiness.
SHAKIR: And none are made to receive it but those who are patient, and none are made to receive it but those who have a mighty good fortune.
KHALIFA: None can attain this except those who steadfastly persevere. None can attain this except those who are extremely fortunate.
৩৫। এই গুণের অধিকারী শুধু তাদেরই করা হয় যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং আত্মসংযম প্রদর্শন করে ৪৫০৬ , শুধু মহাভাগ্যবান ব্যক্তিগণের ভাগ্যেই ইহা ঘটে থাকে।
৪৫০৬। উপরের আয়াত সমূহে যে নৈতিক গুণের বর্ণনা করা হয়েছে ,তা যারা আয়ত্ব করবেন তাদের বৈশিষ্ট্য এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। এ সব নৈতিক গুণাবলী তারাই অজর্ন করবেন যারা হবেন ধৈর্যশীল ও আত্মসংযমী। অর্থাৎ ধৈর্য ও আত্মসংযম গুণ দুটি পূণ্যাত্মা ব্যক্তিদিগের চরিত্রের মাইলফলক। মানুষের সকল চারিত্রিক দুর্বলতা, জ্ঞানের আবরণে মিথ্যা জ্ঞান, আত্ম সম্মানের আবরণে আত্মগরিমা, মানুষের আত্মোপলব্ধি ও আধ্যাত্মিক বিকাশের বাধাস্বরূপ। এগুলি হচ্ছে শয়তানের পরামর্শ স্বরূপ [ দেখুন পরের আয়াত ]। আল্লাহ্র সাহায্যে এগুলিকে প্রতিহত করতে হবে। যদি কেউ আধ্যাত্মিক জগতে আল্লাহ্ নির্ধারিত এই মানদন্ডে পৌঁছাতে সক্ষম হয়, তবে সে মহাভাগ্যবান ব্যক্তি। আধ্যাত্মিক জগতে সে মুক্তি লাভ করবে।আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ তার আধ্যাত্মিক জগতকে আলোকিত করবে।
আয়াতঃ 041.036
যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
And if an evil whisper from Shaitân (Satan) tries to turn you away (O Muhammad SAW) (from doing good, etc.), then seek refuge in Allâh. Verily, He is the All-Hearer, the All-Knower.
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
Wa-imma yanzaghannaka mina alshshaytani nazghun faistaAAith biAllahi innahu huwa alssameeAAu alAAaleemu
YUSUFALI: And if (at any time) an incitement to discord is made to thee by the Evil One, seek refuge in Allah. He is the One Who hears and knows all things.
PICKTHAL: And if a whisper from the devil reach thee (O Muhammad) then seek refuge in Allah. Lo! He is the Hearer, the Knower.
SHAKIR: And if an interference of the Shaitan should cause you mischief, seek refuge in Allah; surely He is the Hearing, the Knowing.
KHALIFA: When the devil whispers an idea to you, you shall seek refuge in GOD. He is the Hearer, the Omniscient.
৩৬। যদি [ কখনও ] শয়তান তোমাকে কুমন্ত্রণায় উত্তেজিত করে, ৪৫০৭ , তবে আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করবে। একমাত্র তিনিই সব কিছু শোনেন ও জানেন।
৪৫০৭। “Nazaga” এই শব্দটির ধারণা হচ্ছে বিবাদ বা বিদ্বেষ , সমন্বয়হীনতা ইত্যাদি। যখন হিংসা , বিবাদ, বিদ্বেষ , আত্মাকে দহন করে – এসবের ফলে যখন আত্মার মাঝে অশান্তি বিরাজ করে – এসবের ফলে যখন আত্মার সুস্থতা নষ্ট হয়ে যায় , বলা হয়েছে এসবই শয়তানের প্ররোচনা। মানসিক এরূপ অবস্থাতে আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করতে বলা হয়েছে।
আয়াতঃ 041.037
তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে দিবস, রজনী, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না; আল্লাহকে সেজদা কর, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তাঁরই এবাদত কর।
And from among His Signs are the night and the day, and the sun and the moon. Prostrate not to the sun nor to the moon, but prostrate to Allâh Who created them, if you (really) worship Him.
وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لَا تَسْجُدُوا لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوا لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
Wamin ayatihi allaylu waalnnaharu waalshshamsu waalqamaru la tasjudoo lilshshamsi wala lilqamari waosjudoo lillahi alathee khalaqahunna in kuntum iyyahu taAAbudoona
YUSUFALI: Among His Signs are the Night and the Day, and the Sun and the Moon. Do not prostrate to the sun and the moon, but prostrate to Allah, Who created them, if it is Him ye wish to serve.
PICKTHAL: And of His portents are the night and the day and the sun and the moon. Do not prostrate to the sun or the moon; but prostrate to Allah Who created them, if it is in truth Him Whom ye worship.
SHAKIR: And among His signs are the night and the day and the sun and the moon; do not prostrate to the sun nor to the moon; and prostrate to Allah Who created them, if Him it is that you serve.
KHALIFA: Among His proofs are the night and the day, and the sun and the moon. Do not prostrate before the sun, nor the moon; you shall fall prostrate before the GOD who created them, if you truly worship Him alone.
৩৭। তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র ৪৫০৮। সূর্যকে পূঁজা করো না , চন্দ্রকেও না[ বরং ] সিজ্দা কর আল্লাহকে, যিনি তাদের সৃষ্টি করেছেন , যদি তোমরা প্রকৃতই তার এবাদত করতে ইচ্ছা কর।
৪৫০৮। রাত্রি ও দিন একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত। তবুও আল্লাহ্র সৃষ্টি রহস্যের এ এক অপূর্ব সৃষ্টি। বিপরীত হওয়া সত্বেও রাত্রি ও দিন সমভাবে মানুষের মঙ্গল সাধন করে থাকে। রাত্রি মানুষের সারাদিনের ক্লান্তি বিনোদনের জন্য সৃষ্টি ; দিন মানুষের কর্মক্ষেত্র।রাত্রির বিশ্রাম ব্যতীত দিনের কর্মক্ষেত্রে আত্মনিয়োগ সম্ভব নয়, আবার দিনের কর্ম ব্যতীত নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায় নিশীতের বিশ্রাম অসম্ভব। সুতারাং দিন ও রাত্রি মানুষের জীবনে পরস্পর পরস্পরের সম্পূরক। ঠিক সেই একই ভাবে চন্দ্র ও সূর্য মানুষের জীবন ক্ষেত্রে একে অপরের সম্পূরক। মানুষের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনেও ঠিক সেই একইভাবে পরস্পর বিরোধী ঘটনার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ; আল্লাহ্র সৃষ্টি নৈপুন্য ও বিচক্ষণতার সূদূর প্রসারী প্রভাবে যার শেষ পরিণতি সুফল বয়ে আনে। এগুলি সবই আল্লাহ্র পরিকল্পনা কার্যকর করার বাহকমাত্র। সব কিছুর মূল চালিকা শক্তি ও কারণ হচ্ছেন আল্লাহ্। সুতারাং আল্লাহ্কে পরিত্যাগ করে আল্লাহ্র সৃষ্ট পদার্থের উপাসনা যেনো কেউ না করে – মনে রাখতে হবে আল্লাহ্ সব কিছুর স্রষ্টা। এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে আল্লাহ্র সৃষ্ট পদার্থের গুণাগুণ থেকে তা ব্যবহারের মাধ্যমে পার্থিব ও পারলৌকিক জীবনের কল্যাণ সাধন কর , কিন্তু তার উপাসনা করো না। আল্লাহ্র একত্বের ধারণা হৃদয়ে ধারণ করাই হচ্ছে প্রকৃত পূণ্যাত্মার লক্ষণ।
আয়াতঃ 041.038
অতঃপর তারা যদি অহংকার করে, তবে যারা আপনার পালনকর্তার কাছে আছে, তারা দিবারাত্রি তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্ত হয় না।
But if they are too proud (to do so), then there are those who are with your Lord (angels) glorify Him night and day, and never are they tired.
فَإِنِ اسْتَكْبَرُوا فَالَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ يُسَبِّحُونَ لَهُ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُمْ لَا يَسْأَمُونَ
Fa-ini istakbaroo faallatheena AAinda rabbika yusabbihoona lahu biallayli waalnnahari wahum la yas-amoona
YUSUFALI: But is the (Unbelievers) are arrogant, (no matter): for in the presence of thy Lord are those who celebrate His praises by night and by day. And they never flag (nor feel themselves above it).
PICKTHAL: But if they are too proud – still those who are with thy Lord glorify Him night and day, and tire not.
SHAKIR: But if they are proud, yet those with your Lord glorify Him during the night and the day, and they are not tired.
KHALIFA: If they are too arrogant to do this, then those at your Lord glorify Him night and day, without ever tiring.
৩৮। কিন্তু যদি [ অবিশ্বাসীরা ] উদ্ধত হয় [ তাতে কিছু যায় আসে না ] ৪৫০৯ যারা তোমার প্রভুর সান্নিধ্যে রয়েছে তারা তো দিবসে ও রজনীতে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমাঘোষণা করে। এবং তারা ক্লান্তি বোধ করে না।
৪৫০৯। যদি কেউ পার্থিব সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তির দম্ভে আল্লাহ্কে প্রত্যাখান করে ,তবে তা আল্লাহ্র কোন ক্ষতি করতে পারে না। কারণ যে আল্লাহকে প্রত্যাখান করে তার আধ্যাত্মিক জগতের সকল দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। আল্লাহ্র সাথে যোগাযোগের ও আল্লাহ্র রহমতে প্রবেশের সকল দুয়ার বন্ধ হওয়ার ফলে তার আধ্যাত্মিক জগতে ঘন অন্ধকারের ব্যপ্তি ঘটে। আধ্যাত্মিক জগতের অবস্থানের জন্যই মানুষ পশু থেকে উন্নত। আত্মা হচ্ছে আল্লাহ্র রূহুর অংশ। আল্লাহ্র অনুগ্রহের দ্বারা সে সরাসরি আল্লাহ্র রহমতে সিক্ত হয়ে আল্লাহ্র নূরে আলোকিত হয়। আল্লাহ্র নূরে আলোকিত আত্মা হয় বিবেকসম্পন্ন , বিচক্ষণ ও ন্যায়বান। যদি কেউ আত্মার মাঝে আল্লাহ্র নূর প্রবেশে বাধা দান করে তবে সে নিজেই নিজের ক্ষতিসাধন করে। আল্লাহ্র মাহত্ম্য এই বিশ্ব প্রকৃতিতে ফেরেশতারা দিবারাত্র ঘোষণা করছে; সেই সাথে যারা পূণ্যাত্মা তারাও যোগদান করে। তাদের নিকট আল্লাহ্র যিকির অত্যন্ত আনন্দদায়ক ; কারণ তারা আল্লাহ্র নূরের আলোকে বিধৌত হয়ে সত্যকে আলিঙ্গনের আনন্দে বিভোর থাকে।
আয়াতঃ 041.039
তাঁর এক নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখবে অনুর্বর পড়ে আছে। অতঃপর আমি যখন তার উপর বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন সে শস্যশ্যামল ও স্ফীত হয়। নিশ্চয় যিনি একে জীবিত করেন, তিনি জীবিত করবেন মৃতদেরকেও। নিশ্চয় তিনি সবকিছু করতে সক্ষম।
And among His Signs (in this), that you see the earth barren, but when We send down water (rain) to it, it is stirred to life and growth (of vegetations). Verily, He Who gives it life, surely, (He) is Able to give life to the dead (on the Day of Resurrection). Indeed! He is Able to do all things.
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنَّكَ تَرَى الْأَرْضَ خَاشِعَةً فَإِذَا أَنزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاء اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ إِنَّ الَّذِي أَحْيَاهَا لَمُحْيِي الْمَوْتَى إِنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
Wamin ayatihi annaka tara al-arda khashiAAatan fa-itha anzalna AAalayha almaa ihtazzat warabat inna allathee ahyaha lamuhyee almawta innahu AAala kulli shay-in qadeerun
YUSUFALI: And among His Signs in this: thou seest the earth barren and desolate; but when We send down rain to it, it is stirred to life and yields increase. Truly, He Who gives life to the (dead) earth can surely give life to (men) who are dead. For He has power over all things.
PICKTHAL: And of His portents (is this): that thou seest the earth lowly, but when We send down water thereon it thrilleth and groweth. Lo! He Who quickeneth it is verily the Quickener of the Dead. Lo! He is Able to do all things.
SHAKIR: And among His signs is this, that you see the earth still, but when We send down on it the water, it stirs and swells: most surely He Who gives it life is the Giver of life to the dead; surely He has power over all things.
KHALIFA: Among His proofs is that you see the land still, then, as soon as we shower it with water, it vibrates with life. Surely, the One who revived it can revive the dead. He is Omnipotent.
৩৯। তাঁর নিদর্শন সমূহের মধ্যে আর একটি এই যে, তুমি ভূমিকে বন্ধ্যা এবং প্রাণশূন্য দেখতে পাও ৪৫১০। কিন্তু যখন আমি বৃষ্টি প্রেরণ করি , উহা জীবন-স্পন্দনে আন্দোলিত হয় এবং উৎপাদনসমূহ বৃদ্ধি করে। যিনি [ মৃত ] ভূমিকে জীবন দান করতে পারেন তিনি অবশ্যই মৃত [ মানুষকে ] জীবন দান করতে পারেন। নিশ্চয়ই তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী ৪৫১১।
৪৫১০। অপূর্ব সুন্দর উপমার সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের অবস্থানকে।পাপে আসক্ত আত্মা হচ্ছে শুষ্ক মাটির ন্যায়। যে মাটি খরার কবলে আক্রান্ত ; বৃষ্টি অভাবে, ছায়াহীন মাটি প্রখর রৌদ্রলোকে বৃক্ষতরুলতা শূন্য হয়ে মরুভূমির ন্যায় রূপ ধারণ করে। যে আত্মা পাপে আসক্ত , সে আত্মা আল্লাহ্র অনুগ্রহ শূন্য হওয়ার ফলে ঐ মাটির ন্যায় রূপ ধারণ করে। মাটি হয় মরুভূমি সদৃশ্য,
বৃক্ষ তরুলতাশূন্য ; আত্মা হয় গুণরাজিশূন্য পশু প্রবৃত্তিতে পরিপূর্ণ। মানব জীবনের সৌন্দর্য বঞ্চিত এবং মনুষ্য জীবনের স্বার্থকতাহীন জীবন তারা যাপন করে। যারা আল্লাহ্র হেদায়েতের আলোতে ধন্য , যারা আল্লাহ্র রাস্তায় জীবন যাপন করেন, যারা মন্দকে ভালো দ্বারা প্রতিহত করেন, তাদের সাথে এই সব পাপে আসক্ত পশু প্রবৃত্তির লোকের পার্থক্য বাহ্যিক ভাবেই দৃষ্টিগোচর হয়। এসব লোকের আত্মা মৃত, ফলে তা ঘৃণা ও বিদ্বেষে পূর্ণ থাকে। বারিবর্ষণে যেরূপ মরুভূমি সদৃশ্য ভূমি উর্বরতা লাভ করে সজীব শষ্য শ্যামল রূপ ধারণ করে, ঠিক সেরূপ এ সব মৃত আত্মাও আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের আলোতে জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশে সক্ষম হয়। স্রষ্টার মানুষ সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্যকে সফল করতে সক্ষম হয়।
৪৫১১। আল্লাহ্র বাণীর শক্তি সম্বন্ধে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নাই। ইহলোকে অথবা পরলোকে আল্লাহ্র ক্ষমতা সমভাবে বিদ্যমান।
আয়াতঃ 041.040
নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহের ব্যাপারে বক্রতা অবলম্বন করে, তারা আমার কাছে গোপন নয়। যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে শ্রেষ্ঠ, না যে কেয়ামতের দিন নিরাপদে আসবে? তোমরা যা ইচ্ছা কর, নিশ্চয় তিনি দেখেন যা তোমরা কর।
Verily, those who turn away from Our Ayât (proofs, evidences, verses, lessons, signs, revelations, etc. by attacking, distorting and denying them), are not hidden from Us. Is he who is cast into the Fire better or he who comes secure on the Day of Resurrection? Do what you will. Verily! He is All-Seer of what you do (this is a severe threat to the disbelievers).
إِنَّ الَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِي آيَاتِنَا لَا يَخْفَوْنَ عَلَيْنَا أَفَمَن يُلْقَى فِي النَّارِ خَيْرٌ أَم مَّن يَأْتِي آمِنًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
Inna allatheena yulhidoona fee ayatina la yakhfawna AAalayna afaman yulqa fee alnnari khayrun amman ya/tee aminan yawma alqiyamati iAAmaloo ma shi/tum innahu bima taAAmaloona baseerun
YUSUFALI: Those who pervert the Truth in Our Signs are not hidden from Us. Which is better?- he that is cast into the Fire, or he that comes safe through, on the Day of Judgment? Do what ye will: verily He seeth (clearly) all that ye do.
PICKTHAL: Lo! those who distort Our revelations are not hid from Us. Is he who is hurled into the Fire better, or he who cometh secure on the Day of Resurrection? Do what ye will. Lo! He is Seer of what ye do.
SHAKIR: Surely they who deviate from the right way concerning Our communications are not hidden from Us. What! is he then who is cast into the fire better, or he who comes safe on the day of resurrection? Do what you like, surely He sees what you do.
KHALIFA: Surely, those who distort our revelations are not hidden from us. Is one who gets thrown into Hell better, or one who comes secure on the Day of Resurrection? Do whatever you wish; He is Seer of everything you do.
৪০।যারা আমার আয়াতসমূহের সত্যকে বিকৃত করে ৪৫১২ তারা আমার অগোচরে থাকে না। শ্রেষ্ঠ কে ? – যাকে আগুনে নিক্ষিপ্ত করা হবে সে , না যে শেষ বিচারের দিনে নিরাপদে থাকবে ? তোমাদের যা খুশী কর। তোমারা যা কর তিনি অবশ্যই তা দেখছেন।
৪৫১২। “যারা আমার আয়াতসমূহ বিকৃত করে ” – এই বিকৃতি বিভিন্ন ভাবে হতে পারে যেমন : অনেকে আল্লাহ্র কিতাবকে বিকৃত করে অথবা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য আয়াতসমূহের অর্থকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করে ও উপস্থাপন করে। অথবা এরা তাদের চারিদিকে প্রকৃতির মাঝে আল্লাহ্র যে সব নিদর্শন বিদ্যমান তা তারা অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখান করে, অথবা তারা তাদের বিবেকের মাঝে ধ্বনিত আল্লাহ্র বাণীকে স্তব্ধ করে দেয়। অর্থাৎ বিশ্বপ্রকৃতিতে সত্য, সুন্দর ,ন্যায় ও সত্যের মাঝে আল্লাহ্র যে বাণী অনুরণিত হয় তা তারা অবজ্ঞা করে। মানুষ যে ভাবেই আল্লাহ্র মাহাত্ম্যকে অস্বীকার করুক না কেন আল্লাহ্র নিকট তা জ্ঞাত। সুতারাংএই সত্যকে জানার পরেও নির্বোধ মানুষ কেন ইহলোকে ও পরলোকে আত্মার মুক্তির জন্য চেষ্টা করে না ?
আয়াতঃ 041.041
নিশ্চয় যারা কোরআন আসার পর তা অস্বীকার করে, তাদের মধ্যে চিন্তা-ভাবনার অভাব রয়েছে। এটা অবশ্যই এক সম্মানিত গ্রন্থ।
Verily, those who disbelieved in the Reminder (i.e. the Qur’ân) when it came to them (shall receive the punishment). And verily, it is an honourable respected Book (because it is Allâh’s Speech, and He has protected it from corruption, etc.). (See V.15:9]
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالذِّكْرِ لَمَّا جَاءهُمْ وَإِنَّهُ لَكِتَابٌ عَزِيزٌ
Inna allatheena kafaroo bialththikri lamma jaahum wa-innahu lakitabun AAazeezun
YUSUFALI: Those who reject the Message when it comes to them (are not hidden from Us). And indeed it is a Book of exalted power.
PICKTHAL: Lo! those who disbelieve in the Reminder when it cometh unto them (are guilty), for lo! it is an unassailable Scripture.
SHAKIR: Surely those who disbelieve in the reminder when it comes to them, and most surely it is a Mighty Book:
KHALIFA: Those who have rejected the Quran’s proof when it came to them, have also rejected an Honorable book.
৪১। যারা আমার[ কুর-আনের ] উপদেশ পাওয়ার পরও তা প্রত্যাখান করে ৪৫১৩ , [ তারা আমার অগোচরে নাই ]। অবশ্যই ইহা এক মর্যাদাপূর্ণ ক্ষমতাবানগ্রন্থ।
৪৫১৩। মানুষের প্রত্যাখান আল্লাহ্র বাণী স্তব্ধ করতে অক্ষম। আল্লাহ্র পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবেই।
আয়াতঃ 041.042
এতে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
Falsehood cannot come to it from before it or behind it (it is) sent down by the All-Wise, Worthy of all praise (Allâh ÚÒ æ Ìá).
لَا يَأْتِيهِ الْبَاطِلُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
La ya/teehi albatilu min bayni yadayhi wala min khalfihi tanzeelun min hakeemin hameedin
YUSUFALI: No falsehood can approach it from before or behind it: It is sent down by One Full of Wisdom, Worthy of all Praise.
PICKTHAL: Falsehood cannot come at it from before it or from behind it. (It is) a revelation from the Wise, the Owner of Praise.
SHAKIR: Falsehood shall not come to it from before it nor from behind it; a revelation from the Wise, the Praised One.
KHALIFA: No falsehood could enter it, in the past or in the future; a revelation from a Most Wise, Praiseworthy.
৪২। কোন মিথ্যা ইহাতে প্রবেশ করতে পারে না , – অগ্র হতেও না , পশ্চাত হতেও না ৪৫১৪। কারণ ইহা প্রেরণ করা হয়েছে সকল প্রশংসার যোগ্য মহাজ্ঞানী আল্লাহ্র নিকট থেকে।
৪৫১৪। এই আয়াতে আল্লাহ্র প্রেরিত কোর্আনের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কোর্আন হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী যা আল্লাহ্র তরফ থেকে সংরক্ষিত। কারও পক্ষে কোরাণের পরিবর্তন পরিবর্ধন করা সম্ভব নয়। কোর্আন আল্লাহ্র নিকট সম্মানীত ও সম্ভ্রান্ত। এর ভাষায় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন বা পরিমার্জন করার শক্তি যেমন কারও নাই , তেমনি এর অর্থ সম্ভার বিকৃত করে বিধানবলীর পরিবর্তন করার সাধ্যও কারও নাই। চৌদ্দশ বছর ব্যাপী কোরাণের ভাষা অটুট রয়ে গেছে। কারও সাধ্য নাই প্রকাশ্যে এ কিতাবের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা। এমনি ভাবে পেছন দিক থেকে অর্থাৎ গোপনে এসে এর অর্থ বিকৃত করার সাধ্য কারও নাই।
আয়াতঃ 041.043
আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে ক্ষমা এবং রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
Nothing is said to you (O Muhammad SAW) except what was said to the Messengers before you. Verily, your Lord is the Possessor of forgiveness, and (also) the Possessor of painful punishment.
مَا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ
Ma yuqalu laka illa ma qad qeela lilrrusuli min qablika inna rabbaka lathoo maghfiratin wathoo AAiqabin aleemin
YUSUFALI: Nothing is said to thee that was not said to the messengers before thee: that thy lord has at his Command (all) forgiveness as well as a most Grievous Penalty.
PICKTHAL: Naught is said unto thee (Muhammad) save what was said unto the messengers before thee. Lo! thy Lord is owner of forgiveness, and owner (also) of dire punishment.
SHAKIR: Naught is said to you but what was said indeed to the messengers before you; surely your Lord is the Lord of forgiveness and the Lord of painful retribution.
KHALIFA: What is said to you is precisely what was said to the previous messengers. Your Lord possesses forgiveness, and He also possesses painful retribution.
৪৩। [ হে মোহাম্মদ ] তোমার পূর্ববর্তী রাসুলগণকে যা বলা হয়েছে ,তোমাকেও শুধু তাই-ই বলা হয়েছে ৪৫১৫। তোমার প্রভুর আদেশের অধীনে যেমন [সকল ] ক্ষমা , তেমনি ভয়াবহ শাস্তি।
৪৫১৫। আল্লাহ্র বাণীর মর্মার্থ যুগে যুগে একই থেকে গেছে। এবং একই ভাবে কাফের ও অবিশ্বাসীরা যুগে যুগে আল্লাহ্র রাসুলদের প্রত্যাখান করেছে নির্যাতন করেছে। ঠিক সেই একই ভাবে তারা হযরত মুহম্মদ মুস্তফা [সা ] কেও প্রত্যাখান করে। আল্লাহ্র বাণীর সারমর্ম হচ্ছে বিপথগামী অনুতপ্তদের জন্য আল্লাহ্র ক্ষমা ও করুণা এবং সত্যকে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রত্যাখানকারীদের জন্য ন্যায় বিচার ও শাস্তি।
আয়াতঃ 041.044
আমি যদি একে অনারব ভাষায় কোরআন করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়।
And if We had sent this as a Qur’ân in a foreign language other than Arabic, they would have said: ”Why are not its Verses explained in detail (in our language)? What! (A Book) not in Arabic and (the Messenger) an Arab?” Say: ”It is for those who believe, a guide and a healing. And as for those who disbelieve, there is heaviness (deafness) in their ears, and it (the Qur’ân) is blindness for them. They are those who are called from a place far away (so they neither listen nor understand).
وَلَوْ جَعَلْنَاهُ قُرْآنًا أَعْجَمِيًّا لَّقَالُوا لَوْلَا فُصِّلَتْ آيَاتُهُ أَأَعْجَمِيٌّ وَعَرَبِيٌّ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء وَالَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِي آذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى أُوْلَئِكَ يُنَادَوْنَ مِن مَّكَانٍ بَعِيدٍ
Walaw jaAAalnahu qur-anan aAAjamiyyan laqaloo lawla fussilat ayatuhu aaAAjamiyyun waAAarabiyyun qul huwa lillatheena amanoo hudan washifaon waallatheena la yu/minoona fee athanihim waqrun wahuwa AAalayhim AAaman ola-ika yunadawna min makanin baAAeedin
YUSUFALI: Had We sent this as a Qur’an (in the language) other than Arabic, they would have said: “Why are not its verses explained in detail? What! (a Book) not in Arabic and (a Messenger an Arab?” Say: “It is a Guide and a Healing to those who believe; and for those who believe not, there is a deafness in their ears, and it is blindness in their (eyes): They are (as it were) being called from a place far distant!”
PICKTHAL: And if We had appointed it a Lecture in a foreign tongue they would assuredly have said: If only its verses were expounded (so that we might understand)? What! A foreign tongue and an Arab? – Say unto them (O Muhammad): For those who believe it is a guidance and a healing; and as for those who disbelieve, there is a deafness in their ears, and it is blindness for them. Such are called to from afar.
SHAKIR: And if We had made it a Quran in a foreign tongue, they would certainly have said: Why have not its communications been made clear? What! a foreign (tongue) and an Arabian! Say: It is to those who believe a guidance and a healing; and (as for) those who do not believe, there is a heaviness in their ears and it is obscure to them; these shall be called to from a far-off place.
KHALIFA: If we made it a non-Arabic Quran they would have said, “Why did it come down in that language?” Whether it is Arabic or non-Arabic, say, “For those who believe, it is a guide and healing. As for those who disbelieve, they will be deaf and blind to it, as if they are being addressed from faraway.”
৪৪। আর যদি আমি এই কুর-আন আরবী ব্যতীত [ অন্য ভাষাতে ] প্রেরণ করতাম ৪৫১৬ তবে তারা অবশ্যই বলতো, ” এর আয়াতগুলি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয় নাই কেন? সে কি [ কিতাবটি ] আরবী [ভাষাতে ] নয় অথচ [ রাসুল ] আরবীয়।” বল, ” যারা বিশ্বাস করে , ইহা তাদের জন্য পথের নির্দ্দেশ ও [আত্মার ] আরোগ্য। যারা অবিশ্বাসী তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা , এবং [ চোখে ] রয়েছে অন্ধত্ব। [ মনে হবে ] তাদের যেনো ডাকা হচ্ছে বহুদূর দেশ থেকে ৪৫১৭।
৪৫১৬। দেখুন আয়াত [ ১৬ : ১০৩ – ১০৫ ] ; [ ১২ : ২ ] ইত্যাদি। এটা খুবই স্বাভাবিক ও যুক্তিপূর্ণ যে, যেহেতু ইসলামের আবির্ভাব আরবে , রাসুল আরবের অধিবাসী , সুতারাং কোরাণ নাজেলের ভাষা হবে আরবী। ‘আজমী’ শব্দটির অর্থ আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য যে কোনও ভাষাকে ‘আজমী’ ভাষা বলে। আরবীতে কোরাণ নাজেল হওয়ার দরুণ রাসুলের [ সা ] পক্ষে কোরাণকে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাখ্যা করা সহজতর হয়েছে। কারণ মানুষের মাতৃভাষার উপরে দখল, বাকপটুতা ও অলংকারের ক্ষমতা অনেক বেশী ও গভীর হয়। যদিও ইসলামের আবির্ভাব সারা দুনিয়ার জন্য তবুও প্রাথমিক উন্মেষ ও বিকাশের জন্য তা আরবী ভাষাতে হওয়া প্রয়োজন ছিলো। আরবের সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার জন্যই কোরাণকে আরবীতে নাজেল করা হয়েছে। যাদের আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের প্রতি বিশ্বাস নাই, তারা আত্মিকভাবে মৃত। মৃত ব্যক্তি যেরূপ কিছু শুনতে বা দেখতে পারে না ,এরাও সেরূপ সত্যের বাণীর আবেদন শুনতে বা বুঝতে পারবে না , কান থাকতেও এরা বধির , চোখ থাকতেও এরা অন্ধ, কারণ এরা অন্তর্দৃষ্টি বিহীন। ফলে তারা ঘটনার প্রকৃত তাৎপর্য দেখতে পারে না।কারণ তারা হবে প্রজ্ঞাবিহীন। এ সব লোকের কাছে যে ভাষাতেই কোরাণ অবতীর্ণ হোক না কেন কোরাণের বাণীর আবেদন তাদের অন্তরে পৌঁছাবে না। এখানে কোরাণের দুটি গুণ ব্যক্ত করা হয়েছে।
১) কোর্আনের হেদায়েত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষকে কল্যাণের পথ প্রদর্শন করে;
২) কোরাণ আত্মার ব্যধির প্রতিকার অর্থাৎ মানসিক ব্যাধি যথাঃ কুফর , শিরক, অহংকার , হিংসা লোভ-লালসা ইত্যাদি আত্মিক রোগের মহা ঔষধ, মহা গ্রন্থ কোরাণ। সে কারণে মুমিনদের জন্য কোরাণ হচ্ছে আত্মিক ব্যাধির প্রতিকার স্বরূপ।
৪৫১৭। দেখুন [ ৪১ : ৫ ] ও [ ৬ : ২৫ ] আয়াত। কাফেরদের উপরে আল্লাহ্র আয়াতের প্রতিক্রিয়াকে এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ মোমেনদের জন্য পথ নির্দ্দেশ ; সেখানে কাফেরদের অন্তরে তার কোনও প্রতিক্রিয়াই লক্ষ্য করা যায় না। তার কারণ তাদের নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের ধারণার ফলে, তারা প্রকৃত সত্যকে অন্তরে ধারণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। সত্যের আহ্বান বা বিবেকের আহ্বানকে তাদের নিকট মনে হবে সূদূরের আহ্বান ; যার কোনও অর্থই তাদের কাছে নাই। প্রকৃত সত্যের বাণী তাদের নিকট মনে হবে অভিনব ও অপরিচিত।
মন্তব্য : যারা বিশ্বাস করতে চায় না , তাদের নিজস্ব ধ্যান ধারণা তাদের মনের উপরে শ্রেষ্ঠত্বের পর্দ্দা বিছিয়ে দেয়, ফলে তারা কখনও প্রকৃত সত্যের আহ্বান শুনতে পায় না।
আয়াতঃ 041.045
আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর তাতে মতভেদ সৃষ্টি হয়। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মধ্যে ফয়সালা হয়ে যেত। তারা কোরআন সমন্ধে এক অস্বস্তিকর সন্দেহে লিপ্ত।
And indeed We gave Mûsa (Moses) the Scripture, but dispute arose therein. And had it not been for a Word that went forth before from your Lord, (the torment would have overtaken them) and the matter would have been settled between them. But truly, they are in grave doubt thereto (i.e. about the Qur’ân). [Tafsir Al-Qurtubi, Vol. 15, Page 370]
وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى الْكِتَابَ فَاخْتُلِفَ فِيهِ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ وَإِنَّهُمْ لَفِي شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
Walaqad atayna moosa alkitaba faikhtulifa feehi walawla kalimatun sabaqat min rabbika laqudiya baynahum wa-innahum lafee shakkin minhu mureebin
YUSUFALI: We certainly gave Moses the Book aforetime: but disputes arose therein. Had it not been for a Word that went forth before from thy Lord, (their differences) would have been settled between them: but they remained in suspicious disquieting doubt thereon.
PICKTHAL: And We verily gave Moses the Scripture, but there hath been dispute concerning it; and but for a Word that had already gone forth from thy Lord, it would ere now have been judged between them; but lo! they are in hopeless doubt concerning it.
SHAKIR: And certainly We gave the Book to Musa, but it has been differed about, and had not a word already gone forth from your Lord, judgment would certainly have been given between them; and most surely they are in a disquieting doubt about it.
KHALIFA: We have given Moses the scripture and it was also disputed. If it were not for your Lord’s predetermined decision, they would have been judged immediately. Indeed, they harbor too many doubts.
রুকু – ৬
৪৫। পূর্বে মুসাকে অবশ্যই আমি কিতাব দান করেছিলাম।কিন্তু সেখানে মতভেদ ঘটেছিলো। আর যদি তোমার প্রভুর পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকতো তবে ওদের [ মতভেদের ] মীমাংসা হয়ে যেতো[ পৃথিবীতেই ]। কিন্তু ওরা এ সম্বন্ধে অবিশ্বাস ,উৎকণ্ঠা ও সন্দেহের মধ্যে রয়েছে ৪৫১৮।
৪৫১৮। আল্লাহ্ হযরত মুসাকে কিতাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে প্রকৃত সত্যকে বিকৃত করে ফেলা হয়। মানুষ যখন ধর্মের ব্যাপারে মৌলবাদী হয়ে পড়ে , মানুষের অন্তরের কোমলতা তখন অন্তর্হিত হয়ে যায়; নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধারণা করার প্রবণতা জন্মে। ফলে ধর্মের নামে বিভিন্ন উপদলের সৃষ্টি হয়, যেমন হয়েছে ইহুদীদের মধ্যে , ফারিসী [ বা প্রাচীন ইহুদী জাতির অন্তর্ভূক্ত ধার্মিক ও আচারনিষ্ঠ বলে খ্যাত সম্প্রদায় ] ও সাদিউসী [বা ইহুদী নাস্তিক সম্প্রদায় ]। মানুষের অহমিকা ও অন্ধ শ্রেষ্ঠত্ব থেকে যে পার্থক্যের সৃষ্টি হয় তা কখনও কল্যাণ বয়ে আনে না। কিন্তু যদি সত্যিকার ভাবে, সত্যকে জানার জন্য পার্থক্যের উদ্ভব ঘটে, তবে মহান আল্লাহ্র পরিকল্পনায়, তা মহত্তর পরিণতির দিকে অগ্রসর হবে। তবে যারা ভুল পথে অগ্রসর হয়, তাদের জন্য অনুতাপের দরজা সর্বদা খোলা আছে।আল্লাহ্র বাণী বা হুকুম মানুষের কল্যাণের জন্য সর্ব যুগে প্রেরণ করা হয়েছে, মানুষের বিশ্বাসের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির জন্য নয়। পবিত্র জীবন ও সত্যের বাণীর প্রতি বিশ্বাস, আমাদের নিজেদের কল্যাণের জন্য এবং সত্যের প্রতি অবিশ্বাস আমাদের অকল্যাণ করে। আল্লাহ্ কখনও তাঁর বান্দাদের প্রতি অন্যায় করেন না।
আয়াতঃ 041.046
যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না।
Whosoever does righteous good deed it is for (the benefit of) his ownself, and whosoever does evil, it is against his ownself, and your Lord is not at all unjust to (His) slaves.
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ أَسَاء فَعَلَيْهَا وَمَا رَبُّكَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيدِ
Man AAamila salihan falinafsihi waman asaa faAAalayha wama rabbuka bithallamin lilAAabeedi
YUSUFALI: Whoever works righteousness benefits his own soul; whoever works evil, it is against his own soul: nor is thy Lord ever unjust (in the least) to His Servants.
PICKTHAL: Whoso doeth right it is for his soul, and whoso doeth wrong it is against it. And thy Lord is not at all a tyrant to His slaves.
SHAKIR: Whoever does good, it is for his own soul, and whoever does evil, it is against it; and your Lord is not in the least unjust to the servants.
KHALIFA: Whoever works righteousness does so for his own good, and whoever works evil does so to his own detriment. Your Lord is never unjust towards the people.
৪৬। যে সৎ কাজ করে সে তা করে নিজের আত্মার কল্যাণের জন্য, যে অসৎ কাজ করে সে তা করে নিজের আত্মার বিরুদ্ধে। তোমার প্রভু তার বান্দাদের প্রতি [ সামান্য পরিমাণও ] অন্যায় করেন না।
পঞ্চবিংশতম পারা
৪৭। কেয়ামতের জ্ঞান শুধু আল্লাহ্র নিকটেই রয়েছে। ৪৫১৯ তাঁর অজ্ঞাতে কোন ফল উহার আবরণ থেকে বের হয় না এবং কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না , [সন্তান ] প্রসবও করে না।যেদিন আল্লাহ্ তাদের ডেকে বলবেন, ” আমার[ প্রতি আরোপিত ] শরীকেরা কোথায় ? ” তারা বলবে , ” আমরা আপনার নিকট নিবেদন করি যে ,এই ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।” ৪৫২০
৪৫১৯। স্রষ্টার জ্ঞানের তুলনায় মানুষের জ্ঞান অতি অকিঞ্চিতকর। আল্লাহ্র জ্ঞানকে ধারণ করা দূরে থাকুক , তা অনুমান করাও মানুষের সাধ্যের বাইরে। সেই সীমাহীন জ্ঞানের এক নিগুঢ় রহস্য হচ্ছে কেয়ামতের জ্ঞান। একমাত্র আল্লাহ্র নিকটই সেই জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত। কারণ আল্লাহ্-ই সকল কিছুর পরিচালনা করেন, নিয়ন্ত্রণ করেন। কেয়ামতের জ্ঞান হচ্ছে সেরূপ একটি জ্ঞান যা শুধু আল্লাহ্রই নিয়ন্ত্রণে এবং কখন তা ঘটবে তা শুধুমাত্র আল্লাহ্-ই জানেন। যে জ্ঞানের সীমানা মানুষের আয়ত্বের বাইরে; তার সম্বন্ধে মানুষের বৃথা তর্কে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়। কারণ কেয়ামতের ব্যাপারে মানুষের জ্ঞান শুধুমাত্র অনুমান ভিত্তিক বুদ্ধিমত্তা। ধর্মের ব্যাপারে এরূপ অনুমান হযরত মুসার সম্প্রদায়কে বিপথে চালিত করে এবং তারা সন্দেহ এবং বিতর্কের ঊষর , অনূর্বর মনোজগতে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে হারিয়ে ফেলে। যে জ্ঞানের জগত মানুষের সীমানার বাইরে তার সম্বন্ধে মিথ্যা তর্ক-বির্তক বিপথে চালিত করে।সুতারাং ধর্ম সম্বন্ধে মিথ্যা কুট তর্কে নিজেকে জড়িত না করে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যে অবিচল থাকা এবং আল্লাহকে ও মানুষকে ভালোবাসা [ আয়াত নং ৪৫ও ৪৬ লক্ষ্য করুন ]। যা তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।দেখুন আয়াত [ ২১ : ৪ ]।
৪৫২০। কিয়ামত দিবসে প্রতিটি কর্মের মূল্যবোধের , সত্য রূপকে প্রকাশ করা হবে। সমস্ত মিথ্যা প্রচার ও ভান সেদিন তিরোহিত হবে এবং তাদের প্রকৃতরূপকে সর্বসমক্ষে উদ্ঘাটিত করা হবে। সেদিন মিথ্যা উপাস্যদের প্রকৃত রূপ প্রকাশিত হয়ে পড়বে , তারা সব সেদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে। মিথ্যা উপাস্যের উপাসনাকারীদের সেদিন বোধদয় ঘটবে। কিন্তু সে চৈতন্যলাভ তাদের কোন উপকারে আসবে না। কারণ তা হয়ে যাবে বহু দূর।
আয়াতঃ 041.047
কেয়ামতের জ্ঞান একমাত্র তাঁরই জানা। তাঁর জ্ঞানের বাইরে কোন ফল আবরণমুক্ত হয় না। এবং কোন নারী গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব করে না। যেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেন, আমার শরীকরা কোথায়? সেদিন তারা বলবে, আমরা আপনাকে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কেউ এটা স্বীকার করে না।
(The learned men) refer to Him (Alone) the knowledge of the Hour. No fruit comes out of its sheath, nor does a female conceive (within her womb), nor brings forth (young), except by His Knowledge. And on the Day when He will call unto them (polytheists) (saying): ”Where are My (so-called) partners (whom you did invent)?” They will say: ”We inform You that none of us bears witness to it (that they are Your partners)!”
إِلَيْهِ يُرَدُّ عِلْمُ السَّاعَةِ وَمَا تَخْرُجُ مِن ثَمَرَاتٍ مِّنْ أَكْمَامِهَا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَى وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِ وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ أَيْنَ شُرَكَائِي قَالُوا آذَنَّاكَ مَا مِنَّا مِن شَهِيدٍ
Ilayhi yuraddu AAilmu alssaAAati wama takhruju min thamaratin min akmamiha wama tahmilu min ontha wala tadaAAu illa biAAilmihi wayawma yunadeehim ayna shuraka-ee qaloo athannaka ma minna min shaheedin
YUSUFALI: To Him is referred the Knowledge of the Hour (of Judgment: He knows all): No date-fruit comes out of its sheath, nor does a female conceive (within her womb) nor bring forth the Day that (Allah) will propound to them the (question), “Where are the partners (ye attributed to Me?” They will say, “We do assure thee not one of us can bear witness!”
PICKTHAL: Unto Him is referred (all) knowledge of the Hour. And no fruits burst forth from their sheaths, and no female carrieth or bringeth forth but with His knowledge. And on the day when He calleth unto them: Where are now My partners? they will say: We confess unto Thee, not one of us is a witness (for them).
SHAKIR: To Him is referred the knowledge of the hour, and there come not forth any of the fruits from their coverings, nor does a female bear, nor does she give birth, but with His knowledge; and on the day when He shall call out to them, Where are (those whom you called) My associates? They shall say: We declare to Thee, none of us is a witness.
KHALIFA: With Him is the knowledge about the Hour (end of the world). No fruits emerge from their sheaths, nor does any female conceive or give birth, without His knowledge. The day will come when He asks them: “Where are those idols that you set up beside Me?” They will say, “We proclaim to You that none of us bears witness to that.”
৪৬। যে সৎ কাজ করে সে তা করে নিজের আত্মার কল্যাণের জন্য, যে অসৎ কাজ করে সে তা করে নিজের আত্মার বিরুদ্ধে। তোমার প্রভু তার বান্দাদের প্রতি [ সামান্য পরিমাণও ] অন্যায় করেন না।
পঞ্চবিংশতম পারা
৪৭। কেয়ামতের জ্ঞান শুধু আল্লাহ্র নিকটেই রয়েছে। ৪৫১৯ তাঁর অজ্ঞাতে কোন ফল উহার আবরণ থেকে বের হয় না এবং কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না , [সন্তান ] প্রসবও করে না।যেদিন আল্লাহ্ তাদের ডেকে বলবেন, ” আমার[ প্রতি আরোপিত ] শরীকেরা কোথায় ? ” তারা বলবে , ” আমরা আপনার নিকট নিবেদন করি যে ,এই ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।” ৪৫২০
৪৫১৯। স্রষ্টার জ্ঞানের তুলনায় মানুষের জ্ঞান অতি অকিঞ্চিতকর। আল্লাহ্র জ্ঞানকে ধারণ করা দূরে থাকুক , তা অনুমান করাও মানুষের সাধ্যের বাইরে। সেই সীমাহীন জ্ঞানের এক নিগুঢ় রহস্য হচ্ছে কেয়ামতের জ্ঞান। একমাত্র আল্লাহ্র নিকটই সেই জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত। কারণ আল্লাহ্-ই সকল কিছুর পরিচালনা করেন, নিয়ন্ত্রণ করেন। কেয়ামতের জ্ঞান হচ্ছে সেরূপ একটি জ্ঞান যা শুধু আল্লাহ্রই নিয়ন্ত্রণে এবং কখন তা ঘটবে তা শুধুমাত্র আল্লাহ্-ই জানেন। যে জ্ঞানের সীমানা মানুষের আয়ত্বের বাইরে; তার সম্বন্ধে মানুষের বৃথা তর্কে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়। কারণ কেয়ামতের ব্যাপারে মানুষের জ্ঞান শুধুমাত্র অনুমান ভিত্তিক বুদ্ধিমত্তা। ধর্মের ব্যাপারে এরূপ অনুমান হযরত মুসার সম্প্রদায়কে বিপথে চালিত করে এবং তারা সন্দেহ এবং বিতর্কের ঊষর , অনূর্বর মনোজগতে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে হারিয়ে ফেলে। যে জ্ঞানের জগত মানুষের সীমানার বাইরে তার সম্বন্ধে মিথ্যা তর্ক-বির্তক বিপথে চালিত করে।সুতারাং ধর্ম সম্বন্ধে মিথ্যা কুট তর্কে নিজেকে জড়িত না করে আমাদের কর্তব্য হচ্ছে আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যে অবিচল থাকা এবং আল্লাহকে ও মানুষকে ভালোবাসা [ আয়াত নং ৪৫ও ৪৬ লক্ষ্য করুন ]। যা তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।দেখুন আয়াত [ ২১ : ৪ ]।
৪৫২০। কিয়ামত দিবসে প্রতিটি কর্মের মূল্যবোধের , সত্য রূপকে প্রকাশ করা হবে। সমস্ত মিথ্যা প্রচার ও ভান সেদিন তিরোহিত হবে এবং তাদের প্রকৃতরূপকে সর্বসমক্ষে উদ্ঘাটিত করা হবে। সেদিন মিথ্যা উপাস্যদের প্রকৃত রূপ প্রকাশিত হয়ে পড়বে , তারা সব সেদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে। মিথ্যা উপাস্যের উপাসনাকারীদের সেদিন বোধদয় ঘটবে। কিন্তু সে চৈতন্যলাভ তাদের কোন উপকারে আসবে না। কারণ তা হয়ে যাবে বহু দূর।
আয়াতঃ 041.048
পূর্বে তারা যাদের পূজা করত, তারা উধাও হয়ে যাবে এবং তারা বুঝে নেবে যে, তাদের কোন নিস্কৃতি নেই।
And those whom they used to invoke before will fail them, and they will perceive that they have no place of refuge (from Allâh’s punishment).
وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا يَدْعُونَ مِن قَبْلُ وَظَنُّوا مَا لَهُم مِّن مَّحِيصٍ
Wadalla AAanhum ma kanoo yadAAoona min qablu wathannoo ma lahum min maheesin
YUSUFALI: The (deities) they used to invoke aforetime will leave them in the lurch, and they will perceive that they have no way of escape.
PICKTHAL: And those to whom they used to cry of old have failed them, and they perceive they have no place of refuge.
SHAKIR: And away from them shall go what they called upon before, and they shall know for certain that there is no escape for them.
KHALIFA: The idols they had idolized will disown them, and they will realize that there will be no escape.
৪৮। পূর্বে তারা [ যে সব উপাস্যদের ] আহ্বান করতো, তারা তাদের হতাশার মাঝে ত্যাগ করে চলে যাবে। এবং তারা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে যে, তাদের পালানোর কোন পথ নাই।
৪৯। ভালো [জিনিষ পাওয়ার ] জন্য প্রার্থনা করতে মানুষ কখনও ক্লান্ত বোধ করে না। কিন্তু যদি তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে সকল আশা ত্যাগ করে ও হতাশ হয়ে পড়ে৪৫২১।
৪৫২১। যারা আধ্যাত্মিক জগত সম্বন্ধে উদাসীন, তারা তাদের চেনা, শুনা ও দেখা জগতের বাইরের আর কিছু অনুধাবনে অক্ষম। ফলে তারা তাদের জ্ঞানের সীমার বাইরের জগত সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে থাকে, অথবা মনগড়া কোনও শিরকের উপাসনায় লিপ্ত হয়। কারণ তাদের আত্মার মাঝে আল্লাহ্র হেদায়েতের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে তাদের আধ্যাত্মিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এদেরই বিশেষত্ব এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। এদের সকল চিন্তাভাবনা শুধুমাত্র জাগতিক চাওয়া – পাওয়াকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে। অর্থ, সম্পদ , ক্ষমতা , নিরাপত্তা প্রভাব, প্রতিপত্তি ইত্যাদি জাগতিক বিষয়বস্তুই এদের একমাত্র কাম্য বিষয়বস্তু। কোনটা তার জন্য ভালো , কোনটা মন্দ সে বোধ বা পার্থক্য করার ক্ষমতা এদের থাকে না। জাগতিক সকল বিষয় তাদের জন্য ভবিষ্যতে কল্যাণ বয়ে আনতে নাও পারে।যতক্ষণ তারা এসব জাগতিক নেয়ামত লাভ করে ততক্ষণ তাতে তারা মগ্ন ও বিভোর হয়ে থাকে ও তাদের অহংকার ও উদাসীনতা আরও বেড়ে যায়। যদি তাদের মঙ্গলার্থে তাদের সামন্যও দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে, তৎক্ষণাত তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। কারণ তাদের চরিত্রে ধৈর্য্যের মাধ্যমে আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পনের দ্বারা নিজের দোষত্রুটির অনুসন্ধান করার ক্ষমতা জন্মে না। ফলে তারা তাদের চারিত্রিক দোষত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে জীবনের মহত্তর ও উচ্চতর দিকের সন্ধান লাভে অক্ষম হয়, হতাশা তাদের ঘিরে ধরে।
আয়াতঃ 041.049
মানুষ উন্নতি কামনায় ক্লান্ত হয় না; যদি তাকে অমঙ্গল স্পর্শ করে, তবে সে সম্পূর্ণ রূপে নিরাশ হয়ে পড়ে।
Man (the disbeliever) does not get tired of asking good (things from Allâh), but if an evil touches him, then he gives up all hope and is lost in despair.
لَا يَسْأَمُ الْإِنسَانُ مِن دُعَاء الْخَيْرِ وَإِن مَّسَّهُ الشَّرُّ فَيَؤُوسٌ قَنُوطٌ
La yas-amu al-insanu min duAAa-i alkhayri wa-in massahu alshsharru fayaoosun qanootun
YUSUFALI: Man does not weary of asking for good (things), but if ill touches him, he gives up all hope (and) is lost in despair.
PICKTHAL: Man tireth not of praying for good, and if ill toucheth him, then he is disheartened, desperate.
SHAKIR: Man is never tired of praying for good, and if evil touch him, then he is despairing, hopeless.
KHALIFA: The human being never tires of imploring for good things. And when adversity befalls him, he turns despondent, desperate.
৪৮। পূর্বে তারা [ যে সব উপাস্যদের ] আহ্বান করতো, তারা তাদের হতাশার মাঝে ত্যাগ করে চলে যাবে। এবং তারা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে যে, তাদের পালানোর কোন পথ নাই।
৪৯। ভালো [জিনিষ পাওয়ার ] জন্য প্রার্থনা করতে মানুষ কখনও ক্লান্ত বোধ করে না। কিন্তু যদি তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে সকল আশা ত্যাগ করে ও হতাশ হয়ে পড়ে৪৫২১।
৪৫২১। যারা আধ্যাত্মিক জগত সম্বন্ধে উদাসীন, তারা তাদের চেনা, শুনা ও দেখা জগতের বাইরের আর কিছু অনুধাবনে অক্ষম। ফলে তারা তাদের জ্ঞানের সীমার বাইরের জগত সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে থাকে, অথবা মনগড়া কোনও শিরকের উপাসনায় লিপ্ত হয়। কারণ তাদের আত্মার মাঝে আল্লাহ্র হেদায়েতের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে তাদের আধ্যাত্মিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এদেরই বিশেষত্ব এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। এদের সকল চিন্তাভাবনা শুধুমাত্র জাগতিক চাওয়া – পাওয়াকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে। অর্থ, সম্পদ , ক্ষমতা , নিরাপত্তা প্রভাব, প্রতিপত্তি ইত্যাদি জাগতিক বিষয়বস্তুই এদের একমাত্র কাম্য বিষয়বস্তু। কোনটা তার জন্য ভালো , কোনটা মন্দ সে বোধ বা পার্থক্য করার ক্ষমতা এদের থাকে না। জাগতিক সকল বিষয় তাদের জন্য ভবিষ্যতে কল্যাণ বয়ে আনতে নাও পারে।যতক্ষণ তারা এসব জাগতিক নেয়ামত লাভ করে ততক্ষণ তাতে তারা মগ্ন ও বিভোর হয়ে থাকে ও তাদের অহংকার ও উদাসীনতা আরও বেড়ে যায়। যদি তাদের মঙ্গলার্থে তাদের সামন্যও দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে, তৎক্ষণাত তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। কারণ তাদের চরিত্রে ধৈর্য্যের মাধ্যমে আল্লাহ্র কাছে আত্মসমর্পনের দ্বারা নিজের দোষত্রুটির অনুসন্ধান করার ক্ষমতা জন্মে না। ফলে তারা তাদের চারিত্রিক দোষত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে জীবনের মহত্তর ও উচ্চতর দিকের সন্ধান লাভে অক্ষম হয়, হতাশা তাদের ঘিরে ধরে।
আয়াতঃ 041.050
বিপদাপদ স্পর্শ করার পর আমি যদি তাকে আমার অনুগ্রহ আস্বাদন করাই, তখন সে বলতে থাকে, এটা যে আমার যোগ্য প্রাপ্য; আমি মনে করি না যে, কেয়ামত সংঘটিত হবে। আমি যদি আমার পালনকর্তার কাছে ফিরে যাই, তবে অবশ্যই তার কাছে আমার জন্য কল্যাণ রয়েছে। অতএব, আমি কাফেরদেরকে তাদের কর্ম সম্পর্কে অবশ্যই অবহিত করব এবং তাদেরকে অবশ্যই আস্বাদন করাব কঠিন শাস্তি।
And truly, if We give him a taste of mercy from us, after some adversity (severe poverty or disease, etc.) has touched him, he is sure to say: ”This is for me (due to my merit), I think not that the Hour will be established. But if I am brought back to my Lord, Surely, there will be for me the best (wealth, etc.) with Him. Then, We verily, will show to the disbelievers what they have done and We shall make them taste a severe torment.
وَلَئِنْ أَذَقْنَاهُ رَحْمَةً مِّنَّا مِن بَعْدِ ضَرَّاء مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ هَذَا لِي وَمَا أَظُنُّ السَّاعَةَ قَائِمَةً وَلَئِن رُّجِعْتُ إِلَى رَبِّي إِنَّ لِي عِندَهُ لَلْحُسْنَى فَلَنُنَبِّئَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِمَا عَمِلُوا وَلَنُذِيقَنَّهُم مِّنْ عَذَابٍ غَلِيظٍ
Wala-in athaqnahu rahmatan minna min baAAdi darraa massat-hu layaqoolanna hatha lee wama athunnu alssaAAata qa-imatan wala-in rujiAAtu ila rabbee inna lee AAindahu lalhusna falanunabbi-anna allatheena kafaroo bima AAamiloo walanutheeqannahum min AAathabin ghaleethin
YUSUFALI: When we give him a taste of some Mercy from Ourselves, after some adversity has touched him, he is sure to say, “This is due to my (merit): I think not that the Hour (of Judgment) will (ever) be established; but if I am brought back to my Lord, I have (much) good (stored) in His sight!” But We will show the Unbelievers the truth of all that they did, and We shall give them the taste of a severe Penalty.
PICKTHAL: And verily, if We cause him to taste mercy after some hurt that hath touched him, he will say: This is my own; and I deem not that the Hour will ever rise, and if I am brought back to my Lord, I surely shall be better off with Him – But We verily shall tell those who disbelieve (all) that they did, and We verily shall make them taste hard punishment.
SHAKIR: And if We make him taste mercy from Us after distress that has touched him, he would most certainly say: This is of me, and I do not think the hour will come to pass, and if I am sent back to my Lord, I shall have with Him sure good; but We will most certainly inform those who disbelieved of what they did, and We will most certainly make them taste of hard chastisement.
KHALIFA: And when we bless him after suffering some adversity, he says, “This belongs to me. I do not believe that the Hour will ever come to pass. Even if I am returned to my Lord, I will find at Him better things.” Most certainly, we will inform the disbelievers of all their works, and will commit them to severe retribution.
৫০। আর তাকে যে দুর্ভাগ্য স্পর্শ করেছিলো , তার পরে যদি আমি তাকে আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহের আস্বাদন করাই ৪৫২২ , তখন সে অবশ্যই বলবে যে, ” এটা আমার [ যোগ্যতারগুণে ] প্রাপ্য। আমি মনে করি না যে ,কখনও কেয়ামত সংঘটিত হবে। আর যদিও আমাকে আমার প্রভুর নিকটে নেয়া হয়, তাঁর নিকটেও আমার জন্য নিশ্চয়ই [ মহা ] কল্যাণের ব্যবস্থা থাকবে।”তখন আমি অবিশ্বাসীদের উহাদের কৃতকর্মের সত্যতা সম্বন্ধে জানিয়ে দেবো এবং আমি তাদের কঠোর শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাবো।
৪৫২২। মানুষকে আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন এক নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি নিবেদিত করে। সেই উদ্দেশ্যের সাথে সমন্বিত হয় তার জীবনবোধ , মূল্যবোধ। কিন্তু যখন মানুষ পার্থিব জীবনের মোহে পড়ে মনুষ্য জন্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য ভুলে যায়, জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে মিথ্যা প্রহেলিকায় ভুলে থাকে; তাদেরই মন মানসিকতা ও চিন্তা ভাবনাকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এ সব লোকেরা দুই বা তিন ধরণের মনোভাব প্রকাশ করে থাকে যখন তারা জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়।
প্রথমতঃ জাগতিক ভোগ বিলাসের দ্রব্যের প্রতি অত্যধিক মোহ এদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। এর থেকে যদি তাদের সামান্যও বঞ্চিত করা হয় তবে তারা হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।[ দেখুন উপরে টিকা ]।
দ্বিতীয়তঃ যদি তারা তাদের মনমত পার্থিব বস্তু লাভ করে তারা তখন অহংকারে ও দম্ভে স্ফীত হয়ে সব কৃতিত্ব নিজেদের বলে দাবী করে এবং আল্লাহ্ যে তাদের এই নেয়ামতে ধন্য করেছেন এই সাধারণ সত্যটি তারা ভুলে যায়। শুধু তাই-ই নয়, এ সব সুবিধাপ্রাপ্ত লোকেরা তখন আল্লাহ্র অস্তিত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান হয়ে পড়ে এবং কিয়ামত দিবসের ও পরলোকের সম্বন্ধে সন্দেহ পোষণ করে থাকে। এদের মধ্যে যদি বা কেউ কেয়ামত দিবসের সম্বন্ধে সামান্যতম বিশ্বাস পোষণ করে থাকে , তবে তারা ইহজগতের আল্লাহ্র আনুকূল্যের পটভূমিতে পরলোককেও বিচার করে থাকে এবং বলে যে পরলোকেও আল্লাহ্ তাদের প্রতি বিশেষ আনুকূল্য প্রদর্শন করবেন।কারণ পৃথিবীর জীবনে তারা আল্লাহ্র দেয়া জাগতিক নেয়ামতে ধন্য হয়েছে। সে উপলব্ধি করতে অক্ষম যে, এসব তাকে দেয়া হয়েছে পরীক্ষা স্বরূপ। এভাবেই তারা আল্লাহ্র নেয়ামতের সদ্ব্যবহার দ্বারা পরলোকের জীবনে সফলতার পরিবর্তে আত্মধ্বংসের পথে পরিচালিত হয়। কারণ তারা আল্লাহ্র প্রতি আত্মসমর্পনের পরিবর্তে মিথ্যার কাছে আত্মসমর্পন করেছিলো।
আয়াতঃ 041.051
আমি যখন মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করে। আর যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সুদীর্ঘ দোয়া করতে থাকে।
And when We show favour to man, he withdraws and turns away, but when evil touches him, then he has recourse to long supplications.
وَإِذَا أَنْعَمْنَا عَلَى الْإِنسَانِ أَعْرَضَ وَنَأى بِجَانِبِهِ وَإِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ فَذُو دُعَاء عَرِيضٍ
Wa-itha anAAamna AAala al-insani aAArada wanaa bijanibihi wa-itha massahu alshsharru fathoo duAAa-in AAareedin
YUSUFALI: When We bestow favours on man, he turns away, and gets himself remote on his side (instead of coming to Us); and when evil seizes him, (he comes) full of prolonged prayer!
PICKTHAL: When We show favour unto man, he withdraweth and turneth aside, but when ill toucheth him then he aboundeth in prayer.
SHAKIR: And when We show favor to man, he turns aside and withdraws himself; and when evil touches him, he makes lengthy supplications.
KHALIFA: When we bless the human being, he turns away, and drifts farther and farther away, and when he suffers any affliction, he implores loudly.
৫১। যখন আমি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ দান করি , ৪৫২৩ সে মুখ ফিরিয়ে নেয়, এবং[ আমারদিকে আসার পরিবর্তে ] সে দূরে সরে যায় ৪৫২৪। এবং যখন অনিষ্ট তাকে ঘিরে ধরে, সে তখন দীর্ঘ প্রার্থানায় রত হয়।
৪৫২৩। পূর্বের আয়াতে ও টিকাতে বর্ণনা করা হয়েছে মানুষের মূল্যবোধের বিকৃতি সম্বন্ধে। এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে মানুষের অকৃতজ্ঞতা ও মোনাফেকী সম্বন্ধে ।এসব লোক যখন জাগতিক সুখ সমৃদ্ধি লাভ করে থাকে, তখন তাদের মানসিক অবস্থা হচ্ছে, তারা তা ভোগে এত মগ্ন থাকে যে তারা ধীরে ধীরে আল্লাহ্র স্মরণে বিস্মৃত হয়। তারা ভুলে যায় যে, এই জাগতিক নেয়ামত মহান আল্লাহ্র দান। এর জন্য আল্লাহ্র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পরিবর্তে তারা আল্লাহ্কে ভুলে যায়।অকৃতজ্ঞতার চরম নিদর্শন তারা প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু যখন তারা বিপদ বিপর্যয় , দুঃখ দুর্দ্দশায় নিপতিত হয়, তখন তারা আল্লাহকে গভীর মনোযোগের সাথে ডাকে, বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য। তাদের এই আচরণ মোনাফেকীরই নামান্তর। কারণ তারা আন্তরিক ভাবে আল্লাহ্র প্রতি আত্মনিবেদিত নয়।
৪৫২৪। দেখুন আয়াত [ ১৭ : ৮৩ ] ও টিকা।
আয়াতঃ 041.052
বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, অতঃপর তোমরা একে অমান্য কর, তবে যে ব্যক্তি ঘোর বিরোধিতায় লিপ্ত, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে?
Say: ”Tell me, if it (the Qur’ân) is from Allâh, and you disbelieve in it, who is more astray than one who is in opposition far away (from Allâh’s Right Path and His obedience).
قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ اللَّهِ ثُمَّ كَفَرْتُم بِهِ مَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ هُوَ فِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
Qul araaytum in kana min AAindi Allahi thumma kafartum bihi man adallu mimman huwa fee shiqaqin baAAeedin
YUSUFALI: Say: “See ye if the (Revelation) is (really) from Allah, and yet do ye reject it? Who is more astray than one who is in a schism far (from any purpose)?”
PICKTHAL: Bethink you: If it is from Allah and ye reject it – Who is further astray than one who is at open feud (with Allah)?
SHAKIR: Say: Tell me if it is from Allah; then you disbelieve in it, who is in greater error than he who is in a prolonged opposition?
KHALIFA: Proclaim: “What if this is truly from GOD, then you decide to reject it? Who are farther astray than those who decide to oppose this?”
৫২। বল, ” তোমরা কি ভেবে দেখেছ ৪৫২৪-ক , যদি [ এই প্রত্যাদেশ প্রকৃতই ] আল্লাহ্র নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়ে থাকে, অথচ তোমরা ইহা প্রত্যাখান কর ?তবে তার চেয়ে অধিক পথভ্রান্ত কে আছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণে বহুদূরে চলে যায় ? ৪৫২৪-খ।”
৪৫২৪-ক। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ মানুষকে আহ্বান করেছেন আত্ম অনুসন্ধানের জন্য। “কোরাণ পাঠ করে উপলব্ধির চেষ্টা কর; দেখ এর মাঝে অসাধারণ কিছু লক্ষ্য করতে পার কি না।” আন্তরিক ভাবে অর্থ বুঝে কোরাণ পাঠ করলে অবশ্যই আত্মার মাঝে কোরাণের বাণীর তাৎপর্যের উপলব্ধি ঘটবে। আত্মার মাঝে অনুসন্ধানের মাধ্যমে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশের সত্যকে উপলব্ধি করতে বলা হয়েছে। যদি এর পরেও কেউ প্রত্যাদেশের সত্যকে প্রত্যাখান করে, চিন্তা করে দেখ কি ভয়ঙ্কর দায়িত্ব সে নিজ স্কন্ধে বহন করছে। কারণ নভোমন্ডল ও পৃথিবীতে কেউই আল্লাহ্র আইনের চুলমাত্র বিরোধিতা করে না। আল্লাহ্র সৃষ্টির প্রতিটি ধূলিকণা আল্লাহ্র আইনের প্রতি একান্ত আনুগত্য প্রকাশ করে থাকে। একমাত্র মানুষই এর ব্যতিক্রম। আল্লাহ্ তাকে “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ” দান করেছেন, ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করার জন্য। যদি সে এই স্বাধীনতার অপব্যবহার করে , তবে সে গুরুদায়িত্ব তার একারই। এই দায়িত্বের বোঝা তার একাই বহন করতে হবে। সৃষ্টির কেউই যখন স্রষ্টার আইন লঙ্ঘন করে না তখন যে মানুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে বিপথে গমন করে তার মত নির্বোধ আর কে আছে ?
৪৫২৪-খ। কোরাণের বাণী বিশ্বজনীন। পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য তা অবতীর্ণ। যদি কেউ আল্লাহ্র এই বিশ্বজনীন বাণীকে অমান্য করে এবং সার্বজনীন বিশ্বাস বা প্রত্যয়ের বিরুদ্ধাচারণ করে তাহলে সে নিজের কবর নিজে খুঁড়ছে। কারণ সে এক অন্ধকারময় ক্ষুদ্র ধর্মগোষ্ঠির অনুসারী হবে যারা হবে উদ্দেশ্যবিহীন। যারা ধর্মের আলোয় উদ্ভাসিত পৃথিবীতে বাসের যোগ্যতা হারাবে। তাদের মত বিভ্রান্ত আর কে আছে ?
আয়াতঃ 041.053
এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?
We will show them Our Signs in the universe, and in their ownselves, until it becomes manifest to them that this (the Qur’ân) is the truth. Is it not sufficient in regard to your Lord that He is a Witness over all things?
سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنفُسِهِمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ
Sanureehim ayatina fee al-afaqi wafee anfusihim hatta yatabayyana lahum annahu alhaqqu awa lam yakfi birabbika annahu AAala kulli shay-in shaheedun
YUSUFALI: Soon will We show them our Signs in the (furthest) regions (of the earth), and in their own souls, until it becomes manifest to them that this is the Truth. Is it not enough that thy Lord doth witness all things?
PICKTHAL: We shall show them Our portents on the horizons and within themselves until it will be manifest unto them that it is the Truth. Doth not thy Lord suffice, since He is Witness over all things?
SHAKIR: We will soon show them Our signs in the Universe and in their own souls, until it will become quite clear to them that it is the truth. Is it not sufficient as regards your Lord that He is a witness over all things?
KHALIFA: We will show them our proofs in the horizons, and within themselves, until they realize that this is the truth. Is your Lord not sufficient as a witness of all things?
৫৩। শীঘ্রই আমি তাদের [ পৃথিবীর দূরতম ] প্রান্তের এবং তাদের আত্মার মাঝের নিদর্শন সমূহ ৪৫২৪-গ , দেখাবো , যতক্ষণ না এটা তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয় যে, ইহা [ কুর-আন ] নিশ্চিত সত্য। ইহা কি তোমার প্রভুর জন্য যথেষ্ট নয় যে, তিনি সর্ব বিষয়ে অবহিত ?
৪৫২৪-গ। আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করা হয়েছে সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করার জন্য। ইসলামের প্রচার ও প্রসারের দ্বারা এই সত্যই প্রমাণিত হয়। তবে প্রত্যাদেশ বা আল্লাহ্র সত্য মানুষের হৃদয় ও আত্মাকে কিভাবে পরিবর্তন করতে পারে তা অত্যাচার্য ব্যাপার ; যা ইসলামের প্রসার অপেক্ষাও অধিক বিস্ময়কর। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ইসলামের প্রথম যুগের ব্যক্তিগণ। চার খলিফার জীবন এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। শুধু তাই-ই নয় ইসলামের ইতিহাসে এরূপ বহু ব্যক্তির সন্ধান মেলে যারা ইসলাম বিরোধী থেকে কোরাণের বাণীর যাদুস্পর্শে পরিবর্তিত মানুষ হয়ে যান এবং শৈর্য্যে বীর্যে পৃথিবীর ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হন।ইসলামের প্রাথমিক যুগে মদিনা ছিলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠিতে বিভক্ত ,পরস্পর হানাহানিতে মগ্ন। ইসলামের স্পর্শে সেই মদিনা রূপান্তরিত হয় সংঘবদ্ধ বীরের জাতিরূপে, যারা পৃথিবীর সম্মুখে শৈর্য্যে বীর্যে , সাহসিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তরূপে ভাস্বর হয়েছিলেন। বিরোধীরা যাই-ই করুক বা ভাবুক না কেন,আল্লাহ্র সত্য প্রতিষ্ঠিত হবেই। বর্তমান যুগেওপৃথিবী ব্যপী ইসলামের প্রসার এই সত্যেরই সাক্ষ্য দেয়। আল্লাহ্ই ভালো জানেন কে তার সত্য প্রচারে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এবং কে সাহায্য করে। “তিনি সর্ববিষয়ে অবহিত। “
আয়াতঃ 041.054
শুনে রাখ, তারা তাদের পালনকর্তার সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দেহে পতিত রয়েছে। শুনে রাখ, তিনি সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
Verily! They are in doubt concerning the Meeting with their Lord? (i.e. Resurrection after their deaths, and their return to their Lord). Verily! He it is Who is surrounding all things!
أَلَا إِنَّهُمْ فِي مِرْيَةٍ مِّن لِّقَاء رَبِّهِمْ أَلَا إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ مُّحِيطٌ
Ala innahum fee miryatin min liqa-i rabbihim ala innahu bikulli shay-in muheetun
YUSUFALI: Ah indeed! Are they in doubt concerning the Meeting with their Lord? Ah indeed! It is He that doth encompass all things!
PICKTHAL: How! Are they still in doubt about the meeting with their Lord? Lo! Is not He surrounding all things?
SHAKIR: Now surely they are in doubt as to the meeting of their Lord; now surely He encompasses all things.
KHALIFA: Indeed, they are doubtful about meeting their Lord. He is fully aware of all things.
৫৪। আশ্চর্য ! তারা কি আপন প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে আছে ? ৪৫২৫। সাবধান ! আল্লাহ্-ই সব কিছুকে ঘিরে রেখেছেন।
৪৫২৫। যারা কাফের , যাদের আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস নাই তারা ধারণা করে যে, পৃথিবীর জীবন শেষ হওয়ার সাথে সাথে সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। শেষ বিচার বলে কিছু নাই। কিন্তু আল্লাহ্ বলেছেন যে, শেষ বিচারের দিন অবশ্যাম্ভবী। কেহই তা থেকে রেহাই পাবে না। আল্লাহ্ সকল কিছু পরিবেষ্টন করে আছেন।