- সূরার নাম: সূরা আস-সাফফাত
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আস-সাফফাত
আয়াতঃ 037.001
শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো,
By those who range themselves in ranks,
وَالصَّافَّاتِ صَفًّا
Waalssaffati saffan
YUSUFALI: By those who range themselves in ranks,
PICKTHAL: By those who set the ranks in battle order
SHAKIR: I swear by those who draw themselves out in ranks
KHALIFA: The arrangers in columns.
০১। শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান ৪০৩০, ৪০৩১ ,
৪০৩০। লক্ষ্য করুণ পূর্বের সূরাতে [ ইয়া-সীন ] শপথ করা হয়েছে “জ্ঞানগর্ভ কোরাণের ” গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে প্রত্যাদেশের উপরে , যার সাহায্যে মানুষ আধ্যাত্মিক জগতের সর্বোচ্চ জ্ঞান আহরণ করতে পারে। এই সূরাতে শপথের মাধ্যমে তিনটি মনোভাব বা আচরণকে প্রকাশ কর হয়েছে পরবর্তী তিনটি আয়াতে যা হচ্ছে মন্দের উপরে ভালোকে প্রতিষ্ঠিত করার উপায়। দেখুন পরবর্তী টিকা সমূহ।
৪০৩১। এই আয়াতসমূহের ব্যাখ্যাতে মতদ্বৈত আছে। এখানে দুধরণের মতবাদ আছে :
১) আয়াত [ ১- ৩ ] পর্যন্ত যাদের উল্লেখ আছে তারা সকলেই একই ব্যক্তি। একই ব্যক্তির মাঝে উপরে তিন ধরণের গুণের প্রকাশ ঘটেছে। অথবা এরা হলেন তিন বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তি ;
২) উভয়ক্ষেত্রেই প্রশ্ন হলো এরা কারা ? মতবাদের দিক থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী মতবাদ হচ্ছে : ১) যে তিনটি গুণের উল্লেখ করা হয়েছে তা একজনের জন্য প্রযোজ্য – জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে একই ব্যক্তির চারিত্রিক গুণাবলীর বিভিন্ন প্রকাশ মাত্র। অপরপক্ষে ২) অন্যদল মনে করেন সারিবদ্ধ ভাবে যারা দন্ডায়মান তারা ফেরেশতা এবং তাদের গুণাবলীই এভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যরা মনে করেন এরা হলেন ক) ভালো লোক, খ) আল্লাহ্র রসুলগণ , ৩) যারা আল্লাহ্র রাস্তায় যুদ্ধ করে। কোরাণে এই তিন প্রকার লোকের সুস্পষ্ট কোন বর্ণনা নাই। তবে মওলানা ইউসুফ আলীর মতে এই তিন প্রকার গুণাবলীর প্রয়োগ সার্বজনীন উভয় দলের জন্য প্রযোজ্য।
আয়াতঃ 037.002
অতঃপর ধমকিয়ে ভীতি প্রদর্শনকারীদের,
And so are strong in repelling (evil),
فَالزَّاجِرَاتِ زَجْرًا
Faalzzajirati zajran
YUSUFALI: And so are strong in repelling (evil),
PICKTHAL: And those who drive away (the wicked) with reproof
SHAKIR: Then those who drive away with reproof,
KHALIFA: The blamers of those to be blamed.
০২। এবং [ মন্দকে ] প্রতিরোধে যারা কঠোর ৪০৩২।
৪০৩২। তিনটি আয়াতের মাধ্যমে [ ১- ৩ ] যে তিনটি কর্মপদ্ধতির বর্ণনা করা হয়েছে তা হচ্ছে ধারাবাহিকতা এবং এই ধারাবাহিকতা প্রকাশের জন্য ফা [Fa ] শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। মওলানা ইউসুফ আলীর মতে – ফেরেশতা ও পূণ্যাত্মা ব্যক্তিদের উভয়ের কর্মপদ্ধতি এখানে বর্ণনা করা হয়েছে। এই উভয় সম্প্রদায় –
১) আল্লাহ্র এবাদত ও পূণ্য কাজের জন্য শৃঙ্খলা , নিয়মানুবর্তিতা ও নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করে থাকেন।
২) তারা সর্বদা পাপ ও মন্দকে প্রতিহত করে থাকেন। এ কাজে তারা অত্যন্ত কঠোরতার পরিচয় দান করেন। প্রতিটি কর্মকে পাপমুক্ত ভাবে আল্লাহ্র বিধানমতে সম্পন্ন করার জন্য তারা শৃঙ্খলা ,নিয়মানুবর্তিতা ও একতাবদ্ধ ভাবে পরিচালিত হন। তারা “কঠোর পরিচালক “।
৩) আল্লাহ্র রাজত্বের উন্নতি বিধানের জন্যই তাদের পরিশ্রম। তাঁরা আল্লাহ্র বাণী ও মহিমা প্রচারে মগ্ন থাকেন।
আয়াতঃ 037.003
অতঃপর মুখস্থ আবৃত্তিকারীদের-
And thus proclaim the Message (of Allah.!
فَالتَّالِيَاتِ ذِكْرًا
Faalttaliyati thikran
YUSUFALI: And thus proclaim the Message (of Allah)!
PICKTHAL: And those who read (the Word) for a reminder,
SHAKIR: Then those who recite, being mindful,
KHALIFA: The reciters of the messages.
০৩। এবং যারা [আল্লাহ্র ] মহিমা ঘোষণা করে।
০৪। অবশ্যই অবশ্যই তোমাদের আল্লাহ্ অদ্বিতীয় ৪০৩৩ –
৪০৩৩। ঐশ্বরিক উপদেশ এক কথায় প্রকাশ করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে। ধর্মের সর্বশেষ কথা, এক আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস ; ” নিশ্চয়ই তোমাদের আল্লাহ্ অদ্বিতীয়।” এই বিশ্বাসই হচ্ছে ঈমান, আমাদের জীবনের শেষ পরিণতি। বলা হয়েছে প্রভু আল্লাহ্ আমাদের যত্ন করেন , ভালোবাসেন এবং প্রতিপালন করেন। আমরা তাঁর অতি প্রিয়। তিনি এক এবং অদ্বিতীয় সত্ত্বা। সমস্ত মঙ্গল, ভালোবাসা ; ক্ষমতা , সর্বকিছুর মূল চালিকাশক্তি এক আল্লাহ্ – এসব অর্জনের জন্য শুধুমাত্র আল্লাহ্র সাহায্যই কামনা করতে হবে। বিশ্ব প্রকৃতি দেবতা, উপদেবতা বা অন্ধ ভাগ্যের খেলাধূলার স্থান নয়, যে তাদের কাছে সাহায্যের জন্য প্রতিযোগীতা করতে হবে , মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্র আইনে সমস্ত বিশ্বভূমন্ডল সমন্বিত শৃঙ্খলার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত – আকাশ ও পৃথিবী সব কিছু একই আইনের অধীনে সমন্বিত -শৃঙ্খলার সাথে অবস্থান করে। আমাদেরও আহ্বান করা হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতিতে এক আল্লাহ্র আরোপিত আইনের সাথে নিজেকে সমন্বিত করার জন্য – ১) সারিবদ্ধভাবে শৃঙ্খলার সাথে , ২) মন্দকে প্রতিহত করার সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে এবং ৩) আল্লাহ্র রাজত্বের মঙ্গলের জন্য পরস্পরের সহযোগীতায় উদ্ভাবিত কার্যের মাধ্যমে।