এই আয়াত থেকে এ কথাই সুস্পষ্ট যে, এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবী মানুষ সৃষ্টির বহু পূর্বেই সৃষ্টি হয়েছিলো – যা বর্তমান বিজ্ঞানের তত্বকে সমর্থন করে। পৃথিবীতে মানুষের আগমন আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির অনেক পরে।
৩৭৮০। “Hamala”: দায়িত্ব বা ভার গ্রহণ করা, বহন করা , পৌছাইয়া দেয়া [ আমানত বা দায়িত্ব ] ইত্যাদি। অধিকাংশ তফসীরকারগণ এই অর্থ গুলিই গ্রহণ করে থাকেন। তবে অনেকে মনে করেন এই শব্দটি দ্বারা [ সঙ্গে করে ] চলে যাওয়া; পলায়ন করা ; আত্মসাৎ করা ইত্যাদি বোঝায়। অর্থাৎ আল্লাহ্র আমানতের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। সেক্ষেত্রে [ ৭২- ৭৩ ] আয়াত পর্যন্ত অর্থ হবে, আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট সকল বস্তু ও প্রাণীকে তাঁর দায়িত্ব অর্পণ করতে চাইলেন। মানুষ ব্যতীত সকল সৃষ্ট বস্তু ও প্রাণী সে দায়িত্ব নিতে ভয় পেলো , এই জন্য যে হয়তো বা তারা তা সঠিক ভাবে পালন করতে পারবে না। কিন্তু মানুষ নির্ভিকভাবে সে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলো কারণ মানুষ অজ্ঞ। পরিণতিতে মানুষ সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অক্ষম হয় এবং আল্লাহ্র সাথে কৃত অঙ্গীকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ফলশ্রুতিতে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর সৃষ্টি হয়; কেউ হয় মোনাফেক,কেউ অবিশ্বাসী। এদেরকে আল্লাহ্ শাস্তি দান করবেন। অপরপক্ষে যারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত এবং বিশ্বাসী , তারা আল্লাহ্র কৃপা লাভে সমর্থ হয়। উভয় ক্ষেত্রে মানুষের শেষ পরিণতি একই।
৩৭৮১। দেখুন [ ২ : ৩০ – ৩৪] এবং এর টিকাসমূহ। আল্লাহ্ মানুষের জন্য অত্যন্ত উচ্চ সম্মানীয় স্থান নির্ধারিত করেন। মানুষ যখন পূত পবিত্র থাকে, সে তার আত্মাকে দুর্নিতি দ্বারা কলুষ করে না, তখন তার অবস্থান ফেরেশতাদেরও উপরে। সে অবস্থায় ফেরেশতারা তাঁকে সেজদা করে। কিন্তু মানুষ তাঁর মন্দ কাজের দরুণ নিজেকে কলুষতায় আচ্ছন্ন করে ফেলে যখন তার অবস্থান পশুর থেকেও অধম হয়ে যায়। তাহলে একই মানুষ কখনও ফেরেশতাদের থেকে পবিত্র ও মহৎ আবার কখনও পশুরও থেকে অধম হয় কি ভাবে যে গুণটির জন্য মানুষ ফেরেশতাদের থেকেও সম্মানীয় তা হচ্ছে আল্লাহ্ তাঁর রুহুর অংশ মানুষের মাঝে ফুঁ দিয়ে প্রবেশ করিয়েছেন [ দেখুন আয়াত [৩২ : ৯] ও [১৫ : ২৯] [৩৮:৭২] এবং টিকা ১৯৬৮ ; অন্যান্য অংশে বিদ্যমান ]। রুহুর অনুপ্রবেশের অর্থ হচ্ছে মানুষের মাঝে ঐশ্বরিক গুণের জন্মলাভ এবং তাঁর সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি – যার সাহায্যে সে ভালো বা মন্দকে গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। ফলে মানুষের মাঝেই আল্লাহ্র গুণাবলীর ক্ষুদ্র প্রকাশ ঘটে – আবার সেই আত্মাকে কলুষ করার দরুণ পশুশক্তির প্রকাশ ঘটে থাকে।
৩৭৮২। “Zalum” ইংরেজীতে অনুবাদ হয়েছে “unjust” বা অন্যায় এবং “Jahul ” এর অর্থ অনুবাদ করা হয়েছে অজ্ঞ। এই শব্দগুলির আরবীতে ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে আরও গভীর ও তীব্র যার দ্বারা মানুষের চরম অজ্ঞতা এবং অন্যায় প্রবণতা বোঝানো হয়েছে। মানুষ তার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অনুধাবনে অক্ষম। একমাত্র আল্লাহ্র করুণাই তার এই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে সাহায্য করে। ভালো ও মন্দের মাপকাঠি হচ্ছে তুলনামূলক। মানুষের দৃষ্টিতে যা সর্বোচ্চ ভালোর প্রতীক হয়তো বা তা খুবই সাধারণ।
এই সীমাবদ্ধ জ্ঞানের মানুষ কিভাবে পৃথিবীতে আল্লাহ্র প্রতিনিধি [ ২ : ৩০ ] হওয়ার মত এত বড় দায়িত্ব নিজ স্কন্ধে তুলে নেয় ? ; এখানেই আদম সন্তান আল্লাহ্র সাথে মানবিক দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য, পৃথিবীকে সুন্দর করার মহৎ প্রচেষ্টার লিখিত ও অলিখিত অঙ্গীকারে আবদ্ধ। দেখুন [ ৭ : ১৭২- ১৭৩] ও টিকা ১১৪৬ – ৪৮ ; এবং [ ৫ : ১ ] ও টিকা ৬৮২। চুক্তি বা অঙ্গীকার [ Mithaq ] প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য যাই-ই হোক না কেন তা হচ্ছে আমানত। এই চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার অর্থ হচ্ছে আমানত খেয়ানত করা ,যার অবশ্যাম্ভবী পরিণাম হচ্ছে শাস্তি।
আয়াতঃ 033.073
যাতে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী, মুশরিক পুরুষ, মুশরিক নারীদেরকে শাস্তি দেন এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
So that Allâh will punish the hypocrites, men and women, and the men and women who are AlMushrikûn (the polytheists, idolaters, pagans, disbelievers in the Oneness of Allâh, and in His Messenger Muhammad SAW ). And Allâh will pardon (accept the repentance of) the true believers of the Islâmic Monotheism, men and women. And Allâh is Ever OftForgiving, Most Merciful.
لِيُعَذِّبَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِينَ وَالْمُشْرِكَاتِ وَيَتُوبَ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
LiyuAAaththiba Allahu almunafiqeena waalmunafiqati waalmushrikeena waalmushrikati wayatooba Allahu AAala almu/mineena waalmu/minati wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: (With the result) that Allah has to punish the Hypocrites, men and women, and the Unbelievers, men and women, and Allah turns in Mercy to the Believers, men and women: for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: So Allah punisheth hypocritical men and hypocritical women, and idolatrous men and idolatrous women. But Allah pardoneth believing men and believing women, and Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: So Allah will chastise the hypocritical men and the hypocritical women and the polytheistic men and the polytheistic women, and Allah will turn (mercifully) to the believing women, and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: For GOD will inevitably punish the hypocrite men and the hypocrite women, and the idol worshiping men and the idol worshiping women. GOD redeems the believing men and the believing women. GOD is Forgiver, Most Merciful.