- সূরার নাম: সূরা আহযাব
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা আহযাব
আয়াতঃ 033.001
হে নবী! আল্লাহকে ভয় করুন এবং কাফের ও কপট বিশ্বাসীদের কথা মানবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
O Prophet (Muhammad SAW)! Keep your duty to Allâh, and obey not the disbelievers and the hypocrites (i.e., do not follow their advices). Verily! Allâh is Ever AllKnower, AllWise.
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ اتَّقِ اللَّهَ وَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَالْمُنَافِقِينَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
Ya ayyuha alnnabiyyu ittaqi Allaha wala tutiAAi alkafireena waalmunafiqeena inna Allaha kana AAaleeman hakeeman
YUSUFALI: O Prophet! Fear Allah, and hearken not to the Unbelievers and the Hypocrites: verily Allah is full of Knowledge and Wisdom.
PICKTHAL: O Prophet! Keep thy duty to Allah and obey not the disbelievers and the hypocrites. Lo! Allah is Knower, Wise.
SHAKIR: O Prophet! be careful of (your duty to) Allah and do not comply with (the wishes of) the unbelievers and the hypocrites; surely Allah is Knowing, Wise;
KHALIFA: O you prophet, you shall reverence GOD and do not obey the disbelievers and the hypocrites. GOD is Omniscient, Most Wise.
০১। হে নবী! আল্লাহ্কে ভয় কর এবং অবিশ্বাসী ও মোনাফেকদের কথা শুনো না ৩৬৬৬। আল্লাহ্ অবশ্যই জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ।
৩৬৬৬। ইসলামের ইতিহাসে হিজরী পঞ্চম বর্ষ ছিলো অত্যন্ত বিপদ-সংঙ্কুল। সে সময়টা ছিলো ইসলামের প্রথম যুগ। তখনও ইসলামের অবস্থান দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। এরই পটভূমিতে এই সূরা অধ্যয়ন করতে হবে। ভূমিকাতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, দুষ্কর্মে সহযোগীদের মৈত্রী মদিনা অবরোধ করে এবং বিফল হয়। এই মৈত্রীতে ছিলো মক্কার অবিশ্বাসী পৌত্তলিকরা, মধ্য আরবের মরুভূমির আরবেরা, বিশ্বাসঘাতকতার জন্য মদিনা থেকে পূর্বে বহিষ্কৃত ইহুদীরা ,মদিনাতে অবস্থানকারী অবশিষ্ট ইহুদীরা, এবং আব্দুল্লা -ইবন- উবাই এর তত্বাবধানে মদিনার মোনাফেকরা যাদের কথা পূর্বের [ ৯ : ৪৩ – ১১০ ] সূরাতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিভিন্ন গোষ্ঠির একত্রে মিলিত হওয়ার প্রধান সুত্র ছিলো ইসলামের প্রতি তীব্র ঘৃণা। এখানে তিনটি বিষয় উল্লেখযোগ্য :
১) ইহুদীরা ইসলাম গ্রহণের শেষ সুযোগ নষ্ট করে ফেলে। তাদের মধ্যে যারা ভালো লোক ছিলো তারা পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করে। কারণ তারা মূল্যায়ন করতে সক্ষম হয়েছিলো যে, ইসলামে আল্লাহ্র প্রত্যাদেশকে পুণরুজ্জীবিত করা হয়েছে।
২) হযরত আয়েশার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা থেমে যাওয়ার পরে [ ২৪ : ১১ – ২৬ ] ,এই সূরাতে রসুলের [সা ] স্ত্রীদের বিশেষ মর্যদা দান করা হয়। তাদের বিশ্বাসীদের মাতারূপে পরিগণিত করা হয়।
৩) হযরত জয়নাবের কাহিনীর উপরে ভিত্তি করে যৌন জীবনের পবিত্রতাকে নূতন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়। হযরত জয়নাবের উপাধি ছিলো গরীবের মাতা।
এই বিষয়গুলি পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।
আয়াতঃ 033.002
আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়, আপনি তার অনুসরণ করুন। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।
And follow that which is inspired in you from your Lord. Verily, Allâh is WellAcquainted with what you do.
وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
WaittabiAA ma yooha ilayka min rabbika inna Allaha kana bima taAAmaloona khabeeran
YUSUFALI: But follow that which comes to thee by inspiration from thy Lord: for Allah is well acquainted with (all) that ye do.
PICKTHAL: And follow that which is inspired in thee from thy Lord. Lo! Allah is Aware of what ye do.
SHAKIR: And follow what is revealed to you from your Lord; surely Allah is Aware of what you do;
KHALIFA: Follow what is revealed to you from your Lord. GOD is fully Cognizant of everything you all do.
০২। তোমার প্রভুর নিকট থেকে ওহীর মাধ্যমে যা এসেছে তার অনুসরণ কর। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে পরিপূর্ণ অবগত ৩৬৬৭।
৩৬৬৭। এই আয়াতের পটভূমি ছিলো রসুলের [সা ] জীবনের দুর্যোগপূর্ণ দিনগুলি। দুষ্ট লোকদের অপমান ও প্রতিবন্ধকতা, বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্র,মোনাফেকী ,মিথ্যা কুৎসা রটনা, মিথ্যা এবং অলঙ্ঘনীয় কুসংস্কার, রসুলের [সা ] জীবনকে সর্বদিক থেকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিলো। দুর্যোগময় সেই দিনগুলিতে আল্লাহ্র রসুল ধীর স্থির ভাবে আল্লাহ্র প্রদর্শিত পথে তার কর্তব্য কর্ম করে যাবেন। পার্থিব কোনও ভয় তাঁকে গ্রাস করবে না – এই আল্লাহ্র হুকুম। হয়তো মানুষ তাঁকে ভুল বুঝতে পারে , কিন্তু প্রকৃত সত্য আল্লাহ্র নিকট সুষ্পষ্ট। মানুষ হয়তো সত্য ও ভালোকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান আল্লাহ্র নিকট।
উপদেশ : প্রতিটি মোমেন বান্দার জন্য এই আয়াত ও রসুলের জীবন উদাহরণ স্বরূপ।
আয়াতঃ 033.003
আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কার্যনির্বাহীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।
And put your trust in Allâh, and Sufficient is Allâh as a Wakîl (Trustee, or Disposer of affairs).
وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا
Watawakkal AAala Allahi wakafa biAllahi wakeelan
YUSUFALI: And put thy trust in Allah, and enough is Allah as a disposer of affairs.
PICKTHAL: And put thy trust in Allah, for Allah is sufficient as Trustee.
SHAKIR: And rely on Allah; and Allah is sufficient for a Protector.
KHALIFA: And put your trust in GOD. GOD suffices as an advocate.
০৩। এবং আল্লাহ্র প্রতি তোমার বিশ্বাস স্থাপন কর; এবং কর্মবিধানে আল্লাহ্-ই যথেষ্ট ৩৬৬৮।
৩৬৬৮। মূসলমান জীবনের প্রতিটি ব্যাপারে আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপন করে চলবে। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান এবং আমাদের প্রকৃত অভিভাবক। দেখুন আয়াত [ ৪ : ৮১ ] এবং টিকা ৬০০।
আয়াতঃ 033.004
আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেননি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন।
Allâh has not put for any man two hearts inside his body. Neither has He made your wives whom you declare to be like your mothers’ backs, your real mothers. [AzZihâr is the saying of a husband to his wife, ”You are to me like the back of my mother” i.e. You are unlawful for me to approach.], nor has He made your adopted sons your real sons. That is but your saying with your mouths. But Allâh says the truth, and He guides to the (Right) Way.
مَّا جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِّن قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ وَمَا جَعَلَ أَزْوَاجَكُمُ اللَّائِي تُظَاهِرُونَ مِنْهُنَّ أُمَّهَاتِكُمْ وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءكُمْ أَبْنَاءكُمْ ذَلِكُمْ قَوْلُكُم بِأَفْوَاهِكُمْ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيلَ
Ma jaAAala Allahu lirajulin min qalbayni fee jawfihi wama jaAAala azwajakumu alla-ee tuthahiroona minhunna ommahatikum wama jaAAala adAAiyaakum abnaakum thalikum qawlukum bi-afwahikum waAllahu yaqoolu alhaqqa wahuwa yahdee alssabeela
YUSUFALI: Allah has not made for any man two hearts in his (one) body: nor has He made your wives whom ye divorce by Zihar your mothers: nor has He made your adopted sons your sons. Such is (only) your (manner of) speech by your mouths. But Allah tells (you) the Truth, and He shows the (right) Way.
PICKTHAL: Allah hath not assigned unto any man two hearts within his body, nor hath He made your wives whom ye declare (to be your mothers) your mothers, nor hath He made those whom ye claim (to be your sons) your sons. This is but a saying of your mouths. But Allah saith the truth and He showeth the way.
SHAKIR: Allah has not made for any man two hearts within him; nor has He made your wives whose backs you liken to the backs of your mothers as your mothers, nor has He made those whom you assert to be your sons your real sons; these are the words of your mouths; and Allah speaks the truth and He guides to the way.
KHALIFA: GOD did not give any man two hearts in his chest. Nor did He turn your wives whom you estrange (according to your custom) into your mothers. Nor did He turn your adopted children into genetic offspring. All these are mere utterances that you have invented. GOD speaks the truth, and He guides in the (right) path.
০৪। আল্লাহ্ কোন মানুষের [ একটি ] শরীরে দুটি হৃদয় স্থাপন করেন নাই ৩৬৬৯ ; অথবা তোমাদের যে সকল স্ত্রীকে তোমরা জেহার [ মা বলে সম্বোধন ] কর তাদের তোমাদের মা করেন নাই ৩৬৭০। এবং তোমাদের পোষ্য পুত্রকে পুত্র করেন নাই ৩৬৭১। এগুলি তোমাদের মুখের কথা [ মাত্র ] । কিন্তু আল্লাহ্ [তোমাদের ] সত্য বলেন , এবং তিনি [সঠিক ] পথ দেখিয়ে থাকেন।
৩৬৬৯। “মানুষের শরীরে দুইটি হৃদয় স্থাপন করেন নাই।” দুইটি হৃদয় অর্থাৎ দুইটি অসঙ্গত আত্মবিরোধী আচরণ , যেমন : একই সাথে আল্লাহকে এবং অসদুপায়ে প্রাপ্ত ধনদৌলত বা দুর্নীতির আরাধনা করা সম্ভব নয়। অথবা একই সাথে সত্যের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং কুসংস্কারচ্ছন্ন হওয়া সম্ভব নয়। অথবা মোনাফেকদের ন্যায় একটি জিনিষের ভান করা এবং কিন্তু মনের উদ্দেশ্য বিপরীত থাকা ইত্যাদি। অর্থাৎ দুই বিপরীত আচরণ একই ব্যক্তির চরিত্রে থাকা কোনও প্রকারে সম্ভব নয়। যে দুর্নীতিপরায়ণ বা মোনাফেক বা কুসংস্কারচ্ছন্ন তার আত্মা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে যাবে। সেখানে সত্যের আলো প্রবেশ লাভ করা সম্ভব নয়। কারণ এই-ই হচ্ছে আল্লাহ্র আইন। জাগতিক প্রাকৃতিক আইনের ন্যায় আল্লাহ্ আমাদের জন্য আধ্যাত্মিক আইনের সৃষ্টি করেছেন। সেই আইনের অধীনে এরূপ বিপরীত কর্মধারা একই ব্যক্তির পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এ সবই তখন মোনাফেকীর নামান্তর হয়ে দাঁড়ায়। এই আয়াতে অজ্ঞতার যুগের পৌত্তলিক আরবদের দুইটি খারাপ প্রথার উল্লেখ করা হয়েছে উদাহরণ হিসেবে এবং তাদের অন্যায় আচরণের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। দেখুন টিকা ৩৬৭০ এবং ৩৬৭১।
৩৬৭০। প্রাক্-ইসলামী যুগে আরব সমাজে যদি কোনি ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলতো, ” তুমি আমার জন্য আমার মাতার পৃষ্ঠদেশ ‘ তাহলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যেতো। এভাবে বিয়ের বন্ধনকে ছিন্ন করাকে ইসলামী পরিভাষায় জিহার বলে। আরও দেখুন আয়াত [ ৫৮ : ১ – ৫ ] যেখানে জিহারকে কঠোর ভাষাতে নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। এবং শাস্তির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষ লোকে রাগের বশবর্তী হয়ে এরূপ বাক্য উচ্চারণ করতে পারে তার ফলে তার কোন সামাজিক স্বীকৃতির বা সম্মান হানি ঘটে না; কিন্তু নারীর জন্য সমাজে তা অত্যন্ত অসম্মানজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
৩৬৭১। প্রাক্-ইসলাম যুগে পোষ্য পুত্রকে আপন পুত্রবৎ গণ্য করা হতো। এই আয়াতে বলা হয়েছে পোষ্য পুত্র আপন পুত্র নয়। শরীয়তে পিতা -পুত্রের যে সম্পর্ক নির্ধারিত হয়েছে তা পোষ্য পুত্রের জন্য প্রযোজ্য নয়। পোষ্য পুত্রের ধারণা পিতা-পুত্রের সাধারণ সম্পর্ককে জটিল করতে পারে। কারণ এ ধারণার সাথে রক্তের সম্পর্ক বিদ্যমান নয় -এগুলি শুধুমাত্র একটা ধারণা বা কথার কথা। এগুলি আক্ষরিক , প্রকৃত সত্য নয়। প্রকৃত সত্যকে মুখের কথায় পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। মুখের কথায় জীববিজ্ঞানের বংশগতির ধারাকে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। মুসলিম আইনে পোষ্য পুত্রের ধারণা অমূলক। সেই কারণে তালাকপ্রাপ্ত নিজ পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম কিন্তু পোষ্য পুত্রের বেলাতে এই আইন প্রযোজ্য নয়। দেখুন আয়াত [ ৪ : ২৩ ]।
আয়াতঃ 033.005
তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Call them (adopted sons) by (the names of) their fathers, that is more just with Allâh. But if you know not their father’s (names, call them) your brothers in faith and Mawâlîkum (your freed slaves). And there is no sin on you if you make a mistake therein, except in regard to what your hearts deliberately intend. And Allâh is Ever OftForgiving, Most Merciful.
ادْعُوهُمْ لِآبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِندَ اللَّهِ فَإِن لَّمْ تَعْلَمُوا آبَاءهُمْ فَإِخْوَانُكُمْ فِي الدِّينِ وَمَوَالِيكُمْ وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ فِيمَا أَخْطَأْتُم بِهِ وَلَكِن مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
OdAAoohum li-aba-ihim huwa aqsatu AAinda Allahi fa-in lam taAAlamoo abaahum fa-ikhwanukum fee alddeeni wamawaleekum walaysa AAalaykum junahun feema akhta/tum bihi walakin ma taAAammadat quloobukum wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: Call them by (the names of) their fathers: that is juster in the sight of Allah. But if ye know not their father’s (names, call them) your Brothers in faith, or your maulas. But there is no blame on you if ye make a mistake therein: (what counts is) the intention of your hearts: and Allah is Oft-Returning, Most Merciful.
PICKTHAL: Proclaim their real parentage. That will be more equitable in the sight of Allah. And if ye know not their fathers, then (they are) your brethren in the faith, and your clients. And there is no sin for you in the mistakes that ye make unintentionally, but what your hearts purpose (that will be a sin for you). Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: Assert their relationship to their fathers; this is more equitable with Allah; but if you do not know their fathers, then they are your brethren in faith and your friends; and there is no blame on you concerning that in which you made a mistake, but (concerning) that which your hearts do purposely (blame may rest on you), and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: You shall give your adopted children names that preserve their relationship to their genetic parents. This is more equitable in the sight of GOD. If you do not know their parents, then, as your brethren in religion, you shall treat them as members of your family. You do not commit a sin if you make a mistake in this respect; you are responsible for your purposeful intentions. GOD is Forgiver, Most Merciful.
০৫। তাদেরকে তাদের পিতার নামে ডাক; কেননা আল্লাহ্র নিকট ইহাই অধিক ন্যায়সঙ্গত। তবে যদি তাদের পিতার [নাম ] না জান তবে তারা তোমাদের ধর্মভাই ও বন্ধু ৩৬৭২। এই ব্যাপারে তোমরা যদি কোন ভুল কর,তবে তোমাদের কোন অপরাধ নাই ৩৬৭৩। [ যা বিবেচনা করা হবে তা হচ্ছে ] তোমাদের অন্তরের নিয়ত। আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
৩৬৭২। প্রাক্ -ইসলাম যুগে প্রচলন ছিলো যে স্বাধীনতা প্রাপ্ত ক্রীতদাসকে তাঁর পূর্ব মনিবের সন্তান হিসেবে সম্বোধন করা হতো। সম্ভবতঃ এটা ঘটতো তাঁর পিতৃপরিচয় না জানার কারণে। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে ; পিতৃপরিচয় জানা না থাকলে মাওলা বা উম্মতের নাম ধরে ডাকতে হবে। আরবীতে মাওলা শব্দটি গাঢ় বন্ধুত্বের বন্ধনকে বোঝায়। ‘ভাই’ বা ভাতৃত্ববোধ এগুলির ব্যপক অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। কিন্তু পিতৃত্ব শব্দটি কোনও অবস্থাতেই ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে না।
৩৬৭৩। মিথ্যা কুসংস্কার এবং মনগড়া সম্পর্ককে লালন-পালন করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পৃথিবীতে আল্লাহ্র নিকট রক্তের সম্পর্ক-ই একমাত্র সম্পর্ক বলে স্বীকৃত। মনগড়া সম্পর্ক এরূপ সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে এরূপ সম্পর্ককে উত্থাপন না করে বা ভুলবশতঃ কাউকে অপরের পিতা বা সন্তান বলে সম্বোধন করে , তবে তার জন্য কোনও অপরাধ হবে না। এরূপ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে,” আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ” অপরাধ তাদেরই হবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজ জীবনে ক্ষতি সাধন করার উদ্দেশ্যে এরূপ মনগড়া সম্পর্ককে উপস্থাপন করে থাকে। এই আয়াতে তাদেরই ভত্র্সনা করা হয়েছে তাদের বক্রোক্তি বা পরোক্ষ ইঙ্গিতের জন্য। উদ্দেশ্য যদি মন্দ না হয় সাধারণ ভুলের জন্য আল্লাহ্ অপরাধ নেবেন না।
আয়াতঃ 033.006
নবী মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মুমিন ও মুহাজিরগণের মধ্যে যারা আত্নীয়, তারা পরস্পরে অধিক ঘনিষ্ঠ। তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধুদের প্রতি দয়া-দাক্ষিণ্য করতে চাও, করতে পার। এটা লওহে-মাহফুযে লিখিত আছে।
The Prophet is closer to the believers than their ownselves, and his wives are their (believers’) mothers (as regards respect and marriage). And blood relations among each other have closer personal ties in the Decree of Allâh (regarding inheritance) than (the brotherhood of) the believers and the Muhajirûn (emigrants from Makkah, etc.), except that you do kindness to those brothers (when the Prophet SAW joined them in brotherhood ties). This has been written in the (Allâh’s Book of Divine) Decrees (AlLauh AlMahfûz).”
النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ وَأُوْلُو الْأَرْحَامِ بَعْضُهُمْ أَوْلَى بِبَعْضٍ فِي كِتَابِ اللَّهِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُهَاجِرِينَ إِلَّا أَن تَفْعَلُوا إِلَى أَوْلِيَائِكُم مَّعْرُوفًا كَانَ ذَلِكَ فِي الْكِتَابِ مَسْطُورًا
Alnnabiyyu awla bialmu/mineena min anfusihim waazwajuhu ommahatuhum waoloo al-arhami baAAduhum awla bibaAAdin fee kitabi Allahi mina almu/mineena waalmuhajireena illa an tafAAaloo ila awliya-ikum maAAroofan kana thalika fee alkitabi mastooran
YUSUFALI: The Prophet is closer to the Believers than their own selves, and his wives are their mothers. Blood-relations among each other have closer personal ties, in the Decree of Allah. Than (the Brotherhood of) Believers and Muhajirs: nevertheless do ye what is just to your closest friends: such is the writing in the Decree (of Allah).
PICKTHAL: The Prophet is closer to the believers than their selves, and his wives are (as) their mothers. And the owners of kinship are closer one to another in the ordinance of Allah than (other) believers and the fugitives (who fled from Mecca), except that ye should do kindness to your friends. This is written in the Book (of nature).
SHAKIR: The Prophet has a greater claim on the faithful than they have on themselves, and his wives are (as) their mothers; and the possessors of relationship have the better claim in the ordinance of Allah to inheritance, one with respect to another, than (other) believers, and (than) those who have fled (their homes), except that you do some good to your friends; this is written in the Book.
KHALIFA: The prophet is closer to the believers than they are to each other, and his wives are like mothers to them. The relatives ought to take care of one another in accordance with GOD’s scripture. Thus, the believers shall take care of their relatives who immigrate to them, provided they have taken care of their own families first. These are commandments of this scripture.
০৬। নবী, বিশ্বাসীদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর ৩৬৭৪ ; এবং তাঁর পত্নীগণ তাদের মাতা ৩৬৭৫। আল্লাহ্র বিধান অনুসারে রক্তের সম্পর্ক পরস্পর, অপর বিশ্বাসী মোহাজেরগণ অপেক্ষা অধিক নিকটবর্তী ৩৬৭৬। কিন্তু বন্ধুদের সাথে সদয় ব্যবহার করা যেতে পারে।এ ভাবেই [আল্লাহ্র] বিধানে লেখা আছে।
৩৬৭৪। এই আয়াতের মাধ্যমে রসুলের [সা ] অবস্থানকে বর্ণনা করা হয়েছে। উপরের আয়াতের মাধ্যমে পৃথিবীতে রক্তের সম্পর্ককে সর্বোচ্চ স্থান প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু রসুলের [সা ] প্রতি সম্মান ও জাগতিক সম্পর্ক সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার অধিকারী। কারণ এই সর্ম্পক শুধুমাত্র ইহকালের নয় – মৃত্যুর পরেও আমরা তার উম্মত হিসেবে আল্লাহ্র নিটক পরিচিতি লাভ করবো। সুতারাং মোমেন বান্দারা তাঁকে পিতা-মাতা বা ভাই সকলের উর্দ্ধে স্থাপন করবে, যখন তাদের সাথে কর্তব্য কর্মে সংঘাত দেখা দেবে। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ্র রসুলের সাথে মোমেন বান্দার সম্পর্ক জাগতিক সম্পর্ক অপেক্ষা নিকটতর এবং দৃঢ় যা মৃত্যুর পরেও স্থায়িত্ব লাভ করবে। সে সম্পর্ক ইহকালের ও পরকালের; আত্মার সাথে সে বন্ধন। এমন কি রসুল [সা] আমাদের নিজস্ব সত্ত্বা অপেক্ষা নিকটতর। আমাদের নিজস্ব স্বার্থ বা ভালো মন্দের উর্দ্ধে আমাদের অস্তিত্বের অপেক্ষাও নিকটতম।
৩৬৭৫। দেখুন উপরের টিকা। এই সূরাতে সম্মানীয় রসুলের [সা] পত্নীগণের অবস্থান বর্ণনা করা হয়েছে।সমাজে রসুলের [সা ] পত্নীগণের অবস্থান সাধারণ ছিলো না। আল্লাহ্ তাদের জন্যও বিশেষ কর্তব্য কর্ম নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। তাদের ভূমিকা ছিলো উম্মতের ‘মা ‘ হিসেবে। তারা সাধারণ মহিলাদের ধর্মীয় ব্যাপারে উপদেশ দান করবেন। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন, অসুস্থ ও দুঃখী দুদ্দর্শাগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াবেন। সেই সাথে নবীজির সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখবেন। সমাজ জীবনে তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিলো ব্যপক ও গভীর।
৩৬৭৬। হিজরতের প্রথম দিকে যখন মদিনার মুসলিম সম্প্রদায় নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয় নাই, সেইসময়ে আনসার ও মোহজেরদের মধ্যে ভাতৃসম্পর্ক বিদ্যমান ছিলো। সে হিসেবে আত্মীয়তা থাকুক বা না থাকুক মোহাজেররা আনসার ভাইদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারত্ব লাভ করতো। কিন্তু যখন মূসলিম উম্মত স্থায়িত্ব লাভ করলো, তখন এই ব্যবস্থা রহিত হয়ে গেলো এবং শুধুমাত্র রক্তের সম্পর্ককেই উত্তারাধীকারের নীতি বা ভিত্তি হিসেবে আল্লাহ্ নির্দ্দেশ দান করেন। এই আয়াত এবং সূরা ৮ এর ৭৫ নং আয়াত দ্বারা পূর্বের ব্যবস্থাকে রহিত করা হয়।
আয়াতঃ 033.007
যখন আমি পয়গম্বরগণের কাছ থেকে, আপনার কাছ থেকে এবং নূহ, ইব্রাহীম, মূসা ও মরিয়ম তনয় ঈসার কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম এবং অঙ্গীকার নিলাম তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার।
And (remember) when We took from the Prophets their covenant, and from you (O Muhammad SAW), and from Nûh (Noah), Ibrâhim (Abraham), Mûsa (Moses), and ’Iesa (Jesus), son of Maryam (Mary). We took from them a strong covenant.
وَإِذْ أَخَذْنَا مِنَ النَّبِيِّينَ مِيثَاقَهُمْ وَمِنكَ وَمِن نُّوحٍ وَإِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَأَخَذْنَا مِنْهُم مِّيثَاقًا غَلِيظًا
Wa-ith akhathna mina alnnabiyyeena meethaqahum waminka wamin noohin wa-ibraheema wamoosa waAAeesa ibni maryama waakhathna minhum meethaqan ghaleethan
YUSUFALI: And remember We took from the prophets their covenant: As (We did) from thee: from Noah, Abraham, Moses, and Jesus the son of Mary: We took from them a solemn covenant:
PICKTHAL: And when We exacted a covenant from the prophets, and from thee (O Muhammad) and from Noah and Abraham and Moses and Jesus son of Mary. We took from them a solemn covenant;
SHAKIR: And when We made a covenant with the prophets and with you, and with Nuh and Ibrahim and Musa and Isa, son of Marium, and We made with them a strong covenant
KHALIFA: Recall that we took from the prophets their covenant, including you (O Muhammad), Noah, Abraham, Moses, and Jesus the son of Mary. We took from them a solemn pledge.
০৭। এবং স্মরণ কর ! যখন আমি নবীদের নিকট থেকে অংগীকার নিয়েছিলাম এবং তোমার নিকট থেকেও; এবং নূহ্ , ইব্রাহীম, মুসা ও মরিয়ম তনয় ঈসার নিকট থেকেও। আমি তাদের নিকট থেকে শ্রদ্ধা ভয় মিশ্রিত [দৃঢ়] অংগীকার গ্রহণ করেছিলাম – ৩৬৭৭।
৩৬৭৭। দেখুন আয়াত [ ৩ : ৮১ ]। এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সকল সৃষ্ট পদার্থ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ যে তারা সকলেই আল্লাহ্র আইন মেনে চলবে। আল্লাহ্র আইন হচ্ছে তাদের অস্তিত্বের সাথে জড়িত। জড় পদার্থ বা জীবন্ত প্রাণী সকলেই নির্ভূল ভাবে স্রষ্টার আইন বা ইচ্ছাকে মেনে চলে। না মানার স্বাধীনতা তাদের দেয়া হয় নাই। শুধুমাত্র মানুষকেই স্বাধীনত দান করা হয়েছে সীমিত আকারে। আর সে কারণেই তাদের তা মানতে নির্দ্দেশ দান করা হয়েছে। দেখুন [ ৫ : ১ ] আয়াত। কিন্তু নবী ও রসুলদের জন্য আছে বিশেষ কঠোর ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার যা তাদের পালন করতে হবে। তাঁদের কর্তব্য হচ্ছে নির্ভিকভাবে সত্যকে প্রচার করা, সকল অবস্থায় আল্লাহ্র সেবায় নিয়োজিত থাকা। সমাজে তাদের সম্মানজন অবস্থানকে আল্লাহ্ পূর্বের আয়াতে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাঁদের অনুসারীদের সঠিক পথ প্রদর্শকের বিশাল দায়িত্ব তাদের উপরে নিয়োজিত।
আয়াতঃ 033.008
সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য। তিনি কাফেরদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।
That He may ask the truthfuls (Allâh’s Messengers and His Prophets) about their truth (i.e. the conveyance of Allâh’s Message that which they were charged with). And He has prepared for the disbelievers a painful torment (Hell-fire).
لِيَسْأَلَ الصَّادِقِينَ عَن صِدْقِهِمْ وَأَعَدَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا أَلِيمًا
Liyas-ala alssadiqeena AAan sidqihim waaAAadda lilkafireena AAathaban aleeman
YUSUFALI: That (Allah) may question the (custodians) of Truth concerning the Truth they (were charged with): And He has prepared for the Unbelievers a grievous Penalty.
PICKTHAL: That He may ask the loyal of their loyalty. And He hath prepared a painful doom for the unfaithful.
SHAKIR: That He may question the truthful of their truth, and He has prepared for the unbelievers a painful punishment.
KHALIFA: Subsequently, He will surely question the truthful about their truthfulness, and has prepared for the disbelievers (in this Quranic fact) a painful retribution.
০৮। যেনো [আল্লাহ্ ] সত্যের [তত্বাবধায়কগণকে ] জিজ্ঞাসা করতে পারেন সত্য সম্বন্ধে [ যে দায়িত্বে তারা নিয়োজিত ] ৩৬৭৮। এবং তিনি অবিশ্বাসীদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।
৩৬৭৮। আল্লাহ্র সত্যকে প্রচারের জন্য যাদের দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে তাদের পরলোকে জিজ্ঞাসা করা হবে কিভাবে তাঁরা পৃথিবীতে তাদের কর্তব্য কর্মে অগ্রসর হয়েছেন, কি ভাবে মানুষ তা গ্রহণ করেছে , কি ভাবে তা প্রত্যাখান করেছে ,কারা সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছে। এই মহান দায়িত্ব তাঁদের আমানত। আমানতদারদের মতই তাঁদের এর হিসাব দাখিল করতে হবে মহান আল্লাহ্র কাছে। আল্লাহ্ সবই জানেন তিনি সর্বজ্ঞ। এই হিসাব দাখিল আল্লাহ্র জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে না। কিন্তু এর দ্বারা যারা তাদের বিরোধিতা করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের উপস্থাপন ঘটবে। ফলে যারা সত্য প্রচারে বিরোধিতা ও অসম্মান করেছিলো তাদের দায়িত্ব ও অপরাধ উপলব্ধিতে সাহায্য করবে। সত্যের বাণী প্রচারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে নবী ও রসুলদের কিন্তু তাঁদের পরেও যাদের মাঝে আল্লাহ্র তত্বজ্ঞান বিকাশ লাভ করেছে তাদের উপরেও এই মহান দায়িত্ব অর্পিত হয়।
আয়াতঃ 033.009
হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন শত্রুবাহিনী তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল, অতঃপর আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্চাবায়ু এবং এমন সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলাম, যাদেরকে তোমরা দেখতে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
O you who believe! Remember Allâh’s Favour to you, when there came against you hosts, and We sent against them a wind and forces that you saw not [i.e. troops of angels during the battle of AlAhzâb (the Confederates)]. And Allâh is Ever AllSeer of what you do.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ جَاءتْكُمْ جُنُودٌ فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا وَجُنُودًا لَّمْ تَرَوْهَا وَكَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا
Ya ayyuha allatheena amanoo othkuroo niAAmata Allahi AAalaykum ith jaatkum junoodun faarsalna AAalayhim reehan wajunoodan lam tarawha wakana Allahu bima taAAmaloona baseeran
YUSUFALI: O ye who believe! Remember the Grace of Allah, (bestowed) on you, when there came down on you hosts (to overwhelm you): But We sent against them a hurricane and forces that ye saw not: but Allah sees (clearly) all that ye do.
PICKTHAL: O ye who believe! Remember Allah’s favour unto you when there came against you hosts, and We sent against them a great wind and hosts ye could not see. And Allah is ever Seer of what ye do.
SHAKIR: O you who believe! call to mind the favor of Allah to you when there came down upon you hosts, so We sent against them a strong wind and hosts, that you saw not, and Allah is Seeing what you do.
KHALIFA: O you who believe, remember GOD’s blessing upon you; when soldiers attacked you, we sent upon them violent wind and invisible soldiers. GOD is Seer of everything you do.
রুকু – ২
০৯। হে মুমিনগণ স্মরণ কর আল্লাহ্র অনুগ্রহ যা তোমাদের তিনি [দান ] করেছিলেন, যখন [ দলে দলে] সৈন্যদল তোমাদের [ আক্রমণ] করেছিলো ৩৬৭৯। কিন্তু আমি তাদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলাম প্রবল ঘূর্ণিবার্তা এবং এক বাহিনী যা তোমরা দেখ নাই ৩৬৮০। কিন্তু তারা যা করে আল্লাহ্ তা [ পরিষ্কার ] দেখেন ৩৬৮১।
৩৬৭৯। এই আয়াতের মাধ্যমে পঞ্চম হিজরীতে মদিনা অবরোধের সংগ্রামের শুরু এবং শেষ কে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দুষ্কর্মে সহযোগীদের মৈত্রীবদ্ধ সংঘ একযোগে ইসলামকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়, যার কথা ভূমিকাতে বলা হয়েছে। তাঁদের সৈন্যসংখ্যা ছিলো দশ থেকে বার হাজারের মত। এরূপ বিশাল সেনা বাহিনী সে যুগের জন্য ছিলো নজিরবিহীন ঘটনা। এই যুদ্ধ পরিখার যুদ্ধ নামে খ্যাত।
৩৬৮০। পরিখার যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহ্ বিশ্ববাসীর নিকট তাঁর শক্তিকে উন্মোচন করেছেন। যারা সত্যের জন্য সংগ্রামী এবং আল্লাহ্র উপরে নির্ভরশীল, আল্লাহ্ তাঁদের প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে থাকেন। ঘটনাটি ছিলো এরূপ : বিরোধী দলের মৈত্রীরা যারা মদিনা অবরোধ করতে এসেছিলো তাঁরা ২ -৪ সপ্তাহ মদিনা অবরোধ করে রাখে। যারা সহজ বিজয়ের আশায় এসেছিলো এরূপ অকৃতকার্যতায় তারা হতাশ হয়ে পড়লো। সময়টা ছিলো ফেব্রুয়ারী মাস। মদিনাতে ফেব্রুয়ারী মাসে হাঁড় কাপানো শীতের আগমন ঘটে থাকে, কারণ মদিনা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ ফিট উচ্চে অবস্থিত।
একে তো যুদ্ধে জয়ী না হওয়ার জন্য হতাশা , তদুপরি হাঁড় কাপানো ঠান্ডা এর উপরে শুরু হলো প্রচন্ড ঝড়। বাতাসের বেগে তাদের তাবু ছিড়ে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় , আগুন নিভে যায় এবং বৃষ্টির ঠান্ডা ফোঁটা এবং বালি প্রচন্ড বেগে তাদের চোখে মুখে সূচের মত বিধঁতে থাকে। এসবই তাদের কাছে অশুভ লক্ষণ বলে প্রতিভাত হতে থাকে, তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে প্রকৃতির এই বৈরিতায়। ফলে তারা মানসিক দিক থেকে ভেঙ্গে পড়ে এবং রণে ভঙ্গ দিয়ে প্রস্থান করে। অপর পক্ষে মদিনাবাসীদের সৈন্যসংখ্যা ছিলো মাত্র ৩০০০ এর মত। তার উপরে ইহুদীদের বানু কুরাইজা গোত্র মদিনার অভ্যন্তরে থেকে ক্রমাগত মূসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং মদিনার মোনাফেকেরা তাদের সাথে যুক্ত হয়। দেখুন টিকা ৩৬৬৬। এ সব হচ্ছে মুসমানদের মদিনার অভ্যন্তরের বিরুদ্ধ শক্তি। কিন্তু মুসলমানদের জন্য অদৃশ্য শক্তি কাজ করে – আর তা হচ্ছে আল্লাহ্র সাহায্য। আল্লাহ্র হুকুমে প্রকৃতি তাদের হয়ে কাজ করে এবং ফেরেশতারা অদৃশ্যভাবে মুসলমানদের হয়ে কোরেশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
উপদেশ : সত্যের জন্য সংগ্রামে আল্লাহ্র সাহায্য অবধারিত। যারা ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করে তারা কখনও একা নয়। স্বয়ং আল্লাহ্ তাদের রক্ষাকর্তা।
৩৬৮১। আল্লাহ্ সকল কিছুই দেখেন ও জানেন তিনি সম্যক দ্রষ্টা। মূসলমানদের নৈতিক মনোবল, বিপদের মাঝেও ঠান্ডা মাথায় শৃঙ্খলা রক্ষা করা , অপরপক্ষে শত্রু পক্ষের নিজেদের মাঝে বিশ্বাসহীনতা, দুর্বল মনোবল, ষড়যন্ত্র, এবং স্বর্গীয় শক্তি ব্যতীত শুধুমাত্র পশুশক্তির প্রয়োগ, এ সব কিছুই হচ্ছে আল্লাহ্র অদৃশ্য শক্তির প্রয়োগ যা যুদ্ধের গতিকে ফিরিয়ে দেয়। এ সব ঘটনাতে বহু ধরণের অদৃশ্য শক্তি কাজ করে এবং যুদ্ধ জয়ে সাহায্য করে থাকে। কোনও পক্ষই তা সঠিকভাবে উপলব্ধি করত সক্ষম হয় না।
উপদেশ : আমাদের উপলব্ধির জগতের বাইরেও আল্লাহ্র শক্তি কার্যকর। সুতারাং সাফল্যে কখনও অহংকারে স্ফীত হওয়া উচিত নয়, বরং কৃতজ্ঞ অন্তরে আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা প্রয়োজন। কারণ তাঁরই অদৃশ্য সাহায্য সকল সাফল্যের মূল।
আয়াতঃ 033.010
যখন তারা তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল উচ্চ ভূমি ও নিম্নভূমি থেকে এবং যখন তোমাদের দৃষ্টিভ্রম হচ্ছিল, প্রাণ কন্ঠাগত হয়েছিল এবং তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে নানা বিরূপ ধারণা পোষণ করতে শুরু করছিলে।
When they came upon you from above you and from below you, and when the eyes grew wild and the hearts reached to the throats, and you were harbouring doubts about Allâh.
إِذْ جَاؤُوكُم مِّن فَوْقِكُمْ وَمِنْ أَسْفَلَ مِنكُمْ وَإِذْ زَاغَتْ الْأَبْصَارُ وَبَلَغَتِ الْقُلُوبُ الْحَنَاجِرَ وَتَظُنُّونَ بِاللَّهِ الظُّنُونَا
Ith jaookum min fawqikum wamin asfala minkum wa-ith zaghati al-absaru wabalaghati alquloobu alhanajira watathunnoona biAllahi alththunoona
YUSUFALI: Behold! they came on you from above you and from below you, and behold, the eyes became dim and the hearts gaped up to the throats, and ye imagined various (vain) thoughts about Allah!
PICKTHAL: When they came upon you from above you and from below you, and when eyes grew wild and hearts reached to the throats, and ye were imagining vain thoughts concerning Allah.
SHAKIR: When they came upon you from above you and from below you, and when the eyes turned dull, and the hearts rose up to the throats, and you began to think diverse thoughts of Allah.
KHALIFA: When they came from above you, and from beneath you, your eyes were terrified, your hearts ran out of patience, and you harbored unbefitting thoughts about GOD.
১০। স্মরণ কর ! তারা তোমাদের উপর দিক থেকে ও নীচের দিক থেকে সমাগত হয়েছিলো , এবং দেখো তোমাদের চক্ষু বিস্ফোরিত হয়েছিলো, তোমাদের প্রাণ হয়ে পড়েছিলো কণ্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ্র সম্বন্ধে নানাবিধ ধারণা পোষণ করছিলে ৩৬৮২।
৩৬৮২। কোরাণ শরীফের এই আয়াতে যুদ্ধে নিয়োজিত মুসলমান সৈনিকের মানসিক অবস্থাকে সংক্ষেপে কিন্তু তুলনাহীনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। শত্রুদের আক্রমণ ছিলো প্রচন্ড। পরিখাটি ছিলো আক্রমণাত্মক শত্রুসেনা ও মূসলমানদের মধ্যবর্তী স্থানে, শত্রুদের পিছনে ছিলো উচ্চ ভূমি যাতে মনে হচ্ছিলো যে তারা উচ্চ ভূমি থেকে আগত হচেছ। যখন তারা উপত্যকা অতিক্রম করছিলো বা পরিখা অতিক্রম করার চেষ্টা করছিলো তখন প্রতিভাত হয় যে, তারা নিম্ন অঞ্চল থেকে উপরে উঠে আসছে। অবশ্যই দুপক্ষ থেকে বৃষ্টির ন্যায় অবিরল ধারাতে তীর এবং পাথর নিক্ষিপ্ত হতে থাকে। যুদ্ধ ক্ষেত্রের এই বর্ণনা এবং মুসলমানদের মানসিক অবস্থার বর্ণনা সংক্ষিপ্ত কিন্তু অতুলনীয়।
আয়াতঃ 033.011
সে সময়ে মুমিনগণ পরীক্ষিত হয়েছিল এবং ভীষণভাবে প্রকম্পিত হচ্ছিল।
There, the believers were tried and shaken with a mighty shaking.
هُنَالِكَ ابْتُلِيَ الْمُؤْمِنُونَ وَزُلْزِلُوا زِلْزَالًا شَدِيدًا
Hunalika ibtuliya almu-minoona wazulziloo zilzalan shadeedan
YUSUFALI: In that situation were the Believers tried: they were shaken as by a tremendous shaking.
PICKTHAL: There were the believers sorely tried, and shaken with a mighty shock.
SHAKIR: There the believers were tried and they were shaken with severe shaking.
KHALIFA: That is when the believers were truly tested; they were severely shaken up.
১১। সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বাসীদের পরীক্ষা করা হয়েছিলো। তারা ভীষণ আন্দোলনে আন্দোলিত হয়েছিলো।
১২। এবং স্মরণ কর ! মুনাফেক ও যাদের অন্তরে ছিলো ব্যাধি তারা বলেছিলো, ” আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা প্রবঞ্চনা ব্যতীত অন্য কিছু নয়। ” ৩৬৮৩।
৩৬৮৩। কোরেশদের মদিনা আক্রমণের পূর্বে মুসলমানেরা উত্তরে সিরিয়ার সীমানা পর্যন্ত সাফল্যজনকভাবে উপণীত হয় এবং আশা প্রকাশ করা হয় যে দক্ষিণে ইয়েমেন পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হবে। পূণ্যাত্মা রসুল [সা ] অন্তর্দৃষ্টিতে মুসলমানদের এসব বিজয় প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কিন্তু অবস্থা এই দাঁড়ালো যে বিজয়ের পরিবর্তে মুসলমানের পরিখার মাঝে অবরুদ্ধ থাকতে হচ্ছে। এইরূপ অবস্থা যখন বিরাজমান ,সে সময়ে মোনাফেকরা বিদ্রূপ করে এই বলে যে নবীর প্রতিশ্রুতি প্রতারণা ব্যতীত কিছুই না। কিন্তু সময় ও ঘটনা পরবর্তীতে প্রমাণ করে যে, এগুলি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছিলো না। পরবর্তী কয়েক বছরে মুসলমানদের প্রাপ্তি তাদের আশা আকাঙ্খাকে অতিক্রম করে যায়।
আয়াতঃ 033.012
এবং যখন মুনাফিক ও যাদের অন্তরে রোগ ছিল তারা বলছিল, আমাদেরকে প্রদত্ত আল্লাহ ও রসূলের প্রতিশ্রুতি প্রতারণা বৈ নয়।
And when the hypocrites and those in whose hearts is a disease (of doubts) said: ”Allâh and His Messenger (SAW) promised us nothing but delusions!”
وَإِذْ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ مَّا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا غُرُورًا
Wa-ith yaqoolu almunafiqoona waallatheena fee quloobihim maradun ma waAAadana Allahu warasooluhu illa ghurooran
YUSUFALI: And behold! The Hypocrites and those in whose hearts is a disease (even) say: “Allah and His Messenger promised us nothing but delusion!”
PICKTHAL: And when the hypocrites, and those in whose hearts is a disease, were saying: Allah and His messenger promised us naught but delusion.
SHAKIR: And when the hypocrites and those in whose hearts was a disease began to say: Allah and His Messenger did not promise us (victory) but only to deceive.
KHALIFA: The hypocrites and those with doubts in their hearts said, “What GOD and His messenger promised us was no more than an illusion!”
১১। সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বাসীদের পরীক্ষা করা হয়েছিলো। তারা ভীষণ আন্দোলনে আন্দোলিত হয়েছিলো।
১২। এবং স্মরণ কর ! মুনাফেক ও যাদের অন্তরে ছিলো ব্যাধি তারা বলেছিলো, ” আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল আমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা প্রবঞ্চনা ব্যতীত অন্য কিছু নয়। ” ৩৬৮৩।
৩৬৮৩। কোরেশদের মদিনা আক্রমণের পূর্বে মুসলমানেরা উত্তরে সিরিয়ার সীমানা পর্যন্ত সাফল্যজনকভাবে উপণীত হয় এবং আশা প্রকাশ করা হয় যে দক্ষিণে ইয়েমেন পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হবে। পূণ্যাত্মা রসুল [সা ] অন্তর্দৃষ্টিতে মুসলমানদের এসব বিজয় প্রত্যক্ষ করেছিলেন। কিন্তু অবস্থা এই দাঁড়ালো যে বিজয়ের পরিবর্তে মুসলমানের পরিখার মাঝে অবরুদ্ধ থাকতে হচ্ছে। এইরূপ অবস্থা যখন বিরাজমান ,সে সময়ে মোনাফেকরা বিদ্রূপ করে এই বলে যে নবীর প্রতিশ্রুতি প্রতারণা ব্যতীত কিছুই না। কিন্তু সময় ও ঘটনা পরবর্তীতে প্রমাণ করে যে, এগুলি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছিলো না। পরবর্তী কয়েক বছরে মুসলমানদের প্রাপ্তি তাদের আশা আকাঙ্খাকে অতিক্রম করে যায়।
আয়াতঃ 033.013
এবং যখন তাদের একদল বলেছিল, হে ইয়াসরেববাসী, এটা টিকবার মত জায়গা নয়, তোমরা ফিরে চল। তাদেরই একদল নবীর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে বলেছিল, আমাদের বাড়ী-ঘর খালি, অথচ সেগুলো খালি ছিল না, পলায়ন করাই ছিল তাদের ইচ্ছা।
And when a party of them said: ”O people of Yathrib (AlMadinah)! There is no stand (possible) for you (against the enemy attack!) Therefore go back!” And a band of them ask for permission of the Prophet ( SAW) saying: ”Truly, our homes lie open (to the enemy).” And they lay not open. They but wished to flee.
وَإِذْ قَالَت طَّائِفَةٌ مِّنْهُمْ يَا أَهْلَ يَثْرِبَ لَا مُقَامَ لَكُمْ فَارْجِعُوا وَيَسْتَأْذِنُ فَرِيقٌ مِّنْهُمُ النَّبِيَّ يَقُولُونَ إِنَّ بُيُوتَنَا عَوْرَةٌ وَمَا هِيَ بِعَوْرَةٍ إِن يُرِيدُونَ إِلَّا فِرَارًا
Wa-ith qalat ta-ifatun minhum ya ahla yathriba la muqama lakum fairjiAAoo wayasta/thinu fareequn minhumu alnnabiyya yaqooloona inna buyootana AAawratun wama hiya biAAawratin in yureedoona illa firaran
YUSUFALI: Behold! A party among them said: “Ye men of Yathrib! ye cannot stand (the attack)! therefore go back!” And a band of them ask for leave of the Prophet, saying, “Truly our houses are bare and exposed,” though they were not exposed they intended nothing but to run away.
PICKTHAL: And when a party of them said: O folk of Yathrib! There is no stand (possible) for you, therefor turn back. And certain of them (even) sought permission of the Prophet, saying: Our homes lie open (to the enemy). And they lay not open. They but wished to flee.
SHAKIR: And when a party of them said: O people of Yasrib! there IS no place to stand for you (here), therefore go back; and a party of them asked permission of the prophet, saying. Surely our houses are exposed; and they were not exposed; they only desired to fly away.
KHALIFA: A group of them said, “O people of Yathrib, you cannot attain victory; go back.” Others made up excuses to the prophet: “Our homes are vulnerable,” when they were not vulnerable. They just wanted to flee.
১৩। স্মরণ কর ! তাদের মধ্যে একদল বলেছিলো , ” হে ইয়াথরীব বাসী [মদিনা বাসী] ! তোমরা [আক্রমণ ] প্রতিরোধ করতে পারবে না। সুতারাং ফিরে যাও।” এবং তাদের একদল নবীর নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করে বলেছিলো, ” আমাদের বাড়িঘর সত্যিই অরক্ষিত,” ৩৬৮৪ যদিও তা অরক্ষিত ছিলো না। আসলে, পলায়ন ব্যতীত তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিলো না।
৩৬৮৪। যুদ্ধে অংশগ্রহণে সক্ষম সকল মদিনাবাসীরা শহরের বাইরে এসে নগরী এবং পরিখার মধ্যবর্তী স্থানে তাবু স্থাপন করে। পরিখাটি খনন করা হয়েছিলো মদিনার চতুপার্শ্বে বেষ্টন করে। যদিও মদিনা ছিলো সুরক্ষিত। তবুও মোনাফেকেরা পরাজিত হওয়ার গুজব রটনা করে এবং ভান করে যে, তারা তাদের বাড়ীঘর রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে প্রত্যাবর্তন করতে আগ্রহী। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে তাদের বাড়ীঘর অরক্ষিত বা আক্রান্ত ছিলো না। সদা সর্বদা সর্তক প্রহরীরা পালাক্রমে পরিখার অভ্যন্তরে পাহারা দিতেছিলো। বাড়ী ঘর রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্র ত্যাগ করার আগ্রহ প্রকাশ ছিলো মোনাফেকদের এক কৌশল মাত্র।
আয়াতঃ 033.014
যদি শত্রুপক্ষ চতুর্দিক থেকে নগরে প্রবেশ করে তাদের সাথে মিলিত হত, অতঃপর বিদ্রোহ করতে প্ররোচিত করত, তবে তারা অবশ্যই বিদ্রোহ করত এবং তারা মোটেই বিলম্ব করত না।
And if the enemy had entered from all sides (of the city), and they had been exhorted to AlFitnah (i.e. to renegade from Islâm to polytheism) they would surely have committed it and would have hesitated thereupon but little.
وَلَوْ دُخِلَتْ عَلَيْهِم مِّنْ أَقْطَارِهَا ثُمَّ سُئِلُوا الْفِتْنَةَ لَآتَوْهَا وَمَا تَلَبَّثُوا بِهَا إِلَّا يَسِيرًا
Walaw dukhilat AAalayhim min aqtariha thumma su-iloo alfitnata laatawha wama talabbathoo biha illa yaseeran
YUSUFALI: And if an entry had been effected to them from the sides of the (city), and they had been incited to sedition, they would certainly have brought it to pass, with none but a brief delay!
PICKTHAL: If the enemy had entered from all sides and they had been exhorted to treachery, they would have committed it, and would have hesitated thereupon but little.
SHAKIR: And if an entry were made upon them from the outlying parts of it, then they were asked to wage war, they would certainly have done it, and they would not have stayed in it but a little while.
KHALIFA: Had the enemy invaded and asked them to join, they would have joined the enemy without hesitation.
১৪। যদি [নগরীর ] চতুর্দ্দিক থেকে তাদের বিরুদ্ধে শত্রুদের প্রবেশ ঘটতো, অতঃপর তাদের বিদ্রোহের জন্য প্ররোচিত করা হতো, তবে তারা কিছুমাত্র বিলম্ব না করেই তা [ বিদ্রোহ ] করতো ৩৬৮৫।
৩৬৮৫। যুদ্ধের আসল ধাক্কা ছিলো নগরীর উত্তর প্রান্তে। কিন্তু সম্পূর্ণ পরিখাকে প্রহরী দ্বারা সুরক্ষিত করে রাখা হয়। দুই এক স্থানে শত্রুপক্ষ মুসলমানদের বুহ্য ভেদ করে নগরীতে ঢোকার চেষ্টা করে , কিন্তু তাদের প্রতিহত করা হয়। হযরত আলী বহু যুদ্ধে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেন। আল্লাহ্র নবীর বর্ম ও তরবারী নিয়ে হযরত আলী এই যুদ্ধে অবতরণ করেন। সিংহের ন্যায় তিনি নগরীকে রক্ষা করেন, এই আয়াতে মোনাফেকদের ; অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও তারা পরিখা অবরোধের দ্বারা কোনও রূপ ক্ষতিগ্রস্থ হয় নাই, তবুও শত্রুরা যদি মুসলমানদের বুহ্য ভেদ করে নগরীতে ঢুকতে সক্ষম হতো , তবে তারাই হতো প্রথম ব্যক্তি যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে তৎক্ষণাত অস্ত্র ধারণ করতো। এমন কি বর্ম পরিধান করতে যেটুকু সময়ের প্রয়োজন, সেটুকুও তারা নষ্ট করতো না।
আয়াতঃ 033.015
অথচ তারা পূর্বে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। আল্লাহর অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।
And indeed they had already made a covenant with Allâh not to turn their backs, and a covenant with Allâh must be answered for.
وَلَقَدْ كَانُوا عَاهَدُوا اللَّهَ مِن قَبْلُ لَا يُوَلُّونَ الْأَدْبَارَ وَكَانَ عَهْدُ اللَّهِ مَسْؤُولًا
Walaqad kanoo AAahadoo Allaha min qablu la yuwalloona al-adbara wakana AAahdu Allahi mas-oolan
YUSUFALI: And yet they had already covenanted with Allah not to turn their backs, and a covenant with Allah must (surely) be answered for.
PICKTHAL: And verily they had already sworn unto Allah that they would not turn their backs (to the foe). An oath to Allah must be answered for.
SHAKIR: And certainly they had made a covenant with Allah before, that) they would not turn (their) backs; and Allah’s covenant shall be inquired of.
KHALIFA: They had pledged to GOD in the past that they would not turn around and flee; making a pledge with GOD involves a great responsibility.
১৫। অথচ, উহারা পূর্বেই আল্লাহ্র সাথে অংগীকার করেছিলো যে, উহারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। আল্লাহ্র সাথে কৃত অংগীকার সম্বন্ধে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করা হবে ৩৬৮৬।
৩৬৮৬। ওহদের যুদ্ধের সময়ে যারা যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেছিলো , যুদ্ধের পরে তাদের শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমা করা হয়। তারা প্রতিজ্ঞা করে যে পরবর্তীতে তার অবশ্যই ভালো কাজ প্রদর্শন করবে। তাদের এই প্রতিজ্ঞা ছিলো আল্লাহ্র নবীর সাথে , যা আল্লাহ্র সাথে প্রতিজ্ঞার নামান্তর। এই প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা শাস্তি ব্যতিরেকে অব্যহতি পাওয়া সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 033.016
বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।
Say (O Muhammad SAW to these hypocrites who ask your permission to run away from you): ”Flight will not avail you if you flee from death or killing, and then you will enjoy no more than a little while!”
قُل لَّن يَنفَعَكُمُ الْفِرَارُ إِن فَرَرْتُم مِّنَ الْمَوْتِ أَوِ الْقَتْلِ وَإِذًا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًا
Qul lan yanfaAAakumu alfiraru in farartum mina almawti awi alqatli wa-ithan la tumattaAAoona illa qaleelan
YUSUFALI: Say: “Running away will not profit you if ye are running away from death or slaughter; and even if (ye do escape), no more than a brief (respite) will ye be allowed to enjoy!”
PICKTHAL: Say: Flight will not avail you if ye flee from death or killing, and then ye dwell in comfort but a little while.
SHAKIR: Say: Flight shall not do you any good if you fly from death or slaughter, and in that case you will not be allowed to enjoy yourselves but a little.
KHALIFA: Say, “If you flee, you can never flee from death or from being killed. No matter what happens, you only live a short while longer.”
১৬। বল, ” যদি তোমরা মৃত্যু অথবা হত্যার ভয়ে পলায়ন কর, তবে [ পলায়ন ] তোমাদের কোন উপকারে আসবে না। [সেক্ষেত্রে ] অতি অল্প সময়ের [ অবকাশ ] তোমাদের উপভোগ করতে দেয়া হবে ৩৬৮৭।
৩৬৮৭। কাপুরুষতা কখনও মৃত্যুকে প্রতিহত বা এড়াতে পারে না। যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়নের ফলে সে মিত্র ও শত্রু উভয়েরই রোষের পাত্রে পরিণতত হয়। মিত্ররা তার উপরে হয় ক্রুদ্ধ ও বিরক্ত , শত্রুরা তাকে বিশ্বাস করে না। যদি সে মনে করে যে, কাপুরুষতা ও পলায়ন তাকে মৃত্যু থেকে রেহাই দেবে, তবে সে মহা মূর্খ। কারণ মৃত্যুকে কেহই এড়াতে পারে না। বরং তার জীবনে কাপুরুষতার উপাধি স্থায়ীভাবে আসন লাভ করে এবং সে স্বজনদের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়। কাপুরুষের জীবনের পরিণতি হচ্ছে কলঙ্ক। জীবনে সে কলঙ্ক মোচন করা অসাধ্য।
আয়াতঃ 033.017
বলুন! কে তোমাদেরকে আল্লাহ থেকে রক্ষা করবে যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল ইচ্ছা করেন অথবা তোমাদের প্রতি অনুকম্পার ইচ্ছা? তারা আল্লাহ ব্যতীত নিজেদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যদাতা পাবে না।
Say: ”Who is he who can protect you from Allâh if He intends to harm you, or intends mercy on you?” And they will not find, besides Allâh, for themselves any Walî (protector, supporter, etc.) or any helper.
قُلْ مَن ذَا الَّذِي يَعْصِمُكُم مِّنَ اللَّهِ إِنْ أَرَادَ بِكُمْ سُوءًا أَوْ أَرَادَ بِكُمْ رَحْمَةً وَلَا يَجِدُونَ لَهُم مِّن دُونِ اللَّهِ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
Qul man tha allathee yaAAsimukum mina Allahi in arada bikum soo-an aw arada bikum rahmatan wala yajidoona lahum min dooni Allahi waliyyan wala naseeran
YUSUFALI: Say: “Who is it that can screen you from Allah if it be His wish to give you punishment or to give you Mercy?” Nor will they find for themselves, besides Allah, any protector or helper.
PICKTHAL: Say: Who is he who can preserve you from Allah if He intendeth harm for you, or intendeth mercy for you. They will not find that they have any friend or helper other than Allah.
SHAKIR: Say: Who is it that can withhold you from Allah if He intends to do you evil, rather He intends to show you mercy? And they will not find for themselves besides Allah any guardian or a helper.
KHALIFA: Say, “Who would protect you from GOD if He willed any adversity, or willed any blessing for you?” They can never find, beside GOD, any other Lord and Master.
১৭। বল, ” যদি আল্লাহ্ তোমাদের শাস্তি দিতে চান অথবা তোমাদের অনুগ্রহ দান করতে চান তবে কে তোমাদের আল্লাহ্র নিকট থেকে আবৃত করে রাখবে ? ” ৩৬৮৮। আল্লাহ্ ব্যতীত তারা কোন রক্ষাকর্তা অথবা সাহায্যকারী পাবে না।
৩৬৮৮। এই আয়াতগুলিতে পরিখার যুদ্ধের বর্ণনার মাধ্যমে এই সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে যে, আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম হচ্ছে ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম। যে ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মৃত্যুকে তুচ্ছ জ্ঞান করে, তাঁর পুরষ্কার আল্লাহ্র কাছে রক্ষিত। আর যে আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম থেকে পলায়ন করে সেকি আল্লাহ্র শাস্তি থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারে ? ঠিক সেই ভাবে অনুতাপ ও আত্মসংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভ করা যায় যা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা সম্ভব নয়। মানুষ মাত্রেই দুর্বল। যদি কেউ বিপথে পরিচালিত হয় তবে অনুতাপ ও আত্মসংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্র অনুগ্রহ লাভের পথ তার জন্য উন্মুক্ত। দেখুন পরবর্তী আয়াত [ ৩৩ : ২৪ ] ও টিকা ৩৬৯৮।
আয়াতঃ 033.018
আল্লাহ খুব জানেন তোমাদের মধ্যে কারা তোমাদেরকে বাধা দেয় এবং কারা তাদের ভাইদেরকে বলে, আমাদের কাছে এস। তারা কমই যুদ্ধ করে।
Allâh already knows those among you who keep back (men) from fighting in Allâh’s Cause, and those who say to their brethren ”Come here towards us,” while they (themselves) come not to the battle except a little.
قَدْ يَعْلَمُ اللَّهُ الْمُعَوِّقِينَ مِنكُمْ وَالْقَائِلِينَ لِإِخْوَانِهِمْ هَلُمَّ إِلَيْنَا وَلَا يَأْتُونَ الْبَأْسَ إِلَّا قَلِيلًا
Qad yaAAlamu Allahu almuAAawwiqeena minkum waalqa-ileena li-ikhwanihim halumma ilayna wala ya/toona alba/sa illa qaleelan
YUSUFALI: Verily Allah knows those among you who keep back (men) and those who say to their brethren, “Come along to us”, but come not to the fight except for just a little while.
PICKTHAL: Allah already knoweth those of you who hinder, and those who say unto their brethren: “Come ye hither unto us!” and they come not to the stress of battle save a little,
SHAKIR: Allah knows indeed those among you who hinder others and those who say to their brethren: Come to us; and they come not to the fight but a little,
KHALIFA: GOD is fully aware of the hinderers among you, and those who say to their comrades, “Let us all stay behind.” Rarely do they mobilize for defense.
১৮। আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন মানুষের মধ্যে কারা [ মানুষদের ] বাঁধা দান করে এবং কারা তাদের ভ্রাতৃবর্গকে বলে, “আমাদের সাথে এসো।” ওরা অল্পই যুদ্ধে অংশ নেয়,-
১৯। তোমাদের সাথে [ গণীমতের ভাগের ] লোভের বশবর্তী হয়ে ৩৬৮৯। তারপরে যখন ভয় আসে, তুমি তাদের দেখবে , মৃত্যুর ভয়ে মুর্চ্ছাতুর ব্যক্তির ন্যায় চক্ষু উল্টিয়ে তোমার দিকে চেয়ে আছে। কিন্তু যখন ভীতি দুর হয়ে যাবে, তারা [গনিমতের ] ধনের লোভে তোমাদের তীক্ষ্ণ ভাষায় বিদ্ধ করবে ৩৬৯০। এসব লোকের কোন ঈমান নাই , এবং সে কারণে আল্লাহ্ তাদের কর্ম নিষ্ফল করেছেন ৩৬৯১। এবং আল্লাহ্র জন্য তা সহজ ৩৬৯২।
৩৬৮৯। “Ashihhatan” অর্থ লোলুপ, আকড়াইয়া ধরার জন্য ব্যগ্র, কৃপণ। এখানের অর্থ দ্বিবিধ।
১) মোনাফেকেরা যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকে তোমাদের তুলনায়; তারা মুসলিম বাহিনীর সাহায্য করার ব্যাপারে কৃপণতা প্রকাশ করে; তারা তাদের উদ্যম, ব্যক্তিগত উদ্যম, বা অর্থ সম্পদ খরচের ব্যাপারে কৃপণ। এবং
২) মোনাফেকরা অর্থলোলুপ -যুদ্ধে লুটের মাল হস্তগত করার ব্যাপারে তারা আগ্রহী তবে যুদ্ধ করার ব্যাপারে নয়।
৩৬৯০। এ সব মোনাফেকদের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, এরা আরাম আয়েসের জীবন ত্যাগ করে যুদ্ধের বা সংগ্রামের মাঝে কখনও যাবে না বরং যুদ্ধের মাঝে সংগ্রামের পরিবর্তে তারা ব্যাকুলভাবে রসুলের [ সা ] মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে, রক্ষা পাওয়ার আশায়। কিন্তু যেই বিপদ তিরোহিত হয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আস্ফালন ,দম্ভ, লাফালাফি ও ঝগড়া করার প্রবণতা ফিরে আসে এবং ধন-সম্পদের প্রতি তীব্র লোলুপতা প্রকাশ করে।
উপদেশ : মোনাফেকদের চরিত্রের এই বহিঃপ্রকাশ সে যুগের জন্য যেমন প্রযোজ্য ছিলো ; আজও তা সমভাবে প্রযোজ্য এ হচ্ছে সর্বযুগে মোনাফেকদের চরিত্রের সাধারণ ধর্ম।
৩৬৯১। মোনাফেকদের সকল র্কম নিষ্ফল। এমন কি তাদের কোনও ভালো কাজও আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ তাদের ভালো কাজের নিয়ত ভালো হয় না। তাদের কাজের নিয়ত হয় হিংসা, দ্বেষ, লোভ-লালসা এবং এরা আচরণে হয় কাপুরুষ। আল্লাহ্র কাছে কাজের সাফল্য বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে কাজের নিয়ত। যে কাজ নিঃস্বার্থ ভাবে শুধু মাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত – তাই-ই আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য। মোনাফেকদের কার্যে তা অনুপস্থিত। এ কারণেই আল্লাহ্ তাদের কার্যাবলী “নিষ্ফল করেন।” মহাকালের বিশাল পটভূমিতে কাজের সাফল্য হারিয়ে যায়, কিন্তু কাজের নিয়ত মহাকালের খাতায় লেখা থাকে।
৩৬৯২। মোনাফেকদের কার্যের নিয়ত বা উদ্দেশ্য কখনও সৎ ও নির্মল হয় না। তাই তাদের কাজ আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না। মানুষের পক্ষে মনের অভ্যন্তরের নিয়ত অনুসন্ধান করা অসাধ্য কাজ। কিন্তু আল্লাহ্র জন্য তা অত্যন্ত সহজ। কারণ অন্তরের মোনাফেকী ,ও মিথ্যা লোক দেখানো কাজ ও প্রতারণা – মনের সকল ভাবই আল্লাহ্র নিকট দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট।
আয়াতঃ 033.019
তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়। অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়। তাই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ নিস্ফল করে দিয়েছেন। এটা আল্লাহর জন্যে সহজ।
Being miserly towards you (as regards help and aid in Allâh’s Cause). Then when fear comes, you will see them looking to you, their eyes revolving like (those of) one over whom hovers death, but when the fear departs, they will smite you with sharp tongues, miserly towards (spending anything in any) good (and only covetous of booty and wealth). Such have not believed. Therefore Allâh makes their deeds fruitless, and that is ever easy for Allâh.
أَشِحَّةً عَلَيْكُمْ فَإِذَا جَاء الْخَوْفُ رَأَيْتَهُمْ يَنظُرُونَ إِلَيْكَ تَدُورُ أَعْيُنُهُمْ كَالَّذِي يُغْشَى عَلَيْهِ مِنَ الْمَوْتِ فَإِذَا ذَهَبَ الْخَوْفُ سَلَقُوكُم بِأَلْسِنَةٍ حِدَادٍ أَشِحَّةً عَلَى الْخَيْرِ أُوْلَئِكَ لَمْ يُؤْمِنُوا فَأَحْبَطَ اللَّهُ أَعْمَالَهُمْ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا
Ashihhatan AAalaykum fa-itha jaa alkhawfu raaytahum yanthuroona ilayka tadooru aAAyunuhum kaallathee yughsha AAalayhi mina almawti fa-itha thahaba alkhawfu salaqookum bi-alsinatin hidadin ashihhatan AAala alkhayri ola-ika lam yu/minoo faahbata Allahu aAAmalahum wakana thalika AAala Allahi yaseeran
YUSUFALI: Covetous over you. Then when fear comes, thou wilt see them looking to thee, their eyes revolving, like (those of) one over whom hovers death: but when the fear is past, they will smite you with sharp tongues, covetous of goods. Such men have no faith, and so Allah has made their deeds of none effect: and that is easy for Allah.
PICKTHAL: Being sparing of their help to you (believers). But when the fear cometh, then thou (Muhammad) seest them regarding thee with rolling eyes like one who fainteth unto death. Then, when the fear departeth, they scald you with sharp tongues in their greed for wealth (from the spoil). Such have not believed. Therefor Allah maketh their deeds fruitless. And that is easy for Allah.
SHAKIR: Being niggardly with respect to you; but when fear comes, you will see them looking to you, their eyes rolling like one swooning because of death; but when the fear is gone they smite you with sharp tongues, being niggardly of the good things. These have not believed, therefore Allah has made their doing naught; and this is easy to Allah.
KHALIFA: Also, they are too stingy when dealing with you. If anything threatens the community, you see their eyes rolling with fear, as if death had already come to them. Once the crisis is over, they whip you with sharp tongues. They are too stingy with their wealth. These are not believers, and, consequently, GOD has nullified their works. This is easy for GOD to do.
১৮। আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন মানুষের মধ্যে কারা [ মানুষদের ] বাঁধা দান করে এবং কারা তাদের ভ্রাতৃবর্গকে বলে, “আমাদের সাথে এসো।” ওরা অল্পই যুদ্ধে অংশ নেয়,-
১৯। তোমাদের সাথে [ গণীমতের ভাগের ] লোভের বশবর্তী হয়ে ৩৬৮৯। তারপরে যখন ভয় আসে, তুমি তাদের দেখবে , মৃত্যুর ভয়ে মুর্চ্ছাতুর ব্যক্তির ন্যায় চক্ষু উল্টিয়ে তোমার দিকে চেয়ে আছে। কিন্তু যখন ভীতি দুর হয়ে যাবে, তারা [গনিমতের ] ধনের লোভে তোমাদের তীক্ষ্ণ ভাষায় বিদ্ধ করবে ৩৬৯০। এসব লোকের কোন ঈমান নাই , এবং সে কারণে আল্লাহ্ তাদের কর্ম নিষ্ফল করেছেন ৩৬৯১। এবং আল্লাহ্র জন্য তা সহজ ৩৬৯২।
৩৬৮৯। “Ashihhatan” অর্থ লোলুপ, আকড়াইয়া ধরার জন্য ব্যগ্র, কৃপণ। এখানের অর্থ দ্বিবিধ।
১) মোনাফেকেরা যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকে তোমাদের তুলনায়; তারা মুসলিম বাহিনীর সাহায্য করার ব্যাপারে কৃপণতা প্রকাশ করে; তারা তাদের উদ্যম, ব্যক্তিগত উদ্যম, বা অর্থ সম্পদ খরচের ব্যাপারে কৃপণ। এবং
২) মোনাফেকরা অর্থলোলুপ -যুদ্ধে লুটের মাল হস্তগত করার ব্যাপারে তারা আগ্রহী তবে যুদ্ধ করার ব্যাপারে নয়।
৩৬৯০। এ সব মোনাফেকদের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, এরা আরাম আয়েসের জীবন ত্যাগ করে যুদ্ধের বা সংগ্রামের মাঝে কখনও যাবে না বরং যুদ্ধের মাঝে সংগ্রামের পরিবর্তে তারা ব্যাকুলভাবে রসুলের [ সা ] মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে, রক্ষা পাওয়ার আশায়। কিন্তু যেই বিপদ তিরোহিত হয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আস্ফালন ,দম্ভ, লাফালাফি ও ঝগড়া করার প্রবণতা ফিরে আসে এবং ধন-সম্পদের প্রতি তীব্র লোলুপতা প্রকাশ করে।
উপদেশ : মোনাফেকদের চরিত্রের এই বহিঃপ্রকাশ সে যুগের জন্য যেমন প্রযোজ্য ছিলো ; আজও তা সমভাবে প্রযোজ্য এ হচ্ছে সর্বযুগে মোনাফেকদের চরিত্রের সাধারণ ধর্ম।
৩৬৯১। মোনাফেকদের সকল র্কম নিষ্ফল। এমন কি তাদের কোনও ভালো কাজও আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ তাদের ভালো কাজের নিয়ত ভালো হয় না। তাদের কাজের নিয়ত হয় হিংসা, দ্বেষ, লোভ-লালসা এবং এরা আচরণে হয় কাপুরুষ। আল্লাহ্র কাছে কাজের সাফল্য বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে কাজের নিয়ত। যে কাজ নিঃস্বার্থ ভাবে শুধু মাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত – তাই-ই আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য। মোনাফেকদের কার্যে তা অনুপস্থিত। এ কারণেই আল্লাহ্ তাদের কার্যাবলী “নিষ্ফল করেন।” মহাকালের বিশাল পটভূমিতে কাজের সাফল্য হারিয়ে যায়, কিন্তু কাজের নিয়ত মহাকালের খাতায় লেখা থাকে।
৩৬৯২। মোনাফেকদের কার্যের নিয়ত বা উদ্দেশ্য কখনও সৎ ও নির্মল হয় না। তাই তাদের কাজ আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য হয় না। মানুষের পক্ষে মনের অভ্যন্তরের নিয়ত অনুসন্ধান করা অসাধ্য কাজ। কিন্তু আল্লাহ্র জন্য তা অত্যন্ত সহজ। কারণ অন্তরের মোনাফেকী ,ও মিথ্যা লোক দেখানো কাজ ও প্রতারণা – মনের সকল ভাবই আল্লাহ্র নিকট দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট।
আয়াতঃ 033.020
তারা মনে করে শক্রবাহিনী চলে যায়নি। যদি শক্রবাহিনী আবার এসে পড়ে, তবে তারা কামনা করবে যে, যদি তারা গ্রামবাসীদের মধ্য থেকে তোমাদের সংবাদাদি জেনে নিত, তবেই ভাল হত। তারা তোমাদের মধ্যে অবস্থান করলেও যুদ্ধ সামান্যই করত।
They think that AlAhzâb (the Confederates) have not yet withdrawn, and if AlAhzâb (the Confederates) should come (again), they would wish they were in the deserts (wandering) among the bedouins, seeking news about you (from a far place); and if they (happen) to be among you, they would not fight but little.
يَحْسَبُونَ الْأَحْزَابَ لَمْ يَذْهَبُوا وَإِن يَأْتِ الْأَحْزَابُ يَوَدُّوا لَوْ أَنَّهُم بَادُونَ فِي الْأَعْرَابِ يَسْأَلُونَ عَنْ أَنبَائِكُمْ وَلَوْ كَانُوا فِيكُم مَّا قَاتَلُوا إِلَّا قَلِيلًا
Yahsaboona al-ahzaba lam yathhaboo wa-in ya/ti al-ahzabu yawaddoo law annahum badoona fee al-aAArabi yas-aloona AAan anba-ikum walaw kanoo feekum ma qataloo illa qaleelan
YUSUFALI: They think that the Confederates have not withdrawn; and if the Confederates should come (again), they would wish they were in the deserts (wandering) among the Bedouins, and seeking news about you (from a safe distance); and if they were in your midst, they would fight but little.
PICKTHAL: They hold that the clans have not retired (for good); and if the clans should advance (again), they would fain be in the desert with the wandering Arabs, asking for the news of you; and if they were among you, they would not give battle, save a little.
SHAKIR: They think the allies are not gone, and if the allies should come (again) they would fain be in the deserts with the desert Arabs asking for news about you, and if they were among you they would not fight save a little.
KHALIFA: They thought that the parties might come back. In that case, they would wish that they were lost in the desert, asking about your news from afar. Had the parties attacked you while they were with you, they would rarely support you.
২০। তারা মনে করে যে, [কাফেরদের ] সম্মিলিত বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় নাই। এবং যদি সম্মিলিত বাহিনী [পুণরায়] এসে পড়তো তখন ,তারা ইচ্ছা করবে যে, তারা মরুভূমির মাঝে বেদুঈনদের সাথে [ঘুরে ] বেড়াবে এবং [ নিরাপদ দূরত্ব থেকে ] তোমাদের সংবাদ নেবে ৩৬৯৩। এবং যদি তারা তোমাদের মধ্যেও থাকতো, তবে তারা খুব অল্পই যুদ্ধ করতো।
৩৬৯৩। মোনাফেকদের চরিত্রের এবং মানসিকতার বর্ণনা শুরু হয়েছে ১২নং আয়াত থেকে। আসুন আমরা তা বিশ্লেষণ করি।
১) মোনাফেকরা হয় সুবিধাবাদী , সুতারাং যুদ্ধের রণদামামা তাদের ভীত ও সন্ত্রস্ত করে তোলে , কারণ তাদের মধ্যে পরাজয়ের মানসিকতা কাজ করছিলো [ ১২ নং আয়াত ]
২) তারা হয় অবিশ্বস্ত ও আনুগত্যহীন। তারা তাদের আনুগত্যহীনতায় সন্তুষ্ট এবং তারা তা অন্যের অন্তরে সংক্রামিত করতে প্রয়াস পায়। [ ১৩ নং আয়াত ]।
৩) যদি শত্রুরা নগরীতে প্রবেশ লাভ করতো তবে মোনাফেকরা সর্বপ্রথম বিশ্বাসঘাতকতা করে শত্রুদের সাথে যোগদান করতো। [ ১৪ নং আয়াত ]।
৪) তারা বিশ্বস্ততার যে অংগীকার পূর্বে করেছিলো তা ভুলে যায়। তাদের নিকট অংগীকার বা বিশ্বস্ততার কোন মূল্য নাই। [ ১৫ নং আয়াত ]।
৫) তাদের হিসাব নিকাশ সবই বিষয় বুদ্ধি সম্পন্ন অত্যন্ত তুচ্ছ ও নগন্য। তাদের এই তুচ্ছ হিসেব নিকেশে তারা অনুধাবনে অসমর্থ যে যুদ্ধে পলায়ন ও কাপুরুষতা প্রদর্শন কখনও ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না। [১৬ – ১৭ ] নং আয়াত ]।
৬। মোনাফেকরা প্রকৃত সংগ্রামে অংশ গ্রহণে বিরত থাকে ; বরং তারা সহজ ও মধুর কথা ও উপদেশ বিতরণে আগ্রহী এবং বিপদ বা যুদ্ধ শেষে সাফল্য ও যুদ্ধ জয়ের লভ্যাংশ লাভের পুরোধায় অংশ গ্রহণে আগ্রহী। [ ১৮- ১৯ নং আয়াত ]।
৭। এরা এত ভীতু ও কাপুরুষ হয় যে, যুদ্ধ শেষে শত্রুরা চলে যাওয়ার পরও তারা শত্রুদের প্রত্যাবর্তনের ভয়ে প্রকম্পিত হতে থাকে এবং তখন তারা কি করবে সেই কল্পনায় আত্মনিয়োগ করে। তাদের চিন্তায় স্থান পায় যে, তারা মরুভূমিতে বেদুঈনদের সাথে অবস্থান করবে বা নিরাপদ দূরত্বে থেকে মদিনাবাসীদের বিরুদ্ধে গুপ্তচর বৃত্তি অবম্বলন করবে। যদি মদিনা শত্রুদের অধিকারে চলে যায়, তবে তারা মদিনাবসীদের মাঝে থাকলেও খুব সামান্যই যুদ্ধ করতো। [ ২০ নং আয়াত ]।
[ ১২ – ২০ ] নং আয়াত সমূহে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র ও অশুভ তৎপরতার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তবে এ বর্ণনার ভাষা সার্বজনীন যুগকাল অতিক্রান্ত। মোনাফেকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সে যুগের যা ছিলো , আজও তা সমভাবে বিদ্যমান। মদিনাবাসীদের মধ্যে এরূপ মোনাফেকদের অবস্থান সত্বেও রসুল [সা ] ও তাঁর অনুসারীরা অসম যুদ্ধে জয়লাভ করেন এটা একটা অলৌকিক কর্মকান্ড বটে। আল্লাহ্ যাকে সাহায্য করেন তার জয় অবধারিত। রসুলের জীবনীর মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছেন।
আয়াতঃ 033.021
যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।
Indeed in the Messenger of Allâh (Muhammad SAW) you have a good example to follow for him who hopes in (the Meeting with) Allâh and the Last Day and remembers Allâh much.
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
Laqad kana lakum fee rasooli Allahi oswatun hasanatun liman kana yarjoo Allaha waalyawma al-akhira wathakara Allaha katheeran
YUSUFALI: Ye have indeed in the Messenger of Allah a beautiful pattern (of conduct) for any one whose hope is in Allah and the Final Day, and who engages much in the Praise of Allah.
PICKTHAL: Verily in the messenger of Allah ye have a good example for him who looketh unto Allah and the Last Day, and remembereth Allah much.
SHAKIR: Certainly you have in the Messenger of Allah an excellent exemplar for him who hopes in Allah and the latter day and remembers Allah much.
KHALIFA: The messenger of GOD has set up a good example for those among you who seek GOD and the Last Day, and constantly think about GOD.
রুকু – ৩
২১। যারা আল্লাহ্ শেষ বিচারের দিনে [ মুক্তির ] আশা রাখে, এবং যারা আল্লাহ্র প্রশংসায় নিজেকে নিয়োজিত রাখে, তাদের জন্য রাসুলের [ চরিত্রে ] রয়েছে উত্তম আদর্শ ৩৬৯৪, ৩৬৯৫।
৩৬৯৪। এতক্ষণ মোনাফেকদের মানসিকতা বর্ণনা করা হয়েছে , এবারে মোমেন ব্যক্তিদের মানসিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। যারা আল্লাহ্ ও আখিরাতের ভয় করে, রসুলের [ সা ] জীবন তাদের জন্য অনুসরণীয়।
৩৬৯৫। দেখুন [ ২৬ : ২২৭ ] আয়াত। বিশেষভাবে এই মক্কান সূরার উপবাক্য “And defend themselves after ………………………………. their affairs will take” যা আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি তা মদিনাতে পরিপূর্ণতা লাভ করে।
আয়াতঃ 033.022
যখন মুমিনরা শক্রবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল।
And when the believers saw AlAhzâb (the Confederates), they said: ”This is what Allâh and His Messenger (Muhammad SAW) had promised us, and Allâh and His Messenger (Muhammad SAW) had spoken the truth, and it only added to their faith and to their submissiveness (to Allâh).
وَلَمَّا رَأَى الْمُؤْمِنُونَ الْأَحْزَابَ قَالُوا هَذَا مَا وَعَدَنَا اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَصَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَمَا زَادَهُمْ إِلَّا إِيمَانًا وَتَسْلِيمًا
Walamma raa almu/minoona al-ahzaba qaloo hatha ma waAAadana Allahu warasooluhu wasadaqa Allahu warasooluhu wama zadahum illa eemanan watasleeman
YUSUFALI: When the Believers saw the Confederate forces, they said: “This is what Allah and his Messenger had promised us, and Allah and His Messenger told us what was true.” And it only added to their faith and their zeal in obedience.
PICKTHAL: And when the true believers saw the clans, they said: This is that which Allah and His messenger promised us. Allah and His messenger are true. It did but confirm them in their faith and resignation.
SHAKIR: And when the believers saw the allies, they said: This is what Allah and His Messenger promised us, and Allah and His Messenger spoke the truth; and it only increased them in faith and submission.
KHALIFA: When the true believers saw the parties (ready to attack), they said, “This is what GOD and His messenger have promised us, and GOD and His messenger are truthful.” This (dangerous situation) only strengthened their faith and augmented their submission.
২২। যখন বিশ্বাসীগণ সম্মিলিত বাহিনী দেখেছিলো,তারা বলেছিলো, ” এটা তো তাই-ই , আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল যার প্রতিশ্রুতি আমাদের দিয়েছিলেন ৩৬৯৬ ; এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল সত্য কথাই বলেছিলেন। ” আর এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্যের তীব্রতাই বৃদ্ধি পায়।
৩৬৯৬। বিশ্বাসীদের এই উক্তি ১২ নং আয়াতে বর্ণিত মোনাফেকদের উক্তির বিপরীত। স্বর্গীয় সাহায্যের আশ্বাস ও সফলতা কোন আকস্মিক ঘটনা বা অলৌকিক কর্মকান্ড নয়। আল্লাহ্ বলেছেন যে, তা হবে বিশ্বাস বা ঈমান এবং আন্তরিক চেষ্টার সাথে সম্পর্কযুক্ত বা শর্ত সাপেক্ষে। বিপদ এবং পাপী ও মোশরেকদের সাথে সংঘর্ষের কথা পূর্বেই বলা হয়েছে এবং উপদেশ দান করা হয়েছে তা বীরত্বের সাথে ও সাহসের সাথে মোকাবিলার জন্য
আয়াতঃ 033.023
মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।
Among the believers are men who have been true to their covenant with Allâh [i.e. they have gone out for Jihâd (holy fighting), and showed not their backs to the disbelievers], of them some have fulfilled their obligations (i.e. have been martyred), and some of them are still waiting, but they have never changed [i.e.they never proved treacherous to their covenant which they concluded with Allâh] in the least.
مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُم مَّن قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
Mina almu/mineena rijalun sadaqoo ma AAahadoo Allaha AAalayhi faminhum man qada nahbahu waminhum man yantathiru wama baddaloo tabdeelan
YUSUFALI: Among the Believers are men who have been true to their covenant with Allah: of them some have completed their vow (to the extreme), and some (still) wait: but they have never changed (their determination) in the least:
PICKTHAL: Of the believers are men who are true to that which they covenanted with Allah. Some of them have paid their vow by death (in battle), and some of them still are waiting; and they have not altered in the least;
SHAKIR: Of the believers are men who are true to the covenant which they made with Allah: so of them is he who accomplished his vow, and of them is he who yet waits, and they have not changed in the least
KHALIFA: Among the believers there are people who fulfill their pledges with GOD. Some of them died, while others stand ready, never wavering.
২৩। বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকে আছে যারা আল্লাহ্র সাথে অঙ্গীকার পালনে সত্যবদ্ধ। তাদের মধ্যে কেহ কেহ তাদের প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছে [ শেষ সীমা পর্যন্ত ] ৩৬৯৭ ; এবং কেহ কেহ প্রতীক্ষায় আছে। কিন্তু তারা কখনও [ তাদের সংকল্পের ] এতটুকুও পরিবর্তন করে না।
৩৬৯৭। সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রামে যারা অংশীদার , তাঁরা তাঁদের অর্থ সম্পদ , মেধা মননশক্তি, জ্ঞান , সহায় সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি এমন কি জীবন দান করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তারা সত্যের জন্য, ন্যায়ের সংগ্রামে কখনও বিচলিত বা প্রকম্পিত হন না। যদি তারা মৃত্যু বরণ করেন তবে তা তাদের জন্য শাহাদাতের সম্মান বহন করে আনে। সাদ্-ইবনে- মু’আজ ; যিনি অউস গোত্রের প্রধান ছিলেন, পরিখার যুদ্ধে শাহাদাৎ বরণ করে বিশ্বমানবের মাঝে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন ইসলামের একজন নির্ভিক সৈনিক। তিনি পরিখার যুদ্ধে আহত হন এবং পরে মৃত্যু বরণ করেন। সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রামীরা হয় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন অথবা সংগ্রামের জন্য তারা সদা সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকেন। উভয় দল সত্য ও ন্যায়ের সমর্থনে অবিচল, শঙ্কাহীন, নির্ভয়। তারা কখনও বিচলিত হন না। সত্য ও ন্যায়ের সংগ্রামীদের বৈশিষ্ট্যকে এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।
আয়াতঃ 033.024
এটা এজন্য যাতে আল্লাহ, সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতার কারণে প্রতিদান দেন এবং ইচ্ছা করলে মুনাফেকদেরকে শাস্তি দেন অথবা ক্ষমা করেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
That Allâh may reward the men of truth for their truth (i.e. for their patience at the accomplishment of that which they covenanted with Allâh), and punish the hypocrites if He will or accept their repentance by turning to them in Mercy. Verily, Allâh is OftForgiving, Most Merciful.
لِيَجْزِيَ اللَّهُ الصَّادِقِينَ بِصِدْقِهِمْ وَيُعَذِّبَ الْمُنَافِقِينَ إِن شَاء أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا
Liyajziya Allahu alssadiqeena bisidqihim wayuAAaththiba almunafiqeena in shaa aw yatooba AAalayhim inna Allaha kana ghafooran raheeman
YUSUFALI: That Allah may reward the men of Truth for their Truth, and punish the Hypocrites if that be His Will, or turn to them in Mercy: for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: That Allah may reward the true men for their truth, and punish the hypocrites if He will, or relent toward them (if He will). Lo! Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: That Allah may reward the truthful for their truth, and punish the hypocrites if He please or turn to them (mercifully); surely Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: GOD will surely recompense the truthful for their truthfulness, and will punish the hypocrites, if He so wills, or redeem them. GOD is Forgiver, Most Merciful.
২৪। কারণ আল্লাহ্ যেনো সত্যবাদীদের তাদের সত্যবাদিতার জন্য পুরষ্কৃত করতে পারেন এবং তাঁর ইচ্ছা হলে মোনাফেকদের শাস্তি দিতে পারেন অথবা ক্ষমা করতে পারেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ৩৬৯৮।
৩৬৯৮। আল্লাহ্র করুণার হস্ত পাপী ও অপরাধী সকলের জন্য সর্বদা প্রসারিত। যে কেহ অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের চেষ্টা দ্বারা আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। এমন কি বিশ্বাসঘাতক ও দুষ্কিতিকারী অপরাধীও এই যোগ্যতা লাভে সক্ষম। কিন্তু আল্লাহ্র ক্ষমা আল্লাহ্র পরিকল্পনা ও ইচ্ছা অনুযায়ী ঘটবে। আল্লাহ্ অনুতাপকারীর আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, এবং ভালো হওয়ার ক্ষমতাকে বিচার করবেন। দেখুন পূর্বের আয়াত [ ৩৩ : ১৭ ]।
আয়াতঃ 033.025
আল্লাহ কাফেরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোন কল্যাণ পায়নি। যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
And Allâh drove back those who disbelieved in their rage, they gained no advantage (booty, etc.). Allâh sufficed for the believers in the fighting (by sending against the disbelievers a severe wind and troops of angels). And Allâh is Ever AllStrong, AllMighty.
وَرَدَّ اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَالُوا خَيْرًا وَكَفَى اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ وَكَانَ اللَّهُ قَوِيًّا عَزِيزًا
Waradda Allahu allatheena kafaroo bighaythihim lam yanaloo khayran wakafa Allahu almu/mineena alqitala wakana Allahu qawiyyan AAazeezan
YUSUFALI: And Allah turned back the Unbelievers for (all) their fury: no advantage did they gain; and enough is Allah for the believers in their fight. And Allah is full of Strength, able to enforce His Will.
PICKTHAL: And Allah repulsed the disbelievers in their wrath; they gained no good. Allah averted their attack from the believers. Allah is ever Strong, Mighty.
SHAKIR: And Allah turned back the unbelievers in their rage; they did not obtain any advantage, and Allah sufficed the believers in fighting; and Allah is Strong, Mighty.
KHALIFA: GOD repulsed those who disbelieved with their rage, and they left emptyhanded. GOD thus spared the believers any fighting. GOD is Powerful, Almighty.
২৫। আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন; তারা কোন সুবিধা লাভ করতে পারলো না ৩৬৯৯। যুদ্ধে মুমিনদের জন্য আল্লাহ্-ই যথেষ্ট। এবং আল্লাহ্ শক্তিতে পূর্ণ এবং তাঁর ইচ্ছাকে কার্যকর করতে সক্ষম ৩৭০০।
৩৬৯৯। মক্কাবাসী, মধ্য আরবের বেদুঈন, অতৃপ্ত ইহুদী এবং মদিনার বিশ্বাসঘাতক ইহুদীদের মিলিত শক্তি প্রবল আক্রোশে মদিনা অবরোধ করে। কিন্তু তাদের এই মিলিত শক্তিও মদিনা জয়ে অসমর্থ হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায়। তাদের অন্ধ আক্রোশ তাদের সাফল্য লাভে সহায়তা হয় নাই। তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। কারণ মুমিনদের জন্য আল্লাহ্-ই যথেষ্ট। এরপর থেকে শুরু হয় ইসলামের বিজয়।
৩৭০০। “Aziz” শব্দটির অর্থের জন্য দেখুন টিকা ২৮১৮ ও আয়াত [ ২২ : ৪০ ]।
আয়াতঃ 033.026
কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ।
And those of the people of the Scripture who backed them (the disbelievers) Allâh brought them down from their forts and cast terror into their hearts, (so that) a group (of them) you killed, and a group (of them) you made captives.
وَأَنزَلَ الَّذِينَ ظَاهَرُوهُم مِّنْ أَهْلِ الْكِتَابِ مِن صَيَاصِيهِمْ وَقَذَفَ فِي قُلُوبِهِمُ الرُّعْبَ فَرِيقًا تَقْتُلُونَ وَتَأْسِرُونَ فَرِيقًا
Waanzala allatheena thaharoohum min ahli alkitabi min sayaseehim waqathafa fee quloobihimu alrruAAba fareeqan taqtuloona wata/siroona fareeqan
YUSUFALI: And those of the People of the Book who aided them – Allah did take them down from their strongholds and cast terror into their hearts. (So that) some ye slew, and some ye made prisoners.
PICKTHAL: And He brought those of the People of the Scripture who supported them down from their strongholds, and cast panic into their hearts. Some ye slew, and ye made captive some.
SHAKIR: And He drove down those of the followers of the Book who backed them from their fortresses and He cast awe into their hearts; some you killed and you took captive another part.
KHALIFA: He also brought down their allies among the people of the scripture from their secure positions, and threw terror into their hearts. Some of them you killed, and some you took captive.
২৬। কিতাবীদের ৩৭০১ মধ্যে যারা তাদের সাহায্য করেছিলো, আল্লাহ্ তাদের [ সুরক্ষিত ] দুর্গসমূহ থেকে নীচে নামিয়ে দিলেন ৩৭০২ এবং তাদের অন্তঃকরণে ভয়ের সঞ্চার করলেন ৩৭০৩। [এখন ] তোমরা তাদের কতককে হত্যা করছো, কতককে করছো বন্দী ৩৭০৪।
৩৭০১। এই আয়াতে যাদের উল্লেখ করা হয়েছে তারা ইহুদীদের ‘বানু কোরাইজা’ গোত্র। এরা ছিলো মদিনার অধিবাসী এবং নাগরিক হিসেবে তারা মদিনাবাসীদের সাথে নগরীর নিরাপত্তার জন্য চুক্তিবদ্ধ ছিলো। কিন্তু পরিখার যুদ্ধে যখন নগরীর নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত হলো, তখন তারা মুসলমানদের সাহায্যের পরিবর্তে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং কোরাইশদের মিত্র শক্তির সাথে লিপ্ত হয়, যাতে শত্রুপক্ষ সহজে মদিনা দখল করতে পারে। কিন্তু শত্রুদের মিলিত শক্তিও মদিনা দখলে সমর্থ হয় নাই এবং শেষ পর্যন্ত পর্যুদস্ত শত্রুরা মদিনার অবরোধ ত্যাগ করে দ্রুত ফিরে যায়। অবরোধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে রসুলুল্লাহ্ [সা] এই বিশ্বাসঘাতক ইহুদী গোত্রের প্রতি তার দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন – যারা ঘোর বিপদের দিনে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলো।
৩৭০২। মদিনা অবরোধ শেষে বানু কোরাইজা গোত্র ভয়ে এবং হতাশায় নিমজ্জিত হয়, – কারণ তারা তাদের বিশ্বাসঘাতক কর্মকান্ডের জন্য শঙ্কিত হয়ে পড়ে। মদিনা থেকে ৩/৪ মাইল পূর্বে [ বা উত্তর পূর্বে ] অবস্থিত দুর্গে তারা পলায়ন করে এবং নিজেদের অবরুদ্ধ করে রাখে। মুসলমানরা দুর্গকে অবরোধ করে রাখে। এই অবরুদ্ধ অবস্থায় ইহুদীরা ২৫ দিন পর্যন্ত থাকে এবং শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পন করে এই শর্তে যে, আউস গোত্র প্রধান সা’দ -ইবনে- মুয়াজেরের বিচার ও রায়কে তারা মেনে নেবে। সা’দ -ইব্নে- মুয়াজের গোত্রের সাথে বানু কোরাইশ গোত্র মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ ছিলো।
৩৭০৩। সা’দ ইব্নে মুয়াজ , বানু কোরাইজা গোত্রের জন্য ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ওল্ড টেস্টামেন্টের বর্ণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। [ Deut xx. 10 – 18 ] বর্ণিত আছে সেই নগরীর কথা যা “Which is very far off from thee” যার জন্য এরূপ ক্ষেত্রে কম শাস্তির ব্যবস্থা প্রযোজ্য। অপর পক্ষে “Of those people, which the lord thy God does give thee for an inheritance” অর্থাৎ যে নগরী এত নিকটে যা ইহুদী ধর্মকে কলুষিত করতে পারে তাদের জন্য বর্ণিত শাস্তি হচ্ছে সম্পূর্ণ ধবংস, “Thou Shalt save nothing that breatheth” [ Deut . xx : 16 ] দূরবর্তী নগরীর জন্য কম শাস্তির ব্যবস্থার বিবরণ আছে পরবর্তী টিকাতে। ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থের বিধান অনুযায়ী বানু কোরাইজা গোত্রের সকল পুরুষ , নারী , শিশু , সকলকেই হত্যা করা উচিত – কারণ তারা মদিনার সীমানার মধ্যে বসবাস করতো এবং তারা ঘোর বিপদের দিনে মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। তারা মুসলমানদের সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে।
৩৭০৪। যদিও ইহুদীদের অবস্থান ছিলো মদিনার অভ্যন্তরে,কিন্তু সা’দ তাদের দূরবর্তী নগরীর জন্য প্রাপ্য শাস্তি প্রদান করেন। ইহুদী ধর্ম গ্রন্থ অনুযায়ী দূরবর্তী নগরীর অধিবাসীদের প্রাপ্য শাস্তি হচ্ছে , Thou shalt smite every male there of with the edge of the sword : but the women and the little ones, and the cattle, and all that is in the city, even all the spoil there of , shalt thou take unto thyself, and thou shalt eat the spoil of thine enemies, which the lord thy God hath given theee [ Deut . xx. 13 – 14 ] . ইহুদী ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী কুরাইজা গোত্রের সকল পুরুষকে হত্যা করা হয়, নারীদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে বিক্রী করা হয়, এবং তাদের ভূমি এবং সম্পত্তি মোহাজেরদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।
আয়াতঃ 033.027
তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান।
And He caused you to inherit their lands, and their houses, and their riches, and a land which you had not trodden (before). And Allâh is Able to do all things.
وَأَوْرَثَكُمْ أَرْضَهُمْ وَدِيَارَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ وَأَرْضًا لَّمْ تَطَؤُوهَا وَكَانَ اللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرًا
Waawrathakum ardahum wadiyarahum waamwalahum waardan lam tataooha wakana Allahu AAala kulli shay-in qadeeran
YUSUFALI: And He made you heirs of their lands, their houses, and their goods, and of a land which ye had not frequented (before). And Allah has power over all things.
PICKTHAL: And He caused you to inherit their land and their houses and their wealth, and land ye have not trodden. Allah is ever Able to do all things.
SHAKIR: And He made you heirs to their land and their dwellings and their property, and (to) a land which you have not yet trodden, and Allah has power over all things.
KHALIFA: He made you inherit their land, their homes, their money, and lands you had never stepped on. GOD is in full control of all things.
২৭। এবং তিনি তোমাদের অধিকারী করেছেন তাদের ভূমির , ঘরবাড়ি ও ধন-সম্পদের এবং এমন দেশের যাতে তোমরা পূর্বে কখনও যাতায়াত কর নাই। এবং আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ের উপরে ক্ষমতাবান ৩৭০৫।
৩৭০৫। ” এমন দেশের যাতে তোমরা পূর্বে কখনও যাতায়াত কর নাই।” আয়াতটির এই অংশ হচ্ছে ভবিষ্যদ্বাণী। এই অংশে খাইবারের বিজয় সম্বন্ধে ইঙ্গিত করা হয়েছে। খাইবার হচ্ছে আগ্নেয়গিরির উপত্যকা। এই অঞ্চল আগ্নেয় শিলার অভ্যন্তর থেকে নির্গত বহু প্রস্রবন দ্বারা বিধৌত। ভালো জলসেচন পদ্ধতির ফলে এই অঞ্চল উর্বর উপত্যকাতে রূপান্তরিত হয়। এখানে প্রচুর শষ্য ও ফলমূল উৎপন্ন হয়। এই শষ্য শ্যামল উচ্চ ভূমিতে বহু দূর্গ নির্মিত হয় এবং তা ইহুদীদের জন্য এক বিশাল নিরাপদ ঘাটিরূপে বিবেচিত হয়। রসুলুল্লাহ্র [সা ] সময়ে যে ইহুদী সম্প্রদায় এখানে বাস করতো, পরিখার যুদ্ধ শেষে তারা মুসলমানদের জন্য অবিরাম অস্থিরতা, শত্রুতা ও সংঘর্ষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই স্থান তখন শত্রুভাবাপন্ন ইহুদীদের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে যে সব ইহুদীরা তাদের বিশ্বাসঘাতক আচরণের জন্য বিতাড়িত হতে থাকে, তারা এখানে এসে আশ্রয় লাভ করে এবং নিজেদের জন্য শক্ত ঘাটি প্রস্তুত করে। এই স্থানের রাজধানী ছিলো ‘খাইবার ‘। এর অবস্থান ছিলো মদিনা থেকে ৯০ মাইল উত্তরে। মদিনার মুসলমানদের জন্য এই স্থান বিপদসঙ্কুল হয়ে দাঁড়ায় যার ফলে ইসলামের নির্ভিক সেনা শৈর্যের প্রতীক হযরত আলী, যদিও তিনি সবেমাত্র অসুস্থতা থেকে আরোগ্য লাভ করেন, এই স্থান জয় করেন। আত্মসমর্পনের পরে এই স্থানের ভূমি ব্যবস্থার পরিবর্তন করে উপনিবেশ গড়ে তোলা হয়। কৃষকদের অধীনে তাদের নিজ ভূমিকে প্রত্যার্পন করা হয়, কিন্তু তাদের মুসলমানদের অধীনে রাখা হয় যেনো ভবিষ্যতে তারা মদিনাবাসীদের বিরুদ্ধে কোনও শত্রুতা করতে না পারে।
আয়াতঃ 033.028
হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।
O Prophet (Muhammad SAW)! Say to your wives: If you desire the life of this world, and its glitter, Then come! I will make a provision for you and set you free in a handsome manner (divorce).
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا
Ya ayyuha alnnabiyyu qul li-azwajika in kuntunna turidna alhayata alddunya wazeenataha fataAAalayna omattiAAkunna waosarrihkunna sarahan jameelan
YUSUFALI: O Prophet! Say to thy Consorts: “If it be that ye desire the life of this World, and its glitter,- then come! I will provide for your enjoyment and set you free in a handsome manner.
PICKTHAL: O Prophet! Say unto thy wives: If ye desire the world’s life and its adornment, come! I will content you and will release you with a fair release.
SHAKIR: O Prophet! say to your wives: If you desire this world’s life and its adornment, then come, I will give you a provision and allow you to depart a goodly departing
KHALIFA: O prophet, say to your wives, “If you are seeking this life and its vanities, then let me compensate you and allow you to go amicably.
রুকু – ৪
২৮। হে নবী ! তুমি তোমার স্ত্রীদের বল, ” পার্থিব জীবন এবং ইহার চাকচিক্য যদি হয় তোমাদের কামনা ৩৭০৬, তাহলে এসো, আমি তোমাদের জন্য ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদের বিদায় দেই।
৩৭০৬ এখান থেকে শুরু হয়েছে রসুলুল্লাহ্র [সা] পূণ্যবতী স্ত্রীদের বিষয়বস্তু [ Azwaj mutahharat ]। সমাজে তাদের অবস্থান আর দশজন স্ত্রীলোকদের মত ছিলো না। আল্লাহ্ তাঁদের জন্য বিশেষ দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত করেন। রসুলের [ সা ] জীবনের সর্বপেক্ষা আনন্দময় ও সুখী দাম্পত্য জীবন ছিলো বিবি খাদিজার সাথে পরিণয়। তাঁদের দাম্পত্য জীবন ২৫ বৎসর স্থায়ী হয়। তাঁদের পরস্পরের প্রতি আনুগত্য ছিলো স্বর্গীয়। আধ্যাত্মিক ও সামাজিক দিক থেকেও তা ছিলো অতুলনীয়। বিবি খাদিজা জীবিত অবস্থায় নবীজি অন্য কোনও স্ত্রী গ্রহণ করেন নাই। যা কি না তার সমসাময়িক সামাজিক অবস্থায় এক বিশেষ ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত। যখন বিবি খাদিজা পরলোকে গমন করেন, রসুলের [সা ] বয়স ছিলো ৫০ বৎসর। হয়তো বা রসুল [সা] জীবনে আর বিবাহ-ই করতেন না কারণ তিনি ছিলেন অত্যন্ত সংযমী পুরুষ, কিন্তু শুধুমাত্র দ্বিবিধ কারণে তিনি পুণঃবিবাহ করেন।
১) অসহায় দুঃখী বিধবাদের পুণঃর্বাসনের এক জলন্ত উদাহরণ স্থাপনের জন্য তিনি তা করেন। এসব বিধবারা নিজেদের এবং তাদের সন্তানদের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করতে অক্ষম ছিলো। যেমন ‘সউদা’ সন্তানসহ বিধবা হয় এবং সন্তানের লালন পালনের জন্য তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন ছিলো।
২) রসুলের [সা ] দায়িত্ব ও কর্তব্য কর্মে সাহায্য সহযোগীতার জন্য। ইসলাম পুরুষ ও নারীর যুগল জীবনে বিশ্বাসী। নারীরও পুরুষের ন্যায় সামাজিক জীবনে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সে হিসেবে রসুলের [সা] স্ত্রীদের ভূমিকা চিরজীবন বিশ্ব মুসলিম নারীদের জন্য অবিস্মরণীয় ও অনুকরণীয় হয়ে থাকা প্রয়োজন। এখানে রসুলের [সা] স্ত্রীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে তা শুধুমাত্র স্বামী সেবার মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো না। সমাজের বিভিন্ন কর্মকান্ডে তাঁরা ভূমিকা রেখে গেছেন। হযরত আবু বকরের কন্যা হযরত আয়েশা ছিলেন বুদ্ধিমতী এবং বিদ্বান। হাদিসের তিনি ছিলেন একজন প্রধান প্রবক্তা। হযরত খুজাইসার কন্যা বিবি জয়নাব গরীব দুঃখীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন, তাঁকে “গরীবের মাতা ” উপাধি দান করা হয়। অন্য আর এক জয়নাব ছিলেন হযরত জাহসের কন্যা। তিনিও গরীবের দুঃখ মোচনের জন্য কাজ করতেন। শারীরিক পরিশ্রম দ্বারা তিনি এই কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। তিনি চামড়া শিল্পে একজন দক্ষ ব্যক্তি ছিলেন। বিশেষ লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে নবীজির স্ত্রীগণের সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত সম্মানীয় হওয়া সত্বেও শারীরিক পরিশ্রম থেকে রেহাই দেয়া হয় নাই। মুসলিম উম্মতের মাতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হতো। অলসতা বা বিলাসী জীবনযাত্রা তাদের জন্য ছিলো না। তাদের মনোরঞ্জনের জন্য বা কাজে সাহায্যের জন্য কোনও দাসী বাদী ছিলো না। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, যদি তারা শুধুমাত্র পার্থিব আরাম আয়েশ ও চাকচিক্য কামনা করে, তবে রসুলের [সা ] পবিত্র গৃহে তাদের স্থান নাই। যদি তারা তাই-ই করে তবে তারা তালাক গ্রহণ করতে পারে এবং আল্লাহ্ তাদের জন্য ব্যবস্থা করবেন। খায়বরের যুদ্ধ জয়ের পরে রসুলুল্লাহ্ [সা ] এর স্ত্রীগণ তাঁদের ভরণপোষণের জন্য কিছু অধিক অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ করেন। এই আয়াতগুলিতে সেই ঘটনার প্রতি ইংগিত করা হয়েছে।
আয়াতঃ 033.029
পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন।
But if you desire Allâh and His Messenger, and the home of the Hereafter, then verily, Allâh has prepared for AlMuhsinât (gooddoers) amongst you an enormous reward.
وَإِن كُنتُنَّ تُرِدْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالدَّارَ الْآخِرَةَ فَإِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنَاتِ مِنكُنَّ أَجْرًا عَظِيمًا
Wa-in kuntunna turidna Allaha warasoolahu waalddara al-akhirata fa-inna Allaha aAAadda lilmuhsinati minkunna ajran AAatheeman
YUSUFALI: But if ye seek Allah and His Messenger, and the Home of the Hereafter, verily Allah has prepared for the well-doers amongst you a great reward.
PICKTHAL: But if ye desire Allah and His messenger and the abode of the Hereafter, then lo! Allah hath prepared for the good among you an immense reward.
SHAKIR: And if you desire Allah and His Messenger and the latter abode, then surely Allah has prepared for the doers of good among you a mighty reward.
KHALIFA: “But if you are seeking GOD and His messenger, and the abode of the Hereafter, then GOD has prepared for the righteous among you a great recompense.”
২৯। কিন্তু যদি তোমরা আল্লাহ্র, তাঁর রাসুল এবং পরকালের বাসস্থান অনুসন্ধান কর, তবে তোমাদের মধ্যে যারা সৎকর্মশীল, আল্লাহ্ তাদের জন্য অবশ্যই উত্তম পুরষ্কারের বন্দোবস্ত করেছেন ৩৭০৭।
৩৭০৭। রসুলের [সা ] স্ত্রীগণ সকলেই পূণ্যবতী ছিলেন। কিন্তু সমাজে তাদের বিশেষ সম্মানীয় স্থানের জন্য তাদের উপরে মুসলিম উম্মতের মাতা হিসেবে বিশেষ দায়িত্ব অর্পন করা হয় , এবং তা সম্পাদনের উপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। যারা তা করবেন তাঁদের জন্য আল্লাহ্ মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। কর্ম যত মহৎ হবে আত্মিক তৃপ্তি হবে তত তীব্র এবং স্থায়ী। যদিও তাদের প্রতিদিনের জীবনের জাগতিক আরাম আয়েশের কোনও স্থান বা ব্যবস্থা ছিলো না , কিন্তু আল্লাহ্র তাদের জন্য ইহকালে আধ্যাত্মিক তৃপ্তি এবং পরলোকে সুউচ্চ সম্মানের প্রতিশ্রুতি দান করেছেন।
এ সব আয়াত থেকে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, শুধুমাত্র রসুলের [সা ] স্ত্রী হওয়ার সৌভাগ্যের গুণেই তারা আল্লাহ্র পুরষ্কারের যোগ্য হবেন না। বা শুধু মাত্র স্বামী এবং সংসারের সেবাতে নিজেকে নিয়োজিত করেই আল্লাহ্র পুরষ্কারের যোগ্যতা অর্জন করবেন না। তাঁদের হতে হবে সামাজিক ক্রিয়া কর্মে সক্রিয় এবং সৎকর্মশীল। তবেই তারা আল্লাহ্র পুরষ্কারের যোগ্যতা অর্জন করবেন। এখানে লক্ষণীয় যে, রসুলের [ সা ] স্ত্রীগণের দায়িত্ব কর্তব্য নির্দ্দেশের মাধ্যমে বিশ্ব মুসলিম নারীর দায়িত্ব কর্তব্যের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে। আজ মুসলিম নারীরা যে শুধুমাত্র স্বামী ও সংসারের মাঝে নিজেকে আবদ্ধ করে রেখেছে – তা অবশ্যই আল্লাহ্র বিধান নয়। রসুলের [সা ] স্ত্রীগণের সামাজিক ভূমিকা ও এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্ বহিঃবিশ্বে মুসলিম নারীর ভূমিকার প্রতি ইঙ্গিত দান করেছেন।
আয়াতঃ 033.030
হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।
O wives of the Prophet! Whoever of you commits an open illegal sexual intercourse, the torment for her will be doubled, and that is ever easy for Allâh.
يَا نِسَاء النَّبِيِّ مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا
Ya nisaa alnnabiyyi man ya/ti minkunna bifahishatin mubayyinatin yudaAAaf laha alAAathabu diAAfayni wakana thalika AAala Allahi yaseeran
YUSUFALI: O Consorts of the Prophet! If any of you were guilty of evident unseemly conduct, the Punishment would be doubled to her, and that is easy for Allah.
PICKTHAL: O ye wives of the Prophet! Whosoever of you committeth manifest lewdness, the punishment for her will be doubled, and that is easy for Allah.
SHAKIR: O wives of the prophet! whoever of you commits an open indecency, the punishment shall be increased to her doubly; and this IS easy to Allah.
KHALIFA: O wives of the prophet, if any of you commits a gross sin, the retribution will be doubled for her. This is easy for GOD to do.
৩০। হে নবী পত্নীগণ ! যে কাজ স্পষ্টতঃ অশ্লীল ৩৭০৮ , তোমাদের মধ্যে কেহ তা করলে, তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে এবং ইহা আল্লাহ্র জন্য সহজ ৩৭০৯।
৩৭০৮। “স্পষ্টত অশ্লীল ” – এখানে স্পষ্টতঃ শব্দটি দ্বারা বলা হয়েছে সেই সব কাজ যা কিছু আচরণগত ভাবে নিন্দনীয়। মিথ্যা কলঙ্ক এর মধ্যে অন্তর্গত নয়। এই বাক্যটি দ্বারা মিথ্যা কলঙ্ক ও নিন্দাকে উপেক্ষা করার দিকে ইঙ্গিত দান করা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কেহ যদি প্রকৃত পক্ষে নিন্দনীয় কাজ করে থাকেন সাধারণ নারীদের অপেক্ষা তা হবে অধিক নিন্দনীয়। কারণ তাঁরা হচ্ছেন বিশ্ব -নারীকূলের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁদের আল্লাহ্ সমাজে বিশেষ সম্মানীয় স্থান দান করেছেন , রসুলের [সা ] স্ত্রী হিসেবে যা যুগ কাল অতিক্রান্ত। যুগে যুগে সমগ্র মুসলিম সমাজের অন্তরে যাদের স্থান হবে অম্লান। অবশ্য তাঁরা সকলেই তা রাখতে সক্ষম ছিলেন।
৩৭০৯। দেখুন আয়াত [ ৩৩ : ১৯ ] এবং টিকা ৩৬৯২। বিবাহিত মেয়েদের অসতী হওয়া গর্হিত অপরাধ এবং পৃথিবীতে তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি : অবিবাহিত অবস্থায় যৌন আচরণের জন্য শাস্তি হচ্ছে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত [ ২৪ : ২ ] ; অথবা সমকামিতার জন্য অন্তরীণ আবদ্ধ [ ৪ : ১৫ ] ; অথবা ব্যভিচারের জন্য প্রস্তর নিক্ষেপে মৃত্যু , অবশ্য এই শাস্তিটি কোরাণ শরীফের কোথাও উল্লেখ নাই , তবে বাইবেলে বর্ণিত এই আইনটি ইসলামের প্রথম যুগেও প্রয়োগ করা হতো। যেহেতু এই আয়াতটি রসুলের [ সা ] পত্নীদের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ , সুতারাং এরূপ জঘন্য অশ্লীল পাপের কথা তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তবে যেহেতু তাঁরা সমস্ত মুসলিম রমণীদের অনুকরণীয় এবং তাদের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হয়, এবং তাদের প্রতি মুসলিম উম্মার মাতা হিসেবে বিশেষ কর্তব্য অর্পিত ; সুতারাং সামান্য ভুল ভ্রান্তিও তাদের জন্য নিন্দনীয়। শুধু ইহজগতেই নয় তাদের জন্য পরলোকের শাস্তিও দ্বিগুণ করা হবে।
আয়াতঃ 033.031
তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি।
And whosoever of you is obedient to Allâh and His Messenger SAW , and does righteous good deeds, We shall give her, her reward twice over, and We have prepared for her Rizqan Karima (a noble provision Paradise).
وَمَن يَقْنُتْ مِنكُنَّ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ وَتَعْمَلْ صَالِحًا نُّؤْتِهَا أَجْرَهَا مَرَّتَيْنِ وَأَعْتَدْنَا لَهَا رِزْقًا كَرِيمًا
Waman yaqnut minkunna lillahi warasoolihi wataAAmal salihan nu/tiha ajraha marratayni waaAAtadna laha rizqan kareeman
YUSUFALI: But any of you that is devout in the service of Allah and His Messenger, and works righteousness,- to her shall We grant her reward twice: and We have prepared for her a generous Sustenance.
PICKTHAL: And whosoever of you is submissive unto Allah and His messenger and doeth right, We shall give her her reward twice over, and We have prepared for her a rich provision.
SHAKIR: And whoever of you is obedient to Allah and His Messenger and does good, We will give to her her reward doubly, and We have prepared for her an honorable sustenance.
KHALIFA: Any one of you who obeys GOD and His messenger, and leads a righteous life, we will grant her double the recompense, and we have prepared for her a generous provision.
৩১। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ আল্লাহ্র এবং তাঁর রাসুলের সেবায় অনুগত হবে এবং সৎকাজ করবে, তাঁকে আমি দুবার পুরষ্কৃত করবো ৩৭১০। এবং তাঁর জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক জীবনোপকরণ ৩৭১১।
৩৭১০। ‘দুইবার’ অর্থাৎ তাঁদের সৎকর্যের জন্য তারা দুবার পুরষ্কৃত হবেন। একবার পূণ্যবতী রমণী হিসেবে এবং পুণরায় মুসলমান উম্মার মাতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য। এভাবেই তাঁরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে থাকে।
৩৭১১। ‘রিয্ক ‘ – এই শব্দটি ব্যপক অর্থে ব্যবহৃত। জীবনের সুখ ও স্বাচছন্দের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবই আল্লাহ্র দেয়া রিয্ক। রিয্ক অর্থ শুধুমাত্র আহার্য বোঝায় না।
আয়াতঃ 033.032
হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে।
O wives of the Prophet! You are not like any other women. If you keep your duty (to Allâh), then be not soft in speech, lest he in whose heart is a disease (of hypocrisy, or evil desire for adultery, etc.) should be moved with desire, but speak in an honourable manner.
يَا نِسَاء النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاء إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا
Ya nisaa alnnabiyyi lastunna kaahadin mina alnnisa-i ini ittaqaytunna fala takhdaAAna bialqawli fayatmaAAa allathee fee qalbihi maradun waqulna qawlan maAAroofan
YUSUFALI: O Consorts of the Prophet! Ye are not like any of the (other) women: if ye do fear (Allah), be not too complacent of speech, lest one in whose heart is a disease should be moved with desire: but speak ye a speech (that is) just.
PICKTHAL: O ye wives of the Prophet! Ye are not like any other women. If ye keep your duty (to Allah), then be not soft of speech, lest he in whose heart is a disease aspire (to you), but utter customary speech.
SHAKIR: O wives of the Prophet! you are not like any other of the women; If you will be on your guard, then be not soft in (your) speech, lest he in whose heart is a disease yearn; and speak a good word.
KHALIFA: O wives of the prophet, you are not the same as any other women, if you observe righteousness. (You have a greater responsibility.) Therefore, you shall not speak too softly, lest those with disease in their hearts may get the wrong ideas; you shall speak only righteousness.
৩২। হে নবী পত্নীগণ ! তোমরা [ সাধারণ ] নারীদের মত নও ৩৭১২। যদি তোমরা [আল্লাহকে ] ভয় পাও , তবে [ পর পুরুষের সাথে ] মধুর ভাবে আলাপ করো না , তা হলে যার অন্তরে রোগ আছে সে তোমাদের কামনা করবে। কিন্তু [যা ] ন্যায়সঙ্গত সে কথা বলবে ৩৭১৩।
৩৭১২। “হে নবী পত্নীগণ ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও ” – এই লাইনটি সব আয়াতগুলির সারমর্ম। নবী পত্নীরা অন্য সাধারণ রমণীদের মত নন। তাঁদের বিবাহও সাধারণ রমণীদের ন্যায় সাধারণ ছিলো না। সাধারণ রমণীদের বিবাহ হচ্ছে সামাজিক ও ব্যক্তিগত অঙ্গীকার মাত্র। কিন্তু নবী পত্নীদের বিবাহ সাধারণ বিবাহের যে ধারণা তার থেকে বহু উর্দ্ধে। কারণ তারা হচ্ছেন মুসলিম উম্মার মাতা। তাঁদের জন্য আছে সমাজে বিশেষ সম্মান এবং সমাজের প্রতি তাঁদের রয়েছে বিশেষ কর্তব্য ও দায়িত্ব। স্ত্রীর কর্তব্য ব্যতীতও তাঁরা সাধারণ রমণী, যারা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করতে চায়, তাদের নির্দ্দেশনা দান ও ইসলামের পথে চলতে সাহায্য করার মত দায়িত্ব তাদের উপরে অর্পিত হয়। ইসলাম ধর্ম হচ্ছে এক সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থা এবং সকল মুসলমান এক পরিবারের সদস্য। নারী , পুরুষের মিলিত প্রচেষ্টায় এই পরিবার গঠিত হয়ে থাকে। ইসলামে নারীরও পুরুষের ন্যায় সামাজিক অবস্থানে, বিশেষ স্থান আছে, এবং সে কারণেই নারীর জীবন ব্যবস্থায় একান্ত গোপন ব্যাপারগুলির নির্দ্দেশনা নারীরা নবী পত্নীদের নিকট থেকে গ্রহণ করতেন। আল্লাহ্র হুকুম সমূহ নবী পত্নীদের মাধ্যমে সাধারণ রমণীরা অবগত হতো। কারণ এ সব গোপন ব্যাপার সমূহ পুরুষের প্রকাশ্য মজলিসে আলোচনার বিষয় বস্তু নয়।
৩৭১৩। নবী পত্নীদের উপরে আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে তাঁরা সকলের প্রতি দয়ালু এবং ভদ্র হবে। কিন্তু সকল অবস্থাতেই তারা তাদের সামাজিক সম্মান ও দায়িত্ব কর্তব্য সম্বন্ধে সর্তক থাকবে, যেনো লোকে তাদের ভুল না বোঝে এবং সুযোগ গ্রহণের চেষ্টা না করে। অন্ধকারময় যুগের সংস্কৃতি অনুযায়ী নিজেকে প্রদর্শিত করা থেকে বিরত থাকার নির্দ্দেশ দান করা হয় নবী পত্নীগণকে।
আয়াতঃ 033.033
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।
And stay in your houses, and do not display yourselves like that of the times of ignorance, and perform As-Salât (IqamâtasSalât), and give Zakât and obey Allâh and His Messenger. Allâh wishes only to remove ArRijs (evil deeds and sins, etc.) from you, O members of the family (of the Prophet SAW), and to purify you with a thorough purification.
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
Waqarna fee buyootikunna wala tabarrajna tabarruja aljahiliyyati al-oola waaqimna alssalata waateena alzzakata waatiAAna Allaha warasoolahu innama yureedu Allahu liyuthhiba AAankumu alrrijsa ahla albayti wayutahhirakum tatheeran
YUSUFALI: And stay quietly in your houses, and make not a dazzling display, like that of the former Times of Ignorance; and establish regular Prayer, and give regular Charity; and obey Allah and His Messenger. And Allah only wishes to remove all abomination from you, ye members of the Family, and to make you pure and spotless.
PICKTHAL: And stay in your houses. Bedizen not yourselves with the bedizenment of the Time of Ignorance. Be regular in prayer, and pay the poor-due, and obey Allah and His messenger. Allah’s wish is but to remove uncleanness far from you, O Folk of the Household, and cleanse you with a thorough cleansing.
SHAKIR: And stay in your houses and do not display your finery like the displaying of the ignorance of yore; and keep up prayer, and pay the poor-rate, and obey Allah and His Messenger. Allah only desires to keep away the uncleanness from you, O people of the House! and to purify you a (thorough) purifying.
KHALIFA: You shall settle down in your homes, and do not mingle with the people excessively, like you used to do in the old days of ignorance. You shall observe the Contact Prayers (Salat), and give the obligatory charity (Zakat), and obey GOD and His messenger. GOD wishes to remove all unholiness from you, O you who live around the Sacred Shrine, and to purify you completely.
৩৩। আর তোমরা শান্তভাবে নিজের বাড়ীতে অবস্থান করবে এবং পূর্বের অন্ধকার যুগের ন্যায় নিজেদের চক্ষুধাঁধানো প্রদর্শনী করো না। নিয়মিত নামাজ প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত আদায় কর, এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কর ৩৭১৪। হে নবী পরিবার ! আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে ৩৭১৫।
৩৭১৪। আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যসমূহকে এখানে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে সালাত বা প্রার্থনা [ যার সাহায্যে মানুষ আল্লাহ্র নৈকট্য অনুসন্ধান করে আত্মার মাঝে ] এবং যাকাত দান করা [ সমাজের মঙ্গলের জন্য কাজ করা ]। ইসলামের এই দুটি স্তম্ভকে এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
৩৭১৫। “Ahl-al- Bail” – অর্থাৎ নবী পরিবার। এর মধ্যে নবী পত্নীগণ, নবী কন্যা হযরত ফাতেমা ,নবী জামাতা হযরত আলী, পৌত্র হাসান ও হোসেন এরা সকলেই সাধারণ বর্ণনা অনুযায়ী মুসলিম উম্মার সম্মানের পাত্র।
আয়াতঃ 033.034
আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানগর্ভ কথা, যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয় তোমরা সেগুলো স্মরণ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ সূক্ষ্নদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন।
And remember (O you the members of the Prophet’s family, the Graces of your Lord), that which is recited in your houses of the Verses of Allâh and AlHikmah (i.e. Prophet’s Sunnah legal ways, etc. so give your thanks to Allâh and glorify His Praises for this Qur’an and the Sunnah). Verily, Allâh is Ever Most Courteous, WellAcquainted with all things.
وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلَى فِي بُيُوتِكُنَّ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ وَالْحِكْمَةِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ لَطِيفًا خَبِيرًا
Waothkurna ma yutla fee buyootikunna min ayati Allahi waalhikmati inna Allaha kana lateefan khabeeran
YUSUFALI: And recite what is rehearsed to you in your homes, of the Signs of Allah and His Wisdom: for Allah understands the finest mysteries and is well-acquainted (with them).
PICKTHAL: And bear in mind that which is recited in your houses of the revelations of Allah and wisdom. Lo! Allah is Subtile, Aware.
SHAKIR: And keep to mind what is recited in your houses of the communications of Allah and the wisdom; surely Allah is Knower of subtleties, Aware.
KHALIFA: Remember what is being recited in your homes of GOD’s revelations and the wisdom inherent therein. GOD is Sublime, Cognizant.
৩৪। আল্লাহ্র আয়াত ও তাঁর জ্ঞানের কথা যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা আবৃত্তি করবে ৩৭১৬। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল সুক্ষ রহস্য বুঝতে পারেন এবং [ সে সবের সাথে ] ভালোভাবে পরিচিত ৩৭১৭।
৩৭১৬। “UzKurna” – অর্থ শুধুমাত্র স্মরণ করা নয়, আরও অর্থ হচ্ছে আবৃত্তি করা , শিক্ষাদান করা , প্রচার করা , জনসাধারণ্যে প্রকাশ করা। অর্থাৎ আল্লাহ্ রাসুলের [ সা ] নিকট থেকে নবী পত্নীরা যে জ্ঞান আহরণ করবেন তারা তা প্রকাশ বা প্রচার বা শিক্ষাদান বা আবৃত্তি করবেন। রসুল [ সা ] হচ্ছেন আধ্যাত্মিক জ্ঞানের ঝরণা ধারা বা মূলধারা। কোরাণের আয়াতসমূহ হচ্ছে আল্লাহ্র বিশেষ নিদর্শন সমূহ যা মানুষকে করে বিবেকবান , অর্ন্তদৃষ্টি সম্পন্ন ও জ্ঞানী।
৩৭১৭। দেখুন আয়াত [২২ : ৬৩ ] ও টিকা ২৮৪৪। আল্লাহ্র গুণবাচক নামসমূহের উল্লেখ এখানে করা হয়েছে। আল্লাহ্র প্রতিটি বিষয়ের জ্ঞান অত্যন্ত নির্ভুল এবং তা পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে বর্ণিত। সুতারাং আল্লাহ্র প্রেরিত প্রত্যাদেশ সমূহ অত্যন্ত বিশদ এবং সেখানে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করা হয়েছে।
আয়াতঃ 033.035
নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার।
Verily, the Muslims (those who submit to Allâh in Islâm) men and women, the believers men and women (who believe in Islâmic Monotheism), the men and the women who are obedient (to Allâh), the men and women who are truthful (in their speech and deeds), the men and the women who are patient (in performing all the duties which Allâh has ordered and in abstaining from all that Allâh has forbidden), the men and the women who are humble (before their Lord Allâh), the men and the women who give Sadaqât (i.e. Zakât, and alms, etc.), the men and the women who observe Saum (fast) (the obligatory fasting during the month of Ramadân, and the optional Nawâfil fasting), the men and the women who guard their chastity (from illegal sexual acts) and the men and the women who remember Allâh much with their hearts and tongues (while sitting, standing, lying, etc. for more than 300 times extra over the remembrance of Allâh during the five compulsory congregational prayers) or praying extra additional Nawâfil prayers of night in the last part of night, etc.) Allâh has prepared for them forgiveness and a great reward (i.e. Paradise).
إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ وَالذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
Inna almuslimeena waalmuslimati waalmu/mineena waalmu/minati waalqaniteena waalqanitati waalssadiqeena waalssadiqati waalssabireena waalssabirati waalkhashiAAeena waalkhashiAAati waalmutasaddiqeena waalmutasaddiqati waalssa-imeena waalssa-imati waalhafitheena furoojahum waalhafithati waalththakireena Allaha katheeran waalththakirati aAAadda Allahu lahum maghfiratan waajran AAatheeman
YUSUFALI: For Muslim men and women,- for believing men and women, for devout men and women, for true men and women, for men and women who are patient and constant, for men and women who humble themselves, for men and women who give in Charity, for men and women who fast (and deny themselves), for men and women who guard their chastity, and for men and women who engage much in Allah’s praise,- for them has Allah prepared forgiveness and great reward.
PICKTHAL: Lo! men who surrender unto Allah, and women who surrender, and men who believe and women who believe, and men who obey and women who obey, and men who speak the truth and women who speak the truth, and men who persevere (in righteousness) and women who persevere, and men who are humble and women who are humble, and men who give alms and women who give alms, and men who fast and women who fast, and men who guard their modesty and women who guard (their modesty), and men who remember Allah much and women who remember – Allah hath prepared for them forgiveness and a vast reward.
SHAKIR: Surely the men who submit and the women who submit, and the believing men and the believing women, and the obeying men and the obeying women, and the truthful men and the truthful women, and the patient men and the patient women and the humble men and the humble women, and the almsgiving men and the almsgiving women, and the fasting men and the fasting women, and the men who guard their private parts and the women who guard, and the men who remember Allah much and the women who remember– Allah has prepared for them forgiveness and a mighty reward.
KHALIFA: The submitting men, the submitting women, the believing men, the believing women, the obedient men, the obedient women, the truthful men, the truthful women, the steadfast men, the steadfast women, the reverent men, the reverent women, the charitable men, the charitable women, the fasting men, the fasting women, the chaste men, the chaste women, and the men who commemorate GOD frequently, and the commemorating women; GOD has prepared for them forgiveness and a great recompense.
রুকু – ৫
৩৫। নিশ্চয়ই মুসলিম [ আত্মসমর্পনকারী ] পুরুষ ও নারীগণ , ৩৭১৮ বিশ্বাসী [মোমেন ] পুরুষ ও নারীগণ , অনুগত পুরুষ ও নারীগণ, সত্যবাদী পুরুষ ও নারীগণ, ধৈর্যশীল এবং দৃঢ় পুরুষ ও নারীগণ, বিনয়ী পুরুষ ও নারীগণ, ৩৭১৯ দানশীল পুরুষ ও নারীগণ, রোজা পালনকারী পুরুষ ও নারীগণ, যৌন পবিত্রতা রক্ষাকারী পুরুষ ও নারীগণ, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারীগণ – ৩৭২০, এদের জন্য আল্লাহ্ ক্ষমা ও মহা পুরষ্কার প্রস্তুত রেখেছেন।
৩৭১৮। এই আয়াতে ‘ইসলাম ‘ বা আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্ম সমর্পনকারীর ধর্মসমূহ বর্ণনা করা হয়েছে যার সার সংক্ষেপ করা হয়েছে টিকা ৩৭২০।
৩৭১৯। মোমেন নারী ও পুরুষের গুণসমূহ এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে মোমেন হতে হলে নারী পুরুষ নির্বিশেষ সকলকেই সমভাবে আল্লাহ্ নির্দ্দেশিত গুণে গুণান্বিত হতে হবে। নারী পুরুষ উভয়েরই আধ্যাত্মিক অধিকার এবং মানবিক অধিকার এই আয়াতে সমভাবে স্বীকৃত হয়েছে। এই আয়াত নারীর সম -অধিকারের এক জলন্ত দলিল। নারীকেও আল্লাহ্ পরকালে তাঁর কর্তব্য কর্মের জন্য জবাবদিহিতার সম্মুখীন করবেন এবং তাঁকে শাস্তি বা পুরষ্কার প্রদান করবেন। নারী ও পুরুষ নির্বিশেষ উভয়কে সম্বোধনের মাধ্যমে নারীর অধিকার, দায়িত্ব কর্তব্যকে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং নারীকে পুরুষের সম-মর্যদা দান করা হয়েছে। সুতারাং যারা বলে ইসলামে নারীকে মর্যদা দান করে নাই – তারা অজ্ঞতা থেকেই তা বলে।
৩৭২০। মোমেন নারী ও পুরুষকে যে সব নৈতিক গুণে গুণান্বিত হতে হবে সেগুলি নিম্নরূপ :
১) আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পনকারী অর্থাৎ বিশ্বাসে, আনুগত্যে এবং পার্থিব চাওয়া-পাওয়া, বিপদ -বিপর্যয় জীবনের সব ক্ষেত্রে তারা আল্লাহ্র ইচ্ছাকেই জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া বলে বিবেচনা করে থাকে।
২) মোমেন অর্থাৎ যার মধ্যে আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস ও ভয় একান্ত আন্তরিক। দেখুন টিকা ২৬।
৩) অনুগত অর্থাৎ যারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ্র প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে আন্তরিক ভাবে।
৪) সত্যবাদী অর্থাৎ যারা চিন্তায়, নিয়তে, কথায় ও কাজে সত্যের প্রতি নিবেদিত।
৫) ধৈর্য্যশীল ; অর্থাৎ বিপদে যারা দৃঢ়, অধ্যাবসায়ী , ধৈর্য্যশীল এবং সঠিক পথে কখনও উৎসাহ না হারিয়ে প্রবল ভাবে চেষ্টাশীল। দেখুন টিকা ৬১।
৬) বিনয়ী অর্থাৎ দম্ভ ও অহংকার ও শ্রেষ্ঠত্ব বোধকে ত্যাগ করা।
৭) দানশীল : অপরকে সাহায্য করার মানসিকতা। এটা একটা বিশেষ গুণ যা আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্য বোধ থেকে জাগরিত হয়। ২নং এ যে কর্তব্যের উল্লেখ করা হয়েছে।
৮) সওম পালনকারী বা রোজাদার : এখানে সওম অর্থাৎ আত্মসংযমী – এই সংযম শুধুমাত্র খাদ্যবস্তুতে নয়, রীপু সকল ও জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য।
৯)। যৌন অংগ হিফাজত কারী , যৌন পবিত্রতা পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য। এই সংযম দৈহিক ভাবে যেমন প্রযোজ্য , ঠিক সমভাবে প্রযোজ্য যৌন চিন্তার ক্ষেত্রে, তার নিয়ত , চিন্তা , কথা ,এবং পরিশেষে কাজ। কুদৃষ্টি, কুচিন্তা , কু-উদ্দেশ্য এ সকল ব্যাপারেই সংযমী হওয়ার নির্দ্দেশের অর্ন্তগত।
১০। আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী : অর্থাৎ যারা সর্বদা আল্লাহ্র প্রেরিত বার্তা বা শিক্ষাকে অনুধাবনের চেষ্টা করে এবং ঐকান্তিক ভাবে আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের জন্য চেষ্টা করে থাকে।
উপরিউক্ত গুণাবলী হচ্ছে মুসলমানদের বৈশিষ্ট্য। উল্লেখযোগ্য যে, মুসলিম নারীদেরও মুসলিম পুরুষদের সাথে সমভাবে এক কাতারে সম্বোধন করা হয়েছে। এখানেই ইসলামের দৃষ্টিতে নারী ও পুরুষের সমতা, এখানেই ইসলামের সৌন্দর্য।
আয়াতঃ 033.036
আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়।
It is not for a believer, man or woman, when Allâh and His Messenger have decreed a matter that they should have any option in their decision. And whoever disobeys Allâh and His Messenger, he has indeed strayed in a plain error.
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا
Wama kana limu/minin wala mu/minatin itha qada Allahu warasooluhu amran an yakoona lahumu alkhiyaratu min amrihim waman yaAAsi Allaha warasoolahu faqad dalla dalalan mubeenan
YUSUFALI: It is not fitting for a Believer, man or woman, when a matter has been decided by Allah and His Messenger to have any option about their decision: if any one disobeys Allah and His Messenger, he is indeed on a clearly wrong Path.
PICKTHAL: And it becometh not a believing man or a believing woman, when Allah and His messenger have decided an affair (for them), that they should (after that) claim any say in their affair; and whoso is rebellious to Allah and His messenger, he verily goeth astray in error manifest.
SHAKIR: And it behoves not a believing man and a believing woman that they should have any choice in their matter when Allah and His Messenger have decided a matter; and whoever disobeys Allah and His Messenger, he surely strays off a manifest straying.
KHALIFA: No believing man or believing woman, if GOD and His messenger issue any command, has any choice regarding that command. Anyone who disobeys GOD and His messenger has gone far astray.
৩৬। যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল কোন বিষয়ে নির্দ্দেশ দেন, তখন কোন মোমেন পুরুষ ও কোন মোমেন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না ৩৭২১। যদি কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করে , তবে সে সুস্পষ্টভাবে ভ্রান্ত পথে।
৩৭২১। মানুষ তার ক্ষুদ্র জ্ঞান, বুদ্ধি নিয়ে অনেক সময়েই দম্ভে , অহংকারে নিজেকে আল্লাহ্র থেকে শ্রেষ্ঠ কল্পনা করে থাকে। মানুষের পক্ষে তা করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ – কারণ আল্লাহ্র সাথে প্রতিযোগীতা করা অত্যন্ত হটকারীতা ও অন্যায়। আল্লাহ্র হুকুম আন্তরিক আনুগত্যের সাথে পালন করা উচিত। আমাদের ইচ্ছাকে আল্লাহ্র ইচ্ছার অনুগত করে দেয়া আল্লাহ্র হুকুম।
আয়াতঃ 033.037
আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে।
And (remember) when you said to him (Zaid bin Hârithah ÑÖì the freedslave of the Prophet SAW) on whom Allâh has bestowed Grace (by guiding him to Islâm) and you (O Muhammad SAW too) have done favour (by manumitting him) ”Keep your wife to yourself, and fear Allâh.” But you did hide in yourself (i.e. what Allâh has already made known to you that He will give her to you in marriage) that which Allâh will make manifest, you did fear the people (i.e., Muhammad SAW married the divorced wife of his manumitted slave) whereas Allâh had a better right that you should fear Him. So when Zaid had accomplished his desire from her (i.e. divorced her), We gave her to you in marriage, so that (in future) there may be no difficulty to the believers in respect of (the marriage of) the wives of their adopted sons when the latter have no desire to keep them (i.e. they have divorced them). And Allâh’s Command must be fulfilled.
وَإِذْ تَقُولُ لِلَّذِي أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَنْعَمْتَ عَلَيْهِ أَمْسِكْ عَلَيْكَ زَوْجَكَ وَاتَّقِ اللَّهَ وَتُخْفِي فِي نَفْسِكَ مَا اللَّهُ مُبْدِيهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَاهُ فَلَمَّا قَضَى زَيْدٌ مِّنْهَا وَطَرًا زَوَّجْنَاكَهَا لِكَيْ لَا يَكُونَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ حَرَجٌ فِي أَزْوَاجِ أَدْعِيَائِهِمْ إِذَا قَضَوْا مِنْهُنَّ وَطَرًا وَكَانَ أَمْرُ اللَّهِ مَفْعُولًا
Wa-ith taqoolu lillathee anAAama Allahu AAalayhi waanAAamta AAalayhi amsik AAalayka zawjaka waittaqi Allaha watukhfee fee nafsika ma Allahu mubdeehi watakhsha alnnasa waAllahu ahaqqu an takhshahu falamma qada zaydun minha wataran zawwajnakaha likay la yakoona AAala almu/mineena harajun fee azwaji adAAiya-ihim itha qadaw minhunna wataran wakana amru Allahi mafAAoolan
YUSUFALI: Behold! Thou didst say to one who had received the grace of Allah and thy favour: “Retain thou (in wedlock) thy wife, and fear Allah.” But thou didst hide in thy heart that which Allah was about to make manifest: thou didst fear the people, but it is more fitting that thou shouldst fear Allah. Then when Zaid had dissolved (his marriage) with her, with the necessary (formality), We joined her in marriage to thee: in order that (in future) there may be no difficulty to the Believers in (the matter of) marriage with the wives of their adopted sons, when the latter have dissolved with the necessary (formality) (their marriage) with them. And Allah’s command must be fulfilled.
PICKTHAL: And when thou saidst unto him on whom Allah hath conferred favour and thou hast conferred favour: Keep thy wife to thyself, and fear Allah. And thou didst hide in thy mind that which Allah was to bring to light, and thou didst fear mankind whereas Allah hath a better right that thou shouldst fear Him. So when Zeyd had performed that necessary formality (of divorce) from her, We gave her unto thee in marriage, so that (henceforth) there may be no sin for believers in respect of wives of their adopted sons, when the latter have performed the necessary formality (of release) from them. The commandment of Allah must be fulfilled.
SHAKIR: And when you said to him to whom Allah had shown favor and to whom you had shown a favor: Keep your wife to yourself and be careful of (your duty to) Allah; and you concealed in your soul what Allah would bring to light, and you feared men, and Allah had a greater right that you should fear Him. But when Zaid had accomplished his want of her, We gave her to you as a wife, so that there should be no difficulty for the believers in respect of the wives of their adopted sons, when they have accomplished their want of them; and Allah’s command shall be performed.
KHALIFA: Recall that you said to the one who was blessed by GOD, and blessed by you, “Keep your wife and reverence GOD,” and you hid inside yourself what GOD wished to proclaim. Thus, you feared the people, when you were supposed to fear only GOD. When Zeid was completely through with his wife, we had you marry her, in order to establish the precedent that a man may marry the divorced wife of his adopted son. GOD’s commands shall be done.
৩৭। স্মরণ কর ! যে আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও তোমার আনুকুল্য লাভ করেছিলো ৩৭২২, তুমি তাকে বলেছিলে, “তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে [ বিবাহের ] সম্পর্ক অটুট রাখ এবং আল্লাহকে ভয় কর।” কিন্তু তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করেছ আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিতেছেন, ৩৭২৩। তুমি লোকভয় করছিলে , অথচ আল্লাহ্কেই ভয় করা তোমার পক্ষে অধিকতর সঙ্গত ছিলো ৩৭২৪। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতাসহ [ বিবাহ বন্ধন ] ছিন্ন করলো ৩৭২৫ , তখন আমি তাঁকে [ যয়নবকে ] তোমার সাথে পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ করলাম, [ এজন্য ] যাতে [ভবিষ্যতে ] মুমিনদের পোষ্য পুত্রগণ নিজ স্ত্রীর সাথে [আনুষ্ঠানিকতাসহ ] বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেই সব রমণীকে বিবাহ করায় মুমিনদের কোন বিঘ্ন না হয়। আল্লাহ্র আদেশ কার্যকর হবেই ৩৭২৬।
৩৭২২। ইনি হলেন জায়েদ ইব্ন হারিছা [রা ] যাঁকে রাসুলুল্লাহ্ [ সা ] পোষ্য পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। ইনি ছিলেন , প্রথম যারা ইসলাম গ্রহণ করেন তাদের একজন। রাসুল [ সা ] তাঁকে ক্রীতদাসত্ব থেকে মুক্তি দেন এবং পোষ্যপুত্র রূপে গ্রহণ করেন। তাঁর সাথে রাসুল [ সা ] তাঁর ফুপাতো বোন জয়নাবের বিবাহ দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এই বিয়ে সুখের হয় নাই। দেখুন পরবর্তী টিকা।
৩৭২৩। যায়েদের সাথে রাসুলের ফুপাতো বোন জাহ্সের কন্যা জয়নাবের বিবাহ হয়। এই বিবাহ সুখের হয় নাই, জয়নাব ছিলেন উচ্চ বংশজাত। অপরপক্ষে যায়েদ ছিলেন ক্রীতদাস, যাকে রাসুল [ সা ] মুক্ত করেন এবং বিবাহ দেন। জয়নাব কখনও তাঁর বংশের গৌরব ভুলতে পারেন নাই , তিনি যায়েদকে নীচু দৃষ্টিতে দেখতেন। এখানেই ছিলো তাদের দাম্পত্য জীবনের সংঘর্ষের সূচনা। ব্যক্তিগত ভাবে যায়েদ এবং জয়নাব প্রত্যেকেই ছিলেন একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ। তারা উভয়েই নবীকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে তারা পরস্পর পরস্পরকে বুঝতে পারতেন না, পরস্পরের সাথে খাপ খাওয়াতে পারতেন না। ফলে তাদের দাম্পত্য জীবন সংঘর্ষে পরিণত হয়। যায়েদ জয়নাবকে তালাক দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কিন্তু রসুল [সা ] তাঁকে নিবৃত্ত করেন। জয়নাব ছিলেন রাসুলের [সা ] নিকট আত্মীয় এবং যায়েদের সাথে পরিণয় ছিলো রাসুলের [ সা ] একান্ত ইচ্ছানুযায়ী। এই বিয়েতে রাসুল [ সা ] দম্পত্তি যুগলকে উদার হাতে উপহার প্রদান করেন। এরূপ ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে লোকে মন্দ বলবে এই ভয় রাসুলের [ সা ] অন্তরে স্থান লাভ করে। মুসলিম বিয়ে হচ্ছে একটি সামাজিক চুক্তি। হিন্দুদের মত এর সাথে জন্ম-জন্মান্তরের সম্পর্ক নাই। আল্লাহ্ মানুষকে অসুখী করতে চান না। তিনি মানুষকে সুখী দেখতে চান। বিবাহ বন্ধন হচ্ছে সেই সুখের চাবিকাঠি যা নারী ও পুরুষের পৃথিবীকে বেহেশতে পরিণত করে। সুতারাং এই বন্ধন যেনো দুঃখের কারণ না হয় এই আল্লাহ্র ইচ্ছা। সুতারাং আল্লাহ্র ইচ্ছায় এবং যায়েদ ও জয়নাবের ইচ্ছানুযায়ী বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়। আল্লাহ্র ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত কার্যকর হবে।
৩৭২৪। আল্লাহ্ পৃথিবীতে নারী ও পুরুষকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেছেন সুখ ও শান্তিতে পৃথিবীর জীবনকে অতিবাহিত করার জন্য। কিন্তু যদি এই বন্ধন সুখের না, হয় তবে আল্লাহ্ তা অনুমোদন করেন না। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে অসুখী বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ , তা টিকে রাখা অপেক্ষা। তবে এই বন্ধন ছিন্ন করতে হবে উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা করে , যাতে কেউ কোনও ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। জয়নাবের একান্ত ইচ্ছা ছিলো যে তিনি মুসলিম উম্মতের মাতা হিসেবে সম্মানিত হবেন, এবং নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্মানের সহিত পালন করবেন। আল্লাহ্ তাঁর মনঃস্কামনা পূর্ণ করেন। দেখুন [ ৩৩ : ২৮ ] আয়াত এবং টিকা ৩৭০৬। এই আয়াতের উপদেশ হচ্ছে লোকলজ্জ্বাকে কোনও অবস্থাতেই আল্লাহ্র হুকুমের উপরে স্থান দেয়া চলবে না। আল্লাহ্র হুকুম হচ্ছে ন্যায় ও সত্যের প্রতীক। জীবনের সর্বাবস্থায়, সব কিছুর উপর তাঁর স্থান।
৩৭২৫। “প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা ” এক্ষেত্রে ‘ইদ্দতের ‘ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরে বিবাহের কথা বলা হয়েছে। দেখুন [ ২ : ২৮ ] এবং টিকা ২৫৪।
৩৭২৬। এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ্ পৌত্তলিক আরবদের যুগ যুগান্তরের কুসংস্কারকে ধ্বংস করেন। দেখুন আয়াত [ ৩৩ : ৪ – ৫ ] এবং টিকা ৩৬৭১-৩৬৭২ যেখানে মোশরেক আরবদের আরও কিছু কুসংস্কারের বর্ণনা আছে।
আয়াতঃ 033.038
আল্লাহ নবীর জন্যে যা নির্ধারণ করেন, তাতে তাঁর কোন বাধা নেই পূর্ববর্তী নবীগণের ক্ষেত্রে এটাই ছিল আল্লাহর চিরাচরিত বিধান। আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত।
There is no blame on the Prophet (SAW) in that which Allâh has made legal for him.That has been Allâh’s Way with those who have passed away of (the Prophets of) old. And the Command of Allâh is a decree determined.
مَّا كَانَ عَلَى النَّبِيِّ مِنْ حَرَجٍ فِيمَا فَرَضَ اللَّهُ لَهُ سُنَّةَ اللَّهِ فِي الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلُ وَكَانَ أَمْرُ اللَّهِ قَدَرًا مَّقْدُورًا
Ma kana AAala alnnabiyyi min harajin feema farada Allahu lahu sunnata Allahi fee allatheena khalaw min qablu wakana amru Allahi qadaran maqdooran
YUSUFALI: There can be no difficulty to the Prophet in what Allah has indicated to him as a duty. It was the practice (approved) of Allah amongst those of old that have passed away. And the command of Allah is a decree determined.
PICKTHAL: There is no reproach for the Prophet in that which Allah maketh his due. That was Allah’s way with those who passed away of old – and the commandment of Allah is certain destiny –
SHAKIR: There is no harm in the Prophet doing that which Allah has ordained for him; such has been the course of Allah with respect to those who have gone before; and the command of Allah is a decree that is made absolute:
KHALIFA: The prophet is not committing an error by doing anything that is made lawful by GOD. Such is GOD’s system since the early generations. GOD’s command is a sacred duty.
৩৮। আল্লাহ্ নবীর জন্য যা বিধিসম্মত করেছেন তা পালন করতে তাঁর জন্য কোন বাঁধা নাই ৩৭২৭। পূর্বে যারা গত হয়েছে , তাদের ক্ষেত্রেও ইহাই ছিলো আল্লাহ্র [ অনুমোদিত ] বিধান ৩৭২৮। আল্লাহ্র হুকুমই হচ্ছে নির্ধারিত বিধান ৩৭২৯।
৩৭২৭। দেখুন উপরের টিকা নং ৩৭২৪।
৩৭২৮। “পূর্বে যারা [ নবীরা ] গত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও ইহাই ছিলো আল্লাহ্র বিধান।” এই বাক্যটি পরবর্তী আয়াত [ ৩৯ নং ] এর সাথে সংযুক্ত। কিতাবধারী জাতিসমূহের মধ্যে পোষ্য পুত্রের সম্বন্ধে কোনওরূপ নিষিদ্ধ প্রথা ছিলো না। এই প্রথা চালু ছিলো শুধু মোশরেক আরবদের মধ্যে।
৩৭২৯। মানুষের পার্থিব জীবন পরিচালনার জন্য আল্লাহ্ যে সব বিধান দান করেছেন তা মানুষের কল্যাণের জন্য। তাঁর জ্ঞান অসীম ও প্রজ্ঞাময়। অনেক সময়েই সাময়িক দুঃখ কষ্ট আমাদের বিভ্রান্ত করে। দুঃখের অনলে আমরা তাঁর কল্যাণ স্পর্শকে অনুভবে ব্যর্থ হই। কিন্তু দুঃখ , কষ্ট , সংগ্রাম অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের জন্য হতাশার কারণ না হয়ে আর্শীবাদ স্বরূপ হয়। সুতারাং ব্যর্থতার জন্য হাহাকার না করে বা অসন্তুষ্ট না হয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পুণরায় চেষ্টা করা উচিত। আর এই চেষ্টা হবে আল্লাহ্ নির্ধারিত সুনির্দ্দিষ্ট জীবন বিধান এবং কর্তব্য অনুযায়ী। কারণ আল্লাহ্ আমাদের জন্য যে সুনির্দ্দিষ্ট নীতি বা বিধান দান করেছেন তা বিশ্বজনীন কল্যাণের জন্য , তা পরিবর্তন করা মানুষের পক্ষে অসাধ্য।
আয়াতঃ 033.039
সেই নবীগণ আল্লাহর পয়গাম প্রচার করতেন ও তাঁকে ভয় করতেন। তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যকাউকে ভয় করতেন না। হিসাব গ্রহণের জন্যে আল্লাহ যথেষ্ঠ।
Those who convey the Message of Allâh and fear Him, and fear none save Allâh. And Sufficient is Allâh as a Reckoner.
الَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَالَاتِ اللَّهِ وَيَخْشَوْنَهُ وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلَّا اللَّهَ وَكَفَى بِاللَّهِ حَسِيبًا
Allatheena yuballighoona risalati Allahi wayakhshawnahu wala yakhshawna ahadan illa Allaha wakafa biAllahi haseeban
YUSUFALI: (It is the practice of those) who preach the Messages of Allah, and fear Him, and fear none but Allah. And enough is Allah to call (men) to account. PICKTHAL: Who delivered the messages of Allah and feared Him, and feared none save Allah. Allah keepeth good account.
SHAKIR: Those who deliver the messages of Allah and fear Him, and do not fear any one but Allah; and Allah is sufficient to take account.
KHALIFA: Those who deliver GOD’s messages, and who reverence Him alone, shall never fear anyone but GOD. GOD is the most efficient reckoner.
৩৯। [ তারা মানুষের কাছে ] আল্লাহ্র বাণী প্রচার করতো এবং তাঁকে ভয় করতো এবং আল্লাহকে ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় করতো না। [ মানুষের ] হিসাব গ্রহণের জন্য আল্লাহ্-ই যথেষ্ট ৩৭৩০।
৩৭৩০। পার্থিব জীবনে মানুষের দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে শুধুমাত্র আল্লাহ্র প্রতি। তিনি যে ভাবে আমাদের জীবন পরিচালনা করতে হুকুম দান করেছেন। সে ভাবে পরিচালনা করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। জাগতিক হুকুম বা ভয়ে বা সংস্কারের বশে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। মানুষ সভ্যতার দোহাই দিয়ে বা নিজস্ব মনগড়া ব্যাখ্যার মাধ্যমে এই কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হয়। কিন্তু এখানে বলা হয়েছে , যখনই এরূপ বিভ্রান্তির উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ্র প্রতি কর্তব্যকে সর্বাগ্রে স্থান দিতে হবে, মানুষকে নয়। শুধুমাত্র আল্লাহকেই ভয় করতে হবে মানুষকে নয়।
আয়াতঃ 033.040
মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।
Muhammad (SAW) is not the father of any man among you, but he is the Messenger of Allâh and the last (end) of the Prophets. And Allâh is Ever AllAware of everything.
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
Ma kana muhammadun aba ahadin min rijalikum walakin rasoola Allahi wakhatama alnnabiyyeena wakana Allahu bikulli shay-in AAaleeman
YUSUFALI: Muhammad is not the father of any of your men, but (he is) the Messenger of Allah, and the Seal of the Prophets: and Allah has full knowledge of all things.
PICKTHAL: Muhammad is not the father of any man among you, but he is the messenger of Allah and the Seal of the Prophets; and Allah is ever Aware of all things.
SHAKIR: Muhammad is not the father of any of your men, but he is the Messenger of Allah and the Last of the prophets; and Allah is cognizant of all things.
KHALIFA: Muhammad was not the father of any man among you. He was a messenger of GOD and the final prophet. GOD is fully aware of all things.
৪০। মুহম্মদ [সা] তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নয়। কিন্তু সে আল্লাহ্র রাসুল এবং শেষ নবী ৩৭৩১ এবং আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
৩৭৩১। কোনও দলিল বা ফরমান শেষ হওয়ার পরে তা সীলমোহর করা হয়। আর একবার সীলমোহর করার পরে তাতে আর নূতন কিছু সংযুক্ত করা হয় না – এই -ই নিয়ম। ঠিক সেরূপ পৃথিবীর আদি যুগ থেকে মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে যুগে যুগে আল্লাহ্ পৃথিবীতে রসুলদের প্রেরণ করেছেন। তাঁরা আল্লাহ্র বাণী শিক্ষা দিয়েছেন এবং মানব সভ্যতাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে অগ্রসর করেছেন। সভ্যতার ধারাবাহিকতায়, মানুষের মানসিক বিকাশের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ ভাবে আল্লাহ্র শিক্ষা ধারাবাহিক ভাবে যুগে যুগে নবী রসুলদের মাধ্যমে ধরাপৃষ্ঠে প্রেরণ করা হয়। এই সুদীর্ঘ ধারাবাহিকতাতে হযরত মুহম্মদ [ সা ] শেষ নবী। মানুষের পৃথিবীতে প্রথম আগমন থেকে শুরু করে আল্লাহ্র শিক্ষা ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। কিন্তু হযরত মুহম্মদের [ সা ] পরে আর কোনও রসুলের আগমন হবে না। রসুলদের আগমনের সীলমোহর এখানেই। এর পরে আল্লাহ্ যাদের প্রেরণ করবেন তাঁরা হবেন চিন্তাবিদ , এবং সংস্কারক , কিন্তু কোনও রসুল নয়। আল্লাহ্র এই হুকুম কোনও খামখেয়ালি নয়। এ হচ্ছে আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রকাশ। আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
আয়াতঃ 033.041
মুমিনগণ তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর।
O you who believe! Remember Allâh with much remembrance.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا
Ya ayyuha allatheena amanoo othkuroo Allaha thikran katheeran
YUSUFALI: O ye who believe! Celebrate the praises of Allah, and do this often;
PICKTHAL: O ye who believe! Remember Allah with much remembrance.
SHAKIR: O you who believe! remember Allah, remembering frequently,
KHALIFA: O you who believe, you shall remember GOD frequently.
রুকু – ৬
৪১। হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ্কে স্মরণ কর এবং পুণঃ পুণঃ তা কর।
৪২। এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তার মহিমা কীর্তন কর।
৪৩। তিনি তোমাদের প্রতি শুভাশীষ প্রেরণ করেন ৩৭৩২, তার ফেরেশতাগণও তা করে থাকে, যেনো তিনি তোমাদের অন্ধকারের অতল থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসতে পারেন। এবং তিনি বিশ্বাসীদের প্রতি দয়াতে পরিপূর্ণ ৩৭৩৩।
৩৭৩২। ”শুভাশীষ” – অর্থাৎ আল্লাহ্র করুণা , দয়া এবং কল্যাণ কামনা। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট জীবের জন্য কল্যাণ কামনা করেন এবং ফেরেশতারা তা কার্যে পরিণত করে। ফেরেশতাদের কার্য হচেছ আল্লাহ্র ইচ্ছার প্রতিফলন। কারণ ফেরেশতাদের কোনও নিজস্ব ইচ্ছা নাই। সে ক্ষমতা তাদের দান করা হয় নাই। মানুষের মাঝে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রকাশ হচ্ছে আল্লাহ্র করুণা ও কল্যাণের সর্বোচ্চ প্রকাশ। এই আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কারণেই মানুষ প্রাণীকূলে শ্রেষ্ঠ প্রাণী।
৩৭৩৩। সৃষ্টির জন্য আল্লাহ্র করুণা ও দয়া তুলনাহীন এবং তা সকল সৃষ্ট জীবের জন্য সমভাবে বহমান। কিন্তু এই আয়াতে বলা হয়েছে ,যারা মোমেন বা বিশ্বাসী , যারা শুধু আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপরে নির্ভরশীল তাদের জন্য আছে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহের শুভ সংবাদ যার উল্লেখ করা হয়েছে পরের আয়াতে।
আয়াতঃ 033.042
এবং সকাল বিকাল আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা কর।
And glorify His Praises morning and afternoon [the early morning (Fajr) and ’Asr prayers].
وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
Wasabbihoohu bukratan waaseelan
YUSUFALI: And glorify Him morning and evening.
PICKTHAL: And glorify Him early and late.
SHAKIR: And glorify Him morning and evening.
KHALIFA: You shall glorify Him day and night.
রুকু – ৬
৪১। হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ্কে স্মরণ কর এবং পুণঃ পুণঃ তা কর।
৪২। এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তার মহিমা কীর্তন কর।
৪৩। তিনি তোমাদের প্রতি শুভাশীষ প্রেরণ করেন ৩৭৩২, তার ফেরেশতাগণও তা করে থাকে, যেনো তিনি তোমাদের অন্ধকারের অতল থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসতে পারেন। এবং তিনি বিশ্বাসীদের প্রতি দয়াতে পরিপূর্ণ ৩৭৩৩।
৩৭৩২। ”শুভাশীষ” – অর্থাৎ আল্লাহ্র করুণা , দয়া এবং কল্যাণ কামনা। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট জীবের জন্য কল্যাণ কামনা করেন এবং ফেরেশতারা তা কার্যে পরিণত করে। ফেরেশতাদের কার্য হচেছ আল্লাহ্র ইচ্ছার প্রতিফলন। কারণ ফেরেশতাদের কোনও নিজস্ব ইচ্ছা নাই। সে ক্ষমতা তাদের দান করা হয় নাই। মানুষের মাঝে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রকাশ হচ্ছে আল্লাহ্র করুণা ও কল্যাণের সর্বোচ্চ প্রকাশ। এই আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কারণেই মানুষ প্রাণীকূলে শ্রেষ্ঠ প্রাণী।
৩৭৩৩। সৃষ্টির জন্য আল্লাহ্র করুণা ও দয়া তুলনাহীন এবং তা সকল সৃষ্ট জীবের জন্য সমভাবে বহমান। কিন্তু এই আয়াতে বলা হয়েছে ,যারা মোমেন বা বিশ্বাসী , যারা শুধু আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপরে নির্ভরশীল তাদের জন্য আছে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহের শুভ সংবাদ যার উল্লেখ করা হয়েছে পরের আয়াতে।
আয়াতঃ 033.043
তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও রহমতের দোয়া করেন-অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে আলোকে বের করার জন্য। তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু।
He it is Who sends Salât (His blessings) on you, and His angels too (ask Allâh to bless and forgive you), that He may bring you out from darkness (of disbelief and polytheism) into light (of Belief and Islâmic Monotheism). And He is Ever Most Merciful to the believers.
هُوَ الَّذِي يُصَلِّي عَلَيْكُمْ وَمَلَائِكَتُهُ لِيُخْرِجَكُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَكَانَ بِالْمُؤْمِنِينَ رَحِيمًا
Huwa allathee yusallee AAalaykum wamala-ikatuhu liyukhrijakum mina alththulumati ila alnnoori wakana bialmu/mineena raheeman
YUSUFALI: He it is Who sends blessings on you, as do His angels, that He may bring you out from the depths of Darkness into Light: and He is Full of Mercy to the Believers.
PICKTHAL: He it is Who blesseth you, and His angels (bless you), that He may bring you forth from darkness unto light; and He is ever Merciful to the believers.
SHAKIR: He it is Who sends His blessings on you, and (so do) His angels, that He may bring you forth out of utter darkness into the light; and He is Merciful to the believers.
KHALIFA: He is the One who helps you, together with His angels, to lead you out of darkness into the light. He is Most Merciful towards the believers.
রুকু – ৬
৪১। হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ্কে স্মরণ কর এবং পুণঃ পুণঃ তা কর।
৪২। এবং সকাল ও সন্ধ্যায় তার মহিমা কীর্তন কর।
৪৩। তিনি তোমাদের প্রতি শুভাশীষ প্রেরণ করেন ৩৭৩২, তার ফেরেশতাগণও তা করে থাকে, যেনো তিনি তোমাদের অন্ধকারের অতল থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসতে পারেন। এবং তিনি বিশ্বাসীদের প্রতি দয়াতে পরিপূর্ণ ৩৭৩৩।
৩৭৩২। ”শুভাশীষ” – অর্থাৎ আল্লাহ্র করুণা , দয়া এবং কল্যাণ কামনা। আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট জীবের জন্য কল্যাণ কামনা করেন এবং ফেরেশতারা তা কার্যে পরিণত করে। ফেরেশতাদের কার্য হচেছ আল্লাহ্র ইচ্ছার প্রতিফলন। কারণ ফেরেশতাদের কোনও নিজস্ব ইচ্ছা নাই। সে ক্ষমতা তাদের দান করা হয় নাই। মানুষের মাঝে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রকাশ হচ্ছে আল্লাহ্র করুণা ও কল্যাণের সর্বোচ্চ প্রকাশ। এই আধ্যাত্মিক জ্ঞানের কারণেই মানুষ প্রাণীকূলে শ্রেষ্ঠ প্রাণী।
৩৭৩৩। সৃষ্টির জন্য আল্লাহ্র করুণা ও দয়া তুলনাহীন এবং তা সকল সৃষ্ট জীবের জন্য সমভাবে বহমান। কিন্তু এই আয়াতে বলা হয়েছে ,যারা মোমেন বা বিশ্বাসী , যারা শুধু আল্লাহ্র অনুগ্রহের উপরে নির্ভরশীল তাদের জন্য আছে আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহের শুভ সংবাদ যার উল্লেখ করা হয়েছে পরের আয়াতে।
আয়াতঃ 033.044
যেদিন আল্লাহর সাথে মিলিত হবে; সেদিন তাদের অভিবাদন হবে সালাম। তিনি তাদের জন্যে সম্মানজনক পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন।
Their greeting on the Day they shall meet Him will be ”Salâm: Peace (i.e. the angels will say to them: Salâmu ’Alaikum)!” And He has prepared for them a generous reward (i.e. Paradise).
تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهُ سَلَامٌ وَأَعَدَّ لَهُمْ أَجْرًا كَرِيمًا
Tahiyyatuhum yawma yalqawnahu salamun waaAAadda lahum ajran kareeman
YUSUFALI: Their salutation on the Day they meet Him will be “Peace!”; and He has prepared for them a generous Reward.
PICKTHAL: Their salutation on the day when they shall meet Him will be: Peace. And He hath prepared for them a goodly recompense.
SHAKIR: Their salutation on the day that they meet Him shall be, Peace, and He has prepared for them an honourable reward.
KHALIFA: Their greeting the day they meet Him is, “Peace,” and He has prepared for them a generous recompense.
৪৪। যেদিন তারা আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে, সেদিন তাদের অভ্যর্থনা হবে , “শান্তি” ; এবং তিনি তাদের জন্য উত্তম পুরষ্কার প্রস্তুত রেখেছেন।
৪৫। হে নবী ! আমি তো তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, একজন সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারী রূপে ৩৭৩৪।
৩৭৩৪। আল্লাহ্র রাসুল হযরত মুহম্মদকে [ সা ] আল্লাহ্ পাঁচটি বিশেষ যোগ্যতা দান করেছেন। এই আয়াতে তিনটির উল্লেখ আছে এবং পরবর্তী আয়াতে দুটির উল্লেখ আছে।
১) রাসুলের [ সা ] আগমন সকল মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের “সাক্ষীরূপে।” রসুলদের মাধ্যমে যুগে যুগে সত্যকে প্রেরণ করা হয়েছে। সময়ের আবর্তনে সে সব শিক্ষা অস্পষ্ট বা অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে যায়। কারণ মানুষ তা করে থাকে অজ্ঞতার কারণে বা কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে অথবা ধর্ম সম্বন্ধে মতভেদের কারণে নিজেদের মধ্যে বিভক্তির দ্বারা। নূতন ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য রসুলকে প্রেরণ করা হয় নাই। তাঁর আগমন পুরাতন ইব্রাহীমের ধর্মকে কলুষমুক্ত করা। মানুষ কি ভাবে এই সত্যকে গ্রহণ করেছে তিনি আল্লাহ্র নিকট তার সাক্ষী হবেন, দেখুন আয়াত [ ৪ : ৪১ ] এবং টিকা ৫৬০।
২) সুসংবাদদাতা রূপে : আল্লাহ্র করুণা ও অনুগ্রহের সুসংবাদদাতা রূপে তাঁকে প্রেরণ করা হয়। মানুষ যতদূর সীমা লঙ্ঘন করুক না কেন, যত পাপই করুক না কেন, অনুতাপ, আত্মসংশোধন ও পবিত্র জীবন যাপনের মাধ্যমে আল্লাহ্র রহমত লাভের শুভ সংবাদদাতা রূপে তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে।
৩) সর্তককারীরূপে : যারা আল্লাহ্র বাণীর প্রতি অমনোযোগী তাদের জন্য সর্তককারীরূপে রাসুলের [ সা ] আগমন। এই পার্থিব জীবনই শেষ কথা নয় , এর পরেও মৃত্যুর পরে অনন্ত জীবন বিদ্যমান। আর সেই জীবনই হচ্ছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। পরের টিকা লক্ষ্য করুন।
আয়াতঃ 033.045
হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।
O Prophet (MuhammadSAW )! Verily, We have sent you as witness, and a bearer of glad tidings, and a warner,
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
Ya ayyuha alnnabiyyu inna arsalnaka shahidan wamubashshiran wanatheeran
YUSUFALI: O Prophet! Truly We have sent thee as a Witness, a Bearer of Glad Tidings, and Warner,-
PICKTHAL: O Prophet! Lo! We have sent thee as a witness and a bringer of good tidings and a warner.
SHAKIR: O Prophet! surely We have sent you as a witness, and as a bearer of good news and as a warner,
KHALIFA: O prophet, we have sent you as a witness, a bearer of good news, as well as a warner.
৪৪। যেদিন তারা আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে, সেদিন তাদের অভ্যর্থনা হবে , “শান্তি” ; এবং তিনি তাদের জন্য উত্তম পুরষ্কার প্রস্তুত রেখেছেন।
৪৫। হে নবী ! আমি তো তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, একজন সুসংবাদদাতা এবং সর্তককারী রূপে ৩৭৩৪।
৩৭৩৪। আল্লাহ্র রাসুল হযরত মুহম্মদকে [ সা ] আল্লাহ্ পাঁচটি বিশেষ যোগ্যতা দান করেছেন। এই আয়াতে তিনটির উল্লেখ আছে এবং পরবর্তী আয়াতে দুটির উল্লেখ আছে।
১) রাসুলের [ সা ] আগমন সকল মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের “সাক্ষীরূপে।” রসুলদের মাধ্যমে যুগে যুগে সত্যকে প্রেরণ করা হয়েছে। সময়ের আবর্তনে সে সব শিক্ষা অস্পষ্ট বা অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে যায়। কারণ মানুষ তা করে থাকে অজ্ঞতার কারণে বা কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে অথবা ধর্ম সম্বন্ধে মতভেদের কারণে নিজেদের মধ্যে বিভক্তির দ্বারা। নূতন ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য রসুলকে প্রেরণ করা হয় নাই। তাঁর আগমন পুরাতন ইব্রাহীমের ধর্মকে কলুষমুক্ত করা। মানুষ কি ভাবে এই সত্যকে গ্রহণ করেছে তিনি আল্লাহ্র নিকট তার সাক্ষী হবেন, দেখুন আয়াত [ ৪ : ৪১ ] এবং টিকা ৫৬০।
২) সুসংবাদদাতা রূপে : আল্লাহ্র করুণা ও অনুগ্রহের সুসংবাদদাতা রূপে তাঁকে প্রেরণ করা হয়। মানুষ যতদূর সীমা লঙ্ঘন করুক না কেন, যত পাপই করুক না কেন, অনুতাপ, আত্মসংশোধন ও পবিত্র জীবন যাপনের মাধ্যমে আল্লাহ্র রহমত লাভের শুভ সংবাদদাতা রূপে তাঁকে প্রেরণ করা হয়েছে।
৩) সর্তককারীরূপে : যারা আল্লাহ্র বাণীর প্রতি অমনোযোগী তাদের জন্য সর্তককারীরূপে রাসুলের [ সা ] আগমন। এই পার্থিব জীবনই শেষ কথা নয় , এর পরেও মৃত্যুর পরে অনন্ত জীবন বিদ্যমান। আর সেই জীবনই হচ্ছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। পরের টিকা লক্ষ্য করুন।
আয়াতঃ 033.046
এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।
And as one who invites to Allâh [Islâmic Monotheism, i.e. to worship none but Allâh (Alone)] by His Leave, and as a lamp spreading light (through your instructions from the Qur’ân and the Sunnah the legal ways of the Prophet SAW ).
وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُّنِيرًا
WadaAAiyan ila Allahi bi-ithnihi wasirajan muneeran
YUSUFALI: And as one who invites to Allah’s (grace) by His leave, and as a lamp spreading light.
PICKTHAL: And as a summoner unto Allah by His permission, and as a lamp that giveth light.
SHAKIR: And as one inviting to Allah by His permission, and as a light-giving torch.
KHALIFA: Inviting to GOD, in accordance with His will, and a guiding beacon.
৪৬। এবং আল্লাহ্র অনুমতি অনুসারে তাঁর [ করুণার ] দিকে মানুষকে আহ্বানকারী রূপে এবং [ উজ্জ্বল ] বাতি স্বরূপ যা আলো বিতরণ করে ৩৭৩৫।
৩৭৩৫। পূর্বের টিকা দেখুন। এই আয়াতে রাসুলের [ সা ] আর দুটি বিশেষ যোগ্যতার উল্লেখ করা হয়েছে।
৪) অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্র ক্ষমা লাভের জন্য আহ্বানকারীরূপে তাঁকে আল্লাহ্ প্রেরণ করেছেন। এই কাজ তিনি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী করার ক্ষমতা লাভ করেন নাই। আল্লাহ্র ইচ্ছা এবং হুকুম অনুযায়ী তিনি তা করার ক্ষমতা লাভ করেন। অন্যান্য রসুলদের মত মানুষ তাঁকে অস্বীকার করতে পারে, তবে একথা স্মরণ রাখতে হবে যে, একমাত্র রসুলই [ সা ] সঠিক পথ নির্দ্দেশ করে সঠিক পথে আহ্বান করার ক্ষমতা রাখেন। কেউ যদি তাঁকে অস্বীকার করে তবে তা হবে তার ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্ব। তার কাজের জবাবদিহিতার জন্য সেই একমাত্র দায়ী।
৫) নবীকে এখানে উজ্জ্বল প্রদীপ [ Siraj ] হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। উজ্জ্বল অর্থাৎ যা অন্ধকার বিদূরিত করে আলো বিচ্ছুরিত করে। সমস্ত পৃথিবীর মানবের আত্মাকে আলোকিত করার জন্য তাঁর আগমন। আয়াত [ ৭১ : ১৬ ] আয়াতে এবং অন্যান্য বহুস্থানে [ Siraj ] শব্দটি সূর্যের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে। সূর্যের উদয়ে শুধু যে অন্ধকার বিদূরিত হয় তাই-ই নয়, নিশিত রাতের সবচেয়ে শক্তিশালী ও উজ্জ্বল আলোও ম্লান ও দীপ্তিহীন হয়ে পড়ে। ঠিক সে রকমই ইসলামের বাণী হচ্ছে বিশ্বজনীন। ইসলামের আলো অন্যান্য সকল ধর্মের আলোকে নিষ্প্রভ করে দেয়।
আয়াতঃ 033.047
আপনি মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট অনুগ্রহ রয়েছে।
And announce to the believers (in the Oneness of Allâh and in His Messenger Muhammad SAW) the glad tidings, that they will have from Allâh a Great Bounty.
وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ بِأَنَّ لَهُم مِّنَ اللَّهِ فَضْلًا كَبِيرًا
Wabashshiri almu/mineena bi-anna lahum mina Allahi fadlan kabeeran
YUSUFALI: Then give the Glad Tidings to the Believers, that they shall have from Allah a very great Bounty.
PICKTHAL: And announce unto the believers the good tidings that they will have great bounty from Allah.
SHAKIR: And give to the believers the good news that they shall have a great grace from Allah.
KHALIFA: Deliver good news to the believers, that they have deserved from GOD a great blessing.
৪৭। সুতারাং বিশ্বাসীদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহ্র নিকট রয়েছে মহা অনুগ্রহ ৩৭৩৬।
৩৭৩৬। ইসলামের বাণী হচ্ছে আল্লাহ্র মহা অনুগ্রহ। যদি মানুষ তা সঠিকভাবে অনুধাবন করে তবে সে তার মহিমা কীর্তন করতে বাধ্য।
আয়াতঃ 033.048
আপনি কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন ও আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট।
And obey not the disbelievers and the hypocrites, and harm them not (till you are ordered). And put your trust in Allâh, and Sufficient is Allâh as a Wakîl (Trustee, or Disposer of affairs).
وَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَالْمُنَافِقِينَ وَدَعْ أَذَاهُمْ وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا
Wala tutiAAi alkafireena waalmunafiqeena wadaAA athahum watawakkal AAala Allahi wakafa biAllahi wakeelan
YUSUFALI: And obey not (the behests) of the Unbelievers and the Hypocrites, and heed not their annoyances, but put thy Trust in Allah. For enough is Allah as a Disposer of affairs.
PICKTHAL: And incline not to the disbelievers and the hypocrites. Disregard their noxious talk, and put thy trust in Allah. Allah is sufficient as Trustee.
SHAKIR: And be not compliant to the unbelievers and the hypocrites, and leave unregarded their annoying talk, and rely on Allah; and Allah is sufficient as a Protector.
KHALIFA: Do not obey the disbelievers and the hypocrites, disregard their insults, and put your trust in GOD; GOD suffices as an advocate.
৪৮। অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের [ আদেশ ] মান্য করো না , এবং তাদের বিরক্তিকে উপেক্ষা কর ৩৭৩৭। বরং নির্ভর কর আল্লাহ্র উপরে। কর্মবিধায়ক রূপে আল্লাহ্-ই যথেষ্ট।
৩৭৩৭। কাফের ও মোনাফেকরা রসুলকে [সা ] অত্যাচার ও নির্যাতনের দ্বারা যে উপেক্ষা প্রদর্শন করতো এখানে তারই উল্লেখ আছে। এ কথা রসুলের জন্য যেমন প্রযোজ্য ছিলো , অদ্যাবধি যারা কাফের ও মোনাফেক তারা ঈমানদার এবং সত্য ও ন্যায়ের অনুসারীকে বিদ্রূপ ব্যঙ্গ দ্বারা নির্যাতিত করতে দ্বিধা বোধ করে না। আল্লাহ্ মোমেন ব্যক্তিদের তাঁর উপরেই নির্ভর করতে আদেশ দান করেছেন , কারণ কর্মবিধায়করূপে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
আয়াতঃ 033.049
মুমিনগণ! তোমরা যখন মুমিন নারীদেরকে বিবাহ কর, অতঃপর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তখন তাদেরকে ইদ্দত পালনে বাধ্য করার অধিকার তোমাদের নাই। অতঃপর তোমরা তাদেরকে কিছু দেবে এবং উত্তম পন্থায় বিদায় দেবে।
O you who believe! When you marry believing women, and then divorce them before you have sexual intercourse with them, no ’Iddah [divorce prescribed period, see (V.65:4)] have you to count in respect of them. So give them a present, and set them free i.e. divorce, in a handsome manner.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَكَحْتُمُ الْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ طَلَّقْتُمُوهُنَّ مِن قَبْلِ أَن تَمَسُّوهُنَّ فَمَا لَكُمْ عَلَيْهِنَّ مِنْ عِدَّةٍ تَعْتَدُّونَهَا فَمَتِّعُوهُنَّ وَسَرِّحُوهُنَّ سَرَاحًا جَمِيلًا
Ya ayyuha allatheena amanoo itha nakahtumu almu/minati thumma tallaqtumoohunna min qabli an tamassoohunna fama lakum AAalayhinna min AAiddatin taAAtaddoonaha famattiAAoohunna wasarrihoohunna sarahan jameelan
YUSUFALI: O ye who believe! When ye marry believing women, and then divorce them before ye have touched them, no period of ‘Iddat have ye to count in respect of them: so give them a present. And set them free in a handsome manner.
PICKTHAL: O ye who believe! If ye wed believing women and divorce them before ye have touched them, then there is no period that ye should reckon. But content them and release them handsomely.
SHAKIR: O you who believe! when you marry the believing women, then divorce them before you touch them, you have in their case no term which you should reckon; so make some provision for them and send them forth a goodly sending forth.
KHALIFA: O you who believe, if you married believing women, then divorced them before having intercourse with them, they do not owe you any waiting interim (before marrying another man). You shall compensate them equitably, and let them go amicably.
৪৯। হে বিশ্বাসীগণ ! তোমরা মুমিন নারীগণকে বিবাহ করার পর, তাদের স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে তাদের পালনীয় কোন ইদ্দত নাই যা তোমরা গণনা করবে ৩৭৩৮। সুতারাং তাদের উপহার দাও ৩৭৩৯, এবং সৌজন্যের সাথে তাদের বিদায় দাও ৩৭৪০।
৩৭৩৮। দেখুন টিকা ২৫৪ এবং আয়াত [ ২ : ২২৮ ]। ইদ্দতের সময়কাল তিনমাস বা তিনরজঃস্রাব। দেখুন [৬৫ : ৪ ] আয়াত।
৩৭৩৯। এই উপহার সামগ্রী সম্বন্ধে অনেকে এই মত পোষণ করেন যে, আয়াতে [ ২ : ২৩৭ ] যে অর্দ্ধেক দেন-মোহরের উল্লেখ আছে তাহা ব্যতীতও এই উপহার সামগ্রী প্রাপ্য। যদি দেন-মোহর ধার্য না হয়ে থাকে , তবে এই উপহার সামগ্রী হবে প্রচুর পরিমাণে এবং আয়াতে [ ২ : ২৩৬ ] এই উপহারের কথা বিশেষ ভাবে বলা হয়েছে।
৩৭৪০। ” সৌজন্যের সাথে বিদায় দিবে।” অর্থাৎ উপহার সামগ্রী দিতে হবে সহৃদয়তার এবং স্বাভাবিক মাধুর্যের সাথে। কোনও অবস্থাতেই নারীদের স্বাধীনতা খর্ব করা চলবে না। যদি সে তৎক্ষণাত বিয়ে করতে চায়, তালাকের পরে তার কোনও বাধা থাকবে না। অর্থাৎ উপহারের সাথে নারীর স্বাধীনতার কোনও যোগসূত্র নাই। উপহার দান দ্বারা এ কথা যেনো মনে করা না হয় যে, সে কোনও ভাবে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ থাকবে।
আয়াতঃ 033.050
হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
O Prophet (Muhammad SAW)! Verily, We have made lawful to you your wives, to whom you have paid their Mahr (bridal money given by the husband to his wife at the time of marriage), and those (captives or slaves) whom your right hand possesses – whom Allâh has given to you, and the daughters of your ’Amm (paternal uncles) and the daughters of your ’Ammah (paternal aunts) and the daughters of your Khâl (maternal uncles) and the daughters of your Khâlah (maternal aunts) who migrated (from Makkah) with you, and a believing woman if she offers herself to the Prophet, and the Prophet wishes to marry her; a privilege for you only, not for the (rest of) the believers. Indeed We know what We have enjoined upon them about their wives and those (captives or slaves) whom their right hands possess, – in order that there should be no difficulty on you. And Allâh is Ever OftForgiving, Most Merciful.
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللَّاتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاء اللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّاتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَالَاتِكَ اللَّاتِي هَاجَرْنَ مَعَكَ وَامْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَيْهِمْ فِي أَزْوَاجِهِمْ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ لِكَيْلَا يَكُونَ عَلَيْكَ حَرَجٌ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
Ya ayyuha alnnabiyyu inna ahlalna laka azwajaka allatee atayta ojoorahunna wama malakat yameenuka mimma afaa Allahu AAalayka wabanati AAammika wabanati AAammatika wabanati khalika wabanati khalatika allatee hajarna maAAaka waimraatan mu/minatan in wahabat nafsaha lilnnabiyyi in arada alnnabiyyu an yastankihaha khalisatan laka min dooni almu/mineena qad AAalimna ma faradna AAalayhim fee azwajihim wama malakat aymanuhum likayla yakoona AAalayka harajun wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: O Prophet! We have made lawful to thee thy wives to whom thou hast paid their dowers; and those whom thy right hand possesses out of the prisoners of war whom Allah has assigned to thee; and daughters of thy paternal uncles and aunts, and daughters of thy maternal uncles and aunts, who migrated (from Makka) with thee; and any believing woman who dedicates her soul to the Prophet if the Prophet wishes to wed her;- this only for thee, and not for the Believers (at large); We know what We have appointed for them as to their wives and the captives whom their right hands possess;- in order that there should be no difficulty for thee. And Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: O Prophet! Lo! We have made lawful unto thee thy wives unto whom thou hast paid their dowries, and those whom thy right hand possesseth of those whom Allah hath given thee as spoils of war, and the daughters of thine uncle on the father’s side and the daughters of thine aunts on the father’s side, and the daughters of thine uncle on the mother’s side and the daughters of thine aunts on the mother’s side who emigrated with thee, and a believing woman if she give herself unto the Prophet and the Prophet desire to ask her in marriage – a privilege for thee only, not for the (rest of) believers – We are Aware of that which We enjoined upon them concerning their wives and those whom their right hands possess – that thou mayst be free from blame, for Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: O Prophet! surely We have made lawful to you your wives whom you have given their dowries, and those whom your right hand possesses out of those whom Allah has given to you as prisoners of war, and the daughters of your paternal uncles and the daughters of your paternal aunts, and the daughters of your maternal uncles and the daughters of your maternal aunts who fled with you; and a believing woman if she gave herself to the Prophet, if the Prophet desired to marry her– specially for you, not for the (rest of) believers; We know what We have ordained for them concerning their wives and those whom their right hands possess in order that no blame may attach to you; and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: O prophet, we made lawful for you your wives to whom you have paid their due dowry, or what you already have, as granted to you by GOD. Also lawful for you in marriage are the daughters of your father’s brothers, the daughters of your father’s sisters, the daughters of your mother’s brothers, the daughters of your mother’s sisters, who have emigrated with you. Also, if a believing woman gave herself to the prophet – by forfeiting the dowry – the prophet may marry her without a dowry, if he so wishes. However, her forfeiting of the dowry applies only to the prophet, and not to the other believers. We have already decreed their rights in regard to their spouses or what they already have. This is to spare you any embarrassment. GOD is Forgiver, Most Merciful.
৫০। হে নবী ! তোমার জন্য বৈধ করেছি ৩৭৪১ তোমার স্ত্রীদের , যাদের তুমি মোহর প্রদান করেছ ৩৭৪২ এবং আল্লাহ্ তোমাকে যে সব যুদ্ধ বন্দিনী দান করেছেন তাদের মধ্য থেকে তোমার ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের ৩৭৪৩। এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি তোমার চাচা, ফুপু, মামা ও খালার কন্যাদের ,যারা তোমার সাথে [ মক্কা থেকে ] হিজরত করেছে ৩৭৪৪। এবং কোনও মোমেন নারী নিজেকে [ বিনা মোহরে ] নবীকে নিবেদন করতে চাইলে , এবং নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে তা বৈধ ৩৭৪৫। এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র তোমার জন্য, অন্য মুমিনদের জন্য প্রযোজ্য নয় ৩৭৪৬। আমি জানি আমি তাদের জন্য স্ত্রী ও বন্দিনীদের মধ্যে তাদের ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের সম্বন্ধে কি নির্দ্দেশ দিয়েছি – যেনো এ ব্যাপারে তোমার কোন অসুবিধা না হয় ৩৭৪৭। এবং আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময় ৩৭৪৮।
৩৭৪১। এখান থেকে নূতন ব্যতিক্রম বা সুবিধার উল্লেখ আছে। আয়াত ৫ ০ -৫২ পর্যন্ত বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে বর্ণনা আছে রসুলের বিবাহ সম্বন্ধে। রসুলের বিবাহকে সাধারণ মুসলমানদের বিবাহ থেকে বিশেষীকরণ ও স্পষ্ট করা হয়েছে। রসুলের স্ত্রীদের সম্পর্কে দেখুন টিকা ৩৭০৬। এই চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নোক্ত চারটি টিকার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
৩৭৪২। প্রথম শিরোনাম বা আল্লাহ্র হুকুম : দেন-মোহর সহ বিবাহ [ ৪ : ৪ ] : দেনমোহর প্রথা মুসলিম বিবাহের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এবং তা দেশ-কাল জাতি নির্বিশেষে মুসলমানের সকলের জন্য প্রযোজ্য এবং রসুলের [ সা ] জন্যও তা প্রযোজ্য। রসুলের বিবাহের প্রথম হুকুম : তা শুধুমাত্র চারটি বিবাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় নাই , যা অন্যান্য মুসলমানদের জন্য শর্ত সাপেক্ষে বিবাহে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে [ ৪ : ৩ ]। এ ব্যতীত হুকুম হচ্ছে রসুলের [ সা ] স্ত্রীগণকে হতে হবে মুসলমান , শুধুমাত্র কিতাবধারী হলেই যথেষ্ট হবে না। যেখানে সাধারণ মুসলমানদের কিতাবধারী মহিলাদের সাথে বিবাহকে বৈধ করা হয়েছে [ ৫ : ৫ ]। সেখানে রসুলের জন্য তা বৈধ করা হয় নাই। অবশ্যই যারা মুসলিম উম্মার মাতা হবেন তাদের মুসলমান হতে হবে।
৩৭৪৩। দ্বিতীয় শিরোনাম [ ২ ] মহিলা যুদ্ধবন্দী : উপরের টিকা সর্ম্পকে যা বলা হয়েছে তা এখানেও প্রযোজ্য।
৩৭৪৪। তৃতীয় শিরোনাম [ ৩ ] : রসুলের [ সা ] জন্য চাচা, ফুপু এবং মামা ও খালার কন্যার সাথে বিবাহ বৈধ। বিবাহ নিষিদ্ধ এর তালিকার জন্য দেখুন আয়াত [ ৪ : ২৩ – ২৪ ]। এই বৈধতা শুধুমাত্র রসুলুল্লাহ্ [ সা ] জন্য নয় সকল মুসলমানদের জন্য বৈধ। কিন্তু “তারা রসুলুল্লাহ্র [ সা ] সাথে হিজরত করেছে ” – এ কথাটি শুধু রসুলুল্লাহ্র [ সা ] জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ পিতৃ [ চাচা, ফুপু ] ও মাতৃ [ খালা , মামা ] কূলের কন্যাদের সাথে মুসলমানদের জন্য বিবাহ বৈধ। কিন্তু রসুলের [ সা] জন্য শুধু তারাই বৈধ যারা হিজরত করেছে।
৩৭৪৫। চতুর্থ শিরোনাম [ ৪ ] : ” কোন মুমিন নারী নবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করলে ” – অর্থাৎ পূর্বের ন্যায় এই নিয়মটি শুধুমাত্র রসুলের [ সা ] জন্য প্রযোজ্য। এই নিয়মটিকেও শর্ত সাপেক্ষে সুরক্ষিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে নারী চাইলেই নবীকে বিবাহ করতে হবে সেটা ঠিক নয়। শর্ত হচ্ছে যদি নবীও তাঁকে বিবাহের উপযুক্ত মনে করেন তবেই তা হওয়া সম্ভব।
৩৭৪৬। ” এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র তোমার জন্য ” – এই বাক্যটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে শুধুমাত্র রসুলের জন্য যে সব বৈধ করা হয়েছে।
৩৭৪৭। মুসলিম বিবাহের নিয়মের জন্য দেখুন [ ২ : ২২১- ২৩৫ ] ; [৪ : ১৯ – ২৫ ] ; এবং [ ৫ : ৫ ] আয়াত।
৩৭৪৮। সামাজিক জীবনে বিবাহের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ শুধুমাত্র দৈহিক আরাম আয়েশের বস্তু নয় – বিবাহ মানুষের জীবনে সামাজিক জীবনের মাধ্যমে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জগতে উত্তরণের পন্থা। সুশীল, সৎ ও শান্তিপূর্ণ গৃহকোণ সুনাগরিক সৃষ্টি করে। বিবাহের ফসল সন্তান আমাদের ভবিষ্যত বংশধর। সুসন্তান শুধুমাত্র পিতামাতার জন্য শান্তিদায়ক নয় , তারা দেশের জন্য সম্পদ বটে। এ ভাবেই বিয়ের সূদূর প্রসারী প্রভাব শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রীর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় তার প্রভাব ব্যক্তিজীবনের গন্ডি অতিক্রম করে সমাজ জীবনে প্রসারিত হয়। সুতরাং বিয়েকে লঘুভাবে দেখার কোন সুযোগ নাই। দাম্পত্য জীবনে অনেক সময়েই বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। নারী ও পুরুষ উভয়েই সে সমস্যাকে গুরুত্ব ও আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে। চেষ্টা করবে আবেগের বশবর্তী না হয়ে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে। এ ব্যাপারে সর্বদা সে মহান স্রষ্টার সাহায্য কামনা করবে। আল্লাহ্ সকলের জন্যই জীবনের পথ সহজ , সুন্দর করতে চান – কারণ আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
আয়াতঃ 033.051
আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে তাতে আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে; তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন, তাতে তারা সকলেই সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
You (O Muhammad SAW) can postpone (the turn of) whom you will of them (your wives), and you may receive whom you will. And whomsoever you desire of those whom you have set aside (her turn temporarily), it is no sin on you (to receive her again), that is better; that they may be comforted and not grieved, and may all be pleased with what you give them. Allâh knows what is in your hearts. And Allâh is Ever AllKnowing, Most Forbearing.
تُرْجِي مَن تَشَاء مِنْهُنَّ وَتُؤْوِي إِلَيْكَ مَن تَشَاء وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَ ذَلِكَ أَدْنَى أَن تَقَرَّ أَعْيُنُهُنَّ وَلَا يَحْزَنَّ وَيَرْضَيْنَ بِمَا آتَيْتَهُنَّ كُلُّهُنَّ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي قُلُوبِكُمْ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَلِيمًا
Turjee man tashao minhunna watu/wee ilayka man tashao wamani ibtaghayta mimman AAazalta fala junaha AAalayka thalika adna an taqarra aAAyunuhunna wala yahzanna wayardayna bima ataytahunna kulluhunna waAllahu yaAAlamu ma fee quloobikum wakana Allahu AAaleeman haleeman
YUSUFALI: Thou mayest defer (the turn of) any of them that thou pleasest, and thou mayest receive any thou pleasest: and there is no blame on thee if thou invite one whose (turn) thou hadst set aside. This were nigher to the cooling of their eyes, the prevention of their grief, and their satisfaction – that of all of them – with that which thou hast to give them: and Allah knows (all) that is in your hearts: and Allah is All-Knowing, Most Forbearing.
PICKTHAL: Thou canst defer whom thou wilt of them and receive unto thee whom thou wilt, and whomsoever thou desirest of those whom thou hast set aside (temporarily), it is no sin for thee (to receive her again); that is better; that they may be comforted and not grieve, and may all be pleased with what thou givest them. Allah knoweth what is in your hearts (O men), and Allah is ever Forgiving, Clement.
SHAKIR: You may put off whom you please of them, and you may take to you whom you please, and whom you desire of those whom you had separated provisionally; no blame attaches to you; this is most proper, so that their eyes may be cool and they may not grieve, and that they should be pleased, all of them with what you give them, and Allah knows what is in your hearts; and Allah is Knowing, Forbearing.
KHALIFA: You may gently shun any one of them, and you may bring closer to you any one of them. If you reconcile with any one you had estranged, you commit no error. In this way, they will be pleased, will have no grief, and will be content with what you equitably offer to all of them. GOD knows what is in your hearts. GOD is Omniscient, Clement.
৫১। তোমার ইচ্ছানুযায়ী স্ত্রীদের মধ্যে যার [পালা ] ইচ্ছা তুমি বিলম্ব করতে পার ৩৭৪৯। এবং যাকে খুশী তুমি গ্রহণ করতে পার। আর যার পালা বিলম্বিত রয়েছে যদি তুমি তাকে কামনা কর ,তাতে তোমার কোন অপরাধ নাই ৩৭৫০। এই বিধান এ জন্য যে, এতে তাদের সন্তুষ্টি সহজতর হবে ৩৭৫১। এবং তারা দুঃখ পাবে না , আর তাদের তুমি যা দিবে তাতে তারা প্রত্যেকেই পরিতৃপ্ত থাকবে ৩৭৫২। তোমাদের হৃদয়ে যা আছে আল্লাহ্ [ সব ] জানেন। এবং আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ , ধৈর্য্যশীল ৩৭৫৩।
৩৭৪৯। আয়াতে [ ৪ : ৩ ] বলা হয়েছে যে “If ye fear that ye shall not be able to deal justly with them”, তাহলে একের অধিক স্ত্রী গ্রহণ করা বৈধ নয়। মুসলমানদের জন্য পত্নীদের মধ্যে একজন অধিক প্রিয় পত্নী এরূপ কেহ থাকতে পারে না। সাধারণ উম্মতের জন্য একাধিক পত্নী থাকলে সকলের জন্য সমতা বিধান জরুরী , বৈষম্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ। এই সমতা শুধু মাত্র জাগতিক বিষয়বস্তুই নয়, স্ত্রীর সাথে সমান সংখ্যক রাত্রি যাপন করতে হবে।
বিশেষ অবস্থার কারণে রসুলুল্লাহ্র [ সা ] একের অধিক পত্নী বিদ্যমান ছিলো। তিনি সর্বদা সকল পত্নীর জন্য সকল ব্যাপারে সমতার আইন মেনে চলতেন। কিন্তু নবুয়ত পাওয়ার ফলে রসুলের [ সা ] ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন অপেক্ষা নবুয়তের কার্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ানোর ফলে, সব সময়ে রাত্রি যাপনের সমতা রাখা সম্ভব ছিলো না ,দেখুন টিকা ৩৭০৬ , আয়াত [ ৩০: ২৮ ]। এই আয়াতে রসুলকে [ সা ] রাত্রিযাপনের সমতা থেকে অব্যহতি দান করা হয়, কিন্তু রসুলুল্লাহ্র [ সা ] এই ব্যতিক্রম ও অনুমতি সত্বেও কার্যতঃ সর্বদাই সমতা বজায় রেখেছেন।
৩৭৫০। রসুলকে [ সা ] পত্নীগণের প্রতি সমতা বিধানের আদেশ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে কারণ এতে সকল পত্নীর মন সন্তুষ্ট থাকবে এবং তারা যা পাবেন তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবেন। প্রকৃতপক্ষে অধিকারই অসন্তুষ্টির আসল কারণ হয়ে থাকে। অধিকারভূক্ত বস্তু না পেলে আত্মার মাঝে অশান্তির সৃষ্টি হয়। কিন্তু যে বস্তুতে অধিকার নাই তা যদি কাঙ্খিত হয়,তবে তা পেলে আনন্দ হয়। রসুলকে [ সা ] সমতার বিধান থেকে মুক্ত করার ফলে, যে পত্নীকে দূরে রাখা হয়েছিলো তাঁকে কামনা করলে সে আনন্দিত হবে, তাঁর চিত্ত প্রসন্ন হবে। এই বিধান এই জন্য যে, যাদের দূরে রাখা হয়েছিলো তাদের তুষ্টি সহজতর হবে।
৩৭৫১। ” এতে তাদের সন্তুষ্টি সহজতর হবে ” – সাধারণ মানুষের মনঃস্ততঃকে এখানে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যে জিনিষে মানুষের অধিকার নাই , তা হঠাৎ করে করতলগত হলে , মানুষ আনন্দ ও সুখে আত্মহারা হয়ে পড়ে। অধিকারভুক্ত জিনিষ পেলে সে সুখ ও আনন্দ পাওয়া যায় না। রসুলের [ সা ] জীবন ও তাঁর পত্নীদের জীবনকে শান্তিময় করার জন্যই আল্লাহ্র এ বিধান।
৩৭৫২। রসুলের [ সা ] এমন কোনও জাগতিক অর্থ সম্পদ ছিলো না যা তিনি তাঁর পত্নীদের দিতে পারতেন। [ পত্নীদের জন্য দেখুন আয়াত ৩০ : ২৮ ] কিন্তু তার চরিত্রের গুণাবলী তাঁকে করেছিলো সমৃদ্ধ , পরিবারের তথা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবরূপে, দয়া-মায়া, ন্যায় এবং সত্যের বিকাশ তাঁর চরিত্রকে করেছিলো মহিমান্বিত – যার আলোয় সহধর্মীনিরা আপ্লুত থাকতেন।
৩৭৫৩। সাধারণ মানুষ যত মহৎ বা উন্নত হোক না কেন, তার অন্তরের উদ্দেশ্য বা চিন্তা সর্বদা স্বচ্ছ ও মহৎ হয় না। মনের গোপন কন্দরে কত ভাব , চিন্তা ,আসা যাওয়া করে। তার কিছু ভালো কিছু মন্দ, কিছু কল্পনা , কিছু বাস্তব। সাধারণ লোকে তা অনুধাবন না করতে পারলেও বিশ্বস্রষ্টার বিশাল কম্পিউটারে তা তাৎক্ষণিক ধরা পড়ে যায় এবং সংরক্ষিত হয়ে যায়। কোনও মানুষই ,পুরুষ বা নারী কেহই কুচিন্তা থেকে রেহাই পায় না। বিশ্বস্রষ্টা মানুষের এই দুর্বলতা জানেন। তাই তিনি তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। তাই তো তাঁর উপাধি “Halim’ বা ক্ষমাশীল। যারা আল্লাহ্র প্রতি অনুরক্ত তাদের জন্য এটা একটা সংকেতপূর্ণ র্বাতা যে, যিনি আমাদের এত দোষ ত্রুটি জানা সত্বেও ক্ষমা করতে পারেন, আমরা তাঁর পূঁজারী ও অনুসারী হয়ে আমাদের প্রতিবেশী বা অন্যান্য লোকের দোষত্রুটি ক্ষমা করতে পারবো না কেন ?
আয়াতঃ 033.052
এরপর আপনার জন্যে কোন নারী হালাল নয় এবং তাদের পরিবর্তে অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও হালাল নয় যদিও তাদের রূপলাবণ্য আপনাকে মুগ্ধ করে, তবে দাসীর ব্যাপার ভিন্ন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর সজাগ নজর রাখেন।
It is not lawful for you (to marry other) women after this, nor to change them for other wives even though their beauty attracts you, except those (captives or slaves) whom your right hand possesses. And Allâh is Ever a Watcher over all things.
لَا يَحِلُّ لَكَ النِّسَاء مِن بَعْدُ وَلَا أَن تَبَدَّلَ بِهِنَّ مِنْ أَزْوَاجٍ وَلَوْ أَعْجَبَكَ حُسْنُهُنَّ إِلَّا مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ وَكَانَ اللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ رَّقِيبًا
La yahillu laka alnnisao min baAAdu wala an tabaddala bihinna min azwajin walaw aAAjabaka husnuhunna illa ma malakat yameenuka wakana Allahu AAala kulli shay-in raqeeban
YUSUFALI: It is not lawful for thee (to marry more) women after this, nor to change them for (other) wives, even though their beauty attract thee, except any thy right hand should possess (as handmaidens): and Allah doth watch over all things.
PICKTHAL: It is not allowed thee to take (other) women henceforth, nor that thou shouldst change them for other wives even though their beauty pleased thee, save those whom thy right hand possesseth. And Allah is ever Watcher over all things.
SHAKIR: It is not allowed to you to take women afterwards, nor that you should change them for other wives, though their beauty be pleasing to you, except what your right hand possesses and Allah is Watchful over all things.
KHALIFA: Beyond the categories described to you, you are enjoined from marrying any other women, nor can you substitute a new wife (from the prohibited categories), no matter how much you admire their beauty. You must be content with those already made lawful to you. GOD is watchful over all things.
৫২। এর পরে, তোমার জন্য অন্য কোন নারী [ বিবাহ করা ] বৈধ নয় ৩৭৫৪, তাদের পরিবর্তন করে [তালাক দিয়ে ] অন্য স্ত্রী গ্রহণ করাও বৈধ নয়; যদিও তাদের সৌন্দর্য তোমাকে আকর্ষণ করে। তবে তোমার অধিকারভূক্ত দাসীদের ব্যাপারে এই বিধান প্রযোজ্য নয়। আল্লাহ্ সমস্ত কিছুর উপরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন।
৩৭৫৪। এই আয়াতটি ৭ম হিজরীতে অবতীর্ণ হয়। এর পরে রসুল [ সা ] আর বিবাহ করেন নাই। তবে মিশরের খৃষ্টান শাসনকর্তা রসুলকে [ সা ] একজন পরিচারিকা উপহার দেন, যার নাম ছিলো মেরী। মেরীর গর্ভে রসুলের [ সা ] ছেলে ইব্রাহীমের জন্ম হয় যে শৈশবে মৃত্যু বরণ করে ?
আয়াতঃ 033.053
হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।
O you who believe! Enter not the Prophet’s houses, except when leave is given to you for a meal, (and then) not (so early as) to wait for its preparation. But when you are invited, enter, and when you have taken your meal, disperse, without sitting for a talk. Verily, such (behaviour) annoys the Prophet, and he is shy of (asking) you (to go), but Allâh is not shy of (telling you) the truth. And when you ask (his wives) for anything you want, ask them from behind a screen, that is purer for your hearts and for their hearts. And it is not (right) for you that you should annoy Allâh’s Messenger, nor that you should ever marry his wives after him (his death). Verily! With Allâh that shall be an enormity.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَن تَنكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمًا
Ya ayyuha allatheena amanoo la tadkhuloo buyoota alnnabiyyi illa an yu/thana lakum ila taAAamin ghayra nathireena inahu walakin itha duAAeetum faodkhuloo fa-itha taAAimtum faintashiroo wala musta/niseena lihadeethin inna thalikum kana yu/thee alnnabiyya fayastahyee minkum waAllahu la yastahyee mina alhaqqi wa-itha saaltumoohunna mataAAan fais-aloohunna min wara-i hijabin thalikum atharu liquloobikum waquloobihinna wama kana lakum an tu/thoo rasoola Allahi wala an tankihoo azwajahu min baAAdihi abadan inna thalikum kana AAinda Allahi AAatheeman
YUSUFALI: O ye who believe! Enter not the Prophet’s houses,- until leave is given you,- for a meal, (and then) not (so early as) to wait for its preparation: but when ye are invited, enter; and when ye have taken your meal, disperse, without seeking familiar talk. Such (behaviour) annoys the Prophet: he is ashamed to dismiss you, but Allah is not ashamed (to tell you) the truth. And when ye ask (his ladies) for anything ye want, ask them from before a screen: that makes for greater purity for your hearts and for theirs. Nor is it right for you that ye should annoy Allah’s Messenger, or that ye should marry his widows after him at any time. Truly such a thing is in Allah’s sight an enormity.
PICKTHAL: O Ye who believe! Enter not the dwellings of the Prophet for a meal without waiting for the proper time, unless permission be granted you. But if ye are invited, enter, and, when your meal is ended, then disperse. Linger not for conversation. Lo! that would cause annoyance to the Prophet, and he would be shy of (asking) you (to go); but Allah is not shy of the truth. And when ye ask of them (the wives of the Prophet) anything, ask it of them from behind a curtain. That is purer for your hearts and for their hearts. And it is not for you to cause annoyance to the messenger of Allah, nor that ye should ever marry his wives after him. Lo! that in Allah’s sight would be an enormity.
SHAKIR: O you who believe! do not enter the houses of the Prophet unless permission is given to you for a meal, not waiting for its cooking being finished– but when you are invited, enter, and when you have taken the food, then disperse– not seeking to listen to talk; surely this gives the Prophet trouble, but he forbears from you, and Allah does not forbear from the truth And when you ask of them any goods, ask of them from behind a curtain; this is purer for your hearts and (for) their hearts; and it does not behove you that you should give trouble to the Messenger of Allah, nor that you should marry his wives after him ever; surely this is grievous in the sight of Allah.
KHALIFA: O you who believe, do not enter the prophet’s homes unless you are given permission to eat, nor shall you force such an invitation in any manner. If you are invited, you may enter. When you finish eating, you shall leave; do not engage him in lengthy conversations. This used to hurt the prophet, and he was too shy to tell you. But GOD does not shy away from the truth. If you have to ask his wives for something, ask them from behind a barrier. This is purer for your hearts and their hearts. You are not to hurt the messenger of GOD. You shall not marry his wives after him, for this would be a gross offense in the sight of GOD.
রুকু – ৭
৫৩। হে মুমিনগণ ! অনুমতি ব্যতীত নবীর গৃহে প্রবেশ করো না , যতক্ষণ না আহার গ্রহণের জন্য ডাকা হয়, ৩৭৫৫, [ এবং ] এতটা [শীঘ্র ] যাবে না যাতে [ খাবার ] প্রস্তুতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু যখন তোমাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তখন প্রবেশ করো, এবং যখন তোমরা আহার শেষ করবে, তখন কথা বার্তায় মশগুল না হয়ে বিদায় নেবে। কারণ এরূপ [ আচরণ ] নবীর বিরক্ত উৎপাদন করে থাকে ; সে তোমাদের বিদায় দিতে সংকোচ বোধ করে; কিন্তু আল্লাহ্ [ তোমাদের ] সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না। আর যখন তোমরা [ তাঁর পত্নীদের ] নিকট কিছু চাইবে তা পর্দ্দার অন্তরাল থেকে চাইবে। এই বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র ৩৭৫৬। তোমাদের কারও পক্ষে আল্লাহ্র রাসুলের বিরক্ত উৎপাদন করা সংগত নয় ৩৭৫৭। অথবা তাঁর[মৃত্যুর]পরে তাঁর বিধবাদের বিবাহ করা তোমাদের জন্য কখনও বৈধ নয়। অবশ্যই ইহা আল্লাহ্র দৃষ্টিতে ঘোরতর অপরাধ ৩৭৫৮।
৩৭৫৫। এই আয়াতটির মাধ্যমে সুশীল, ও সুরুচীশীল সামাজিক সংস্কৃতি শিক্ষা দান করা হয়েছে। রসুলের [সা ] যুগে দুর্বিনীত ও অভদ্র আরবদের যে সামাজিক আদব কায়দা শিক্ষা দান করা হয়েছে অদ্যাবধি যে কোনও সুশীল ও সংস্কৃতিবান সমাজের জন্য তা প্রযোজ্য। এই আয়াতের শিক্ষণীয় বিষয়গুলি সংক্ষেপে নীচে তুলে ধরা হলো।
১) বন্ধুর গৃহে অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করো না।
২) যদি কোথাও নিমন্ত্রিত হও, তবে সময়ের বেশী পূর্বে গমন করবে না, যেনো খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য অপেক্ষা করতে না হয়।
৩) যে সময়ে দাওয়াত সেই সময়কে রক্ষা করতে চেষ্টা করবে যেনো তোমার উপস্থিতি হয় প্রত্যাশিত সময়ে।
৪) খাবার পরে নিমন্ত্রণ কর্তার সাথে বেশী আন্তরিক হতে চেষ্টা করো না , বিশেষ করে তার সাথে তোমার যদি সামাজিক দূরত্ব বেশী থাকে।
৫) খাবার পরে তার সাথে আজে বাজে গল্পে সময় নষ্ট করো না , কারণ তা অনেক সময়েই গৃহকর্তার বিরক্তি উৎপাদন করে থাকে।
৬) তোমার প্রকৃত আচরণ কি হওয়া উচিত উপলব্ধি করতে চেষ্টা করো। কারণ তোমার গৃহকর্তা হয়তো ভদ্রতার খাতিরে তোমাকে তোমার আচরণের উল্লেখ নাও করতে পারে। এসব সামাজিক রীতি নীতি সামাজিক মূল্যবোধ ও গুণের বিকাশ করে।
৩৭৫৬। মহিলাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন বিভিন্ন সমাজে সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন হতে পারে। কিন্তু একটি সভ্য সমাজের সকল মহিলাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রাপ্য। সুশীল সমাজের এ এক সুনীতি। রসুল পত্নী, যারা মুসলিম ‘উম্মার মাতা’ তারা সাধারণ নারীদের অপেক্ষা অধিক সম্মানের যোগ্য। এই আয়াতে নবী পত্নীদের সম্মান প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ্ তাদের জন্য “Hijab” বা পর্দ্দার নির্দ্দেশ দান করেন। এ ভাবেই তাদের সাধারণ থেকে অসাধারণ ব্যক্তিত্বে রূপান্তর করা হয়। যাতে তাঁরা সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকেন। এই হিজাব শুধুমাত্র রসুল পত্নীদের জন্য প্রযোজ্য, পরপুরুষের সাথে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলা শুধু তাঁদের জন্যই প্রযোজ্য। সাধারণ মুসলিম মহিলাদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। মুসলিম মহিলাদের জন্য নির্দ্দেশ আছে [ ৩৩ : ৫৯ ] আয়াতে।
৩৭৫৭। রসুল [ সা ] হচ্ছেন সারা বিশ্ব জাহানের রহমত স্বরূপ। পৃথিবীতে তাঁর যে অবস্থান, সে হিসেবে তিনি বিশ্ব মুসলিমের সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। এমন কিছু করা উচিত নয় যা তাঁর জন্য বিরক্তিকর। তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন শুধুমাত্র যে তাঁর জীবদ্দশাতেই প্রাপ্য তা নয় – তা পৃথিবীতে সর্ব যুগে সকল মুসলমানের করণীয় কর্তব্য। সে যুগেও তা যেমন প্রযোজ্য ছিলো আজও তা সমভাবে প্রযোজ্য এবং ভবিষ্যতেও তা সমভাবে থাকবে। কারণ তাঁর শিক্ষা ও ব্যক্তিত্ব আমাদের মাঝে আজও জীবন্ত। আজও তা সমভাবে প্রেরণা যোগায়। সুতারাং রসুলের [ সা ] মৃত্যুর পরে তাঁর বিধবা পত্নীদের বিবাহ করা অন্যদের জন্য হারাম করা হয়েছে। কারণ সমাজে তাদের রসুলের পত্নী হিসেবে বিশেষ সম্মানজনক অবস্থানের জন্য এবং রসুলের [ সা ] সম্মানের জন্য। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় রসুলের [ সা ] প্রতি এই সম্মান যোগ্য ভাবেই নিবেদন করা হয়েছিলো।
৩৭৫৮। “Aza” বা পীড়া দেওয়া , বিরক্ত করা , আঘাত দেয়া , অপমান করা, খারাপ ব্যবহার করা , কলঙ্ক লেপন করা ,খারাপ আচরণ করা , অনুভূতিতে আঘাত দান করা ইত্যাদি। পৃথিবীতে হযরত মুহম্মদ মুস্তফার [সা] আগমন ঐশি দায়িত্ব পালনের জন্য। পৃথিবীকে পাপের পথ থেকে বিরত করে আত্মিক মুক্তির পথ দেখানো ছিলো তাঁর ঐশি দায়িত্ব। এই গুরু দায়িত্ব যিনি সফলভাবে পালন করেছেন; অবশ্যই পৃথিবীর সকল লোকের নিকট তাঁর যোগ্য সম্মান প্রাপ্য। তিনি আজ আমাদের মাঝে নাই, কিন্তু তাঁর শিক্ষা প্রতিনিয়ত আমাদের আত্মিক শক্তি যোগায়, আত্মিক মুক্তির পথ দেখায়। সে হিসেবে তাঁর পত্নীরা যারা মুসলিম উম্মার মাতা হিসেবে পরিগণিত তারাও সম্মানের যোগ্য তবে অবশ্যই তা রসুলের [সা ] সমকক্ষ হবে না।
আয়াতঃ 033.054
তোমরা খোলাখুলি কিছু বল অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
Whether you reveal anything or conceal it, verily, Allâh is Ever AllKnower of everything.
إِن تُبْدُوا شَيْئًا أَوْ تُخْفُوهُ فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
In tubdoo shay-an aw tukhfoohu fa-inna Allaha kana bikulli shay-in AAaleeman
YUSUFALI: Whether ye reveal anything or conceal it, verily Allah has full knowledge of all things.
PICKTHAL: Whether ye divulge a thing or keep it hidden, lo! Allah is ever Knower of all things.
SHAKIR: If you do a thing openly or do it in secret, then surely Allah is Cognizant of all things.
KHALIFA: Whether you declare anything, or hide it, GOD is fully aware of all things.
৫৪। তোমরা যা কিছু প্রকাশ কর অথবা গোপন কর, অবশ্যই আল্লাহ্ সে সম্বন্ধে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন ৩৭৫৯।
৩৭৫৯। সংসার জীবনে মানুষ নিজ মনের অনুভূতিকে অনেক সময়েই প্রকাশ করে না। ব্যক্তি জীবনে অনেকেই বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য, চাটুকারিতার আশ্রয় নেয়। আবার অনেকেই প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভালোকে প্রতিহত করে। বাইরের থেকে আমরা এ সব প্রতারকদের বুঝতে না পারলেও মহান আল্লাহ্র নিকট কারও মনের ভাব গোপন থাকে না। ব্যক্ত , অব্যক্ত সকল চিন্তাধারাই আল্লাহ্র নিকট সুস্পষ্ট। তিনি তো সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
আয়াতঃ 033.055
নবী-পত্নীগণের জন্যে তাঁদের পিতা পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নি পুত্র, সহধর্মিনী নারী এবং অধিকার ভুক্ত দাসদাসীগণের সামনে যাওয়ার ব্যাপারে গোনাহ নেই। নবী-পত্নীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয় প্রত্যক্ষ করেন।
It is no sin on them (the Prophet’s wives, if they appear unveiled) before their fathers, or their sons, or their brothers, or their brother’s sons, or the sons of their sisters, or their own (believing) women, or their (female) slaves, and keep your duty to Allâh. Verily, Allâh is Ever AllWitness over everything.
لَّا جُنَاحَ عَلَيْهِنَّ فِي آبَائِهِنَّ وَلَا أَبْنَائِهِنَّ وَلَا إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء إِخْوَانِهِنَّ وَلَا أَبْنَاء أَخَوَاتِهِنَّ وَلَا نِسَائِهِنَّ وَلَا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ وَاتَّقِينَ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدًا
La junaha AAalayhinna fee aba-ihinna wala abna-ihinna wala ikhwanihinna wala abna-i ikhwanihinna wala abna-i akhawatihinna wala nisa-ihinna wala ma malakat aymanuhunna waittaqeena Allaha inna Allaha kana AAala kulli shay-in shaheedan
YUSUFALI: There is no blame (on these ladies if they appear) before their fathers or their sons, their brothers, or their brother’s sons, or their sisters’ sons, or their women, or the (slaves) whom their right hands possess. And, (ladies), fear Allah; for Allah is Witness to all things.
PICKTHAL: It is no sin for them (thy wives) to converse freely) with their fathers, or their sons, or their brothers, or their brothers’ sons, or the sons of their sisters or of their own women, or their slaves. O women! Keep your duty to Allah. Lo! Allah is ever Witness over all things.
SHAKIR: There is no blame on them in respect of their fathers, nor their brothers, nor their brothers’ sons, nor their sisters’ sons nor their own women, nor of what their right hands possess; and be careful of (your duty to) Allah; surely Allah is a witness of all things.
KHALIFA: The women may relax (their dress code) around their fathers, their sons, their brothers, the sons of their brothers, the sons of their sisters, the other women, and their (female) servants. They shall reverence GOD. GOD witnesses all things.
৫৫। নবী -পত্নীদের জন্য তাদের পিতৃগণ, পুত্রগণ, ভ্রাতৃগণ, ভ্রাতৃপুত্রগণ, ভগ্নীগণ, নারী এবং তাদের অধিকারভূক্ত দাস-দাসীগণের ব্যাপারে [ পরদা ] পালন না করা অপরাধ নয় ৩৭৬০। এবং [ হে নবী -পত্নীগণ] আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সকল কিছুর সাক্ষী।
৩৭৬০। পূর্বের আয়াতে [ ৫৩ নং ] রসুলের [সা ] স্ত্রীদের যে হিজাবের [ পর্দ্দা ] কথা বলা হয়েছে ,এই আয়াতটি তারই ধারাবাহিকতা। নবী পত্নীরা হিজাব ব্যতীত যাদের সামনে বের হতে পারবেন, – তাদের তালিকা এই আয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে। এরা হলেন : পিতা, পুত্র, ভাই অথবা বোনের ছেলে, দাসী ,ক্রীতদাস [ অধিকারভুক্ত দাস দাসী ]। তফসীরকারগণ এই সাথে চাচা ও মামাকে অর্ন্তভুক্ত করেছেন পিতার শিরোনামে। সেবিকাগণ শব্দটি দ্বারা সকল মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলাদের বোঝানো হয়েছে। মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য স্ত্রীলোকদের তাঁরা আগন্তুক হিসেবে গ্রহণ করবেন এবং হিজাবের আড়াল থেকে কথা বলবেন। নবী পত্নীদের জন্য প্রযোজ্য তালিকার সাথে সূরা নুরের [ ২৪ : ৩১] আয়াতের তুলনা করলে দেখা যাবে যে সূরা নূরের আয়াতের [ ২৪ : ৩১ ] তালিকাটি সকল মুসলিম মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য। লক্ষ্য করুন সূরা আহ্যাবের এই আয়াতে [ ৩৩ : ৫৫ ] স্বামীর আত্মীয় স্বজনের উল্লেখ নাই যা পূর্বোক্ত সূরা নূরের [ ২৪ : ৩১ ] আয়াতে উল্লেখ আছে। কারণ সূরা আহ্যাবের এই আয়াতটি [ ৩৩ : ৫৫ ] অবতীর্ণ হয়েছে শুধুমাত্র নবী পরিবারের জন্য যে পরিবার সমগ্র মুসলিম জাহানের কেন্দ্র বিন্দু। সে কারণে পূর্বের আয়াতে [ ২৪ : ৩১ ] গৃহভৃত্য ও ছোট শিশুর উল্লেখ আছে , যা এখানে [ ৩৩ : ৫৫ ] নাই।
সূরা আহ্যাব ও সূরা নূরের এই দুটি আয়াতের ভাষার দিকে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সাধারণ মুসলিম মহিলাদের জন্য “Hijab” বা পর্দ্দার উল্লেখ নাই। শুধুমাত্র বলা হয়েছে তাদের দেহসৌষ্ঠব ও সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখার জন্য, তাঁরা চাঁদরের সাহায্যে অবগুণ্ঠন দেবে ও দেহকে ঢেকে রাখবে এবং শালীনভাবে পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করবে। যাতে তাদের সৌন্দর্যের প্রদর্শনী না হয়। “Hijab” বা পর্দ্দা নবী পত্নীদের জন্য বিশেষ সম্মানের প্রতীক। এই আয়াতটি রসুলের [সা ] মৃত্যুর ৫/৬ বৎসর পূর্বে অবতীর্ণ হয়।
আয়াতঃ 033.056
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের তরে দোয়া কর এবং তাঁর প্রতি সালাম প্রেরণ কর।
Allâh sends His Salât (Graces, Honours, Blessings, Mercy, etc.) on the Prophet (Muhammad SAW) and also His angels too (ask Allâh to bless and forgive him). O you who believe! Send your Salât on (ask Allâh to bless) him (Muhammad SAW), and (you should) greet (salute) him with the Islâmic way of greeting (salutation i.e. AsSalâmu ’Alaikum).
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
Inna Allaha wamala-ikatahu yusalloona AAala alnnabiyyi ya ayyuha allatheena amanoo salloo AAalayhi wasallimoo tasleeman
YUSUFALI: Allah and His angels send blessings on the Prophet: O ye that believe! Send ye blessings on him, and salute him with all respect.
PICKTHAL: Lo! Allah and His angels shower blessings on the Prophet. O ye who believe! Ask blessings on him and salute him with a worthy salutation.
SHAKIR: Surely Allah and His angels bless the Prophet; O you who believe! call for (Divine) blessings on him and salute him with a (becoming) salutation.
KHALIFA: GOD and His angels help and support the prophet. O you who believe, you shall help and support him, and regard him as he should be regarded.
৫৬। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর উপর দরূদ পাঠিয়ে থাকেন ৩৭৬১। হে বিশ্বাসীগণ! তোমরাও তাঁর প্রতি দরূদ পাঠাও এবং তাঁকে সম্মানের সাথে সালাম জানাও।
৩৭৬১। আল্লাহ্ স্বয়ং এবং ফেরেশতাগণ নবীর [ সা ] প্রতি সম্মান ও আশীর্বাদ বর্ষণ করেন। কারণ তিনি হচ্ছেন পৃথিবীর সকল মানবকূলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। এই আয়াতে আমাদেরও বলা হয়েছে নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করতে – কারণ তিনি পৃথিবীর মানুষকে আত্মিক দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্তি দানের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর জীবনের দুঃখ কষ্ট, অত্যাচার-নির্যাতনের পরিবর্তে তিনি আমাদের আল্লাহ্র করুণা লাভের পথ, শান্তির পথ এবং লোভ লালসা ভরা পৃথিবীর আত্মিক যন্ত্রণা থেকে ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ প্রদর্শন করেন। আত্মিক বিকাশের সর্বোচ্চ পথ তিনি আমাদের প্রদর্শন করেছেন।
আয়াতঃ 033.057
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি।
Verily, those who annoy Allâh and His Messenger (SAW) Allâh has cursed them in this world, and in the Hereafter, and has prepared for them a humiliating torment.
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا
Inna allatheena yu/thoona Allaha warasoolahu laAAanahumu Allahu fee alddunya waal-akhirati waaAAadda lahum AAathaban muheenan
YUSUFALI: Those who annoy Allah and His Messenger – Allah has cursed them in this World and in the Hereafter, and has prepared for them a humiliating Punishment.
PICKTHAL: Lo! those who malign Allah and His messenger, Allah hath cursed them in the world and the Hereafter, and hath prepared for them the doom of the disdained.
SHAKIR: Surely (as for) those who speak evil things of Allah and His Messenger, Allah has cursed them in this world and the here after, and He has prepared for them a chastisement bringing disgrace.
KHALIFA: Surely, those who oppose GOD and His messenger, GOD afflicts them with a curse in this life, and in the Hereafter; He has prepared for them a shameful retribution.
৫৭। যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের বিরক্তি উৎপাদন করে, ৩৭৬২, আল্লাহ্ তাদের এই পৃথিবীতে এবং পরলোকে অভিশপ্ত করেন। এবং তাদের জন্য অবমাননাকর শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন।
৩৭৬২। দেখুন টিকা নং ৩৭৫৮।
আয়াতঃ 033.058
যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।
And those who annoy believing men and women undeservedly, bear on themselves the crime of slander and plain sin.
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا
Waallatheena yu/thoona almu/mineena waalmu/minati bighayri ma iktasaboo faqadi ihtamaloo buhtanan wa-ithman mubeenan
YUSUFALI: And those who annoy believing men and women undeservedly, bear (on themselves) a calumny and a glaring sin.
PICKTHAL: And those who malign believing men and believing women undeservedly, they bear the guilt of slander and manifest sin.
SHAKIR: And those who speak evil things of the believing men and the believing women without their having earned (it), they are guilty indeed of a false accusation and a manifest sin.
KHALIFA: Those who persecute the believing men and the believing women, who did not do anything wrong, have committed not only a falsehood, but also a gross sin.
৫৮। এবং যারা বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীদের বিনা দোষে কষ্ট দেয়, তারা অপবাদের ও সুস্পষ্ট পাপের বোঝা [নিজেদের উপর ] বহন করে ৩৭৬৩।
৩৭৬৩। দেখুন আয়াত [ ৪ : ১১২ ] যেখানে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ অপরাধ করে এবং সেই অপরাধের বোঝা অন্যের উপরে চাপাতে চেষ্টা করে , তবে সে পরলোকে দ্বিবিধ শাস্তির সম্মুখীন হবে। প্রথমত : তাঁর নিজস্ব পাপের যে শাস্তি তার জন্য ,দ্বিতীয়ত : অপর ব্যক্তিকে মিথ্যা পাপের কলঙ্কে অভিযু্ক্ত করার জন্য। এই আয়াতে [ ৩৩ : ৫৮ ] সার্বজনীন ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে , ব্যক্তিগতভাবে দুটি ব্যক্তির উল্লেখ না করে, দুই শ্রেণী লোকের বর্ণনা করা হয়েছে। মোমেন পুরুষ ও নারী [ যদি সত্যিকারের মুমিন হয় ] – যারা আল্লাহ্র জন্য মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে থাকে, যদি তারা অবিশ্বাসী ও পাপীদের দ্বারা অপমানিত হয়, আঘাত প্রাপ্ত হয়, অথবা বিরক্তির কারণ হয়; সেক্ষেত্রে অপরাধীদের অপরাধ হবে দ্বিবিধ যথা : ‘স্পষ্ট পাপ ‘ অর্থাৎ যে অন্যায় কাজ তারা করে তার ফলাফল এবং ‘অপবাদ’ অর্থাৎ মিথ্যা অভিযোগের দ্বারা যে ক্ষতি ও মনঃকষ্ট তারা মুমিন বান্দাদের দিয়ে থাকে তার ফলাফল।
আয়াতঃ 033.059
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
O Prophet! Tell your wives and your daughters and the women of the believers to draw their cloaks (veils) all over their bodies (i.e.screen themselves completely except the eyes or one eye to see the way). That will be better, that they should be known (as free respectable women) so as not to be annoyed. And Allâh is Ever OftForgiving, Most Merciful.
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
a ayyuha alnnabiyyu qul li-azwajika wabanatika wanisa-i almu/mineena yudneena AAalayhinna min jalabeebihinna thalika adna an yuAArafna fala yu/thayna wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: O Prophet! Tell thy wives and daughters, and the believing women, that they should cast their outer garments over their persons (when abroad): that is most convenient, that they should be known (as such) and not molested. And Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: O Prophet! Tell thy wives and thy daughters and the women of the believers to draw their cloaks close round them (when they go abroad). That will be better, so that they may be recognised and not annoyed. Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: O Prophet! say to your wives and your daughters and the women of the believers that they let down upon them their over-garments; this will be more proper, that they may be known, and thus they will not be given trouble; and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: O prophet, tell your wives, your daughters, and the wives of the believers that they shall lengthen their garments. Thus, they will be recognized (as righteous women) and avoid being insulted. GOD is Forgiver, Most Merciful.
রুকু – ৮
৫৯। [ হে নবী ! ] তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের এবং বিশ্বাসী নারীদের বল ৩৭৬৪, [ বাহিরে যাওয়ার সময়ে ] তারা যেনো তাদের চাঁদরের কিয়দংশ দেহের উপরে টেনে দেয় ৩৭৬৫। এতে তাদের চিনতে সুবিধা হবে, ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না ৩৭৬৬। আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল , পরম করুণাময় ৩৭৬৭।
৩৭৬৪। এই আয়াতটি সার্বজনীন। সকল মুসলিম নারীদের জন্য তা প্রযোজ্য হবে। আয়াতের বক্তব্য নবীপত্নী ও অন্যান্য মুসলিম নারী সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। তাদের বলা হয়েছে যখন তারা রাস্তায় বের হবেন তখন একটি বহিরাবরণ পরিধান করবেন।
৩৭৬৫। “Jilbad” বহুবচনে “Jalabib” অর্থ বহিরাবরণ। লম্বা গাউন যা সর্বশরীরকে ঢেকে দেয় অথবা পোষাক যা ঘাড় , গলা ও বুক ঢেকে ফেলে।
৩৭৬৬। এই আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে মহিলাদের বহিরাবরণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে। এর দ্বারা মহিলাদের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করতে চাওয়া হয় নাই বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মহিলাদের কুদৃষ্টি ও উক্ত্যক্ত করার হাত থেকে রক্ষা করা। পাপাসক্ত পুরুষ যাতে সহজে নারীর সৌন্দর্য্যে আকর্ষিত না হয় সেই কারণে এই ব্যবস্থা। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সকল স্থানেই প্রাচীন যুগ থেকে সম্মানীয় নারী ও পুরুষেরা বহিরাগমনের সময়ে বিশেষ পোষাক পরিধান করে থাকেন। পোষাক আভিজাত্য প্রকাশের এক বিশেষ মাধ্যম বিশেষ। পোষাকের এই বিশেষ দিকটি সর্ব যুগে বিদ্যমান ছিলো। এমন কি প্রাচীন আসেরিয়ান [ Assyrian ] সভ্যতার সময়ে , আসেরিয়ান আইন ছিলো যে বিবাহিত মহিলারা রাস্তায় বের হতে অবগুণ্ঠনের ব্যবহার করবেন, যা ছিলো সম্মানের প্রতীক স্বরূপ। কারণ উক্ত অবগুণ্ঠন ক্রীতদাসী এবং চরিত্রহীনাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। দেখুন Cambridge Ancient History III 107 সুতারাং মুসলিম মহিলাদের অবগুণ্ঠণের দ্বারা নিজেকে আবৃত করে রাস্তায় বের হওয়ার অর্থ এই নয় যে , তাদের স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ। আল্লাহ্ পরিষ্কার ভাবে এই আয়াতের মাধ্যমে বলেছেন যে, বহিরাবরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে ” উহাদিগকে উত্ত্যক্ত করা হইবে না।” এখানে লক্ষ্যণীয় যে বহিরাবরণে মুখ ঢাকার উল্লেখ নাই, কারণ এই আবরণটি এমন হবে যেনো মহিলাদের “সহজে চেনা যায়।” রাস্তায় বের হলে মহিলাদের ” চেনা সহজতর ” এবং ” উত্ত্যক্ত হওয়ার ” হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য-ই ইসলাম নারীদের জন্য বহিরাবরণের সুবন্দোবস্ত করেছে। সেই কারণে নারী যখন যৌবন ও সৌন্দর্য্য হারায় তখন আর বহিরাবরণের প্রয়োজন নাই। দেখুন সূরা নূরে আয়াত [ ২৪ : ৬ ০ ] এ বর্ণনা করা হয়েছে , “বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না , যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে তাদের বহিরাবরণ খুলে রাখে, তাদের জন্য দোষ নাই।” এই আয়াত থেকে এই ধারণাই সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়েছে যে মহিলাদের গৃহে বন্দী করার জন্যই পর্দ্দার বন্দোবস্ত করা হয় নাই। বর্তমান বিশ্বে মুসলমান নারীদের পর্দ্দার দোহাই দিয়ে তাদের বহিঃবির্শ্বের সাথে সংযোগ স্থাপনে বাধা দান করা হয় যা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী। ইসলামের প্রথম যুগের বিভিন্ন মহিয়সী মহিলাদের জীবনই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। নারী ও পুরুষ প্রত্যেকেই প্রত্যেকের দৈহিক শালীনতা রক্ষা করে চলবে এই হচ্ছে ইসলামিক জীবন বিধান।
৩৭৬৭। ” আল্লাহ্ ক্ষমাশীল , পরম দয়ালু।” এই আয়াতে মুসলিম মহিলাদের জন্য যে বিধানের প্রচলন করা হয়েছে, তা মহিলারা আন্তরিক ভাবে ও বিশ্বস্তভাবে মেনে চলতে চেষ্টা করবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ মনের দিক থেকে দুর্বল। যদি কেউ মানবিক দুর্বলতার কারণে তা মানতে অক্ষম হয়, তবে আল্লাহ্ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ” ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।”
আয়াতঃ 033.060
মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং মদীনায় গুজব রটনাকারীরা যদি বিরত না হয়, তবে আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আপনাকে উত্তেজিত করব। অতঃপর এই শহরে আপনার প্রতিবেশী অল্পই থাকবে।
If the hypocrites, and those in whose hearts is a disease (evil desire for adultery, etc.), and those who spread false news among the people in AlMadinah, cease not, We shall certainly let you overpower them, then they will not be able to stay in it as your neighbours but a little while.
لَئِن لَّمْ يَنتَهِ الْمُنَافِقُونَ وَالَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْمُرْجِفُونَ فِي الْمَدِينَةِ لَنُغْرِيَنَّكَ بِهِمْ ثُمَّ لَا يُجَاوِرُونَكَ فِيهَا إِلَّا قَلِيلًا
La-in lam yantahi almunafiqoona waallatheena fee quloobihim maradun waalmurjifoona fee almadeenati lanughriyannaka bihim thumma la yujawiroonaka feeha illa qaleelan
YUSUFALI: Truly, if the Hypocrites, and those in whose hearts is a disease, and those who stir up sedition in the City, desist not, We shall certainly stir thee up against them: Then will they not be able to stay in it as thy neighbours for any length of time:
PICKTHAL: If the hypocrites, and those in whose hearts is a disease, and the alarmists in the city do not cease, We verily shall urge thee on against them, then they will be your neighbours in it but a little while.
SHAKIR: If the hypocrites and those in whose hearts is a disease and the agitators in the city do not desist, We shall most certainly set you over them, then they shall not be your neighbors in it but for a little while;
KHALIFA: Unless the hypocrites, and those with disease in their hearts, and the vicious liars of the city refrain (from persecuting you), we will surely grant you the upper hand, then they will be forced to leave within a short while.
৬০। মুনাফেকগণ এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তারা এবং নগরে গুজব রটনাকারীরা ৩৭৬৮, যদি তাদের [হীন কাজ থেকে ] বিরত না হয়, আমি নিশ্চয়ই তোমাকে তাদের বিরুদ্ধে প্রবল করবো। এরপরে তারা এখানে তোমার প্রতিবেশীরূপে থাকতে অল্প সময়ের জন্য সক্ষম হবে না।
৩৭৬৮। রসুলের [ সা ] নগরীতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে গুজব রটানো হারাম বা নিষিদ্ধ। এরূপ কাজ যারা করবে তাদের জন্য এই আয়াতে কঠোরভাবে সর্তকবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। এরূপ কাজ শুধুমাত্র মোনাফেকদের দ্বারাই করা সম্ভব, কারণ মোনাফেকরা মুখে নিজেদের মুসলমান বলে দাবী করলেও, অন্তরে তারা মুসলিম বিরোধী। মোনাফেকদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা চিন্তায় – কথায় ও কাজে পরস্পর বিরোধী। তারা এরূপ করে কারণ তাদের অন্তর অর্থাৎ মানসিক অবস্থা ব্যধিগ্রস্থ। সেখানে আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা ও সত্যবাদিতার কোনও স্থান নাই। যারা মোনাফেক অর্থাৎ ” অন্তরে ব্যধিগ্রস্থ ” তারাই
১) নিরীহ ও নিদোর্ষ মহিলাদের উৎপীড়ন করতে ভালোবাসে
২) এরাই মিথ্যা গুজব দ্বারা নগরীতে গণ বিদ্রোহের সূচনার প্রয়াস পায়।
অনুবাদকের মন্তব্য : মোনাফেকদের এই বৈশিষ্ট্য আজও আমাদের সমাজে প্রকটভাবে বিদ্যমান। ধর্মের নামে নারী নির্যাতন ও সমাজে অশান্তি সৃষ্টির প্রয়াস এসব মোনাফেকদের আজও প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আয়াতঃ 033.061
অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরা হবে এবং প্রাণে বধ করা হবে।
Accursed, wherever found, they shall be seized and killed with a (terrible) slaughter.
مَلْعُونِينَ أَيْنَمَا ثُقِفُوا أُخِذُوا وَقُتِّلُوا تَقْتِيلًا
MalAAooneena ayna ma thuqifoo okhithoo waquttiloo taqteelan
YUSUFALI: They shall have a curse on them: whenever they are found, they shall be seized and slain (without mercy).
PICKTHAL: Accursed, they will be seized wherever found and slain with a (fierce) slaughter.
SHAKIR: Cursed: wherever they are found they shall be seized and murdered, a (horrible) murdering.
KHALIFA: They have incurred condemnation wherever they go; (unless they stop attacking you,) they may be taken and killed.
৬১। তাদের উপর থাকবে অভিশাপ ৩৭৬৯। তাদের যেখানেই দেখা যাবে ,সেখানেই ধরা হবে এবং [নির্দ্দয় ভাবে ] হত্যা করা হবে।
৩৭৬৯। মোনাফেকরা আল্লাহ্র অভিশপ্ত। তারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও পথ নির্দ্দেশ ধারণে অক্ষম হবে। এরা পৃথিবীতে সংঘাত ও নৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টিতে পারঙ্গম। এই আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন যে, বিপর্যয়ও সংঘাত দ্বারা মোনাফেকরা আল্লাহ্র সৃষ্টিকে ধবংস করতে পারবে না। বরং তারাই তাদের কৃতকর্মের দরুণ ধবংস হয়ে যাবে। পৃথিবীতে যারা আইনকে অমান্য করে, অপরাধ করে, তারা দেশের প্রচলিত আইন দ্বারাই শাস্তি লাভ করে থাকে।
আয়াতঃ 033.062
যারা পূর্বে অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর রীতি। আপনি আল্লাহর রীতিতে কখনও পরিবর্তন পাবেন না।
That was the Way of Allâh in the case of those who passed away of old, and you will not find any change in the Way of Allâh.
سُنَّةَ اللَّهِ فِي الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلُ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّهِ تَبْدِيلًا
Sunnata Allahi fee allatheena khalaw min qablu walan tajida lisunnati Allahi tabdeelan
YUSUFALI: (Such was) the practice (approved) of Allah among those who lived aforetime: No change wilt thou find in the practice (approved) of Allah.
PICKTHAL: That was the way of Allah in the case of those who passed away of old; thou wilt not find for the way of Allah aught of power to change.
SHAKIR: (Such has been) the course of Allah with respect to those who have gone before; and you shall not find any change in the course of Allah.
KHALIFA: This is GOD’s eternal system, and you will find that GOD’s system is unchangeable.
৬২। পূর্বে যারা গত হয়েছে , তাদের মধ্যে ইহাই ছিলো আল্লাহ্র [অনুমোদিত ]নিয়ম। আল্লাহ্র [ অনুমোদিত ] নিয়মে তুমি কখনও কোন পরিবর্তন পাবে না ৩৭৭০।
৩৭৭০। ইহুদীদের এ ব্যাপারে আইন আরও কঠোর। দেখুন [ ৩৩ : ২৬ ] আয়াত ও টিকা ৩৭০৩ এবং ৩৭০৪। ইসলামে এই শাস্তিকে লঘু করা হয়। যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে গোপনে বা প্রকাশ্যে সমাজের শৃঙ্খলা ও শান্তিকে ধ্বংস করতে চায়; সমাজের প্রচলিত আইনকে অস্বীকার করে, বিশ্বাসঘাতকতা করে সামাজিক নিরাপত্তার প্রতি , তাদের দমন করা এবং শাস্তি দান করা পৃথিবীর যে কোনও সভ্য সমাজের রীতি। কারণ এ ব্যতীত সুসভ্য নাগরিক ও সামাজিক জীবন কল্পনাও করা যায় না। নাগরিক ও সামাজিক জীবনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্যই তা প্রয়োজন। অপরাধী ও অন্যায়কারী , যারা সমাজের শান্তি শৃঙ্খলার বিরোধী তাদের কঠোর শাস্তি দান ব্যতীত দমন করা সম্ভব নয়।
আয়াতঃ 033.063
লোকেরা আপনাকে কেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহর কাছেই। আপনি কি করে জানবেন যে সম্ভবতঃ কেয়ামত নিকটেই।
People ask you concerning the Hour, say: ”The knowledge of it is with Allâh only. What do you know? It may be that the Hour is near!”
يَسْأَلُكَ النَّاسُ عَنِ السَّاعَةِ قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ اللَّهِ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُونُ قَرِيبًا
Yas-aluka alnnasu AAani alssaAAati qul innama AAilmuha AAinda Allahi wama yudreeka laAAalla alssaAAata takoonu qareeban
YUSUFALI: Men ask thee concerning the Hour: Say, “The knowledge thereof is with Allah (alone)”: and what will make thee understand?- perchance the Hour is nigh!
PICKTHAL: Men ask thee of the Hour. Say: The knowledge of it is with Allah only. What can convey (the knowledge) unto thee? It may be that the Hour is nigh.
SHAKIR: Men ask you about the hour; say: The knowledge of it is only with Allah, and what will make you comprehend that the : hour may be nigh.
KHALIFA: The people ask you about the Hour (end of the world). Say, “The knowledge thereof is only with GOD. For all that you know, the Hour may be close.”
৬৩। লোকে তোমাকে [ কেয়ামতের ] সময় সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে : বল, ” ইহার জ্ঞান কেবল আল্লাহ্রই আছে।” ৩৭৭১। এবং তুমি তা কি ভাবে বুঝবে ? সম্ভবত : [কেয়ামতের ] সময় নিকটবর্তী।
৩৭৭১। কেয়ামতের ধারণা সম্বন্ধে দেখুন আয়াত [ ৭ : ১৮৭ ]। পৃথিবীর শেষ দিন বা কেয়ামতের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্র নিকট। কিন্তু শেষ দিবস বা কেয়ামত অবশ্যাম্ভবী ঘটনা। কেয়ামত ঘটার সঠিক সময় আমরা কেউই জানি না। আল্লাহ্ তা আমাদের নিকট প্রকাশ করেন নাই। যদি স্রষ্টা পূর্বাহ্নে-ই আমাদের তা জানিয়ে দিতেন , তবে বিশ্ব মানব কূলের জন্য তা অশান্তির কারণ হতো। মানুষের চিন্তা, কর্ম, জীবনকে তা প্রভাবিত করতো। ফলে মানব সভ্যতার অগ্রগতি ব্যহত হতো। “Heavy were its burden through the heavens and the earth” তবে পৃথিবীর শেষ দিন বা কেয়ামত যে কোনও মূহুর্তে ঘটে যেতে পারে- হয়তো তা বেশী দূর নয়। ধর্মীয় ভাষায় তা এ ভাবে প্রকাশ করা যায় : ব্যক্তির মৃত্যুক্ষণই হচ্ছে তার জন্য শেষ সময় বা কেয়ামত বা Qiyamat Sugra। সে ভাবে বিচার করলে সকল ব্যক্তির নিকট মৃত্যু সম অভিজ্ঞতা বহন করবে না। অবশ্য মৃত্যু যে কোনও লোকের যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে।
আয়াতঃ 033.064
নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছেন।
Verily, Allâh has cursed the disbelievers, and has prepared for them a flaming Fire (Hell).
إِنَّ اللَّهَ لَعَنَ الْكَافِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمْ سَعِيرًا
Inna Allaha laAAana alkafireena waaAAadda lahum saAAeeran
YUSUFALI: Verily Allah has cursed the Unbelievers and prepared for them a Blazing Fire,-
PICKTHAL: Lo! Allah hath cursed the disbelievers, and hath prepared for them a flaming fire,
SHAKIR: Surely Allah has cursed the unbelievers and has prepared for them a burning fire,
KHALIFA: GOD has condemned the disbelievers, and has prepared for them Hell.
৬৪। আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করেছেন, –
৬৫। সেখানে চিরদিন বাস করার জন্য। [সেখানে ] তারা কোন রক্ষাকর্তা বা সাহায্যকারী পাবে না।
৬৬। সেদিন আগুনের মাঝে তাদের মুখমন্ডল উলট-পালট করা হবে ৩৭৭২, এবং তারা বলবে, ” আমাদের দুর্ভাগ্য ! আমরা যদি আল্লাহ্কে মানতাম ও রাসুলকে মানতাম।”
৩৭৭২। ‘মুখমন্ডল ‘ শব্দটি দ্বারা ব্যক্তির সমগ্র ব্যক্তিসত্ত্বাকে বোঝানো হয়েছে; এবং উলটপালট শব্দটি দ্বারা সম্মান হানিকর এবং কলঙ্কিত ও অপমানকর অবস্থা বোঝানো হয়েছে। যখন পাপীদের কাজের সমুচিত প্রতিদান দেয়া হবে , তাদের অপমানিত করা হবে। তারা তখন আফসোস করবে পৃথিবীতে সঠিক পথ অবলম্বন না করার জন্য। এ সময়ে তারা পৃথিবীতে অতিবাহিত সময়ের জন্য আক্ষেপ করবে এবং তাদের নেতাদের অভিযুক্ত করবে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত না করার জন্য , তাদের ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করার জন্য। কিন্তু তারা ভুলে যায় প্রত্যেকেরই নিজস্ব দায় দায়িত্ব রয়েছে তাদের কর্মের জন্য।
আয়াতঃ 033.065
তথায় তারা অনন্তকাল থাকবে এবং কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
Wherein they will abide for ever, and they will find neither a Walî (a protector) nor a helper.
خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا لَّا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
Khalideena feeha abadan la yajidoona waliyyan wala naseeran
YUSUFALI: To dwell therein for ever: no protector will they find, nor helper.
PICKTHAL: Wherein they will abide for ever. They will find (then) no protecting friend nor helper.
SHAKIR: To abide therein for a long time; they shall not find a protector or a helper.
KHALIFA: Eternally they abide therein. They will find no lord, nor a supporter.
৬৪। আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করেছেন, –
৬৫। সেখানে চিরদিন বাস করার জন্য। [সেখানে ] তারা কোন রক্ষাকর্তা বা সাহায্যকারী পাবে না।
৬৬। সেদিন আগুনের মাঝে তাদের মুখমন্ডল উলট-পালট করা হবে ৩৭৭২, এবং তারা বলবে, ” আমাদের দুর্ভাগ্য ! আমরা যদি আল্লাহ্কে মানতাম ও রাসুলকে মানতাম।”
৩৭৭২। ‘মুখমন্ডল ‘ শব্দটি দ্বারা ব্যক্তির সমগ্র ব্যক্তিসত্ত্বাকে বোঝানো হয়েছে; এবং উলটপালট শব্দটি দ্বারা সম্মান হানিকর এবং কলঙ্কিত ও অপমানকর অবস্থা বোঝানো হয়েছে। যখন পাপীদের কাজের সমুচিত প্রতিদান দেয়া হবে , তাদের অপমানিত করা হবে। তারা তখন আফসোস করবে পৃথিবীতে সঠিক পথ অবলম্বন না করার জন্য। এ সময়ে তারা পৃথিবীতে অতিবাহিত সময়ের জন্য আক্ষেপ করবে এবং তাদের নেতাদের অভিযুক্ত করবে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত না করার জন্য , তাদের ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করার জন্য। কিন্তু তারা ভুলে যায় প্রত্যেকেরই নিজস্ব দায় দায়িত্ব রয়েছে তাদের কর্মের জন্য।
আয়াতঃ 033.066
যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে, হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম।
On the Day when their faces will be turned over in the Fire, they will say: ”Oh, would that we had obeyed Allâh and obeyed the Messenger (Muhammad SAW).”
يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللَّهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا
Yawma tuqallabu wujoohuhum fee alnnari yaqooloona ya laytana ataAAna Allaha waataAAna alrrasoola
YUSUFALI: The Day that their faces will be turned upside down in the Fire, they will say: “Woe to us! Would that we had obeyed Allah and obeyed the Messenger!”
PICKTHAL: On the day when their faces are turned over in the Fire, they say: Oh, would that we had obeyed Allah and had obeyed His messenger!
SHAKIR: On the day when their faces shall be turned back into the fire, they shall say: O would that we had obeyed Allah and obeyed the Messenger!
KHALIFA: The day they are thrown into Hell, they will say, “Oh, we wish we obeyed GOD, and obeyed the messenger.”
৬৪। আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত করেছেন, –
৬৫। সেখানে চিরদিন বাস করার জন্য। [সেখানে ] তারা কোন রক্ষাকর্তা বা সাহায্যকারী পাবে না।
৬৬। সেদিন আগুনের মাঝে তাদের মুখমন্ডল উলট-পালট করা হবে ৩৭৭২, এবং তারা বলবে, ” আমাদের দুর্ভাগ্য ! আমরা যদি আল্লাহ্কে মানতাম ও রাসুলকে মানতাম।”
৩৭৭২। ‘মুখমন্ডল ‘ শব্দটি দ্বারা ব্যক্তির সমগ্র ব্যক্তিসত্ত্বাকে বোঝানো হয়েছে; এবং উলটপালট শব্দটি দ্বারা সম্মান হানিকর এবং কলঙ্কিত ও অপমানকর অবস্থা বোঝানো হয়েছে। যখন পাপীদের কাজের সমুচিত প্রতিদান দেয়া হবে , তাদের অপমানিত করা হবে। তারা তখন আফসোস করবে পৃথিবীতে সঠিক পথ অবলম্বন না করার জন্য। এ সময়ে তারা পৃথিবীতে অতিবাহিত সময়ের জন্য আক্ষেপ করবে এবং তাদের নেতাদের অভিযুক্ত করবে তাদের সঠিক পথে পরিচালিত না করার জন্য , তাদের ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করার জন্য। কিন্তু তারা ভুলে যায় প্রত্যেকেরই নিজস্ব দায় দায়িত্ব রয়েছে তাদের কর্মের জন্য।
আয়াতঃ 033.067
তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।
And they will say: ”Our Lord! Verily, we obeyed our chiefs and our great ones, and they misled us from the (Right) Way.
وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا
Waqaloo rabbana inna ataAAna sadatana wakubaraana faadalloona alssabeela
YUSUFALI: And they would say: “Our Lord! We obeyed our chiefs and our great ones, and they misled us as to the (right) Path.
PICKTHAL: And they say: Our Lord! Lo! we obeyed our princes and great men, and they misled us from the Way.
SHAKIR: And they shall say: O our Lord! surely we obeyed our leaders and our great men, so they led us astray from the path;
KHALIFA: They will also say, “Our Lord, we have obeyed our masters and leaders, but they led us astray.
৬৭। তারা আরও বলবে , ” হে আমাদের প্রভু ! আমরা আমাদের নেতা ও মাননীয় ব্যক্তির আনুগত্য করেছি, এবং তারা আমাদের [সঠিক ] পথ থেকে বিপথগামী করেছে।
৬৮। ” হে আমাদের প্রভু ! তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দাও ৩৭৭৩ ; এবং তাদের অভিশপ্ত কর মহা অভিশাপ দ্বারা।”
৩৭৭৩। দেখুন অনুরূপ আয়াতের জন্য [ ২৫ : ৬৯ ] আয়াত ও টিকা ৩১২৯ এবং আয়াত [ ১১ : ২০ ] ও টিকা ১৫১৫। শাস্তি দ্বিগুণ করার কারণ :
১) তারা সুপথের পরিবর্তে পাপের পথে বা ভ্রান্ত পথে ছিলো।
২) নিজেরা পাপের পথ অবলম্বন ব্যতীতও তারা অপরকে এই পথে পরিচালিত করে।
আয়াতঃ 033.068
হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।
Our Lord! give them double torment and curse them with a mighty curse!”
رَبَّنَا آتِهِمْ ضِعْفَيْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَالْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِيرًا
Rabbana atihim diAAfayni mina alAAathabi wailAAanhum laAAnan kabeeran
YUSUFALI: “Our Lord! Give them double Penalty and curse them with a very great Curse!”
PICKTHAL: Our Lord! Oh, give them double torment and curse them with a mighty curse.
SHAKIR: O our Lord! give them a double punishment and curse them with a great curse.
KHALIFA: “Our Lord, give them double the retribution, and curse them a tremendous curse.”
৬৭। তারা আরও বলবে , ” হে আমাদের প্রভু ! আমরা আমাদের নেতা ও মাননীয় ব্যক্তির আনুগত্য করেছি, এবং তারা আমাদের [সঠিক ] পথ থেকে বিপথগামী করেছে।
৬৮। ” হে আমাদের প্রভু ! তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দাও ৩৭৭৩ ; এবং তাদের অভিশপ্ত কর মহা অভিশাপ দ্বারা।”
৩৭৭৩। দেখুন অনুরূপ আয়াতের জন্য [ ২৫ : ৬৯ ] আয়াত ও টিকা ৩১২৯ এবং আয়াত [ ১১ : ২০ ] ও টিকা ১৫১৫। শাস্তি দ্বিগুণ করার কারণ :
১) তারা সুপথের পরিবর্তে পাপের পথে বা ভ্রান্ত পথে ছিলো।
২) নিজেরা পাপের পথ অবলম্বন ব্যতীতও তারা অপরকে এই পথে পরিচালিত করে।
আয়াতঃ 033.069
হে মুমিনগণ! মূসাকে যারা কষ্ট দিয়েছে, তোমরা তাদের মত হয়ো না। তারা যা বলেছিল, আল্লাহ তা থেকে তাঁকে নির্দোষ প্রমাণ করেছিলেন। তিনি আল্লাহর কাছে ছিলেন মর্যাদাবান।
O you who believe! Be not like those who annoyed Mûsa (Moses), but Allâh cleared him of that which they alleged, and he was honourable before Allâh.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ آذَوْا مُوسَى فَبَرَّأَهُ اللَّهُ مِمَّا قَالُوا وَكَانَ عِندَ اللَّهِ وَجِيهًا
Ya ayyuha allatheena amanoo la takoonoo kaallatheena athaw moosa fabarraahu Allahu mimma qaloo wakana AAinda Allahi wajeehan
YUSUFALI: O ye who believe! Be ye not like those who vexed and insulted Moses, but Allah cleared him of the (calumnies) they had uttered: and he was honourable in Allah’s sight.
PICKTHAL: O ye who believe! Be not as those who slandered Moses, but Allah proved his innocence of that which they alleged, and he was well esteemed in Allah’s sight.
SHAKIR: O you who believe! be not like those who spoke evil things of Musa, but Allah cleared him of what they said, and he was worthy of regard with Allah.
KHALIFA: O you who believe, do not be like those who hurt Moses, then GOD absolved him of what they said. He was, in the sight of GOD, honorable.
রুকু – ৯
৬৯। হে বিশ্বাসীগণ ! তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা মুসাকে বিরক্ত করেছে এবং অপমানিত করেছে ৩৭৭৪। কিন্তু তারা [ যে কলঙ্ক ] রটনা করেছিলো , আল্লাহ্ তাকে তা থেকে মুক্ত করেছেন। সে ছিলো আল্লাহ্র নিকট মর্যদাবান।
৩৭৭৪। ইহুদীরা হযরত মুসার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং আল্লাহ্র আইন ভঙ্গ করে এবং বিভিন্ন বাক্যবাণে তাঁর বিরক্ত উৎপাদন করে। বাইবেলে বর্ণিত মুসার কাহিনী নিম্নরূপঃ [Num. xii 1- 13 ] : মুসার ভগ্নী মিরিয়াম এবং ভাই হারূন মুসাকে বিদেশী ইথিওপিয়ান মহিলাকে বিবাহ করার জন্য সর্বদা দোষারোপ করতো। কিন্তু আল্লাহ্ ঘোষণা করেছেন যে মুসা পাপমুক্ত।”My servant Moses is not , so , who is faithful in all mine house” মিরিয়াম শাস্তি হিসেবে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়। সাতদিন রোগাক্রান্ত থাকার পরে আল্লাহ্ তাঁকে ক্ষমা করেন এবং সে আরোগ্য লাভ করে এবং হারুণও আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করে। এই ছিলো ওল্ড টেস্টামেন্টের ভাষ্য। হযরত মুসার মত, পূণ্যাত্মা রসুলকেও [ সা ] আক্রমণ করা হয়, জাহাসের কন্যা জয়নবকে বিবাহ করার জন্য। অবশ্য এক্ষেত্রে রসুলের [ সা ] নিকট জনেরা তা করেন নাই। আয়াতটির এরই প্রেক্ষাপটে অবতীর্ণ হয়।
আয়াতঃ 033.070
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল।
O you who believe! Keep your duty to Allâh and fear Him, and speak (always) the truth.
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا
Ya ayyuha allatheena amanoo ittaqoo Allaha waqooloo qawlan sadeedan
YUSUFALI: O ye who believe! Fear Allah, and (always) say a word directed to the Right:
PICKTHAL: O ye who believe! Guard your duty to Allah, and speak words straight to the point;
SHAKIR: O you who believe! be careful of(your duty to) Allah and speak the right word,
KHALIFA: O you who believe, reverence GOD and utter only the correct utterances.
৭০। হে বিশ্বাসীগণ ! আল্লাহকে ভয় কর , এবং [ সর্বদা ] ন্যায়ের অভিমুখে কথা বল ৩৭৭৫।
৩৭৭৫। ” আল্লাহকে ভয় কর ও ন্যায়ের অভিমুখে কথা বল ” – এই উপদেশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মিথ্যা রটনা ও মিথ্যা কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। শুধু যে সত্য কথা বলতে হবে তাই-ই নয়, সর্বদা সঠিক ভাবে -সত্য- বক্তব্যকে উপস্থাপন করতে হবে। অর্থাৎ সত্য মিথ্যার মিশ্রণ বা সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। সত্যকে সর্বদা সহজ সরল ভাবে , নির্দ্দিষ্ট ভাবে, কথায় ও কাজে সমভাবে উপস্থাপন করতে হবে। আয়াতে [ ২ : ৪২ ] বলা হয়েছে , ” তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না।” আমরা যদি সর্বদা সত্যাশ্রয়ীরূপে জীবন অতিবাহিত করতে পারি , তবে আল্লাহ্ আমাদের চরিত্র থেকে দোষত্রুটি দূর করে দেবেন এবং আমাদের আত্মার মাঝে জ্ঞান , প্রজ্ঞা ও অন্তর্দৃষ্টির জন্ম দেবেন। আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা আল্লাহ্র নিকট গ্রহণযোগ্য , তিনি আমাদের চরিত্রের দোষত্রুটি, ভুল-ভ্রান্তি , পূর্বের কৃত পাপ ক্ষমা করে দেবেন।
উপদেশ : মিথ্যা আমাদের চরিত্রকে ধ্বংস করে দেয়, আত্মার গুণাবলী অর্জনে বাঁধার সৃষ্টি করে। চরিত্রের সকল নৈতিক গুণাবলীর কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সত্যের সাধনা।
আয়াতঃ 033.071
তিনি তোমাদের আমল-আচরণ সংশোধন করবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহা সাফল্য অর্জন করবে।
He will direct you to do righteous good deeds and will forgive you your sins. And whosoever obeys Allâh and His Messenger (SAW) he has indeed achieved a great achievement (i.e. he will be saved from the Hell-fire and made to enter Paradise).
يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَن يُطِعْ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا
Yuslih lakum aAAmalakum wayaghfir lakum thunoobakum waman yutiAAi Allaha warasoolahu faqad faza fawzan AAatheeman
YUSUFALI: That He may make your conduct whole and sound and forgive you your sins: He that obeys Allah and His Messenger, has already attained the highest achievement.
PICKTHAL: He will adjust your works for you and will forgive you your sins. Whosoever obeyeth Allah and His messenger, he verily hath gained a signal victory.
SHAKIR: He will put your deeds into a right state for you, and forgive you your faults; and whoever obeys Allah and His Messenger, he indeed achieves a mighty success.
KHALIFA: He will then fix your works, and forgive your sins. Those who obey GOD and His messenger have triumphed a great triumph.
৭১। তাহলে তিনি তোমাদের আচরণকে করবেন ত্রুটিমুক্ত ও নির্দ্দোষ এবং তোমাদের সকল পাপকে ক্ষমা করে দেবেন যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে , তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে ৩৭৭৬।
৩৭৭৬। এই আয়াতটি পূর্বের আয়াতের ধারাবাহিকতা। সত্য বলা ,সত্য চিন্তা করা , সততার পূর্ব প্রস্তুতি। সততা এমন একটি গুণ যা সত্য থেকে উৎসারিত। জীবনের প্রতিটি কাজে যারা সৎ এবং সততার মাধ্যমে যারা জীবনকে পরিচালিত করেন তাদের জন্য আল্লাহ্র বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষিত হবে। আল্লাহ্ তাদের ত্রুটিমুক্ত ও ক্ষমা করবেন- অর্থাৎ তাঁরা নিজস্ব চারিত্রিক দোষত্রুটি উপলব্ধিতে সক্ষম হবে এবং তা সংশোধন করে সঠিক পথে পরিচালিত হবে। এই উপলব্ধির জন্য প্রয়োজন অর্ন্তদৃষ্টি , বিবেক ও প্রজ্ঞা। আল্লাহ্ এ সবই তাদের দান করবেন ও তাদের পূর্বের সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। এটাই হচ্ছে আত্মার মোক্ষলাভ বা মুক্তি। আত্মা পৃথিবীর ক্লেদাক্ত পরিবেশ থেকে মুক্তি লাভ করে পরম করুণাময়ের সান্নিধ্য লাভের যোগ্যতা অর্জন করে। পৃথিবীতে মানব জীবনের এটাই হচ্ছে সর্বোচ্চ চাওয়া ও পাওয়া বা মহাসাফল্য অর্জন।
আয়াতঃ 033.072
আমি আকাশ পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অতঃপর তারা একে বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হল; কিন্তু মানুষ তা বহণ করল। নিশ্চয় সে জালেম-অজ্ঞ।
Truly, We did offer AlAmânah (the trust or moral responsibility or honesty and all the duties which Allâh has ordained) to the heavens and the earth, and the mountains, but they declined to bear it and were afraid of it (i.e. afraid of Allâh’s Torment). But man bore it. Verily, he was unjust (to himself) and ignorant (of its results).
إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَةَ عَلَى السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَن يَحْمِلْنَهَا وَأَشْفَقْنَ مِنْهَا وَحَمَلَهَا الْإِنسَانُ إِنَّهُ كَانَ ظَلُومًا جَهُولًا
Inna AAaradna al-amanata AAala alssamawati waal-ardi waaljibali faabayna an yahmilnaha waashfaqna minha wahamalaha al-insanu innahu kana thalooman jahoolan
YUSUFALI: We did indeed offer the Trust to the Heavens and the Earth and the Mountains; but they refused to undertake it, being afraid thereof: but man undertook it;- He was indeed unjust and foolish;-
PICKTHAL: Lo! We offered the trust unto the heavens and the earth and the hills, but they shrank from bearing it and were afraid of it. And man assumed it. Lo! he hath proved a tyrant and a fool.
SHAKIR: Surely We offered the trust to the heavens and the earth and the mountains, but they refused to be unfaithful to it and feared from it, and man has turned unfaithful to it; surely he is unjust, ignorant;
KHALIFA: We have offered the responsibility (freedom of choice) to the heavens and the earth, and the mountains, but they refused to bear it, and were afraid of it. But the human being accepted it; he was transgressing, ignorant.
৭২। আমি অবশ্যই এই আমানতকে ৩৭৭৭, আসমান, জমিন ও পর্বতমালাকে দিতে চেয়েছিলাম ৩৭৭৮। কিন্তু তারা শংকিত হয়ে ইহার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলো ৩৭৭৯,৩৭৮০। কিন্তু মানুষ দায়িত্ব গ্রহণ করলো ৩৭৮১। অবশ্যই সে অত্যাচারী ও নির্বোধ ৩৭৮২।
৩৭৭৭। ‘আমানত ‘ যা ইংরেজীতে বলা হয় “Trust” শব্দটির অর্থ হচ্ছে কোনও ব্যক্তিকে কিছু দেয়া যার বিলি বন্দোবস্ত বা বিন্যাস বা ব্যবস্থা করার অধিকার তার থাকবে। আমানতকারী আমানতের রক্ষণাবেক্ষণ করবে, এবং মালিকের ইচ্ছা অনুযায়ী বা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার করবে। আমানত প্রদত্ত বিষয় বস্তু এমন হবে যে, তা যেনো নষ্ট না হয়ে বরং উত্তোরোত্তর উন্নতি লাভ করে। এখানেই আমানতকারীর সাফল্য নিহিত। যদি আমানতকারীর এ সব কোনও ক্ষমতা না থাকে, তবে প্রকৃতপক্ষে তা আমানত নয়। প্রকৃত পক্ষে যিনি আমানতকারী নিযুক্ত করেন তিনি তা করেন নিজ শর্ত সাপেক্ষে যা আমানতকারী [Trustee] মেনে চলবে।
৩৭৭৮। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৫৯ : ২১ ] ; যেখানে উপমা হিসেবে কোরাণকে পর্বতের উপরে অবতীর্ণ করার উল্লেখ আছে। এই উপমার সাহায্যে মানুষের মানসিক চেতনাকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করেছে।
৩৭৭৯। আসমান , যমীন ও পর্বতমালা অর্থাৎ মানুষ ব্যতীত বিশ্বব্রহ্মান্ডের সকল সৃষ্ট পদার্থ ; আল্লাহ্র আমানত বা দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকার করলো। এই অস্বীকার করার অর্থ এই যে তারা “নিজস্ব কোন স্বাধীন ইচ্ছাকে” ধারণ করতে অস্বীকার করলো। তাদের মাঝে ভালোকে গ্রহণ করার ক্ষমতা ও মন্দকে প্রতিহত করার ক্ষমতা তারা ধারণ করতে অস্বীকার করলো এবং স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ব্যতিরেকেই তারা তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট থাকলো। মানুষ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোন সৃষ্ট পদার্থের বা প্রাণীজগতের ; ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে প্রতিহত করার ক্ষমতা বা ভালোকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ত্যাগ করে মন্দকে গ্রহণ করার ক্ষমতা নাই। এই ক্ষমতার বলেই মানুষ পৃথিবীতে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব বা আশরাফুল মাখলুকাত। মানুষ ব্যতীত বিশ্বব্রহ্মান্ডের সকল কিছুই আল্লাহ্র ইচ্ছার কাছে সমর্পিত। অর্থাৎ প্রাণী ও জড় ,যার মাঝে আল্লাহ্ যে ধর্ম দান করেছেন সে তাতেই তৃপ্ত এবং তার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নাই। যেমন : পানির ধর্ম পানির, আলোর ধর্ম আলোর। অনুরূপ ভাবে প্রাণীজগতও নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর , যা আল্লাহ্র দেয়া প্রাকৃতিক ধর্ম , যার বাইরে তারা যেতে অক্ষম। তাদের অসম্পূর্ণ জ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার থেকে আল্লাহ্র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দ্বারা পরিচালিত হওয়াকে বেছে নেয়। মানুষ অজ্ঞ, তাই সে এই গুরু দায়িত্ব স্ব-স্কন্ধে তুলে নেয়ার স্পর্ধা ও দুঃসাহস দেখাতে পেরেছে। যার ফলে মানুষ সঠিক পথ থেকে বারে বারে বিচ্যুত হয়। পাপীরা আল্লাহ্র এই আমানতকে খেয়ানত করে এবং তার ফলে তারা আল্লাহ্র শাস্তির যোগ্য হয়। অবশ্য যারা পূণ্যাত্মা তারা পৃথিবীর কালিমা মুক্ত হয়ে জীবনকে পূণ্যময় ভূবনে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। এরাই হচ্ছেন “Muqarrabin” বা আল্লাহ্র নিকটবর্তী। দেখুন [ ৫৬ : ১১, ৮৮ ] আয়াত। এই-ই হচ্ছে সর্বোচ্চ চাওয়া ও পাওয়া।
এই আয়াত থেকে এ কথাই সুস্পষ্ট যে, এই বিশ্ব ব্রহ্মান্ড অর্থাৎ আকাশ ও পৃথিবী মানুষ সৃষ্টির বহু পূর্বেই সৃষ্টি হয়েছিলো – যা বর্তমান বিজ্ঞানের তত্বকে সমর্থন করে। পৃথিবীতে মানুষের আগমন আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির অনেক পরে।
৩৭৮০। “Hamala”: দায়িত্ব বা ভার গ্রহণ করা, বহন করা , পৌছাইয়া দেয়া [ আমানত বা দায়িত্ব ] ইত্যাদি। অধিকাংশ তফসীরকারগণ এই অর্থ গুলিই গ্রহণ করে থাকেন। তবে অনেকে মনে করেন এই শব্দটি দ্বারা [ সঙ্গে করে ] চলে যাওয়া; পলায়ন করা ; আত্মসাৎ করা ইত্যাদি বোঝায়। অর্থাৎ আল্লাহ্র আমানতের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। সেক্ষেত্রে [ ৭২- ৭৩ ] আয়াত পর্যন্ত অর্থ হবে, আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্ট সকল বস্তু ও প্রাণীকে তাঁর দায়িত্ব অর্পণ করতে চাইলেন। মানুষ ব্যতীত সকল সৃষ্ট বস্তু ও প্রাণী সে দায়িত্ব নিতে ভয় পেলো , এই জন্য যে হয়তো বা তারা তা সঠিক ভাবে পালন করতে পারবে না। কিন্তু মানুষ নির্ভিকভাবে সে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলো কারণ মানুষ অজ্ঞ। পরিণতিতে মানুষ সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে অক্ষম হয় এবং আল্লাহ্র সাথে কৃত অঙ্গীকারের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ফলশ্রুতিতে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর সৃষ্টি হয়; কেউ হয় মোনাফেক,কেউ অবিশ্বাসী। এদেরকে আল্লাহ্ শাস্তি দান করবেন। অপরপক্ষে যারা আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বস্ত এবং বিশ্বাসী , তারা আল্লাহ্র কৃপা লাভে সমর্থ হয়। উভয় ক্ষেত্রে মানুষের শেষ পরিণতি একই।
৩৭৮১। দেখুন [ ২ : ৩০ – ৩৪] এবং এর টিকাসমূহ। আল্লাহ্ মানুষের জন্য অত্যন্ত উচ্চ সম্মানীয় স্থান নির্ধারিত করেন। মানুষ যখন পূত পবিত্র থাকে, সে তার আত্মাকে দুর্নিতি দ্বারা কলুষ করে না, তখন তার অবস্থান ফেরেশতাদেরও উপরে। সে অবস্থায় ফেরেশতারা তাঁকে সেজদা করে। কিন্তু মানুষ তাঁর মন্দ কাজের দরুণ নিজেকে কলুষতায় আচ্ছন্ন করে ফেলে যখন তার অবস্থান পশুর থেকেও অধম হয়ে যায়। তাহলে একই মানুষ কখনও ফেরেশতাদের থেকে পবিত্র ও মহৎ আবার কখনও পশুরও থেকে অধম হয় কি ভাবে যে গুণটির জন্য মানুষ ফেরেশতাদের থেকেও সম্মানীয় তা হচ্ছে আল্লাহ্ তাঁর রুহুর অংশ মানুষের মাঝে ফুঁ দিয়ে প্রবেশ করিয়েছেন [ দেখুন আয়াত [৩২ : ৯] ও [১৫ : ২৯] [৩৮:৭২] এবং টিকা ১৯৬৮ ; অন্যান্য অংশে বিদ্যমান ]। রুহুর অনুপ্রবেশের অর্থ হচ্ছে মানুষের মাঝে ঐশ্বরিক গুণের জন্মলাভ এবং তাঁর সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি – যার সাহায্যে সে ভালো বা মন্দকে গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। ফলে মানুষের মাঝেই আল্লাহ্র গুণাবলীর ক্ষুদ্র প্রকাশ ঘটে – আবার সেই আত্মাকে কলুষ করার দরুণ পশুশক্তির প্রকাশ ঘটে থাকে।
৩৭৮২। “Zalum” ইংরেজীতে অনুবাদ হয়েছে “unjust” বা অন্যায় এবং “Jahul ” এর অর্থ অনুবাদ করা হয়েছে অজ্ঞ। এই শব্দগুলির আরবীতে ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে আরও গভীর ও তীব্র যার দ্বারা মানুষের চরম অজ্ঞতা এবং অন্যায় প্রবণতা বোঝানো হয়েছে। মানুষ তার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অনুধাবনে অক্ষম। একমাত্র আল্লাহ্র করুণাই তার এই সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে সাহায্য করে। ভালো ও মন্দের মাপকাঠি হচ্ছে তুলনামূলক। মানুষের দৃষ্টিতে যা সর্বোচ্চ ভালোর প্রতীক হয়তো বা তা খুবই সাধারণ।
এই সীমাবদ্ধ জ্ঞানের মানুষ কিভাবে পৃথিবীতে আল্লাহ্র প্রতিনিধি [ ২ : ৩০ ] হওয়ার মত এত বড় দায়িত্ব নিজ স্কন্ধে তুলে নেয় ? ; এখানেই আদম সন্তান আল্লাহ্র সাথে মানবিক দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য, পৃথিবীকে সুন্দর করার মহৎ প্রচেষ্টার লিখিত ও অলিখিত অঙ্গীকারে আবদ্ধ। দেখুন [ ৭ : ১৭২- ১৭৩] ও টিকা ১১৪৬ – ৪৮ ; এবং [ ৫ : ১ ] ও টিকা ৬৮২। চুক্তি বা অঙ্গীকার [ Mithaq ] প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য যাই-ই হোক না কেন তা হচ্ছে আমানত। এই চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার অর্থ হচ্ছে আমানত খেয়ানত করা ,যার অবশ্যাম্ভবী পরিণাম হচ্ছে শাস্তি।
আয়াতঃ 033.073
যাতে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী, মুশরিক পুরুষ, মুশরিক নারীদেরকে শাস্তি দেন এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
So that Allâh will punish the hypocrites, men and women, and the men and women who are AlMushrikûn (the polytheists, idolaters, pagans, disbelievers in the Oneness of Allâh, and in His Messenger Muhammad SAW ). And Allâh will pardon (accept the repentance of) the true believers of the Islâmic Monotheism, men and women. And Allâh is Ever OftForgiving, Most Merciful.
لِيُعَذِّبَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْمُشْرِكِينَ وَالْمُشْرِكَاتِ وَيَتُوبَ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
LiyuAAaththiba Allahu almunafiqeena waalmunafiqati waalmushrikeena waalmushrikati wayatooba Allahu AAala almu/mineena waalmu/minati wakana Allahu ghafooran raheeman
YUSUFALI: (With the result) that Allah has to punish the Hypocrites, men and women, and the Unbelievers, men and women, and Allah turns in Mercy to the Believers, men and women: for Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: So Allah punisheth hypocritical men and hypocritical women, and idolatrous men and idolatrous women. But Allah pardoneth believing men and believing women, and Allah is ever Forgiving, Merciful.
SHAKIR: So Allah will chastise the hypocritical men and the hypocritical women and the polytheistic men and the polytheistic women, and Allah will turn (mercifully) to the believing women, and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: For GOD will inevitably punish the hypocrite men and the hypocrite women, and the idol worshiping men and the idol worshiping women. GOD redeems the believing men and the believing women. GOD is Forgiver, Most Merciful.
৭৩। পরিণামে আল্লাহ্ মুনাফিক পুরুষ ও নারী এবং অবিশ্বাসী পুরুষ ও নারীকে শাস্তি দেবেন ৩৭৮৩ এবং বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীকে ক্ষমা করবেন ৩৭৮৪। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ,পরম করুণাময়।
৩৭৮৩। আদম সন্তান আল্লাহ্র সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয় স্ব-ইচ্ছায় – ভালো বা মন্দকে বেছে নেবার যে সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি , আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছেন, তারই বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ। যেহেতু এই অঙ্গীকার সে করে স্ব-ইচ্ছায় , সুতারাং এই চুক্তি ভঙ্গের ফলাফলও তাকে ভোগ করতে হবে। এই আয়াতে চুক্তি ভঙ্গকারীদের দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। একদল হচ্ছে মোনাফেক। মোনাফেকদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা মুখে আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপন করলেও অন্তরে তারা অবিশ্বাসী – সুতারাং তাদের কথা ও কাজে অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। অন্যদল হচ্ছে নাস্তিক বা অবিশ্বাসী। এরা আল্লাহ্র অস্তিত্ব অস্বীকারকারী। সুতারাং এদের নিকটও অঙ্গীকার পূরণের শর্ত আশা করা যায় না।
৩৭৮৪। যারা আল্লাহ্র উপরে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করে এবং অঙ্গীকার পূরণে আন্তরিক [ দেখুন টিকা ৩৭৮১ – ৮২ ] ; তারা আল্লাহ্র সাহায্য ও করুণা লাভ করবে। পৃথিবীতে মানুষের দুঃখের কারণ হচ্ছে তার দোষত্রুটি , লোভ লালসা, হিংসা দ্বেষ ইত্যাদি। যদি মানুষ তার চরিত্রের এসব দোষ ত্রুটি দূর করতে সক্ষম হয়, তবেই সে এই পৃথিবীতেই বেহেশতের শান্তির স্বাদ লাভ করবে। এই আয়াতে আল্লাহ্ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন যে মুমিন পুরুষ ও নারী , যারা আল্লাহ্র উপরে বিশ্বাস স্থাপন করে, আল্লাহ্ যে সব মানবিক গুণ অর্জনের হুকুম দিয়েছেন তা অর্জনে আন্তরিক , আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা করবেন। অর্থাৎ তাদের চরিত্রের দোষ ত্রুটি দূর করে দেবেন। ফলে তারা মহিমান্বিত ও উন্নত জীবনের যোগ্যতা অর্জন করবে। আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
পৃথিবীতে আদম সন্তানের জীবনের দুঃখ কষ্ট জটিলতা , বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে জীবনের সর্বোচ্চ পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করে এই সূরাটি এখানেই শেষ হয়েছে।