৫০। হে নবী ! তোমার জন্য বৈধ করেছি ৩৭৪১ তোমার স্ত্রীদের , যাদের তুমি মোহর প্রদান করেছ ৩৭৪২ এবং আল্লাহ্ তোমাকে যে সব যুদ্ধ বন্দিনী দান করেছেন তাদের মধ্য থেকে তোমার ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের ৩৭৪৩। এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি তোমার চাচা, ফুপু, মামা ও খালার কন্যাদের ,যারা তোমার সাথে [ মক্কা থেকে ] হিজরত করেছে ৩৭৪৪। এবং কোনও মোমেন নারী নিজেকে [ বিনা মোহরে ] নবীকে নিবেদন করতে চাইলে , এবং নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে তা বৈধ ৩৭৪৫। এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র তোমার জন্য, অন্য মুমিনদের জন্য প্রযোজ্য নয় ৩৭৪৬। আমি জানি আমি তাদের জন্য স্ত্রী ও বন্দিনীদের মধ্যে তাদের ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে তাদের সম্বন্ধে কি নির্দ্দেশ দিয়েছি – যেনো এ ব্যাপারে তোমার কোন অসুবিধা না হয় ৩৭৪৭। এবং আল্লাহ্ বারে বারে ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময় ৩৭৪৮।
৩৭৪১। এখান থেকে নূতন ব্যতিক্রম বা সুবিধার উল্লেখ আছে। আয়াত ৫ ০ -৫২ পর্যন্ত বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে বর্ণনা আছে রসুলের বিবাহ সম্বন্ধে। রসুলের বিবাহকে সাধারণ মুসলমানদের বিবাহ থেকে বিশেষীকরণ ও স্পষ্ট করা হয়েছে। রসুলের স্ত্রীদের সম্পর্কে দেখুন টিকা ৩৭০৬। এই চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নোক্ত চারটি টিকার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
৩৭৪২। প্রথম শিরোনাম বা আল্লাহ্র হুকুম : দেন-মোহর সহ বিবাহ [ ৪ : ৪ ] : দেনমোহর প্রথা মুসলিম বিবাহের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এবং তা দেশ-কাল জাতি নির্বিশেষে মুসলমানের সকলের জন্য প্রযোজ্য এবং রসুলের [ সা ] জন্যও তা প্রযোজ্য। রসুলের বিবাহের প্রথম হুকুম : তা শুধুমাত্র চারটি বিবাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় নাই , যা অন্যান্য মুসলমানদের জন্য শর্ত সাপেক্ষে বিবাহে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে [ ৪ : ৩ ]। এ ব্যতীত হুকুম হচ্ছে রসুলের [ সা ] স্ত্রীগণকে হতে হবে মুসলমান , শুধুমাত্র কিতাবধারী হলেই যথেষ্ট হবে না। যেখানে সাধারণ মুসলমানদের কিতাবধারী মহিলাদের সাথে বিবাহকে বৈধ করা হয়েছে [ ৫ : ৫ ]। সেখানে রসুলের জন্য তা বৈধ করা হয় নাই। অবশ্যই যারা মুসলিম উম্মার মাতা হবেন তাদের মুসলমান হতে হবে।
৩৭৪৩। দ্বিতীয় শিরোনাম [ ২ ] মহিলা যুদ্ধবন্দী : উপরের টিকা সর্ম্পকে যা বলা হয়েছে তা এখানেও প্রযোজ্য।
৩৭৪৪। তৃতীয় শিরোনাম [ ৩ ] : রসুলের [ সা ] জন্য চাচা, ফুপু এবং মামা ও খালার কন্যার সাথে বিবাহ বৈধ। বিবাহ নিষিদ্ধ এর তালিকার জন্য দেখুন আয়াত [ ৪ : ২৩ – ২৪ ]। এই বৈধতা শুধুমাত্র রসুলুল্লাহ্ [ সা ] জন্য নয় সকল মুসলমানদের জন্য বৈধ। কিন্তু “তারা রসুলুল্লাহ্র [ সা ] সাথে হিজরত করেছে ” – এ কথাটি শুধু রসুলুল্লাহ্র [ সা ] জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ পিতৃ [ চাচা, ফুপু ] ও মাতৃ [ খালা , মামা ] কূলের কন্যাদের সাথে মুসলমানদের জন্য বিবাহ বৈধ। কিন্তু রসুলের [ সা] জন্য শুধু তারাই বৈধ যারা হিজরত করেছে।
৩৭৪৫। চতুর্থ শিরোনাম [ ৪ ] : ” কোন মুমিন নারী নবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করলে ” – অর্থাৎ পূর্বের ন্যায় এই নিয়মটি শুধুমাত্র রসুলের [ সা ] জন্য প্রযোজ্য। এই নিয়মটিকেও শর্ত সাপেক্ষে সুরক্ষিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে নারী চাইলেই নবীকে বিবাহ করতে হবে সেটা ঠিক নয়। শর্ত হচ্ছে যদি নবীও তাঁকে বিবাহের উপযুক্ত মনে করেন তবেই তা হওয়া সম্ভব।
৩৭৪৬। ” এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র তোমার জন্য ” – এই বাক্যটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে শুধুমাত্র রসুলের জন্য যে সব বৈধ করা হয়েছে।
৩৭৪৭। মুসলিম বিবাহের নিয়মের জন্য দেখুন [ ২ : ২২১- ২৩৫ ] ; [৪ : ১৯ – ২৫ ] ; এবং [ ৫ : ৫ ] আয়াত।
৩৭৪৮। সামাজিক জীবনে বিবাহের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ শুধুমাত্র দৈহিক আরাম আয়েশের বস্তু নয় – বিবাহ মানুষের জীবনে সামাজিক জীবনের মাধ্যমে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জগতে উত্তরণের পন্থা। সুশীল, সৎ ও শান্তিপূর্ণ গৃহকোণ সুনাগরিক সৃষ্টি করে। বিবাহের ফসল সন্তান আমাদের ভবিষ্যত বংশধর। সুসন্তান শুধুমাত্র পিতামাতার জন্য শান্তিদায়ক নয় , তারা দেশের জন্য সম্পদ বটে। এ ভাবেই বিয়ের সূদূর প্রসারী প্রভাব শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রীর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় তার প্রভাব ব্যক্তিজীবনের গন্ডি অতিক্রম করে সমাজ জীবনে প্রসারিত হয়। সুতরাং বিয়েকে লঘুভাবে দেখার কোন সুযোগ নাই। দাম্পত্য জীবনে অনেক সময়েই বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। নারী ও পুরুষ উভয়েই সে সমস্যাকে গুরুত্ব ও আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে। চেষ্টা করবে আবেগের বশবর্তী না হয়ে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে। এ ব্যাপারে সর্বদা সে মহান স্রষ্টার সাহায্য কামনা করবে। আল্লাহ্ সকলের জন্যই জীবনের পথ সহজ , সুন্দর করতে চান – কারণ আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
আয়াতঃ 033.051
আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি যাকে দূরে রেখেছেন, তাকে কামনা করলে তাতে আপনার কোন দোষ নেই। এতে অধিক সম্ভাবনা আছে যে, তাদের চক্ষু শীতল থাকবে; তারা দুঃখ পাবে না এবং আপনি যা দেন, তাতে তারা সকলেই সন্তুষ্ট থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
You (O Muhammad SAW) can postpone (the turn of) whom you will of them (your wives), and you may receive whom you will. And whomsoever you desire of those whom you have set aside (her turn temporarily), it is no sin on you (to receive her again), that is better; that they may be comforted and not grieved, and may all be pleased with what you give them. Allâh knows what is in your hearts. And Allâh is Ever AllKnowing, Most Forbearing.