২০। তারা মনে করে যে, [কাফেরদের ] সম্মিলিত বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় নাই। এবং যদি সম্মিলিত বাহিনী [পুণরায়] এসে পড়তো তখন ,তারা ইচ্ছা করবে যে, তারা মরুভূমির মাঝে বেদুঈনদের সাথে [ঘুরে ] বেড়াবে এবং [ নিরাপদ দূরত্ব থেকে ] তোমাদের সংবাদ নেবে ৩৬৯৩। এবং যদি তারা তোমাদের মধ্যেও থাকতো, তবে তারা খুব অল্পই যুদ্ধ করতো।
৩৬৯৩। মোনাফেকদের চরিত্রের এবং মানসিকতার বর্ণনা শুরু হয়েছে ১২নং আয়াত থেকে। আসুন আমরা তা বিশ্লেষণ করি।
১) মোনাফেকরা হয় সুবিধাবাদী , সুতারাং যুদ্ধের রণদামামা তাদের ভীত ও সন্ত্রস্ত করে তোলে , কারণ তাদের মধ্যে পরাজয়ের মানসিকতা কাজ করছিলো [ ১২ নং আয়াত ]
২) তারা হয় অবিশ্বস্ত ও আনুগত্যহীন। তারা তাদের আনুগত্যহীনতায় সন্তুষ্ট এবং তারা তা অন্যের অন্তরে সংক্রামিত করতে প্রয়াস পায়। [ ১৩ নং আয়াত ]।
৩) যদি শত্রুরা নগরীতে প্রবেশ লাভ করতো তবে মোনাফেকরা সর্বপ্রথম বিশ্বাসঘাতকতা করে শত্রুদের সাথে যোগদান করতো। [ ১৪ নং আয়াত ]।
৪) তারা বিশ্বস্ততার যে অংগীকার পূর্বে করেছিলো তা ভুলে যায়। তাদের নিকট অংগীকার বা বিশ্বস্ততার কোন মূল্য নাই। [ ১৫ নং আয়াত ]।
৫) তাদের হিসাব নিকাশ সবই বিষয় বুদ্ধি সম্পন্ন অত্যন্ত তুচ্ছ ও নগন্য। তাদের এই তুচ্ছ হিসেব নিকেশে তারা অনুধাবনে অসমর্থ যে যুদ্ধে পলায়ন ও কাপুরুষতা প্রদর্শন কখনও ভালো ফল বয়ে আনতে পারে না। [১৬ – ১৭ ] নং আয়াত ]।
৬। মোনাফেকরা প্রকৃত সংগ্রামে অংশ গ্রহণে বিরত থাকে ; বরং তারা সহজ ও মধুর কথা ও উপদেশ বিতরণে আগ্রহী এবং বিপদ বা যুদ্ধ শেষে সাফল্য ও যুদ্ধ জয়ের লভ্যাংশ লাভের পুরোধায় অংশ গ্রহণে আগ্রহী। [ ১৮- ১৯ নং আয়াত ]।
৭। এরা এত ভীতু ও কাপুরুষ হয় যে, যুদ্ধ শেষে শত্রুরা চলে যাওয়ার পরও তারা শত্রুদের প্রত্যাবর্তনের ভয়ে প্রকম্পিত হতে থাকে এবং তখন তারা কি করবে সেই কল্পনায় আত্মনিয়োগ করে। তাদের চিন্তায় স্থান পায় যে, তারা মরুভূমিতে বেদুঈনদের সাথে অবস্থান করবে বা নিরাপদ দূরত্বে থেকে মদিনাবাসীদের বিরুদ্ধে গুপ্তচর বৃত্তি অবম্বলন করবে। যদি মদিনা শত্রুদের অধিকারে চলে যায়, তবে তারা মদিনাবসীদের মাঝে থাকলেও খুব সামান্যই যুদ্ধ করতো। [ ২০ নং আয়াত ]।
[ ১২ – ২০ ] নং আয়াত সমূহে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র ও অশুভ তৎপরতার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তবে এ বর্ণনার ভাষা সার্বজনীন যুগকাল অতিক্রান্ত। মোনাফেকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সে যুগের যা ছিলো , আজও তা সমভাবে বিদ্যমান। মদিনাবাসীদের মধ্যে এরূপ মোনাফেকদের অবস্থান সত্বেও রসুল [সা ] ও তাঁর অনুসারীরা অসম যুদ্ধে জয়লাভ করেন এটা একটা অলৌকিক কর্মকান্ড বটে। আল্লাহ্ যাকে সাহায্য করেন তার জয় অবধারিত। রসুলের জীবনীর মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছেন।
আয়াতঃ 033.021
যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।
Indeed in the Messenger of Allâh (Muhammad SAW) you have a good example to follow for him who hopes in (the Meeting with) Allâh and the Last Day and remembers Allâh much.
لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
Laqad kana lakum fee rasooli Allahi oswatun hasanatun liman kana yarjoo Allaha waalyawma al-akhira wathakara Allaha katheeran
YUSUFALI: Ye have indeed in the Messenger of Allah a beautiful pattern (of conduct) for any one whose hope is in Allah and the Final Day, and who engages much in the Praise of Allah.
PICKTHAL: Verily in the messenger of Allah ye have a good example for him who looketh unto Allah and the Last Day, and remembereth Allah much.
SHAKIR: Certainly you have in the Messenger of Allah an excellent exemplar for him who hopes in Allah and the latter day and remembers Allah much.
KHALIFA: The messenger of GOD has set up a good example for those among you who seek GOD and the Last Day, and constantly think about GOD.
রুকু – ৩
২১। যারা আল্লাহ্ শেষ বিচারের দিনে [ মুক্তির ] আশা রাখে, এবং যারা আল্লাহ্র প্রশংসায় নিজেকে নিয়োজিত রাখে, তাদের জন্য রাসুলের [ চরিত্রে ] রয়েছে উত্তম আদর্শ ৩৬৯৪, ৩৬৯৫।
৩৬৯৪। এতক্ষণ মোনাফেকদের মানসিকতা বর্ণনা করা হয়েছে , এবারে মোমেন ব্যক্তিদের মানসিকতা বর্ণনা করা হয়েছে। যারা আল্লাহ্ ও আখিরাতের ভয় করে, রসুলের [ সা ] জীবন তাদের জন্য অনুসরণীয়।
৩৬৯৫। দেখুন [ ২৬ : ২২৭ ] আয়াত। বিশেষভাবে এই মক্কান সূরার উপবাক্য “And defend themselves after ………………………………. their affairs will take” যা আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি তা মদিনাতে পরিপূর্ণতা লাভ করে।
আয়াতঃ 033.022
যখন মুমিনরা শক্রবাহিনীকে দেখল, তখন বলল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল।
And when the believers saw AlAhzâb (the Confederates), they said: ”This is what Allâh and His Messenger (Muhammad SAW) had promised us, and Allâh and His Messenger (Muhammad SAW) had spoken the truth, and it only added to their faith and to their submissiveness (to Allâh).