হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৩ | 6153 | ٦۱۵۳
পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৩। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খায়বারের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীগণের মাঝ থেকে ইসলামের দাবি করছিল এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বললেন যে, এই লোকটি জাহান্নামী। যখন যুদ্ধ শুরু হল লোকটি প্রবল বেগে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল। এতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হল। তবু সে অটল রইল। সাহাবীগণের মাঝ থেকে একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামী হবে বলে আপনি যে ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেন সে তো প্রবল বেগে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করেছে এবং তাতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। তিনি বললেনঃ সাবধান, সে জাহান্নামী! এতে কতিপয় মুসলমানের মনে সন্দেহের ভাব হল। আর লোকটি ঐ অবস্থায়ই ছিল। হঠাৎ করে সে যখমের যন্ত্রণা অনুভব করতে লাগল-আর অমনই সে স্বীয় হাতটি তীরের থলের দিকে বাড়িয়ে দিল এবং একটি তীর বের করে আপন বক্ষে বিধিয়ে দিল। এতদৃষ্টে কয়েকজন মুসলমান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়িয়ে যেয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা আপনার কথাকে সত্যে পরিনত করে দেখালেন। অমুক ব্যাক্তি তো আত্নহত্যা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে বিলাল! উঠে দাঁড়াও এবং এই মর্মে ঘোষণা করে দাও যে, জান্নাতে কেবলমাত্র মুমিনগণই প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ তা’আলা গুনাহগার বান্দাকে দিয়েও এই দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৪ | 6154 | ٦۱۵٤
পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে থেকে যে সমস্ত মুসলমান যুদ্ধ করেছেন তাদের মাঝে একজন ছিল তীব্র আক্রমণকারী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে নযর করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামীকে দেখতে ইচ্ছা করে সে যেন এই লোকটির দিকে নযর করে। উপস্থিত লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি সেই লোকটির অনুসরণ করল। আর সে তখন প্রচণ্ডভাবে মুশরিকদের সঙ্গে মুকাবিলা করছিল। এমন কি সে (এক পর্যায়ে) যখম হয়ে তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরণ করতে চাইল। সে তার তরবারীর তীক্ষ্ণ দিকটি তার বুকের উপর দাবিয়ে দিল। এমন কি দু’কাঁধের মাঝ দিয়ে তরবারী বক্ষ ভেদ করল। (এতদৃষ্টে) লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়ে এসে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি সত্যই আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হল? লোকটি বলল, আপনি অমুক ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেনঃ “যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামী লোক দেখতে চায় সে যেন এ লোকটিকে দেখে নেয়।” অথচ লোকটি অন্যান্য মুসলমানের তুলনায় অধিক রূপে আক্রমনকারী ছিল। সুতরাং আমার ধারণা ছিল এ লোকটির মৃত্যু এহেন অবস্থায় হবে না। যখন সে আঘাত প্রাপ্ত হল, তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল এবং আত্নহত্যা করে বসল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথা শুনে বললেনঃ নিশ্চয়ই কোন বান্দা জাহান্নামীদের আমল করেন মূলত সে জান্নাতী। আর কোন বান্দা জান্নাতী লোকের আমল করেন মুলত সে জাহান্নামী। নিশ্চয়ই আমলের ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার পারিণামের উপর।
হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৫ | 6155 | ٦۱۵۵
পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৫। আবূ নুআঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন। এই মর্মে তিনি বলেন, মানত কোন জিনিসকে দূর করতে পারে না। এ দ্বারা শুধুমাত্র কৃপণের মাল খরচ হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৬ | 6156 | ٦۱۵٦
পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৬। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মানত মানব সন্তানকে এমন কিছু এনে দিতে পারে না যা তাকদীরে নির্ধারণ নেই অথচ সে যে মানতটি করে তাও আমি তাকদীরে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (মাল) বের করে নেই।
হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৭ | 6157 | ٦۱۵۷
পরিচ্ছদঃ ২৭৪০. ‘লা হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ প্রসঙ্গে
৬১৫৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা যখনই কোন উচ্চস্থানে আরোহণ করতাম, কোন উঁচুতে থাকতাম এবং কোন উপত্যকা অতিক্রম করতাম তখনই উচ্চঃস্বরে তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলতাম। রাবী বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকটবর্তী হলেন এবং বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের উপর রহম কর। তোমরা কোন বধির বা কোন অনুপস্হিত সত্তাকে ডাকছ না- তোমরা তো ডাকছ শ্রবণকারী ও দর্শনকারী এক সত্তাকে। এরপর তিনি বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! আমি কি তোমাকে এমন একটি কালিমা শিক্ষা দিব না, যা কিনা জান্নাতের ভাণ্ডার সমূহের অন্যতম? তা হচ্ছেঃ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ (লা-হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)