• বইয়ের নামঃ সহিহ বুখারী  ১০ম খণ্ড (৫৯৭০-৭০৫৩)
  • লেখকের নামঃ ইমাম বুখারী
  • প্রকাশনাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
  • বিভাগসমূহঃ ইসলামিক বই, হাদীস শরীফ

 

  সহিহ বুখারী  ১০ম খণ্ড (৫৯৭০-৭০৫৩)

আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, আল্লাহ তা’আলা যাকে দীর্ঘায়ু করেছেন, এমনকি যাকে ষাট বছরে পৌছিয়েছেন তার ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৭৮ | 5978 | ۵۹۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৭. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ তা’আলা তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কি তোমাদের এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারত, অথচ তোমাদের কাছে সতর্ককারীরাও এসেছিল … (৩৫ঃ ৩৭)
৫৯৭৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দুটি ব্যাপারে সর্বদা যুবক থাকে। এর একটি হল দুনিয়ার মহব্বত, আরেকটি হল উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

লায়ছ (রহঃ) … সাঈদ ও আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৭৯ | 5979 | ۵۹۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৭. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ তা’আলা তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কি তোমাদের এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারত, অথচ তোমাদের কাছে সতর্ককারীরাও এসেছিল … (৩৫ঃ ৩৭)
৫৯৭৯। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম সন্তানের বয়স বাড়ে আর তার সাথে দুটি জিনিসও বৃদ্ধি পায়; ধন-সম্পদের মহব্বত ও দীর্ঘায়ুর আকাঙ্ক্ষা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮০ | 5980 | ۵۹۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৮. যে ‘আমালের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সা’দ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদিস আছে
৫৯৮০। মুয়ায ইবনু আসাদ (রহঃ) … মাহমুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা তাঁর স্মরণ আছে। আর তিনি বলেনঃ তাদের ঘরের পানির ডোল থেকে পানি মুখে নিয়ে তিনি তার মুখে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন সে কথাও তার স্মরণ আছে। তিনি বলেনঃ ইতবান ইবনু মালিক আনসারীকে, এরপর বনী সালিমের এক ব্যাক্তিকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে আমার এখানে এলেন এবং বললেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে এবং এ বিশ্বাস নিয়ে কিয়ামতের দিন হাযির হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮১ | 5981 | ۵۹۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৮. যে ‘আমালের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সা’দ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদিস আছে
৫৯৮১। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, আমি যখন আমার মুমিন বান্দার কোন প্রিয়তম কিছু দুনিয়া থেকে তুলে নেই আর সে ধৈর্য ধারণ করে, আমার কাছে তার জন্য জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮২ | 5982 | ۵۹۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর ইবনু আওফ (রাঃ), তিনি বনী আমর ইবনু লুওযাই এর সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বদরের যুদ্ধেও শরীক ছিলেন। তিনি বর্ননা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহকে জিযিয়া আদায় করার জন্য বাহরাইন পাঠালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সন্ধি করেছিলেন এবং তাদের উপর আলা ইবনু হাসরামী (রাঃ) কে আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। আবূ উবায়দা (রাঃ) বাহরাইন থেকে মালামাল নিয়ে আসেন, আনসারগণ তার আগমনের সংবাদ শুনে ফজরের সালাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঈে শরীক হন।

সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তাঁরা তার সামনে এলেন। তিনি তাদের দেখে হেসে বললেনঃ আমি মনে করি তোমরা আবূ উবায়দা (রাঃ) এর আগমনের এবং তিনি যে মাল নিয়ে এসেছেন সে সংবাদ শুনেছ। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা এ সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তোমরা আশা রেখো যা তোমাদের খুশী করবে। তবে, আল্লাহর কসম। আমি তোমাদের উপর দরিদ্রতার আশংকা করছি না বরং আশংকা করছি যে, তোমাদের পূর্ববতী উম্মাতের উপর যেমন দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হইয়েছিল, তেমনি তোমাদের উপরও দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হবে। আর তোমরা যা নয় তা তোমাদের আখিরাত বিমুখ করে ফেলবে, যেমন তাদের জন্য বিমুখ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৩ | 5983 | ۵۹۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৩। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং উহুদের শহীদানের উপর সালাত আদায় করলেন, যেমন তিনি মুর্দার উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে থাকেন। তারপর মিম্বরে আরোহণ করে বললেনঃ আমি তোমাদের অগ্রনী। আমি তোমাদের সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি আমার ‘হাওয’ কে এখন দেখছি। আমাকে তো যমীনের ধনগারের চাবিসমূহ অথবা যমীনের চাবিসমূহ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের উপর এ আশংকা করছি না যে, তোমরা আমার পরে মুশরিক হয়ে যাবে, তবে আমি আশংকা করছি যে, তোমরা দুনিরার ধন-সম্পদে আসক্ত হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৪ | 5984 | ۵۹۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য যমীনের বরকত সমুহ প্রকাশিত করে দিবেন, আমি তোমাদের জন্য এ ব্যাপারেই সর্বাধিক আশংকা করছি। জিজ্ঞাসা করা হলো, যমীনের বরকত সমূহ কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার জাঁকজমক। তখন এক ব্যাক্তি তাঁর কাছে বললেনঃ ভাল কি মন্দ নিয়ে আসবে? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন, যদ্দরুন আমরা ধারণা করলাম যে, এখন তার উপর ওহী নাযিল হচ্ছে। এরপর তিনি তাঁর কপাল থেকে ঘাম মুছে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ যখন এটি প্রকাশ পেল, তখন আমরা প্রশ্নকারীর প্রশংসা করলাম।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভাল শুধুমাত্র ভালকেই বয়ে আনে। নিশ্চয়ই এ ধনদৌলত সবুজ শ্যামল সুমিষ্ট। অবশ্য বসন্ত যে সবজি উৎপাদন করে, তা ভক্ষণকারী পশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় অথবা নিকটে করে দেয়, তবে প্রানী পেট ভরে খেয়ে সূর্যমুখী হয়ে জাবর কাটে, মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং পুনঃ খায় (এর অবস্হা ভিন্ন)। এ পৃথিবীর ধনদৌলত তদ্রূপ সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সৎভাবে গ্রহণ করবে এবং সৎকাজে ব্যয় করবে, তা তার খুবই সাহায্যকারী হবে। আর যে তা অন্যায়ভাবে গ্রহণ করবে, তার অবস্থা হবে ঐ ব্যাক্তির মত যে খেতে থাকে আর পরিতৃপ্ত হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৫ | 5985 | ۵۹۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম। তারপর এর পরবর্তী যমানার লোকেরা। তারপর এদের পরবর্তী যমানার লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বর্ণনা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দু’বার কি তিনবার বললেন, তা আমার স্মরণ নেই- তারপর এমন লোকদের আবির্ভাব হবে যে, তারা সাক্ষ্য দিবে, অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা খিয়ানতকারী হবে। তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তারা মানত মানবে তা পূরণ করবে না। তাদের দৈহিক হৃষ্টপুষ্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৬ | 5986 | ۵۹۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৬। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শ্রেষ্ঠ হল আমার যমানার লোক। তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে, যাদের সাক্ষ্য তাদের কসমের পূর্বেই হবে, আর তাদের কসম তাদের সাক্ষ্যের পূর্বেই হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৭ | 5987 | ۵۹۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৭। ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খাব্বাব (রাঃ) সাতবার তার পেটে উত্তপ্ত লোহার দাগ নেওয়ার পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু কামনা করা নিষিদ্ধ না করতেন, তাহলে আমি মৃত্যু কামনা করতাম। নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবার অনেকেই (দুনিয়ার মোহে পতিত না হয়েই) চলে গিয়েছেন। অথচ দুনিয়া তাঁদের আখিরাতের কোনই ক্ষতিসাধন করতে পারেনি। আর আমরা দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যার জন্য মাটি ছাড়া আর কোন স্থান পাচ্ছি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৮ | 5988 | ۵۹۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৮। মুহাম্মদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একবার খাব্বাব (রাঃ) এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটা দেয়াল তৈরি করছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের যে সাথীরা দুনিয়া থেকে চলে গেছে, দুনিয়া তাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আর আমরা তাদের পর দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যেগুলোর জন্য আমরা মাটি ছাড়া আর কোন স্থান পাচ্ছি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৯ | 5989 | ۵۹۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৯। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হিজরত করেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯০ | 5990 | ۵۹۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯০. মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মানুষ! আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, কাজেই পার্থিব জীবন যেন তোমাদের কিছুতেই যেন প্রতারিত না করে … যেন জাহান্নামী হয় পর্যন্ত (৩৫ঃ ৫-৬) ইমাম বুখারী বলেন, السَّعِيرِ এর বহুবচন سُعُرٌ আর মুজাহিদ বলেন, الْغَرُورُ এর মানে শয়তান।
৫৯৯০। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … ইবনু আবান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর কাছে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি নিয়ে এলাম। তখন তিনি মাকায়িদ-এ বসা ছিলেন। তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ স্থানেই দেখেছি, তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন, এরপর তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি এ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র মতো উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে, তারপর মসজিদে এসে দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সেখানে বসবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন যে, তোমরা ধোকায় পড়ো না। ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি হুমরান ইবনু আবান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯১ | 5991 | ۵۹۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯১. নেককার লোকদের বিদায় গ্রহন
৫৯৯১। ইয়াহইয়া ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … মিরদাস আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকেরা ক্রমান্বয়ে চলে যাবেন। আর থেকে যাবে নিকৃষ্টরা-যব অথবা খেজুরের মত লোকজন। আল্লাহ তা’আলা এদের প্রতি ভ্রক্ষেপও করবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯২ | 5992 | ۵۹۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯২। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীনার, দিরহাম, রেশমী চাঁদর (শাল), পশমী কাপড়ের (চাদর) গোলামরা ধ্বংস হোক। যাদের এসব দেয়া হলে সন্তুষ্ট থাকে আর দেয়া না হলে অন্তুষ্ট হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৩ | 5993 | ۵۹۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৩। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যদি আদম সন্তানের দুটি উপত্যকাপূর্ণ ধনসম্পদ থাকে তবুও সে তৃতীয়টার আকাঙ্ক্ষা করবে। আর মাটি ছাড়া লোভী আদম সন্তানের পেট ভরবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করবে, আল্লাহ তা আলা তার তওবা কবুল করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৪ | 5994 | ۵۹۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৪। মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেনঃ বনী আদমের জন্য যদি এক উপত্যকা পরিমাণ ধনসম্পদ থাকে তাহলে সে আরও ধন অর্জনের জন্য লালায়িত থাকবে। বনী আদমের লোভী চোখ মাটি ছাড়া আর কিছুই তৃপ্ত করতে পারবে না। তবে যে তওবা করবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ সুতরাং আমি জানিনা-এটি কুরআনের অন্তর্ভুক্ত কিনা। তিনি বলেনঃ আমি ইবনুল যুবায়রকে বলতে শুনেছি-এটি মিম্বরের উপরের (বর্ণনা)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৫ | 5995 | ۵۹۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৫। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আব্বাস ইবনু সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আমি ইবনুল যুবায়র (রাঃ) কে মক্কায় মিম্বরের উপর তার খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ হে লোকেরা! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন যে, যদি আদম সন্তানকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটা উপত্যকা মাল দেয়া হয়, তথাপিও সে এ রকম দ্বিতীয়টার জন্য আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকবে। আর তাকে এরকম দ্বিতীয়টা যদি দেয়া হয়, তাহলে সে তৃতীয় আরও একটার জন্য আকাঙ্ক্ষা করতে থাকবে। মানুষের পেট মাটি ছাড়া কিছুই ভরভে পারে না। তবে যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তা’আলা তার তওবা কবুল করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৬ | 5996 | ۵۹۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৬। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি আদম সন্তানের স্বর্ণে পরিপূর্ন একটা উপত্যকা থাকে, তথাপি সে তার জন্য দুটি উপত্যকার কামনা করবে। তার মুখ একমাত্র মাটি ছাড়া অন্য কিছুই ভরতে পারবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। অন্য এক সুত্রে আনাস (রাঃ) উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমাদের ধারণা ছিল যে, সম্ভবত এ কুরআনেরই আয়াত। অবশেষে (সূরায়ে তাকাসুর) নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৭ | 5997 | ۵۹۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ এ সম্পদ শ্যামল ও মনোমুগ্ধকর। মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষের জন্য (দুনিয়াতে) মনোহর করে দেওয়া হয়েছে কাঙ্ক্ষিত জিনিসগুলোর মায়া মহব্বতকে অর্থাৎ নারীকুল ও সন্তান-সন্ততি … এসব ইহজীবনের ভোগ্য বস্তু (৩ঃ ১৪) উমার (র) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য যেসব জিনিস মনোহর করে দিয়েছেন, তজ্জন্য খুশি না হয়ে পারি না। হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি, যেন আমি এগুলোকে যথাযথ খরচ করতে পারি।
৫৯৯৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মাল চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবার চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবারও চাইলাম। তিনি দিলেন। এরপর বললেনঃ এই ধন-সম্পদ সুফয়ানের বর্ণনামতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে হাকীম! অবশ্যই এই মাল শ্যামল-সবুজ ও সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে, তার জন্য এটাকে বরকতময় করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যাক্তি তা লোভ সহকারে নেবে, তার জন্য তাতে বরকত দেওয়া হবে না। বরং সে ঐ ব্যাক্তির ন্যায় যে খায়, কিন্তু পেট ভরে না। আর (জেনে রেখো) উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাত থেকে শ্রেষ্ঠ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৮ | 5998 | ۵۹۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৪. মালের যা অগ্রিম পাঠাবে তা-ই তার হবে
৫৯৯৮। আমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যাক্তি কে যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে? তারা সবাই জবাব দিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে সবাই তার নিজের সম্পদকে সবচাইতে বেশি প্রিয় মনে করি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তা-ই, যা সে আগে পাঠিয়েছো আর পিছনে যা ছেড়ে যাবে তা ওয়ারিছের মাল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৯ | 5999 | ۵۹۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৫. প্রাচুর্যের অধিকারীরাই সল্পাধিকারী। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ যদি কেউ পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে … এবং তারা যা করে থাকে (১১ঃ ১৫-১৬)
৫৯৯৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাতে আমি একবার বের হলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একাকী চলতে দেখলাম, তার সঙ্গে কোন লোক ছিল না। আমি মনে করলাম, তার সঙ্গে কেউ চলুক হয়ত তিনি তা অপছন্দ করবেন। তাই আমি চাঁদের ছায়াতে তার পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম। তিনি পেছনের দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখে ফেললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি বললাম, আমি আবূ যার। আল্লাহ তা’আলা আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন। তিনি বললেনঃ ওহে আবূ যার, এসো। আমি তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ চললাম। তারপর তিনি বললেনঃ প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকারী হবে। অবশ্য যাদের আল্লাহ সম্পদ দান করেন এবং তারা সম্পদকে তা ডানে বামে, আগে ও পেছনে ব্যয় করে। আর মঙ্গলজনক কাজে তা লাগায়, (তারা ব্যতীত)।

তারপর আমি আরও কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে চলার পর তিনি আমাকে বললেনঃ। তুমি এখানে বসে থাক। (এ কথা বলে) তিনি আমাকে চতুর্দিকে প্রস্তরঘেরা একটি খোলা জায়গায় বসিয়ে দিয়ে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি এখানেই বসে থেকেো। তিনি বলেনঃ এরপর তিনি প্রস্তরময় প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন। এমন কি তিনি আমার দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেল।

অতঃপর তিনি ফিরে আসার সময় আমি তাকে বলতে শুনলাম, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে যিনা করে। তারপর তিনি যখন ফিরে এলেন তখন আমি আর ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য হলাম যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি কুরবান করুন। আপনি এই প্রস্তর প্রান্তরে কার সাথে কথা বললেন? কাউকে তো আপনার কথার উত্তর দিতে শুনলাম না। তখন তিনি বললেনঃ তিনি ছিলেন জিবরীল (আলাইহিস সালাম)। তিনি এই কংকরময় প্রান্তরে আমার কাছে এসেছিলেন।

তিনি বললেনঃ আপনি আপনার উম্মাতদের সুসংবাদ দিবেন যে, সে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরীল! যদিও সে চুরি করে, আর যদিও সে যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবার আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি সে শরাবও পান করে।

নযর (রহঃ) … আবূদ্দারদা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আবূদ্দারদা থেকে আবূ সালিহের বর্ণনা মুরসাল, যা সহীহ নয়। আমরা পরিচয়ের জন্য এনেছি। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ তবে এ সুসংবাদ এ অবস্থায় দেওয়া হয়েছে, যদি সে তওবা করে আর মৃত্যৃকালে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০০ | 6000 | ٦۰۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৬. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার জন্য উহুদ সোনা হোক; আমি তা কামনা করি না
৬০০০। আল হাসন ইবনুুূর রাবী (রহঃ) … যায়দ ইবনু ওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) বলেন, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মদিনার কংকরময় প্রান্তরে হেঁটে চলছিলাম। ইতোমধ্যে উহুদ আমাদের সামনে এল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললাম, লাব্বাইকা, ইয়া রাসূসাল্লাহ! তিনি বললেনঃ আমার নিকট এ উহুদ পরিমাণ সোনা হোক, আর তা ঝণ পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে রেখে দেওয়া ব্যতীত একটি দ্বীনারও তা থেকে আমার কাছে জমা থাকুক আর এ অবস্থায় তিন দিন অতিবাহত হোক তা আমাকে আনন্দিত করবে না। তবে যদি আমি তা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এভাবে তাকে ডান দিকে, বাম দিকে ও পেছনের দিকে বিতরণ করে দেই তা স্বতস্ত্র।

এরপর তিনি চললেন। কিছুক্ষণ পর আবার বললেনঃ জেনে রেখো, প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকরী হবে। অবশ্য যারা এভাবে, এভাবে, এভাবে ডানে, বামে ও পেছনে ব্যায় করবে, তারা এর ব্যাক্তিক্রম। কিন্তু এরকম লোক অতি অল্পই। তারপর আমাকে বললেনঃ তুমি এখানে থাক। আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করো। অতঃপর তিনি রাতের অন্ধকারে ঢলে গেলেন। এমনকি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এরপর আমি একটা উচ্চ শব্দ শুনলাম। এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, সম্ভবত তিনি কোন শক্রর সাম্মুখীন হয়েছেন। এজন্য আমি তার কাছেই যেতে চাইলাম। কিন্তু তখনই আমার স্মরণ হলো যে, তিনি আমাকে বলে গিয়েছেন যে, আমি না আসা পর্যন্ত তুমি আর কোথাও যেয়ো না। তাই আমি সেদিকে আর গেলাম না।

ইতোমধ্যে তিনি ফিরে এলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি একটা শব্দ শুনে তো শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। বাকী ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি শব্দ শুনেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ ইনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তিনি আমার কাছে এসে বললেনঃ আপনার উম্মাতের কেউ যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তবে সে জান্নাতে দাখিল হবে। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, যদি সে যিনা করে এবং যদি সে চুরি করে। তিনি বললেনঃ যদিও সে যিনা করে এবং যদিও চুরি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০১ | 6001 | ٦۰۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৬. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার জন্য উহুদ সোনা হোক; আমি তা কামনা করি না
৬০০১। আহমাদ ইবনু শাবীব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার জন্য উহুদের সমতূল্য স্বর্ণ যদি হয় আর এর কিয়দংশও তিনদিন অতীত হওয়ার পর আমার কাছে থাকবে না- তাতেই আমি সুখী হবো। তবে যদি ঋন পরিশোধের জন্য হয় (তা ব্যতিক্রম)।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০২ | 6002 | ٦۰۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৭. প্রকৃত ঐশ্বর্য হলো অন্তরের ঐশ্বর্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তারা কি ধারনা করছে যে, আমি তাদেরকে যেসব ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি দান করেছি … করে যাচ্ছে, পর্যন্ত
৬০০২। আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বৈষয়িক প্রাচুর্য ঐশ্বর্য নয় বরং প্রকৃত ঐশ্বর্য হল অন্তরের ঐশ্বর্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৩ | 6003 | ٦۰۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৩। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন তখন তিনি তার কাছে বসা একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাক্তি তো একজন সভ্রান্ত পরিবারের লোক। আল্লাহর কসম! তিনি এমন মর্যাদাবান যে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহনযোগ্য। আর কারো জন্য সুপারিশ করলে তা গ্রহণযোগ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ ব্যাক্তি সম্বন্ধে তোমার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ ব্যাক্তি তো এক গরীব মুসলমান। এ এমন ব্যাক্তি যে, যদি সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সে যদি কারো সুপারিশ করে, তবে তা কবুলও হবে না এবং যদি সে কোন কথা বলে, তবে তা শোনার যোগ্য হয় না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ দুনিয়া ভরা আগের ব্যাক্তি থেকে এ ব্যাক্তি উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৪ | 6004 | ٦۰۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৪। আল হুমায়দী (রহঃ) … আবূ ওয়াহিল (রহঃ) বর্ণনা করেন। একবার আমরা খাব্বাব (রাঃ) এর শুশ্রুষায় গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে (মদিনায়) হিজরত করেছি; যার সাওয়াব আল্লাহর কাছেই আমাদের প্রাপ্য। এরপর আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এ সাওয়াব দুনিয়াতে লাভ করার আগেই বিদায় নিয়েছেন। তন্মধ্যে মুসআব ইবনু উমায়র (রাঃ), তিনি তো উহুদের যুদ্ধে শহীদ হল। তিনি শুধু একখানা চাঁদর রেখে যান। আমরা কাফনের জন্য এটা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা বেরিয়ে যেত এবং পা ঢাকলে মাথা বেরিয়ে পড়তো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিলেন যে, তা দিয়ে মাথাটা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর কিছু ‘ইযখির’ ঘাস বিছিয়ে দাও। আর আমাদের মধ্যে এমনও অনেক রয়েছেন, যাদের ফল পাকছে এবং তারা তা সরবরাহ করছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৫ | 6005 | ٦۰۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৫। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতের মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জান্নাতবাসী গরীব এবং আমি জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জাহান্নামী স্ত্রীলোক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৬ | 6006 | ٦۰۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৬। আবূ মা’মার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমৃত্যু টেবিলের উপর খাবার খাননি আর ওফাতের পূর্ব পর্যন্ত মসৃণ রুটি খেতে পাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৭ | 6007 | ٦۰۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন অবস্থায় ইন্তেকাল করলেন যে, তখন কোন প্রানী খেতে পারে আমার তাকের উপর এমন কিছু ছিল না। তবে আমার তাকে যৎসামান্য যব ছিল। এ থেকে (পরিমাপ না করে) বেশ কিছুদিন আমি খেলাম। একদা মেপে দেখলাম- যদ্দরুন তা শেয হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৮ | 6008 | ٦۰۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০০৮। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেনঃ আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া অরে কোন মাবুদ নেই, আমি ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটকে মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কোন সময় ক্ষুধার জালায় আমার পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি ক্ষুধার যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীগণের বের হওয়ার পথে বসে থাকলাম। আবূ বকর (রাঃ) যেতে লাগলে আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি তাহলে আমাকে পরিতৃপ্ত করে কিছু খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছু করলেন না। কিছুক্ষণ পর উমর (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আমি তাকে কুরআনের একটি আয়াত সমন্ধে প্রশ্ন করলাম। এ সময়ও আমি প্রশ্ন করলাম এ উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আমার কোন ব্যবস্থা করলেন না।

তার পরক্ষনে আবূল কাসিম যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন এখং আমার প্রাণে কি অস্থিরতা বিরাজমান এবং আমার চেহারার অবস্থা থেকে তিনি তা আচ করতে পারলেন। তারপর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমিও তার অনুসরণ করলাম। তিনি ঘরে ঢূকবার অনুমতি চাইলেন এবং আমার্যে ঢুকবার অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটি পেয়ালার মধ্যে কিছু পরিমান দুধ পেলেন। তিনি বললেনঃ এ দুধ কোথা থেকে এসেছে? তাঁরা বললেনঃ এটা আপনাকে অমুক পুরুষ অথবা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তুমি সুফফাবাসীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো।

রাবী বলেনঃ সুফফাবাসীরা ইসলামের মেহমান ছিলেন। তাদের কোন পরিবার ছিল না এবং তাদের কোন সম্পদ ছিল না এবং তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ারও সুযোগ ছিল না। যখন কোন সাদাকা আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহন করতেন না। আর যখন কোন হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং এর থেকে নিজেও কিছু রাখতেন। এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমার মনে কিছুটা হতাশা এলো। মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সুফফাবাসীদের কি হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমি শরীরে কিছুটা শক্তি পেতাম।

এরপর যখন তাঁরা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমিই যেন তা তাঁদেরকে দেই, আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ না মেনে কোন উপায় নেই। তাই তাঁদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম। তারা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তাঁরা এসে ঘরে আসন গ্রহন করলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন কি আমি এরুপে দিতে দিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌছলাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হয়েছিলেন।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। আর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এখন তো আমি আর তুমি আছি। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি ঠিক বলছেন। তিনি বললেনঃ এখন তুমি বসে পান কর। তখন আমি বসে কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি আরও পান কর। আমি আরও পান করলাম। তিনি বারবার আমাকে পান করার নির্দেশ দিতে লাগলেন। এমন কি আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম। (আমার পেটে) আর পান করার মত জায়গা আমি পাচ্ছি না। তিনি বললেনঃ তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিয়ে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে বাকীটা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৯ | 6009 | ٦۰۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০০৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কায়স (রহঃ) বর্ণনা করেন, আমি সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আমিই আরবের সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, আল্লাহর পথে যে তীর নিক্ষেপ করেছে। আমরা যুদ্ধকালীন নিজেদেরকে যে দুবলাহ গাছের পাতা ও বাবলা ছাড়া খাবারের কিছুই ছিল না, অবস্থায় দেখেছি। কেউ কেউ বকরীর পায়খানার ন্যায় পায়খানা করতেন। যা ছিল সম্পূর্ন শুকনো। অথচ এখন আবার বনূ আসাদ (গোত্র) এসে ইসলামের উপর চলার জন্য আমাকে তিরস্কার করছে। এখন আমি যেন শংকিত আমার সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১০ | 6010 | ٦۰۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১০। উসমান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিজন মদিনায় আগমনের পর থেকে লাগাতার তাঁর ওফাত পর্যন্ত তিন দিন গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১১ | 6011 | ٦۰۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১১। ইবনু ইবরাহীম ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার একদিনে যখনই দুবেলা খানা খেয়েছেন একবেলা শুধু খুরমা খেয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১২ | 6012 | ٦۰۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১২। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিছানা চামড়ার তৈরি ছিল এবং তার ভেতরে ছিল খেজুরের আঁশ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৩ | 6013 | ٦۰۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৩। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে এমন অবস্থায় যেতাম যে, তাঁর বাবুর্চি (মেহমান আপ্যায়নের জন্য) দণ্ডায়মান। আনাস (রাঃ) বলতেন, আপনারা খান। আমি জানিনা যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের সময় পর্যন্ত একটা চাপাতি রুটিও চোখে দেখেছেন কিনা। আর তিনি কখনও একটি ভুনা ছাগল নিজ চোখে দেখেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৪ | 6014 | ٦۰۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৪। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মাস অতিবাহিত হয়ে যেত আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার জন্য) আগুন প্রজ্বলিত করতাম না। তখন এক-মাত্র খুরমা আর পানি চলত। অবশ্য তবে যদি যৎসামান্য গোশত আমাদের নিকট এসে যেত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৫ | 6015 | ٦۰۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৫। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ আল ওয়াইসী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার উরওয়া (রাঃ) কে বললেনঃ বোন পুত্র! আমরা দু’মাসের মধ্যে তিনবার নয়া চাঁদ দেখতাম। কিন্তু এর মধ্যে আল্লাহর রাসুলের গৃহগুলোতে (রান্নার জন্য) আগুন জালানো হতো না। আমি বললাম, আপনাদের জীবন ধারণের কি ছিল? তিনি বললেনঃ কালো দুটি জিনিস। খেজুর আর পানি। অবশ্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিবেশী কয়েকজন আনসার সাহাবীর অনেকগুলো দুগ্নবতী প্রাণী ছিল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তা দিত। তখন আমরা তা পান করে নিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৬ | 6016 | ٦۰۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারকে প্রয়োজনীয় জীবিকা দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৭ | 6017 | ٦۰۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৭। আবদান (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) বর্ননা করেন। আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কি রকম আমল সবচাইতে প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ নিয়মিত আমল। আমি বললাম, তিনি রাতে কোন সময় উঠতেন? তিনি বললেনঃ যখন তিনি মোরগের ডাক শুনতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৮ | 6018 | ٦۰۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৮। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে আমল আমলকারী নিয়মিত করে, সে আমল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সবচাইতে প্রিয় ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৯ | 6019 | ٦۰۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৯। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে নিজের আমল নাজাত দেবে না। তাঁরা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ তা’আলা আমাকে রহমাত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। তোমরা যথারীতি আমল কর, ঘনিষ্ঠ হও। তোমরা সকালে, বিকালে এবং রাতের শেষাংশে আল্লাহর কাজ কর। মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর। আকড়ে ধর মধ্যমপন্থাকে, অবশ্যই সফলকাম হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২০ | 6020 | ٦۰۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ঠিকভাবে ও মধ্যমপন্থায় নেক আমল করতে থাক। আর জেনে রাখ যে, তোমাদের কাউকে তার আমল বেহেশতে নেবে না এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হলো, যা নিয়মিত করা হয়। তা অল্পই হোক না কেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২১ | 6021 | ٦۰۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২১। মুহাম্মাদ ইবনু আর’আরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচাইতে প্রিয় আমল কি? তিনি বললেনঃ যে আমল নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হোক। তিনি আরও বললেনঃ তোমরা সাধ্যমত আমল করে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২২ | 6022 | ٦۰۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২২। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আলকামা (রহঃ) বর্ণনা করেন। আমি মুসলিম-জননী আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল কি রকম ছিল? তিনি কি কোন আমলের জন্য কোন দিন নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেনঃ না। তার আমল ছিল নিয়মিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন সক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তোমাদের কেউ কি সে সক্ষমতার অধিকারী?

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৩ | 6023 | ٦۰۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেছেনঃ তোমরা ঠিক ঠিকভাবে মধ্যম পন্থায় আমল করতে থাক। আর সুসংবাদ নাও। কিন্তু (জেনে রেখো) কারো আমল তাকে জান্নাতে নেবে না। তারা বললেনঃ তবে কি আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ তায়াআলা আমাকে মাগফিরাত ও রহমতে ঢেকে রেখেছেন। তিনি বলেছেনঃ এটিকে আমি ধারণা করছি আবূ নাযর … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আফফান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তোমরা সঠিকভাবে আমল কর আর সুসংবাদ নাও। মুহাজিদ বলেছেন, سَدِيدًا‏‏ وَسَدَادًا অর্থ সত্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৪ | 6024 | ٦۰۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২৪। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর মিম্বরে উঠে মসজিদের কিবলার দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন আমি তোমাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম, তখন এ প্রাচীরের সান্মুখে আমাকে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখানো হল। আমি আজকের মত ভাল ও মন্দ আর কোন দিন দেখিনি। এ শেষ কথাটি তিনি দু’বার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৫ | 6025 | ٦۰۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭০১. ভয়ের সাথে সাথে আশা রাখা। সুফ্ইয়ান (রহ) বলেন, কুরআনের মধ্যে আমার কাছে এই আয়াত থেকে কঠিন আয়াত দ্বিতীয়টি নাই। তাওরাত, ইঞ্জিল ও যা তোমাদের প্রতিপালকের কাছ হতে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে (কুরআন) তোমরা তা বাস্তবায়িত না করা পর্যন্ত তোমরা কোন ভিতের উপর নেই।
৬০২৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তাআলা রহমত সৃষ্টির দিন একশটি রহমত সৃষ্টি করেছেন। নিরানব্বইটি তাঁর কাছে রেখে দিয়েছেন এবং একটি রহমত সমন্ত সৃষ্টির মধ্যে ছেড়ে দিয়েছেন। যদি কাফির আল্লাহর কাছে সুরক্ষিত রহমত সম্পর্কে জানে তাহলে সে জান্নাত লাভ থেকে নিরাশ হবে না। আর মুমিন যদি আল্লাহর কাছে শাস্তি সম্পর্কে জানে তা হলে সে জাহান্নাম থেকে বে-পরওয়া হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৬ | 6026 | ٦۰۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭০২. আল্লাহ তা’আলার নিষেধাজ্ঞাসমূহ থেকে সবর করা। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ধৈর্যশীলদের তো অপরিমিত প্রতিদান দেওয়া হবে। উমর (রাঃ) বলেন, আমরা শ্রেষ্ঠ জীবন লাভ করেছিলাম একমাত্র ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমেই।
৬০২৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ননা করেন। একবার আনসারদের কিছু সংখ্যক লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সাহায্য চাইলেন। তাদের যে যা চাইলেন, তিনি তা-ই দিলেন, এমন কি তাঁর কাছে যা কিছু ছিল তা শেষ হয়ে গেল। যখন তাঁর দু’হাত দিয়ে দান করার পর সবকিছু শেষ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ আমার কাছে যা কিছু মালামাল থাকে, তা থেকে আমি কিছুই সঞ্চয় করি না। অবশ্য যে নিজেকে মুখাপেক্ষিমুক্ত রাখতে চায়, আল্লাহ তাকে তাই রাখেন; আর যে ব্যাক্তি ধৈর্য ধারণ করে তিনি তাকে ধৈর্যশীলই রাখেন। আর যে ব্যাক্তি পরনির্ভর হতে চায় না, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। সবর অপেক্ষা বেশি প্রশস্ত ও কল্যাণকর কিছু কস্মিনকালেও তোমাদেরকে দান করা হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৭ | 6027 | ٦۰۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০২. আল্লাহ তা’আলার নিষেধাজ্ঞাসমূহ থেকে সবর করা। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ধৈর্যশীলদের তো অপরিমিত প্রতিদান দেওয়া হবে। উমর (রাঃ) বলেন, আমরা শ্রেষ্ঠ জীবন লাভ করেছিলাম একমাত্র ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমেই।
৬০২৭। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু ইলাকাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) কে বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, তাঁর পদযুগল ফূলে যেত। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলতেন:আমি কি অত্যধিক কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না?

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৮ | 6028 | ٦۰۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০৩. (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।
৬০২৮। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হবে এমন লোক- যারা ঝাড়ফুঁকের শরণাপন্ন হয় না, কুযাত্রা মানে না এবং নিজেদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৯ | 6029 | ٦۰۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০৪. অনর্থক কথাবার্তা অপছন্দনীয়
৬০২৯। আলী ইবনু মুসলিম (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর কাতিব ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুয়াবিযা (রাঃ) মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) কে লিখলেন যে, আপনি আমার কাছে একটা হাদীস লিখে পাঠান, যা আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) তাঁর কাছে লিখে পাঠালেন, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ফিরার সময় বলতে শুনেছিঃ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং হামদ তাঁরই। তিনি সবার উপর শক্তিমান।

আর তিনি নিষেধ করতেন অনর্থক কথাবার্তা, অধিক সাওয়াল, মালের অপচয়, উচিত বস্তুকে দেওয়া। অনুচিতকে চাওয়া, মাতাপিতার অবাধ্যতা এবং কন্যাদেরকে জীবিত কবর করা থেকে। হুশায়ম (রহঃ) … আবদুল মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ওয়াররাদ কে আল মুগীরা … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩০ | 6030 | ٦۰۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩০। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর আল মুকাদ্দামী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী বস্তু (জিহবা) এবং দু’রানের মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান) এর হিফাযত করবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩১ | 6031 | ٦۰۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩১। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে নয়তো নীরব থাকে। এবং যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩২ | 6032 | ٦۰۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ শুরাইয়া আল খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার কান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষন করেছে, মেহমানদারী তিন দিন, সৌজন্যসহ। জিজ্ঞাসা করা হলো, সৌজন্য কি? তিনি বললেনঃ এক দিন ও এক রাত (বিশেষ আতিথেয়তা)। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৩ | 6033 | ٦۰۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩৩। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয় বান্দা এমন কথা বলে যার পরিনাম সে চিন্তা করে না অথচ এ কথার কারণে সে নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামের এমন গভীরে যার দূরত্ব মাশরিক-এর দূরত্বের চাইতে অধিক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৪ | 6034 | ٦۰۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির কোন কথা উচ্চারন করে অথচ সে কথার গুরুত্ব সম্পর্কে চেতনা নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ তার মর্যাদা অনেক গুন বাড়িয়ে দেন। আবার বান্দা আল্লাহর অসন্তুষ্টির কোন কথা বলে ফেলে যার পরিনতি সম্পর্কে সে সচেতন নয়, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে পতিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৫ | 6035 | ٦۰۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭০৬. আল্লাহ তা’আলার ভয়ে কাঁদা
৬০৩৫। মুহাম্মাদ ইরন বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত প্রকার লোককে আল্লাহ তা’আলা ছায়া দেবেন। এক জাতীয় ব্যাক্তি হবে আল্লাহর যিকর করে চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৬ | 6036 | ٦۰۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭০৭. আল্লাহর ভয়
৬০৩৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের এক ব্যাক্তি ছিল, যে তার আমল সম্পর্কে তুচ্ছ ধারনা পোষণ করত। সে তার পরিবারের লোকদেরকে বলল, যখন আমি মারা যাবো, তখন তোমরা আমাকে নিয়ে (জ্বালিয়ে দিবে) অতঃপর প্রচণ্ড গরমের দিনে আমার ভস্মগুলো সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। তার পরিবারের লোকেরা সে অনুযায়ী কাজ করলো। অতঃপর আল্লাহ তায়াআলা সেই ভস্ম একত্রিত করে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি যা করলে, তা কেন করলে, সে বললো, একমাত্র আপনার ভীতিই আমাকে এটিতে বাধ্য করেছে। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৭ | 6037 | ٦۰۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০৭. আল্লাহর ভয়
৬০৩৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ব অথবা তোমাদের পূর্ব যুগের এক ব্যাক্তির কথা উল্লেখ করলেন। আল্লাহ তা’আলা তাকে ধন-সস্পদ ও সন্তানাদি দান করেছিলেন। যখন সে মৃত্যুর সম্মুখীন হল তখন সে তার সন্তানদেরকে জিজ্ঞাসা করলো, আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলল, উত্তম। সে বললো, যে আল্লাহর কাছে কোন সম্পদ সঞ্চয় রাখেনি, সে আল্লাহর কাছে হাযির হলে তিনি তাকে শাস্তি দেবেন। তোমরা লক্ষ্য রাখবে, আমি মারা গেলে আমাকে জ্বালিয়ে দেবে। আমি যখন কয়লা হয়ে যাব তাকে ছাই ভস্ম করে ফেলবে। অতঃপর যখন প্রবল বাতাস বইবে, তখন তোমরা তা তাতে উড়িয়ে দেবে। এভাবে সে তাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিল।

রাবী বলেনঃ আমার প্রতিপালকের কসম! তারা যথাযথ তাই করল। অতঃপর আল্লাহ তাআলা বললেন, অস্তিত্বে এসে যাও। হঠাৎ এক ব্যাক্তিরুপে দণ্ডায়মান হল। তখন তিনি বললেনঃ হে আমার বান্দা! তুমি এমনটি কেন করলে? সে বললো তা একমাত্র আপনার ভয়ে। তখন তিনি এর প্রতিদানে তাকে ক্ষমা করে দিলেন আপনার ভীতি অথবা আপনার থেকে সরে থাকার কারণে।

আমি আবূ উসমানকে বর্ণনা করেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি সালমানকে শুনেছি, তিনি এতদ্ব্যতীত অতিরিক্ত করেছেন … আমার ভম্মগুলো সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। অথবা তিনি যেমনটি বর্ণনা করেছেন। মু’আয (রহঃ) … উকবা (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) কে শুনেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৮ | 6038 | ٦۰۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৩৮। মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও আমাকে যা দিয়ে আল্লাহ পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো এমন ব্যাক্তির মত, যে তার কওমের কাছে এসে বললো, আমি স্ব-চক্ষে শত্রু সেনাদলকে দেখেছি আর আমি স্পষ্ট সতর্ককারী। সুতরাং তোমরা সত্বর আত্মরক্ষার ব্যবস্থা কর। অতঃপর একদল তার কথায় সাড়া দিয়ে শেষ রজনীতে নিরাপদ গন্তব্যে পৌছে বেঁচে গেল। এদিকে আরেক দল তাকে মিথ্যারোপ করে, যদ্দরুন তাদেরকে ভোর বেলায় শত্রুসেনা এসে সমূলে নিপাত করে দিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৯ | 6039 | ٦۰۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৩৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও লোকদের দৃষ্টান্ত এমন ব্যাক্তির ন্যায়, যে আগুন জ্বালালো আর যখন তার চতূর্দিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন পতঙ্গ ও ঐ সমস্ত প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পড়তে লাগলো। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে বাঁচাবার জন্য টানতে লাগলো। কিন্তু তারা আগুনে পুড়ে মরলো। তদ্রুপ আমি তোমাদের কোমরে ধরে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করি অথচ তারা তাতেই প্রবেশ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪০ | 6040 | ٦۰٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৪০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান (প্রকৃত) সেই ব্যাক্তি, যার যবান ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। আর মুহাজির (প্রকৃত) সে, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪১ | 6041 | ٦۰٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০৯. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে
৬০৪১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তবে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম আর কাঁদতে বেশি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪২ | 6042 | ٦۰٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০৯. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে
৬০৪২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তবে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম আর কাঁদতে বেশি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৩ | 6043 | ٦۰٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৭১০. প্রবৃত্তি দ্বারা জাহান্নামকে বেষ্টন করা হয়েছে
৬০৪৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম প্রবৃত্তি দিয়ে বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-ক্লেশ দিয়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৪ | 6044 | ٦۰٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭১১. জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চেয়েও বেশী নিকটবর্তী আর জাহান্নামও তদ্রূপ
৬০৪৪। মূসা ইবনু মাসউদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চাইতেও বেশি কাছাকাছি আর জাহান্নামও তদ্রুপ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৫ | 6045 | ٦۰٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭১১. জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চেয়েও বেশী নিকটবর্তী আর জাহান্নামও তদ্রূপ
৬০৪৫। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বাধিক সত্য কবিতা যা জনৈক কবি বলেছেনঃ তোমরা জেনে রেখো আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই অনর্থক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৬ | 6046 | ٦۰٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭১২. মানুষ যেন নিজের চেয়ে নিন্মস্তর ব্যক্তির দিকে তাকায় আর নিজের চেয়ে উচ্চস্তর ব্যক্তির দিকে যেন না তাকায়
৬০৪৬। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো দৃষ্টি যদি এমন ব্যাক্তির উপর নিপতিত হয়, যাকে সম্পদে ও দৈহিক গঠনে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়েছে তবে সে যেন এমন ব্যাক্তির দিকে তাকায়, যে তার চেয়ে হীন অবস্থায় রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৭ | 6047 | ٦۰٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭১৩. যে ব্যক্তি ইচ্ছা করল ভাল কাজের কিংবা মন্দ কাজের
৬০৪৭। আবূ মা’মার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হাদীসে কুদসী স্বরূপ) তার রব থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, আল্লাহ তা’আলা নেকী ও বদীসমূহ চিহ্নিত করেছেন। এরপর সেগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন সুতরাং যে ব্যাক্তি কোন সং কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ তা’আলা তাঁর কাছে এর জন্য পূর্ণ নেকী লিপিবদ্ধ করবেন। আর সে ইচ্ছা করল ভাল কাজের এবং তা বাস্তবেও পরিণত করল তবে আল্লাহ তা’আলা তার কাছে তার জন্য দশ গুন থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত এমন কি এর চেয়েও অনেক গুণ বেশি সাওয়াব লিখে দেন। আর যে ব্যাক্তি কোন অসৎ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ তাআলা তার কাছে তার জন্য পূর্ন নেকী লিপিবদ্ধ করবেন। আর যদি সে ওই অসৎ কাজের ইচ্ছা করার পর বাস্তবেও তা করে ফেলে, তবে তার জন্য আল্লাহ তাঁআলা মাত্র একটা পাপ লিখে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৮ | 6048 | ٦۰٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭১৪. সগীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা
৬০৪৮। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) বলেনঃ তোমরা এমন সব কাজ করে থাক, যা তোমাদের চোখে চুল থেকেও সূক্ষ্ম দেখায়। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় আমরা এগুলোকে ধবংসাত্মক মনে করতাম। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন অর্থাৎ الْمُهْلِكَاتِ “ধ্বংসাত্মক”।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৯ | 6049 | ٦۰٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭১৫. আমল পরিনামের উপর নির্ভরশীল, আর পরিণামের ব্যাপারে ভীত থাকা
৬০৪৯। আলী ইবনু আইয়্যাস (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের সাথে যুদ্ধরত এক ব্যাক্তির দিকে তাকালেন। সে ব্যাক্তি অন্যান্য লোকের চাইতে ধনী ছিল। তিনি বললেনঃ কেউ যদি জাহান্নামী লোক দেখতে চায়, সে যেন এই লোকটিকে দেখে। (এ কথা শুনে) এক ব্যাক্তি তার পেছনে পেছনে যেতে লাগল। সে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে আহত হয়ে গেল। সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করল, সে তারই তরবারীর অগ্রভাগ বুকে লাগিয়ে উপুড় হয়ে সজোরে এমনভাবে চাপ দিল যে, তলোয়ারটি তার বক্ষস্থল ভেদ করে পার্শ্বদেশ অতিক্রম করে গেল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন বান্দা এমন কাজ করে যায়, যা দেখে লোকেরা একে জান্নাতী লোকের কাজ মনে করে। কিন্তু বাস্তবে সে জাহান্নামিদের অন্তর্ভুক্ত। আর কোন বান্দা এমন কাজ করে যায়, যা মানুষের চোখে জাহান্নামীদের কাজ বলে মনে হয় অথচ সে জান্নাতী লোকদের অন্তর্ভূক্ত। নিশ্চয়ই মানুষের যাবতীয় আমল পরিণামের সাথে নির্ভরশীল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫০ | 6050 | ٦۰۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫০। আবূল ইয়ামান ও মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একজন বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন ব্যাক্তি সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেনঃ সে ব্যাক্তি যে নিজের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে, আর সে ব্যাক্তি যে পর্বতের কোন গুহায় তার রবের ইবাদত করতে থাকে এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে রেহাই দেয়। যুবায়দী সুলায়মান (রহঃ) ও নোমান (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে শুআইব (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। মামার (রহঃ) … আবূ সায়ীদ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। ইউনুস (রহঃ), ইবনু মুসাফির (রহঃ) ও ইয়াহইয়া ইবনু সায়ীদ (রহঃ) জনৈক সাহাবী কতৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অর্থাৎ আবূল ইয়ামানের হাদীসের ন্যায় “কোন ব্যাক্তি সবচাইতে উত্তম বর্ণনা করেছেন।”

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫১ | 6051 | ٦۰۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫১। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, মানুষের উপর এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানের উত্তম সম্পদ হবে বকরির পাল। সে তা নিয়ে পাহাড়ী উপত্যকা ও বারি ভূমির অনুসরণ করবে, তার দ্বীনকে নিয়ে ফিতনা থেকে দুরে থাকার উদ্দেশ্যে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫২ | 6052 | ٦۰۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫২। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আমানত বিনষ্ট হয়ে যাবে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমানত কেমন করে নষ্ট হযে যাবে, তিনি বললেনঃ যখন অযোগ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে, তখনই তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৩ | 6053 | ٦۰۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭১৭. আমানতদারী উঠে যাওয়া
৬০৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) বর্ননা করেন। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি তো আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষা করছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তর্মুলে অধোগামী হয়। তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করে। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জ্ঞান অর্জন করে। আবার বর্ণনা করেছেন আমানত তুলে নেয়া সম্পর্কে, যে ব্যাক্তিটি (ঈমানদার) এক পর্যায়ে ঘূমালে পর, তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেয়া হবে, তখন একটি বিন্দুর মত চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় ঘূমাবে। তখন আবার উঠিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর তার চিহ্ন ফোস্কার মত অবশিষ্ট থাকবে। তোমার পায়ের উপর গড়িয়ে পড়া অঙ্গার সৃষ্ট চিহ্ন, যেটিকে তুমি ফোলা মনে করবে, অথচ তার মধ্যে আদো কিছু নেই। মানুষ কারবার করবে বটে, কেউ আমানত আদায় করবে না। তারপর লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমূক বংশে একজন আমানতদার লোক রয়েছে। সে ব্যাক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে যে, সে কতই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বাহাদুর? অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার উপর এমন এক যামানা অতিবাহিত হয়েছে যে, আমি তোমাদের কারো সাথে বেচাকেনা করলাম, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করতাম না। কারণ সে মুসলমান হলে ইসলামই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। আর সে নাসরানী হলে তার শাসকই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। অথচ বর্তমানে আমি অমুক অমুককে ছাড়া বেচাকেনা করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৪ | 6054 | ٦۰۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭১৭. আমানতদারী উঠে যাওয়া
৬০৫৪। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলতেনঃ নিশ্চয়ই মানুষ তো উটের ন্যায়, যাদের মধ্য থেকে সাওয়ারীর উপযোগী একটি পাওয়া তোমার পক্ষে দুষ্কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৫ | 6055 | ٦۰۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭১৮. লোকদেখানো ও শোনানো ইবাদত
৬০৫৫। মুসাদ্দাদ ও আবূ নুআয়ম (রহঃ) … সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জুনদুবকে বলতে শুনেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন। তিনি ব্যতীত আমি অন্য কাউকে “নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এরুপ বলতে শুনিনি। আমি তার কাছে গেলাম এবং তাকে বলতে শুনলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি লোক শোনানো ইবাদত করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে লোক শোনানো দিবেন। আর যে ব্যাক্তি লোক-দেখানো ইবাদত করবে আল্লাহ এর বিনিময়ে “লোক দেখানো দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৬ | 6056 | ٦۰۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭১৯. যে ব্যক্তি সাধনা করবে প্রবৃত্তির সাথে আল্লাহর ইবাদতের ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্যের জন্য নিজের নফসের সাথে
৬০৫৬। হুদবাহ ইবনু খালিদ (রহঃ) … মুয়ায ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহযাত্রী ছিলাম। অথচ আমার ও তার মাঝখানে ব্যবধান ছিল শুধু সাওয়ারীর গদির কাষ্ঠ-খণ্ড। তিনি বললেনঃ হে মুয়ায! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা! তারপর আরও কিছুক্ষণ চলার পরে আবার বললেনঃ হে মুয়ায! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা! তারপর আরও কিছুক্ষন চলার পর আবার বললেনঃ হে মুয়ায ইবনু জাবাল! আমিও আবার বললাম, লাব্বাইকা ইযা রাসূলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা। তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দার উপর আল্লাহর হক কি? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুল অধিক জানেন। তিনি বললেনঃ বান্দার উপর আল্লাহর হক হচ্ছে এই যে, সে তারই ইবাদত করবে, এতে তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর আরও কিছুক্ষন পথ চলার পর আবার ডাকলেন, হে মুয়ায ইবনু জাবাল! আমি বললাম, লাব্বাইকা ওয়া সাদাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ যদি বান্দা তা করে তখন আল্লাহর কাছে বান্দার প্রাপ্য কি হবে, তা কি তুমি জানো? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেনঃ তখন বান্দার হক আল্লাহর কাছে হল তাদেরকে আযাব না দেওয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৭ | 6057 | ٦۰۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২০. তাওয়াজু (বিনয়)
৬০৫৭। মালিক ইবনু ইসমাঈল ও মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ‘আযবা’ নাম্নী একটি উটনী ছিল। তাকে অতিক্রম করে যাওয়া যেত না। একবার একজন বেদুঈন তার একটি উটে সাওয়ার হয়ে আসলে সেটি তার আগে চলে গেল। মুসলিমদের কাছে তা কঠোর মনে হল। তারা বলল যে, আযবা কে তো অতিক্রম করে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার বিধান হলো, দুনিয়ার কোন জিনিসকে উত্থিত করা হলে তাকে পতিতও করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৮ | 6058 | ٦۰۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২০. তাওয়াজু (বিনয়)
৬০৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু উসমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ যে ব্যাক্তি আমার কোন ওলীর সঙ্গে শক্রতা রাখবে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করি। আমার বান্দা আমি যা তার উপর ফরয ইবাদতের চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয় কোন ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন– করতে থাকবে। এমন কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যার দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু সাওয়াল করে, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যে কোন কাজ করতে চাইলে এটাতে কোন রকম দ্বিধা সংকোচ করি-না যতটা দ্বিধা সংকোচ মুমিন বান্দার প্রাণ হরণে করি। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার কষ্ট অপছন্দ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৯ | 6059 | ٦۰۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৫৯। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ রকম। এ বলে তিনি আঙ্গুল দু’টিকে প্রসারিত করে ইশারা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬০ | 6060 | ٦۰٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ রকম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬১ | 6061 | ٦۰٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬১। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ও কিয়ামতের আবির্ভাব এ রকম। অর্থাৎ এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬২ | 6062 | ٦۰٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষন না সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে। যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে, আর লোকজন তা প্রত্যক্ষ করবে, তখন সকলেই ঈমান নিয়ে আসবে। তখনকার সম্পর্কেই (আল্লাহ তালার বানী) “সেদিন তার ঈমান কাজে আসবে না, ইতিপূর্বে যে ব্যাক্তি ঈমান আনেনি, কিংবা যে ব্যাক্তি-ঈমানের মাধ্যমে কল্যান অর্জন করেনি। কিয়ামত সংঘটিত হবে এ অবস্থায় যে, দু’ব্যাক্তি (বেচা কেনার) জন্য পরস্পরের সামনে কাপড় ছড়িয়ে রাখবে। কিন্তু তারা বেচাকেনার সময় পাবে না। এমন কি তা ভাজ করারও অবকাশ পাবে না। আর কিয়ামত এমন অবস্থায় অবশ্যই কায়েম হবে যে, কোন ব্যাক্তি তার উটনীর দুধ দোহন করে ফিরে আসার পর সে তা পান করার অবকাশ পাবে না। আর কিয়ামত এমন অবস্থায় সংঘটিত হবে যে, কোন ব্যাক্তি (তার উটকে পানি পান করানোর উদ্দেশ্যে) চৌবাচ্চা তৈরি করবে। কিন্তু সে এ থেকে পানি পান করানোর সুযোগ পাবে না। আর কিযামত এমন অবস্থায় কায়েম হবে যে, কোন ব্যাক্তি তার মুখ পর্যন্ত লোকমা উঠাবে, কিন্তু সে তা খেতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৩ | 6063 | ٦۰٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৩। হাজ্জাজ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহব সাক্ষাত লাভ করা ভালবাসে, আল্লাহ তা’আালাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে না, আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করেন না। তখন আয়িশা (রাঃ) অথবা তাঁর অন্য কোন সহধর্মিণী বললেনঃ আমরাও তো মৃত্যুকে পছন্দ করি না। তিনি বললেনঃ বিষয়টা এরূপ নয়। আসলে ব্যাপারটা হল এই যে, যখন মুমিন বান্দার মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার সম্মানিত হওয়ার সুসংবাদ শোনানো হয়। তখন তার সামনের সুসংবাদের চাইতে তার নিকট বেশি পছন্দনীয় কিছু থাকে না। সুতরাং সে তখন আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করাকেই পছন্দ করে, আর আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর কাফিরের যখন অন্তিমকাল উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর আযাব ও শাস্তির সংবাদ দেওয়া হয়। তখন তার সামনের আযাবের সংবাদের চাইতে তার কাছে অধিক অপছন্দনীয় কিছুই থাকে না। সুতরাং সে (এ সময়) আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা অপছন্দ করে, আর আল্লাহ তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৪ | 6064 | ٦۰٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর মূলাকাতকে ভালবাসে, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাতকে ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর মুলাকাতকে ভালবাসে না, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাত ভালবাসেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৫ | 6065 | ٦۰٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থাবস্থায় প্রায়ই এ কথা বলতেন যে, কোন নাবীরই (জান) কবয করা হয় না, যতক্ষন পর্যন্ত তাকে তাঁর জান্নাতের ঠিকানা না দেখানো হয়, আর তাকে (জীবন অথবা মৃত্যুর) অধিকার না দেওয়া হয়। সুতরাং যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু কাল ঘনিয়ে এলো, এ সময় তার মাথা আমার রানের উপর ছিল, তখন কিছুক্ষণের জন্য তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। বেহুশ থেকে সুস্থ হওয়ার পর তিনি তাঁর চোখ উপরের দিকে তুলে ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ “আল্লাহুম্মার রাফীকালআলা” (অর্থাৎ ইয়া আল্লাহ! আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম)। আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, তখনই আমি (মনে মনে) বললাম যে, তিনি এখন আর আমাদেরকে পছন্দ করবেন না। আর আমি বুঝতে পারলাম যে, এটাই হচ্ছে সেই হাদীসের মর্ম, যা তিনি ইতিপূর্বে প্রায়ই বর্ণনা করতেন এবং এটাই ছিল তার শেষ কথা, যা তিনি বলেছেনঃ اللَّهُمَّ الرَّفِيقَ الأَعْلَى আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৬ | 6066 | ٦۰٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ ইবনু মায়মুন (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে চামড়ার অথবা কাঠের একপাত্রে কিছু পানি রাখা ছিল (উমর সন্দেহ করতেন) তিনি তাঁর উভয় হাত ঐ পানির মধ্যে দাখিল করতেন। এরপর নিজ মুখমণ্ডলে উভয় হাত দ্বারা মাসেহ করতেন এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন। আরও বলতেনঃ নিশ্চয়ই মৃত্যুর অনেক যন্ত্রণা রয়েছে। এরপর দু’হাত তুলে দোয়া করতে লাগলেন। ইয়া আল্লাহ! আমাকে সর্বোচ্চ বন্ধুর নিকটে পৌছিয়ে দিন। এ সময়ই তার (রূহ) কবয করা হল। আর হাত দু’টি ঢলে পড়ল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৭ | 6067 | ٦۰٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৭। সাদাকা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিছু সংখ্যক কঠিন মেজাজের গ্রাম্য লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করতো কিয়ামত কবে হবে? তখন তিনি তাদের সর্ব-কনিষ্ঠ ব্যাক্তির দিকে তাকিয়ে বলতেনঃ যদি এ ব্যাক্তি কিছু দিন বেঁচে থাকে তবে তার বুড়ো হওয়ার আগেই তোমাদের কিয়ামত এসে যাবে। হিশাম বলেন যে, এ কিয়ামতের অর্থ হলো, তাদের মৃত্যু।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৮ | 6068 | ٦۰٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৮। ইসমাঈল (রহঃ) … কাতাদা ইবনু রিবঈ আনসারী (রাঃ) বর্ণনা করেন। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হল। তিনি তা দেখে বললেনঃ সে শান্তি প্রাপ্ত অথবা তার থেকে শাস্তিপ্রাপ্ত। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ‘মুস্তারিহ’ ও ‘মুস্তারাহ মিনহু’ এর অর্থ কি? তিনি বললেনঃ মুমিন বান্দা মরে যাওয়ার পর দুনিয়ার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে আল্লাহর রহমতের দিকে পৌছে শান্তি প্রাপ্ত হয়। আর গুনাহগার বান্দা মরে যাওয়ার পর তার আচার-আচরণ থেকে সকল মানুষ, শহর-বন্দর, গাছ-পেলা ও প্রানীকূল শান্তিপ্রাপ্ত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৯ | 6069 | ٦۰٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যাক্তি হয়ত মুস্তারীহ (নিজে শান্তিপ্রাপ্ত) হবে অথবা মুস্তারাহ মিনহু (লোকজন) তার থেকে শান্তি লাভ করবে। মুমিন (দুনিয়ার ফিতনা যাতনা থেকে) শান্তি লাভ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭০ | 6070 | ٦۰۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭০। হুমায়দী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস মৃত ব্যাক্তির অনুসরণ করে থাকে। দুটি ফিরে আসে, আর একটি তার সাথে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার আমল তার অনুসরণ করে খাকে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, পক্ষান্তরে তার আমল তার সাথে থেকে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭১ | 6071 | ٦۰۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭১। আবূ নূমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন ব্যাক্তির মৃত্যু হয়, তখন কবরেই প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় তার জান্নাত অথবা জাহান্নামের ঠিকানা তার সামনে পেশ করা হয়। এবং বলা হয় যে, এই হল তোমার ঠিকানা। তোমার পুনরুত্থান পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭২ | 6072 | ٦۰۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭২। আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মৃত ব্যাক্তিদেরকে গালি দিও না। কারণ তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণাম ফল পর্যন্ত পৌছে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৩ | 6073 | ٦۰۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ব্যাক্তি পরস্পরে গালাগালি করল। একজন মুসলমান, অপরজন ইহুদী। মুসলমান বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা কে জগতবাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। ইহুদী বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে জগতবাসীর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। রাবী বলেনঃ এতে মুসলমান রাগাম্বিত হয়ে গেল এবং ইহুদীর মুখমণ্ডলে একটি চপেটাঘাত করে বসল। এরপর ইহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে তার মাঝে এবং মুসলমানের মাঝে যা ঘটেছিল এ সম্পর্কে তাকে অবহিত করল।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর ওপর প্রাধান্য দিও না। কেননা কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে, আর আমিই হব সেই ব্যাক্তি যে সর্বপ্রথম হুশে আসব। হুশ হয়েই আমি দেখতে পাব যে মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমের কিনারা ধরে আছেন। আমি জানিনা মূসা (আলাইহিস সালাম) কি সেই লোক যিনি বেহুশ হবেন আর আমার পূর্বেই প্রকৃতিস্থ হয়ে যাবেন। নাকি তিনি সেই লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা বেহুশ হয়ে যাওয়া থেকে সতন্ত্র রেখেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৪ | 6074 | ٦۰۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামত হবে তখন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে। আর আমিই হব সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, যে হুশ হয়ে দাঁড়াবো। আর আমি দেখতে পাব যে, মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমকে ধরে আছেন। মূলত আমি জানিনা যে, তিনি বেহুশীদের অন্তর্ভুক্ত কি না? এ হাদীস আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৫ | 6075 | ٦۰۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা’আলা যমীনকে আপন মুঠোয় আবদ্ধ করবেন আর আকাশকে ডান হাত দিয়ে লেপটে দিবেন। এরপর তিনি বলবেনঃ আমিই বাদশাহ, দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়?

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৬ | 6076 | ٦۰۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন একটি রুটি হয়ে যাবে। আর আল্লাহ তা’আলা বেহেশতীদের মেহমানদারীর জন্য তাকে বেহেশতে তুলে নেবেন। যেমন তোমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় তার রুটি হাতে তুলে নেয়। এমন সময় একজন ইহুদী এলো এবং বলল, হে আবূল কাসিম! দয়াময় আপনাকে বরকত প্রদান করুন। কিয়ামতের দিন বেহেশতিদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে কি জানাব না? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। লোকটি বলল, (সেই দিন) সমস্ত ভূ-মণ্ডল একটি রুটি হয়ে যাবে। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন (লোকটিও সেইরূপই বলল)। এবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকালেন এবং হাসলেন। এমনকি তার চোয়ালের দাঁতসমূহ প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেনঃ তবে কি আমি তোমাদেরকে (সেই রুটির) তরকারী সম্পর্কে বলব না? তিনি বললেনঃ তাদের তরকারী হবে বালাম এবং নূন। সাহাবাগগ বললেনঃ সে আবার কি? তিনি বললেনঃ ষাড় এবং মাছ। এদের কলিজার গুরদা থেকে সত্তর হাজার লোক খেতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৭ | 6077 | ٦۰۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৭। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মানুষকে এমন স্বচ্ছ শুভ্র সমতল যমীনের ওপর একত্রিত করা হবে সাদা গমের রুটি যেমন স্বচ্ছ-শুভ্র হয়ে থাকে। সাহল বা অন্য কেউ বলেছেনঃ তার মাঝে কারও কোন কিছুর চিহ্ন বিদ্যমান থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৮ | 6078 | ٦۰۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের হাশর হবে তিন প্রকারে। একদল তো হবে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আশিক ও দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত বান্দাদের। দ্বিতীয় দল হবে দু’জন, তিনজন, চারজন বা দশজন এক উটের ওপর আরোহণকারী। আর অবশিষ্ট যারা থাকবে অগ্নি তাদেরকে একত্রিত করে নেবে। যেখানে তারা থামবে আগুনও তাদের সাথে সেখানে থামবে। তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে রাত্রি যাপন করবে। তারা যেখানে সকাল করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে সকাল করবে। যেখানে তাদের সন্ধ্যা হবে আগুনেরও সেখানে সন্ধ্যা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৯ | 6079 | ٦۰۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর নাবী! অধোবদন অবস্হায় কাফেরদেরকে কিভাবে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে? তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যে মহান সত্তা (মানুষকে) দু’পায়ের উপর হাটাতে পারেন, তিনি কি কিয়ামতের দিন অধোবদন করে হাটাতে সক্ষম নন? তখন কাতাদা (রাঃ) বললেনঃ আমাদের রবের ইজ্জতের কসম! হ্যাঁ, অবশ্যই পারেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮০ | 6080 | ٦۰۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮০। আলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই তোমরা খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনা বিহীন অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হবে। সুফিয়ান বলেনঃ এ হাদীসকে ঐ সমস্ত হাদীসের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হয়, যা ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বয়ং শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮১ | 6081 | ٦۰۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে শুনেছি তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মুলাকাত করবে খালি গা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮২ | 6082 | ٦۰۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮২। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে খুৎবা দিতে দাঁড়ালেন। এরপর বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের হাশর করা হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়াতঃ ‏كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ‏ অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা বলেন যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছি তেমনিভাবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করব। আর কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) কে পোশাক পরিধান করানো হবে। আমার উম্মাত থেকে কিছু লোককে আনা হবে আর তাদেরকে আনা হবে বামওয়ালাদের (বাম হাতে আমলনামা প্রাপ্ত) ভিতর থেকে। তখন আমি বলব, হে প্রভু। এরা তো আমার উম্মাত। এরপর আল্লাহ বলবেনঃ নিশ্চয়ই তুমি জানো না তোমার পরে এরা কি করেছে। তখন আমি আরয করব, যেমন আরয করেছে নেককার বান্দা অর্থাৎ ঈসা (আলাইহিস সালাম) আয়াতঃ ‏وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ‏}‏ … ‏الْحَكِيمُ অর্থাৎ যতদিন আমি ছিলাম আমি তাদের ওপর সাক্ষী ছিলাম … الْحَكِيمُ পর্যন্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর জবাব দেওয়া হবে। এরা সর্বদাই দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শনের ওপর বিদ্যমান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৩ | 6083 | ٦۰۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৩। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তখন তো পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তিনি বললেনঃ এইরূপ ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৪ | 6084 | ٦۰۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা কোন এক তাবুতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের প্রান। আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে, তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে। আর এটা চিরন্তন সত্য যে বেহেশতে কেবলমাত্র মুসলমানগণই প্রবেশ করতে পারবে। আর মুশরিকদের মুকাবিলায় তোমরা হচ্ছ এমন, যেমন কাল ষাড়ের চামড়ার উপর শুভ্র (সাদা) পশম। অথবা লাল ষাড়ের চামড়ার ওপর কাল পশম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৫ | 6085 | ٦۰۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আদম (আলাইহিস সালাম) কে ডাকা হবে। তিনি তার বংশধরকে দেখতে পাবেন। তখন তাদেরকে বলা হবে, ইনি হচ্ছে তোমাদের পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)। জবাবে তারা বলবে হাযির! হাযির! আমরা আপনার খিদমতে হাযির! এরপর তাকে আল্লাহ বলবেন, তোমার জাহান্নামী বংশধরকে বের কর। তখন আদম (আলাইহিস সালাম)বলবেন, প্রভূ হে! কি পরিমাণ বের করব? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ প্রতি একশ থেকে নিরানব্বই জনকে বের কর। তখন সাহাবাগণ বলে উঠলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! প্রতি একশ থেকে যখন নিরানব্বই জনকে বের করা হবে তখন আর আমাদের মাঝে বাকী থাকবে কি? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই অন্যান্য সকল উম্মাতের তূলনায় আমার উম্মাত হল কাল ষাড়ের গায়ের শুভ্র পশমের ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৬ | 6086 | ٦۰۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার (২২ঃ ১)। কিয়ামত আসন্ন (৫৩ঃ ৫৭)। কিয়ামত আসন্ন (৫৪ঃ ১)
৬০৮৬। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ডেকে বলবেন, হে আদম! তিনি বলবেন, আমি তোমার খিদমতে হাযির। সমগ্র কল্যাণ তোমারই হাতে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলবেন, জাহান্নামীদের (দেওয়ার জন্য) বের কর। আদম (আলাইহিস সালাম) আরয করবেন, কি পরিমাণ জাহান্নামী বের করব? আল্লাহ বলবেন, প্রতি এক হাজারে নয়শ, নিরানব্বই জন। বস্তুত এটা হবে ঐ সময়, যখন (কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা দর্শনে) বাচ্চা বৃদ্ধ হয়ে যাবে। (আয়াতঃ) আর গর্ভবতীরা গর্ভপাত করে ফেলবে; মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি কঠিন। (সূরা হাজ্জঃ ২)

এটা সাহাবাগণের কাছে বড় কঠিন মনে হল। তখন তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্য থেকে সেই লোকটি কে হবেন? তিনি বললেনঃ তোমরা এই মর্মে সুসংবাদ গ্রহণ কর যে ইয়াযুয ও মাযুয থেকে এক হাজার আর তোমাদের মাঝ থেকে হবে একজন। এরপর তিনি বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতের মুঠোয় আমার জান। আমি আকাঙ্ক্ষা রাখি যে তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হয়ে যাও। বর্ননাকারী বলেনঃ এরপর আমরা আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার, বললাম। তিনি আবার বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার জান। আমি অবশ্যই আশা করি যে তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হয়ে যাও। অন্য সব উম্মাতের মাঝে তোমাদের তুলনা হচ্ছে কাল ষাড়ের চামড়ার মাঝে সাদা চুল বিশেষ। অথবা সাদা চিহ্ন, যা গাধার সামনের পায়ে হয়ে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৭ | 6087 | ٦۰۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৭। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ সেই দিন মানূষ তাদের প্রভূর সামনে দণ্ডায়মান হবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবাই দণ্ডায়মান হবে ঘামের মাঝে কান পর্যন্ত ডুবে থাকা অবস্থায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৮ | 6088 | ٦۰۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত ছাড়িয়ে যাবে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত হবে; এমনকি কান পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৯ | 6089 | ٦۰۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৮৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম হত্যার বিচার করা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯০ | 6090 | ٦۰۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার ভাই এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তা থেকে মাফ নিয়ে নেয়, তার ভাই এর জন্য তার কাছ থেকে নেকী কেটে নেওয়ার পূর্বে। কেননা সেখানে (হাশরের ময়দানে) কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি নেকী না থাকে তবে তার (মাজলুম) ভাই এর গোনাহ এনে তার উপর ছুঁড়ে মারা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯১ | 6091 | ٦۰۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯১। আয়াতে কারীমা ‏وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِمْ مِنْ غِلٍّ এর তাৎপর্যে সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে খালাস পাওয়ার পর একটি পুলের ওপর তাদের আটকানো হবে, যা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তীস্থানে থাকবে। দুনিয়ায় থাকতে তারা একে অপরের উপর যে যুলুম করেছিল তার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তারা যখন পাক-সাফ হয়ে যাবে, তখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের জান, প্রত্যেক ব্যাক্তি তার দুনিয়ার বাসস্থানকে চেনার তুলনায় জান্নাতের বাসস্থানকে অধিক চিনবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯২ | 6092 | ٦۰۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯২। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যার চুলচেরা হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব দেওয়া হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন বললাম, আল্লাহ তা’আলা কি এরুপ বলেন নি “অচিরেই সহজ হিসাব গ্রহণ করা হবে”। তিনি বলেনঃ তা তো হবে শুধু পেশ করা মাত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৩ | 6093 | ٦۰۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি। ইবনু জুরাইজ, মুহাম্মদ ইবনু সুলাইম, আইউব ও সালিহ ইবনু রুস্তম, ইবনু আবূ মুলাইকা আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত রূপে বর্ননার অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৪ | 6094 | ٦۰۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৪। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন যারই হিসাব গ্রহণ করা হবে সে ধবংস হয়ে যাবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি, যার ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে তার হিসাব সহজ হবে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তা পেশ করা বৈ কিছুই নয়। আর কিয়ামতের দিন আমাদের মাঝে যার চুলছেড়া হিসাব নেওয়া হবে তাকে নিঃসন্দেহে আযাব দেওয়া হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৫ | 6095 | ٦۰۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু মামার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ কিয়ামতের দিন কাফেরকে হাযির করা হবে আর তখন তাকে বলা হবে, তোমার যদি পৃথিবী ভরা স্বর্ণ থাকত তাহলে কি তার বিনিময়ে তুমি আযাব থেকে বাঁচতে চাইতে না? সে বলবে, হ্যাঁ চাইতাম। এরপর তাকে বলা হবে তোমার কাছে তো এর চেয়ে সহজতর বস্তুটি (তৌহীদ) চাওয়া হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৬ | 6096 | ٦۰۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৬। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রত্যেক ব্যাক্তির সঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন। আর সেদিন বান্দা ও আল্লাহর মাঝে কোন দোভাষী থাকবে না। এরপর সামনের দিকে নযর করে তার সামনে জান্নাত দেখতে পাবে না। সে পুনরায় তার সামনের দিকে নযর ফেরাবে তখন তার সামনে পড়বে জাহান্নাম। তোমাদের মাঝে যে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেতে চায়, সে যেন এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও নিজকে রক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৭ | 6097 | ٦۰۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৭। আ’মাশ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘূরিয়ে নিলেন। আবার বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। তিনি তিনবার এইরূপ করলেন। এমন কি আমরা মনে করতে লাগলাম যে তিনি বুঝি জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করেছেন। এরপর আবার বললেনঃ তোমরা এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তবে উত্তম কথার দ্বারা হলেও (জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ গ্রহণ কর)।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৮ | 6098 | ٦۰۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৮। ইমরান ইবনু মায়সারাহ ও উসায়দ ইবনু যায়িদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ববতী উম্মাতদের আমার সমীপে পেশ করা হয়। কোন নাবী তাঁর অনেক উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবীর সঙ্গে রয়েছে দশজন উম্মাত। কোন নাবীর সঙ্গে পাঁচজন আবার কোন নাবী একা একা যাচ্ছেন। নজর করলাম হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। আমি বললামঃ হে জিবরীল! ওরা কি আমার উম্মাত? তিনি বললেনঃ না। তবে আপনি ঊধর্বলোকে নজর করুন! আমি নজর করলাম, হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। ওরা আপনার উম্মাত। আর তাদের সামনে রয়েছে সত্তর হাজার লোক তাদের কোন হিসাব হবে না হবে না তাদের কোন আযাব।

আমি বললাম, তা কেন? তিনি বললেনঃ তারা কোন দাগ লাগাত না, ঝাড়ফুঁকের শরণাপন্ন হত না এবং কুযাত্রা মানত না। আর তারা কেবল তাদের প্রভূর ওপরই ভরসা করত। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে উঠে দাঁড়িয়ে বললেনঃ আপনি আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! তুমি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। এরপর আরেক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ যেন আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশাতো দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৯ | 6099 | ٦۰۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৯। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাত থেকে কিছু লোক দল বেঁধে বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর তারা হবে সত্তর হাজার। তাদের চেহারাগুলো পূর্ণিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জল থাকবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এতদ শ্রবণে উক্কাশা ইবনু মিহসান আসাদী তাঁর গায়ে চাদর উঠাতে উঠাতে দাঁড়ালেন, এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার জন্য দোয়া করুন, আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। এরপর আনসার সম্প্রদায়ের এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর নিকট দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশা তো উক্ত দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০০ | 6100 | ٦۱۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০০। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মত থেকে সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একে অপরের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বর্ননাকারী (আবূ হাযিম) এর এ দু’সংখ্যার মাঝে সন্দেহ রয়েছে। তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে আর তাদের চেহারাগুলো পূর্নিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০১ | 6101 | ٦۱۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। অতঃপর তাদের মাঝে একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোষণা দেবে যে, হে জাহান্নামের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। হে জান্নাতের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০২ | 6102 | ٦۱۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০২। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন জান্নাতবাসীগণকে বলা হবে, এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। জাহান্নামের অধিবাসীদেরকে বলা হবে, হে জাহান্নামীরা! এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৩ | 6103 | ٦۱۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৩। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জান্নাতে উঁকি দিয়ে দেখলাম যে, তার অধিকাংশ অধিবাসীই দরিদ্র আবার জাহান্নামে উঁকি দিতে দেখতে পেলাম এর অধিকাংশ অধিবাসীই নারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৪ | 6104 | ٦۱۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম, (এরপর দেখতে পেলাম যে) তথায় যারা প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশই নিঃস্ব। আর ধনাট্য ব্যাক্তিরা আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি জাহান্নামের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন (দেখতে পেলাম যে) এখানে প্রবেশ কারীদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৫ | 6105 | ٦۱۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৫। মু’আয ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মূত্যৃকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যবেহ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোযণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষণ্ণতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৬ | 6106 | ٦۱۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৬। মুআয ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জান্নাতীগণকে সম্বোধন করে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তারা জবাবে বলবে, হে আমাদের প্রভূ! হাযির, আমরা আপনার সমীপে হাযির। এরপর আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছ? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে এমন বস্তু দান করেছেন যা আপনার মাখলুকাতের ভিতর থেকে কাউকেই দান করেন নি। অতএব আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না! তখন তিনি বলবেন, আমি এর চাইতেও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান করব। তারা বলবে, প্রভু হে! এর চাইতেও উত্তম সে কোন বস্তু? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ তোমাদের ওপর আমি আমার সন্তুষ্টি অবধারিত করব। এরপর আমি আর কখনও তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৭ | 6107 | ٦۱۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বদরের যুদ্ধের দিন হারিসা (রাঃ) শহীদ হলেন। আর তখন তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। তাঁর মা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সাথে হারিসার স্থান সম্পর্কে আপনি তো অবশ্যই জানেন। সে যদি জান্নাতী হয়; আমি ধৈর্য ধারণ করব এবং সাওয়াব মনে করব। আর যদি অন্য কিছু হয় তাহলে আপনি দেখতে পাবেন আমি কি করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! অথবা তুমি কি বেওকুফ হয়ে গেলে! জান্নাত কি একটা না কি? জান্নাত তো অনেক। আর সে হারিসা তো রয়েছে জান্নাতূল ফিরদাউসের মাঝে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৮ | 6108 | ٦۱۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৮। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে।

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ার মাঝে একজন আরোহী একশ-বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে, তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না।

রাবী আবূ হাযিম বলেনঃ আমি এই হাদীসটি নু’মান ইবনু আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) এর সমীপে পেশ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আমার কাছে এই মর্মে হাদীস বর্ননা করেন যে তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ায় উৎকৃষ্ট, উৎফূল্ল ও দ্রুতগামী অশ্বের একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে। তবুও তার ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৯ | 6109 | ٦۱۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৯। কুতায়বা (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমার উম্মাত থেকে সত্তর হাজার অথবা সাত লক্ষ লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী আবূ হাযিম জানেন না যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দু’টি সংখ্যার মাঝে কোনটি বলেছেনঃ (তিনি এই মর্মে আরও বলেন যে) তারা একে অপরের হাত দৃঢ়ভাবে ধারন করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রথম ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষন না সর্বশেষ ব্যাক্তি প্রবেশ করবে। তাদের চেহারাগুলো হবে পূর্নিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১০ | 6110 | ٦۱۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতের মাঝে তাদের কামরাসমূহ দেখতে পাবে, যেমন আকাশের মাঝে তোমরা তারকাসমূহ দেখতে পাও। (সনদান্তর্ভুক্ত) রাবী আবদুল আযীয বলেনঃ আমার পিতা বলেছেন যে, আমি এই হাদীসটি নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশকে বলেছি। অতঃপর তিনি বলেছেন, আমি এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই আবূ সাঈদকে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমি শুনেছি। এবং এতে তিনি এটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। যেরূপ অস্তমান তারকাকে আকাশের পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে তোমরা দেখে থাক।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১১ | 6111 | ٦۱۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কম আযাব প্রাপ্ত লোককে আল্লাহ তা’আলা বলবেন, দূনিয়ার মাঝে যত কিছু আছে তার তূল্য কোন সম্পদ যদি (আজ) তোমার কাছে থাকত, তাহলে কি তুমি তার বিনিময়ে নিজকে (আযাব থেকে) মুক্ত করতে? সে বলবে, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন, আমি তোমার থেকে এর চেয়েও সহজতর বস্তুর প্রত্যাশা করেছিলাম, যখন তুমি আদমের পৃষ্টদেশে বর্তমান ছিলে। আর তা হচ্ছে এই যে, তুমি আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর তুমি তা অস্বীকার করলে আর আমার সাথে অংশী স্থাপন করলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১২ | 6112 | ٦۱۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১২। আবূ নুমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শাফাআতের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যেমন তারা সা’আরীর। (রাবী জাবির বলেন) আমি বললাম সা’আরীর কি? তিনি বললেনঃ সা’আরীর মানে যাগাবীস (শৃগালের বাচ্চাসমুহ) বের হওয়ার সময় তাদের মুখ থাকবে ভাঙ্গা (দাঁত পড়া)। (সনদান্তর্ভুক্ত রাবী হাম্মাদ বলেন) আমি আবূ মুহাম্মাদ আমর ইবনু দীনারকে জিজ্ঞাসা করি যে, আপনি কি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ শাফাআতের দ্বারা জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৩ | 6113 | ٦۱۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৩। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আযাবে চর্ম বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পর একদল লোককে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন জান্নাতীগণ তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৪ | 6114 | ٦۱۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যার অন্তকরণে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে বের কর কয়লার মত হয়ে তারা জাহান্নাম থেকে ফিরে আসবে। এরপর নহরে হায়াত (সজীবনী প্রস্রবণ) এর মাঝে তাদেরকে অবগাহিত করা হবে এতে তারা এমন সজীব হয়ে উঠবে যেমন নদী তীরে জমাট আবর্জনায় সজীব উদ্ভিদ গজিয়ে উঠে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেনঃ তোমরা কি দেখ নাই বীজকাটা উদ্ভিদ কি সুন্দর হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে?

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৫ | 6115 | ٦۱۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তালুতে রাখা হবে প্রজ্জলিত অঙ্গার, তাতে তার মগয উৎলাতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৬ | 6116 | ٦۱۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৬। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচেয়ে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তলায় রাখা হবে দু’টি প্রজ্বলিত অঙ্গার। এতে তার মগয টগবগ করতে থাকবে। যেমন ডেক বা কলসী উথলায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৭ | 6117 | ٦۱۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) জাহান্নামের আলোচনা করলেন। এরপর তিনি তার মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং এর থেকে পানাহ চাইলেন। পুনঃ তিনি জাহান্নামের আলোচনা করে মুখ ফিরিয়ে নিলেন ও এর থেকে পানাহ চাইলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের অগ্নি থেকে নিজকে রক্ষা কর এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও। আর যে তাও পারবে না সে যেন ভাল কথার বিনিময়ে হলেও আত্নরক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৮ | 6118 | ٦۱۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন; যখন তাঁর কাছে তার চাচা আবূ তালিব সমন্ধে আলোচলা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ সম্ভবত কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত তাকে উপকার প্রদান করবে। আর তখন তাকে জাহান্নামের অগ্নিতে যা টাখনু পর্যন্ত পৌছে রাখা হবে যাতে তার মগজ মূল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৯ | 6119 | ٦۱۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন তারা বলবে, আমাদের জন্য আমাদের রবের কাছে যদি কেউ শাফাআত করত, যা এ স্থান থেকে আমাদের উদ্ধার করত। তখন তারা সকলেই আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আপনি ঐ ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ তাআলা স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন। আপনার মাঝে নিজে থেকে রুহ ফুকে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাদের হুকুম করেছেন; তারা আপনাকে সিজদা করেছে। অতঃপর আপনি আমাদের জন্য আমাদের প্রভুর কাছে শাফাআত করুন। তখন তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। এরপর বলবেন, তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও যাকে আল্লাহ প্রথম রাসুল হিসাবে প্রেরণ করেছেন।

তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যাকে আল্লাহ তা’আলা খলীলরূপে গ্রহগ করেছেন। অতঃপর তারা তার কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যার সঙ্গে আল্লাহ তা’আলা কথা বলেছেন। তখন তারা তার কাছে আসবে। তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেনঃ তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও।

তারা তার কাছে আসবে। তখন তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে চলে যাও। তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তখন তারা সকলেই আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে অনুমতি চাইব। যখনই আমি আল্লাহ তা’আলাকে দেখতে পাব তখন সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ ত’আলার যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। এরপর আমাকে বলা হবে, তোমার মাথা উঠাও। সাওয়াল কর, তোমাকে দেওয়া হবে। বল; তোমার কথা শ্রবণ করা হচ্ছে। শাফাআত কর; তোমার শাফাআত কবুল করা হবে।

তখন আমি মাথা উত্তোলন করব এবং আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে প্রশংসার বাণী শিক্ষা দিয়েছেন তার মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সুপারিশ করব, তখন আমার জন্য সীমা নির্ধারন করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে বেহেশতে প্রবেশ করিয়ে দেব। এরপর আমি পুর্বের ন্যায় পুনঃ তৃতীয়বার অথবা চতুর্থবার সিজদায় পড়ে যাব। অবশেষে কুরআনের বাণী মুতাবিক যারা অবধারিত জাহান্নামী তাদের ব্যতীত আর কেউই জাহান্নামে অবশ্যই থাকবে না। কাতাদা উক্ত আঘাতের ব্যাখ্যায় তখন বলেছিলেন, চিরস্থায়ী জাহান্নাম যাদের জন্য অবধারিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২০ | 6120 | ٦۱۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদল লোককে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফাআতে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২১ | 6121 | ٦۱۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২১। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বদরের যূদ্ধে হারিসা (রাঃ) আদৃশ্য তীরের আঘাতে শাহাদাতবরণ করলে তার মাতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার অন্তরে হারিসার স্নেহ-মমতা যে কত গভীর তা তো আপনি জানেন। অতএব সে যদি জান্নাত লাভ করে তরে আমি তার জন্য কান্নাকাটি করব না। আর যদি ব্যতিক্রম হয় তবে আপনি অচিরেই দেখতে পাবেন আমি কি করি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তো নির্বোধ। জান্নাত কি একটি, না কি অনেক? আর সে তো সবচেয়ে উন্নতমানের জান্নাত ফিরদাউসে রয়েছে। তিনি আরও বললেনঃ এক সকাল বা এক বিকাল আল্লাহর রাস্তায় চলা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। তীরের দু’প্রান্তের দূরত্বের সমান বা কদম পরিমাণ জান্নাতের জায়গা দুনিয়া ও তৎ মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। জান্নাতের কোন নারী যদি দুনিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত দুনিয়া আলোকিত ও খুশবুতে মোহিত হয়ে যাবে। জান্নাতি নারীর নাসীফ (ওড়না) দুনিয়ার সব কিছুর চেয়ে উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২২ | 6122 | ٦۱۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন লোকই জান্নাতে প্রবেশ করবে, স্বীয় জাহান্নামের ঠিকানাটা তাকে দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এ জন্য) যেন সে বেশি বেশি শোকর আদায় করে। আর যে কোন লোকই জাহান্নামে প্রবেশ করবে তাকে তার জান্নাতের ঠিকানাটা দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত। (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এজন্য) যেন এতে তার আফসোস হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৩ | 6123 | ٦۱۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ থেকে বেশি সৌভাগ্যশালী হবে আপনার শাফাআত দ্বারা কোন লোকটি? তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! আমি ধারণা করেছিলাম যে তোমার আগে কেউ এ সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না। কারণ হাদীসের ব্যাপারে তোমার চেয়ে অধিক আগ্রহী আর কাউকে আমি দেখিনি। কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত দ্বারা সর্বাধিক সৌভাগ্যশালী ঐ ব্যাক্তি হবে যে খালেস অন্তর থেকে বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৪ | 6124 | ٦۱۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জাহান্নাম থেকে বের হবে এবং সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে তার সম্পর্কে আমি জানি। এক ব্যাক্তি অধোবদন অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবং সে ফিরে আসবে ও বলবে, হে প্রভূ! জান্নাত তো পরিপূর্ন দেখতে পেলাম। পুনরায় আল্লাহ তাআলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ন হয়ে গিয়েছে। তাই সে ফিরে এসে বলবে, হে প্রভু! জান্নাত তো ভরপুর দেখতে পেলাম। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। কেননা জান্নাত তোমার জন্য সমতুল্য এবং তার দশ গুন। অথবা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দশ গুন। তখন লোকটি বলবে, প্রভু! তুমি কি আমার সাথে বিদ্রূপ বা হাসি-ঠাট্টা করছ? (রাবী বলেন) আমি তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এভাবে হাসতে দেখলাম যে তার দন্তরাজি প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল এবং বলা হচ্ছিল এটা জান্নাতীদের নিম্নতম মর্যাদা।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৫ | 6125 | ٦۱۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আবূ তালিবকে কিছু উপকার করতে পেরেছেন?

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৬ | 6126 | ٦۱۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৩. সিরাত হল জাহান্নামের পুল
৬১২৬। আবূল ইয়ামান ও মাহমূদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা কতিপয় লোক বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাব? উত্তরে তিনি বললেনঃ সূর্যের নিচে যখন কোন মেঘ না থাকে তখন তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তিনি বললেনঃ পূর্নিমার চাঁদ যদি মেঘের অন্তরালে না থাকে তবে তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলাকে ঐরুপ দেখতে পাবে।

আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে একত্রিত করে বলবেন, (দুনিয়াতে) তোমরা যে যে জিনিসের ইবাদত করেছিলে সে তার সাথে চলে যাও। অতএব সূর্যের ইবাদতকারী সুর্যের সাথে, চন্দ্রের ইবাদতকারী চন্দ্রের সাথে এবং মূর্তিপূজারী মূর্তির সাথে চলে যাবে। অবশিষ্ট থাকবে এ উম্মাতের লোকেরা, যাদের মাঝে মুনাফিক সম্প্রদাযের লোকও থাকবে। তারা আল্লাহ তাআলাকে যে আকৃতিতে জানত, তার ব্যতিক্রম আকৃতিতে আল্লাহ তা’আলা তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু। তখন তারা বলবে, আমরা তোমার থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আমাদের প্রভু না আসা পর্যন্ত আমরা এ স্থানেই থেকে যাব। আমাদের প্রভু যখন আমাদের কাছে আসবেন, আমরা তাকে চিনে নেব। এরপর যে আকৃতিতে তারা আল্লাহ তা’আলাকে জানত সে আকৃতিতে তিনি তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু।

তখন তারা বলবে হ্যাঁ, আপনি আমাদের প্রভু। তখন তারা আল্লাহ তা’আলার অনুসরণ করবে। এরপর জাহান্নামের পুল স্থাপন করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে, সর্ব প্রথম আমি সেই পুল অতিক্রম করব। আর সেই দিন সমস্ত রাসুলের দু’আ হবে اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ অর্থাৎ হে আল্লাহ! রক্ষা কর, রক্ষা কর। সেই পুলের মাঝে সাদান নামক (এক প্রকার তিক্ত কাটাদার গাছ) গাছের কাটার ন্যায় কাটা থাকবে। তোমরা কি সাদানের কাঁটা দেখেছ। তারা বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ।

তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ কাঁটাগুলি সা’দানে কাঁটার মতই হবে, তবে তা যে কত বড় হবে সে সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সে কাটাগুলি মানুষকে তাদের আমল অনুসারে ছিনিয়ে নেবে। তাদের মাঝে কতিপয় লোক এমন হবে যে তারা তাদের আমলের কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কতিপয় লোক এমন হবে যে তাদের আমল হবে সরিষা তুল্য নগণ্য। তবুও তারা নাজাত পাবে। এমন কি আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের বিচার কার্য সম্পাদন করবেন এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্যদাতাদের থেকে যাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার ইচ্ছা করবেন আল্লাহ তাদেরকে বের করার জন্য ফেরেশতাদেরকে আদেশ করবেন। সিজদার চিহ্ন থেকে ফেরেশতারা তাদেরকে চিনতে পারবে।

আর আল্লাহ তায়ালা বনী আদমের ঐ সিজদার স্থানগুলিকে জাহান্নামের জন্য হারাম কলে দিয়েছেন। সুতরাং ফেরেশতারা তাদেরকে এমতাবস্হায় বের করবে যে, তখন তাদের দেহ থাকবে কয়লার মত। তারপর তাদের দেহে পানি ঢেলে দেয়া হবে। যাকে বলা হয় -মাউল হায়াত- সঞ্জীবনী পানি। সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা আবর্জনায় যেরুপ উদ্ভিদ জন্মায়- পরে এগুলো যেরুপ সজীব হয় তারাও সেরুপ সজীব হয়ে যাবে। এ সময় জাহান্নামের দিকে মুখ করে এক ব্যাক্তি দাড়িয়ে থাকবে আর বলবে, হে প্রভু! জাহান্নামের হাওয়া আমাকে ঝলসে দিয়েছে, এর জ্বলন্ত অঙ্গার আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে সূতরাং তুমি আমার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দাও। এভাবে সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে।

তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে আর তুমি অন্যটির প্রার্থনা করবে? লোকটি বলবে, না। আল্লাহ, তোমার ইজ্জতের কসম! আর অন্যটি চাইব না। সুতরাং তার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এরপর সে বলবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দাও। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আমার কাছে আর অন্য কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য আদম সন্তান! তুমি কতই না গাদ্দার? সে এরূপই প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ সম্ভবত আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে তুমি অন্য আরেকটি আমার কাছে প্রার্থনা করবে।

লোকটি বলবে, না, তোমার ইজ্জতের কসম! অন্যটি আর চাইব না। তখন সে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে এই মর্মে ওয়াদা করবে যে, সে আর কিছুই চাইবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করবেন। সে যখন জান্নাতের মধ্যস্থিত নিয়ামতগুলি দেখতে পাবে, তখন আল্লাহ যতক্ষন চাইবেন ততক্ষন সে চুপ থাকবে। এরূপই সে বলতে থাকবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি কি বল নাই যে তুমি আর কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য হে আদম সন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার।

লোকটি বলবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে তোমার সৃষ্ট জীবের মাঝে সবচে হতভাগ্য কর না। এভাবে সে প্রার্থনা করতে থাকবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা হেসে ফেলবেন। আর আল্লাহ তাআলা যখন হেসে ফেলবেন, তখন তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিবেন। এরপর সে যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তাকে বলা হবে, তোমার যা ইচ্ছে হয় আমার কাছে চাও। সে (বিভিন্ন) আরয করবে, এমনকি তার আকাঙ্ক্ষা নিঃশেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এগুলি তোমার এবং এর সমপরিমানও তোমার।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ ঐ লোকটি হচ্ছে সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী। রাবী বলেন যে, এ সময় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর বর্ণনার মাঝে আবূ সাঈদ খুদরীর নিকট কোনরূপ পরিবর্তন ধরা পড়েনি। এমন কি তিনি যখন هَذَا لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ পর্যন্ত বর্ণনা করলেন, তখন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি هَذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ এটি তোমার এবং দশ গুন বলেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি مِثْلُهُ مَعَهُ স্মরণ রেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৭ | 6127 | ٦۱۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৭। ইয়াহইয়া ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউয এর কাছে পৌছব।

অন্য সনদে আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউয এর কাছে গিয়ে পৌছব। আর (ঐ সময়) তোমাদের কতিপয় লোককে নিঃসন্দেহে আমার সামনে উঠানো হবে। আবার আমার সামনে থেকে তাদেরকে পৃথক করে নেয়া হবে। তখন আমি আরয করব, প্রভু হে! এরা তো আমার উম্মাত। তখন বলা হবে, তোমার পরে এরা কি কীর্তি করেছে তাতো তুমি জানো না। আসিম আবূ ওয়াঈল থেকে তার অনুসরণ করেছে। এবং হুসায়ন হুযায়ফা সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৮ | 6128 | ٦۱۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমাদের সামনে আমার হাউয এর দূরত্ব হবে এতটুকু যতটুকু দূরত্ব জারবা ও আযরুহ নামক স্থানদ্বয়ের মাঝে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৯ | 6129 | ٦۱۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৯। আমর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল কাওসার হচ্ছে- আল খায়রুল কাসীর বা অধিক কল্যাণ, যা আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দান করেছেন। রাবী আবূ বিশর বলেনঃ আমি সাঈদকে বললাম যে, লোকেরা তো মনে করে সেটি জান্নাতের একটা ঝর্না। তখন সাঈদ বললেনঃ এটা ঐ ঝর্ণা যা জান্নাতের মাঝে রয়েছে। তাতে আছে এমন কল্যাণ যা আল্লাহ তা’আলা তাঁকে প্রদান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩০ | 6130 | ٦۱۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩০। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার হাউয (হাউযে কাওসার) এক মাসের দূরত্বের সমান (বড়) হবে। তার পানি দুধের চেয়ে শুভ্র, তার ঘ্রাণ মিশক এর চেয়ে সুগন্ধযুক্ত এবং তার পানপাত্রগুলি হবে আকাশের তারকার মত অধিক। যে ব্যাক্তি তা থেকে পান করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩১ | 6131 | ٦۱۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার হাউযের পরিমাণ হল ইয়ামানের আয়লা ও সান’আ নামক স্থানদ্বয়ের দূরত্বের সমান আর তার পানপাত্র সমূহ আকাশের তারকারাজির সংখ্যাতুল্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩২ | 6132 | ٦۱۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩২। আবূল ওয়ালীদ ও হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম, এমন সময় এক ঝর্নার কাছে এলে দেখি যে তার দুটি ধারে ফাপা মুক্তার গম্বুজ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিবরীল! এটা কি? তিনি বললেনঃ এটা ঐ কাওসার যা আপনার প্রভূ আপনাকে প্রদান করেছেন। তার মাটিতে অথবা ঘ্রাণে ছিল উৎকৃষ্ট মানের মিশক এর সুগন্ধি। হুদবা (রহঃ) সন্দেহ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৩ | 6133 | ٦۱۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমার সামনে আমার উম্মতের কতিপয় লোক হাউযের কাছে আসবে। তাদেরকে আমি চিনে নিব। আমার সামনে থেকে তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, এরা আমার উম্মত। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি জানো না তোমার পরে এরা কি সব নতুন নতুন কীর্তি করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৪ | 6134 | ٦۱۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউযের ধারে পৌছব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে সে হাউযের পানি পান করবো। আর যে পান করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার এবং তাদের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেওয়া হবে।

বারী আবূ হাযিম বলেনঃ নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশ আমার কাছ থেকে হাদীস শ্রবণ করার পর বললেনঃ তুমিও কি সাহল থেকে এরূপ শুনেছ? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি তার কাছ থেকে এতটুকু অধিক শুনেছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তখন বলব যে এরা তো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি তো জানো না তোমার পরে এরা কি সব নতুন নতুন কীর্তি করেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তখন আমি বলব, আমার পরে যারা দ্বীনের মাঝে পরিবর্তন এনেছে তারা আল্লাহর রহমত থেকে দুরে থাকুক। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, سُحْقًا অর্থ দুরুত্ব, سَحِيقٌ অর্থ দূর, سحقة واسحقة তাকে বের করে দিয়েছে।

আহমাদ ইবনু শাবীব ইবনু সাঈদ হাবাতী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাত থেকে একদল লোক কিয়ামতের দিন আমার সামনে (হাউযে কাওসারে) উপস্থিত হবে। এরপর তাদেরকে হাউয থেকে পৃথক করে দেওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা আমার উম্মাত। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমার পরে এরা ধর্মে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে কি সব কীর্তি করেছে এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই তোমার জানা নেই। নিশ্চয়ই এরা দ্বীন থেকে পিছনের দিকে ফিরে গিয়েছিল। শুআইব (রহঃ) যুহরী সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে فيحلون বর্ণিত। উকায়ল (রহঃ) فيحاون বলেছেনঃ যুবায়দী আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৫ | 6135 | ٦۱۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৫। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনুল মূসাইয়্যাব (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের থেকে বর্ননা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের থেকে কতিপয় লোক আমার সামনে হাউযে কাওসারে উপস্থিত হবে। তারপর তাদেরকে সেখান থেকে পৃথক করে নেয়া হবে। তখন আমি বলব, হে রব! এরা আমার উম্মাত। তিনি বলবেন, তোমার পরে এরা (ধর্মে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে) কি কীর্তিকলাপ করেছে সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই তোমার জানা নেই। নিঃসন্দেহে এরা দ্বীন থেকে পিছনের দিকে ফিরে গিয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৬ | 6136 | ٦۱۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৬। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক সময় আমি (হাশরের ময়দানে) দাঁড়িয়ে থাকব। হঠাৎ দেখতে পাব একটি দল এবং আমি যখন তাদেরকে চিনে ফেলব, একটি লোক বেরিয়ে আসবে। তখন আমার ও তাদের মাঝ থেকে এবং সে বলবে, আপনি আসুন। আমি বলব, কোথায়? সে বলবে, আল্লাহর কসম জাহান্নামের দিকে। আমি বলব, তাদের অবস্থা কি? সে বলবে নিশ্চয় এরা আপনার ইন্তেকালের পর দ্বীন থেকে পশ্চাদ দিকে সরে গিয়েছিল। এরপর হঠাৎ আরেকটি দল দেখতে পাব। আমি তাদেরকে চিনে ফেলব। তখন আমার ও তাদের মাঝ থেকে একটি লোক বেরিয়ে আসবে। সে বলবে, আসুন! আমি বলবঃ কোথায়? সে বলবে আল্লাহর কসম, জাহান্নামের দিকে। আমি বলব, তাদের অবস্থা কি? সে বলবে, নিশ্চয়ই এরা আপনার ইন্তেকালের পর দ্বীন থেকে পশ্চাদপানে ফিরে গিয়েছিল। আমি মনে করি এরা রাখাল ছাড়া উটের মতো কম পরিমাণে নাজাত পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৭ | 6137 | ٦۱۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৭। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগান সমূহ হতে একটি বাগান। আর আমার মিম্বর আমার হাউজের ওপরে অবস্থিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৮ | 6138 | ٦۱۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৮। আবদান (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আমি তোমাদের আগে হাউযের ধারে পৌছব।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৯ | 6139 | ٦۱۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৯। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বের হলেন এবং ওহুদ যুদ্ধে শহীদদের প্রতি সালাত (নামায/নামাজ) জানাযার অনুরূপ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি মিম্বরে ফিরে এসে বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য হাউযের ধারে আগে পৌছব। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের (কার্যাবলীর) সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! আমি এ মুহূর্তে আমার হাউয দেখতে পাচ্ছি। নিশ্চয়ই আমাকে বিশ্ব ভাণ্ডারের কুঞ্জি প্রদান করা হয়েছে। অথবা (বলেছেনঃ) বিশ্বের কুঞ্জি। আল্লাহর কসম! আমার ইন্তেকালের পর তোমরা শিরক করবে এ ভয় আমি করি না। তবে তোমাদের সম্পর্কে আমার ভয় হয় যে, দুনিয়া অর্জনে তোমরা পরস্পরে প্রতিযোগিতা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪০ | 6140 | ٦۱٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৪০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাউযে কাওসারের আলোচলা করতে শুনেছি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেনঃ হাউযে কাওসার মদিনা এবং সানআ নামক স্থানের মধ্যকার দুরত্বের মতো। ইবনু আবূ আদী (রহঃ) … হারিসা (রাঃ) (কিঞ্চিত) অধিক বর্ণনা করেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ‘হাউযে কাওসারের দূরত্ব মদিনা ও সানআর দূরত্ব তূল্য’ কথাটুকু শুনেছেন। তখন মুসতাওরিদ তাকে বললেন যে, আল আওয়ানী (রহঃ) বলেছেনঃ তা কি তুমি শুননি? তিনি বললেন, না। মুসতাওরিদ বললেনঃ এর পাত্রগুলো তারকারাজির ন্যায় পরিলক্ষিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪১ | 6141 | ٦۱٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৪১। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমি হাউযের ধারে থাকব। তোমাদের মাঝ থেকে যারা আমার কাছে আসবে আমি তাদেরকে দেখতে পাব। কিছু লোককে আমার সামনে থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা আমার লোক, এরা আমার উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি কি জানো তোমার পরে এরা কি সব করেছে? আল্লাহর কসম! এরা দ্বীন থেকে সর্বদাই পশ্চাদমুখী হয়েছিল। তখন ইবনু আবূ মুলায়কা বললেনঃ হে আল্লাহ, দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা থেকে অথরা দ্বীনের ব্যাপারে ফিতনায় পতিত হওয়া থেকে আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, ‏أَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُونَ অর্থ হল تَرْجِعُونَ عَلَى الْعَقِبِ‏ তোমরা পিছনের দিকে ফিরে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪২ | 6142 | ٦۱٤۲

পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৬১৪২। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদউল মালিক (রহঃ) … আবদূলাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বিশ্বাসী ও বিশ্বস্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই আপন আপন মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত শুক্র বিন্দুরূপে জমা থাক। তারপর ঐরুপ চল্লিশ দিন রক্তপিণ্ড এবং এরপর ঐরুপ চল্লিশ দিন গোশত পিন্ডাকারে থাকে। তারপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরন করেন এবং তাকে বিযিক, মউত, দূর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য-এ চারটি ব্যাপার লিপিবদ্ধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে যে কেউ অথবা বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি জাহান্নামীদের আমল করতে থাকে। এমন কি তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে তখন কেবলমাত্র একহাত বা এক গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর তখন সে জান্নাতীদের আমল করা শুরু করে দেয়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যাক্তি বেহেশতীদের আমল করতে থাকে। এমন কি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে কেবলমাত্র এক গজ বা দু-গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর অমনি সে জাহান্নামীদের আমল শুরু করে দেয়। ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন যে, আদম তার বর্ননায় শুধুমাত্র ذِرَاعٌ‏ (এক গজ) বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৩ | 6143 | ٦۱٤۳

পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৬১৪৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা রেহেমে (মাতৃগর্ভে) একজন ফেরেশতা নিয়োজিত করেছেন। তিনি বলেনঃ হে প্রভু! এটি বীর্য। হে প্রভু! এটি রক্তপিণ্ড। হে প্রভু! এটি গোশতপিণ্ড। আল্লাহ তা’আলা যখন তার সৃষ্টি পরিপূর্ণ করতে চান, তখন ফেরেশতা বলে, হে প্রভু। এটি নর হবে, না নারী? এটি হতভাগ্য হবে, না ভাগ্যবান? তার জীবিকা কি পরিমাণ হবে? তার আয়ুষ্কাল কি হবে? তখন (আল্লাহ তা’আলা যা নির্দেশ দেন) তার মাতৃগর্তে থাকা অবস্হায় ঐরূপই লিপিবদ্ধ করা হয।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৪ | 6144 | ٦۱٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৫. আল্লাহ তা’আলার ইলম এর উপর (মুতাবিক) কলম শুকিয়ে গিয়েছে। আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ জানেন বিধায় তাকে ভ্রষ্ট করে দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেনঃ যার সম্মুখীন তুমি হবে (তোমার যা ঘটবে) তা লিপিবদ্ধ করার পর কলম শুকিয়ে গেছে। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, لَهَا سَابِقُونَ – তাদের উপর নেকবখ্‌তি প্রবল হয়ে গেছে।
৬১৪৪। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামীদের থেকে জান্নাতীদেরকে চেনা যাবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সে বলল, তাহলে আমলকারীরা আমল করবে কেন? তিনি বললেনঃ প্রত্যেক ব্যাক্তি ঐ আমলই করে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অথবা যা তার জন্য সহজ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৫ | 6145 | ٦۱٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (একদা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুশরিকদের (মৃত নাবালিগ) সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেনঃ তারা (জীবিত থাকলে) কি আমল করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৬ | 6146 | ٦۱٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুশরিকদের (মৃত নাবালিগ) সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৭ | 6147 | ٦۱٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করে, তবে স্বভাবধর্মের (ইসলাম) ওপরই জন্মগ্রহন করে। কিন্তু তার পিতামাতা (পরবর্তীতে) তাকে ইয়াহুদি বা নাসারা বানিয়ে দেয়। যেমন কোন চতুস্পদ প্রাণী যখন বাচ্চা প্রদান করে তখন কি কানকাটা (ত্রুটিযুক্ত) দেখতে পাও? যতক্ষন তোমরা তার কানকেটে ক্রটিযুক্ত করে দাও। তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! নাবালিগ অবস্থায় যে মৃত্যুবরণ করে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৮ | 6148 | ٦۱٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন নারী নিজে বিয়ে করার জন্য যেন তার বোনের (অপর নারীর) তালাক না চায়। কেননা, তার জন্য (তাকদীরে) যা নির্ধারিত আছে তাই সে পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৯ | 6149 | ٦۱٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৪৯। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ছিলাম। তার সঙ্গে সা’দ ইবনু উবাদা উবাই ইবনু কাব ও মু’আয ইবনু জাবালও ছিলেন। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক কন্যা কর্তৃক প্রেরিত একজন লোক এই খবর নিয়ে এলো যে, তার পুত্র সন্তান মরণাপন্ন। তখন তিনি এই বলে লোকটিকে পাঠিয়ে দিলেন যে, আল্লাহর জন্যই- যা তিনি গ্রহণ করেন, আল্লাহর জন্যই- যা তিনি দান করেন। প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত একটি সময় রয়েছে। সুতরাং সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং এটাকে যেন সে (সন্তান হারানকে) পূণ্য মনে করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫০ | 6150 | ٦۱۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫০। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি (একদা) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় আনসার গোত্রের একটি লোক এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা তো বাঁদীদের সাথে মিলিত হই অথচ মালকে মুহাব্বাত করি। সুতরাং ’আযল’ করা সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এ কাজ কর? তোমাদের জন্য এটা করা আর না করা উভয়ই সমান। কেননা, যে কোন জীবন যা পয়দা হওয়াকে আল্লাহ তাআলা লিখে দিয়েছেন তা পয়দা হবেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫১ | 6151 | ٦۱۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫১। মূসা ইবনু মাসউদ (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) আমাদের মাঝে এমন একটি ভাষণ প্রদান করলেন যাতে কিয়ামত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে এমন কোন কথাই বাদ দেননি। এগুলি স্মরণ রাখা যার সৌভাগ্য হয়েছে সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গিয়েছে। আমি ভুলে যাওয়া কোন কিছু যখন দেখতে পাই তখন তা চিনে নিতে পারি এভাবে যেমন, কোন ব্যাক্তি কাউকে হারিয়ে ফেললে আবার যখন তাকে দেখতে পায় তখন চিনতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫২ | 6152 | ٦۱۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫২। আবদান (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তার সঙ্গে ছিল একটি লাঠি। যা দিয়ে তিনি মাটি খুঁড়ছিলেন। তিনি তখন বললেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন ব্যাক্তি নেই যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তা হলে (এর উপর) নির্ভর করব না? তিনি বললেনঃ না, বরং আমল কর। কেননা, প্রত্যেকের জন্য আমল সহজ (যার জন্য তাকে সৃষ্টি) করা হয়েছে। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৩ | 6153 | ٦۱۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৩। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খায়বারের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীগণের মাঝ থেকে ইসলামের দাবি করছিল এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বললেন যে, এই লোকটি জাহান্নামী। যখন যুদ্ধ শুরু হল লোকটি প্রবল বেগে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল। এতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হল। তবু সে অটল রইল। সাহাবীগণের মাঝ থেকে একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামী হবে বলে আপনি যে ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেন সে তো প্রবল বেগে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করেছে এবং তাতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। তিনি বললেনঃ সাবধান, সে জাহান্নামী! এতে কতিপয় মুসলমানের মনে সন্দেহের ভাব হল। আর লোকটি ঐ অবস্থায়ই ছিল। হঠাৎ করে সে যখমের যন্ত্রণা অনুভব করতে লাগল-আর অমনই সে স্বীয় হাতটি তীরের থলের দিকে বাড়িয়ে দিল এবং একটি তীর বের করে আপন বক্ষে বিধিয়ে দিল। এতদৃষ্টে কয়েকজন মুসলমান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়িয়ে যেয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা আপনার কথাকে সত্যে পরিনত করে দেখালেন। অমুক ব্যাক্তি তো আত্নহত্যা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে বিলাল! উঠে দাঁড়াও এবং এই মর্মে ঘোষণা করে দাও যে, জান্নাতে কেবলমাত্র মুমিনগণই প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ তা’আলা গুনাহগার বান্দাকে দিয়েও এই দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৪ | 6154 | ٦۱۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে থেকে যে সমস্ত মুসলমান যুদ্ধ করেছেন তাদের মাঝে একজন ছিল তীব্র আক্রমণকারী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে নযর করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামীকে দেখতে ইচ্ছা করে সে যেন এই লোকটির দিকে নযর করে। উপস্থিত লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি সেই লোকটির অনুসরণ করল। আর সে তখন প্রচণ্ডভাবে মুশরিকদের সঙ্গে মুকাবিলা করছিল। এমন কি সে (এক পর্যায়ে) যখম হয়ে তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরণ করতে চাইল। সে তার তরবারীর তীক্ষ্ণ দিকটি তার বুকের উপর দাবিয়ে দিল। এমন কি দু’কাঁধের মাঝ দিয়ে তরবারী বক্ষ ভেদ করল। (এতদৃষ্টে) লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়ে এসে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি সত্যই আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হল? লোকটি বলল, আপনি অমুক ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেনঃ “যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামী লোক দেখতে চায় সে যেন এ লোকটিকে দেখে নেয়।” অথচ লোকটি অন্যান্য মুসলমানের তুলনায় অধিক রূপে আক্রমনকারী ছিল। সুতরাং আমার ধারণা ছিল এ লোকটির মৃত্যু এহেন অবস্থায় হবে না। যখন সে আঘাত প্রাপ্ত হল, তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল এবং আত্নহত্যা করে বসল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথা শুনে বললেনঃ নিশ্চয়ই কোন বান্দা জাহান্নামীদের আমল করেন মূলত সে জান্নাতী। আর কোন বান্দা জান্নাতী লোকের আমল করেন মুলত সে জাহান্নামী। নিশ্চয়ই আমলের ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার পারিণামের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৫ | 6155 | ٦۱۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৫। আবূ নুআঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন। এই মর্মে তিনি বলেন, মানত কোন জিনিসকে দূর করতে পারে না। এ দ্বারা শুধুমাত্র কৃপণের মাল খরচ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৬ | 6156 | ٦۱۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৬। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মানত মানব সন্তানকে এমন কিছু এনে দিতে পারে না যা তাকদীরে নির্ধারণ নেই অথচ সে যে মানতটি করে তাও আমি তাকদীরে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (মাল) বের করে নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৭ | 6157 | ٦۱۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৪০. ‘লা হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ প্রসঙ্গে
৬১৫৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা যখনই কোন উচ্চস্থানে আরোহণ করতাম, কোন উঁচুতে থাকতাম এবং কোন উপত্যকা অতিক্রম করতাম তখনই উচ্চঃস্বরে তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলতাম। রাবী বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকটবর্তী হলেন এবং বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের উপর রহম কর। তোমরা কোন বধির বা কোন অনুপস্হিত সত্তাকে ডাকছ না- তোমরা তো ডাকছ শ্রবণকারী ও দর্শনকারী এক সত্তাকে। এরপর তিনি বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! আমি কি তোমাকে এমন একটি কালিমা শিক্ষা দিব না, যা কিনা জান্নাতের ভাণ্ডার সমূহের অন্যতম? তা হচ্ছেঃ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ (লা-হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৮ | 6158 | ٦۱۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৪১. নিষ্পাপ সে-ই আল্লাহ যাকে রক্ষা করেন। عَاصِمٌ অর্থ প্রতিরোধকারী। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, سُدًا عَنِ الْحَقِّ গোমরাহীতে বিমত্ত হওয়া, دَسَّاهَا তাকে গোমরাহ করেছে।
৬১৫৮। আবদান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে কোন লোককেই খলীফা বানানো হয় তার জন্য দুটি গুপ্তচর থাকে। একটা তো তাকে সৎকর্মের আদেশ করে এবং এর প্রতি তাকে উৎসাহিত করে। আরেকটা তাকে মন্দ কর্মের আদেশ করে এবং এর প্রতি তাকে প্ররোচিত করে। আর নিস্পাপ সেই ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ তা’আলা রক্ষা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৯ | 6159 | ٦۱۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৪২. আল্লাহর বাণীঃ যে জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি তার সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তার অধিবাসীবৃন্দ ফিরে আসবে না (২১ঃ ৯৫)। আল্লাহর বাণীঃ যারা ঈমান এনেছে তারা ছাড়া তোমার সম্প্রদায়ের অন্য কেউ কখনও ঈমান আনবে না (১১ঃ ৩৬)। আল্লাহর বাণীঃ তারা জন্ম দিতে থাকবে কেবল দুষ্কৃতিকারী ও কাফের (৭১ঃ ২৭)। মানসুর ইবন নো’মান … ইবন আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাবশী ভাষায় حرم অর্থ জরুরী হওয়া
৬১৫৯। মাহমুদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ছোট গুনাহ সম্পর্কে যা বলেছেন তার চেয়ে যথাযথ উপমা আমি দেখি না। (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) আল্লাহ আদম সন্তানের উপর যিনার কোন না কোন হিসসা লিখে দিয়েছেন; তা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চোখের যিনা হল (নিষিদ্ধদের প্রতি) নযর করা এবং জিহ্বার যিনা হল (যিনা সম্পর্কে) বলা। মন তার আকাঙ্ক্ষা ও কামনা করে, লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। শাবাবা (রহঃ)ও … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬০ | 6160 | ٦۱٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৩. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আমি যে দৃশ্য তোমাকে দেখাচ্ছি তা কেবল মানুষের পরিক্ষার জন্য (১৭ঃ ৬০)
৬১৬০। হুমাইদী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلاَّ فِتْنَةً لِلنَّاسِ (আয়াতের ব্যাখ্যায়) তিনি বলেনঃ তা হচ্ছে চোখের দেখা। যে রজনীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল, সে রজনীতে তাকে যা দেখানো হয়েছিল। তিনি বলেন, কুরআন মজীদে উল্লিখিত وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ দ্বারা যাককুম (যাক্কুম) বৃক্ষকে বোঝানো হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬১ | 6161 | ٦۱٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৪. আদাম (রাঃ) ও মূসা (রাঃ) আল্লাহ তা’আলার সামনে কথা কাটাকাটি করেন
৬১৬১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আদম ও মূসা (আলাইহিমা সালাম) (পরস্পরে) কথা কাটাকাটি করেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) বলেনঃ হে আদম, আপনি তো আমাদের পিতা। আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত করেছেন এবং আমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করেছেন। আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) কে বললেনঃ হে মূসা! আপনাকে তো আল্লাহ তা’আলা স্বীয় কালামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন এবং আপনার জন্য স্বীয় হাত দ্বারা লিখেছেন। অতএব আপনি কি আমাকে এমন একটি ব্যাপার নিয়ে তিরস্কার করছেন? যা আমার সৃষ্টির চল্লিশ বছর পূর্বেই আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। তখন আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর এই বিতর্কে জয়ী হলেন। উক্ত কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বলেছেন। সুফিয়ানও … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬২ | 6162 | ٦۱٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৫. আল্লাহ তা’আলা যা দান করেন তা রোধ করার কেউ নেই
৬১৬২। মুহাম্মাদ ইবনু সিনান (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা মুআবিয়া (রাঃ) মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর নিকট এই মর্মে চিঠি লিখলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর যা পাঠ করতেন এ সম্পর্কে তুমি যা শুনেছ আমার কাছে লিখে পাঠাও। তখন মুগীরা (রাঃ) আমাকে তা লিখে দেওয়ার দায়িত্ব দিলেন। তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ)-এর পরে বলতে শুনেছি اَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি অদ্বিতীয়, অংশীদারবিহীন। হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা রদকারী কেউ নেই। আর তুমি যা রদ কর তার কোন দানকারীও নেই। তুমি ব্যতীত প্রচেষ্টাকারীর প্রচেষ্টাও কোন ফল বয়ে আনবে না।

ইবনু জুরায়জ আবদা থেকে বর্ণনা করেন যে, ওয়াররাদ তাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। এরপর আমি মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট গিয়েছি। তখন আমি তাঁকে শুনেছি তিনি মানুষকে এ দোয়া পড়তে হুকুম দিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৩ | 6163 | ٦۱٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৬. যে ব্যক্তি হতভাগ্যের গহীন গর্ত ও মন্দ তাকদীর থেকে আল্লাহ তা’আলার কাছে আশ্রয় চায়। এবং (মহান আল্লাহর) বাণীঃ বল, আমি শরণ লইতেছি উষার স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে।
৬১৬৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা ভয়াবহ বিপদ, হতভাগ্যের অতল গহবর, মন্দ তাকদীর এবং শত্রুর আনন্দ প্রকাশ থেকে আল্লাহ তা’আলার কাছে আশ্রয় প্রর্থনা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৪ | 6164 | ٦۱٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৭. (আল্লাহ তা’আলা) মানুষ ও তার অন্তরের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে যান
৬১৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবুল হাসান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এইরূপ শপথ করতেনঃ শপথ অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী (আল্লাহর)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৫ | 6165 | ٦۱٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৭. (আল্লাহ তা’আলা) মানুষ ও তার অন্তরের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে যান
৬১৬৫। আলী ইবনু হাফস ও বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সইয়্যাদকে একদা বললেনঃ আমি (একটি কথা আমার অন্তকরণে) তোমার জন্য গোপন রেখেছি। সে বললো, তা হচ্ছে (কল্পনার) ধুম্রজাল মাত্র। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ চুপ কর, তুমি তো তোমার তাকদীরকে কখনও অতিক্রম করতে পারবে না। এতদশ্রবণে উমর (রাঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন আমি তার মুণ্ডপাত করে দেই। তিনি বললেনঃ রাখ একে, এ যদি তাই হয় তবে তুমি তার ওপর (এ কাজে) সক্ষম হবে না। আর যদি তা না হয় তাহলে তাকে হত্যা করার মাঝে তোমার জন্য কোন কল্যাণ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৬ | 6166 | ٦۱٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৮. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) বল, আমাদের জন্য আল্লাহ যা নির্দিষ্ট করেছেন তা ছাড়া আমাদের কিছুই হবে না। كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, بِفَاتِنِينَ যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে। قَدَّرَ فَهَدَى বদবখ্‌তি এবং নেকবখ্‌তি নির্দিষ্ট করেছেন। জন্তুকে চারণভূমি পর্যন্ত পৌঁছানো।
৬১৬৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেনঃ এটা হচ্ছে আল্লাহর এক আযাব। আল্লাহ তা’আলা যাকে ইচ্ছা তার ওপরই প্রেরণ করেন। আল্লাহ তাআলা এটা মুসলমানের জন্য রহমাতে পরিণত করেছেন। প্লেগাক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্যধারণ করে এ বিশ্বাস নিয়ে সেখানেই অবস্থান করে, তা থেকে বের না হয়। আল্লাহ তাআলা তার জন্য যা ভাগ্যে লিখেছেন তা ব্যতীত কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, তাহলে সে শহীদের সাওয়াব লাভ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৭ | 6167 | ٦۱٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৯. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ আমাদের পথ না দেখালে আমরা কখনও পথ পেতাম না (৭ঃ ৪৩) (আরও ইরশাদ হল) আল্লাহ আমাকে পথ প্রদর্শন করলে আমি তো অবশ্যই মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম (৪৯ঃ ৫৭)
৬১৬৭। আবূ নু’মান (রহঃ) … বারআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি খন্দকের যুদ্ধের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখেছি, তিনি আমাদের সঙ্গে মাটি বহন করেছেন এবং বলছেনঃ আল্লাহর কসম! তিনি যদি আমাদেরকে হেদায়েত না করতেন তবে আমরা হেদায়েত পেতাম না। সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম না আর সালাত (নামায/নামাজ)ও আদায় করতাম না। সুতরাং (প্রভু হে) আমাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করুন আর শত্রুর মুকাবিলায় আমাদেরকে সুদৃঢ় রাখুন। মুশরিকরা আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। তারাই আমাদের উপর ফিতনা (যুদ্ধ) চাপিয়ে দিতে চেয়েছে কিন্তু আমরা তা চাইনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৮ | 6168 | ٦۱٦۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ বকর (রাঃ) কখনও কসম ভঙ্গ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহ তা’আলা কসমের কাফফারা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলতেন আমি যেকোন ব্যাপারে কসম করি। এরপর যদি এর চেয়ে উত্তমটি দেখতে পাই তবে উত্তমটিই করি এবং আমার কসম ভজের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৯ | 6169 | ٦۱٦۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৯। আবূ নুমান মুহাম্মাদ ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখতে পাও তবে স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে তার চেযে উত্তমটি অবলম্বন কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭০ | 6170 | ٦۱۷۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭০। আবূ নুমান (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) এর পিতা আবূ মূসা আশআরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা আশআরী সম্প্রদায়ের একদল লোকের সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম একটি বাহন সংগ্রহ করার জন্য। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর আমার কাছে এমন কোন জন্তু নেই যার উপর আরোহণ করা যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর আল্লাহ যতক্ষন চাইলেন, ততক্ষন আমরা সেখানে অবস্থান করলাম। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অতীব সুন্দর তিনটি উষ্ট্রী আনা হল। তিনি সেগুলোর উপর আমাদেরকে আরোহন করালেন। এরপর আমরা যখন চলতে লাগলাম তখন বললাম অথবা আমাদের মাঝে কেউ বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাদেরকে বরকত প্রদান করবেন না। কেননা, আমরা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাইতে এলাম তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করলেন। এরপর আমাদেরকে আরোহণ করালেন। চল আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাই এবং তাঁকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দেই। এরপর আমরা তার কাছে এলাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা আরোহণ করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছা মূতাবিক কোন কসম করি আর তা ব্যতীত অন্যটির মাঝে যদি মঙ্গল দেখি তখন কসমের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই। আর যেটা মঙ্গলকর সেটাই করে নেই এবং স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭১ | 6171 | ٦۱۷۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষ আগমনকারী আর কিয়ামতের দিন হব অগ্রগামী। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে কেউ আপন পরিজনের ব্যাপারে শপথকারী হলে আল্লাহর নিকট সে গুনাহগার হবে ঐ ব্যাক্তির তুলনায়, যে কাফফারা আদায় করে দেয় যা আল্লাহ তায়ালা অপরিহার্য করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭২ | 6172 | ٦۱۷۲

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭২। ইসহাক ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আপন পরিবারের ব্যাপারে কসম করে এর উপর অটল থাকে সে সবচেয়ে বড় গোনাহগার, যা কাফফারা দূর করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৩ | 6173 | ٦۱۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫০. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আল্লাহর কসম
৬১৭৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা একটি বাহিনী প্রেরণ করলেন আর তাদের আমীর নিযুক্ত করলেন উসামা ইবনু যায়িদকে। কতিপয় লোক তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচলা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচনামুখর হচ্ছ। ইতিপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বের ব্যাপারেও তোমরা সমালোচলা করেছিলে। আল্লাহর কসম! সে অবশ্যই নেতৃত্বের যোগ্য ছিল। আর মানুষের মাঝে সে আমার নিকট প্রিয়তম ব্যাক্তি ছিল। তারপরে নিশ্চয়ই এ উসামা অন্য সকল মামুষের চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৪ | 6174 | ٦۱۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৪। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসম ছিল مُقَلِّبِ الْقُلُوبِ বলা। অর্থাৎ অন্তরের পরিবর্তনকারীর (আল্লাহর) কসম।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৫ | 6175 | ٦۱۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৫। মূসা (রহঃ) … জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কায়সারের (রোম সম্রাট) পতনের পরে আর কোন কায়সার হবে না। কিসরা (পারস্যের বাদশাহ) এর যখন পতন হল তখনও তিনি বললেনঃ এরপর আর কোন কিসরা হবে না। কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান! অবশ্যই এদের দু’জনের অগাধ সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় তোমরা খরচ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৬ | 6176 | ٦۱۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিসরা যখন ধংস হবে তারপরে আর কোন কিসরা হবে না। আর কায়সার যখন ধ্বংস হবে তখন আর কোন কায়সার হবে না। কসম ঐ সত্তার। যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! এদের ধন-সম্পদ অবশ্যই তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৭ | 6177 | ٦۱۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৭। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মাদী আল্লাহর কসম! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে-এবং অধিক ক্রন্দন করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৮ | 6178 | ٦۱۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর হাত ধরেছিলেন। উমর (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার প্রাণ ব্যতীত আপনি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এমন কি তোমার কাছে তোমার প্রাণের চেয়েও আমাকে অধিক প্রিয় হতে হবে। তখন উমর (রাঃ) তাকে বললেনঃ এখন আল্লাহর কসম! আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! এখন (তোমার ঈমান ণূর্ণ হয়েছে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৯ | 6179 | ٦۱۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেছেন, একদা দু’ব্যাক্তি ঝগড়া করতে করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো। তন্মধ্যে একজন বলল, আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে আমাদের মাঝে মীমাংসা করে দিন। দু’জনের মাঝে (অপেক্ষাকৃত) বুদ্ধিমান দ্বিতীয় লোকটি বলল, হ্যাঁ। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে মীমাংসা করে দিন। আর আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। লোকটি বললঃ আমার পুত্র এ লোকটির নিকট চাকর হিসাবে ছিল। (মালিক বলেন, عَسِيف শব্দের অর্থ চাকর) আমার পূত্র এর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যাভিচার করেছে। লোকেরা বলেছে যে, আমার পুত্রের (শাস্তি) রজম হবে। সুতরাং আমি একশ’ বকরী ও একটি বাঁদী নিয়ে তার ফিদইয়া প্রাদান করেছি।

এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা আমাকে জানালেন যে, আমার পুত্রের একাশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের দেশান্তর হবে। আর রজম হবে এর স্ত্রীর। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রান! আমি তোমাদের উভয়ের মাঝে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব ভিত্তিক মীমাংসা করে দেব। তোমার বকরী ও বাদী তোমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি তাঁর পুত্রকে একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করলেন। আর উনায়স আসলামীকে হুকুম করা হল অপর লোকটির স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য। সে যদি (ব্যাভিচার) স্বীকার করে তরে তাকে রজম করতে। সে তা স্বীকার করল, সুতরাং তাকে রজম (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮০ | 6180 | ٦۱۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আসলাম, গিফার, মুযায়না এবং জুহায়না বংশ যদি তামীম, আমির ইবনু সাসা’আ, গাতফান ও আসা’দ বংশ থেকে উত্তম হয় তা হলে তোমাদের কেমন মনে হয়? তারা তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাহাবাগন বললেনঃ হ্যাঁ, তখন তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান। নিশ্চয়ই তারা এদের চেয়ে উত্তম!

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮১ | 6181 | ٦۱۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে রাজস্ব আদায়কারী নিযুক্ত করে পাঠালেন। সে কাজ শেষ করে তাঁর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা আপনার জন্য আর এ জিনিসটি আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মা-বাবার ঘরে বসে রইলে না কেন? তা হলে তোমার জন্য হাদিয়া পাঠাত কি না তা দেখতে পেতে? এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার ওয়াক্তের সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাশাহুদ পাঠ করলেন ও আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রসংসা করলেন। এরপর বললেনঃ রাজস্ব আদায়কারীর অবস্থা কি হল? আমি তাকে নিযুক্ত করে পাঠালাম আর সে আমাদের কাছে এসে বলছে, এটা সরকারী রাজস্ব আর এ জিনিস আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। সে তার বাবা-মার ঘরে বসে রইল না কেন? তা হলে দেখত তার জন্য হাদিয়া দেওয়া হয় কি না?

ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ, তোমাদের মাঝে কেউ যদি কোন বস্তুতে সামান্যতম খিয়ানত করে, তা হলে কিয়ামতের দিন সে ঐ বস্তুটিকে তার কাঁধে বহন করা অবস্থায় আসবে। সে। বস্তুটি যদি উট হয় তা হলে উট আওয়াজ করতে থাকবে। যদি গরু হয় তবে হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে। আর যদি বকরী হয় তরে বকরী আওয়াজ করতে থাকবে। আমি পৌছিয়ে দিলাম। রাবী আবু হুমায়দ বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হস্ত মুবারক এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমরা তার দু’কানের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। আবু হুমায়দ বলেনঃ এ কথাগুলো যায়িদ ইবনু সাবিতও আমার সঙ্গে শুনেছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে। সুতরাং তোমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮২ | 6182 | ٦۱۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮২। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়ারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূল কাসিম বলেছেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদ এর প্রাণ! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তা হলে তোমরা অবশ্যই অধিক ক্রন্দন করতে আর অল্প হাসতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৩ | 6183 | ٦۱۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৩। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তখন তিনি কা’বা গৃহের ছায়ায় বসে বলছিলেনঃ কা’বা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। কাবা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। আমি বললাম, আমার অবস্থা কি? আমার মাঝে কি কিছু (ক্রটি) পরিলক্ষিত হয়েছে? তিনি বলছিলেন, এমন অবস্থায় আমি তার কাছে বসে পড়লাম। আমি তাকে থামাতে পারলাম না। যতক্ষনের জন্য আল্লাহ চাইলেন আমি চিন্তায় আচ্ছন্ন রইলাম। এরপর আমি আরয করলাম, আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান। ঐ সমস্ত লোক কারা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এরা হল ঐ সকল লোক যারা অধিক সম্পদের অধিকারী। তবে হ্যাঁ, ঐ সমস্ত লোক স্বতন্ত্র যারা এরূপ, এরূপ ও এরূপ (ক্ষেত্রে খরচ করে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৪ | 6184 | ٦۱۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আমি আজ রাতে নব্বইজন স্ত্রীর সাথে মিলিত হব, যারা প্রত্যেকেই একটি করে সন্তান জন্ম দেবে, যারা হবে অশ্বারোহী; জিহাদ করবে আল্লাহর রাস্তায়। তাঁর সঙ্গী বলল, ইনশাআল্লাহ (বলুন)। তিনি ইনশাআল্লাহ বললেন না। অতঃপর তিনি সকল স্ত্রীর সলেই মিলিত হলেন। কিন্তু কেবলমাত্র একজন স্ত্রীই গর্ভবতী হলেন, তাও এক অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ প্রাণ। তিনি যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন, তাহলে সকলেই আরোহী হয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৫ | 6185 | ٦۱۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৫। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একদা রেশমের এক টুকরা বস্ত্র হাদিয়া পাঠানো হল। লোকেরা তার সৌন্দর্য ও মসৃনতা দেখে অবাক হয়ে পর্যায়ক্রমে হাতে নিয়ে দেখছিল। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এটি দেখে অবাক হচ্ছ? তাঁরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম। যার হাতের মুঠোয় আমার প্রান। নিশ্চয়ই জান্নাতে সা’দের রুমাল এর চেয়েও উত্তম হবে। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ তবে শুবা এবং ইসরাঈল আবূ ইসহাক থেকে যে বর্ণনা করেছেন তাতে وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ কথাটি বলেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৬ | 6186 | ٦۱۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হিন্দা বিনত উতবা ইবনু রাবীআ (একদা) বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ এমন এক সময় ছিল যখন ভূ-পৃষ্টে যারা বাস করছে তাদের মাঝে আপনার অনুসারী যারা তারা লাঞ্ছিত হোক এটা আমি খুবই পছন্দ করতাম। (এখানে বর্ণনার মাঝে তিনি أَخْبَاءٍ বলেছেনঃ, না خِبَاءٍ বলেছেনঃ এ সম্পর্কে রাবী ইয়াহইয়ার সন্দেহ রয়েছে।) কিন্তু আজ আমার কাছে এর চেয়ে অধিক প্রিয় কিছুই নেই যে, তাবুতে বসবাসকারীদের মাঝে আপনার অনুসারীরা সম্মানিত হোক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ। এ মর্যাদা আরও বর্ধিত হোক। হিন্দা বললোঃ আবূ সুফিয়ান নিশ্চয়ই একজন কৃপন লোক। তার মাল থেকে (তার পরিজনকে) কিছু খাওয়ালে এতে কি আমার কোন অন্যায় হবে? তিনি বললেনঃ না। তবে তা (শরীয়তসম্মত) পন্থায় হতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৭ | 6187 | ٦۱۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৭। আহমাদ ইবনু উসমান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় ইয়ামানী চামড়ার কোন এক তাবুতে তার পৃষ্ট মুবারক হেলান দিয়েছিলেন। তখন তিনি তাঁর সাহাবীদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি আছ? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি নও! তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! নিশ্চয়ই আমি কামনা করি তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৮ | 6188 | ٦۱۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কোন এক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তিকে قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ‏ পাঠ করতে শুনলেন। তিনি তা বারংবার পাঠ করছিলেন। প্রভাত হলে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলেন এবং এ সম্পর্কে তার কাছে উল্লেখ করলেন। আর উক্ত ব্যাক্তি যেন উক্ত সুরা তিলাওয়াতকে কম গুরত্ব দিচ্ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই এ সূরা কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৯ | 6189 | ٦۱۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৯। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, তোমরা রুকু ও সিজদা পূর্নভাবে আদায় কর। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমরা যখন রুকু এবং সিজদা কর তখন আমি তোমাদেরকে আমার পিছন থেকে দেখতে পাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯০ | 6190 | ٦۱۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৯০। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আনসার সম্প্রদায়ের জনৈক নারী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হল; সঙ্গে ছিল তার সন্তান-সন্ততি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মানুষের মাঝে তোমরা আমার নিকট সর্বধিক প্রিয়। তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯১ | 6191 | ٦۱۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর ইবনু খাত্তার (রাঃ) কে কোন বাহনের উপর আরোহণ অবস্হায় পেলেন। তিনি তখন তাঁর পিতার নামে কসম করছিলেন। তিনি বললেনঃ সাবধান। আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতৃপূরুষদের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ যদি কসম করতে চায় সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে নতুবা চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯২ | 6192 | ٦۱۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯২। সাঈদ ইবনু ওফায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পিতা-পিতামহের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। উমর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, তখন থেকে আমি সেচ্ছায় বা ভুলক্রমে তাদের নামে কসম করিনি। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেনঃ ‏أَوْ أَثَرَةٍ مِنْ عِلْمٍ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানগত বিষয় নকল করা। অনুরূপ উকায়ল, যুবায়দী ও ইসহাক কালবী (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু উয়ায়নাহ … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৩ | 6193 | ٦۱۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা-পিতামহগণের নামে কসম করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৪ | 6194 | ٦۱۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের গোত্র জারাম এবং আশআরী গোত্রের মাঝে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমরা (একদা) আবূ মূসা আশ আরীর সঙ্গে ছিলাম। তার কাছে খাবার পেশ করা হল, যার মাঝে ছিল মুরগীর গোশত। তাইমিলাহ গোত্রের এক লাল রঙের ব্যাক্তি তাঁর কাছে ছিল। সে দেখতে গোলামদের মত। তিনি তাকে খাবারে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান করলেন। তখন সে লোকটি বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু খেতে দেখেছি যার কারণে আমি একে ঘৃণা করছি। তাই আমি কসম করেছি যে, মুরগী আর খাব না। তিনি বললেনঃ ওঠ, আমি এ সম্পর্কে অবশ্যই তোমাকে একখানা হাদীস বলব। একদা আমি কতিপয় আশআরীর সঙ্গে বাহন সংগ্রহের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর বাহন যোগ্য এমন কিছুই আমার কাছে নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গনীমতের কিছু জন্তু এল। তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং বললেনঃ আশআরী লোক গুলো কোথায়? এরপর আমাদের জন্য পাচটি উৎকৃষ্ট মানের সুদানি উট দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করলেন।

আমরা যখন চলে গেলাম তখন চিন্তা করলাম আমরা এ কি করলাম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো কসম করেছিলেন আমাদেরকে বাহন দেবেন না বলে। আর তার কাছে কোন বাহন তো ছিলও না। কিন্তু এরপর তিনি তো আমাদেরকে আরোহণের জন্য বাহন দিলেন। আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসমের কথা ভুলে গিয়েছি। আল্লাহর কসম! এ বাহন আমাদের কোন কল্যাণে আসবে না। সুতরাং আমরা তার কাছে ফিরে গেলাম এবং তাকে বললাম যে আমাদেরকে আপনি আরোহন করাবেন এ উদ্দেশ্যে আমরা তো আপনার কাছে এসেই ছিলাম। আপনি কসম করেছিলেন যে আপনি আমাদেরকে কোন বাহন দিবেন না। আর আপনার কাছে এমন কোন কিছু ছিলও না, যাতে আমাদেরকে আরোহন করাতে পারেন। তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন কোন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে যদি অধিক মঙ্গল দেখতে পাই তা হলে যা মঙ্গল তাই বাস্তবায়িত করি এবং আমি কসম ভঙ্গ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৫ | 6195 | ٦۱۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৩. লাত, উযযা ও প্রতিমাসমূহের নামে কসম করা যায় না
৬১৯৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি কসম করে এবং বলে, লাত ও উযযার কসম, তখন সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ আর যে ব্যাক্তি তার সঙ্গীকে বলে “এস জুয়া খেলি”, তখন এর জন্য তার সাদাকা করা উচিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৬ | 6196 | ٦۱۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৪. কেউ যদি কোন বস্তুর কসম করে অথচ তাকে কসম দেয়া হয়নি
৬১৯৬। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বর্নের আংটি তৈয়ার করালেন এবং তিনি তা পরিধান করতেন। পরিধানকালে তার পাখরটি হাতের ভিতরের দিকে রাখলেন। তখন লোকেরাও (এরূপ) করল। এরপর তিনি মিস্বরের উপর বসে তা খুলে ফেললেন এবং বললেনঃ আমি এ আংটি পরিধান করেছিলাম। এবং তার পাথর হাতের ভিতরের দিকে রেখেছিলাম। অতঃপর তিনি তা ছুড়ে ফেলে দিলেন। আর বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি এ আংটি আর কোনদিন পরিধান করব না! তখন লোকেরাও আপন আপন আংটিগুলো খুলে ফেলল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৭ | 6197 | ٦۱۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৫. কেউ যদি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করে। নাবী (সাঃ) বলেছেন ”কেউ যদি লাত ও উযযার কসম করে তবে সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ এতে কুফরীর দিকে তার সম্পর্ক বোঝায় না
৬১৯৭। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … সাবিত ইবনু যিহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করলে সেটা ঐ রকমই হবে যে রকম সে বলল। তিনি (আরও বলেন) কোন ব্যাক্তি যে কোন জিনিসের মাধ্যমে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনে তাকে ঐ জিনিস শাস্তি দেয়া হবে। কোন মুমিনকে লানত করা তার হত্যা তুল্য। আবার কোন মুমিনকে কুফরীর অপবাদ দেওয়াও তার হত্যা তুল্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৮ | 6198 | ٦۱۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৬. “যা আল্লাহ চান ও তুমি চাও” বলবে না। “আমি আল্লাহর সাথে এরপর তোমার সাথে” এরূপ বলা যাবে কি?
৬১৯৮। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, বনী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের তিন ব্যাক্তিকে আল্লাহ তা’আলা পরীক্ষা করতে চাইলেন এবং একজন ফেরেশতা পাঠালেন। ফেরেশতা কুষ্ঠরোগীর কাছে এল। সে বলল, আমার যাবতীয় উপায়-উপকরণ ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আমার জন্য আল্লাহ ছাড়া, অতঃপর তুমি ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৯ | 6199 | ٦۱۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬১৯৯। কাবীসা ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে কসম পূর্ণ করতে হুকুম করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০০ | 6200 | ٦۲۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০০। হাফস ইরন উমর (রহঃ) … উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা উসামা ইবনু যায়িদ, সা’দ ও উবাই (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক কন্যা তাঁর কাছে এ মর্মে খবর পাঠালেন যে, আমার পুত্র মরনাপন্ন অবস্থায় আছে। সুতরাং তিনি যেন আমাদের কাছে তশরীফ আনেন। তিনি উত্তরে সালামের সাথে এ কথা বলে পাঠালেন যে, আল্লাহ তা’আলা যা দান করেন আর যা নিয়ে নেন সব কিছুই তো আল্লাহর জন্য। আর সব কিছুই আল্লাহর নিকট নির্ধারিত আছে। অতঃপব তোমার জন্য ধৈর্য ধারণ করা এবং পুণ্য মনে করা উচিত।

এরপর তার কন্যা কসম দিয়ে আবার খবর পাঠালেন। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম। (সেখানে পৌছে) তিনি যখন বসলেন, সন্তানটি তাঁর সামনে আনা হল। তিনি তাকে নিজের কোলে নিয়ে বসালেন আর শিশুটির শ্বাস নিঃশেষ হয়ে আসছিল। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে এলো। তখন সা’দ বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কি ব্যাপার? তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের মাঝে যাকে ইচ্ছা তার মনের ভিতরে দিয়ে থাকেন। আর আল্লাহ তা’আলা তো কেবলমাত্র তাঁর দয়াদ্র বান্দাদের ওপরই দয়া করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০১ | 6201 | ٦۲۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে মুসলমানের তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে (সে যদি ধৈর্য ধারণ করে) তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না, হ্যাঁ, কসম পূর্ণ করার জন্য (জাহান্নামের উপর দিয়ে পুলসিরাত) অতিক্রম করতে যতটুকু সময় লাগে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০২ | 6202 | ٦۲۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০২। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের সম্পর্কে অবহিত করব না? তারা হবে দুনিয়াতে দুর্বল, মাজলুম। তারা যদি কোন কথায় আল্লাহর ওপর কসম করে ফেলে তবে আল্লাহ তা’আলা তা পূর্ণ করে দেন। আর যারা জাহান্নামে যাবে তারা হবে অবাধ্য, ঝগড়াটে ও অহংকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৩ | 6203 | ٦۲۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০৩। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একদা প্রশ্ন করা হল যে, সর্বোত্তম মানুষ কে? তিনি বললেনঃ আমার সময়ের মানুষ। এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। এরপরে এমন লোক (পৃথিবীতে) আসবে যে তাদের সাক্ষী কসমের উপর অগ্রগামী হবে, আর কসম সাক্ষীর উপর অগ্রগামী হবে। রাবী ইবরাহীম বলেন যে, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের সাথীরা সাক্ষী এবং অঙ্গীকারের সাথে কসম করতে নিষেধ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৪ | 6204 | ٦۲۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৯. আল্লাহ তা’আলার নামে অঙ্গীকার করা
৬২০৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন মুসলমান ব্যাক্তির মাল আত্মসাৎ করার জন্য অথবা বলেছেনঃ তার ভাইয়ের মাল আত্নসাৎ করার জন্য যে ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহ তা’আলার সাথে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন। এ কথারই সত্যয়নে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে (পরকালে তাদের কোন অংশ নেই)।

বারী সুলায়মান তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেনঃ আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) যখন পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন জিজ্ঞাসা করেন, আবদুল্লাহ তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? উত্তরে লোকেরা তাকে কিছু বলল। তখন আশআছ (রাঃ) বললেনঃ এ আয়াত তো আমার আর আমার এক সঙ্গীর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আমাদের দু’জনের মাঝে একটি কুপের ব্যাপারে ঝগড়া ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৫ | 6205 | ٦۲۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৫। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ (আল্লাহ) আমি তোনার ইজ্জতের আশ্রয় চাই।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন) জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি যানে থাকবে। সে তখন আরয করবে, হে প্রভু! আমার চেহারাটি জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও। তোমার ইজ্জতের কসম। এ ছাড়া আর কিছুই আমি তোমার কাছে চাইব না। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ এ পুরস্কার তোমার আর এরূপ দশ গুণ। আবূ আইউব (রাঃ) বলেন, তোমার ইজ্জতের কসম! তোমার বরকত থেকে আমি অমুখাপেক্ষী নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৬ | 6206 | ٦۲۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৬। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম সর্বদাই বলতে থাকবে- আরও কি আছে? এমন কি রাবুল ইজ্জত তাতে তাঁর পা রাখবেন। ‘বাস, বাস’ জাহান্নাম বলবে, তোমার ইজ্জতের কসম! সেদিন তার একাংশ অপরাংশের সাথে মিলিত হয়ে যাবে। শুবা, কাতাদা (রহঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৭ | 6207 | ٦۲۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬১. কোন ব্যক্তির لَعَمْرُ اللَّهِ বলা। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, لَعَمْرُكَ মানে لَعَيْشُكَ অর্থাৎ তোমার জীবনের কসম
৬২০৭। ওয়াইসী ও হাজ্জাজ (রহঃ) … ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) এর অপবাদ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অপবাদ রটনাকারীরা যখন তাঁর সম্পর্কে যা ইচ্ছে তাই অপবাদ করল, তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁকে পুত-পবিত্র বলে প্রকাশ করে দিলেন। রাবী বলেনঃ উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই হাদীসের এক একটি অংশ আমার কাছে বর্ণনা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান হলেন এবং আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন। এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা সম্পর্কে বললেনঃ আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমরা তাকে হত্যা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৮ | 6208 | ٦۲۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬২. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করবেন। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, ধৈর্যশীল (২ঃ ২২৫)
৬২০৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ আয়াত- খানা لاَ وَاللَّهِ (না, আল্লাহর কসম) এবং بَلَى وَاللَّهِ‏ (হ্যাঁ, আল্লাহর কসম) এ জাতীয় কথা বলা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৯ | 6209 | ٦۲۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২০৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) অত্র হাদীস মারফূ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মাতের সে সমস্ত ওয়াসওয়াসা মাফ করে দিয়েছেন যা তাদের মনে উদয় হয় বা যে সব কথা মনে মনে বলে থাকে; যতক্ষন না তা কাজে পরিণত করে বা সে সম্পর্কে কারও কাছে কিছু বলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১০ | 6210 | ٦۲۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১০। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন খুতবা দিতেছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলালাহ! আমি ধারণা করলাম যে, অমুক অমুক রুকনের পূর্বে অমুক অমুক রুকন হবে। এরপর অপর এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! অমুক অমুক আমলের পূর্ব অমুক আমল হবে, (অর্থাৎ তারা যবেহ, হলক ও তাওয়াফ) এই তিনটি কাজ সম্পর্কে জানতে চাইল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ করতে পার, কোন দোষ নেই। ঐ দিন যে সম্পর্কেই জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ করতে পার কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১১ | 6211 | ٦۲۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরয করল যে, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যিয়ারত করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। আরেক ব্যাক্তি বলল, আমি তো যবেহ করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। অপর ব্যাক্তি বলল, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যবেহ করে ফেলেছি! তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১২ | 6212 | ٦۲۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১২। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মসজিদের এক কোণে অবস্হান করছিলেন। লোকটি তাঁর কাছে এসে তাকে সালাম করল। তিনি বললেনঃ ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তখন সে ফিরে গেল এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল। পুনরায় এসে তাঁকে সালাম করল। তিনি উত্তরে বললেনঃ তোমার উপরও সালাম। তুমি ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তৃতীয়বার লোকটি বলল, দয়া করে আমাকে অবহিত করে দিন। তিনি ইরশাদ করলেনঃ যখন তুমি সালাতে দণ্ডায়মান হবে তখন খুব ভালভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে। এরপর কিবলামুখী হবে। তারপর তাকবীরে তাহরীমা বলবে। এরপর কুরআন মজীদ থেকে যা তোমার জন্য সহজ তিলাওয়াত করবে। এরপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। এরপর মাথা উত্তোলন করবে। এমনকি সঠিকভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীরস্হিরভাবে। এরপর (সিজদা থেকে) মাথা উত্তোলন করবেঃ এমন কি সোজা হয়ে এবং ধীরস্থিরভাবে বসে যাবে। এরপর পূনরায় সিজদা করবে ধীরস্থিরভাবে। তারপর সিজদা থেকে মাথা উত্তোলন করবে। এমন কি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর তোমার সমস্ত সালাত (নামায/নামাজ)ই এরূপ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৩ | 6213 | ٦۲۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৩। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উহুদের যুদ্ধে মুশরিকরা প্রকাণ্ডভাবে পরাজয় বরণ করে। ইবলিস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা পিছনের দিকে ফির। এতে সামনের লোকগুলো পিছনের দিকে ফিরল। তারপর পিছনের লোকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। হুযায়ফা ইবনু ইয়ামন (রাঃ) আকস্মিক তার পিতাকে দেখে মুসলমানদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ এ তো আমার পিতা, আমার পিতা। আল্লাহর কসম! তারা ফিরল না। পরিশেষে তারা তাকে হত্যা করল। হুযায়ফা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর কসম! মৃত্যু পর্যন্ত হুযায়ফা (রাঃ) এর নিকট তার পিতার মৃত্যুটি মানসপটে বিদ্যমান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৪ | 6214 | ٦۲۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৪। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সায়িম ভুলক্রমে কিছু আহার করে সে যেন তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ন করে। কেননা, আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৫ | 6215 | ٦۲۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৫। আদম ইবনু আবু ইয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। প্রথম দু’রাকাআতের পর না বসে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকলেন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলে লোকেরা তার সালামের অপেক্ষা করছিল। তিনি আল্লাহু আকবার বলে সালামের পূর্বে সিজদা করলেন। এরপর মাথা উত্তলোন করলেন। আবার আল্লাহু আকবার বলে সিজদা করলেন। এরপর আবার মাথা উত্তোলন করলেন এবং সালাম ফিরালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৬ | 6216 | ٦۲۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি সালাতে কিছু অধিক করলেন অথবা কিছু কম করলেন। মানসুর বলেন, এই কম-বেশির ব্যাপারে সন্দেহ ইবরাহীমের না আলকামার তা আমার জানা নেই। রাবী বলেন আরয করা হল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ) এর মাঝে কি কিছু কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? তিনি বললেনঃ কি হয়েছে? সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি এভাবে এভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দুটি সিজদা করেন। এরপর বললেন, এ দুটি সিজদা ঐ ব্যাক্তির জন্য যার স্মরণ নেই যে, সালাতে সে কি বেশি কিছু করেছে, না কম করেছে। এমন অবস্থায় সে চিন্তা করবে (প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে)। আর যা বাকি থাকবে তা পুরা করে নেবে! এরপর দু টি সিজদা আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৭ | 6217 | ٦۲۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৭। আল হুমায়দী (রহঃ) … উবাই ইবনু কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আল্লাহর বাণীঃ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا‏ (মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না ও আমার ব্যাপারে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।) সম্পর্কে শুনেছেন। তিনি বলেছেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর প্রথমবারের (প্রশ্ন উত্থাপনটা) ভুলবশত হয়েছিল।

আবূ আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আমাদের কাছে মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার … শাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন যে, বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) এর নিকট কয়েকজন অতিথি ছিল। তিনি তাঁর পরিবার-পরিজনকে তাদের জন্য সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তন করার পুর্বে কিছু যবেহ করতে হুকুম করলেন, যেন ফিরে এসেই তাঁরা আহার করতে পারেন। তখন পরিবারের লোকেরা সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তনের পুর্বেই (কুরবানীর পশু) যবেহ করলেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লোকেরা এ সম্পর্কে বর্ণনা করল। তিনি পুনরায় যবেহ করার জন্য হুকুম করলেন। বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা আছে যা দুটি বড় বকরীর গোশতের চেয়েও উত্তম।

ইবনু আউন শাবীর মাধ্যমে বর্ণনা করতে গিয়ে এ স্থানটিতে থেমে যেতেন। তিনি মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে এর অনুরূপ বর্ণনা করতেন এবং এ স্থানে থেমে যেতেন। আর বলতেন, আমার জানা নেই তিনি ছাড়া অন্য কারও জন্য তদ্রূপ অনুমতি আছে কিনা? আইউব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৮ | 6218 | ٦۲۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি (এক ঈদের দিন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি (সালাত (নামায/নামাজ) শেষে) খুতবা প্রদান করলেন। এরপর বললেনঃ যে ব্যাক্তি (সালাত (নামায/নামাজ) এর পূর্বেই) যবেহ করে ফেলেছে তার উচিত যেন তার পরিবর্তে আরেকটি যবেহ করে নেয়। আর যে এখনও যবেহ করেনি সে যেন আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৯ | 6219 | ٦۲۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৪. মিথ্যা কসম। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) পরস্পর প্রবঞ্চনা করার জন্য তোমরা তোমাদের শপথকে ব্যবহার করো না। করলে পা স্থির হওয়ার পর পিছলিয়ে যাবে। আর তোমাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি (১৬ঃ ৯৪) পর্যন্ত। دخلا দ্বারা প্রবঞ্চনা ও খিয়ানত উদ্দেশ্য।
৬২১৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমুহের (অন্যতম) হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে শরীক করা, পিতামাতার নাফরমানী করা, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২০ | 6220 | ٦۲۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৫. আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করে আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি … পর্যন্ত (৩ঃ ৭৭)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তোমাদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে অযুহাত করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২২৪) এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (১৬ঃ ৯৫)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর এবং তোমরা শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না (১৬ঃ ৯১) আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬২২০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি যদি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে মিথ্যা কসম করে তবে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আল্লাহ তা’আলা এ কথার সমর্থনে আয়াত ‏إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً‏ নাযিল করেন। এরপর আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) প্রবেশ করে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আবু আবদুর রহমান তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? লোকেরা বলল, এরূপ এরূপ। তখন তিনি বললেনঃ এ আয়াত আমার সম্পর্কে নাযিল করা হয়েছে। আমার চাচাতো ভাই এর জমিতে আমার একটি কূপ ছিল। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হলাম। তিনি বললেনঃ তুমি প্রমাণ উপস্থাপন কর অথবা সে কসম করুক! আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কথার উপরে সে তো কসম খেয়েই ফেলবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে কসম করে, অথচ সে তাতে মিথ্যাবাদী তবে কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২১ | 6221 | ٦۲۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২১। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাকে আমার সাথীগণ (একদা) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রেরণ করল তাঁর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন কিছুই আরোহণের জন্য দিতে পারব না। তখন আমি তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। এরপর যখন আমি তার কাছে এলাম, তিনি বললেনঃ তুমি তোমার সঙ্গীদের কাছে চলে যাও এবং বল যে, নিশ্চই আল্লাহ অথবা আল্লাহর রাসুল তোমাদের আরোহণের জন্য বাহনের ব্যবস্হা করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২২ | 6222 | ٦۲۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২২। আবদুল আযীয ও হাজ্জাজ (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) সম্পর্কে অপবাদ বর্ণনাকারীরা যা বলেছিল তা শুনতে পেলাম। আল্লাহ তা’আলা এ মর্মে তাঁর নিস্কুলষতা প্রকাশ করে দিয়েছেন। উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই আমার নিকট উল্লিখিত ঘটনার অংশ বিশেষ বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ যখন আল্লাহ ‏إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ থেকে দশখানা আয়াত আমার নিস্কুলষতা প্রকাশ করণার্থে নাযিল করেছেন। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) আত্নীয়তার সম্পর্কের কারণে মিসতাহ ইবনু সালামার ভরণ-পোষণ করতেন। অপবাদ প্রদানের কারণে আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! মিসতাহ যখন আয়িশার ব্যাপারে অপবাদ রটিয়েছে; এরপর আমি আর তার জন্য কখনও কিছু খরচ করব না। তখন আল্লাহ তা’আলা وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَى‏ এ আয়াত নাযিল করেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিন এটা আমি নিশ্চয়ই পছন্দ করি। তিনি পুনরায় মিসতাহের ভরণ-পোষণের জন্য ঐ খরচ দেওয়া শুরু করলেন, যা তিনি পূর্বে তাকে দিতেন এবং তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তার খরচ দেওয়া আর কখনও বন্ধ করব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৩ | 6223 | ٦۲۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২৩। আবু মামার (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কতিপয় আশআরী লোকের সঙ্গে (বাহন চাওয়ার জন্য) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলাম। যখন উপস্থিত হলাম, তখন তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। আমরা তাঁর কাছে বাহন চাইলাম। তিনি কসম করে বললেন যে, আমাদেরকে বাহন দিবেন না। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম আমি কোন কিছুর ওপর আল্লাহর ইচ্ছা মুতাবিক যখন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই; তাহলে যেটা মঙ্গলকর সেটাই করি আর কসমকে ভঙ্গ করে ফেলি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৪ | 6224 | ٦۲۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ তালিবের যখন মৃত্যু উপস্থিত হল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে তশরীফ আনলেন এবং বললেনঃ আপনি لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ কলেমাটি বলুন। আমি আল্লাহ তা’আলার নিকট আপনার ব্যাপারে এর মাধ্যমে সুপারিশ করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৫ | 6225 | ٦۲۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি কলেমা এমন যা জিহবাতে অতি হালকা অথচ মীযানে ভারী আর রাহমানের নিকট খুব পছন্দনীয়; তা হলঃ সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৬ | 6226 | ٦۲۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কলেমা বললেন। আর আমি বললাম, অন্যটি। তখন তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে মৃত্যু বরন করবে তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। আমি অপরটি বললাম, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক না করে মৃত্যৃবরণ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৭ | 6227 | ٦۲۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৮. যে ব্যাক্তি এ মর্মে কসম করে যে, স্বীয় স্ত্রীর কাছে একমাস গমন করবে না আর মাস যদি হয় উনত্রিশ দিনে
৬২২৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের ব্যাপারে ঈলা (কসম) করলেন। আর তখন তাঁর কদম মুবারক মচকে গিয়েছিল। তিনি তখন উনত্রিশ দিন কুঠরীতে অবস্থান করেছিলেন। এরপর তিনি নেমে এলেন (স্ত্রীগণের কাছে ফিরে এলেন) লোকেরা তখন জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো এক মাসের ঈলা করেছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ মাস তো কখনও ঊনত্রিশ দিনেও হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৮ | 6228 | ٦۲۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৮। আলী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ উসায়দ (রাঃ) বিবাহ করলেন। তার (ওলীমায়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলেন। আর তখন তার নব বিবাহিতা স্ত্রী তাঁদের খেদমত করছিলেন। সাহল (রাঃ) তার কাওমের লোকদেরকে বললেনঃ তোমরা কি জানো সে মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি পান করিয়েছিল? সে রাত্রি বেলা একটি পাত্রে তার জন্য খেজুর ভিজিয়ে রেখেছিল। এমনিভাবে সকাল হয়। আর সেগুলই সে তাঁকে পান করাল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৯ | 6229 | ٦۲۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী সাওদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমাদের একটি বকরী মরে গেল। আমরা এর চামড়া দাবাগাত করে নিলাম। এরপর থেকে তাতে সর্বদাই আমরা নাবীয প্রস্তুত করতাম। এমন কি তা পুরাতন হয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩০ | 6230 | ٦۲۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ পরিবার তরকারী মিশ্রিত গমের রুটি একাধারে তিনদিন পর্যন্ত খেয়ে পরিতৃপ্ত হননি। এভাবে তিনি আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবীস (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এই হাদীসটি আয়িশা (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩১ | 6231 | ٦۲۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আবূ তালহা (রাঃ) উম্মে সুলায়ম (রাঃ) কে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূর্বল আওয়াজ শুনতে পেলাম, যার মাঝে আমি ক্ষুধার আভাষ পেলাম। তোমার কাছে কি কিছু আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি কয়েকটি যবের রুটি বের করলেন। এরপর তার ওড়নাটি নিলেন এবং এর কিছু অংশে রুটিগুলি পেঁচিয়ে নিলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। আমি গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে পেলাম। এবং কতিপয় লোক তাঁর সঙ্গে রয়েছে। আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাকে কি আবূ তালহা গাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদেরকে বললেনঃ উঠ (আবূ তালহার কাছে যাও)। তখন তাঁরা আবূ তালহার নিকট চললেন। আমি তাদের আগে আগে যেতে লাগলাম। অবশেষে আবূ তালহার কাছে এসে উপস্থিত হলাম এবং তাকে এ সম্পর্কে খবর দিলাম। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বলল, হে উম্মে সুলায়ম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তো আমাদের কাছে তশরীফ এনেছেন অথচ আমাদের নিকট তো এমন কোন খাদ্যই নেই যা তাদের খেতে দিতে পারি। উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, আল্লাহ ও তার রাসুলই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন।

আবূ তালহা (রাঃ) রেরিয়ে এলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ তালহা (রাঃ) উভয়ই সামনাসামনি হলেন এবং উভয়ই একত্রে ঘরে প্রবেশ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মে সুলায়ম! তোমার কাছে যা আছে তাই নিয়ে এসো। তখন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) ঐ রুটিগুলি তার সামনে পেশ করলেন। রাবী বলেনঃ এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ রুটিগুলি ছিড়ার জন্য হুকুম করলেন। তখন রুটিগুলি টুকরা টুকরা করা হল।

উম্মে সুলায়ম (রাঃ) তার ঘি এর পাত্র থেকে ঘি নিংড়ে বের করলেন এবং তাতে মিশ্রিত করে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু পাঠ করলেন এবং বললেনঃ দশজন লোককে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তারা সকলেই আহার করলেন, এমন কি সবাই পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থকে বের হলেন। এরপর তিনি আবার বললেনঃ (আরও) দশজনকে অনুমতি দাও। তখন তাদরেকে অনূমতি দেয়া হল। এভাবে তারা সকলেই আহার করলেন, এমনকি সবহি পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থেকে বের হলেন। এরপর আবারো তিনি বললেনঃ আরো দশজনকে আসতে দাও। দলের লোক সংখ্যা ছিল সত্তর বা আশি জন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩২ | 6232 | ٦۲۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭১. কসমের মধ্যে নিয়ত করা
৬২৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে নিশ্চয়ই প্রতিটি আমলের গ্রহণযোগ্যতা ভার নিয়্যাতের উপয় নির্ভরশীল। কোন ব্যাক্তি তাই লাভ করবে যা সে নিয়্যাত করে থাকে। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুটির জন্যই হবে। আর যার হিজরত দুনিয়াকে হাসিলের জন্য হবে অথবা কোন রমনীকে বিয়ে করার জন্য হবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যই হবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৩ | 6233 | ٦۲۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭২. যখন কোন ব্যাক্তি তার মাল মানত ও তওবার লক্ষ্যে দান করে
৬২৩৩। আহামাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কাব (রাঃ) যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তখন তার জনৈক পুত্র তাঁকে ধরে নিয়ে চলতেন। আবদুর রাহমান বলেনঃ আমি আল্লাহর বানীঃ যে তিনজন তাবুকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত হয়েছে। সংক্রান্ত ঘটনা বর্ণনা করতে কা’ব ইবনু মালিককে শুনেছি। তিনি তার বর্ণনার শেষাংশে বলেনঃ আমার তওবা এটাই যে আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর কাছে দান করে দিয়ে আমি মুক্ত হব। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ এটি তোমার জন্য কল্যানকর হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৪ | 6234 | ٦۲۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৩. যখন কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যকে হারাম করে নেয় এবং আল্লাহর বাণীঃ হে নবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন আপনি আপনার স্ত্রীদের সন্তুষ্টির জন্য কেন তা হারাম করেছেন ? (৬৬ঃ ১) এবং আল্লাহর বাণীঃ ঐ সমস্ত পবিত্র বস্তুকে হারাম করো না, যা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন।
৬২৩৪। হাসান ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) এর কাছে অবস্হান করছিলেন এবং তার কাছে মধু পান করেছিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি এবং হাফসা (রাঃ) পরস্পরে পরামর্শ করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দু’জনের মধ্যে যার কাছে আগে আসবেন তখন আমরা তাঁকে এ কথাটি বলব যে, আপনার মুখ থেকে তো মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? এরপর তিনি কোন একজনের ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি তাঁকে ঐ কথাটি বললেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, না বরং আমি যায়নাব বিনত জাহাশের কাছে মধু পান করেছি। এরপরে আর কখনও এ কাজটি করব না।

তখনই এ আয়াত নাযিল হলঃ ‏يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ‏}‏، ‏{‏إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ‏ “তোমরা উভয়ে যদি আল্লাহর কাছে তওবা কর” এখানে সন্মোধন আয়শা ও হাফসা (রাঃ) এর প্রতি। আর إِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর কোন স্ত্রীর কাছে কথাকে গোপন করেন। এ আয়াত খানা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً “বরং আমি মধু পান করেছি” এর প্রতি ইঙ্গিত করণার্থে নাযিল হয়েছে।

ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) হিশাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কসম করে ফেলেছি এ কাজটি আমি আর কখনও করব না। তুমি এ ব্যাপারটি কারও কাছে প্রকাশ করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৫ | 6235 | ٦۲۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তোমাদেরকে কি মানত করতে নিষেধ করা হয়নি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেনঃ মানত কোন কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়ে আনতে পারে না এবং পিছিয়েও দিতে পারে না। তরে হ্যাঁ, মানতের দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (কিছু মাল) বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৬ | 6236 | ٦۲۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৬। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ এতে কিছুই রদ হয় না, কিন্তু কৃপণ থেকে মাল বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৭ | 6237 | ٦۲۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানত মানুষকে এমন বস্তু এনে দিতে পারে না, যা আমি তাকদীরে নির্ধারিত করিনি। বরং মানতটি তাকদীরের মাঝেই ঢেলে দেয়া হয় যা তার জন্য নির্ধারন করা হয়েছে। সুতরাং এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা কৃপনের কাছ থেকে মাল বের করে নিয়ে আসেন। আর তাকে এমন কিছু দিয়ে থাকেন যা পূর্বে তাকে দেওয়া হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৮ | 6238 | ٦۲۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৫. মানত করে তা পূর্ণ না করা গুনাহর কাজ
৬২৩৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের-মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম, এরপর তাদের পরবর্তী যমানার লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার যমানা বলার পর দু’বার বলেছেন না কি তিনবার তা আমার স্মরণ নেই। এরপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে যারা মানত করবে অথচ তা পূর্ন করবে না। তারা খেয়ানত করবে তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তাবা সাক্ষ্য প্রদান করবে অথচ তাদেরকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য বলা হবে না। আর তাদের মাঝে হৃষ্টপুষ্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৯ | 6239 | ٦۲۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৬. ইবাদতের ক্ষেত্রে মানত করা। (এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ) যা কিছু তোমরা ব্যয় কর অথবা যা কিছু তোমরা মানত কর আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২৭০)
৬২৩৯। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এরূপ মানত করে যে, সে আল্লাহর আনুগত্য করবে তাহলে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে এরূপ মানত করে, সে আল্লাহর নাফরমানী করবে তাহলে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪০ | 6240 | ٦۲٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৭. কোন ব্যাক্তি জাহিলী যুগে মানত করল বা কসম করল যে, সে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহন করেছে
৬২৪০। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উমর (রাঃ) একদা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জাহিলী যুগে মানত করেছিলাম যে, মসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করব। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মানত পুরা করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪১ | 6241 | ٦۲٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ মর্মে জানিয়েছেন যে, সা’দ ইবনু উবাদা আনসারী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তার মাতার কোন এক মানত সম্পর্কে, যা আদায় করার পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে মানত আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন। আর পরবর্তীতে এটাই সুন্নাত হিসাবে পরিগণিত হল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪২ | 6242 | ٦۲٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪২। আদম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক ব্যাক্তি এসে বলল যে, আমার বোন হাজ্জ (হজ্জ) করবে বলে মানত করেছিল। আর সে মারা গিয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার ওপর যদি কোন ঋণ থাকত তরে কি তুমি তা পূরণ করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সুতরাং আল্লাহ তা’আলার হককে আদায় করে দাও। কেননা, আল্লাহর হক আদায় করাটা তো অধিক কর্তব্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৩ | 6243 | ٦۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৩। আবূ আসিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য করার মানত করে সে যেন তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর নাফরমানী করার মানত করে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৪ | 6244 | ٦۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এ ব্যাক্তিটি যে নিজের জানকে আযাবের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে নিশ্চয় এতে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। আর তিনি লোকটিকে দেখলেন যে, সে তার দু’টি পুত্রের মাঝে ভর করে হাঁটছে। ফাযারীও অত্র হাদীসটি … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৫ | 6245 | ٦۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৫। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে দেখতে পেলেন। লোকটি একটি রশির অথবা অন্য কিছুর সাহায্যে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছে। তিনি সে রশিটি কেটে ফেললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৬ | 6246 | ٦۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৬। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা’বার তাওয়াফ করার সময় এক ব্যাক্তির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি অন্য আরেকজনকে নাকে রশি লাগিয়ে টানছিল (আর সে তাওয়াফ করছিল) এতদৃষ্টে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বহস্তে তার রশিটি কেটে ফেললেন এবং হুকুম করলেন, যেন তাকে হাতে টেনে নিয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৭ | 6247 | ٦۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা প্রদান করছিলেন। এক ব্যাক্তিকে দাঁড়ানো দেখে তার সম্পর্কে লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন। লোকেরা বলল যে, এ লোকটির নাম আবূ ইসরাঈল। সে মানত করেছে ষে, দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়াতে যাবে না, কারও সঙ্গে কথা বলবে না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে যায়, বসে এবং তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সমাপ্ত করে।

আবদুল ওয়াহহাব, আইউব ও ইকরামার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অত্র হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৮ | 6248 | ٦۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৮। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর মুকাদ্দমী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু উমরকে এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ব্যাক্তি মানত করেছিল যে সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন থেকে কোন দিনই বিরত থাকবে না। আর তার মাঝে কুরবানী বা ঈদুল ফিতরের দিন এসে পড়ল। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাঝে তোমাদের জন্য সুন্দরতম আদর্শ রয়েছে। তিনি ঈদুল ফিতরের এবং কুরবানীর দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন না। আর তিনি ঐ দিনগুলোর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা জায়েযও মনে করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৯ | 6249 | ٦۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার ইবনু উমর (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। এক ব্যাক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, আমি মানত করেছিলাম যে, যতদিন আমি বেঁচে থাকব ততদিন প্রতি মঙ্গলবার এবং বুধবার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব। কিন্তু এর মাঝে কুরবানীর দিন পড়ে গেল। (তখন এর কি হুকুম হবে?) তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা মানত পুরা করার হুকুম করেছেন; এদিকে কুরবানীর দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। লোকটি প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করল। তিনি এরুপই উত্তর দিলেন, এর চেয়ে বেশি কিছু বললেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫০ | 6250 | ٦۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৮১. কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বকরী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি ? এবং ইবনু উমর (রাঃ) এর হাদীস। তিনি বলেন নবী (সাঃ) এর কাছে একদা উমর (রাঃ) আরয করলেন যে, আমি এরূপ একখন্ড ভূমি লাভ করেছি যার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন মাল কখনও আমি পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি চাও তবে মূল মালটিকে রেখে দিয়ে (তার তার থেকে অর্জিত লাভটুকু) দান করে দিতে পার। আবূ ত্বলহা (রাঃ) নবী (সাঃ) এর কাছে আরয করলেন যে, আমার নিকট বায়রুহা নামক আমার বাগানটি সবচেয়ে প্রিয় তার দেয়ালটি হচ্ছে মাসজিদে নববীর সম্মুখে।
৬২৫০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বারের যুদ্ধের দিন বের হলাম। আমরা মাল, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড় ব্যতীত স্বর্ণ বা রৌপ্য গনীমত হিসাবে পাইনি। বনী যুবায়র গোত্রের রিফাআ ইবনু যায়িদ নামক এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একটি গোলাম হাদিয়া দিলেন, যার নাম ছিল মিদআম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদি উল কুরার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ওয়াদিউল কুরায় পৌছলেন, তখন মিদআম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওয়ারীর হাওদা থেকে মালপত্রগুলি নামাচ্ছিলেন। তখন আকস্মিক একটি তীর এসে তার গায়ে বিদ্ধ হল এবং তাতে সে মারা গেল। লোকেরা বলল, এ লোকটির জন্য জান্নাতের সুসংবাদ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখনও না, কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! খায়বারের যুদ্ধের দিন গনীমতের মাল থেকে বণ্টনের পুর্বে যে চাঁদরটি সে নিয়ে গিয়েছিল তার গায়ে তা লেলিহান শিখা হয়ে জ্বলবে। এ কথাটি যখন লোকেরা শুনতে পেল, তখন এক ব্যাক্তি একটি বা দু’টি ফিতা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে হাযির হল। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে জাহান্নামের একটি ফিতা বা জাহান্নামের দু’টি ফিতা।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫১ | 6251 | ٦۲۵۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এরপর এর কাফফারা দশজন দরিদ্রকে (মধ্যম ধরনের) আহার্য দান (৫ঃ ৮৯) যখন এ আয়াত নাযিল হল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে হুকুম দিয়েছিলেন তা হচ্ছেঃ ফিদইয়া এর মধ্যে সাওম, সাদকা অথবা কুরবানী করা। ইবন আব্বাস, আতা ও ইকরামা থেকে বর্ণিত আছে যে, কুরআন মাজীদ যেখানে أَوْ أَوْ (অথবা অথবা) শব্দ আছে কুরআনের অনুসারীদের জন্য সেখানে ইখতিয়ার রয়েছে। নবী (সাঃ) কা’ব (রাঃ) কে ফিদইয়া আদায়ের ব্যাপারে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন।
৬২৫১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … কাব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি বললেনঃ কাছে এসো। আমি তার নিকটে গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমাকে কি তোমার উকুন যন্ত্রণা দিচ্ছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) অথবা সাদাকা অথবা কুরবানী করে ফিদইয়া আদায় কর। ইবনু আউন আইউব থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) হচ্ছে তিন দিন, কুরবানী হল একটি বকরী আর মিসকীনের সংখ্যা হল ছয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫২ | 6252 | ٦۲۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৮২. মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ তোমাদের শপথ হতে মুক্তি লাভের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ তোমাদের সহায় আর তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় (৬৬ঃ ২) আর ধনী ও দরিদ্র কখন কার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়
৬২৫২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, আমি ধবংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তোমার কি অবস্থা? লোকটি বলল, রমযানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে (দিনের বেলা) সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তা হলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে সক্ষম হবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ বস। লোকটি বসল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ‘আরক’ আনা হলো যাতে ছিল খেজুর। আর ‘আরক’ হচ্ছে বড় ধরনের পরিমাপ পাত্র। তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদাকা করে দাও। লোকটি বলল, এটা কি আমার চাইতে অধিকতর অভাবীকে প্রদান করব? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেনঃ এমন কি তার মাড়ির দন্ত মুবারক পর্যন্ত দেখা গেল। তিনি বললেনঃ এটা তোমার পরিবারকে খাওয়াও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৩ | 6253 | ٦۲۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৩. যে ব্যক্তি কাফফারা আদায়ে দরিদ্রকে সাহায্য করে
৬২৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু মাহবুব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কি ব্যাপার? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলা) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি? তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে সক্ষম? সে বলল, না। তবে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে পারবে? লোকটি বলল, না। রাবী বলেনঃ এমন সময় এক আনসার ব্যাক্তি একটি ‘আরক’ নিয়ে উপস্থিত হল। আর আরক হচ্ছে পরিমাপ পাত্র; তার মাঝে খেজুর ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদাকা করে দাও। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার চেয়ে যে অভাবী তাকে কি দান করব? সে আরও বললঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যিনি আপনাকে হকের (দ্বীনের) সাথে প্রেরণ-করেছেন; মদিনার দু’উপত্যকার মধ্যবর্তী স্থানে আমার চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্ত আর কেউ নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যাও এগুলি তোমার পরিজনকে নিয়ে আহার করাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৪ | 6254 | ٦۲۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৪. দশজন মিসকিন কে কাফফারা প্রদান করা; চাই তারা নিকটাত্মীয় হোক বা দূরের হোক
৬২৫৪। আবদুল্লাহ ইরন মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি তো ধংস হয়ে গিয়েছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কি অবস্থা? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলায়) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ একটি গোলাম আযাদ করার মত কি তোমার কাছে কিছু আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে? সে বলল, না। বললেনঃ তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে আহার করাতে পারবে? সে বলল, আমার কাছে এখন কিছু নেই। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি আরক আনা হল যাতে খেজুর ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে নাও এবং তা সাদাকা করে দাও। সে বলল, আমার চেয়ে যে অধিকতর অভাবী তাকে কি দেব? সে আরও বললঃ এখানকার দু’টি উপত্যকার মাঝে আমাদের চেয়ে অভাবী তো আর কেউ নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারকে আহার করাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৫ | 6255 | ٦۲۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় সা’ ছিল তোমাদের এখনকার মুদ্দের হিসাবে এক মুদ্দ ও এক মুদ্দের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ। এরপর উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এর যামানায় তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৬ | 6256 | ٦۲۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৬। মুনয়ির ইবুনুল ওয়ালীদ জারুদী (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু উমর (রাঃ) রমযানের ফিতরা আদায় করতেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ অর্থাৎ প্রথম মুদ্দ এর মাধ্যমে। আর কসমের কাফফারাতেও তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ ব্যাবহার করতেন। আবূ কুতায়বা বলেনঃ মালিক (রহঃ) আমাদেরকে বলেছেন যে, আমাদের মুদ্দ তোমাদের মুদ্দ অপেক্ষা বড়। আর আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দের মাঝেই আধিক্য দেখি। রাবী বলেন, আমাকে মালিক (রহঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কাছে কোন বাদশাহ এসে যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ থেকে তোমাদের মুদ্দকে ছোট করে দিয়ে থাকেন, তাহলে তোমরা কিসের মাধ্যমে (ওযন করে) মানুষদেরকে দিতে? আমি বললাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ দিয়েই প্রদান করতাম। তিনি বললেনঃ তোমরা কি দেখছ না যে, পরিমাপের ব্যাপারটা এভাবেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দের দিকে প্রত্যাবর্তন করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৭ | 6257 | ٦۲۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করেছেনঃ হে আল্লাহ! তুমি তাদের (উম্মাতের) কায়ল (মাপে), সা ও মুদ্দের মাঝে বরকত প্রদান কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৮ | 6258 | ٦۲۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৬. মহান আল্লাহর বাণীঃ অথবা গোলাম আযাদ করা। এবং কোন প্রকারের গোলাম আযাদ করা উত্তম
৬২৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি একটি মুসলমান গোলাম আযাদ করবে আল্লাহ তা’আলা সে গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন থেকে তার প্রতিটি অংকে মুক্ত করবেন। এমন কি তার গুপ্তাঙ্গকেও গোলামের গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে মুক্ত করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৯ | 6259 | ٦۲۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৭. কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে মুদাব্বার, উম্মু ওয়ালাদ, মুতাকাব এবং যিনার সন্তান আযাদ করা। এবং তাউস বলেছেন, উম্মে ওয়ালাদ এবং মুদাব্বার আদায় করা চলবে।
৬২৫৯। আবূ নুমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যাক্তি তার গোলামকে মুদাব্বীর বানালো। ঐ গোলাম ব্যতীত তার আর কোন মাল ছিল না। খবরটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছল। তিনি বললেনঃ গোলামটিকে আমার কাছ থেকে কে ক্রয় করবে? নুআয়ম ইবনু সাহহাম (রাঃ) তাকে আটশ দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করে নিল। সনদস্হিত রাবী আমর (রাঃ) বলেনঃ আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, সে গোলামটি ছিল কিবতী আর (আযাদ করার) প্রথম বছরেই সে মারা গিয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬০ | 6260 | ٦۲٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৮. যখন কেউ দুজনের মধ্যে শরীকানা কোন গোলাম আযাদ করে অথবা কাফফারার ক্ষেত্রে গোলাম আযাদ করে তখন তার ওয়ালাতে (স্বত্বাধিকারী) কে পাবে?
৬২৬০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বাবীরা নাম্নী বাদীকে ক্রয় করতে চাইলে তার মালিকগণ তার উপর ওয়ালা এর শর্তারোপ করল। আয়িশা (রাঃ) ব্যাপারটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তাকে তুমি ক্রয় করে নাও কেননা ওয়ালা (স্বত্বাধিকার) হল ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬১ | 6261 | ٦۲٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা কতিপয় আশাআরী লোকের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি বাহন চাইবার জন্য এলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। কারণ, এমন কিছু আমার নিকট নেই যা বাহন হিসাবে তোমাদেরকে দিতে পারি। এরপর আল্লাহ তা’আলা যতক্ষন চাইলেন আমরা অবস্থান করলাম। এমন সময় তাঁর নিকট কিছু উট আনা হল। তখন তিনি আমাদেরকে তিনটি উট দেওয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা যখন রওনা করলাম, তখন পরস্পরে বলতে লাগলাম যে, আল্লাহ তো আমাদের বরকত দিবেন না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য যখন এলাম তখন তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করলেন। এরপরও আমাদেরকে বাহন দিয়ে দিলেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এসে ব্যাপারটি তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদেরকে বাহন দেইনি; বরং আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি যখন কোন বিষয়ে কসম কবি আর তার বিপরীতটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই তখন কসমের কাফফারা আদায় করে দেই। আর যেটি কল্যাণকর সেটিই বাস্তবায়িত করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬২ | 6262 | ٦۲٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬২। আবু নুমান (রহঃ) … হাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিন্তু আমি আমার কৃত কসমের কাফফারা আদায় করি এবং যেটি কল্যাণকর সেটি বাস্তবায়িত করি। অথবা বলেছেনঃ যেটি কল্যাণকর সেটি বাস্তবায়িত করি এবং এর কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৩ | 6263 | ٦۲٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) একদা বলেছিলেন যে, অবশ্যই আজ রাতে আমি নব্বইজন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। তারা প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান প্রসব করবে যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তার সাথী (রাবী সুফিয়ান সাথী দ্বারা ফেরেশতা বুঝিয়েছেন) বলল, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেলেন এবং সকল স্ত্রীর সাথে মিলিত হলেন। তবে একজন ব্যতীত অন্য কোন স্ত্রীর গর্ভ থেকেই কোন সন্তান পয়দা হল না; তাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি কসমের মাঝে যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন তাহলে তার কসময় ভঙ্গ হত না আবার উদ্দেশ্যও সাধিত হত। একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) এরূপ বর্ণনা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি যদি “ইস্তিসনা” করতেন (অর্থাৎ ইনশাআল্লাহ বলতেন)। আবূ যিনাদ আরাজের মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৪ | 6264 | ٦۲٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৪। আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … যাহদাম জারমী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা একদা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর নিকট ছিলাম। আমাদের এবং জারম গোত্রের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। রাবী বলেনঃ তার জন্য খানা পেশ করা হল, তাতে ছিল মুরগীর গোশত। তাদের দলের মাঝে বনী তাইমিল্লাহ গোত্রের এক ব্যাক্তি ছিল যার গায়ের রং ছিল লাল যেন দেখতে গোলাম। রাবী বলেনঃ লোকটি খানার কাছেও গেল না। আবূ মূসা আশআরী তাকে বললেনঃ কাছে এসো (খানাতে শরীক হও)। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোশত খেতে দেখেছি। লোকটি বলল, আমি একে (মুরগী) কিছু খেতে দেখেছি; ফলে আমি এটিকে ঘৃণা করছি। এবং সে থেকে কসম করেছি যে, কখনও আর এটি খাব না।

আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে এ সম্পর্কে অবহিত করব। একদা আমরা আশআরী সম্প্রদায়ের একটি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি বাহন চাইবার জন্য আসলাম। তখন তিনি যাকাতের উট বণ্টন করছিলেন। আইয়্যুব বলেন, আমার মনে হয় তিনি তখন রাগান্বিত হয়ে বলেছিলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিব না। আর আমার কাছে বাহনযোগ্য কোন কিছুই নেই। বাবী বলেনঃ আমরা তখন প্রস্হান করলাম। এমন সময় তাঁর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হল। তিনি বললেনঃ ঐ আশআরী লোকগুলো কোথায়? ঐ আশ আরী লোকগুলো কোথায়? তখন আমরা ফিরে এলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচটি আকর্ষনীয় উট আমাদেরকে দেওয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা উটগুলো নিয়ে রওনা হলাম।

এমন সময় আমি আমার সঙ্গীদেরকে বললাম, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম। আর তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু এরপরে আমাদের কাছে লোক পাঠালেন এবং আমাদেরকে বাহন দিয়ে দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কসম ভুলে গিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমরা যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমকে ভুলিয়ে দিয়ে থাকি তাহলে তো আমরা কখনও কৃতকার্য হতে পারব না। চল, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে যাই এবং তার কসম সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেই।

এরপর আমরা ফিরে গিয়ে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম, আপনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু পরে আবার বাহন দিয়েছিলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম বা বুঝতে পারলাম, আপনি হয়ত কসম ভুলে গিয়েছেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা চলে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহই তো তোমাদেরকে বাহন দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছায় কোন বিষয়ে কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই তখন যেটার মধ্যে কল্যান আছে সেটি বাস্তবায়িত করি এবং কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।

হাম্মাদ ইবনু যায়িদ, আইউব, আবূ কিলাবা এবং কাসিম ইবনু আসিম কুলায়বী (রহঃ) থেকে উপরোক্ত হাদীসে ইসমাঈল ইবনু ইব্রাহিমের অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৫ | 6265 | ٦۲٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৫। কুতায়রা (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে উক্তরূপ বর্ণিত আছে। (দেখুন হাদিস নম্বর ৬২৬৪)

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৬ | 6266 | ٦۲٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৬। আবূ মামার (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকেও উক্তরূপ বর্ণিত আছে। (দেখুন হাদিস নম্বর ৬২৬৪)

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৭ | 6267 | ٦۲٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৭। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুর রাহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি নেতৃত্ব চাইও না। কেননা, চাওয়া ব্যতীত যদি তোমাকে তা দেওয়া হয় তবে তোমাকে তাতে সাহায্য করা হবে। আর যদি চাওয়ার পর তা তোমাকে দেওয়া হয় তবে তা তোমার দায়িত্বেই ছেড়ে দেওয়া হবে (অর্থাৎ ভাল মন্দের দায়িত্ব তোমারই থাকবে)। তুমি যখন কোন কিছুতে কসম কর আর কল্যাণ তার অন্যটির মাঝে দেখতে পাও। তখন যেটির মাঝে কল্যান সেটাই বাস্তবায়িত কর। আর তোমার কৃত কসমের কাফফারা আদায় করে দাও। আশহাল ইবনু হাতিম, ইবনু আউন থেকে এবং উসমান ইবনু আমর এর অনূসরণ করেছেন এবং ইউনুস, সিমাক ইবনু আতিয়্যা, সিমাক ইবনু হারব, হুমায়দ, কাতাদা, মানসুর, হিশাম ও রাবী উক্ত বর্ননায় আবদুল্লাহ ইবনু আউন এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৮ | 6268 | ٦۲٦۸

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন … দুই আয়াত পর্যন্ত
৬২৬৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আমার শুশ্রুষা করলেন। তাঁরা উভয়েই পদব্রজে আসলেন এবং আমার কাছে উপস্থিত হলেন। আমি তখন বেহুশ অবস্হায় ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং আমার উপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি ঢেলে দিলেন। আমি হুশে এসে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সম্পদের ব্যাপারে কি করব। আমার সস্পদের ব্যাপারে কি ব্যবস্হা গ্রহণ করব? তখন তিনি আমাকে কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হল।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৯ | 6269 | ٦۲٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৯১. উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া। উকবা ইবন আমির (রাঃ) বলেন, যারা ধারনাপ্রসূত কথা বলে তাদের এ ধরনের কথা বলার পূর্বেই তোমরা (উত্তরাধিকার বিদ্যা) শিখে নাও
৬২৬৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা পরিহার কর, কেননা, ধারণা করা হচ্ছে সর্বাধিক মিথ্যা। কারও দোষ তালাশ করো না, দোষ-বের করার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করো না, একে অপরের প্রতি হিংসা পোষণ করো না, পরিবারে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। আল্লাহর বান্দা পরস্পরে ভাই ভাই হয়ে যাও।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭০ | 6270 | ٦۲۷۰

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭১ | 6271 | ٦۲۷۱

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭১। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না। আমরা যা কিছু রেখে যাব সবই হবে সাদাকাস্বরূপ।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭২ | 6272 | ٦۲۷۲

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মুহাম্মদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম আমাকে (মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান) এর পক্ষ থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বলেনঃ আমি মালিক ইবনু আউস (রাঃ) এর কাছে চলে গেলাম এবং ঘটনাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন যে, আমি উমর (রাঃ) এর নিকট গিয়েছিলাম। এমন সময় তাঁর দারোয়ান ইয়ারফা সেখানে উপাস্থিত হয়ে বলল, আপনি উসমান, আবদুর রাহমান, যুবায়র ও সা’দ (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি তাঁদেরকে ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিলেন। এরপর সে উমর (রাঃ) এর নিকট এসে বলল, আপনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার এবং এর মাঝে মীমাংসা করে দিন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ আপনাদেরকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলি যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে; আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী থাকবে না, আমরা যা কিছু রেখে যাব সবই হবে সাদাকা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দ্বারা নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছিলেন। দলের লোকেরা বলল, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন। এরপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ)-এর দিকে মুখ করে বললেনঃ আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন? তারা উভয়ে জবাব দিলেন, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ এখন আমি এ ব্যাপারে আপনাদের কাছে বর্ণনা রাখছি যে, আল্লাহ তায়ালা এ ফায় (বিনা যুদ্ধেপ্রাপ্ত ধন সম্পদ) এর ব্যাপারে তার রাসুলকে বিশেষত্ব প্রদান করেছেন, যা আর অন্য কাউকে করেননি। তিনি (আল্লাহ তা’আলা) বলেনঃ ‏مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ‏ থেকে ‏قَدِيرٌ পর্যন্ত তিলাওয়াত করে শোনালেন। এবং বললেনঃ এটা তো ছিল বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য। আল্লাহ তা’আলার কসম! তিনি আপনাদের ব্যতীত অন্য কারও জন্য এ মাল সংরক্ষণ করেননি। আর আপনাদের ব্যতীত অন্য কাউকে এতে প্রাধান্য দেননি। এ মাল তো আপনাদেরই তিনি দিয়ে গিয়েছেন এবং আপনাদের মাঝেই বণ্টন করেছেন। পরিশেষে এ মালটুকু অবশিষ্ট ছিল। তখন তিনি তার পরিবার-পরিজনের বছরের ভরণ-পোষনের জন্য এ থেকে খরচ করতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল হিসেবে (তার রাস্তায়) খরচ করতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গোটা জীবদ্দশায়ই এরূপ করে গিয়েছেন। আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, এ কথাগুলো কি আপনারা জানেন? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর তিনি আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আপনাদের দু’জনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি এ কথাগুলো জানেন? তাঁরা উভয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নাবীকে ওফাত দান করলেন তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি আল্লাহর রাসুলের ওলী। এরপর উক্ত মাল হস্তগত করলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে তা ব্যবহার করেছিলেন তিনিও তা সেভাবে ব্যবহার করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা আবূ বকর (রাঃ)-এর ওফাত দান করলেন। তখন আমি বললাম, আমি আল্লাহর রাসুলের ওলীর ওলী। আমি এ মাল হস্তগত করলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এ মালের ব্যাপারে যে নীতি অবলম্বন করেছিলেন দু’বছর যাবত আমি এ মালের ব্যাপারে সেই নীতি অবলম্বন করে আসছি।

এরপর আপনারা আমার কাছে আসলেন আর আপনাদের উভয়ের বক্তব্যও এক এবং ব্যাপারটিও অনুরূপ। [হে আব্বাস (রাঃ)] আপনি তো আপনার ভাতিজার থেকে প্রাপ্য অংশ আমার কাছ চাইছেন। আর আলী (রাঃ) আমার কাছে তার স্ত্রীর অংশ যা তার পিতা থেকে প্রাপ্য আমার কাছে তলব করছেন। সুতরাং আমি বলছি, আপনারা যদি এটা চান তাহলে আমি আপনাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি। এরপর কি আপনারা অন্য কোন ফায়সালা আমার কাছে চাইবেন? ঐ আল্লাহর কসম! যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে। আমি যে ফায়সালা প্রদান করলাম কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া আর অন্য কোন ফায়সালা দিতে পারব না। আপনারা যদি এ ধনসম্পদের শৃংখলা বিধানে অক্ষম হন তবে তা আমার কাছে ফিরিয়ে দিবেন, আমি তার শৃংখলা বিধান করব।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৩ | 6273 | ٦۲۷۳

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার রেখে যাওয়া সম্পত্তির দ্বীনার বন্টনযোগ্য নয়। আমার সহধর্মিণীগণের এবং আমার কর্মচারীবৃন্দের খরচ ব্যতীত যতটুকু থাকবে তা হবে সাদাকাতুল্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৪ | 6274 | ٦۲۷٤

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৪। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তার সহধর্মিণীগণ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আপন আপন উত্তরাধিকার চাওয়ার জন্য উসমান (রাঃ) কে পাঠানোর ইচ্ছা করলেন। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এরূপ বলেননি, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নেই? আমরা যা রেখে যাব সবই হবে সাদাকাতুল্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৫ | 6275 | ٦۲۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি মাল রেখে যায় তা তার পরিবার-পরিজনের হবে
৬২৭৫। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু’মিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। যে ব্যাক্তি ঋনগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় আর সে যদি ঋণ পুরা করার মত কোন সম্পদ রেখে না যায় তাহলে তা আদায় করার দায়িত্ব আমার। আর যে ব্যাক্তি কোন মাল রেখে মারা যায় তা হবে তার উত্তরাধিকারীদের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৬ | 6276 | ٦۲۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৪. পিতা-মাতার পক্ষ থেকে সন্তানের উত্তরাধিকার। যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, কোন পুরুষ বা নারী যদি কন্যা সন্তান রেখে যায় তাহলে সে অর্ধাংশ পাবে। আর যদি তাদের সংখ্যা দুই বা ততোধিক হয় তারা পাবে দুই-তৃতীযাংশ। আর যদি উক্ত কন্যা বা কন্যা সমূহের সঙ্গে পুরুষ থাকে তাহলে প্রথমে অংশীদারদেরকে তাদের প্রাপ্ত দেয়ার পর বাকি অংশ দুই নারী সমান এক পুরুষ ভিত্তিতে বণ্টন করা হবে।
৬২৭৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মীরাস তার হকদারদেরকে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকে, তা নিকটতম পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৭ | 6277 | ٦۲۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৫. কন্যা সন্তানের উত্তরাধিকার
৬২৭৭। হুমায়দী (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কাতে একদা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লাম এবং এতে আমি মৃতপ্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেবা শুশ্রুষা করার জন্য আমার কাছে তশরীফ আনলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার তো অনেক ধন-সম্পদ রয়েছে। আর আমার একমাত্র কন্যা ব্যতীত আর কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমি কি দু’তৃতীয়াংশ মাল দান করে দেব? তিনি বললেনঃ না। (রাবী বলেন) আমি বললাম, তবে কি অর্ধেক দান করে দেব? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, এক-তৃতীয়াংশ কি দান করে দেব? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশতো অনেক। তুমি তোমার সন্তানকে অভাবগ্রস্ত অবস্হায় রেখে যাবে আর সে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করবে, এর চেয়ে তাকে সবল অবস্হায় রেখে যাওয়াটাই তো উত্তম।

তুমি (পবিবার-পরিজনের জন্য) যা খরচ করবে তার প্রতিদান তোমাকে দেওয়া হবে। এমন কি ঐ লোকমাটিরও প্রতিদান তোমাকে দেওয়া হবে যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি আমার হিজরতকৃত স্থান থেকে পশ্চাতে থেকে যাব? তিনি বললেন, আমার পশ্চাতে থেকে গিয়ে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে আমলই করবে তাতে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি পাবে। সম্ভবত তুমি আমার পরেও জীবিত থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা বহু সম্প্রদায় উপকৃত হবে এবং অন্যেবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু বেচারা সা’দ ইবনু খাওলী (রাঃ) এর জন্য আফসোস। মক্কাতেই হয়েছিল তার মৃত্যু। সে জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। “সুফিয়ান (রাঃ) বলেনঃ সা’দ ইবনু খাওলা (রাঃ) বনূ আমির ইবনু লুআই গোত্রের লোক ছিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৮ | 6278 | ٦۲۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৫. কন্যা সন্তানের উত্তরাধিকার
৬২৭৮। মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … আলওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) আমাদের নিকট মুআজিম অথবা আমীর হিসাবে ইয়ামানে এলে আমরা তাঁর কাছে এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, যে লোকটি এক কন্যা ও একটি ভগ্নি রেখে মারা গিয়েছে। তখন তিনি কন্যাটিকে সম্পত্তির অর্ধেক ও বোনকে অর্ধেক প্রদান করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৯ | 6279 | ٦۲۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৬. পুত্রের অবর্তমানে নাতির উত্তরাধিকার। যায়িদ (রাঃ) বলেন, পুত্রের সন্তানাদি পুত্রের মতই, যখন তাকে ছাড়া আর কোন সন্তান না থাকে। নাতিগণ পুত্রদের মত আর নাতনীগণ কন্যাদের মত। পুত্রদের মত নাতনীগণও উত্তরাধিকার হয়, আবার পুত্রগণ যেরূপ অন্যদেরকে মাহরুম করে নাতিগণও সেরূপ অন্যদেরকে মাহরুম করে। আর নাতিগণ পুত্রদের বর্তমানে উত্তরাধিকারী হয় না।
৬২৭৯। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রাপ্যাংশ (মিরাস) তাদের হকদারদের কাছে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশ্যই থাকবে তা নিকটতম-পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮০ | 6280 | ٦۲۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৭. কন্যার বর্তমানে পুত্র তরফের নাতনীর উত্তরাধিকার
৬২৮০। আদম (রহঃ) … হুযায়ল ইবনু শুরাহবীল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবূ মূসা (রাঃ) কে কন্যা, পুত্র পক্ষের নাতনী এবং ভগ্নির উত্তরাধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক। (তিনি বললেন) তোমরা ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে দেখ, তিনিও হয়ত আমার মত উত্তর দিবেন। সুতরাং ইবনু মাসউদ (রাঃ) কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল এবং আবূ মূসা (রাঃ) যা বলেছেন সে সম্পর্কেও তাকে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ আমি তো গোমরা হয়ে যাব, হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারব না। আমি এ ব্যাপারে তোমাদের মাঝে ঐ ফায়সালাই করব, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ফায়সালা প্রদান করেছিলেন। কন্যা পাবে অর্ধাংশ আর নাতনী পাবে ষষ্ঠাশ। এভাবে দুতৃতীয়াংশ পুরু হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ থাকবে ভন্নির জন্য। এরপর আমরা আবূ মূসা (রাঃ)-এর কাছে আসলাম এবং ইবনু মাসউদ (রাঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেনঃ যতদিন এ অভিজ্ঞ আলিম (জ্ঞানতাপস) তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকবে ততদিন আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮১ | 6281 | ٦۲۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৮. পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ), ইবনু আব্বাস (রাঃ) এবং ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন যে, দাদা পিতার মতই। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এরূপ পড়েছেন يَا بَنِي آدَمَ، وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَائِي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ বস্তুত এরকম কেউ ই বলেননি যে, আবূ বকর (রাঃ)এর যামানায় কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। অথচ সে সময়ে নবী করীম (সাঃ) এর অনেক সাহাবী বিদ্যমান ছিল। আর ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার নাতি আমার উত্তরাধিকারী হবে, আমার ভাই নয়। তবে আমি আমার নাতির উত্তরাধিকারী হব না। তবে উমর আলী ইবনু্ মাসঊদ এবং যায়িদ (রাঃ) থেকে এ সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়।
৬২৮১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ প্রাপ্যাংশ তার হকদারকে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অর্বশিষ্ট থাকবে তা নিকটতম পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮২ | 6282 | ٦۲۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৮. পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ), ইবনু আব্বাস (রাঃ) এবং ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন যে, দাদা পিতার মতই। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এরূপ পড়েছেন يَا بَنِي آدَمَ، وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَائِي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ বস্তুত এরকম কেউ ই বলেননি যে, আবূ বকর (রাঃ)এর যামানায় কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। অথচ সে সময়ে নবী করীম (সাঃ) এর অনেক সাহাবী বিদ্যমান ছিল। আর ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার নাতি আমার উত্তরাধিকারী হবে, আমার ভাই নয়। তবে আমি আমার নাতির উত্তরাধিকারী হব না। তবে উমর আলী ইবনু্ মাসঊদ এবং যায়িদ (রাঃ) থেকে এ সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়।
৬২৮২। আবূ মা’মার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি এ উম্মাত থেকে কাউকে খলীল (অন্তরঙ্গ বন্ধু) বানাতাম তবে তাকে [আবূ বকর (রাঃ)] কে বানাতাম। কিন্তু ইসলামী বন্ধুত্বই হচ্ছে সর্বোত্তম। أَفْضَلُ শব্দ বলেছেনঃ না কি خَيْرٌ এতে রাবীর সন্দেহ আছে। তিনি দাদাকে পিতার মর্যাদা দিয়েছেন أَنْزَلَهُ أَبًا‏ অথবা قَضَاهُ أَبًا বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৩ | 6283 | ٦۲۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৯. সন্তানাদির বর্তমানে স্বামীর উত্তরাধিকার
৬২৮৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (প্রথমে) মাল ছিল সন্তানাদির আর ওসিয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। কিন্তু পরে আল্লাহ তা রহিত করে দিয়ে এর চেয়ে উত্তমটি প্রবর্তন করেছেন। পূরুষের জন্য নারীদের দু’জনের সমতূল্য অংশ নির্ধারণ করেছেন। আর পিতা-মাতার প্রত্যেকের জন্য এক-যষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন। স্ত্রীর জন্য নির্ধারণ করেছেন (সন্তান থাকা অবস্থায়) এক-অষ্টমাংশ এবং (সন্তান না থাকলে) এক-চতূর্থাংশ। আর স্বামীর জন্য (সন্তান না থাকলে) অর্ধেক আর (সন্তান থাকলে) এক-চতুর্থাংশ।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৪ | 6284 | ٦۲۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৮০০. সন্তানাদির বর্তমানে স্বামী ও স্ত্রীর উত্তরাধিকার
৬২৮৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী লিহয়ান গোত্রের জনৈক মহিলার একটি ভ্রুণপাত সংক্রান্ত ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গোলাম বা দাসী প্রদানের নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি যে মহিলাটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সে মারা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফায়সালা দিলেন, তার উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি তার পুত্রগণ ও স্বামীর জন্য। আর দিয়াত (গোলাম বা বাদী) তার আসাবার জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৫ | 6285 | ٦۲۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৮০১. কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নি আসাবা হিসাবে উত্তরাধিকারিণী হয়
৬২৮৫। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় আমাদের মাঝে এ ফায়সালা দিয়েছিলেন যে, কন্যা পাবে সম্পত্তির অর্ধেক আর ভগ্নির জন্যও অর্ধেক। এরপর সনদস্থিত রাবী সুলায়মান বলেন, তিনি (আল আসওয়াদ) আমাদের এ ব্যাপারে মীমাংসা করেছিলেন। তবে عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায়) কথাটি উল্লেখ করেনি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৬ | 6286 | ٦۲۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৮০১. কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নি আসাবা হিসাবে উত্তরাধিকারিণী হয়
৬২৮৬। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … হুযায়ল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, আমি এতে ঐ ফয়সালাই করব যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছিলেন। অথবা তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (তা হচ্ছে) কন্যার জন্য সম্পত্তির অর্ধেক আর পুত্র পক্ষের নাতনীদের জন্য ষষ্ঠাংশ। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা ভগ্নির জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৭ | 6287 | ٦۲۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৮০২. ভগ্নিগণ ও ভ্রাতৃগণের উত্তরাধিকার
৬২৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু উসমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট তশরীফ আনলেন। এসে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি চাইলেন এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র বেঁচে যাওয়া পানি থেকে আমার উপর ঢেলে দিলেন। তখন আমি প্রকৃতিস্থ হলাম এবং আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ভগ্নিগণ আছে ঐ সময় উত্তরাধিকার বিষয়ক আয়াত নাযিল হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৮ | 6288 | ٦۲۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৮০৩. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা আপনার নিকট ব্যবস্থা জানতে চায়। বলুন, পিতা মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে তোমাদেরকে আল্লাহ ব্যবস্থা জানাচ্ছেন … আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬২৮৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … বারআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত হচ্ছে সূরা নিসার আখেরী আয়াতঃ ‏يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ‏

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৯ | 6289 | ٦۲۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৮০৪. (কোন মেয়েলোকের) দু’জন চাচাতো ভাই, তন্মধ্যে একজন যদি মা শরীক ভাই আর অপরজন যদি স্বামী হয়। আলী (রাঃ) বলেন, স্বামীর জন্য অংশ হচ্ছে অর্ধেক আর মা শরীক ভাই-এর অংশ এক ষষ্ঠাংশ। এরপর অবশিষ্টাংশ দু’ এর মাঝে আধাআধি হারে দিতে হবে।
৬২৮৯। মাহমুদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মুমিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। যে ব্যাক্তি ধন-সম্পদ রেখে মারা যায় তার ধন-সম্পদ তার আসাবাগণ লাভ করবে। আর যে ব্যাক্তি বোঝা অথবা সন্তানাদি (ঋণ) রেখে মারা যায় আমিই হব তার অভিভাবক। সুতরাং আমার কাছেই যেন তা চাওয়া হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯০ | 6290 | ٦۲۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৮০৪. (কোন মেয়েলোকের) দু’জন চাচাতো ভাই, তন্মধ্যে একজন যদি মা শরীক ভাই আর অপরজন যদি স্বামী হয়। আলী (রাঃ) বলেন, স্বামীর জন্য অংশ হচ্ছে অর্ধেক আর মা শরীক ভাই-এর অংশ এক ষষ্ঠাংশ। এরপর অবশিষ্টাংশ দু’ এর মাঝে আধাআধি হারে দিতে হবে।
৬২৯০। উমাইয়্যা ইবনু বিসতাম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রাপ্যাংশ তার হকদারের কাছে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তার মালিক হবে তার নিকটতম পুরুষ ব্যাক্তি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯১ | 6291 | ٦۲۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৮০৫. যাবিল আরহাম
৬২৯১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ‏}‏ ‏{‏وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ‏ এ আয়াত সম্পর্কে বলেন যে, মুহাজিরগণ যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারগগের মাঝে যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করে দিয়েছিলেন, সে প্রেক্ষিতে আনসারগণের সাথে যাদের যাবিল আরহাম এর সম্পর্ক ছিল তা বাদ দিয়ে মুহাজিরগগ আনসারগণের সম্পতির উত্তরাধিকার হতেন। এরপর যখন وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ এর আয়াত নাযিল হয়, তখন وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ আয়াতের বিধানটি রহিত হয়ে যায়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯২ | 6292 | ٦۲۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৮০৬. লি’আনকারীদের উত্তরাধিকার
৬২৯২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় তার স্ত্রীর সঙ্গে লি-আন করেছিল। এবং তার সন্তানটিকেও অস্বীকার করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দু’জনের মাঝে (বিবাহ) বিচ্ছেদ করে দিলেন এবং সন্তানটি মহিলাকে দিয়ে দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৩ | 6293 | ٦۲۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৮০৭. শয্যাসঙ্গিনী আযাদ হোক বা বাঁদী, সন্তান শয্যাধিপতির
৬২৯৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, উতবা তার ভাই সা’দকে ওসীয়াত করল যে, যামাআ নামক বাদীর সন্তানটি আমার। তাই তুমি তাকে তোমার হস্তগত করে নাও। মক্কা বিজয়ের বছর সা’দ তাকে হস্তগত করলেন এবং বললেন যে, এ আমার ভ্রাতুষ্পুত্র। আমার ভাই এর সম্পর্কে ওসীয়্যত করে গিয়েছিলেন। তখন আবদ ইবনু যামআ দাঁড়িয়ে বললেন, এ তো আমার ভাই। কেননা, এ হচ্ছে আমার পিতার বাঁদীর পুত্র। এবং সে আমার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর গর্ভে জন্ম নিয়েছে। উভয়েই তাঁদের মুকদ্দমা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলেন।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ, এ ছেলে তুমিই পাবে। কেননা, সন্তান সে-ই পেয়ে থাকে যার শয্যাসঙ্গিনীর গর্ভে জন্ম নেয়। আর ব্যভিচারকারীর জন্য হল পাথর। এরপর তিনি সাওদা বিনত যামআকে বললেনঃ তুমি এ ছেলে থেকে পর্দা পালন করবে। কেননা, তিনি তার মাঝে উতবার সাদৃশ্য দেখতে পেয়েছিলেন। সুতরাং সাওদা (রাঃ) সে ছেলেটিকে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ (মৃত্যু) পর্যন্ত আর দেখেননি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৪ | 6294 | ٦۲۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৮০৭. শয্যাসঙ্গিনী আযাদ হোক বা বাঁদী, সন্তান শয্যাধিপতির
৬২৯৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, সন্তান হল শয্যাধিপতির।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৫ | 6295 | ٦۲۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৮০৮. অভিভাকত্ব ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করবে। আর লাকিত এর উত্তরাধিকার। ‘উমার (রাঃ) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ
৬২৯৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বারীরা (নামী বাঁদী) কে ক্রয় করতে চাইলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় করতে পার। কেননা, অভিভাবকত্ব তো ঐ ব্যাক্তির জন্য, যে আযাদ করে। বারীরাকে একদা একটি বকরী সাদাকা দেওয়া হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটি তার জন্য সাদাকা আর আমাদের জন্য হাদিয়া। হাকাম বলেন, বারীরার স্বামী একজন আযাদ ব্যাক্তি ছিল। আবূ আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ হাকামের বর্ণনা সনদ হিসাবে মুরসাল। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে (বারীরার স্বামীকে) গোলামরূপে দেখেছি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৬ | 6296 | ٦۲۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৮০৮. অভিভাকত্ব ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করবে। আর লাকিত এর উত্তরাধিকার। ‘উমার (রাঃ) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ
৬২৯৬। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই অভিভাবকত্ব ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করবে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৭ | 6297 | ٦۲۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৮০৯. সায়বার উত্তরাধিকার
৬২৯৭। কাবীসা ইবনু উকবা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলে ইসলাম (মুসলমানগণ) সায়বা বানায় না। তবে জাহেলী যামানার লোকেরা সায়বা বানাত।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৮ | 6298 | ٦۲۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৮০৯. সায়বার উত্তরাধিকার
৬২৯৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা সিদ্দিকা (রাঃ) বারীরা বাদীকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে ক্রয় করতে চাইলেন। আর তার মনিব তার ওয়ালার (অভিভাবকত্বের) শর্ত করল (নিজেদের জন্য)। তখন আয়িশা (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বারীরাকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে ক্রয় করতে চাই। অথচ তার মনিবরা তার ওয়ালার শর্ত করছে। তিনি বললেনঃ তাকে (ক্রয় করে) আযাদ কর। কেননা, অভিভাবকত্ব ঐ ব্যাক্তির জন্যই হয়ে থাকে, যে ব্যাক্তি আযাদ করে। অথবা তিনি বললেনঃ তার মূল্য দিয়ে দাও। তিনি বলেনঃ তখন তিনি তাকে ক্রয় করলেন এবং আযাদ করে দিলেন। তিনি আরও বললেন, তাকে তার (স্বামীর সাথে) যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে ইখতিয়ার দেওয়া হল। সে নিজেকে ইখতিয়ার করল এবং বলল, আমাকে যদি এরূপ এরূপ কিছু দেওয়াও হয় তবুও আমি তার সাথী হব না। আসওয়াদ (রহঃ) বলেনঃ তার স্বামী আযাদ ছিল। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আসওয়াদ এর বক্তব্য বিচ্ছিন্ন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর বক্তব্য ‘আমি (বারীরার স্বামীকে) তাকে গোলামরূপে দেখেছি’ বিশুদ্ধতর।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৯ | 6299 | ٦۲۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৮১০. যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার খেলাফ কাজ করে তার গুনাহ
৬২৯৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবরাহীম তামীমীর পিতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাঃ) বলেছেন, কিতাবুল্লাহ ব্যতীত আমাদের আর কোন কিতাব তো নেই যা আমরা পাঠ করতে পারি। তবে এ লিপিখানা আছে। রাবী বলেন, এরপর তিনি তা বের করলেন। দেখা গেল যে, তাতে যখম ও উটের বয়স সংক্রান্ত কথা লিপিবদ্ধ আছে। বারী বলেন, তাতে আরও লিপিবদ্ধ ছিল যে, আইর থেকে নিয়ে অমুক স্থানের মধ্যবর্তী মদিনার হারাম। এখানে যে (ধর্মীয় ব্যাপারে) বিদআত করবে বা বিদআতকারীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহর ফেরেশতা এবং সকল মানুষের লানত। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার কোন ফরয আমল এবং কোন নফল কবুল করবেন না। যে ব্যাক্তি মনিবের অনুমতি ছাড়া কোন গোলামকে আশ্রয় প্রদান করে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সমস্ত মামুষের লা’নত। তার কোন ফরয বা নফল কিয়ামতের দিন কবুল করা হরে না। সমস্ত মুসলমানের জিম্মাই এক, একজন সাধারণ মুসলমান এর চেষ্টা করবে। যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের আশ্রয় প্রদানকে বাচনাল করে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতার এবং সকল মানুষের লা’নত। কিয়ামতের দিন তার কোন ফরয ও নফল কবুল করা হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০০ | 6300 | ٦۳۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৮১০. যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার খেলাফ কাজ করে তার গুনাহ
৬৩০০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অক্তিভাবকত্ব বিক্রয় এবং হেবা করতে নিষেধ করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০১ | 6301 | ٦۳۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৮১১. কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে হাসান (রাঃ) তার জন্য এতে ওয়ালার স্বীকৃতি দিতেন না। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করে। তামীম দারী (রাঃ) থেকে মারফু’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, ওয়ালা তার আযাদকারীর কাছে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তার মৃত্যু ও জীবন যাপনের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটে। তবে এ খবরের সত্যতার ব্যাপারে অন্যেরা মতানৈক্য করেছেন।
৬৩০১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) আযাদ করার জন্য একটি বাদী ক্রয় করতে চাইলেন। তখন তার মনিবরা তাকে বলল যে, আমরা এ বাদী আপনার কাছে এ শর্তে বিক্রি করতে পারি যে, ওয়ালা হবে আমাদের জন্য। তিনি এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আলোচনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটা তোমার জন্য কোন বাধা নয়। কারন ওয়ালা হচ্ছে ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০২ | 6302 | ٦۳۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৮১১. কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে হাসান (রাঃ) তার জন্য এতে ওয়ালার স্বীকৃতি দিতেন না। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করে। তামীম দারী (রাঃ) থেকে মারফু’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, ওয়ালা তার আযাদকারীর কাছে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তার মৃত্যু ও জীবন যাপনের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটে। তবে এ খবরের সত্যতার ব্যাপারে অন্যেরা মতানৈক্য করেছেন।
৬৩০২। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরা বাদীকে আমি ক্রয় করলাম। তখন তার মালিকেরা তার ওয়ালার শর্ত করল। এ ব্যাপারে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আলোচলা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আযাদ করে দাও। কেননা, ওয়ালা ঐ ব্যাক্তির জন্য যে রৌপ্য প্রদান করে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে আযাদ করে দিলাম। তিনি বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরাকে ডাকলেন এবং তার স্বামীর ব্যাপারে তাকে স্বাধীনতা দিলেন। তখন সে বলল সে যদি আমাকে এরূপ এরূপ মালও দেয় তবুও আমি তার সাথে রাত যাপন করব না। এবং সে নিজেকেই ইখতিয়ার করল।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৩ | 6303 | ٦۳۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৮১২. নারীগণ ওয়ালার উত্তরাধিকারী হতে পারে
৬৩০৩। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বারীরা বাদীকে ক্রয় করার ইচ্ছা করলেন। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বললেন যে, তারা (মালিকেরা) ওয়ালার শর্ত করছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় করে নাও। কেননা, ওয়ালা তো হচ্ছে ঐ ব্যাক্তির, যে আযাদ করে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৪ | 6304 | ٦۳۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৮১২. নারীগণ ওয়ালার উত্তরাধিকারী হতে পারে
৬৩০৪। ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ওয়ালা হল ঐ ব্যাক্তির জন্য যে রৌপ্য (মূল্য) প্রদান করে। আর সে নিয়ামতের অধিকারী হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৫ | 6305 | ٦۳۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৮১৩. কোন কওমের আযাদকৃত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আর বোনের ছেলেও ঐ কাওমের অন্তর্ভূক্ত
৬৩০৫। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনুু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন কাওমের (আযাদকৃত) গোলাম তাদেরই অন্তর্ভুক্ত অথবা এ জাতীয় কোন কথা বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৬ | 6306 | ٦۳۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৮১৩. কোন কওমের আযাদকৃত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আর বোনের ছেলেও ঐ কাওমের অন্তর্ভূক্ত
৬৩০৬। আবূল ওযালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন কাওমের বোনের পুত্র সে কাওমেরই অন্তর্ভুক্ত। এখানে তিনি مِنْهُمْ বলেছেন অথবা مِنْ أَنْفُسِهِمْ বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৭ | 6307 | ٦۳۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৮১৪. বন্দীর উত্তরাধিকার। শুরায়হ শত্রুদের হাতে বন্দী মুসলমানদের উত্তরাধিকার প্রদান করতেন এবং বলতেন এ বন্দী লোক উত্তরাধিকারের প্রতি বেশী মুখাপেক্ষী। উমর ইবন আবদুল আযীয (রহঃ) বলেন, বন্দী ব্যক্তির ওসিয়ত, তাকে আযাদ কর এবং তার মালের ব্যবহারকে জায়েয মনে কর, যতক্ষন না সে আপন ধর্ম থেকে ফিরে যায়। কেননা, এ হচ্ছে তারই মাল। সে এতে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে
৬৩০৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ধন-সস্পদ রেখে মারা যায় সে ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য। আর যে ঋণ রেখে (মারা) যায় তা (আদায় করা) আমার যিম্মায়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৮ | 6308 | ٦۳۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৮১৫. মুসলমান কাফেরের এবং কাফির মুমুসলমানের উত্তরাধিকারী হয় না। কোন ব্যক্তি সম্পত্তি বন্টনের পূর্বে মুসলিম হয়ে গেলে সে মিরাস পাবে না
৬৩০৮। আবূ আসিম (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান কাফেরের উত্তরাধিকারী হয় না আর কাফেরও মুসলমানের উত্তরাধিকারী হয় না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৯ | 6309 | ٦۳۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৮১৭. যে ব্যক্তি কাউকে ভাই বা ভ্রাতুষ্পুত্র হওয়ার দাবি করে
بَابُ مِيرَاثِ الْعَبْدِ النَّصْرَانِيِّ وَمُكَاتَبِ النَّصْرَانِيِّ، وَإِثْمِ مَنِ انْتَفَى مِنْ وَلَدِهِ

২৮১৬. নাসারা গোলাম ও নাসারা মাকতিবের মিরাস এবং যে ব্যাক্তি আপন সন্তানকে অস্বীকার করে তার গুনাহ

৬৩০৯ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) ও আবদু ইবনু যামআ একটি ছেলের ব্যাপারে পরস্পরে কথা কাটাকাটি করেন। সা’দ (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ ছেলেটি আমার ভাই উতবা ইবনু আবূ ওয়াককাস-এর পূত্র। তিনি আমাকে ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে! এ ছেলেটি তার পূত্র। আপনি তার আকৃতির দিকে লক্ষ্য করে দেখুন। আবদ ইবনু যামআ বললো! এ আমার ভাই, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ আমার পিতার ঔরসে তার কোন বাদীর গর্ভে জন্মগ্রহন করেছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আকৃতির দিকে নযর করলেন এবং উতবার আকৃতির সাথে তার আকৃতির প্রকাশ্য মিল দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আবদ। এ ছেলে তুমিই পাবে। কেননা সন্তান যথাযথ শয্যাপতির আর ব্যাভিচারীর জন্য হল পাথর। আর হে সাওদা বিনত যামআ! তুমি তার থেকে পর্দা কর। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এরপরে সে কখনও সাওদার সাথে দেখা দেয়নি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১০ | 6310 | ٦۳۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৮১৮. প্রকৃত পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে দাবি করা
৬৩১০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি অন্য লোককে পিতা বলে দাবি করে অথচ সে জানে যে সে তার পিতা নয়, জান্নাত তার জন্য হারাম। রাবী বলেন, আমি এ কথাটি আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে আলোচলা করলাম। তখন তিনি বললেন, আমার কান দু’টি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথা শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষণ করেছে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১১ | 6311 | ٦۳۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৮১৮. প্রকৃত পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে দাবি করা
৬৩১১। আসবাগ ইবনু ফারাজ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না (অস্বীকার করো না)। কেননা, যে ব্যাক্তি আপন পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (পিতাকে অস্বীকার করে) এটি কুফরী।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১২ | 6312 | ٦۳۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৮১৯. কোন মহিলা কাউকে পুত্র হিসাবে দাবি করলে তার বিধান
৬৩১২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’জন মহিলার সঙ্গে তাদের দু’টি ছেলে ছিল। বাঘ এসে (একদিন) তাদের একজনের ছেলেকে নিয়ে গেল। একজন মহিলা তার অপর সঙ্গিনীকে বলল যে বাঘে তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। অপরজন বলল যে বাঘে তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। তারা উভয়ে দাউদ (আঃ) এর কাছে তাদের মুকাদ্দমা দায়ের করল। তিনি বড় মহিলাটির সম্পর্কে ফায়সালা প্রদান করলেন। এরপর তারা বের হয়ে দাউদ (আঃ) এর পুত্র সুলায়মান (আঃ) এর কাছে গেল এবং উভয়েই তাকে তাদের ঘটনা অবহিত করল। তখন তিনি বললেন, আমাকে একটি ছুরি দাও, আমি একে দু’টুকরা করে দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেব। তখন ছোট মহিলাটি বলল, আপনি এরূপ করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর দয়া করুন। এ ছেলেটি তারই। তিনি ছেলেটি ছোট মহিলার পক্ষে রায় দিলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি ছুরি অর্থে سكين শদটি সে দিনই শুনেছি পূর্বে তো আমরা একে مدية বলতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৩ | 6313 | ٦۳۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৮২০. চিহ্ন ধরে অনুসরণ
৬৩১৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন এত প্রফুল্ল অবস্থায় যে, তার চেহারার চিহ্নগুলি চমকাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি দেখনি যে, মুজাযযিয (চিহ্ন ধরে বংশ উদঘাটনকারী) যায়িদ ইবনু হারিসা এবং উসামা ইবনু যায়িদ এর দিকে সন্ধানী দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। এরপর সে বলেছে, এদের দু’জনের কদম একে অপর থেকে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৪ | 6314 | ٦۳۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৮২০. চিহ্ন ধরে অনুসরণ
৬৩১৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে প্রফুল্ল অবস্হায় এলেন এবং বললেনঃ হে আয়িশা! (চিহ্ন ধরে বংশ উদঘাটনকারী) এসেছে তা কি তুমি দেখনি? এসেই সে উসামা এবং যায়িদ এর দিকে নযর করেছে। তারা উভয়ে চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিল। তাদের মাথা ঢেকে রাখা ছিল। তবে তাদের পাগুলো দেখা যাচ্ছিল। তখন সে বলল এদের পাগুলো একে অপর থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৫ | 6315 | ٦۳۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৮২১. যিনা ও মদ্য পান। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, ব্যভিচারের কারণে ঈমানের নূর দূর হয়ে যায়
بَابُ مَا يُحْذَرُ مِنَ الْحُدُودِ
অনুচ্ছেদঃ হুদুদ (শরীয়তের শাস্তি) থেকে ভীতি প্রদর্শন

৬৩১৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যভিচারী ব্যাভিচার করার সময় মু’মিন থাকে না। কোন শরাব পানকারী শরাব পান করার সময় মুমিন থাকে না। কোন চোর চুরি করার সময় মুমিন থাকে না এবং কোন ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, মানুষ তা দেখার জন্য তাদের চোখ সেদিকে উত্তোলিত করে; তখন সে মুমিন থাকে না।

ইবনু শিহাব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাতে النُّهْبَةَ শব্দটি নেই।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৬ | 6316 | ٦۳۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৮২২. শারাবপায়ীকে প্রহার করা
৬৩১৬। ইবনু আবূ ইয়াস ও হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৭ | 6317 | ٦۳۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৮২৩. যে ব্যক্তি ঘরের ভিতর শরীয়াতের শাস্তি দেয়ার হুকুম দেয়
৬৩১৭। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নু’আয়মান অথবা (রাবীর সন্দেহ) নু’আয়মানের পুত্রকে শরাবপায়ী হিসাবে আনা হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে যারা ছিল তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। রাবী বলেন, তারা তাকে প্রহার করল, যারা তাকে জুতা মেরেছিল তাদের মাঝে আমিও একজন ছিলাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৮ | 6318 | ٦۳۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা নু’আয়মান অথবা (রাবীর সন্দেহ) নূআয়মানের পুত্রকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। এটা তার কাছে অস্বস্তিকর মনে হল। তখন ঘরের ভিতরে যারা ছিল তিনি তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। সুতরাং তারা একে বেত্রাঘাত করল এবং জুতা মারল। রাবী বলেন, যারা তাকে প্রহার করেছিল, আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৯ | 6319 | ٦۳۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩১৯। মুসসিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত করেছেন এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২০ | 6320 | ٦۳۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২০। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তিকে আনা হল, সে শরাব পান করেছিল। তিনি বললেন, একে তোমরা প্রহার কর। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তখন আমাদের মধ্যে কেউ হল তাকে হাত দিয়ে প্রহারকারী, কেউ হয় জুতা দিয়ে প্রহারকারী, আর কেউ হল কাপড় দিয়ে প্রহারকারী। যখন সে প্রত্যাবর্তন করল। কেউ তার সমন্ধে মন্তব্য করল যে, আল্লাহ তা’আলা তোমাকে লাঞ্চিত করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরুপ বলো না, শয়তানকে এর বিরুদ্ধে সাহায্য করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২১ | 6321 | ٦۳۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদূল ওয়াহহাব (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যদি কোন অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করি আর সে তাতে মরে যায় তবে মনে কোন দুঃধ আসে না কিন্তু শরাব পানকারী ব্যতীত। সে যদি মারা যায় তবে তার জন্য আমি দিয়াত দিয়ে থাকি। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাস্তির ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেন নি।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২২ | 6322 | ٦۳۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২২। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় ও আবূ বকর (রাঃ) এর খিলাফত কালে এবং উমর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথম দিকে আমাদের কাছে যখন কোন মদ্যপায়ীকে আনা হল। তখন আমরা তাকে হাত দিয়ে জুতা দিয়ে এবং আমাদের চাদর দিয়ে তাদের প্রহার করতাম। এমনিভাবে যখন উমর (রাঃ) এর খিলাফতের শেষ সময় হল তখন তিনি চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন। আর এ সব মদ্যপ যখন সীমালংঘন করেছে এবং অনাচার করা শুরু করে দিয়েছে তখন আশিটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৩ | 6323 | ٦۳۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৮২৫. শারাব পানকারীকে লা’নত করা মাকরূহ এবং সে মুসলিম থেকে খারিজ নয়
৬৩২৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় এক ব্যাক্তি যার নাম ছিল আবদুল্লাহ আর লকব ছিল হিমার। এ লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাসাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার অপরাধে তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। একদিন তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আনা হল। তিনি তাকে বেত্রাঘাতের আদেশ দিলেন। তাকে বেত্রাঘাত করা হল। তখন দলের মাঝ থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহ! তার উপর লানত বর্ষণ করুন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে কতবার আনা হল! তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে লানত করো না। আল্লাহর কসম। আমি তাকে জানি যে, সে অবশ্যই আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে ভালবাসে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৪ | 6324 | ٦۳۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৮২৫. শারাব পানকারীকে লা’নত করা মাকরূহ এবং সে মুসলিম থেকে খারিজ নয়
৬৩২৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি মাতাল লোককে আনা হল। তিনি তাকে প্রহার করার জন্য দাঁড়ালেন। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে এবং কেউবা কাপড় দিয়ে প্রহার করেছিল। লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যাক্তি বলল, এর কি হল, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৫ | 6325 | ٦۳۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৮২৬. চোর যখন চুরি করে
৬৩২৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ব্যভিচারী ব্যভিচার করে না, যখন কিনা সে মুমিন। এবং চোর চুরি করে না যখন কিনা সে মুমিন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৬ | 6326 | ٦۳۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৮২৭. চোরের নাম না নিয়ে তার উপর লা’নত করা
৬৩২৬। আমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াছ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চোরের উপর আল্লাহর লা’নত নিপতিত হয়, যখন সে একটি ডিম চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায় এবং সে একটি রশি চুরি করে। এর জন্য তার হাত কাটা যায়। আমাশ (রহঃ) বলেনঃ ডিম দ্বারা লোহার টুকরা এবং রশি দ্বারা কয়েক দিরহাম মুল্যমানের রশিকে বোঝানো হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৭ | 6327 | ٦۳۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৮২৮. হুদুদ (শরীয়াতের শাস্তি) (গুনাহর) কাফফারা হয়ে যায়
৬৩২৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন এক মজলিসে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা আমার কাছে এ মর্মে বায়আত গ্রহন কর যে, আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না এবং ব্যাভিচার করবে না। এরপর তিনি এ আয়াত পুরা তিলাওয়াত করেনঃ “তোমাদের মাঝে যে ব্যাক্তি (বায়আতের শর্তসমূহ) পুরা করে তার বিনিময় আল্লাহ তা’আলার কাছে। আর যে ব্যাক্তি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর তার জন্য শাস্তি দেওয়া হয় তবে এটা তার জন্য কাফফারা হয়ে যায়। আর যদি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর আল্লাহ তা গোপন রাখেন তবে এটা তার ইখতিয়ার। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে মাপ করতে পারেন, ইচ্ছা করলে শাস্তি দিতে পারেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৮ | 6328 | ٦۳۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৮২৯. শরীয়তের কোন হদ্দ (শাস্তি) বা হক ব্যতীত মু’মিনের পিঠ সংরক্ষিত
৬৩২৮। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জে (হজ্জ) বললেনঃ (হে লোক সকল) কোন মাসকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তারা বললেনঃ আমাদের এ-মাস নয় কি? তিনি আবার বললেনঃ তোমরা কোন শহরকে সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? সকলেই বললেনঃ আমাদের এ শহর নয় কি? তিনি বললেনঃ ওহে! কোন দিনকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তাঁরা বললেনঃ আমাদের এ দিন নয় কি? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের রক্ত, ধন-সম্পদ ও সম্মানকে শবীয়তের হক ব্যতীত এমন পবিত্র করে দিয়েছেন, যেমন পবিত্র তোমাদের এ মাসে এ শহরের মাঝে আজকের এ দিনটিকে। ওহে! আমি কি পৌছিয়েছি? এ কথাটি তিনি তিনবার উল্লেখ করলেন। আর প্রত্যেক বারেই লোকেরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমাদের জন্য আফসোস অথবা ধবংস! তোমরা আমার পরে একে অপরের গর্দানে আঘাত করে কুফূরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৯ | 6329 | ٦۳۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩০. শরীয়াতের হদসমূহ (শাস্তি) কায়িম করা এবং আল্লাহ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজে প্রতিশোধ নেয়া
৬৩২৯। ইয়াহইয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখনই (আল্লাহ তা আলার পক্ষ হতে) দুটি কাজের মধ্যে ইখতিয়ার প্রদান করা হত, তখন তিনি তন্মধ্যে সহজতরটিকে বেছে নিতেন, যতাক্ষণ না সেটা গুনাহর কাজ হত। যদি তা গুনাহর কাজ হত তবে তিনি তা থেকে অনেক দূরে থাকতেন। আল্লাহর কসম তিনি কখনও তার নিজের কোন কিছুর গ্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহর হারাম সমূহকে ছিন্ন করা হত। তা হয়ে থাকলে প্রতিশোধ নিতেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩০ | 6330 | ٦۳۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩১. আশরাফ-আতরাফ (উঁচু-নীচ) সকলের ক্ষেত্রে শরীয়াতের শাস্তি কায়িম করা
৬৩৩০. আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উসামা (রাঃ) জনৈক মহিলার ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সুপারিশ করলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহ ধরুংস হয়ে গিয়েছে। কারন তারা আতরাফ (নিম্নশ্রেনীর) লোকদের উপর শরীয়তের শাস্তি কায়েম করত। আর শরীফ লোকদেরকে রেহাই দিত। ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জান, ফাতিমাও যদি এ কাজ করত, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাত কেটে দিতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩১ | 6331 | ٦۳۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩২. বাদশাহর নিকট যখন মুকাদ্দামা পেশ করা হয় তখন শারী’আতের শাস্তির বেলায় সুপারিশ করা অসমীচীন
৬৩৩১। সাঈদ ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মাখযুমী সম্প্রদায়ের জনৈকা মহিলার ব্যাপারে কুরাইশ বংশের লোকদের খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল যে কিনা চুরি করেছিল। সাহাবাগণ বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কে কথা বলতে পারবে? আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় পাত্র উসামা (রাঃ) ছাড়া কেউ এ সাহস পাবে না। তখন উসামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেন। এতে তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ তা’আলার দেওয়া শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রে সুপারিশ করছ? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা প্রদান করলেন এবং বললেনঃ হে মানব মণ্ডলী! নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের লোকেরা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেননা কোন সম্মানিত লোক যখন চুরি করত তখন তারা তাকে রেহাই দিয়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক চুরি করত তখন তার উপর শরীয়তের শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ এর কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করে তবে অবশ্যই মুহাম্মাদ তাঁর হাত কেটে দেবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩২ | 6332 | ٦۳۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীনারের এক-চতূর্থাংশ বা ততোধিক চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আবদুর রহমান ইবনু খালিদ (রহঃ) ইবনু খালিদ যুহরী (রহঃ) ও মা’মার (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে ইবরাহীম ইবনু সা’দ (রহঃ) এর অনুসরণে বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৩ | 6333 | ٦۳۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৩। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আয়িশা (রহঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একটি দ্বীনারের এক-চতুর্থাংশ চুরি করায় হাত কাটা হবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৪ | 6334 | ٦۳۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৪। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এক দ্বীনারের চতুর্থাংশ চুরি করলে হাত কাটা যাবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৫ | 6335 | ٦۳۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৫। ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় কোন চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢালের সমমূল্যের জিনিস চুরি করা ছাড়া হাত কাটা হত না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৬ | 6336 | ٦۳۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে উক্তরূপ বর্ণনা করেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৭ | 6337 | ٦۳۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রত্যেকটির মূল্য আছে, এর চেয়ে কমে চুরি করলে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায়) হাত কাটা হত না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৮ | 6338 | ٦۳۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৮। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় কোন চোরের হাত কাটা হত না। যদি সে একটি চামড়ার ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রতিটির মূল্যমান এর চেয়ে কমে কিছু চুরি করত। ওয়াকি (রহঃ) ও ইবনু ইদ্রিস (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে মুরসাল সুত্রে বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৯ | 6339 | ٦۳۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪০ | 6340 | ٦۳٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত-কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪১ | 6341 | ٦۳٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মুল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪২ | 6342 | ٦۳٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪২। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিরহাম সমমানের ঢাল চুরি করার অপরাধে চোরের হাত কর্তন করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৩ | 6343 | ٦۳٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, আল্লাহ তা’আলার লানত বর্ষিত হয় চোরের উপর যে একটি ডিম চুরি করেছে তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে বা একটি রশি ছুরি করেছে আর তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৪ | 6344 | ٦۳٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৪. চোরের তাওবা
৬৩৪৪। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলার হাত কর্তন করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন যে, সে মহিলাটি এর পরও আসত। আর আমি তার প্রয়োজনকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থাপন করতাম। মহিলাটি তওবা করেছিল এবং তার তওবা সুন্দর হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৫ | 6345 | ٦۳٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৪. চোরের তাওবা
৬৩৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ জুফী (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি একটি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত করেছি। তিনি বলেন, আমি তোমাদের এ মর্মে বায়আত করছি যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, তোমাদের সন্তান হত্যা করবে না, সামনে বা পিছনে কোন অপবাদ করবে না, বিধিসম্ম কাজে আমার অবাধ্যতা করবে না, তোমাদের মধ্যে যে আপন অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়িত করবে তার বিনিময় আল্লাহ তা’আলার নিকট। আর যে এগুলো থেকে কিছু করে ফেলবে আর সে জন্য দুনিয়াতে যদি তার শাস্তি হয়ে যায়, তাহলে এটি হবে তার জন্য গুনাহর কাফফারা এবং গুনাহর পবিত্রতা। আর যার (দোষ) আল্লাহ তা’আলা গোপন রেখেছেন তার মুকাবিলা আল্লাহ তাআলার সাথে। (আল্লাহ) ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিতে পারেন। আবার ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।

আবূ আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ চোর যদি হাত কেটে দেয়ার পর তাওবা করে তবে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে। অনুরূপভাবে শরীয়তের শাস্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেকটি লোকের ক্ষেত্রেই এ বিধান-প্রযোজ্য যখন সে তওবা করবে, তখন তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৬ | 6346 | ٦۳٤٦

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের শাস্তি- আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬৩৪৬। আলী ইবনু আবদূল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উকল গোত্রের একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহন করল। কিন্তু মদিনার আবহাওয়া তাদের অনুকুল হল না। তাই তিনি তাদেরকে সাদাকার উট পালের কাছে গিয়ে সেগুলোর পেশাব ও দুগ্ন পান করার আদেশ করেন। তারা তাই করল ফলে সুস্থ হয়ে গেল। অবশেষে তারা দ্বীন ত্যাগ করে উটপালের রাখালদেরকে হত্যা করে সেগুলো নিয়ে চলল। এদিকে তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তাদেরকে (ধরে) আনা হল। আর তাদের হাত-পা কাটলেন ও লৌহাশলাকা দ্বারা তাদের চক্ষুগুলো ফুঁড়ে দিলেন। কিন্তু তাদের ক্ষতস্থানে লৌহ পুড়ে দাগ দিলেন না। অবশেষে তারা মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৭ | 6347 | ٦۳٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৫. নবী (সাঃ) ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের ক্ষতস্থানে লোহা পুড়ে দাগ দেননি। অবশেষে তারা মারা গেল।
৬৩৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু সালত (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উরাইনা গোত্রীয় লোকদের (হাত, পা) কাটলেন, অথচ তাদের ক্ষতস্থানে লোহার দাগ দেননি। অবশেষে তারা মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৮ | 6348 | ٦۳٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৬. ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের পানি পান করানো হয়নি; অবশেষে তারা মারা গেল
৬৩৪৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উকল গোত্রের একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসল। তারা সুফফায় অবস্থান করত। মদিনার আবহাওয়া তাদের অনুকুলে না হওয়ায় তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের জন্য দুধ তালাশ করুন। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ ছাড়া কিছু পাচ্ছি না যে, তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উট পালের কাছে যাবে। তারা সেগুলোর কাছে আসল। আর সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা মোটা তাজা হয়ে উঠল ও রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে চলল।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সংবাদ পৌছলে তাদের খোঁজে লোক পাঠালেন। রৌদ্র প্রখর হবার পূর্বেই তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তখন লৌহ শলাকা আনার নির্দেশ দিলেন। তা গরম করে তদ্দ্বারা তাদের চক্ষু ফুড়ে দিলেন এবং তাদের হাত-পা কেটে দেয়া হল। অথচ লৌহ গরম করে দাগ লাগান নি। এরপর তাদেরকে উত্তপ্ত মরুভূমিতে ফেলে দেওয়া হল। তারা পানি পান করতে চাইল কিন্তু পান করানো হল না। অবশেষে তারা মারা গেল।

আবূ কিলাবা (রহঃ) বলেনঃ তারা চুরি করেছিল, হত্যাও করেছিল, আর আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৯ | 6349 | ٦۳٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৭. নবী (সাঃ) বিদ্রোহীদের চক্ষুগুলো লৌহশলাকা দ্বারা ফুঁড়ে দিলেন
৬৩৪৯। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যে উকল গোত্রের একদল (অথবা তিনি বলেন উরাইনা গোত্রের-আমার জানা মতে তিনি উকল গোত্রেরই-বলেছেন) মদিনায় এলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে দুগ্নবতী উটের কাছে যাওয়ার নির্দেশ করলেন। তাদেরকে আরো নির্দেশ করলেন যেন তারা সে সব উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করে। তারা তা পান করল। অবশেষে যখন তারা সুস্থ হয়ে গেল, তখন রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে চলল। ভোরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছল। তিনি তাদের খোঁজে লোক পাঠালেন। রৌদ্র চড়ার আগেই তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্পর্কে তিনি নির্দেশ করলেন, তাদের হাত-পা কাটা হল। লৌহশলাকা দিয়ে তাদের চোখগুলো ফুড়ে দেয়া হল। এরপর প্রখর রৌদ্র তাপে ফেলে রাখা হল। তারা পানি পান করতে চাইল। কিন্তু পান করানো হলনা।

আবূ কিলাবা (রহঃ) বলেনঃ ঐ লোকগুলো এমন একটি দল যারা চুরি করেছিল, হত্যাও করেছিল, ঈমান আনার পর কুফরী করেছিল আর আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫০ | 6350 | ٦۳۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৮. অশ্লীলতা বর্জনকারীর ফযীলত
৬৩৫০। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত প্রকারের লোক, যাদেরকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ভিন্ন অন্য কোন ছায়া হবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ ২. আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত যুবক। ৩. এমন যে ব্যাক্তি আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চক্ষুযুগল অশ্রুসিক্ত হয়। ৪. এমন ব্যাক্তি যার অন্তর মসজিদে আটকে থাকে। ৫. এমন দু’ব্যাক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করে। ৬. এমন ব্যাক্তি যাকে কোন সুন্দরী রুপসী রমনী নিজের দিকে আহব্বান করল; আর সে বলল, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৭. এমন ব্যাক্তি যে সাদকা করল আর এমন গোপনে করল যে, তার বাম হাত জানে না যে তার ডান হাত কি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫১ | 6351 | ٦۳۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৮. অশ্লীলতা বর্জনকারীর ফযীলত
৬৩৫১। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) ও খলীফা … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ আমার জন্য তার দু’পা ও দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী স্থানের দায়িত্ব নেবে আমি তার জন্য বেহেশতের দায়িত্ব নেব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫২ | 6352 | ٦۳۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫২। দাউদ ইবনু শাবীব (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে আনাস (রাঃ) বলেছেন যে, আমি তোমাদেরকে এমন এক হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পরে তোমাদেরকে কেউ বর্ণনা করবে না। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে না অথবা তিনি বলেছেনঃ কিয়ামতের পূর্ব নিদর্শনসমুহের মধ্যে হল এই যে, ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে, মূর্খতার প্রসার ঘটবে, মদ পান করা হবে, ব্যাপকভাবে ব্যাভিচার-হবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে, নারীর সংখ্যা এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর তত্ত্বাবধায়ক হবে একজন পুরুষ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৩ | 6353 | ٦۳۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিন হিসেবে বহাল থাকা অবস্হায় কোন ব্যাক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। মুমিন থাকা অবস্থায় কোন চোর চুরি করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ মদ পান করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ হত্যা করে না।

ইকরামা (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, তার থেকে ঈমান কিভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয়? তিনি বললেনঃ এভাবে। আর অঙ্গুলীগুলি পরস্পর জড়ালেন, এরপর অঙ্গুলীগুলি বের করলেন। যদি সে তাওবা করে তবে পূর্ববৎ এভাবে ফিরে আসে। এ বলে অঙ্গুলীগুলি পুনরায় পরস্পর জড়ালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৪ | 6354 | ٦۳۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৪। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যাভিচার করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না। চোর চুরি করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না। মদ্যপায়ী মদ্যপানকালে মু’মিন থাকে না। তবে তারপরও তওবা অবারিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৫ | 6355 | ٦۳۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কোন পাপটি সবচেযে বড়? তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর কোন সমকক্ষ সাব্যস্ত করবে। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সাথে আহার করবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা।

ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) আমি বললাম হে আল্লাহর রাসুল, অনুরুপ বর্ননা করেছেন। আমর (রহঃ) … আবূ মায়সারা (রহঃ) বলেন- এটিকে ছেড়ে দাও, এটিকে ছেড়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৬ | 6356 | ٦۳۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৬। আদম (রহঃ) … শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আলী (রাঃ) জুম’আর দিন জনৈকা মহিলাকে যখন রজম করেন তখন বলেন, আমি তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত অনুযায়ী রজম করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৭ | 6357 | ٦۳۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৭। ইসহাক (রহঃ) … শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। আমি বললাম, সূরায়ে নূর এর আগে না পরে? তিনি বললেনঃ আমি অবগত নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৮ | 6358 | ٦۳۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। এসে বলল, সে যিনা করেছে এবং নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন, তাকে রজম করা হল। আর সে বিবাহিত ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৯ | 6359 | ٦۳۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৪১. পাগল ও পাগলিনীকে রজম করা যাবে না। আলী (রাঃ) উমর (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি জানেন না যে, পাগল থেকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত, বালক থেকে সাবালেগ না হওয়া পর্যন্ত, ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে?
৬৩৫৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তিনি তখন মসজিদে ছিলেন। সে তাকে ডেকে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে কথাটি সে চারবার পুনরাবৃতি করল। যখন সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মধ্যে কি পাগলামীর দোষ আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও আর রজম করো।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে এমন এক ব্যাক্তি বর্ণনা করেছেন, যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, আমি তার রজমকারীদের মধ্যে একজন ছিলাম। আমরা তাকে জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করি। পাথরের আঘাত যখন তার অসহ্য হচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। আমরা হাররা নামক স্থানে তার নাগাল পেলাম। আর সেখানে তাকে রজম করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬০ | 6360 | ٦۳٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৪২. ব্যভিচারীর জন্য পাথর
৬৩৬০। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ও ইবনু যামআ (রাঃ) ঝগড়া করলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ! এ সন্তান তোমারই। সন্তান শয্যাধিপতির। আর হে সাওদা! তুমি তার থেকে পর্দা কর। কুতায়বা (রহঃ) লায়স (রহঃ) থেকে আমাদেরকে এ বাক্যটি বেশি বলেছেন যে, ব্যভিচারীর জন্য পাথর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬১ | 6361 | ٦۳٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৪২. ব্যভিচারীর জন্য পাথর
৬৩৬১। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিছানা যার সন্তান তার। আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬২ | 6362 | ٦۳٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৩. সমতল স্থানে রজম করা
৬৩৬২। মুহাম্মদ ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ইহুদী পুরুষ ও এক ইহুদী নারীকে হাযির করা হল। তারা উভয়েই যিনা করেছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাপারে তোমরা তোমাদের কিতাবে কি পাচ্ছ? তারা বলল, আমাদের পদ্রীরা চেহারা কালো করার ও উভয়কে গাধার পিঠে বিপরীতমুখী বসিয়ে প্রদক্ষিণ করানোর প্রথা চালু করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তাদেরকে তাওরাত নিয়ে আসতে বলুন। এরপর তা নিয়ে আসা হল।

তাদের একজন রজমের আয়াতের উপর নিজের হাত রেখে দিল এবং এর অগ্র-পাশ্চাৎ পড়তে লাগল। তখন ইবনু সালাম (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার হাত উঠও। (হাত উঠাতে দেখা গেল) তার হাতের নিচে রয়েছে রজমের আয়াত। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়ের সম্বন্ধে নির্দেশ দিলেন, উভয়কে রজম করা হল। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তাদের উভয়কে সমতল স্থানে রজম করা হয়েছে। তখন ইহুদী পুরুষটাকে দেখেছি ইহুদী নারীটির উপর উপুড় হয়ে পড়ে আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৩ | 6363 | ٦۳٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৪. ঈদগাহ্‌ ও জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করা
৬৩৬৩। মাহমুদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাযির হয়ে যিনার স্বীকারোক্তি করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি কি পাগল? সে বলল, না। তিনি তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে ঈদগাহে রজম করা হল। পাথর যখন তাকে অসহনীয় যন্ত্রণা দিচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। তারপর তাকে ধরা হল ও রজম করা হল। অবশেষে সে মারা গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সমন্ধে ভালো মন্তব্য করলেন ও তার সালাতে জানাযা আদায় করলেন।

ইউনুস ও ইবনু জুরাইজ (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে فَصَلَّى عَلَيْهِ বাক্যটি বলেননি। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হয়েছে صَلَّى عَلَيْهِ বর্ণনাটি কি বিশুদ্ধ? তিনি বললেনঃ এটিকে মা’মার বর্ননা করেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো এটিকে মা’মার ব্যতীত অন্যরা বর্ণনা করেছে কি? তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৪ | 6364 | ٦۳٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৫. যে ব্যক্তি এমন অপরাধ করল যা হদ এর আওতাভুক্ত নয় এবং সে ইমামকে অবগত করল। তবে তওবার পর তার উপর কোন শাস্তি প্রয়োগ হবে না, যখন সে ফতোয়া জানার জন্য আসে। আতা (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) এমন ব্যক্তিকে শাস্তি দেননি। ইবন জুরায়জ (রহঃ) বলেন, শাস্তি দেননি ঐ ব্যক্তিকে, যে রমযানে স্ত্রী সঙ্গম করেছে এবং উমর (রাঃ) শাস্তি দেননি হরিণ শিকারীকে। এ ব্যাপারে আবু উসমান (রহঃ) ইবন মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা রয়েছে।
৬৩৬৪। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যাক্তি রমযানে আপন স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সংযোগ করে ফেললো। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফতোয়া জানতে চাইল। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, একটি গোলাম আযাদ করার সামর্থ্য তোমার আছে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও।

লায়স (রহঃ) এর সুত্রে আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মসজিদে আসল। তখন সে বলল, আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তা কার সাথে? সে বলল, আমি রমযানের মধ্যে আমার স্ত্রীর সাথে সংগম করে ফেলেছি। তখন তিনি তাকে বললেনঃ তুমি সাদকা কর। সে বলল, আমার কাছে কিছুই নেই। সে বসে রইল। এমতাবস্থায় এক ব্যাক্তি একটি গাধা হাকিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। আর তার সাথে ছিল খাদ্যদ্রব্য।

আবদুর রহমান (রহঃ) বলেনঃ আমি অবগত নই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কি আসল? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যাক্তিটি কোথায়? সে বলল, এই তো আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সাদকা করে দাও। সে বলল আমার চেয়ে অধিক অভাবী লোকদের? আমার পরিবারের কাছে সামান্য আহার্যও নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে তা তোমরাই খেয়ে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৫ | 6365 | ٦۳٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৬. কেউ শাস্তির স্বীকারোক্তি করল অথচ বিস্তারিত বলেনি, তখন ইমামের জন্য তা গোপন রাখা বৈধ কি?
৬৩৬৫। আবদুল কুদ্দুস ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! ঘটনা আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমার উপর শাস্তি প্রয়োগ করুন। কিন্তু তিনি তাকে অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন না। আনাস (রাঃ) বলেন। তখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় এসে গেল। সে ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন, তখন সে ব্যাক্তি তার কাছে গিয়ে দাঁড়াল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমার উপর আল্লাহর বিধান প্রয়োগ করান। তিনি বললেনঃ তুমি কি আমার সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। অথবা বললেনঃ তোমার শাস্তি (মাফ করে দিয়েছেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৬ | 6366 | ٦۳٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৭. স্বীকারোক্তিকারীকে ইমাম কি এ কথা বলতে পারে যে, সম্ভবত তুমি স্পর্শ করেছ অথবা ইশারা করেছ?
৬৩৬৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ জু’ফী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, যখন মায়িয ইবনু মালিক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল তখন তাকে বললেন সম্ভবত তুমি চুম্বন খেয়েছ অথবা ইশারা করেছ অথবা (কু দৃষ্টিতে) তাকিয়েছ? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তাহলে কি তার সাথে তুমি সঙ্গম করেছ? কথাটি অস্পষ্ট করে বলেন নি। সে বলল হ্যাঁ। তখন তাকে রজম করার নির্দেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৭ | 6367 | ٦۳٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৮. স্বীকারোক্তিকারীকে ইমামের প্রশ্ন ‘তুমি কি বিবাহিত’?
৬৩৬৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। এসে তাকে ডাক দিল হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি, সে নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছে। তখন তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কিন্তু সে ঐদিকেই সরে দাঁড়াল, যে দিকটি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে সন্মুখে করলেন, এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল আমি যিনা করেছি। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন, আর সে এদিকেই এল যে দিকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি যখন স্বীয় নফসের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন। এরপর জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মধ্যে পাগলামী আছে কি? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, তা হলে তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও এবং রজম করো।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে এ হাদীস এমন ব্যাক্তি বর্ণনা করেছেন যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, তার রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা তাকে ঈদগাহে বা জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করেছি। পাথরের আঘাত যখন তাকে ব্যাকুল করে তুলল, তখন সে দ্রুত দৌড়াতে লাগল। অবশেষে আমরা হাররা নামক স্থানে তার নাগাল পাই এবং তাকে রজম করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৮ | 6368 | ٦۳٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৯. যিনার স্বীকারোক্তি
৬৩৬৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তারা বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। জনৈক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমি আপনাকে (আল্লাহর) কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মত ফায়সালা করুন। তখন তার প্রতিপক্ষ লোকটি দাঁড়াল। আর সে তার চেয়ে বুদ্ধিমান ছিল। তাই সে বলল, আপনি আমাদের ফায়সালা আল্লাহর কিতাব অনুযাযী-ই করে দিন। আর আমাকে অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল।

সে বলল, আমার ছেলে ঐ ব্যাক্তির অধীনে চাকর ছিল। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। আমি একাশ ছাগল ও একজন গোলামের বিনিময়ে তার সাথে আপোস করে নেই। তারপর আমি আলিমদের অনেককে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা আমাকে বললেন, আমার ছেলের শাস্তি একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম হল তার স্ত্রীর শাস্তি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি কিতাবুল্লাহ অনুযায়ী তোমাদের উভয়ের ফায়সালা করব। একশ- ছাগল ও গোলাম তোমার কাছে ফেরত যাবে। আর তোমার ছেলের উপর একশত কষাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে ঐ ব্যাক্তির স্ত্রীর কাছে যাবে। যদি সে স্বীকার করে তরে তাকে রজম করবে।

পরদিন প্রত্যূষে তিনি তার কাছে গেলেন। অরে সে স্বীকার করল। ফলে তাকে রজম করলেন। আমি সুফিয়ান (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ ব্যাক্তি কি এ কথা বলেনি যে, লোকেরা আমাকে বলেছে যে, আমার ছেলের ওপর রজম হবে। তখন তিনি বললেন, যুহরী (রহঃ) থেকে এ কথা জেনেছি কিনা, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ ররেছে। তাই কখনো এ কথা বর্ণনা করি। আর কখনো চুপ থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৯ | 6369 | ٦۳٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৯. যিনার স্বীকারোক্তি
৬৩৬৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) বলেছেনঃ, আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, দীর্ঘ যুগ অতিক্রান্ত হবার পর কোন ব্যাক্তি এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের বিধান পাচ্ছি না। ফলে এমন একটি ফরয পরিত্যাগ করার দরুন তারা পথভ্রষ্ট হবে যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। সাবধান! যখন প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে তখন ব্যভিচারীর জন্য রজমের বিধান নিঃসন্দেহ অবধারিত। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, অনুরূপই আমি স্মরণ রেখেছি। সাবধান! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন, আর আমরাও তারপরে রজম করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭০ | 6370 | ٦۳۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৫০. যিনার কারণে বিবাহিতা গর্ভবতী মহিলাকে রজম করা
৬৩৭০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাজিরদের কতক লোককে পড়াতাম। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) অন্যতম ছিলেন। একদা আমি তার মিনাস্থ বাড়িতে ছিলাম। তখন তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর সাথে তার সর্বশেষ হাজ্জে রয়েছেন। ইত্যবসরে আবদুর রহমান (রাঃ) আমার কাছে ফিরে এসে বললেন, যদি আপনি ঐ লোকটিকে দেখতেন, যে লোকটি আজ আমীরুল মু’মিনীন এর কাছে এসেছিল এবং বলেছিল, হে আমীরুল মু’মিনীন! অমুক ব্যাক্তির ব্যাপারে আপনার কিছু করার আছে কি? যে লোকটি বলে থাকে যে, যদি উমর মারা যান তাহলে অবশ্যই অমুকের হাতে বায়আত করব। আল্লাহর কসম! আবূ বকরের বায়আত আকম্মিক ব্যাপার ছিল। ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। এ কথা শুনে তিনি ভীষণভাবে রাগাম্বিত হলেন। তারপর বললেনঃ ইনশাআল্লাহ সন্ধায় আমি অবশ্যই লোকদের মধ্যে দাঁড়াব আর তাদেরকে ঐসব লোকের থেকে সতর্ক করে দিব, যারা তাদের বিষয়াদি আত্মসাৎ করতে চায়।

আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি এমনটা যেন না করেন। কেননা, হাজ্জের (হজ্জের) মওসুম নিম্নস্তরের ও নির্বোধ লোকদেরকে একত্রিত করে। আর এরাই আপনার নৈকট্যের সুযোগে প্রাধান্য বিস্তার করে ফেলবে, যখন আপনি লোকদের মধ্যে দাঁড়াবেন। আমার ভয় হচ্ছে, আপনি যখন কোন কথা বলবেন তখন তা সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। আর তারা তা যথাযথভাবে আয়ত্ত করতে পারবে না। আর যথাযথ স্থানে রাখতেও পারবে না। সুতরাং মদিনা পৌছা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর তা হল হিজরত ও সুন্নাতের কেন্দ্রস্থল। ফলে তথায় জ্ঞানী ও সুধীবর্গের সঙ্গে মিলিত হবেন। আর যা বলার তা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারবেন। জ্ঞানী ব্যাক্তিরা আপনার কথাকে যথাযথভাবে আয়ত্ত করে নেবে ও যথাস্থানে ব্যবহার করবে।

তখন উমর (রাঃ) বললেন, জেনে রেখো আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি মদিনা পৌছার পর সর্ব প্রথম এ কাজটি নিয়ে ভাষনের জন্য দাঁড়াব। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরা যিলহাজ্জ মাসের শেষ দিকে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলাম। যখন জুমআর দিন এল সূর্য অস্তগমনের সাথে সাথে আমি মসজিদে গমন করলাম। পৌছে দেখলাম, সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল (রাঃ) মিম্বরের গোড়ায় বসে আছেন, আমিও তার পার্শ্বে এমনভাবে বসলাম যেন আমার হাটু তার হাঁটুকে স্পর্শ করছে। অল্পক্ষণের মধ্যে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বেরিয়ে আসলেন। আমি যখন তাকে সামনের দিকে আসতে দেখলাম তখন সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইলকে বললাম, আজ সন্ধায় অবশ্যই তিনি এমন কিছু কথা বলবেন যা তিনি খলীফা হওয়া থেকে আজ-পর্যন্ত বলেননি। কিন্তু তিনি আমার কথাটি উড়িয়ে দিলেন এবং বললেন, আমার মনে হয় না যে, তিনি এমন কোন কথা বলবেন, যা এর পুর্বে বলেন নি।

এরপর উমর (রাঃ) মিম্বরের উপরে বসলেন। যখন মুয়াযযিনগণ আযান থেকে ফারিগ হয়ে গেলেন তখন তিনি দাঁড়ালেন। আর আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বাদ! আজ আমি তোমাদেরকে এমন কথা বলতে চাই, যা আমারই বলা কর্তব্য। হয়তবা কথাটি আমার মৃত্যুর নিকটবর্তী হচ্ছে তাই যে ব্যাক্তি কথাগুলো যথাযথভাবে অনুধাবন করে সংরক্ষন করবে সে যেন কথাগুলো ঐসব স্থানে পৌছিয়ে দেয় যেথায় তার সওয়ারী পৌছবে। আর যে ব্যাক্তি কথা শুনেছেন যথাযথভাবে অনুধাবন করতে আশংকাবোধ করছে আমি তার জন্য আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করা ঠিক মনে করছি না। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিযয়াদির একটি হচ্ছে রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, অনুধাবন করেছি, আয়োত্ত করেছি। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন। আমরাও তার পরে রজম করেছি।

আমি আশংকা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পর কোন ব্যাক্তি এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফরয বর্জনের দরুন পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যাক্তির উপর রজম অবধারিত, যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর যিনা করবে, চাই সে পুরুষ হোক বা নারী। যখন সুষ্পষ্ট প্রমান পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে। অনুরূপভাবে আমরা আল্লাহর কিতাবে এও পড়তাম যে, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, তোমরা স্বীয় বাপ-দাদা থেকে বিমুখ হবে। অথবা বলেছেন, এটি তোমাদের জন্য কুফরী, যে স্বীয় বাবা-দাদা থেকে বিমুখ হবে জেনে রেখো! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করো না, যেভাবে ঈসা ইবনু মরিয়ামের সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করা হয়েছে। তোমরা বল, আল্লাহব বান্দা ও তাঁর রাসুল।

এরপর আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে, তোমাদের কেউ এ কথা বলছে যে, আল্লাহর কসম, যদি উমর মৃত্যুবরণ করেন তাহলে আমি অমুকের হাতে বায়আত করব। কেউ যেন এ কথা বলে ধোকায় পতিত না হয় যে আবূ বকর এর বায়আত আকম্মিক ঘটনা ছিল। ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। জেনে রেখো তা অবশ্যই এরূপ ছিল। তবে আল্লাহ আকম্মিক বায়আতের ক্ষতি প্রতিহত করেছেন। সফর করে সওয়ারীসমূহের ঘাড় ভেঙ্গে পড়ে– এমন স্হান পর্যন্তদের মধ্যে আবূ বকরের ন্যায় কে আছে? যে কেউ মুসলমানদের পরামর্শ ব্যতিরেকে কোন ব্যাক্তির হাতে বায়আত করবে, তার অনুসরণ করা যাবে না এবং ঐ ব্যাক্তিরও না, যে তার অনুসরন করবে। কেননা উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশংকা রয়েছে। যখন আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দান করেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি। অবশ্য আনসারগণ আমাদের বিরোধিতা করেছেন।

তারা সবাই বনী সাঈদার চত্বরে সমবেত হয়েছেন। আমাদের থেকে বিমুখ হয়ে আলী, যুবাইর ও তাদের সাথীরাও বিরোধিতা করেছেন। অপরদিকে মুহাজিরগণ আবূ বকরের কাছে সমবেত হলেন। তখন আমি আবূ বকরকে বললাম, হে আবূ বকর! আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঐ আনসার ভাইদের কাছে চলুন। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। যখন আমরা তাদের নিকটবর্তী হলাম তখন আমাদের সাথে তাদের দু’জন পূণ্যবান ব্যাক্তির সাক্ষাৎ হল। তারা উভয়েই ঐ বিষয়ের আলোচনা করলেন যে বিষয়ে লোকেরা ঐকমত্য করছিল। এরপর তারা বললেন, হে মুহাজির দল! আপনারা কোথায় যাচ্ছেন? তখন আমরা বললাম, আমরা আমাদের ঐ আনসার ভাইদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। তারা বললেন, না আপনাদের তাদের নিকট না যাওয়াই উচিত। আপনারা আপনাদের বিষয় সমাপ্ত করে নিন।

তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাদের কাছে যাব। আমরা চললাম। অবশেষে বনী সাঈদার চত্তরে তাদের কাছে এলাম। আমরা দেখতে পেলাম তাদের মাঝখানে এক ব্যাক্তি বস্ত্রাবৃত অবস্হায় রয়েছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ঐ ব্যাক্তি কে? তারা জবাব দিল ইনি সা’দ ইবনু উবাদা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওনার কি হয়েছে? তারা বলল, তিনি জ্বরাক্রান্ত। আমরা কিছুক্ষণ বসার পরই তাদের খতীব উঠে দাঁড়িয়ে কালিমায়ে শাহাদাত পড়লেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বাদ। আমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী ও ইসলামের সেনাদল এবং তোমরা হে মুহাজির দল! একটি নগণ্য দল মাত্র; যে দলটি তোমাদের গোত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের কাছে পৌছেছে অথচ এরা এখন আমাদেরকে মূল থেকে সরিয়ে দিতে এবং খিলাফত থেকে বঞ্চিত করে দিতে চাচ্ছে। যখন তিনি নীরব হয়ে গেলেন তখন আমি কিছু বলার মনস্থ করলাম।

আর আমি পূর্ব থেকেই কিছু কথা সাজিয়ে রেখেছিলাম, যা আমার কাছে ভাল লাগছিল। আমি ইচ্ছে করলাম যে, আবূ বকর (রাঃ)-এর সামনে কথাটি পেশ করব। আমি তার ভাষণ থেকে সৃষ্ট রাগকে কিছুটা প্রশমিত করতে মনস্থ করলাম। আমি যখন কথা বলতে চাইলাম তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি থাম। আমি তাকে রাগাম্বিত করাটা পছন্দ করলাম না। তাই আবূ বকর (রাঃ) কথা বললেন, আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে সহনশীল ও গম্ভীর। আল্লার কসম! তিনি এমন কোন কথা বাদ দেননি যা আমি সাজিয়ে রেখেছিলাম। অথচ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অনুরূপ বরং তার চেয়েও উত্তম কথা বললেন। অবশেষে তিনি কথা বন্ধ করে দিলেন এরপর আবার বললেন, তোমরা তোমাদের ব্যাপারে যেসব উত্তম কাজের কথা উল্লেখ করেছ বস্তুত তোমরা এর উপযুক্ত।

তবে খিলাফতের ব্যাপারটি কেবল এই কুরাইশ বংশের জন্য নির্ধারিত। তারা হচ্ছে বংশ ও আবাসভূমির দিক দিয়ে সর্বোত্তম আরব। আর আমি এ দু’জনের থেকে যে-কোন একজনকে তোমাদের জন্য মনোনয়ন করলাম। তাই তোমাদের ইচ্ছা যে-কোন একজনের হাতে বায়আত করে নাও। এরপর আমার ও আবূ উবাইদা ইবনু জাররাহ (রাঃ) এর হাত ধরলেন। তিনি আমাদের মাঝখানেই বসা ছিলেন। আমি তার এ কথা ছাড়া যত কথা বলেছেন কোনটাকে অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম! আবূ বকর যে জাতির মধ্যে বর্তমান রয়েছেন সে জাতির উপর আমি শাসক নিযুক্ত হওয়ার চেয়ে এটাই শ্রেয় যে, আমাকে পেশ করে আমার ঘাড় ভেঙ্গে দেয়া হবে, ফলে তা আমাকে কোন গুনাহের কাছে আর নিয়ে যেতে পারবে না। হে আল্লাহ! হয়ত আমার সাথী আমার মৃত্যুর সময় এমন কিছু আকাঙ্ক্ষা করতে পারে, যা এখন আমি পাচ্ছি না।

তখন আননারদের এক ব্যাক্তি বলে উঠল, আমি এ জাতির অভিজ্ঞ ও ক্ষেত্রজ্ঞ এবং শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট খেজুর বৃক্ষের ন্যায় সম্ভ্রান্ত। হে কুরাইশগণ! আমাদের থেকে হবে এক আমীর আর তোমাদের থেকে হবে এক আমীর। এ পর্যায়ে অনেক কথা শুনে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। আমি এ মতবিরোধের দরুন শংকিত হয়ে পড়লাম। তাই আমি বললাম, হে আবূ বকর! আপনি হাত বাড়ান। তিনি হাত বাড়ালেন। আমি তাঁর হাতে বায়আত করলাম। মুহাজিরগণও তাঁর হাতে বায়আত করলেন। তারপর আনসারগণও তার হাতে বায়আত করলেন। আর আমরা সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হলাম। তখন তাদের এক ব্যাক্তি বলে উঠল, তোমরা সা’দ ইবনু উবাদাকে জানে মেরে ফেলেছ।

তখন আমি বললাম, আল্লাহ সা’দ ইবনু উবাদাকে হত্যা করেছেন। উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা সে সময়কার জরুরী বিষয়াদির মধ্যে আবূ বকরের বায়আতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছুকে মনে করি নি। আমাদের ভয় ছিল যে, যদি বায়আতের কাজ অসম্পূর্ণ থাকে, আর এ জাতি থেকে পৃথক হয়ে যাই তাহলে তারা আমাদের পরে তাদের কারো হাতে বায়আত করে নিতে পারে। তারপর হয়ত আমাদেরকে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের অনুসরণ করতে হত, না হয় তাদের বিরোধিতা করতে হত, ফলে তা মারাত্বক ফ্যাসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াত। অতএব যে ব্যাক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ব্যাক্তিরেকে কোন ব্যাক্তির হাতে বায়আত করবে তার অনুসরণ করা যাবে না। আর ঐ ব্যাক্তিরও না, যে তার অনুসরণ করবে। কেননা, উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশংকা বিদ্যমান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭১ | 6371 | ٦۳۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৫১. অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে কশাঘাত করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী ওদের প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে … বিশ্বাসীদের জন্য এদেরকে বিবাহ করা অবৈধ পর্যন্ত (২৪ঃ ২-৩) ইবন উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, رافة হদ প্রয়োগ (সহানুভূতি প্রদর্শন) করা
৬৩৭১। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নির্দেশ দিতে শুনেছি ঐ ব্যাক্তি সম্বন্ধে একশ কশাঘাত করার ও এক বছরের জন্য নির্বাসনের, যে অবিবাহিত অবস্থায় যিনা করেছে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে উরওয়া ইবনু যুরায়র (রাঃ) বলেছেন যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) নির্বাসিত করতেন। তারপর সর্বদাই এ সুন্নাত চালু রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭২ | 6372 | ٦۳۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৫১. অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে কশাঘাত করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী ওদের প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে … বিশ্বাসীদের জন্য এদেরকে বিবাহ করা অবৈধ পর্যন্ত (২৪ঃ ২-৩) ইবন উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, رافة হদ প্রয়োগ (সহানুভূতি প্রদর্শন) করা
৬৩৭২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যাক্তি সম্বন্ধে যে যিনা করেছে অথচ সে অবিবাহিত ‘হদ’ প্রয়োগসহ এক বছরের জন্য নির্বাসনের ফায়সালা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৩ | 6373 | ٦۳۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৫২. গুনাহগার ও হিজড়াদের নির্বাসিত করা
৬৩৭৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেনঃ তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৪ | 6374 | ٦۳۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৩. ইমাম অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় অন্য কাউকে হদ প্রয়োগের নির্দেশ প্রদান করা
৬৩৭৪। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল। এ সময় তিনি ছিলেন উপবিষ্ট। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দিন। এরপর তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল এবং বলল, এ সত্যই বলেছে হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের ফায়সালা করে দিন। আমার ছেলে তার অধীনে চাকর ছিল, সে তার স্ত্রীর সহিত যিনা করে ফেলে। তখন লোকেরা আমাকে জানাল যে, আমার ছেলের উপর রজমের হুকুম হবে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একজন দাসীর বিনিময়ে আপোস করে নেই। এরপর আমি আলিমদেরকে জিজ্ঞাসা করি, তখন তারা বললেন যে আমার ছেলের হদ হল একশ- কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। তা শুনে তিনি বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই তোমাদের উভয়ের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দেব। ঐ ছাগল ও দাসীটি তোমার কাছে ফেরত যাবে এবং তোমার ছেলের ওপর অর্পিত হবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে ঐ মহিলার কাছে যাও এবং তাকে রজম কর। উনাইস সকালে গেলেন ও তাকে রজম করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৫ | 6375 | ٦۳۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৫. দাসী যখন যিনা করে
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ مِنْكُمْ طَوْلاً أَنْ يَنْكِحَ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ فَمِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ مِنْ فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِكُمْ بَعْضُكُمْ مِنْ بَعْضٍ فَانْكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلاَ مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ فَإِذَا أُحْصِنَّ فَإِنْ أَتَيْنَ بِفَاحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى الْمُحْصَنَاتِ مِنَ الْعَذَابِ ذَلِكَ لِمَنْ خَشِيَ الْعَنَتَ مِنْكُمْ وَأَنْ تَصْبِرُوا خَيْرٌ لَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ}
২৮৫৪. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের মধ্যে কারো সাধ্বী, বিশ্বাসী নারী বিবাহের সামর্থ্য না থাকলে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৪ঃ ২৫) غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ অর্থ زواني (ব্যাভিচারিণী) وَلاَ مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ অর্থ اخلاء (বন্ধু)

৬৩৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবিবাহিতা দাসী যিনা-করলে তার হুকুম সষ্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, সে যদি যিনা করে তাকে তোমরা কশাঘাত করবে। পুনঃ যদি যিনা করে তাহলেও কশাঘাত করবে। তারপরও যদি যিনা করে তাহলেও কশাঘাত করবে। এরপর তাকে একগুচ্ছ চুলের বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে ফেলবে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমি অবগত নই যে, (বিক্রির কথা) তৃতীয়বারের পর না চতুর্থবারের পর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৬ | 6376 | ٦۳۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৬. দাসী যিনা করে বসলে তাকে তিরস্কার ও নির্বাসন দেওয়া যাবে না
৬৩৭৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাসী যখন যিনা করে আর প্রমাণিত হয়ে যায়, তখন যেন তাকে কশাঘাত করে এবং তিরষ্কার না করে। পুনরায় যদি যিনা করে তাহলেও যেন কশাঘাত করে, তিরষ্কার না করে। যদি তৃতীয়বারও যিনা করে তাহলে যেন চুলের একটি রশির বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দেয়। ইসমাঈল ইবনু উমাইয়া (রহঃ) সাঈদ আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে লায়স (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৭ | 6377 | ٦۳۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৭. যিম্মিরা যিনা করলে এবং ইমামের নিকট তাদের মোকাদ্দামা পেশ করা হলে এবং তাদের ইহসান (বিবাহিত হওয়া) সম্পর্কিত বিধান
৬৩৭৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … শায়বানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আউফা (রাঃ) কে রজম সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন। আমি বললাম, সুরায়ে নূরের (এ সম্পকীয় আয়াত নাযিলের) আগে না পরে? তিনি বললেন, তা আমি অবগত নই। আলী ইবনু মুসহির, খালিদ ইবনু আবদুল্লাহ মুহারিবী ও আবিদা ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আশ-শায়বানী (রহঃ) থেকে আবদুল ওয়াহিদ এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৮ | 6378 | ٦۳۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৭. যিম্মিরা যিনা করলে এবং ইমামের নিকট তাদের মোকাদ্দামা পেশ করা হলে এবং তাদের ইহসান (বিবাহিত হওয়া) সম্পর্কিত বিধান
৬৩৭৮। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীগণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জানাল তাদের একজন পুরুষ ও একজন নারী যিনা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমরা তাওরাতে রজম সম্পর্কে কি পাচ্ছ? তারা বলল, তাদেরকে অপমান ও কশাঘাত করা হয়। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমরা মিথ্যে বলেছ। তাওরাতে অবশ্যই রজমের উল্লেখ রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এল এবং তা খুলল। আর তাদের একজন রজমের আয়াতের ওপর হাত রেখে দিয়ে তার আংশিক পাঠ করল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমার হাত উঠাও। সে তার হাত উঠালে দেখা গেল যে, তাতে রজমের আয়াত বিদ্যমান রয়েছে। তারা বলল, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম সত্যই বলেছেন। হে মুহাম্মাদ! তাতে রজমের আয়াত সত্যই বিদ্যমান রয়েছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয় সম্বন্ধে নির্দেশ করলেন এবং তাদের উভয়কে রজম করা হল। আমি দেখলাম, পুরুষটি নারীটির ওপর উপুড় হয়ে আছে। সে তাকে পাথরের আঘাত থেকে রক্ষা করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৯ | 6379 | ٦۳۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৮. বিচারক ও লোকদের কাছে আপন স্ত্রী বা অন্যের স্ত্রীর উপর যখন যিনার অভিযোগ করা হয় তখন বিচারকের জন্য কি জরুরী নয় যে, তার কাছে পাঠিয়ে তাকে ঐ বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
৬৩৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। দু’জন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাদের বিবাদ নিয়ে এল। তাদের একজন বলল, আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দিন। অপরজন বলল, আর সে ছিল উভয়ের মধ্যে অধিক বিজ্ঞ। হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। সে বলল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহঃ) বলেন, আসীফ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সহিত যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলল যে, আমার ছেলের উপর শাস্তি হবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ- ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তারা আমাকে বললেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্ধাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপরই প্রযোজ্য হবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জেনে রেখ, কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব অনূযায়ী তোমাদের উভয়ের ফয়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমার কাছে ফেরত আসবে এবং তার ছেলেকে একশ’ কশাঘাত করলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনাইস আসলামী (রাঃ) কে নির্দেশ দিলেন যেন সে অপর ব্যাক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তাহলে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮০ | 6380 | ٦۳۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৯. প্রশাসক ছাড়া অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে। আবু সাঈদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ নামায আদায় করে, আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। যদি সে বাধা না মানে তাহলে যেন তার সাথে লড়াই করে। আবু সাঈদ (রাঃ) এরূপ করেছেন
৬৩৮০। ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় মাথা মুবারক আমার উরূর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরষ্কার করলেন ও স্বীয় হাত দিয়ে আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া থেকে বিরত রাখছিল। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮১ | 6381 | ٦۳۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৯. প্রশাসক ছাড়া অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে। আবু সাঈদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ নামায আদায় করে, আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। যদি সে বাধা না মানে তাহলে যেন তার সাথে লড়াই করে। আবু সাঈদ (রাঃ) এরূপ করেছেন
৬৩৮১। ইয়াহইয়া ইবনু সূলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন এবং বললেন, তুমি লোকদেরকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবসানের দরুন মৃত সদৃশ ছিলাম। অথচ তা আমাকে ভীযণ যন্ত্রণা দিয়েছে। সামনে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ – وَكَزَ সমার্থ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮২ | 6382 | ٦۳۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬০. যদি কেউ তার স্ত্রীর সহিত পরপুরুষকে দেখে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে
৬৩৮২। মূসা (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বলেছেন, যদি আমি আমার স্ত্রীর সাথে কোন পরপুরুষকে দেখি তাহলে অজি তাকে তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব। তার এ উক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দ এর আত্নমর্যাদাবোধে বিস্মিত হচ্ছ? আমি ওর চেয়েও বেশি আত্মসম্মানী। আর আল্লাহ আমার চেয়েও বেশি আত্নসম্মানের অধিকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৩ | 6383 | ٦۳۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬১. কোন বিষয়ে অস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা
৬৩৮৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্ত্রী একটি কালো ছেলে জন্য দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার কোন উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কি? সে বলল, লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কি ছাই বর্ণের কোন উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, এটা কোথা থেকে হল? সে বলল, আমার ধারণা যে, কোন শিরা (বংশমূল) একে টেনে এনেছে। তিনি বললেনঃ তাহলে তো তোমার এ পুত্র একে কোন শিরা (বংশমূল) টেনে এনেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৪ | 6384 | ٦۳۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদ সমুহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দন্ড প্রয়োগ করা যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৫ | 6385 | ٦۳۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু জাবির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি এমন একজন থেকে বর্ণনা করেন যিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ প্রহারের বেশি কোন শাস্তি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৬ | 6386 | ٦۳۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবূ বুরদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহর হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্যত্র দশ কশাঘাতের বেশি প্রয়োগ করা যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৭ | 6387 | ٦۳۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৭। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাগাতার সিয়াম পালন থেকে নিষেধ করেছেন। তখন মুসলমানদের থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো লাগাতার সিয়াম পালন করেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার মত তোমাদের মধ্যে কে আছে? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমন অবস্থায় যে, আমার রব আমাকে পানাহার করান। যখন তারা লাগাতার সিয়াম পালন থেকে বিরত থাকল না তখন তিনি একদিন তাদের সাথে লাগাতার (দিনের পর দিন) সিয়াম পালন করতে থাকলেন। এরপর যখন তারা নতুন চাঁদ দেখল তখন তিনি বললেনঃ যদি তা আরো দেরি হতো তাহলে আমি তোমাদের আরো বাড়িয়ে দিতাম। কথাটি যেন শাসন স্বরুপ বললেন। যখন তারা বিরত রইল না।

শুআয়ব, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ও ইউনুস (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে উকায়ল (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। আবদুর রহমান ইবনু খালিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৮ | 6388 | ٦۳۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৮। আইয়াশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে প্রহার করা হত যখন তারা অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করত। তারা তা যেন তাদের স্থানে বিক্রি না করে যে পর্যন্ত না তারা তা আপন বিক্রয়স্থলে ওঠায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৯ | 6389 | ٦۳۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৯। আবদান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জন্য তার উপর অতিরিক্ত বিষয়ের কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যে পর্যন্ত না আল্লাহর অলংঘনীয় সীমালঙ্ঘন করা হয়। এমন হলে তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯০ | 6390 | ٦۳۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯০। আলী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দু’জন লি-আনকারীর ব্যাপারে দেখেছি যে, তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে। আমি তখন পনের বছরের যুবক ছিলাম। এরপর তার স্বামী বলল আমি যদি তাকে রেখে দেই তাহলে তার উপর আমি মিথ্যা আরোপ করেছি। বর্ননাকারী বলেন, আমি যুহরী (রহঃ) থেকে তা স্মরণ রেখেছি যে, যদি সে এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় তাহলে সে সত্যবাদী। আর যদি এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় যেন টিকটিকির ন্যায় লাল, তাহলে সে মিথ্যাবাদী। আমি যুহরী (রহঃ) কে বলতে শুনেছি যে, সে সন্তানটি ঘৃণ্য আকৃতির জন্ম নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯১ | 6391 | ٦۳۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, ইবনু আববাস (রাঃ) দু’জন লিআনকারী সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সা’দ্দাদ (রহঃ) বললেন, এ কি সে মহিলা যার সম্বন্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কোন মহিলাকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম …? তিনি বললেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯২ | 6392 | ٦۳۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট লিআনকারীদের সষ্পর্কে আলোচনা করা হল। তখন আসিম ইবনু আদী (রাঃ) তার সম্বন্ধে কিছু কটুক্তি করলেন। তারপর তিনি ফিরে গেলেন। তখন তার স্বগোত্রের এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে সে তার স্ত্রীর কাছে অন্য এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বলেন, আমি আমার এ উক্তির দরুনই এ পরীক্ষায় পড়েছি। এরপর তিনি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। আর সে তাঁকে ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জানার যার সাথে তার স্ত্রীকে পেয়েছে। এ ব্যাক্তিটি গৌর বর্ণ। হালকা-পাতলা, সোজা চুল বিশিষ্ট ছিল। আর যে ব্যাক্তি সমন্ধে দাবি করেছে যে, সে তাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে সে ছিল মেটে বর্ণের, মোটা গোড়ালী, স্থুল গোশত বিশিষ্ট। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! স্পষ্ট করে দিন। ফলে সে মহিলাটি ঐ ব্যাক্তি সদৃশ সন্তান জন্ম দিল যরে কথা তার স্বামী উল্লেখ করেছিল যে, তাকে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ের মধ্যে লিআন কার্যকর করলেন। তখন এক ব্যাক্তি এ মজলিসেই ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলল, এটা কি সে মহিলা যার সষ্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি আমি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? তিনি বলেনঃ না। ওটা ঐ মহিলা যে ইসলামে থাকা অবস্হায় প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৩ | 6393 | ٦۳۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৪. সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা। আর যারা সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে কশাঘাত কর … ক্ষমাশীল দয়ালু পর্যন্ত (২৪ঃ ৪-৫) যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ঃ ২৩)
৬৩৯৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, জাদু, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা সাধ্বী বিশ্বাসী সরলমনা রমনাদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৪ | 6394 | ٦۳۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৫. ক্রীতদাসদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা
৬৩৯৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করল। অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে। কিয়ামত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হবে। তবে যদি এমনই হয় যেমন সে বলেছে (সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হবে না )।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৫ | 6395 | ٦۳۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৬. ইমাম থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর হদ প্রয়োগ করার জন্য তিনি কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারেন নি? উমর (রাঃ) এমনটা করেছেন
৬৩৯৫। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রাসুল! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এই ব্যাক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ’ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর ক’জন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে আমার ছেলের ওপর একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যাক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অমুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করবে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৬ | 6396 | ٦۳۹٦

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ সাথে কাউকে সমকক্ষ সাব্যস্ত কর অথচ তিনই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর হল, তুমি তোমার সন্তানকে এ ভয়ে হত্যা কর যে, সে তোমার সাথে আহার করবে। লোকটি বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর হল, তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা কর। অতঃপর আল্লাহ এ কথার সত্যায়নে অবতীর্ণ করলেনঃ এবং তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন। যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যাভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে (২৫ঃ ৬৮)।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৭ | 6397 | ٦۳۹۷

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৭। আলী (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তি তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ন প্রশান্তমনা থাকে, যে পর্যন্ত না সে কোন হারাম (অবৈধ) রক্তপাতে লিপ্ত হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৮ | 6398 | ٦۳۹۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৮। আহমাদ ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে কেউ নিজেকে লিপ্ত করার পরে তার ধবংস থেকে লিপ্ত ব্যাক্তির বাঁচার কোন উপায় থাকে না সেগুলোর একটি হচ্ছে হালাল ব্যতীত (বৈধতা বিহীন) হারাম রক্ত প্রবাহিত (অবৈধ ভাবে হত্যা) করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৯ | 6399 | ٦۳۹۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বপ্রথম লোকদের মধ্যে যে বিষয়ের ফায়সালা করা হবে তা হলো হত্যা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০০ | 6400 | ٦٤۰۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৪০০। আবদান (রহঃ) … বনী যুহরা গোত্রের মিত্র মিকদাদ ইবনু আমর কিনদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যিনি বদরের যুদ্ধ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হাযির ছিলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! জনৈক কাফেরের সাথে আমার মুকাবিলা হল এবং আমাদের পরস্পরের মধ্যে লড়াই বাঁধল। সে তরবারী দ্বারা আমার হাতে আঘাত করল এবং তা কেটে ফেলল। এরপর সে কোন বৃক্ষের আড়ালে আশ্রয় নিল। আর বলল আমি আল্লাহর জন্য মুসলমান হয়ে গেলাম। এ কথা বলার পর কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে তো আমার এক হাত কেটে দিয়েছো আর কেটে ফেলার পরই এ কথা বলেছে এতে কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব?তিনি বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না।

(এ অবস্থায়) তুমি যদি তাকে হত্যা কর তাহলে তাকে হত্যা করার পূর্বে তুমি যে স্থলে ছিলে সে সে স্থলে এসে যাবে। আর সে উক্ত কালিমা উচ্চারণ করার পূর্ব যে স্থলে ছিল তুমি সে স্থলে চলে যাবে। হাবীব ইবনু আবূ আমরা (রহঃ) সাঈদ (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিকদাদ (রাঃ) কে বলেছেনঃ উক্ত মুমিন ব্যাক্তি যখন কাফের সম্প্রদায়ের সাথে অবস্থান করছিল তখন সে আপন ঈমান গোপন রেখেছিল। এরপর সে তার ঈমান প্রকাশ করল আর তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে। তুমিও তো এর পূর্বে মক্কায় অবস্থানকালে আপন ঈমান গোপন রেখেছিলে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০১ | 6401 | ٦٤۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০১। কাবীসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন মানব সন্তানকে হত্যা করা হলে আদম (আলাইহিস সালাম) এর প্রথম সন্তানের (কাবীল) উপর অপরাধের কিছু অংশ অবশ্যই বর্তায়।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০২ | 6402 | ٦٤۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কুফুরমুখী হয়ে যেয়ো না যে তোমরা একে অপরের গর্দান উড়াবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৩ | 6403 | ٦٤۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৩। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) প্রাক্কালে বলেছেনঃ লোকদেরকে নীরব কর, তোমরা আমার পরে ফূকুরমুখী হয়ে যেয়ো না যে, তোমরা একে অপরের গর্দান উড়াবে। আবূ বকর ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (অনুরূপ) বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৪ | 6404 | ٦٤۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন, মিথ্যা কসম করা। শুবা (রহঃ) তাতে সন্দেহ পোষণ করেন এবং মুয়ায (রহঃ) বলেন, শুবা আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, মিথ্যা কসম করা আর মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন প্রাণ সংহার করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৫ | 6405 | ٦٤۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৫। ইসহাক ইবনু মনসুর (রহঃ) ও আমর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ সমুহের মধ্যে সবচাইতে বড় গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, প্রান সংহার করা, পিতা-মাতার অবাধ্য- হওয়া আর মিথ্যা বলা, অথবা বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৬ | 6406 | ٦٤۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৬। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ ইবনু হারিসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জুহাইনা গোত্রের হারাক শাখার বিরুদ্ধে পাঠালেন। আমরা ভোরে এ গোত্রের কাছে এলাম এবং তাদেরকে পরাস্ত করে ফেললাম। তিনি বলেন আমি ও আনসারদের এক ব্যাক্তি তাদের একজনকে ধাওয়া করে তার কাছে পৌছে গেলাম। তিনি বলেন আমরা যখন আক্রমণ করতে উদ্যত হলাম তখন সে বলে উঠল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তিনি বলেন, আনসারী ব্যাক্তি তার থেকে বিরত হয়ে গেল। কিন্তু আমি তাকে আমার বর্শা দ্বারা আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। তিনি বলেন, আমরা যখন মদিনায় পৌছলাম তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছাল। তিনি বলেন আমাকে তিনি বললেন, হে উসামা! তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে আসলে হত্যা থেকে বাঁচতে চেয়েছিল। তিনি বললেনঃ আহা তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে? তিনি বলেন, তিনি বারবার কথাটি আমাকে বলতে থাকলেন। এমন কি আমি আকাঙ্ক্ষা করতে লাগলাম, যদি আমি ঐ দিনের পূর্বে মুসলমান না হতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৭ | 6407 | ٦٤۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ঐ নির্বাচিত নেতাদের একজন ছিলাম যারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়আত করেছিলেন। আমরা তার হাতে এ শর্তে বায়আত করেছি যে, আমরা আল্লাহর সাথে কিছুকে শরীক করব না, যিনা করব না, চুরি করব না, এমন প্রাণ সংহার করব না যা আল্লাহ হারাম করেছেন, আমরা লুন্ঠন করব না নাফরমানী করব না। যদি আমরা ওগুলো যথাযথ পালন করি তবে জান্নাত লাভ হবে। আর যদি এর মধ্য থেকে কোন একটা করে ফেলি তাহলে তার ফায়সালা আল্লাহর কাছে সমর্পিত।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৮ | 6408 | ٦٤۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। আবূ মূসা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (অনুরূপ) বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৯ | 6409 | ٦٤۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৯। আবদুর রহমান ইবনু মূবারক (রহঃ) … আহনাফ ইবনু কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে (আলী (রাঃ) কে সাহায্য) করার জন্য যাচ্ছিলাম। ইত্যবসরে আমার সাথে আবূ বাকরা (রাঃ) এর সাক্ষাৎ ঘটল। তিনি বললেন, কোথায় যাচ্ছি? আমি বললাম, ঐ ব্যাক্তিকে সাহায্য করতে। তিনি বললেন, ফিরে যাও। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, যখন দুজন মুসলমান তরবারী নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যাক্তির অবস্থান হবে জাহান্নাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! হত্যাকারীর ব্যাপারটা তো বোধগম্য। কিন্তু নিহত ব্যাক্তির ব্যাপার সে কেমন? তিনি বললেনঃ সেও তো প্রতিপক্ষকে হত্যা করতে আগ্রহী ছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১০ | 6410 | ٦٤۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৯. (ইমাম কর্তৃক) হত্যাকারীকে স্বীকারোক্তি পর্যন্ত প্রশ্ন করা। আর শরীয়াতের শাস্তির ব্যাপারে স্বীকারোক্তি
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى الاية

২৮৬৮. আল্লাহর বাণীঃ হে মু’মিনগন! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেওয়া হয়েছে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ১৭৮)

৬৪১০। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক থেকে বর্ণিত। জনৈক ইহুদী একটি বালিকার মাথা দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে চুর্ণ করে দিল। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হল কে তোমার সাথে এ আচরণ করেছে? অমুক অথবা অমুক? শেষ পর্যন্ত ইহুদীটির নাম বলা হল। তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত সে তা স্বীকার করল। সুতরাং প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে তার মাথা চুর্ন করে দেওয়া হল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১১ | 6411 | ٦٤۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৭০. পাথর বা লাঠি দ্বারা হত্যা করা
৬৪১১। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রৌপ্যালংকার পরিহিতা জনৈকা বালিকা মদিনায় বের হল। রাবী বলেন, তখন জনৈক ইহুদী তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করল। রাবী বলেন, তাকে মুমূর্ষাবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি তাকে আবার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি তাকে তৃতীয়বার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাখা নিচু করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্তর নিক্ষেপকারীকে ডেকে আনলেন এবং তাকে দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে হত্যা করালেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১২ | 6412 | ٦٤۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৭১. আল্লাহর বাণীঃ প্রাণের বদলে প্রাণ … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৫ঃ ৪৫)
৬৪১২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যাক্তি যিনি সাক্ষ্য দেন যে আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। তিন-তিনটি কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (যথা) প্রাণের বদলে প্রাণ। বিবাহিত ব্যাভিচারী। আর আপন দ্বীন পরিত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যাক্তি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৩ | 6413 | ٦٤۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৭২. যে ব্যক্তি পাথর দ্বারা কিসাস নিল
৬৪১৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ইহুদী একটি বালিকাকে তার রৌপ্যালংকারের লোভে হত্যা করল। সে তাকে পাথর দ্বারা হত্যা করল। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করল যে, না। এরপর দ্বিতীয়বার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সে তার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, না। তারপর তৃতীয়বার তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। সে তার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (হত্যাকারীকে) দুটি পাথর দ্বারা হত্যা করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৪ | 6414 | ٦٤۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৩. কাউকে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীগণ দু’রকমের শাস্তির যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করে
৬৪১৪। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। খুযা’আ গোত্রের লোকেরা এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর খুযা’আ গোত্রের লোকেরা জাহেলী যুগের স্বগোত্রীয় নিহত ব্যাক্তির প্রতিশোধ হিসেবে বনী লায়স গোত্রের এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং বললেনঃ আল্লাহ মক্কা থেকে হস্তীদলকে রুখেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আপন রাসুল ও মুমিনদেরকে কতৃত্ব দান করেছেন। জেনে রেখো! মক্কা আমার পূর্বে কারো জন্য হালাল হয়নি, আর আমার পরও কারো জন্য হালাল হবে না। জেনে রেখো! আমার ক্ষেত্রে তা দিনের কিছু সময়ের জন্য হালাল করা হয়েছে। সাবধান! তা আমার এ সময়ে এমন সম্মানিত, তার কাটা উপড়ানো যাবে না, তার বৃক্ষ কাটা যাবে না, তাতে পড়ে থাকা বস্তু মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য ব্যতীত ভুলে নেওয়া যাবে না।

আর যার কাউকে হত্যা করা হয় সে দু’প্রকার দণ্ডের যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করবে। হয়ত রক্তপণ গ্রহণ করা হবে, নতুবা কিসাস নেওয়া হবে। এ সময় ইয়ামনবাসী এক ব্যাক্তি দাঁড়াল, যাকে আবূ শাহ বলা হয়। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে লিখে দিন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আবূ শাহকে লিখে দাও। তারপর কুরাইশ গোত্রের এক ব্যাক্তি দাঁড়াল। আর বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইযখির ব্যতীত। কেননা, আমরা তা আমাদের ঘরে, আমাদের কবরে ব্যবহার করি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইযখির ব্যতীত।

উবায়দুল্লাহ (রহঃ) শায়বান (রহঃ) থেকে الْفِيلِ (হস্তী) এর ব্যাপারে হারব ইবনু শাদ্দাদ (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। কেউ কেউ আবূ নুআয়ম (রহঃ) থেকে المقتل শব্দ নকল করেছেন। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) إِمَّا أَنْ يُقَادَ এর পরে أَهْلُ الْقَتِيلِ‏ শব্দও বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৫ | 6415 | ٦٤۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৩. কাউকে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীগণ দু’রকমের শাস্তির যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করে
৬৪১৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী ইসরাঈলদের মধ্যে কিসাসের বিধান বলবত ছিল। তাদের মধ্যে রক্তপনের বিধান ছিল না। তবে আল্লাহ এ উম্মাতকে বললেনঃ নর হত্যার ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে …… কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে পর্যন্ত (২ঃ ১৭৮)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ক্ষমা প্রদর্শনের অর্থ হল ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার ক্ষেত্রে রক্তপণ গ্রহণ করা। তিনি বলেন, আর প্রচলিত প্রথার অনুসরণ করার অর্থ হচ্ছে, যুক্তি সঙ্গত দাবি ও সদয়ভাবে দীয়ত আদায় করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৬ | 6416 | ٦٤۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৪. যথার্থ কারণ ছাড়া রক্তপাত দাবি করা
৬৪১৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচাইতে ঘৃণিত ব্যাক্তি হচ্ছে তিন জন। যে ব্যাক্তি হারাম শরীফে অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়। যে ব্যাক্তি ইসলামী যুগে জাহিলী যুগের প্রথা তালাশ করে। যে ব্যাক্তি যথার্থ কারণ ব্যতীত কারো রক্তপাত দাবি করে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৭ | 6417 | ٦٤۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৫. ভুলক্রমে হত্যার ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর ক্ষমা প্রদর্শন করা
৬৪১৭। ফারওয়া ও মুহাম্মাদ ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, উহুদের দিন ইবলীস লোকদের মাঝে চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! পিছনের দলের ওপর আক্রমণ কর। ফলে তাদের সম্মুখভাগ পশ্চাত ভাগের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। এমন কি তারা ইয়ামানকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আমার পিতা! আমার পিতা! কিন্তু তারা তাকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। রাবী বলেন, মুশরিকদের একটি দল পরাজিত হয়ে তায়েফ চলে গিয়েছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৮ | 6418 | ٦٤۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৭. একবার হত্যার স্বীকারোক্তি করলে তাকে হত্যা করা হবে
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلاَّ خَطَأً الاية

২৮৭৬. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ কোন মু’মিন ব্যক্তির অন্য মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ নয়। তবে ভুলবশত করলে তা স্বতন্ত্র … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৪ঃ ৯২)

৬৪১৮। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ইহুদী একটি বালিকার মাথা দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে চূর্ণ করে দিল। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কে তোমার সাথে এমন আচরণ করেছে? অমুক? না অমুক? অবশেষে ইহুদী লোকটির নাম উল্লেখ করা হল। তখন সে তার মাথা দিয়ে (হ্যাঁ-সূচক) ইশারা করল। তখন ইহুদী লোকটিকে আনা হল এবং সে স্বীকার করল। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ করলেন, তাই তার মাথা একটি পাথর দিয়ে চূর্ণ করা হল এবং হাম্মাম (রহঃ) বলেন, দুটি পাথর দিয়ে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৯ | 6419 | ٦٤۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৮. মহিলার বদলে পুরুষকে হত্যা করা
৬৪১৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ইহুদীকে একজন বালিকার বদলে হত্যা করেছেন। সে রৌপ্যালংকারের লোভে ওকে হত্যা করেছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২০ | 6420 | ٦٤۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৯. আহত হওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষদের মধ্যে কিসাস। আলিমগণ বলেন, নারীর বদলে পুরুষকে হত্যা করা হবে। আর উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা হয় যে, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যেক হত্যা বা আহত কারার ক্ষেত্রে নারীর বদলে পুরুষকে কিসাসের বিধানানুসারে শাস্তি দেওয়া হবে। ইহাই উমর ইবনু আবদুল আযীয (র), ইবরাহীম (র) এবং আবূয যিনাদ (র)-এর অভিমত তাদের আসহাব থেকে। রুবায়-এর বোন কোন এক ব্যক্তিকে আহত করলে নবী (সাঃ) বলেন, এ ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান হল ‘কিসাস’
৬৪২০। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি বলেন, তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না। আমরা মনে করলাম, রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো, তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না, যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত। কেননা, সে তোমাদের কাছে হাযির ছিল না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২১ | 6421 | ٦٤۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৮০. হাকিমের কাছে মোকাদ্দামা দায়ের করা ব্যতীত আপন অধিকার আদায় করে নেয়া বা কিসাস গ্রহণ করা
৬৪২১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা হচ্ছি (পৃথিবীতে) সর্বশেষ ও (আখিরাতে) সর্বপ্রথম। উক্ত হাদীসের সুত্রে এও বর্ণিত, তিনি বলেছেন, যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ব্যাতিরেকে উঁকি মারে আর তুমি পাথর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু ফুটা করে দাও, তাতে তোমার কোন গুনাহ হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২২ | 6422 | ٦٤۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৮০. হাকিমের কাছে মোকাদ্দামা দায়ের করা ব্যতীত আপন অধিকার আদায় করে নেয়া বা কিসাস গ্রহণ করা
৬৪২২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে উঁকি মারল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি চাকু নিক্ষেপের প্রস্তুতি নিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে (এ হাদীস) কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৩ | 6423 | ٦٤۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৮১. (জনতার) ভিড়ে মারা গেলে বা হত্যা করা হলে
৬৪২৩। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদের দিন যখন মুশরিকরা পরাজিত হয়ে গেল তখন ইবলীস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দাগণ! পিছনের দলের উপর আক্রমন কর। তখন সম্মুখবর্তীরা পশ্চাতবর্তীদের উপর আক্রমণ করল ও পরস্পরে লড়ায়ে লিপ্ত হল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে তার বাবা ইয়ামান আক্রান্ত হয়েছেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর বান্দাগণ! (এ তো) আমার পিতা! আমার পিতা! তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! তারা তাকে হত্যা না করে ক্ষান্ত হল না। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। উরওয়া (রহঃ) বলেন, এ কারণে হুযায়ফা (রাঃ) এর অন্তরে আল্লাহর সাথে মিলন না হওয়া পর্যন্ত এই স্মৃতি জাগরুক ছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৪ | 6424 | ٦٤۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৮২. যখন কেউ ভুলবশত নিজেকে হত্যা করে ফেলে তখন তার কোন রক্তপণ নেই
৬৪২৪। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে খায়বার অভিমুখে রওয়ানা হলাম। তখন তাদের এক ব্যাক্তি বলল, হে আমির! তোমরা আমাদেরকে উট চালনার কিছু সঙ্গীত শোনাও। সে তাদেরকে তা গেয়ে শোনাল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ চালকটি কে? তারা বলল, আমির। তিনি বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদেরকে তার থেকে দীর্ঘকাল উপকৃত হবার সুযোগ করে দিন। পরদিন সকালে আমির নিহত হল। তখন লোকেরা বলতে লাগল তার আমল বরবাদ হয়ে গেছে, সে নিজেকে হত্যা করেছে। যখন আমি ফিরলাম, আর লোকেরা বলাবলি করছিল যে, আমিরের আমল বরবাদ হয়ে গেছে, তখন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান। তাদের ধারনা, আমিরের আমল বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেন, যে এমনটা বলেছে মিথ্যা বলেছেন কেননা আমিরের জন্য দ্বিগুন পুরস্কার। কারণ সে (সৎ কাজে) অতিশয় যত্নবান, (আল্লাহর রাস্তায়) মুজাহিদ। অন্য কোন প্রকার হত্যা এর চেয়ে অধিক পুরস্কারের অধিকারী করতে পারে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৫ | 6425 | ٦٤۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৩. কাউকে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়ার ফলে তার দাঁত উপড়ে গেলে
৬৪২৫। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তির হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ ব্যাক্তির মুখ থেকে টেনে বের করল। ফলে তার দু’টি দাঁত উপড়ে গেল। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাদের মুকাদ্দমা পেশ করল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে? যেমন উট কামড়ে থাকে? তোমার জন্য কোন রক্তপন নেই।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৬ | 6426 | ٦٤۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৩. কাউকে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়ার ফলে তার দাঁত উপড়ে গেলে
৬৪২৬। আবূ আসিম (রহঃ) … ইয়ালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন একটি যুদ্ধে বেরিয়ে ছিলাম। তখন এক ব্যাক্তি দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে; ফলে তার দাঁত উপড়ে যায়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দাঁতের) দীয়তকে বাতিল করে দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৭ | 6427 | ٦٤۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৪. দাঁতের বদলে দাঁত
৬৪২৭। আনসারী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাযারের কন্যা একটি বালিকাকে থাপ্পড় মেরে তার দাঁত ভেঙ্গে ফেলল। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল তখন তিনি কিসাসের নির্দেশ দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৮ | 6428 | ٦٤۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৫. আঙ্গুলের রক্তপণ
৬৪২৮। আদম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, (দীয়তের ব্যাপারে) এটি এবং ওটি সমান। অর্থাৎ কনি ও বৃদ্ধাঙ্গূলি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৯ | 6429 | ٦٤۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৫. আঙ্গুলের রক্তপণ
৬৪২৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩০ | 6430 | ٦٤۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৬. যখন একটি দল কোন এক ব্যক্তিকে বিপন্ন করে তোলে, তখন তাদের সকলকে শাস্তি প্রদান করা হবে কি? অথবা সকলের নিকট থেকে কিসাস গ্রহন করা হবে কি? মুতাররিফ (রহঃ) শাবী (রহঃ) থেকে এমন দু জন ব্যক্তির ব্যাপারে বর্ণনা করেন যারা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেছিল যে, সে চুরি করেছে। তখন আলী (রাঃ) তার হাত কেটে ফেললেন। তারপর তারা অপর একজনকে নিয়ে এসে বলল, আমরা ভুল করে বসেছি। তখন তিনি তাদের সাক্ষ্য বাতিল করে দিলেন এবং প্রথম ব্যক্তির দীয়ত (রক্তপণ) গ্রহণ করলেন। আর বললেন, যদি আমি জানতাম যে তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করেছে, তাহলে তোমাদের উভয়ের হাত কেটে ফেলতাম। আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, আমাকে ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একটি বালককে গোপনে হত্যা করা হয়। তখন উমর (রাঃ) বললেন, যদি গোটা সান’আবাসী এতে অংশ নিত তাহলে আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। মুগীরা ইবনু হাকীম (রহঃ) আপন পিতা হাকীম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, চারজন লোক একটি বালককে হত্যা করেছিল। তখন উমর (রাঃ) অনুরূপ কথা বলেছিলেন। আবূ বকর ও ইবনু যুবায়র, আলী ও সুওয়ায়দ ইবনু মুকাররিন (রাঃ) থাপ্পড়ের ক্ষেত্রে কিসাসের নির্দেশ দেন। উমর (রাঃ) ছড়ি দিয়ে প্রহারের ব্যাপারে কিসাসের নির্দেশ দেন। আর আলী (রাঃ) তিনটি বেত্রাঘাতের জন্য কিসাসের নির্দেশ দেন এবং শুরায়হ (রহঃ) একটি বেত্রাঘাত ও নখের আঁচড়ের জন্য কিসাস কার্যকর করেন।
৬৪৩০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম। আর তিনি আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না। আমরা মনে করলাম যে, রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ। যখন তিনি হুশ ফিরে পেলেন, তখন বললেনঃ আমাকে (জোর পূর্বক) ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত। কেননা, সে তোমাদের সাথে ছিল না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩১ | 6431 | ٦٤۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৭. ‘কাসামাহ’ (শপথ)। আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি দু’জন সাক্ষী পেশ করবে, নতুবা তার কসম! ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) কাসামা অনুযায়ী কিসাস গ্রহণ করতেন না। উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর তরফ থেকে নিযুক্ত বসরার গভর্নর আদী ইবনু আরতাত (রহঃ) এর কাছে একজন নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে পত্র লিখেন, যাকে তেল ব্যবসায়ীদের বাড়ীর কাছে পাওয়া গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, যদি তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রমান পেশ করতে পারে তবে দন্ড প্রদান করবে নতুবা লোকদের ওপর জুলম করবে না। কেননা, তা এমন ব্যাপার, যার কিয়ামত পর্যন্ত ফায়সালা করা যায় না।
৬৪৩১। আবু নূআয়ম (রহঃ) … সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার গোত্রের একদল লোক খায়বার গমন করল ও তথায় তারা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ল। তারা তাদের একজনকে নিহত অবস্থায় পেল। এবং যাদের কাছে তাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল তাদেরকে তারা বলল, তোমরা আমাদের সাথীকে হত্যা করেছ। তারা বলল, আমরা তাকে না হত্যা করেছি, না হত্যাকারীকে জানি। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা খায়বার গিয়েছিলাম। আর আমাদের একজনকে তথায় নিহত অবস্থায় পেলাম। তখন তিনি বললেন, বায়োবৃদ্ধকে বলতে দাও। বায়োবৃদ্ধকে বলতে দাও। তারপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমাদেরকে তার হত্যাকারীর বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে হবে। তারা বলল আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ওরা কসম করে নেবে। তারা বলল, ইহুদীদের কসমে আমাদের আস্থা নেই। এ নিহতের রক্ত মূল্যহীন হযে যাক তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করলেন না। তাই সাদাকার একশ উট প্রদান করে তার রক্তপণ আদায় করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩২ | 6432 | ٦٤۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৭. ‘কাসামাহ’ (শপথ)। আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি দু’জন সাক্ষী পেশ করবে, নতুবা তার কসম! ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) কাসামা অনুযায়ী কিসাস গ্রহণ করতেন না। উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর তরফ থেকে নিযুক্ত বসরার গভর্নর আদী ইবনু আরতাত (রহঃ) এর কাছে একজন নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে পত্র লিখেন, যাকে তেল ব্যবসায়ীদের বাড়ীর কাছে পাওয়া গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, যদি তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রমান পেশ করতে পারে তবে দন্ড প্রদান করবে নতুবা লোকদের ওপর জুলম করবে না। কেননা, তা এমন ব্যাপার, যার কিয়ামত পর্যন্ত ফায়সালা করা যায় না।
৬৪৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তার সিংহাসন জনসাধারণকে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে বের করলেন। এরপর লোকদেরকে তার নিকট আসার অনুমতি প্রদান করলেন। তারা প্রবেশ করল। তারপর বললেন, তোমরা কাসামা (কসম) সম্বন্ধে কি মত পোষণ কর? তারা বলল আমাদের মতে কাসামার ভিত্তিতে কিসাস গ্রহণ করা বিধেয়। খলীফাগণ এর ভিত্তিতে কিসাস কার্যকর করেছেন। তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ কিলাবা। তুমি কি বল? তিনি আমাকে লোকদের সামনে দাঁড় করালেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার কাছে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ ব্যাক্তিবর্গ ও আরব নেতৃবৃন্দ রয়েছেন, বলুন তো, যদি তাদের থেকে পঞ্চাশ ব্যাক্তি দামেশকের একজন বিবাহিত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে যে সে যিনা করেছে, অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে আপনি তাকে রজম করবেন কি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, বলুন তো, যদি তাদের মধ্য থেকে পঞ্চাশ জন হিমস নিবাসী এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, সে যিনা করেছে। অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে কি আপনি তার হাত কাটবেন? তিনি বললেনঃ না।

আমি বললাম, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন কারনের কোন একটি ব্যতীত কাউকে হত্যা করেননি। (যথা) (অন্যায়ভাবে) কাউকে হত্যা করলে তাকে হত্যা করা হবে। অথবা যে ব্যাক্তি বিয়ের পর যিনা করে, অথবা যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ও ইসলাম থেকে ফিরে মুরতাদ হয়ে যায়।

তখন লোকেরা বলল, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কি বর্ণনা করেননি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুরির ব্যাপারে হাত কেটেছেন, লৌহশলাকা দ্বারা চক্ষু ফুড়ে দিয়েছেন, তারপর তাদেরকে উত্তপ্ত রৌদ্রে ফেলে রেখেছেন। তখন আমি বললাম, আমি তোমাদেরকে আনাস (রাঃ) এর হাদীস বর্ণনা করছি।

আমাকে আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, উকাইল গোত্রের আটজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তারা তার হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহন করল। কিন্তু সে এলাকার আবহাওয়া তাদের অনুকূলে হল না এবং তাদের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এর অভিযোগ করল। তিনি তাদেরকে বললেন তোমরা কি আমার রাখালের সাথে তার উটপালের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করবে না? তারা বলল, হ্যাঁ। তারপর তারা তথায় গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালকে হত্যা করে উটওলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল।

এ সংবাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি তাদের পশ্চাদ্ধাবনের লক্ষ্যে লোক পাঠালেন। তারা ধরা পড়ল এবং তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্বন্ধে নির্দেশ প্রদান করা হল। তাদের হাত-পা কাটা হল, লৌহশলাকা দ্বারা তাদের চক্ষু ফুড়ে দেওয়া হল। এরপর উত্তপ্ত রৌদ্রে তাদেরকে ফেলে রাখা হল, অবশেষে তারা মারা গেল। আমি বললাম তারা যা করেছে এর চেয়ে জঘন্য আর কি হতে পারে? তারা ইসলাম থেকে মুরতাদ হল, হত্যা করল, চুরি করল। তখন আমবাসা ইবনু সাঈদ বললেনঃ আল্লাহর কসম! আজকের ন্যয় আমি আর কখনো শুনিনি। আমি বললাম, হে আমবাসা! তাহলে তুমি আমার বর্ণিত হাদীসটি প্রত্যাখ্যান করছ কি? তিনি বললেনঃ না। তুমি হাদীসটি যথাযথ বর্ণনা করেছ। আল্লাহর কসম! এ লোকগুলো কল্যাণের উপর থাকবে যতদিন এ শায়খ (বুযর্গ) তাদের মধ্যে বর্তমান থাকবেন।

আমি বললাম, এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একটা নিয়ম রয়েছে। আনসারদের একটি দল তাঁর কাছে প্রবেশ করল। তারা তার কাছে আলোচনা করছিল। ইতিমধ্যে তাদের সামনে তাদের এক লোক বেরিয়ে গেল এবং নিহত হল। অতঃপর তারা বের হল। তখন তারা তাদের সঙ্গীকে দেখতে পেল যে, রক্তের মধ্যে নড়াচড়া করছে। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের সঙ্গী যে আমাদের সাথে আলোচনা করছিল এবং সে আমাদের সামনেই বের হয়ে গিয়েছিল। আমরা এখন তাকে রক্তের মাঝে নড়াচড়া করতে দেখতে পাচ্ছি। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে গেলেন এবং বললেনঃ তাকে হত্যা করার ব্যাপারে কাদের সমন্ধে তোমাদের ধারণা? তারা বললা আমরা মনে করি! ইহুদীরা তাকে হত্যা করেছে।

তিনি ইহুদীদেরকে ডেকে পাঠালেন। এরপর তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা ওকে হত্যা করেছ? তারা বলল, না। তিনি আনসারদের বললেনঃ তোমরা কি এতে সম্মত আছ যে, ইহুদীদের আরো পঞ্চাশজন লোক কসম করে বলবে যে, তারা তাকে হত্যা করেনি। আনসাররা বলল, তারা এতে কোন পরওয়া করবে না, তারা আমাদের সকলকে হত্যা করে ফেলার পরও কসম করে নিতে পারবে। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা কি এজন্য প্রস্তুত আছ যে, তোমাদের থেকে পঞ্চাশজনের কসমের মাধ্যমে তোমরা দীয়াতের অধিকারী হবে? তারা বলল, আমরা কসম করব না। তখন তিনি নিজের পক্ষ থেকে দীয়াত প্রদান করে দেন।

(রাবী আবূ কালাবা বলেন) আমি বললাম, হুযায়ল গোত্র জাহিলী যুগে তাদের গোত্রের লোকেরা এক ব্যাক্তিকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। এক রাতে সে ব্যাক্তি বাহহা নামক স্থানে ইয়ামনের এক পরিবারের উপর আকম্মিক হামলা চালায়। কিন্তু সে পরিবারের এক ব্যাক্তি তা টের পেয়ে যায়। এবং তার প্রতি তরবারী নিক্ষেপ করে তাকে হত্যা করে ফেলে। অতঃপর হুযায়ল গোত্রের লোকেরা এসে ইয়ামনী ব্যাক্তিটিকে ধরে ফেলে এবং (হাজ্জের (হজ্জ) মৌসুমে উমর (রাঃ) এর কাছে তাকে নিয়ে পেশ করে। আর বলে সে আমাদের এক সাথীকে হত্যা করেছে। ইয়ামনী লোকটি বলল, তারা কিন্তু ওকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তখন তিনি বললেন, হুযায়ল গোত্রের পঞ্চাশ ব্যাক্তি এ মর্মে কসম করবে যে তারা ওকে সকল দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করেনি।

বর্ণনাকারী বলেনঃ তাদের মধ্য থেকে উনপঞ্চাশ ব্যাক্তি কসম করে নিল, অতঃপর তাদের একজন সিরিয়া থেকে এলো, তারা তাকে কসম করতে বলল। কিন্তু সে এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে কসম থেকে তাদের সাথে আপোস করে নিল। তখন তারা তার স্থলে অপর একজনকে যোগ করে নিল। তারা তাকে নিহত ব্যাক্তির ভাইয়ের কাছে পেশ করল। তারা উভয়ই করমর্দন করল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা এবং ঐ পঞ্চাশ ব্যাক্তি, যারা কসম করেছে, চললাম। যখন তারা নাখলা নামক স্থানে পৌছলাম, তাদের উপর বৃষ্টি নেমে এল। তখন তারা পাহাড়ের এক গুহায় প্রবেশ করল। কিন্তু গুহা ঐ পঞ্চাশজন কসমকারীর উপর ভেঙ্গে পড়ল। এতে তারা সকলেই মারা গেল।

তবে করমর্দনকারী দু’জন শুধু বেঁচে গেল। কিন্তু একটি পাথর তাদের উভয়ের প্রতি নিক্ষিপ্ত হল এবং নিহত ব্যাক্তির ভাইয়ের পা ভেঙ্গে ফেলল। আর সে এক বছর জীবিত থাকার পর মারা গেল। (রাবী বলেন) আমি বললাম, আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান (এক সময়) কাসামার ভিত্তিতে এক ব্যাক্তির কিসাস গ্রহণ করেন। এরপর আপন কৃতকর্মের উপর তিনি লজ্জিত হন এবং ঐ পঞ্চাশ ব্যাক্তি সম্বন্ধে নির্দেশ দিলেন যারা কসম করেছিল, তাদেরকে রেজিষ্ট্রার থেকে খারিজ করে দিয়ে সিরিয়ায় নির্বাসন দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৩ | 6433 | ٦٤۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৩। আবূ নুমান (রহঃ) … আনাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন একটি হুজরার ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন তিনি তার প্রতি লক্ষ্য করে একটি তীক্ষ্ণ প্রশস্ত ছুরি নিয়ে দাঁড়ালেন এবং তার অগোচরে তাকে খোঁচা দেয়ার সুযোগ তালাশ করতে লাগলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৪ | 6434 | ٦٤۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন গৃহের দরজার এক ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট চিরুনি সদৃশ একখন্ড লোহা ছিল। এ দ্বারা তিনি স্বীয় মাথা চুলকাচ্ছিলেন। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখলেন তখন বললেনঃ যদি আমি নিশ্চিত হতাম যে, তুমি আমার দিকে তাকাচ্ছ তাহলে এ দ্বারা আমি তোমার চোখে আঘাত করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ চোখের দরুন-ই অনুমতির বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৫ | 6435 | ٦٤۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন ব্যাক্তি অনুমতি ব্যতিরেকে তোমার দিকে উঁকি মারে আর তখন তুমি তার প্রতি কংকর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু উপড়ে ফেল, এতে তোমার কোন অপরাধ হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৬ | 6436 | ٦٤۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৯. আকিলা (রক্তপণ) প্রসঙ্গে
৬৪৩৬। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, যা কুরআনে নেই এমন কিছু আপনাদের নিকট আছে কি? একবার তিনি বলেছেন, যা মানুষের নিকট নেই … তখন তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম! যিনি খাদ্যশস্য অংকুরিত করেন এবং প্রাণ সৃষ্টি করেন। কুরআনে যা কিছু রয়েছে তা ব্যতীত আমাদের নিকট অন্য কিছু নেই। তবে এমন জ্ঞান যা আল্লাহর কিতাব বুঝবার জন্য কোন ব্যাক্তিকে দেয়া হয় এবং এ কাগজের টুকরায় যা রয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কাগজের টুকরায় কি রয়েছে? তিনি বললেনঃ রক্তপণ ও মুক্তিপণের বিধান। আর (এ নীতি) কোন কাফেরের বদলে কোন মুসলমানকে হত্যা করা হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৭ | 6437 | ٦٤۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলার একজন অপরজনকে পাথর নিক্ষেপ করে গর্ভপাত ঘটিয়ে দিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মহিলার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৮ | 6438 | ٦٤۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উযার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি মহিলাদের গর্ভপাত সম্পর্কে সাহাবাদের সাথে পরামর্শ করেন। তখন মুগীরা (রাঃ) বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যাক্তির প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তিকে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করেছেন। এ সময় মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ ফায়সালা করতে দেখেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৯ | 6439 | ٦٤۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … হিশামের পিতা উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর (রাঃ) লোকদেরকে কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভ্রুণ হত্যার ব্যাপারে ফায়সালা দিতে কে শুনেছে? তখন মুগীরা (রাঃ) বললেনঃ আমি তাকে অনুরূপ ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা প্রদান করতে শুনেছি। তিনি বললেন, এ বিষয়ে তোমার সাক্ষী নিয়ে এসো। এ সময় মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ ফায়সালা প্রদান করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪০ | 6440 | ٦٤٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৪০। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি সাহাবীগণের সাথে গর্ভপাত ঘটানোর ব্যাপারে অনুরূপ পরামর্শ করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪১ | 6441 | ٦٤٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৯১. মহিলার ভ্রুন এবং দিয়াত পিতা ও পিতার নিকটাত্নীয়ের উপর বর্তায় সন্তানের উপর নয়
৬৪৪১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনি লিহয়ানের জনৈকা মহিলার ভ্রণ হত্যার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাদী প্রদানের ফায়সালা করেন। তারপর দন্ডপ্রাপ্ত মহিলার মৃত্যু হল, যার সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ফায়সালা করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনঃ ফায়সালা প্রদান করলেন যে, তার ত্যাজ্য সম্পত্তি তার ছেলে সন্তান ও স্বামী পাবে। আর দিয়াত আদায় করবে তার আসাবা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪২ | 6442 | ٦٤٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৯১. মহিলার ভ্রুন এবং দিয়াত পিতা ও পিতার নিকটাত্নীয়ের উপর বর্তায় সন্তানের উপর নয়
৬৪৪২। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলা ঝগড়াকালে একে অপরের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে এবং একজন অপর জনের গর্ভস্থিত সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিচার নিয়ে এল। তিনি ফায়সালা দিলেন যে, ভ্রুণের দিয়াত হলো একটি গোলাম অথবা বাদী আর এ ফায়সালাও দিলেন যে, নিহত মহিলার দিয়াত হত্যাকারিণীর আসাবার উপর আসবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৩ | 6443 | ٦٤٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৯২. যে কেউ গোলাম অথবা বালক থেকে সাহায্য চায়। বর্ণিত আছে যে, উম্মু সালামাহ (রাঃ) একটি পাঠশালার শিক্ষকেকর কাছে বার্তা পাঠালেন যে, আমার কাছে কতিপয় বালক পাঠিয়ে দিন, যারা পশমের জট ছাড়াবে। তবে কোন আযাদ (বালক) পাঠাবেন না।
৬৪৪৩। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন, তখন আবূ তালহা (রাঃ) আমার হাতে ধরে আমাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আনাস একজন হুশিয়ার ছেলে। সে যেন আপনার খেদমত করে। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি মুকীম এবং সফরকালে তার খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম! যে কাজ আমি করে নিয়েছি এর জন্য তিনি আমাকে কোন দিন এ কথা বলেননি, এটা এরুপ কেন করেছ? আর যে কাজ আমি করিনি এর জন্যও এ কথা বলেননি এটা এরূপ কেন করনি?

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৪ | 6444 | ٦٤٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৩. খনি দন্ডমুক্ত এবং কূপ দন্ডমুক্ত
৬৪৪৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পশু কাউকে আহত করলে, কূপে বা খনিতে পতিত হয়ে কেউ নিহত বা আহত হলে তাতে কোন দণ্ড বা রক্তপণ নেই। আর কেউ গুপ্তধন প্রাপ্ত হলে তার প্রতি এক-পঞ্চমাংশ দেয়া ওয়াজিব।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৫ | 6445 | ٦٤٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৪. পশু আহত করলে তাতে কোন ক্ষতিপূরন নেই। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, তাদের সময়ে পশুর লাথির আঘাতের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদানের ফায়সালা দিতেন না এবং লাগাম টানার দরুন কোন ক্ষতি সাধিত হলে ক্ষতিপূরনের ফায়সালা দিতেন। হাম্মাদ (র) বলেন, লাথির আঘাতের দরুন দায়ী করা যাবে না। তবে যদি কোন ব্যক্তি পশুটিকে খোঁচা মারে। শুরায়হ (রহঃ) বলেন, প্রতিশোধমূলক আঘাতের দরুন পশুকে দায়ী করা যাবে না। যেমন কেউ কোন পশুকে আঘাত করল, তখন পশুটিও তাকে পা দিয়ে আঘাত করল। হাকাম (র) ও হাম্মাদ (র) বলেন যদি ভাড়াটিয়া ব্যক্তি গাধাকে হাঁকিয়ে নেয়, যে গাধার উপর কোন মহিলা বসা থাকে আর মহিলাটি গাধা থেকে পড়ে যায়, তাহলে তার উপর কিছু বর্তিবে না। শা’বী (র) বলেন, যদি কেউ কোন পশু চালায় এবং তাকে ক্লান্ত করে ফেলে, তাহলে তার উপর ক্ষতিপূরণ বর্তিবে। আর যদি ধীরে ধীরে চালায় তাহলে বর্তিবে না।
৬৪৪৫। মুসলিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পশু আহত করলে, খনি বা কূপে পতিত হয়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাতে কোন ক্ষতিপূরন নেই। গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ দেওয়া ওয়াজিব।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৬ | 6446 | ٦٤٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৫. যে ব্যক্তি যিম্মিকে বিনা দোষে হত্যা করে তার পাপ
৬৪৪৬। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি প্রদত্ত কাউকে হত্যা করে, সে ব্যাক্তি জান্নাতের সূুগন্ধ পর্যন্ত শুকতে পারবে না। অথচ তার সুগন্ধী চল্লিশ বছর দূরত্ব থেকে অনুভূত হবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৭ | 6447 | ٦٤٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৬. কাফেরের বদলে মুসলমানকে হত্যা করা হবে না
৬৪৪৭। সাদাকা ইবনুল ফযল (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি যা কুরআনে নেই? তিনি বললেন, দিয়াতের বিধান, বন্দী-মুক্তির বিধান এবং (এ বিধান যে) কাফেরের বদলে কোন মুসলমানকে হত্যা করা যাবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৮ | 6448 | ٦٤٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৭. যখন কোন মুসলমান কোন ইয়াহুদীকে ক্রোধের সময় থাপ্পড় লাগাল। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৬৪৪৮। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা নাবীদের একজনকে অপর জনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৯ | 6449 | ٦٤٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৭. যখন কোন মুসলমান কোন ইয়াহুদীকে ক্রোধের সময় থাপ্পড় লাগাল। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৬৪৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইহুদী, যার মুখমণ্ডলে চপোটাঘাত করা করেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল হে মুহাম্মাদ! আপনার জনৈক আনসারী সাহাবী আমার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তোমরা তাকে ডেকে আন। তারা তাকে ডেকে আনল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কেন চড় মারলে? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এক ইহুদীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আমি তাকে বলতে শুনলাম যে, ঐ সত্তার কসম! যিনি মূসা কে মানবমণ্ডলীর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। তখন আমি বললাম, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরেও কি? অতঃপর আমার ভীষণ রাগ এসে গেল। ফলে আমি তাকে চড় মেরে ফেলি। তিনি বললেনঃ তোমরা আমাকে নাবীদের মাঝে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। কেননা সকল মানুষই কিয়ামতের দিন বেহুশ হয়ে পড়বে। তখন আমিই হব প্রথম ব্যাক্তি যে হুশ ফিরে পাব। কিন্তু আমি তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) কে এমন অবস্থায় পাব যে, তিনি আরশের খুটিসমূহ থেকে একটি খুটি ধরে আছেন। আমি বুঝতে পারব না যে তিনি আমার আগে হুশ ফিরে পেলেন, না তুর পর্বতে বেহুশ হওয়ার বিনিময় দেয়া হয়েছে যে (এখন বেহুশই হননি)?

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫০ | 6450 | ٦٤۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫০। আবদুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কুলুষিত করেনি …… (৬ঃ ৮২)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদের কাছে গুরুতর মনে হলো। তারা বললেন, আমাদের মাঝে এমন কে আছে যে তার ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করে না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা অবশ্যই এমনটা নয়, তোমরা কি লুকমানের কথার প্রতি লক্ষ্য করনি? শিরকই চরম জুল্‌ম (সীমালংঘন)। (৩১ঃ ১৩)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫১ | 6451 | ٦٤۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সবচেয়ে কঠিন কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। মিথ্যা সাক্ষ্য কথাটি তিনবার বললেন। অথবা বলেছেন, মিথ্যা বক্তব্য। কথাটি বারবার বলতে থাকলেন এমন কি আমরা আকাঙ্ক্ষা করতে লাগলাম, হায় যদি তিনি নিরব হয়ে যেতেন।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫২ | 6452 | ٦٤۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫২। মুহাম্মদ ইবনু হুসায়ন ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কবীরা গুনাহ সমূহ কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর পিতা-মাতার অবাধ্যতা। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর মিথ্যা কসম করা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, মিথ্যা কসম কি? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি (কসম দ্বারা) মুসলমানের ধন সম্পদ হরণ করে নেয়। অথচ সে এ কসম