• বইয়ের নামঃ সহিহ বুখারী ০৯ম খণ্ড (৪৮৭৫-৫৯৬৪)
  • লেখকের নামঃ ইমাম বুখারী
  • প্রকাশনাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
  • বিভাগসমূহঃ ইসলামিক বই, হাদীস শরীফ

 

সহিহ বুখারী ০৯ম খণ্ড (৪৮৭৫-৫৯৬৪)

তালাক অধ্যায় (৪৮৭৫-৪৯৫৯)

হাদীস নং ৪৮৭৫ – আল্লাহর বাণী: হে নবী ! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর, তখন ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাদের তালাক দিবে।

ইসমাঈল ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলেন। উমর ইবনে খাত্তাব রা. এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে এবং নিজের কাছে লেখে দেয় যতক্ষণ না সে মহিলা পবিত্র হয়ে পুনরায় ঋতুবতী হয় এবং আবার পবিত্র হয়। এরপর সে যদি ইচ্ছা করে, তাকে রেখে দিবে, আর যদি ইচ্ছা করে তবে সহবাসের পূর্বে তাকে তালাক দেবে। আর ঐ-ই তালাকের পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীদের তালাক দেওয়ার বিধান রেখেছেন।

হাদীস নং ৪৮৭৬ – হায়েয অবস্থায় তালাক দিলে তা তালাক হিসাবে পরিগণিত হবে

সুলাইমান ইবনে হারব রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অব্স্থায় তালাক দিলেন, উমর রা. বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উল্লেখ করলেন। তখন তিনি বললেন, সে যেন তাকে ফিরিয়ে আনে। রাবী (ইবনে সীরীন) বলেন, আমি বললাম, তালাকটি কি গণ্য করা হবে? তিনি (ইবনে উমর) বললেন, তবে কি হবে? কাতাদা রহ. ইউনুস ইবনে জুবাইর রহ. থেকে, তিনি ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাকে নির্দেশ দাও সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে। আমি (ইউনুস) বললাম, তালাকটি কি পরিগণিত হবে? তিনি (ইবনে উমর) বললেন, তুমি কি মনে কর? যদি সে অক্ষম হয় এবং স্বেচ্ছায় আহমকী করে। আবু মামার বলেন, আবদুল ওয়ারিস আইউব থেকে, তিনি সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে, তিনি ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, এটিকে আমার উপর এক তালাক ধরা হয়েছিল।

হাদীস নং ৪৮৭৭ – তালাক দেওয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সামনাসামনি হয়ে তালাক দেবে?

হুমাইদী রহ………আওযাঈ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যুহরী রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন সহধর্মিণী তাঁর থেকে পরিত্রাণ চেয়েছিল? উত্তরে তিনি বললেন, উরওয়া রা. আয়েশা রা. থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো হল আর তিনি তার নিকটবর্তী হলেন, তখন সে মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ। তুমি তোমার পরিবারের কাছে চলে যাও। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, হাদীসটি হজ্জাজ ইবনে আবু মানী ও বর্ণনা করেছেন, তাঁর পিতামহ থেকে তিনি যুহরী থেকে, তিনি উরওয়া থেকে এবং আয়েশা রা. থেকে।

হাদীস নং ৪৮৭৮

আবু নুয়াইম রহ……….আবু উসাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দুটি বাগান পর্যন্ত পৌঁছলাম। তিনি (ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নুমান ইবনে শারাহীলের কন্যা জুয়াইনাকে উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে পৌঁছান হয়। আর তাঁর সাথে তাঁর সেবার জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বলল, কোন রাজুকুমারী কি কোন বাজারী (নীচ) ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেন, এরপর তিনি তার হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বলল, আমি তোমার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বলরেন, তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেন, হে আবু উসাইদ ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও। হুসাইন ইবনে ওয়ালীদ নিশাপুরী রহ………সাহল ইবনে সাদ ও আবু উসায়দ রা. থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমাইয়া বিনতে শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তার কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। এরপর তিনি আবু উসাইদ নির্দেশ দিলেন। তার জিনিস গুটিয়ে এবং দু’খানা কাতান বস্ত্র পরিয়ে তাকে তার পরিবারে পৌঁছে দিতে।

হাদীস নং ৪৮৭৯

আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………আবু উসাইদ ও সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

হাদীস নং ৪৮৮০

হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ……….আবু গাল্লাব ইউনুস ইবনে জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ইবনে উমরকে বললাম, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছে। তিনি বললেন, তুমি ইবনে উমরকে চেন। ইবনে উমর রা. তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছিল। তখন উমর রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বিষয়টি তাকে অবহিত করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আদেশ দিলেন। পরে তার স্ত্রী পবিত্র হলে, সে যদি চায় তবে তাকে তালাক দেবে। আমি বললাম, এতে কি তালাক গণনা করা হয়েছিল? তিনি বললেন, তুমি কি মনে কর? যদি সে অক্ষম হয় এবং স্বেচ্ছায় বোকামী করে।

হাদীস নং ৪৮৮১ – যারা তিন তালাক কে জায়েয মনে করেন।

আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………সাহল ইবনে সাদ সাঈদী রা. থেকে বর্ণিত যে, উওয়াইমির আজলানী রা. আসেম ইবনে আদী আনসারী রা.-এর নিকট এসে তাকে বললেন, হে আসিম! যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন পুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায় তবে সে তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে কি তোমরা তাকে হত্যা করবে? (আর যদি হত্যা না করে) তবে সে কি করবে? হে আসিম! আমার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদকে অপছন্দনীয় এবং দূষণীয় মনে করলেন। এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি শুনে আসিম রা. ঘাবড়ে গেলেন। এরপর আসিম রা. স্বীয় গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির রা. এসে বললেন, হে আসিম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না তুমি কল্যাণকর কিছু নিয়ে আমার কাছে আসনি। তোমার জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না পছন্দ করেছেন। উওয়াইমির রা. বললেন, আল্লাহর কসম! (উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত) এ বিষয়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতেই থাকব। উওয়াইমির রা. এসে লোকদের মাঝে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ রাসূল ! যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায়, আর তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে আপনার কি তাকে হত্যা করবেন? আর যদি সে (স্বামী) হত্যা না করে, তবে কি করবে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তুমি গিয়ে তাকে (তোমার পত্নীকে) নিয়ে আস। সাহল রা. বলেন, এরপর তারা দু’জনে লিআন করল। আমি সে সময (অন্যান্য) লোকের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ছিলাম। উভয়ের লিআন করা হয়ে গেলে উওয়াইমির রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন যদি আমি তাকে (স্ত্রীত্বে) রাখি তবে এটা তার উপর মিথ্যা আরোপ করা হবে। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, পরবর্তীতে লিআনকারীদ্বয়ের পন্থা হল ঐ বিচ্ছিন্নতা।

হাদীস নং ৪৮৮২

সাঈদ ইবনে উফাইর রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রিফাআ কুরাযীর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! রিফাআ আমাকে পূর্ণ সম্পর্কচ্ছেদ তালাক (তিন তালাক) দিয়েছে। পরে আমি আবদুর রহমান ইবনে যুবাইর কুরাযীকে বিবাহ করি। কিন্তু তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছু নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সম্ভবত তুমি রিফাআর নিকট ফিরে যেতে ইচ্ছা করছ। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়, যতক্ষণ না সে তোমার স্বাদ গ্রহণ করে এবং তুমি তার স্বাদ গ্রহণ কর।

হাদীস নং ৪৮৮৩

মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্যত্র বিবাহ করল। পরে দ্বিতীয় স্বামীও তাকে তালাক দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল: মহিলাটি কি প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে? তিনি বললেন, না। যতক্ষণ না সে (দ্বিতীয় স্বামী) তার স্বাদ গ্রহণ করবে, যেমন করেছিল প্রথম স্বামী।

হাদীস নং ৪৮৮৪ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দিল।

আবুল ইয়ামান রহ………নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বীয় স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদিষ্ট হলে প্রথমে তিনি আমার নিকট এসে বলেন, আমি তোমার নিকট এমন একটি বিষয় উল্লেখ করছি, সে সম্পর্কে তুমি আপন মাতা-পিতার সাথে পরামর্শ ব্যতীত তড়িঘড়ি করে কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। আয়েশা রা. বলেন, আর তিনি তো জানেন যে, আমার মাতা-পিতা আমাকে তাঁর থেকে বিচ্ছেদের আদেশ দিবেন না। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী ! আপনার সহধর্মিণীদেরকে বলুন –তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ চাও, তবে এস আমি তোমাদেরকে ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই……..। আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম, এই তুচ্ছ বিষয়ে আমাকে মাত-পিতার সাথে পরামর্শ করতে হবে? আমি তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকালের আবসই কামনা করছি। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য স্ত্রীও আমার ন্যায় উত্তর দিলেন।

হাদীস নং ৪৮৮৫

উমর ইবনে হাফস রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিলে আমরা ও তাঁর রাসূলকেই গ্রহণ করলাম। আর এতে আমাদের প্রতি তালাক সাব্যস্ত হয়নি।

হাদীস নং ৪৮৮৬

মুসাদ্দাদ রহ………..মাসরূক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা.-কে ইখতিয়ার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম (অর্থাৎ এতে তালাক হবে কিনা) তিনি উত্তর দিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন। তাহলে সেটা কি তালাক ছিল? মাসরূক বলেন, তবে সে (স্ত্রী) আমাকে গ্রহণ করার পর আমি তাকে একবার ইখতিয়ার দিই বা শতবার দিই-(তাতে কিছু মনে করব না)।

হাদীস নং ৪৮৮৭ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল, “তুমি আমার জন্য হারাম”।

মুহাম্মদ রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্য স্বামীকে বিবাহ করে। পরে সেও তাকে তালাক দেয়। তার লিঙ্গ ছিল কাপড়ের কিনারা সদৃশ। সুতরাং মহিলা তার থেকে নিজের মনস্কামনা সিদ্ধ করতে পারল না। দ্বিতীয় স্বামী অবিলম্বে তালাক দিলে সে (মহিলা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার স্বামী আমাকে তালাক দিলে আমি অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এরপর সে আমার সাথে সংগত হয়। কিন্তু তার সাথে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তাই সে একবারের অধিক আমার নিকটস্থ হল না এবং আপন মনস্কামনা সিদ্ধ করতে সক্ষম হল না। এরূপ অবস্থায় আমি আমার প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হব কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না দ্বিতীয় স্বামী তোমার কিছু স্বাদ উপভোগ করে আর তুমিও তার কিছু স্বাদ আস্বাদন কর।

হাদীস নং ৪৮৮৮ – (মহান আল্লাহর বাণী) : এমন বস্তুকে আপনি কেন হারাম করছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করে দিয়েছেন?

হাসান ইবনে সাব্বাহ রহ………..সাঈদ ইবনে যুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাস রা.-কে বলতে শুনেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হারাম ঘোষণা করে তবে তাতে কিছু (তালাক) হয় না। তিনি আরও বলেন : নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।

হাদীস নং ৪৮৮৯

হাসান ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সাব্বাহ রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট কিছু বিলম্ব করতে এবং সেখানে তিনি মধু পান করতেন। আমি ও হাফসা পরামর্শক্রমে ঠিক করলাম যে, আমাদের মধ্যে যার কাছেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করবেন, সেই যেন বলি- আমি আপনার থেকে মাগফীর-এর গন্ধ পাচ্ছি। আপনিকি মাগাফীর খেয়েছেন। এরপর তিনি তাদের একজনের নিকট প্রবেশ করলে তিনি তাকে অনুরূপ বললেন। তিনি বললেন, বরং আমি যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট মধু পান করেছি। আমি পুনঃ এ কাজ করব না। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় (মহান আল্লাহ বাণী): ‘হে নবী ! এমন বস্তুকে হারাম করছেন কেন, যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন……..যদি তোমরা উভয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা কর’ পর্যন্ত। এখানে আয়েশা ও হাফসা রা.-কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। আর আল্লাহর বাণী: যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের একজনকে গোপনে কিছু বলেছিলেন-বরং আমি মধু পান করেছি- এ কথার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়।

হাদীস নং ৪৮৯০

ফারওয়া ইবনে আবুল মাগরা রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু ও হালুয়া (মিষ্টি) পছন্দ করতেন। আসরের সালাত শেষে তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের নিকট যেতেন। এরপর তাদের একজনের ঘনিষ্ঠ হতেন। একদা তিনি হাফসা বিনতে উমরের কাছে গেলেন এবং অন্যান্য দিন অপেক্ষা বেশী সময় অতিবাহিত করলেন। এতে আমি ঈর্ষা করলাম। পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে অবগত হলাম যে, তাঁর (হাফসার) গোত্রের জনৈকা মহিলা তাকে এক পাত্র মধু হাদিয়া দিয়েছিল। তা থেকেই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কিছু পান করিয়েছেন। আমি বললাম : আল্লাহর কসম, আমরা এজন্য একটি ফন্দি আটব। এরপর আমি সাওদা বিনতে যামআকে বললাম তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তো এখনই তোমার কাছে আসছেন, তিনি তোমার নিকটবর্তী হলেই তুমি বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিন বললেন: হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। তুমি তখন বলবে, এর মৌমাছি মনে হয় উরফুত (এক জাতীয় গাছ) নামক বৃক্ষ থেকে মধু আহরণ করেছে। আমিও তাই বলব। সাফিয়্যা তুমিও তাই বলবে। আয়েশা রা. বলেন, সাওদা রা. বললেন, আল্লাহর কসম! তিনি দরজার নিকট আসতেই আমি তোমার ভয়ে তোমার আদিষ্ট কাজ পালনে প্রস্তুত হলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর নিকটবর্তী হলেন, তখন সাওদা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি বললেন, হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। সাওদা বললেন, এর মধু মক্ষিকা উরফুত নামক বৃক্ষের মধু আহরণ করেছে। এরপর তিনি ঘুরে যখন আমার এলেন, তখন আমিও অনুরূপ বললাম। তিনি সাফিয়্যার কাছে গেলে তিনিও এরূপ উক্তি করলেন। পরদিন যখন তিনি হাফসার কাছে গেলেন: তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে মধু পান করাব কি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর আমার কোন প্রয়োজন নেই। আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, সাওদা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তাকে বিরত রেখেছি। আমি তাকে বললাম, চুপ কর।

হাদীস নং ৪৮৯১ – বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় তালাক দেওয়া এবং এতদুভয়ের বিধান সম্বন্ধে।

মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে জাগ্রত ধারণা সমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে কার্যে পরিণত করে বা ব্যক্ত করে। কাতাদা রহ. বলেন, মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুই হবে না।

হাদীস নং ৪৮৯২

আসবাগ রহ……….জাবির রা. থেকে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল; তখন তিনি ছিলেন মসজিদে। সে বলল, সে ব্যভিচার করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিকে মুখ ফিরিয়েছিলেন, সেদিকে এসে উক্ত ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে বারবার (ব্যভিচারের) সাক্ষ্য দিল। তিনি লোকটিকে ডেকে বললেন, তুমি কি পাগল হয়েছ? তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঈদগাহে নিয়ে রজম করার নির্দেশ দিলেন। প্রস্তরাঘাত যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুলল, তখন সে পালিয়ে গেল। অবশেষে তাকে হাররা নামক স্থানে পাকড়াও করা হল এবং হত্যা করা হল।

হাদীস নং ৪৮৯৩

আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এল, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটিতাকে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হতভাগ্য ব্যভিচার করেছে। সে একথা দিয়ে নিজেকে বোঝাতে চাইল। রাসুলুল্লাহ ﷺ এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি যে দিক ফিরলেন সে সেদিকে গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! হতভাগ্য যিনা করেছে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর সেও সে দিকে গেল যে দিকে তিনি মুখ ফিরালেন এবং পুনরায় সে কথা বলল। তিনি চতুর্থবার মুখ ফিরিয়ে নিলে সেও সেদিকে গেল। যখন সে নিজের সম্পর্কে চারবার সাক্ষী দিল, তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? সে বলল, না। নাবী ﷺ বললেনঃ তাকে নিয়ে যাও এবং রজম কর। (পাথর মেরে হত্যা কর) লোকটি ছিল বিবাহিত। যুহরী (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেনঃ রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা মদিনার মুসল্লায় (ঈদগাহে) তাকে রজম করলাম। পাথর যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুললো, সে তখন পালিয়েগেল। হাররা নামক স্থানে আমরা তাকে ধরলাম এবং রজম করলাম। অবশেষে সে মারা গেল।

হাদীস নং ৪৮৯৪ – খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম

আযহার ইবনে জামীল রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, সাবিত ইবনে কায়েস এর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! চারিত্রিক বা ধর্মীয় বিষয়ে সাবিত ইবনে কায়েসের উপর আমি কোন দোষারূপ করছি না। তবে আমি ইসলামে থেকে কুফরী করা (অর্থাৎ স্বামীর সাথে অমিল) পছন্দ করছি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা উত্তর দিল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বাগানটি নিয়ে তাকে (মহিলাকে) তালাক দিয়ে দাও।

হাদীস নং ৪৮৯৫

ইসহাক ওয়াসিতী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উবায়ের ভগ্নী থেকেও উক্ত হাদীসটি বর্ণিত। তাতে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তুমি কি তায় বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা বলল: হ্যা। পরে সে বাগানটি ফেরত দিল, আর রাসুলুল্লাহ ﷺ , তাকে তালাক দেওয়ার জন্য তার স্বামীকে নির্দেশ দিলেন। ইবরাহীম ইবনু তাহমান খালিদ থেকে, তিনি ইকরামা থেকে তিনি নাবী ﷺ থেকে তাকে তালাক দাও কথাটিও বর্ননা করেছেন। অন্য বর্ননায় ইবনু আবূ তামীমা ইকরামা সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ সাবিত ইবনু কায়স- (রাঃ)-এর স্ত্রী রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ সাবিতের দ্বীনদারী ও চরিত্র সম্পর্কে আমি কোন দোষ দিচ্ছি না তবে আমি তার সাথে সংসার জীবন যাপন করতে পারছি না। রাসুলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? সে বললঃ হ্যা।

হাদীস নং ৪৮৯৬

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক মুখাররেমী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ)-এর স্ত্রী নাবী ﷺ -এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি সাবিতের ধর্ম ও-চরিত্র সম্পর্কে কোন দোষ দিচ্ছি না। তষে আমি কুফরীর আশংকা করছি। রাসুসুল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি তার বাগানটি ফেরৎ দিতে প্রস্তুত আছ? সে বল (রহঃ) হ্যা। এরপর সে বাগানটি তাকে। (তার স্বামীকে) ফিরিয়ে দিল। আর রাসুলুল্লাহ ﷺ তার স্বামীকে নির্দেশ দিলে, সে মহিলাকে পৃথক করে দিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৭

পরিচ্ছদঃ ২০৫১. খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমরা নারীদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল হবে না ……. অত্যাচারী পর্যন্ত।’’ উমার (রা) কাযীর অনুমতি ছাড়া খুলা’কে বৈধ বলেছেন। ‘উসমান (রা) মাথার বেনী ছাড়া অন্য সব কিছুর পরিবর্তে খুলা’ করার অনুমতি দিয়েছেন। তাউস (র) বলেন, যদি তারা উভয় আল্লাহর সীমা ঠিক না রাখতে পারার আশংকা করে অর্থাৎ সংসার জীবনে তাদের প্রত্যেকের উপর যে দায়িত্ব আল্লাহ্ অর্পণ করেছেন সে ব্যপারে তিনি বোকাদের মাঝে একথা বলেননি যে, খুলা ততক্ষণ বৈধ হবে না, যতক্ষণ না মহিলা তাকে সহবাস থেকে বাধা দিবে।
৪৮৯৭। সুলায়মান (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জামীলা (সাবিতের স্ত্রী) এরপর উক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৮ | 4898 | ٤۸۹۸

পরিচ্ছদঃ ২০৫২. স্বামী-স্ত্রী দ্বন্দ ক্ষতির আশংকায় খুলা’র প্রতি ইঙ্গিত করতে পারে কি ? মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘ যদি তোমরা তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধের আশংকা কর, তবে উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে একজন করে সালিশ নিযুক্ত কর। যদি তারা (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ে সংশোধন হতে চায়, তবে আল্লাহ তাদের জন্য সে উপায় বের করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে অবহিত এবং তিনি সব কিছুর খবর রাখেন।’’ (৪ঃ৩৫)
৪৮৯৮। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … মিস্ওয়ার ইবনু মাখারামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ‘বনু মুগীরার লোকেরা তাদের মেয়েকে ‘আলীর সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমার অনুমতি প্রার্থনা করছে, আমি এর অনুমতি দিতে পারি না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৯ | 4899 | ٤۸۹۹

পরিচ্ছদঃ ২০৫৩. বিক্রয়ের কারণে দাসী তালাক হয় না
৪৮৯৯। ইসমাঈল ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরার মাধ্যমে (শরীয়তের) তিনটি বিধান জানা গেছে। এক. তাকে আযাদ করা হল, এরপর তাকে তার স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার দেওয়া হল। দুই. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আযাদকারী আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিক হবে। তিন. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলেন, দেখতে পেলেন ডেগে গোশত উথলিয়ে উঠছে। তাঁর কাছে রুটি ও ঘরের অন্য তরকারী উপস্থিত করা হল। তখন তিনি বললেনঃ গোশতের পাত্র দেখছি না যে যার ভিতর গোশত ছিল? লোকেরা জবাব দিল, হাঁ, কিন্তু সে গোশত বারীরাকে সাদাকা হিসাবে দেওয়া হয়েছে। আর আপনি তো সাদাকা খান না? তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা, আর আমাদের জন্য এটা হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০০ | 4900 | ٤۹۰۰

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে অর্থাৎ বারীরার স্বামীকে ক্রীতদাস অবস্থায় দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০১ | 4901 | ٤۹۰۱

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০১। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ অমুক গোত্রের গোলাম এই মুগীস অর্থাৎ বারীরার স্বামী; আমি যেন তাকে এখনও মদিনার অলিতে গলিতে ক্রন্দনরত অবস্থায় বারীরার পিছু পিছু ঘুরতে দেখতে পাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০২ | 4902 | ٤۹۰۲

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বারীরার স্বামী কালো গোলাম ছিল। তার নাম মুনাস। সে অমুক গোত্রের গোলাম ছিল। আমি যেন এখনো দেখতে পাচ্ছি সে মদিনার অলিতে গলিতে বারীরার পিছু পিছু ঘুরছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৩ | 4903 | ٤۹۰۳

পরিচ্ছদঃ ২০৫৫. বারীরার স্বামীর ব্যাপারে নবী (সাঃ) এর সুপারিশ
৪৯০৩। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বারীরার স্বামী ক্রীতদাস ছিল। মুগীস বলে তাকে ডাকা হত। আমি যেন এখনও তাকে দেখছি সে বারীরার পিছনে কেঁদে কেঁদে ঘুরছে আর তার দাঁড়ি বেয়ে অশ্রু ঝরছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আব্বাস! বারীরার প্রতি মুগীসের ভালবাসা এবং মুগীসের প্রতি বারীরার অনাসক্তি দেখে তুমি কি আশ্চর্যান্বিত হও না? এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (বারীরা) তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে? সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ আমি সুপারিশ করছি মাত্র। সে বললঃ আমার তার কোন প্রয়োজন নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৪ | 4904 | ٤۹۰٤

পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৪। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আয়শা (রাঃ) বারীরাকে ক্রয় করতে চাইলেন। কিন্তু তার মালিকগণ ওলীর (অভিভাবকত্বের অধিকার) শর্ত ছাড়া বিক্রয় করতে সম্মত হল না। তিনি বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তুলে ধরলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় কর এবং আযাদ করে দাও। কেননা, ওলীর অধিকার আযাদকারীর জন্যই সংরক্ষিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু গোশত আনা হল এবং বলা হল এ গোশত বারীরাকে সাদাকা করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা বটে, তবে তা আমাদের জন্য হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৫ | 4905 | ٤۹۰۵

পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৫। আদম (রহঃ) বর্ণনা করেন শোবা আমাদের কাছে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাতে আরও বলা হয়েছে স্বামীর সাথে থাকা না থাকার ব্যপারে তাকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৬ | 4906 | ٤۹۰٦

পরিচ্ছদঃ ২০৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মুশরিক মহিলাদেরকে বিয়ে করো না যে পর্যন্ত তারা ঈমান না আনে। নিঃসন্দেহে একজন ঈমানদার দাসী একজন মুশরিক মহিলা অপেক্ষা উত্তম। যদি সে তোমাদের কাছে ভালও মনে হয়।
৪৯০৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমরকে কোন খৃস্টান বা ইয়াহুদী নারীর বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা আলা মুমিনদের উপর মুশরিক নারীদের বিবাহ হারাম করে দিয়েছেন। আর এর চেয়ে মারাত্তক শিরক কি হতে পারে যে মহিলা বলে, আমার প্রভু ঈসা (আলাইহিস সালাম)। অথচ তিনিও আল্লাহর একজন বান্দাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৭ | 4907 | ٤۹۰۷

পরিচ্ছদঃ ২০৫৮. মুশরিক নারী মুসলমান হলে তার বিবাহ ও ইদ্দত
৪৯০৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিষয়ে মুশরিকরা দুটি দলে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল হরবী মুশরিক, তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন এবং তারাও তার বিরাদ্ধে যুদ্ধ করত। অন্যদল ছিল চুক্তিবদ্ধ মুশরিক। তিনি তাদের সঙ্গে লড়তেন না এবং তারাও তার সাথে লড়ত না। হরবীদের কোন মহিলা যদি হিজরত করে (মুসলমানদের) কাছে চলে আসত! তাহলে সে ঋতুমতী হয়ে পূনরায় পবিত্র না-হওয়া পর্যন্ত তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতো না। পবিত্র হলে পরেই তার সাথে বিবাহ বৈধ হত। তবে যদি বিয়ের পূর্বেই তার স্বামী হিজরত করত তাহলে মহিলাকে তার কাছেই ফিরিয়ে দিতে হত। আর যদি তাদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করত তবে তারা মুক্ত হয়ে যেত এবং মুহাজিরদের সমান অধিকার লাভ করত।

এরপর বর্ননাকারী (আতা) চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের প্রসঙ্গে মুজাহিদের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। যদি চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করে আসত, তাহলে তাদেরকে পূনরায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো না। তবে তাদের মুল্য ফিরিয়ে দেওয়া হতো। আতা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উমাইয়্যার কন্যা কুরায়বা উমর ইবনু খাত্তাবের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান তাকে বিবাহ করেন। আর আবূ সুফিয়ানের কন্যা উম্মুল হাকাম ইয়ায ইবনু গানম ফিহরীর বিবাহে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে আবদুল্লাহ ইবনু উসমান সাকাফী (রাঃ) তাকে বিয়ে করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৮ | 4908 | ٤۹۰۸

পরিচ্ছদঃ ২০৫৯. যিম্মি বা হরবীর কোন মুশরিক বা খৃস্টান স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে। ‘আবদুল ওয়ারি (র)…. ইব্ন ‘আববাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি কোন খৃস্টান নারী তার স্বামীর পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে উক্ত মহিলা তার জন্য হারাম হয়ে যায়। দাউদ (র) ইব্রাহীম সায়েগ (র) থেকে বর্ণনা করেন, আতা (র) কে জিজ্ঞাসা করা হল, চুক্তিবদ্ধ কোন হরবীর স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে এবং ইদ্দতের মধ্যেই তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে, তবে কি মহিলা তার স্ত্রী থাকবে ? তিনি উত্তর দিলেন, না তবে সে মহিলা যদি নতুনভাবে বিবাহ ও মোহ্রে সম্মত হয়। মুজাহিদ (র) বলেন, মহিলার ইদ্দতের মধ্যে স্বামী মুসলমান হলে সে তাকে বিবাহ করে নিবে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ না তারা কাফিরদের জন্য হালাল, আর না কাফিরেরা তাদের জন্য হালাল। অগ্নি উপাসক স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হলে কাতাদা ও হাসান তাদের সমবন্ধে বলেন, তাদের পূর্ব বিবাহ বলবৎ থাকবে। আর যদি তাদের কেউ আগে ইসলাম কবূল করে, আর অন্যজন অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তবে মহিলা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্বামীর জন্য তাকে গ্রহণ করার কোন পথই থাকবে না। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেন, আমি ‘আতা’ (র) কে জিজ্ঞসা করলামঃ মুশরিকদের কোন মহিলা যদি ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমানদের নিকট চলে আসে, তাহলে তার স্বামী কি তার নিকট থেকে বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে ? আল্লাহ্ তা’আলা তো বলেছেনঃ ‘‘তারা যা ব্যয় করেছে তোমরা তাদেরকে তা দিয়ে দাও।’’ তিনি উত্তর দিলেনঃ না। এ আদেশ কেবল নবী (সাঃ) ও জিম্মীদের মধ্যে ছিল। (মুশরিকদের বেলায় এটা প্রযোজ্য নয়)। মুজাহিদ (র) বলেনঃ এ সব ছিল সে সন্ধির ক্ষেত্রে যা নবী (সাঃ) ও কুরায়শদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
৪৯০৮। ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ‘উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বলেন, ঈমানদার মহিলারা যখন হিজরত করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসত, তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশ “হে ঈমানদারগণ! কোন ঈমানদার মহিলা হিজরত করে তোমাদের কাছে আসলে তোমরা তাদেরকে যাচাই কর” অনুসারে তাদেরকে যাচাই করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ ঈমানদার মহিলাদের মধ্যে যারা (আয়াতে উল্লেখিত) শর্তাবলী মেনে নিত, তারা পরীক্ষায় কৃতকার্য হত। তাই যখনই তারা এ ব্যাপারে মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রকাশ করত তখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলতেন যাও, আমি তোমাদের বায়’আর গ্রহণ করেছি। আল্লাহর কসম! কথার মাধ্যমে বায়’আত গ্রহণ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত কখনো কোন নারীর হাত স্পর্শ করেনি। আল্লাহর শপথ। তিনি শুধুমাত্র সেইসব বিষয়েই বায়’আত গ্রহণ করতেন, যে সব বিষয়ে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ্ তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। বায়’আত গ্রহণ শেষে তিনি বলতেনঃ আমি কথায় তোমাদের বায়’আত গ্রহণ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৯ | 4909 | ٤۹۰۹

পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯০৯। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর সহধর্মিনাদের থেকে ঈলা (কাছে না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা) করলেন। সে সময় তার পা মচকে গিয়েছিল। তিনি তার কামরার মাচানে উনত্রিশ দিন অবস্থান করেন। এরপর সেখান থেকে নেমে আসেন। লোকেরা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি তো এক মাসের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস উনত্রিশ দিনেরও হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১০ | 4910 | ٤۹۱۰

পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯১০। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) যে ঈলার কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন সে সস্বন্ধে বলতেন, সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে প্রত্যেকেরই উচিৎ হয় স্ত্রীর সৌজন্যর সাথে গ্রহণ করবে, না হয় তালাক দেওয়ার সিধান্ত নিবে, যেমনভাবে আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন।

ইসমাঈল আমাকে আরও বলেছেন, মালিক (রহঃ) নাফি এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, চার মাস অতীত হয়ে গেলে তালাক দেওয়া পর্যন্ত তাকে আটকিয়ে রাখ হবে। আর তালাক না দেওয়া পর্যন্ত তালাক প্রযোজ্য হবে না। উসমান, আলী, আবূ জারদা আয়িশা (রাঃ) এবং আরও বার জন সাহাবী থেকেও উক্ত মতামত উল্লেখ করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১১ | 4911 | ٤۹۱۱

পরিচ্ছদঃ ২০৬১. নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবার ও তার সম্পদের বিধান। ইব্ন মুসাইয়্যাব (র) বলেন, যুদ্ধের ব্যূহ থেকে কোন ব্যক্তি নিখোঁজ হলে এক বছর অপেক্ষা করবে। ইব্ন মাসউদ (রা) একটি দাসী ক্রয় করে এক পর্যন্ত তার মালিককে খুঁজলেন (মূল পরিশোধ করার জন্য)। তিনি তাকে পেলেন না, সে নিখোঁজ হয়ে যায়। অবশেষে তিনি এক দিরহাম, দুই দিরহাম করে দান করতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ্ ! এটা অমুকের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। যদি মালিক এসে যায়, তবে এর সাওয়াব আমি পাব, আর তার টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব হবে আমার। তিনি বলেনঃ হারনো প্রাপ্তির ব্যাপারেও তোমরা এরূপ কাজ করবে। ইব্ন মাসউদ (রা)-ও এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। ঠিকানা জানা আছে এরূপ কয়েদী সমবন্ধে যুহ্রী (র) বলেনঃ তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবে না এবং তার সম্পদও বন্টন করা হবে না। তবে তার খবরাখবর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর ব্যাপারে নিখোঁজ ব্যক্তির বিধান কার্যকর হবে।
৪৯১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মুনবাইস এর আযাদ কৃত গোলাম ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বকরী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ওটাকে ধরে নাও। কেননা, ওটা হল তোমার জন্য, না হয় তোমার (অন্য) ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তাঁকে আবার হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেগে গেলেন এবং তার উভয় গণ্ডদেশ রক্তিম বর্ন ধারন করল। এরপর তিনি বললেনঃ ওকে নিয়ে তোমার ভাবনা কিসের? তার সাথে (চলার জন্য) পায়ের তলায় ক্ষুর ও (পানাহারের জন্য) পেটে মশক আছে। সে পানি পান করতে থাকবে এবং বৃক্ষ-লতা খেতে থাকবে আর এর মধ্যে মালিক তার সন্ধান লাভ করবে। তাকে লুকতা (হারানো প্রাপ্তি) সমন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাপ্ত বস্তুর থলে ও মাথার বন্ধনটা চিনে নাও এবং এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি এ শনাক্তকারী (মালিক) আসে, তবে ভালো কথা, অন্যথায় এটাকে তোমার মালের সাথে মিলিয়ে নাও।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি রাবীআ ইবনু আবূ আবদুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়া কিছুই পাইনি। আমি বললামঃ হারান প্রানী সম্পর্কে মুনবাইস এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদের হাদীসটি কি যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। ইয়াহইয়া বলেন, রাবীআ বলতেনঃ হাদীসটি মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ-এর সূত্রে যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত। সুফিয়ান বললেনঃ আমি রাবীআর সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে আলোচনা করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১২ | 4912 | ٤۹۱۲

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
২০৬২. পরিচ্ছেদঃ যিহার। (আল্লাহ্ বলেছেনঃ) “আল্লাহ্ শুনতে পেয়েছেন সেই মহিলাটির কথা যে, তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক করে থাকে আর যে ব্যক্তি এতে সক্ষম হবে না, সে যেন “ষাটজন মিসকীনকে খাবার দেয়া” পর্যন্ত। (বুখারী (রহঃ) বলেনঃ) ইসমাঈল আমাকে বলেছেন, মালিক (রহঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইবন শিহাবকে গোলামের যিহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ আযাদ ব্যক্তির অনুরূপ। মালিক (রহঃ) বলেনঃ গোলাম ব্যক্তি দু’মাস রোযা রাখবে। হাসান বলেনঃ আযাদ মহিলা বা বাঁদীর সাথে আযাদ পুরুষ বা গোলামের যিহার একই রকম। ইকরামা বলেনঃ বাঁদীর সাথে যিহার করলে কিছু হবে না। যিহার তো কেবল আযাদ রমনীর সাথেই হতে পারে।

৪৯১২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উটে চড়ে তাওয়াফ করলেন। তিনি যখনই রুকনের কাছে আসতেন তখনই এর প্রতি ইশারা করতেন এবং আল্লাহু আকরার, বলতেন। যায়নাব (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ইয়াজুজ ও মাজুজ” এদের দরজা এভাবে খুলে গেছে; এই বলে তিনি (তার আঙ্গুলকে) নব্বই এর মত করলেন। (অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুলীর মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলীর গোড়ায় লাগালেন।)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৩ | 4913 | ٤۹۱۳

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম ঠিক বলেছেনঃ জুমআর দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে মুহূর্তে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আল্লাহর কাছে যে কোন কল্যান চায় আল্লাহ অবশ্যই তা মঞ্জুর করে থাকেন। তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইশারা করেন এবং তার আঙ্গুলগুলো মধ্যমা ও কনিষ্ঠ আঙ্গুলের পেটে রাখেন। আমরা বললামঃ তিনি স্বল্পতা বুঝাতে চাচ্ছেন।

উওয়ায়সী (রহঃ) বলেনঃ ইবরাহীম ইবনু স্বাদ শুবা ইবনু হাজ্জাজ থেকে, তিনি হিশাম ইবনু যায়েদ থেকে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে জনৈক ইয়াহুদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলংকারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর (পাথর দ্বারা) তার মস্তক চুর্ণ করে। সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মূহুর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। রাসুসুলাহ (একজন নির্দোষ ব্যাক্তির নাম উল্লেখ পূর্বক) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাকে কে হত্যা করেছে? অমুক? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ ব্যাক্তির নাম ধরে বললেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্য্যকারীর নাম উল্লেখ করে বললেনঃ তবে অমুক ব্যাক্তি মেরেছে কি? সে মাথা নেড়ে বললঃ জি-হ্যাঁ। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ উক্ত ব্যাক্তির মাথা দু-পাথরের মাঝখানে রেখে চুর্ন করা হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৪ | 4914 | ٤۹۱٤

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৪। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ফিতনা (বিপর্যয়) এদিক থেকে আসবে। তিনি পুর্ব দিকে ইশারা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৫ | 4915 | ٤۹۱۵

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা কোন এক সফরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। সূর্য অস্ত গেলে তিনি এক বাক্তি (বিলাল) কে বললেনঃ নেমে যাও আমার জন্য ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ যদি আপনি সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। (তাহলে রোযাটি পূর্ন হত)। তিনি পূনরায় বললেনঃ নেমে গিয়ে ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি সন্ধ্যা হতে দিতেন! এখনো তো দিন রয়ে গেছে। তিনি আবার বললেনঃ যাও, গিয়ে ছাতু গুলে আন। তৃতীয়বার আদেশ দেওয়ার পর সে নামল এবং তার জন্য ছাতু প্রস্তুত করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর তিনি পূর্বদিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন তোমরা এদিক থেকে রাত নেমে আসতে দেখবে তখন রোযাদার ইফতার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৬ | 4916 | ٤۹۱٦

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে-সাহরী থেকে বিরত না রাখে। কেননা, সে আযান দেয়, যাতে তোমাদের রাত্রি জাগরণকারীরা (রাতের ইবাদতকারীরা) কিছু আরাম করতে পারে। সকাল বা ফজর হয়েছে এমন কিছু বুঝানো তার উদ্দেশ্য নয়। ইয়াযীদ তার হাত দুটি সম্মূখে প্রসারিত করে দু-দিকে ছড়িয়ে দিলেন। (সুবহে সা’দিক কিভাবে উদ্ভাসিত হয় তা দেখানোর জন্য)।

লায়স (রহঃ) বলেনঃ জাফর ইবনু রাবীআ, আবদূর রহমান ইবনু হরমুয থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর কাছে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন ও দাতা ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন দু-ব্যাক্তির ন্যায়, যাদের পরিধানে বক্ষস্থল থেকে গলার হাড় পর্যন্ত লৌহ-নির্মিত পোশাক রয়েছে। দানকারী যখনই কিছু দান করে, তখনই তার শরীরে পোশাকটি বড় ও প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি এটা তার আঙ্গুল ও অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ঢেকে ফেলে।

পক্ষন্তরে, কৃপণ যখনই দান করার ইচ্ছা করে, তখনই তার পোশাকের প্রতিটি হলকা চেপে যায়। সে প্রশস্ত করার চেষ্টা করলেও সেটা প্রশস্ত হয় না। এ কথা বলে তিনি নিজের আঙ্গুল দ্বারা কণ্ঠনালীর প্রতি ইশারা করলেন (অর্থাৎ দাতা ব্যাক্তি দান করার ইচ্ছা করলে তার অন্তর প্রশান্তি হয়, সে উদার হতে দান করতে পারে; কিন্তু কৃপণ দান করতে ইচ্ছা করলেই তার অন্তর সঙ্কুচিত হয়, তার হাত গুটিয়ে আসে, সে দান করতে পারে না।)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৭ | 4917 | ٤۹۱۷

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের বলব কি, আনসারদের মধ্যে সর্বোত্তম গোত্র কোনটি? তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ বলুন। তিনি বললেনঃ তারা বনূ নাজ্জার। এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী, বনূ আবদুল আশহাল, এরপর তাদের নিকটবর্তী যারা বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ। এরপর তাদের সন্নিকটে যারা বনূ সাঈদা। এরপর তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। হাতের আঙ্গুলগুলোকে সংকুচিত করে পূনরায় তা সাম্প্রসারিত করলেন। যেমন কেউ কিছু নিক্ষেপকালে করে থাকে। এরপর বলেনঃ আনসারদের প্রত্যেকটি গোত্রেই কল্যাণ নিহিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৮ | 4918 | ٤۹۱۸

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী সাহল ইবনু সা’দ-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার আবির্ভাব এবং কিয়ামতের মাঝে দুরত্ব এ আঙ্গুল থেকে এ আঙ্গূলের দূরত্বের ন্যায়। কিংবা তিনি বলেনঃ এ দুটির দূরত্বের ন্যায়। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি মিলিত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৯ | 4919 | ٤۹۱۹

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৯। আদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাস এত, এত এবং এত দিনে হয়, অর্থাৎ ত্রিশ দিনে। তিনি আবার বললেন মাস এত, এত ও এত দিনেও হয়। অর্থাৎ উনত্রিশ দিনে। তিনি বলতেনঃ কখনও ত্রিশ দিনে আবার কখনও উনত্রিশ দিনে মাস হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২০ | 4920 | ٤۹۲۰

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২০। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা ইয়ামানের দিকে ইশারা করে দু-বার বললেনঃ ঈমান ওখানে। জেনে রেখ! হৃদয়ের কঠোরতা ও কাঠিন্য উট পালনকারীদের মধ্যে (কৃষকদের মধ্যে)। যে দিকে শয়তানের দুটি শিং উদিত হবে তাহলো (কঠোর হদয়) রাবী’আ ও মুযার গোত্রদ্বয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২১ | 4921 | ٤۹۲۱

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২১। আমর ইবনু যুবারা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এরুপ নিকটে থাকব। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি দ্বারা ইশারা করলেন এবং এ দু টির মাঝে সামান্য ফাঁক রাখলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২২ | 4922 | ٤۹۲۲

পরিচ্ছদঃ ২০৬৫. ইঙ্গিতে সন্তান অস্বীকার করা।
৪৯২২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার একটি কালো সন্তান জন্মেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কিছু উট আছে কি? সে উত্তর করলঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কেমন? সে বললঃ লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কোনটি ছাই বর্নের আছে কি? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ আর সেটিতে এমন বর্ণ কোথেকে এলো? লোকটি বললঃ সম্ভবতঃ পূর্ববর্তী বংশের কারণে এরুপ হয়েছে। তিনি বললেনঃ তাহলে হতে পারে, তোমার এ সন্তানও বংশগত কারণে এরুপ হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৩ | 4923 | ٤۹۲۳

পরিচ্ছদঃ ২০৬৬. লি’আনকারীকে শপথ করানো
৪৯২৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এ জনৈক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কে শপথ করালেন এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৪ | 4924 | ٤۹۲٤

পরিচ্ছদঃ ২০৬৭. পুরুষকে প্রথমে লি’আন করানো হবে।
৪৯২৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, হিলাল ইবনু উমাইয়্যা তার স্ত্রীকে (যিনার) অপবাদ দেয়। তিনি এসে সাক্ষ্য দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলনঃ আল্লাহ তাআলা অবশ্যই জানেন তোমাদের দু’জনের একজন নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী। অতএব কে তাওবা করতে প্রস্তুত আছ? এরপর স্ত্রী দাঁড়াল এবং সাক্ষ্য দিল (সে দোষমুক্ত)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৫ | 4925 | ٤۹۲۵

পরিচ্ছদঃ ২০৬৮. লি’আন এবং লি’আনের পর তালাক দেওয়া
৪৯২৫। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উওয়াইমার আজলানী (রাঃ) আসিম ইবনু আদী আনসারী (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ হে আসিম! কি বল, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত অবস্থায়) পায় তবে সে কি তাকে হত্যা করবে? আর এতে তোমরাও কি তাকে হত্যা করবে? (যদি সে হত্যা না করে) তাহলে কি করবে? হে আসিম! তুমি আমার এ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা কর। এরপর আসিম (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করলেন এবং অশোভনীয় মনে করলেন। এমন কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আসিম (রাঃ) যা শুনলেন তাতে তার খুব খারাপ লাগল।

আসিম (রাঃ) গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির এসে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আসিম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কি উত্তর দিলেন। আসিম (রাঃ) উওয়াইমিরকে বললেনঃ তুমি আমার কাছে কোন ভাল কাজ নিয়ে আসনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করেছেন, সে সম্বন্ধে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। উওয়াইমির (রাঃ) বললেন আল্লাহর শপথ তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা না করে ক্ষ্যান্ত হব না।

এরপর উওয়াইমির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাঁকে লোকদের মাঝে পেলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কী বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত) দেখতে পায় সে কি তাকে হত্যা করবে? আর আপনারাও কি তাকে হত্যার বদলে হত্যা করবেন? অন্যথায় সে কি করবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবর্তীর্ণ হয়েছে যাও তাকে নিয়ে এসো।

সাহল (রাঃ) বলেন, তারা উভইয়ে লিআন করল। সে সময় আমি লোকদের সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ছিলাম। উভয়ে লিআন করা সমাপ্ত করলে উওয়াইমির বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমি তাকে (স্ত্রী হিসাবে) রাখি, তবে আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করেছি বলে প্রমাণিত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেনঃ উভয়কে পৃথক করে দেওয়াই পরবর্তীতে লি’আন কারীদ্বয়ের হুকুম হিসাবে পরিগনিত হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৬ | 4926 | ٤۹۲٦

পরিচ্ছদঃ ২০৬৯. মসজিদে লি’আন করা
৪৯২৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমাকে ইবনু শিহাব (রহঃ) লিআন ও তার হুকুম সম্বন্ধে সা’দ গোত্রের সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ননা করেন যে, আনসারদের জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি বলেন, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কাউকে দেখতে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অথবা কি করবে? এর পর আল্লাহ তাআলা তার ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখিত লি’আনের বিধান অবর্তীর্ণ করেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে ফয়সালা দিয়েছেন।

রাবী বলেনঃ আমি উপস্থিত থাকতেই তারা উভয়ে মসজিদে লিআন করল। উভয়ের লিআন কাজ সমাধা হলে সে ব্যাক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লা! যদি আমি তাকে স্ত্রী হিসাবে রেখে দেই তবে তার উপর মিথ্যারোপ করেছি বলে সাব্যস্ত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেয়ার পূর্বেই সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই তারা পৃথক হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ এই সম্পর্কোচ্ছেদই লিআন এর বিধান।

ইবনু জুরাইজ বলেনঃ ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেছেনঃ তাদের পর লিআনকারীদ্বয়ের মধো পৃথক করার হুকুম প্রবর্তিত হয়। উপরোক্ত মহিলা ছিল সন্তান সম্ভবা। তার বাচ্চাকে মায়ের পরিচয়ে ডাকা হত। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উত্তোধিকারের ব্যাপারেও হুকুম প্রবর্তিত হল যে, মহিলা সন্তানের উত্তরাধিকারী হবে এবং সন্তানও তার উত্তারাধিকারী হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেছেন।

হাদীসে ইবনু জুরাইজ, ইবনু শিহাবের সুত্রে সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী থেকে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি ঐ মহিলা ওহ্‌রার (এক প্রকার ছোট প্রানী) এর মতো লাল ও বেটে সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো মহিলাই সত্য বলেছে, আর সেই তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আর যদি সে কালো চক্ষু বিশিষ্ট বড় নিতম্বযুক্ত সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো, সে ব্যাক্তি সত্যই বলেছে। পরে মহিলাটি কালো সন্তানই প্রসব করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৭ | 4927 | ٤۹۲۷

পরিচ্ছদঃ ২০৭০. নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ আমি যদি প্রমাণ ছাড়া রজম করতাম।
৪৯২৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লিআন করার প্রসঙ্গ আলোচিত হল। আসিম ইবনু আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে একটি কথা জিজ্ঞাসা করে চলে গেলেন। এরপর তার গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে সে তার স্ত্রীর সাথে অপর এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বললেন অযথা জিজ্ঞাসার কারণেই আমি এধরনের বিপদে পড়লাম। এরপর তিনি লোকটিকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং অভিযোগকারীর বিষয়টি তাকে অবহিত করলেন। লোকটি ছিল হলদে-হালকা দেহ সোজা চুল বিশিষ্ট। আর ঐ লোকটি যাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে বলে সে অভিযূক্ত করে সে ছিল প্রায় কালো, মোটা ধরনের, স্থুল দেহের অধিকারী।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ! সমস্যাটি সমাধান করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করল যাকে তার স্বামী তার কাছে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয়কে লিআন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে সে বৈঠকেই জিজ্ঞাসা করল, এ মহিলা সমন্ধেই কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন “আমি যদি কাউকে বিনা প্রমানে রজম করতাম তবে একেই রজম করতাম”। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না। সে ছিল (অন্য এক) মহিলা, যে মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৮ | 4928 | ٤۹۲۸

পরিচ্ছদঃ ২০৭১. লি’আনকারিণীর মোহর
৪৯২৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল- (তার বিধান কি?) তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের স্বামী স্ত্রীর দু-জনকে পৃথক করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের কেউ তাওবা করতে রাযী আছ কি? তারা দু-জনেই অস্বীকার করল। পুনরায় তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী সুতরাং কেউ তাওবা করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন।

আইয়্যুব বলেনঃ আমাকে আমর ইবনু দীনার (রহঃ) বললেন এ হাদীসে আরও কিছু কথা আছে তোমাকে তা বর্ণনা করতে দেখছি না কেন? তিনি বলেন লোকটি বললঃ আমার (দেওয়া) মালের (মোহর) কি হবে? তাকে বলা হল, তোমার মাথা ফিরে পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও (তবুও পাবে না) (কেননা) তুমি তার সাথে সহবাস করেছ। আর যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও, তবে তা পাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৯ | 4929 | ٤۹۲۹

পরিচ্ছদঃ ২০৭২. লি‘আনকারীদ্বয়কে ইমামের একথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাবাদী, তাই তোমদের কেউ তাওলা করতে প্রস্তুত আছ কি ?
৪৯২৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি লিআনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকায়ীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব গ্রহনের দায়িত্ব আল্লাহরই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মাল (মোহর হিসেবে প্রদত্ত)? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক তবে তো মাল চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস আমর (রাঃ) এর কাছ থেকে মুখস্থ করেছি। আইয়্যুব বলেনঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে লিআন করল (এখন তাদের বিধান কি?) তিনি তার দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ সুফিয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন যে, তোমাদের একজন অবশাই মিথ্যাবাদী। সুতরাং কেউ তাওবা করতে সম্মত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফিয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শোনাচ্ছি এভাবেই আমি আমর ও আইয়্যুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩০ | 4930 | ٤۹۳۰

পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩০। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক পুরুষ তার স্ত্রীকে অপবাদ দিলে, তিনি উভয়কে শপথ করান এরপর পৃথক করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩১ | 4931 | ٤۹۳۱

পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসার ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করান এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩২ | 4932 | ٤۹۳۲

পরিচ্ছদঃ ২০৭৪. লি‘আনকারিণীকে সন্তান অর্পন করা হবে।
৪৯৩২। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করালেন এবং সন্তানের পৈতৃক সম্পর্ক ছিন্ন করে উভয়কে পৃথক করে দিলেন। আর সন্তান মহিলাকে দিয়ে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৩ | 4933 | ٤۹۳۳

পরিচ্ছদঃ ২০৭৫. ইমামের উক্তিঃ হে আল্লাহ্! সত্য প্রকাশ করে দিন।
৪৯৩৩। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লি‘আনকারী দম্পত্তি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে আলোচনা হচ্ছিল। ইতিমধ্যে ‘আসিম ইবনু ‘আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে গেলেন। এরপর স্বগোত্রীয় এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে জানাল যে, সে তার স্ত্রীর সাথে এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। ‘আসিম (রাঃ) বললেন, অযথা জিজ্ঞাসাবাদের দরুনই আমি এ বিপদে পতিত হলাম। এরপর তিনি তাকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং যে লোকটিকে সে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে, তার সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবহিত করলেন। অভিযোগকারী ছিলেন হলদে, হালকা দেহ্ ও সোজা চুলের অধিকারী। আর তার স্ত্রীর কাছে পাওয়া লোকটি ছিল মোটা ধারনের স্থুলকায় ও খুব কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী।

তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ্ আপনি সত্য প্রকাশ করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট একটি সন্তান প্রসব করে, যাকে তার স্বামী তার সাথে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কেই লি‘আন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কে সেই বৈঠকে জিজ্ঞাসা করল, ঐ মহিলা সম্বন্ধেই কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আমি যদি বিনা প্রমাণে কাউকে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ না, সে ছিল অন্য এক মহিলা যে ইসলামে কুখ্যাত ব্যভিচারিণী ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৪ | 4934 | ٤۹۳٤

পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। (হাদীসটি নিম্নোক্ত হাদীসের অনুরুপ)। [দেখুন পরের হাদিস]

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৫ | 4935 | ٤۹۳۵

পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাযী এক মহিলাকে বিয়ে করে পরে তালাক দেয়। এরপর মহিলা অন্য স্বামী গ্রহন করে। পরে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে অবহিত করলো যে সে (স্বামী) তার কাছে আসে না আর তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তা হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তুমি তার কিছু স্বাদ আস্বাদন না করবে, আর সেও তোমার কিঞ্চিত স্বাদ আস্বাদন না করবে (ততক্ষন প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া যাবে না)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৬ | 4936 | ٤۹۳٦

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
بَابُ: {وَاللاَّئِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِنْ نِسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ}
قَالَ مُجَاهِدٌ إِنْ لَمْ تَعْلَمُوا يَحِضْنَ أَوْ لاَ يَحِضْنَ وَاللاَّئِي قَعَدْنَ عَنِ الْحَيْضِ، وَاللاَّئِي لَمْ يَحِضْنَ، فَعِدَّتُهُنَّ ثَلاَثَةُ أَشْهُرٍ

২০৭৭. পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে …. যদি তোমাদের সন্দেহ দেখা দেয় তাদের ইদ্দত তিন মাস এবং তাদেরও, যাদের এখনও হায়েয আসা আরম্ভ হয়নি। মুজাহিদ বলেনঃ যদিও তোমরা না জান যে, তাদের হায়েয- হবে কি না। যাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাদের এখনো আরম্ভ হয়নি, তাদের ‘ইদ্দত তিন মাস।

৪৯৩৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আসলাম গোত্রের সুবায়-আ নাম্বী এক মহিলাকে তার স্বামী গর্ভাবস্থায় রেখে মারা যায়। এরপর আবূ সানাবিল ইবনু বাকাক (রাঃ) তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা তার সাথে বিয়ে বসতে অস্বীকার করে। সে (আবূ সানাবিল) বললঃ আল্লাহর শপথ দুটি মেয়াদের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অনুসারে ইদ্দত পালন না করা পর্যন্ত তোমার জন্য অন্যান্য বিয়ে বসা দুরস্ত হবে না। এর প্রায় দশ দিনের মধ্যেই সে সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এখন তুমি বিয়ে করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৭ | 4937 | ٤۹۳۷

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৭। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে তিনি ইবনু আরকামের নিকট (এই মর্মে) একটি পত্র লিখলেন যে তুমি সুবায়-আ আসলামীয়াকে জিজ্ঞাস কর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কি প্রকারের ফতোয়া দিয়েছিলেন? সে উত্তরে বললঃ তিনি আমাকে সন্তান প্রসব করার পর বিয়ে করার ফতোয়া দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৮ | 4938 | ٤۹۳۸

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৮। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সুবায়’আ আসলামীয়া তার স্বামীর মৃত্যুর কয়েকদিন পর সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বিয়ে করার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তাকে অনুমতি দেন। তখন সে অন্যত্র বিয়ে করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৯ | 4939 | ٤۹۳۹

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
২০৭৯. পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তা মহিলারা তিন কুরু (হায়েয) পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। ইব্রাহীম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘ইদ্দতের মধ্যে বিয়ে করে, এরপর মহিলা তার কাছে তিন হায়েয পর্যন্ত অবস্থান করার পর দ্বিতীয় স্বামীও যদি তাকে তালাক দেয়, তবে সে প্রথম স্বামী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। উক্ত তিন হায়েয তৃতীয় স্বামীর গ্রহণের জন্য যথেষ্ট হবেনা। (বরং তার জন্য নতুনভাবে ‘ইদ্দত পালন করতে হবে।) কিন্তু যুহরী বলেছেনঃ যথেষ্ট হবে। সুফিয়ানও যুহরীর মত গ্রহণ করেছেন। মা’মার বলেন, মহিলা কুরু যুক্ত হয়েছে তখনি বলা হয়, যখন তার হায়েয বা তুহুর আসে। مَا قَرَأَتْ بِسَلًى قَطُّ তখন বলা হয়, যখন মহিলা গর্ভে কোন সন্তান ধারণ না করে। (অর্থাৎ ‘কুরু’ অর্থ ধারণ করা বা একত্রিত করাও হয়)

৪৯৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে ইয়াহইয়া ইবনু সা-ঈদ ইবনু আস (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু হাকাম এর কন্যাকে তালাক দিলে আবদবু রহমান তাকে উম্মুল মূমিনীন আয়িশা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে গেলে, তিনি মদিনার শাসনকর্তা মারওয়ানের কাছে বলে পঠোলেনঃ আল্লাহকে ভয় কর, আর তাকে তার ঘরে ফিরিয়ে দাও। মারওয়ান বলেন, সুলায়মানের বর্ণনায় আবদুর রহমান আমাকে যুক্তিতে পরাজিত করেছে। কাসিম ইবনু মুহাম্মদের বর্ণনায় তিনি বলেন, ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা কি আপনয়ি কাছে পৌছেনি? তিনি বললেনঃ ফতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা স্মরণ না রাখলে তোমার কোন ক্ষতি হবেনা। মারওয়ান বললেনঃ যদি মনে করেন ফাতিমাকে বের করার পিছনে তার দুর্ব্যবহার কাজ করেছে, তবে বলব, এখানে সে দুর্ব্যবহার বিদ্যমান আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪০ | 4940 | ٤۹٤۰

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪০। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমার কি হল? সে কেন আল্লাহকে ভয় করছেনা অর্থাৎ তার এ কথায় যে, তালাকপ্রাপ্তা নারী (তার স্বামীর থেকে) খাদ্য ও বাসস্থান কিছুই পাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪১ | 4941 | ٤۹٤۱

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪১। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাস করলঃ আপনি কি জানেন না, হাকামের কন্যা অমুককে তার স্বামী তিন তালাক দিলে, সে (তার পিতার ঘরে) চলে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে মন্দ কাজ করেছে। উরওয়া বললঃ আপনি কি তার কথা শুনেন নি? তিনি বললেনঃ এ হাদীস বর্ণনায় তার কোন কল্যান নেই।

ইবনু আবূ যিনাদ হিশাম সুত্রে তার (হিশামের) পিতা থেকে আরও বর্ণনা করেন যে, আয়িশা (রাঃ) এ কথাকে অত্যন্ত দোষনীয় মনে করেন। তিনি আরও বলেন, ফাতিমা একটি ভীতিকর স্থানে থাকত, তার উপর আশংকা থাকায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (স্থান পরিবর্তনের) অনুমতি প্রদান করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪২ | 4942 | ٤۹٤۲

পরিচ্ছদঃ ২০৮১. স্বামীর গৃহে অবস্থান করায় যদি তালাকপ্রাপ্তা নারী তার স্বামীর পরিবারের লোকজনদের গালমন্দ দেয়ার বা তার ঘরে চোর প্রবেশ করা ইত্যাদির আশংকা করে।
৪৯৪২। হিব্বান (রহঃ) … উরওয়া থেকে বর্ণিত যে আয়িশা (রাঃ) ফাতিমার কথাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৩ | 4943 | ٤۹٤۳

পরিচ্ছদঃ ২০৮২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তাদের জন্য গোপন করা বৈধ হবে না যা আল্লাহ্ তাদের জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন, হায়েয হোক বা গর্ভ সঞ্চার হোক।
৪৯৪৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ (হজ শেষে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওয়ানা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যা (রাঃ) বিষন্ন অবস্থায় স্বীয় তাবুর দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি তাকে বললেনঃ মহা সমস্যা তো, তুমি তো আমাদের আটকিয়ে রাখবে। আচ্ছা তুমি কি তাওয়াফে যিয়ারত করেছ? তিনি বললেনঃহ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তা হলে এখন চলো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৪ | 4944 | ٤۹٤٤

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৪। মুহাম্মদ (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মা’কাল তার বোনকে বিয়ে দিলে, তার স্বামী তাকে এক তালাক প্রদান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৫ | 4945 | ٤۹٤۵

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্নিত যে, মাকাল ইবনু ইয়াসারেব বোন এক ব্যাক্তির বিবাহাধীন ছিল। সে তাকে তালাক দিল। পুনরায় ফিরিয়ে আনলোনা, এভাবে তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সে আবার তার কাছে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। মাকাল (রাঃ) ক্রোধান্বিত হলেন, তিনি বললেনঃ সময় সুযোগ থাকতে ফিরিয়ে নিল না, এখন আবার প্রস্তাব দিচ্ছে। তিনি তাদের মাঝে (পুনর্বিবাহে) প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ালেন। এরপর আল্লাহ তাআলা এ আয়াতটি অবর্তীর্ন করেনঃ তোমরা যখন স্ত্রীকে তোমরা তালাক দাও এবং তারা তাদের ইদ্দত-কাল পূর্ন করে, তখন তারা নিজেদের স্বামীদেরকে বিবাহ করতে চাইলে তোমরা বাধা দিও না। (বাকারাঃ ২৩২)। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন এবং তার সামনে আয়াতটি পাঠ করলেন। তিনি তার জিদ পরিত্যাগ করে আল্লাহর আদেশের অনুসরণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৬ | 4946 | ٤۹٤٦

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) তার স্ত্রীকে ঋতুমতী অবস্থায় এক তালাক দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দিলেন, তিনি যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনেন এবং মহিলা পবিত্র হয়ে পূনরায় ঋতুমতী হয়ে পরবর্তী পবিত্রাবস্থা আসা পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রাখেন। পবিত্রাবস্থায় যদি তাকে তালাক দিতে চায় তবে দিতে পারেবে কিন্তু তা সংগমের পূর্বে হতে হবে। এটাই ইদ্দত, যে সময় তালাক দেয়ার জন্য আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন। আবদুল্লাহকে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তাদের বলেনঃ তুমি যদি তাকে তিন তালাক দিয়ে দাও। তবে মহিলা অন্য স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত তোমার জন্য হালাল হবে না। অন্য বর্ননায় ইবনু উমর (রাঃ) বলতেন, তুনি যদি এক বা দু’ তালাক দিতে কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরুপই আদেশ দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৭ | 4947 | ٤۹٤۷

পরিচ্ছদঃ ২০৮৪. ঋতুমতীকে ফিরিয়ে আনা
৪৯৪৭। হাজ্জাজ (রহঃ) … ইউনুস ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে (হায়েয অবস্থায় তালাক দেওয়া সম্পর্কে) জিজ্ঞাস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু উমব (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলে উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে আদেশ দেন। এরপর বলেনঃ ইদ্দতের সময় আসলে সে তালাক দিতে পারে। রাবী বলেন, আমি বললাম এ তালাক কি হিসাবে ধরা হবে? ইবনু উমর বললেনঃ তবে কি মনে করছ, যদি সে অক্ষম হন বা বোকামী করে। (তাহলে দায়ী কে?)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৮ | 4948 | ٤۹٤۸

পরিচ্ছদঃ ২০৮৫. বিধবা নারী চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। যুহরী (র) বলেন, বিধবা কিশোরীর জন্য খোশবু ব্যবহার করা উচিত হবে না। কেননা, তাকেও ইদ্দত পালন করতে হবে।
৪৯৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মীনী উম্মে হাবীবার পিতা আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রাঃ) মূত্যুবরণ করলে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হই। উম্মে হাবীবা (রাঃ) যাফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খোশবু নিয়ে আসতে বললেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখলেন! এরপর তার নিজের চেহারার উভয় পাশে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খোশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ হবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে পারবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ তিন বার বললেন, না।

তিনি আরও বললেনঃ এতো মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যাপার। অথচ বর্বরতার যুগে এক এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। হুমায়দ বলেন, আমি যায়নাবকে জিজ্ঞাসা করলাম। এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করার অর্থ কি? তিনি বলেন, সে যুগে কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে সে অতিক্ষুদ্র একটি কোঠায় প্রবেশ করতো এবং নিকৃষ্ট কাপড় পরিধান করত, কোন খোশবু ব্যবহার করতে পারত না। এভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হলে তার কাছে চতুষ্পদ জন্তু যথা গাধা, বকরী অথবা গাভী আনা হতো। আর সে তার গায়ে হাত বুলাতো। হাত বুলাতে বুলাতে অনেক সময় সেটা মারাও যেত। এরপর সে (মহিলা বেরিয়ে আসতো। তাকে বিষ্ঠা দেয়া হতো এবং তা তাকে নিক্ষেপ করতে হতো। এরপর ইচ্ছা করলে সে খোশবু ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারতো। মালিক (রহঃ) কে تَفْتَض শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ মহিলারা ঐ প্রানীর চামড়ায় হাত বুলাতো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৯ | 4949 | ٤۹٤۹

পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৪৯। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, জনৈক মহিলার স্বামী মৃত্যু বরণ করলে তার পরিবারের লোকেরা তার চক্ষুযুগল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা করল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তার সুরমা ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করল। তিনি বললেনঃ সুরমা ব্যবহার করতে পারবে না। তোমাদের অনেকেই (জাহেলী যুগে) তার নিকৃষ্ট কাপড় বা নিকৃষ্ট ঘরে অবস্থান করত। যখন এক বছর অতিক্রান্ত হত আর কোন কুকুর সে দিকে যেত তখন সে বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। কাজেই চারমাস দশ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যস্ত সুরমা বাবহার করতে পারবে না (বর্ণনাকারী বলেন) আমি যায়নাবকে উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ নয়। তবে স্বামীর মৃত্যু হলে চারমাস দশদিন শোক পালন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫০ | 4950 | ٤۹۵۰

পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৫০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেছেন, স্বামী ছাড়া অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫১ | 4951 | ٤۹۵۱

পরিচ্ছদঃ ২০৮৭. তুহুর (পবিত্রতা) এর সময় শোক পালনকারিণীর জন্য কুস্ত (চন্দন কাঠ) খোশবু ব্যবহার করা।
৪৯৫১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদেরকে নিষেধ করা হত, আমরা যেন কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালননা করি। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে হবে এবং আমরা যেন সুরমা খোশবু ব্যবহার না করি আর রঙীন কাপড় যেন পরিধান না করি তবে হালকা রঙের হলে দোষ নেই। আমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আমাদের কেউ যখন হায়েয শেষে গোসল করে পবিত্র হয় তখন সে (দুর্গন্ধ দুরকরনার্থে) আযফার নামক স্থানের কুস্ত (সুগন্ধি) ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়া আমাদেরকে জানাযার পিছে পিছে যেতে নিষেধ করা হতো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫২ | 4952 | ٤۹۵۲

পরিচ্ছদঃ ২০৮৮. শোক পালনকারিণী রং করা সুতার কাপড় ব্যবহার করতে পারে।
৪৯৫২। ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর ব্যাপার ভিন্ন। আবার সুরমা ও রঙিন কাপড়ও ব্যবহার করতে পারবে না। তবে সুতাগুলো একত্রে বেঁধে হালকা রং লাগিয়ে পরে তা দিয়ে কাপড় বুনলে তা ব্যবহার করা যাবে।

আনসারী (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন শোক পালন কারিনা যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে। তবে হায়েয থেকে পবিত্র হওয়া কালে (দুর্গন্ধ দূরকরণার্থে) “কুস্ত” ও “আযফার” সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৩ | 4953 | ٤۹۵۳

পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৩। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়” তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে এ ইদ্দত পালন করা মহিলার জন্য ওয়াজিব ছিল। পরে মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ তোমাদের মধ্য স্বপত্নীক অবস্থায় যাদের মূত্যু আসন্ন তারা যেন তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ থেকে বহিষ্কার না করে তাদের এক বছরের ভরন-পোষনের ওসিয়্যত করে। কিন্তু যদি তারা বের হয়ে যায় তবে বিধিমত নিজেদের জন্য তারা যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। (আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়)। মুজাহিদ বলেনঃ আল্লাহ তাআলা সাত মাস বিশ দিনকে তার জন্য পূর্ণ বছর সাব্যস্ত করেছেন। মহিলা ইচ্ছা করলে ওসিয়্যত অনুসারে থাকতে পারে, আবার চাইলে চলেও যেতে পারে। একথাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “বহিষ্কার না করে, তবে যদি সেচ্ছায় বের হয়ে যায় তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই তাই মহিলার উপরইদ্দত পালন করা যথারীতি ওয়াজিবই আছে।

আবূ নাজীহ এ কথাগুলো মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন। আতা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আর আয়াতটি স্বামীর বাড়ীতে ইদ্দত পালন করার হুকুমকে রহিত করে দিয়েছে। অতএব সে যেখানে ইচ্ছা ইদ্দত পালন করতে পারে। আতা বলেনঃ ইচ্ছা হলে ওসিয়্যত অনুযায়ী সে স্বামীর পরিবারে অবস্থান করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে অন্যত্রও ইদ্দত পালন করতে পাবে। কেননা, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ তারা নিজেদের জন্য বিধিমত যা করবে, তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। আতা বলেন- এরপর মিরাসের আয়াত নায়িল হলে বাসস্থান দেওয়ার হুকুমও রহিত হয়ে যায়। এখন সে যেখানে মনে চায় ইদ্দত পালন করতে পারে, তাকে বাসস্থান দেওয়া জরুরী নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৪ | 4954 | ٤۹۵٤

পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৪। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … উম্মে হাবীবা বিনত আবূ সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যখন তার কাছে পিতার মৃত্যু সংবাদ পৌছালো, তখন তিনি সুগন্ধি আনিয়ে তার উভয় হাতে লাগালেন এবং বললেনঃ সুগন্ধি লাগানোর কোন প্রয়োজন আমার নেই। কিন্তু সেহেতু আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চারমাস দশদিন শোক পালন করতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৫ | 4955 | ٤۹۵۵

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, গনকের পারিশ্রমিক এবং বেশ্যার উপার্জন গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৬ | 4956 | ٤۹۵٦

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৬। আদম (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন উল্কি অংকনকারিনা উল্কি গ্রহণকারিনা, সুদ গ্রহিতা ও সুদ দাতাকে। তিনি কুকুরের মূল্য ও বেশ্যার উপার্জন ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। চিত্রকরদেরকেও তিনি অভিসম্পাত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৭ | 4957 | ٤۹۵۷

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৭। আলী ইবনু জাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। অবৈধ পন্থার মাধ্যমে দাসীর উপার্জিত অর্থ ভোগ করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৮ | 4958 | ٤۹۵۸

পরিচ্ছদঃ ২০৯১. নির্জনবাসের পরে মোহরের পরিমাণ, অথবা নির্জনবাস ও স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে স্ত্রীর মোহর এবং কিভাবে নির্জনবাস প্রমাণিত হবে সে প্রসঙ্গে।
৪৯৫৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলামঃ যদি কেউ তার স্ত্রীকে অপবাদ দেয়? তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজলান গোত্রের এক দম্পতির বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ জানে তোমাদের দু’ জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউ কি তাওবা করতে রাযী আছ? তারা উভয়ে অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। কাজেই তোমাদের মধ্যে কে তাওবা করতে রাযী আছ? তারা কেউ রাযী হল না। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন। আইয়্যুব বলেনঃ আমর ইবনু দীনার আমাকে বললেন, এই হাদীসে আরো কিছু কথা আছে, আমি তা তোমাকে বর্ণনা করতে দেখছি না। রাবী বলেন, লোকটি তখন বললঃ আমার মাল (স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহর) ফিরে পাব না? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবুওতো তুমি তার সাথে সংগম করেছ। আর যদি মিথ্যাবাদী হও, তাহলে তো কোন প্রশ্নই আসে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৯ | 4959 | ٤۹۵۹

পরিচ্ছদঃ ২০৯২. তালাকপ্রাপ্তা নারীর যদি মোহর নির্ণিত না হয় তাহলে সে মুত‘আ পাবে। কারণ মহান আল্লাহ্ বলেছেনঃ তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করা কিংবা তাদের জন্য মোহর ধার্য করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা তাদের সংস্থানের ব্যবস্থা করো। বিত্তবান তার সাধ্যমত এবং বিত্তহীন তার সামর্থ্যানুযায়ী ….. তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সব দেখেন। আল্লাহ্ আরও বলেছেনঃ তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে প্রথমত কিছু দেওয়া মুত্তাকীদের কর্তব্য। আর লি’আনকারিণীকে তার স্বামী তালাক দেওয়ার সময় নবী (সাঃ) তার জন্য মুত‘আর কিছু দিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
৪৯৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীকে বলেছিলেন, আল্লাহ তোমাদের হিসাব গ্রহণ করবেন। তোমাদের একজন মিথ্যুক। তার (মহিলার) ওপর তোমার কোন অধিকার নেই। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাল? তিনি বললেনঃ তোমার কোন মাল নাই। তুমি যদি সত্যই বলে থাক, তাহলে এ মাল তার লজাস্থানকে হালাল করার বিনিময়ে হবে। আর যদি মিথ্যা বলে থাক, তবে এটা চাওয়া তোমার জন্য একান্ত অনুচিত।

 

ভরণ-পোষন অধ্যায় (৪৯৬০-৪৯৮১)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬০ | 4960 | ٤۹٦۰

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬০। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী বলেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এ কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে? তিনি বললেন, (হাঁ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সাওয়াবের আশায় কোন মুসলমান যখন তার পরিববার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তা তার সাদাকায় পরিগণিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬১ | 4961 | ٤۹٦۱

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর, হে, আদম সন্তান আমিও খরচ করবো তোমার প্রতি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬২ | 4962 | ٤۹٦۲

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীন এর জন্য (খাদ্য যোগাতে) সচেষ্ট ব্যাক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ন্যায় অথবা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর সিয়াম পালনকারীর মত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৩ | 4963 | ٤۹٦۳

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬৩। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পরিচর্যার জন্য আসতেন। আমি বললাম, আমার তো মাল আছে। সেগুলো সব আমি ওসিয়্যাত করে যাই? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ এক-তূতীয়াংশ করতে পার। এক-তৃতীয়াংশই বেশী। মানুষের কাছে হাত পেতে ফিরবে ও এরূপ ফকীর অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার তুলনায় তাদেরকে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যাই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য স্বাদকা হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে তাও। আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন এই আশা। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যেরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৪ | 4964 | ٤۹٦٤

পরিচ্ছদঃ ২০৯৩. পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করা ওয়াজিব
৪৯৬৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল যা দান করার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার যিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবূ হুরায়রা আপনি কি এ হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ এটি আবূ হুরায়রা জামবিলের নয় (বরং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৫ | 4965 | ٤۹٦۵

পরিচ্ছদঃ ২০৯৩. পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করা ওয়াজিব
৪৯৬৫। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম দান তা-ই, যা দিয়ে মানুষ অভাবমুক্ত থাকে। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্ব তাদের থেকে আরম্ভ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৬ | 4966 | ٤۹٦٦

পরিচ্ছদঃ ২০৯৪. পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা এবং তাদের জন্য খরচ করার পদ্ধতি
৪৯৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … মা’মার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সাওরী (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ কোন ব্যাক্তি তার পরিবারের জন্য বছরের বা বছরের কিছু অংশের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা সম্পর্কে আপনি কোন হাদীস শুনেছেন কি? মা’মার বলেনঃ তখন আমার কোন হাদীস স্মরণ হলো না। পরে একটি হাদীসের কথা আমার মনে পড়ল, বা ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) মালিক ইবনু আওসের সূত্রে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ নাযীরের খেজুর বিক্রি করে ফেলতেন এবং পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৭ | 4967 | ٤۹٦۷

পরিচ্ছদঃ ২০৯৪. পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা এবং তাদের জন্য খরচ করার পদ্ধতি
৪৯৬৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদাসান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উমর (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হলাম; এমন সময় তার দারোয়ান ইয়ারফা এসে বলল, উসমান আবদুর রহমান, যুবায়র ও সা’দ ভেতরে প্রবেশ করার অমুমতি চাইছেন। আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি তাদের অনুমতি দিলেন। মালিক (রহঃ) বলেনঃ তারা প্রবেশ করলেন এবং সালাম করে বসলেন। এর কিছুক্ষন পর ইয়ারফা এসে বললঃ আলী ও আব্বাস (রাঃ) অনুমতি চাইলেন আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি হ্যাঁ বলে এদের উভয়কেও অনুমতি দিলেন। তারা প্রবেশ করে সালাম দিয়ে বসলেন। তারপর আব্বাস বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও আলীর মধ্যে ফয়সালা করে দিন। উপস্থিত উসমান ও তার সঙ্গীরাও বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! এদের উভয়ের মধ্যে ফয়সালা করে দিন এবং একজন থেকে অপর জনকে শাস্তি দিন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ থাম! আমি তোমাদেরকে সেই আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, যার আদেশে আসমান ও যমীন টিকে আছে। তোমারা কি জানো যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কেউ ওয়ারিস হয় না। আমরা যা রেখে যাই তা সদকা। এ কথা দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে (এবং অন্যানা নাবীগণকে) বুঝাতে চেয়েছেন। সে দলের লোকেরা বললেনঃ নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বলেছেন। তারপর উমর (রাঃ) আলী ও আনাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা দু-জন কি জানো যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছেন। তারা বললেনঃ অবশ্যই তা বলেছেন।

উমর (রাঃ) বললেন, এ ব্যপারে আমার বক্তব্য হলোঃ এ মালে আল্লাহ তার রাসুলকে একটি বিশেষ অধিকার দিয়েছেন, যা তিনি ছাড়া আর কাউকে দেননি। আল্লাহ বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের নিকট থেকে তাঁর রাসুলকে যে ‘ফায়’ (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) দিয়েছেন …… সর্বশক্তিমান পর্যন্ত। (হাশরঃ ৬) একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য নির্ধারিত ছিল। আল্লাহর কসম! তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে একাকী ভোগ করেননি এবং কাউকে তোমাদের উপর প্রাধান্য দেননি। এ থেকে তিনি তোমাদের দিয়েছেন এবং কিছু তোমাদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত এ মালটুই অবশিষ্ট থেকে যায়। এ মাল থেকেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের সারা বছরের খরচ দিতেন। আর যা উদ্বৃত্ত থাকত তা আল্লাহর ব্যবহার্য মালের সাথে ব্যায় করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনভর এরুপই করেছেন।

আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা বললেনঃ হাঁ। এরপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা উভয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দিলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্থলাভিষিক্ত। আবূ বকর এ মাল নিজ কবজায় রাখলেন এবং এ মাল খরচের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসৃত পদ্বতি অবলম্বন করলেন। আলী ও আব্বাসের দিকে ফিরে উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা তখন মনে করতে আবূ বকর এমন, এমন। অথচ আল্লাহ জানেন এ ব্যাপারে তিনি সত্য কল্যাণকামী, সঠিক নীতির অনুসারী।

আল্লাহ আবূ বকরকে ওফাত দিলেন। আমি বললামঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত এর পর আমি দুবছর এ মাল নিজ কবজায় রাখি। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকরের অনুসৃত নীতির-ই অনুসরণ করতে থাকি। তারপর তোমরা দুজন আসলে; তখন তোমরা উভয়ে, ঐক্যমত ছিলে এবং তোমাদের বিষয়ে সমন্বয় ছিল। তুমি আসলে ভ্রাতুষ্পুত্রের সম্পত্তিতে তোমার অংশ চাইতে। আর এ আসলো শশুরের সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ চাইতে। আমি বলেছিলামঃ তোমরা যদি চাও, তবে আমি এ শর্তে তোমাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তোমরা আল্লাহর সহিত ওয়াদা ও অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে যে, এ ব্যাপরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর এবং এর কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর আমিও যে নীতির অনুসরণ করে এসেছি, সে তোমরা অনুসরন করবে। অন্যথায় এ ব্যাপারে আমার সাথে কোন কথা বলবে না। তখন তোমরা বলেছিলে এ শর্ত সাপেক্ষেই আমাদের কাছে দিয়ে দিন। তাই আমি এ শর্তেই তোমাদের তা দিয়েছিলাম।

তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের সকলকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তে এটি তাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তেই এটি তোমাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে এখন কি তোমরা আমার কাছে এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা চাইছ? সেই সত্তার কসম! যার আদেশে আসমান-যযীন টিকে আছে আমি কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা দিতে প্রস্তুত নই। তোমরা যদি উল্লেখিত শর্ত পালন করতে অক্ষম হও, তাহলে তা আমার জিম্মায় ফিরিয়ে দাও তোমাদের পক্ষ থেকে আমিই এর পরিচালনা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৮ | 4968 | ٤۹٦۸

পরিচ্ছদঃ ২০৯৬. স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী ও সন্তানের খরচ
২০৯৫. পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ মায়েরা যেন তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু‘বছর দুধ পান করায়, সেই পিতার জন্য যে পূর্ণ সময়কাল পর্যন্ত দুধ পান করাতে চায়; …….. তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা দেখেন। তিনি আরো ইরশাদ করেনঃ তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময় তিরিশ মাস। তিনি আরও বলেনঃ যদি তোমরা অসুবিধা রোধ কর, তাহলে অপর কোন মহিলা তাকে দুধ পান করাতে পারে। সচ্ছল ব্যক্তি স্বীয় সাধ্য অনুসারে খরচ করবে…. প্রাচুর্য দান করবেন। ইউনুস, যুহরী থেকে বর্ণনা করেন যে আল্লাহ্ নিষেধ করেছেন কোন মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ করা হবে না। আর তা হলো এরূপ যে, মাতা একথা বলে বসলো, আমি একে দুধ পান করাব না। অথচ মায়ের দুধ শিশুর জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য এবং অন্যান্য মহিলার তুলনায় মাতা সন্তানের জন্য অধিক স্নেহশীলা ও কোমল। কাজেই পিতা যথাসাধ্য নিজের পক্ষে থেকে কিছু দেওয়ার পরও মাতার জন্য দুধ পান করাতে অস্বীকার করা উচিত হবে না। এমনিভাবে সন্তানের পিতার জন্য উচিত নয় সে সন্তানের কারণে তার মাতাকে কষ্ট দেওয়া অর্থাৎ কষ্টে ফেলার উদ্দেশ্যে শিশু মাকে দুধ পান করাতে না দিয়ে অন্য মহিলাকে দুধ পান করাতে দেওয়া। হাঁ, মাতা পিতা খুশী হয়ে যদি কাউকে ধাত্রী নিযুক্ত করে, তবে তাতে কোন দোষ নেই। তেমনি যদি তারা উভয়ে দুধ ছাড়াতে চায়, তবে তাতেও তাদের কোন দোষ নেই, যদি তা পারস্পরিক সম্মতি ও পরামর্শের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। فِصَالُهُ দুধ ছাড়ানো।

৪৯৬৮। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিনদা বিনত উতবা এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান কঠিন লোক। আমি যদি তার মাল থেকে পরিবারের কাউকে কিছু দেই তাহলে আমার গুনাহ হবে কি? তিনি বললেন, না; তবে সঙ্গতভাবে ব্যয় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৯ | 4969 | ٤۹٦۹

পরিচ্ছদঃ ২০৯৬. স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী ও সন্তানের খরচ
৪৯৬৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন মহিলা স্বামীর উপার্জন থেকে বিনা হুকুমে দান করে, তবে সে তার অর্ধেক সাওয়াব পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭০ | 4970 | ٤۹۷۰

পরিচ্ছদঃ ২০৯৭. স্বামীর গৃহে স্ত্রীর কাজ কর্ম করা
৪৯৭০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, একদা ফাতিমা (রাঃ) যাতা ব্যবহারে তার হাতে যে কষ্ট পেতেন তার অভিযোগ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তার কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দাস আসার খবর পৌছেছিল। কিন্তু তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেলেন না। তখন তিনি তার অভিযোগ আয়িশার কাছে বললেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে আসলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জানালেন। আলী (রাঃ) বলেনঃ রাতে আমরা যখন শুয়ে পড়েছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাছে আসলেন। আমরা উঠতে চাইলাম, কিন্তু তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়ে নিজ স্থানে থাক। তিনি এসে আমার ও ফাতিমার মাঝখানে বসলেন। এমনকি আমি আমার পেটে তার পায়ের শীতলতা অনুভব করেছিলাম। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যা চেয়েছ তার চেয়ে কল্যাণকর বিষয় সম্বন্ধে তোমাদের অবহিত করব না? তোমরা যখন তোমাদের শয্যাস্থানে যাবে, অথবা বললেনঃ তোমরা যখন তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তেত্রিশবার সূবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর পাঠ করবে। খাদেম অপেক্ষা ইহা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭১ | 4971 | ٤۹۷۱

পরিচ্ছদঃ ২০৯৮. স্ত্রীর জন্য খাদিম
৪৯৭১। হুমায়দী (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ফাতিমা (রাঃ) একটি খাদেম চাইতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এর চাইতে অধিক কল্যাণকর বিষয়ে খবর দিব না? তুমি শয়নকালে তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং তেত্রিশবার আল্লাহ আল্লাহ পাঠ করবে। পরে সুফিয়ান বলেনঃ এর মধ্যে যে কোন একটি তেত্রিশবার। আলী (রাঃ) বলেনঃ এরপর থেকে কখনোও আমি এগুলো ছাড়িনি। জিজ্ঞাসা করা হলো সিফফীনের রাতেও না? তিনি বললেনঃ সিফফীনের রাতেও না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭২ | 4972 | ٤۹۷۲

পরিচ্ছদঃ ২০৯৯. নিজ পরিবার গৃহকর্তার কাজকর্ম
৪৯৭২। মুহাম্মদ ইবনু আরআরা (রহঃ) … আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে কি কাজ করতেন? তিনি বললেনঃ তিনি ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন, আর যখন আযান শুনতেন, তখন বেরিয়ে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৩ | 4973 | ٤۹۷۳

পরিচ্ছদঃ ২১০০. স্বামী যদি (ঠিকভাবে) খরচ না করে, তাহলে তার অজান্তে স্ত্রী তার ও সন্তানের প্রয়োজনানুপাতে যথাবিহিত খরচ করতে পারে।
৪৯৭৩। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিনদা বিনত উতবা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপন লোক। আমাকে এ পরিমাণ খরচ দেন না, যা আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট; তবে তার অজানাতে যা আমি (চাই) নিতে পারি। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ও তোমার সন্তানের জন্য নিয়মানুসারে যা যথেষ্ট হয় তা তুমি নিতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৪ | 4974 | ٤۹۷٤

পরিচ্ছদঃ ২১০১. স্বামীর সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও তার জন্য খরচ করা
৪৯৭৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উষ্ট্রারোহীনা নারীদের মধ্যে কুরায়াশ গোত্রের নারীরা সর্বশ্রেষ্ঠা। অপরজন বলেনঃ কুরায়শ গোত্রের সৎ নারীগণ, তারা সন্তানের প্রতি শৈশবে খুব স্নেহশীল এবং স্বামীর প্রতি বড়ই দরদী তার সম্পদের ক্ষেত্রে। মুআবিয়া ও ইবনু আব্বাসের সূত্রেও উভয় হাদীসটি বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৫ | 4975 | ٤۹۷۵

পরিচ্ছদঃ ২১০২. মহিলাদের যথাযোগ্য পরিচ্ছদ দান
৪৯৭৫। হাজ্জাজ ইবনু মিহাল (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে রেশমী পোশাক আসল। আমি তা পরিধান করলে তার চেহারা মোবারকে অসন্তষ্টির চিহ্ন লক্ষ্য করলাম। তাই আমি এটাকে খণ্ড খণ্ড করে আপন মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৬ | 4976 | ٤۹۷٦

পরিচ্ছদঃ ২১০৩. সন্তান লালন-পালনে স্বামীকে সাহায্য করা
৪৯৭৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাতটি বা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) নয়টি মেয়ে রেখে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন। তারপর আমি এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ জাবির! তুমি বিয়ে করেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি তারপর জিজ্ঞাসা করলেনঃ কুমারী বিয়ে করেছ না বিধবা? আমি বললামঃ বিধবা। তিনি বললেনঃ কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সাথে প্রমোদ করতে, সেও তোমার সাথে প্রমোদ করতো। তুমিও তাকে হাসাতে, সেও তোমাকে হাসাতো। জাবির (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে বললামঃ অনেকগুলো কন্যা সন্তান রেখে আবদুল্লাহ (তার পিতা) মারা গেছেন তাই আমি ওদের-ই মত কুমারী মেয়ে বিয়ে করা পছন্দ করিনি। আমি এমন মেয়েকে বিয়ে করলাম যে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন অথবা বললেনঃ কল্যাণ দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৭ | 4977 | ٤۹۷۷

পরিচ্ছদঃ ২১০৪. নিজ পরিবারের জন্য অসচ্ছল ব্যক্তির খরচ
৪৯৭৭। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যাক্তি এলো এবং বললো আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কেন? সে বললোঃ রামাযান মাসে আমি (দিবসে) স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটি দাস মুক্ত করে দাও। সে বললোঃ আমার কাছে কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু-মাস রোযা রাখ। সে বললঃ সে ক্ষমতাও আমার নেই। তিনি বলেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও। সে বললোঃ সে সামর্থ্যও আমার নেই।

এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক বস্তা খেজুর এল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বললোঃ আমি এখানে। তিনি বললেনঃ এগুলো দিয়ে সদকা কর। সে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্তকে দিব? সেই সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, মদিনার প্রস্তরময় দু-পার্শ্বের মধ্যে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কোন পরিবার লেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এমন কি তার চোয়ালের দাত মোবারক পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল এবং বললেনঃ তবে তোমাদেরই অনুমতি দেওয়া হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৮ | 4978 | ٤۹۷۸

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৭৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সালামার সন্তানদের জন্য ব্যয় করলে তাতে আমার কোন সাওয়াব হবে কি? আমি তাদের এ (অভাবী) অবস্থায় ত্যাগ করতে পারি না। তারা তো আমারই সন্তান। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাদের জন্য খরচ করলে তুমি সাওয়াব পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৯ | 4979 | ٤۹۷۹

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৭৯। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিনদা এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ। আবূ সুফিয়ান কৃপন লোক। আমার ও সন্তানের প্রয়োজন মতো আমি যদি তার মাল থেকে কিছু গ্রহণ করি, তবে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেনঃ নিতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮০ | 4980 | ٤۹۸۰

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৮০। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঋণগ্রস্ত কোন মৃত ব্যাক্তিকে (জানাযার জন্য) আনা হলে, তিনি জিজ্ঞাসা করতেনঃ সে কি ঋণ পরিশোধ করার মত অতিরিক্ত কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হত যে, সে ঝণ পরিশোধ করার মত সম্পদ রেখে গেছে, তাহলে তিনি তার জানাযা পড়তেন। অন্যথায় তিনি মুসলমানদের বলতেনঃ তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়। তারপর আল্লাহ যখন তার জন্য অসংখ্য বিজয়ের দার খুলে দিলেন, তখন তিনি বললেনঃ আমি মুমিনদের নিজেদের চেয়েও বেশী ঘনিঠতর। সুতরাং মুমিনদের মধ্যে সে কেউ ঋণ রেখে মারা গেলে, তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমারই। আর যে ব্যাক্তি সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীবা পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮১ | 4981 | ٤۹۸۱

পরিচ্ছদঃ ২১০৬. দাসী ও অন্যান্য মহিলা কর্তৃক দুধ পান করানো
৪৯৮১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার বোন আবূ সুফইয়ানের মেয়েকে আপনি বিবাহ করুন। তিনি বললেনঃ তুমি কি তা পছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি তো আর আপনার সংসারে একা নই। আমার সঙ্গে এই সৌভাগ্যের অংশীদার, আমার বোনও তাদের অভভুক্ত হোক তাই আমি বেশী পছন্দ করি। তিনি বললেনঃ কিন্তু সে যে আমার জন্য হালাল হবে না? আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আল্লাহর কসম! আমাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে আপনি নাকি উম্মে সালামার মেয়ে দুররাকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছেন? তিনি বললেনঃ উম্মে সালামার মেয়েকে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! সে যদি আমার কোলে পালিত, পূর্ব স্বামীর ঔরসে উম্মে সালামার গর্ভজাত সন্তান নাও-হতো, তবু সে আমার জন্য হালাল ছিল না। সে তো আমার দুধ-ভাইয়ের কন্যা। সুওয়াহাবা আমাকে ও আবূ সালামাকে দুধ পান করিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের কন্যা ও বোনদের আমার সামণে পেশ করো না। শুয়াইব যুহরী থেকে বর্ননা করেছেন যে, উরওয়া বলেছেনঃ সুওয়ায়বাকে আবূ লাহাব মুক্ত করে দিয়েছিল।

আহার সংক্রান্ত অধ্যায় (৪৯৮২-৫০৭০)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮২ | 4982 | ٤۹۸۲

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আমি যে রিযিক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কর্মশীল হও। তোমরা যা করছ আমি তা জানি।
৪৯৮২। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্থকে আহার করাও, রোগীর পরিচর্যা করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো। সুফিয়ান বলেছেনঃ الْعَانِي অর্থঃ বন্দী।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৩ | 4983 | ٤۹۸۳

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আমি যে রিযিক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কর্মশীল হও। তোমরা যা করছ আমি তা জানি।
৪৯৮৩। ইউসুফ ইবনু ঈসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার তার ইন্তেকাল অবধি একাধারে তিন দিন আহার করে পরিতৃপ্ত হন নি।

আরেকটি বর্ণনায় আবূ হাযিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একদা আমি প্রচণ্ড ক্ষুধার যন্ত্রনায় আক্রান্ত হই। তখন উমর ইবনু খাত্তারের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং মহান আল্লাহ (কুরআনের) একটি আয়াতের পাঠ তার থেকে শুনতে চাইলাম। তিনি আয়াতটি পাঠ করে নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। এদিকে আমি কিছু দূর চলার পর ক্ষুধার যন্ত্রনায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম। একটু পরে দেখি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথার কাছে দাঁড়ানো। তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা। আমি লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদায়কা (আমি হাযীর! ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনার সমীপে) বলে সাড়া দিলাম। তিনি আমার হাত ধরে তুললেন এবং আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন।

তিনি আমাকে খেতে নিয়ে গেলেন এবং আমাকে এক পেয়ালা দুধ দেওয়ার জন্য আদেশ করলেন। আমি কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ আবূ হুরায়রা! আরো পান কর। আবার পান করলাম। তিনি পুনবায় বললেনঃ আরো। আমি পূনর্বার পান করলাম। এমনি কি আমার পেট তীরের মত সমান হয়ে গেল। এরপর আমি উমরের সাথে সাক্ষাৎ করে আমার অবস্থার কথা তাকে জানালাম এবং বললামঃ হে উমর! আল্লাহ তাআলা এমন একজন লোকের মাধ্যমে এর বন্দোবস্ত করেছেন যিনি এ ব্যাপারে তোমার চেয়ে বেশী উপযুক্ত। আল্লাহর কসম! আমি তোমার কাছে আয়াতটির, পাঠ শুনতে চেয়েছি অথচ আমি তোমার চেয়ে তা ভাল পাঠ করতে পারি। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাকে আপ্যায়ন করা আমার নিকট লাল বর্ণের উটের চেয়েও অধিক প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৪ | 4984 | ٤۹۸٤

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ছোট ছেলে হিসাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তত্বাবধানে ছিলাম। খাবার বাসনে আমার হাত ছুটাছুটি করতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে বৎস! বিসমিল্লাহ বলে ডান হাতে আহার কর এবং তোমার কাছে থেকে খাও। এরপর থেকে আমি সব সময় এ পদ্ধতিতেই আহার করতাম। যার যার কাছ থেকে আহার করা। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা বিসমিল্লাহ বলবে এবং প্রত্যেকে তার কাছ থেকে আহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৫ | 4985 | ٤۹۸۵

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৫। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা উম্মে সালামার পুত্র ছিলেন। তিনি বলেনঃ একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আহার্য খেলাম। আমি পত্রের সব দিক থেকে খেতে লাগলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ নিজের কাছ থেকে খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৬ | 4986 | ٤۹۸٦

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ নুআয়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একদা কিছু খাবার আনা হলো, তার সঙ্গে ছিলেন তার পোষ্য উমর ইবনু আবূ সালামা। তিনি বললেনঃ বিসমিল্লাহ বল এবং নিজের কাছ থেকে খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৭ | 4987 | ٤۹۸۷

পরিচ্ছদঃ ২১০৮. সাথীর কাছ থেকে কোন অসন্তুষ্টির আলামত না দেখতে সঙ্গের পাত্রের সবদিক থেকে খুঁজে খুঁজে খাওয়া।
৪৯৮৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার এক দর্জি কিছু খানা পাকিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওআত করলো। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে গেলাম। আহারে বসে দেখলাম, তিনি পাত্রের সবদিক থেকে কদূর টুকরা খুঁজে খুঁজে বের করে নিচ্ছেন, সেদিন থেকে আমি কদু পছন্দ করতে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৮ | 4988 | ٤۹۸۸

পরিচ্ছদঃ ২১০৯. আহার ও অন্যান্য কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা।
৪৯৮৮। আবদান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতা অর্জনে, জুতা পরিধানে এবং চুল আঁচড়ানে যথাসাধ্য ডান দিক থেকে শুরু করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৯ | 4989 | ٤۹۸۹

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৮৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ তালহা (রাঃ) উম্মে সুলায়মকে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূর্বল কণ্ঠসুর শুনে বুঝতে পারলাম তিনি ক্ষুধার্ত। তোমার নিকট (খাবার) কিছু আছে কি? তখন উম্মে সুলায়ম কয়েকটি যবের রুটি বের করলেন। তারপর তার ওড়না বের করে এর একাংশ দ্বারা রুটিগুলো পেঁচিয়ে আমার কাপড়ের মধ্যে গুজে দিলেন এবং অন্য অংশ আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠালেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমি এগুলো নিয়ে গেলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে পেলাম। তার সঙ্গে অনেক লোক। আমি তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আবূ তালহা তোমাকে পাঠিয়েছে? আমি বললামঃ হাঁ। তখন তিনি বললেনঃ খাবার জন্য? আমি বললাম হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গীদের বললেনঃ ওঠ। তারপর তিনি চললেন। আমিও তাদের আগে আগে চলতে লাগলাম। অবশেষে আবূ তালহার কাছে এসে পৌহুলাম।

আবূ তালহা বললেনঃ হে উম্মে সুলায়ম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো অনেক লোক নিয়ে এসেছে অথচ আমাদের কাছে এ পরিমাণ খাবার নাই যা তাদের খাওয়াব। উম্মে সুলায়ম বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ তারপর আবূ তালহা গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তারপর আবূ তালহা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সুলায়মাকে ডেকে বললেনঃ তোমার কাছে যা আছে তা নিয়ে আস। উম্মে সুলায়ম ঐ রুটি নিয়ে আসলেন। তিনি নির্দেশ দিলে তা টুকুরা টুকরা করা হলো।

উম্মে সুলায়ম (ঘি বা মধুর) পাত্র নিংড়িয়ে তাকেই ব্যঞ্জন বানালেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশাআল্লাহ, এতে যা পড়ার পড়লেন। এরপর বললেনঃ দশজনকে আসতে অনুমতি দাও। তাদের আসতে বলা হলে তারা পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করল এবং তারা বেরিয়ে গেলা আবার বললেনঃ দশজনকে অনুমতি দাও। তাদের অনুমতি দেওয়া হলো। তারা আহার করে পরিতৃপ্ত হল এবং চলে গেল। আবার বললেনঃ দশজনকে অনুমতি দাও। তাদের অনুমতি দেওয়া হল। তারা আহার করে পরিতৃপ্ত হলো এবং চলে গেল। এরপর আরো দশজনকে অনুমতি দেওয়া হল। এভাবে সকলেই আহার করল এবং পরিতৃপ্ত হল। তারা মোট আশি জন লোক ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯০ | 4990 | ٤۹۹۰

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৯০। মুসা (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা একশ-তিরিশ জন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের কারো কাছে কিছু খাবার আছে কি? দেখা গেল এক ব্যাক্তির কাছে প্রায় এক সা’ পরিমাণ খাবার আছে। এগুলো গুলিয়ে খামীর করা হলো। তারপর দীর্ঘ দেহী দীর্ঘ কেশী এক মুশরিক ব্যাক্তি একটা বকরী হাকিয়ে নিয়ে আসলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটাকি বিক্রির জন্য, না উপঢৌকন অথবা তিনি বললেনঃ দানের জন্য? লোকটি বললোঃ না, আমি বরং বিক্রি করবো। তিনি তার কাছ থেকে সেটি কিনে নিলেন। পরে সেটি যবেহ করে বানান হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কলিজা ইত্যাদি রান্না করতে নির্দেশ দিলেন। আল্লাহর কসম! (আহারের সময়) তিনি একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককেই এক টুকরা করে কলিজা ইত্যাদি দিলেন। যারা উপস্থিত ছিল তাদের তো দিলেনই। আর যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের জন্যও তিনি টুকরাগুলো তুলে রাখলেন। তারপর খাবারগুলো দুটি পাত্রে রাখলেন। আমরা সকলে তৃপ্তিসহ আহার করলাম। এরপরও উভয় পাত্রে খাবার অবশিষ্ট থাকল। আমি তা উটের পিঠে তুললাম। কিংবা রাবী যা বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯১ | 4991 | ٤۹۹۱

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৯১। মুসলিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকাল হল। সে সময় আমরা পরিতৃপ্ত হয়ে খেজুর ও পানি খেলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯২ | 4992 | ٤۹۹۲

পরিচ্ছদঃ ২১১১. মহান আল্লাহর বাণীঃ অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই …… যাতে তোমরা বুঝতে পার।
৪৯৯২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নূ’মান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বারের দিকে বের হলাম। আমরা নাহবা (খায়বারের এক মঞ্জিল দুরে অবস্থিত) নামক স্থানে পৌছলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছুই আনা হল না। আমরা তা-ই মুখে দিয়ে জিহবায় গুলে গিলে ফেললাম। তারপর তিনি পানি আনতে বললেন তখন (পানি আনা হলে) তিনি কুলি করলেন- আমরাও কুলি করলাম। তারপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না। সুফিয়ান বলেনঃ আমি ইয়াহইয়াহ ইবনু সাঈদের কাছে হাদীসটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৩ | 4993 | ٤۹۹۳

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৩। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আনাস (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তার সঙ্গে তার বাবুর্চিও ছিল। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত পাতলা নরম রুটি এবং ভুনা বকরীর গোশত খান নি এমনকি তিনি এ অবস্থায়ই আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৪ | 4994 | ٤۹۹٤

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও ‘সুকুরজা’ অর্থাৎ ছোট ছোট পাত্রে আহার করেছেন, তার জন্য কোন নরম রুটি তৈরি করা হয়েছে কিংবা তিনি কখনো টেবিলের উপর খাবার খেয়েছেন বলে আমি জানি না। কাতাদাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, তাহলে তাঁরা কিসের উপর আহার করতেন। তিনি বললেনঃ দস্তরখানের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৫ | 4995 | ٤۹۹۵

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৫। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফিয়্যার সাথে বাসর করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করলেন। আমি তাঁর ওলীমার জন্য মুসলমানদের দাওয়াত করলাম। তার আদেশে দস্তরখান বিছানো হল। তারপর তার উপর খেজুর পনির ও ঘি ঢালা হল। আমর আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে বাসর করলেন এবং চামড়ার দস্তরখানে ‘হায়স’ (ঘি, খেজুর ইত্যাদি সমন্ময়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৬ | 4996 | ٤۹۹٦

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৬। মুহাম্মদ (রহঃ) … ওহাব ইবনু কায়সান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সিরিয়াবাসীরা ইবনু যুবায়রকে ইবনু যাতান নিতাকায়ন বলে লজ্জা দিত। আসমা (রাঃ) তাকে বললেনঃ বৎস! তারা তোমাকে ‘নিতাকায়ন’ দ্বারা লজ্জিত করছে? তুমি কি ‘নিতাকায়’ (দু’কোমরবন্দ) সম্বন্ধে কিছু জানো? আসলে তা ছিল আমারই কোমরবন্দ যা দু-ভাগ করে আমি একভাগ দিয়ে (হিজরতের সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাবারের থলি মুখ বেধে দিয়েছিলাম। আর অপর ভাগকে দস্তরখান বানিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে সিয়িয়া বাসীরা (অর্থাৎ হাজ্জাজের সৈন্যরা) যখনই তাকে ‘নিতাকায়ান’ বলে লজ্জা দিতে চাইত, তিনি বলতেনঃ তোমরা সত্যই বলছো। আল্লাহর শপখ! এটি এমন এক অভিযোগ যা তোমাদের লজ্জা আরো দূরিভূত করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৭ | 4997 | ٤۹۹۷

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৭। আবূ নূমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার খালা উম্মে হাফীদ বিনত হারিস ইবনু হাযন (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পনির এবং দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) হাদিয়া দিলেন। তিনি এগুলো তার কাছে আনতে বললেন। তারপর এগুলো তার দস্তরখানে খাওয়া হল। তিনি অপছন্দনীয় মনে করে দব্বগুলো খেলেন না। যদি এগুলো হারাম হতো তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না। আর তিনি এগুলো খাওয়ার অনুমতিও দিতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৮ | 4998 | ٤۹۹۸

পরিচ্ছদঃ ২১১৩. ছাতু
৪৯৯৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নুমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তারা একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ‘সাহবা’ নামক স্থানে উপস্থিত ছিলেন। সাহল ছিল খায়বার থেকে এক মনযিলের দূরত্ব। সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় উপস্থিত হলে তিনি খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছুই পেলেন না। তিনি তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করলেন, আমরাও তার সঙ্গে সঙ্গে এরূপ করলাম। তারপর তিনি পানি আনালেন এবং কুলি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আমরাও তার সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। আর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৯ | 4999 | ٤۹۹۹

পরিচ্ছদঃ ২১১৪. যতক্ষণ পর্যন্ত কোন খাবারের নাম বলা না হতো এবং সে খাদ্য কি তা জান্তে না পারতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত নবী (সাঃ) আহার করতেন না।
৪৯৯৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) যাকে সায়ফুল্লাহ (আল্লাহর তরবারী) বলা হতো তার কাছে বর্ণনা করেছেন, যে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে প্রবেশ করলেন। মায়মুনা (রাঃ) তাঁর ও ইবনু আব্বাসের খালা ছিলেন। তিনি তার কাছে একটি ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) দেখতে পেলেন, যা নজ্বদ থেকে তাঁর (মায়মূনার) বোন হুফায়দা বিনত হারিস নিয়ে এসেছিলেন। মায়মুনা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে উপস্থিত করলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল কোন খাদ্যের নাম ও তার বিবরন বলে না দেয়া পর্যন্ত তিনি খুব কমই তার প্রতি হাত বাড়াতেন। তিনি দব্ব এর দিকে হাত বাড়ালে উপস্থিত মহিলাদের মধ্য থেকে একজন বললোঃ তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যা পেশ করছো সে সম্বন্ধে তাকে অবহিত করো। তারপর সে মহিলাই বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওটা দব্ব। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত তুলে ফেললেন। খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! দব্ব খাওয়া কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। কিন্তু যেহেতু এটি আমাদের এলাকায় নেই। তাই এটি খাওয়া আমি পছন্দ করি না। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ আমি সেটি টেনে নিয়ে খেতে থাকলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০০ | 5000 | ۵۰۰۰

পরিচ্ছদঃ ২১১৫. একজনের খাবার দু‘জনের জন্য যথেষ্ট
৫০০০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’জনের খাবার তিন জনের জন্য যথেষ্ঠ এবং তিন জনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০১ | 5001 | ۵۰۰۱

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু উমর (রাঃ) ততক্ষন পর্যন্ত আহার করতেন না যতক্ষন পর্যন্ত তার সাথে খাওয়ার জন্য একজন মিসকীনকে ডেকে না আনা হতো। একদা আমি তার সঙ্গে বসে আহার করার জন্য জনৈক ব্যাক্তিকে নিয়ে আসলাম। লোকটি খুব বেশী আহার করলো। তিনি বললেনঃ নাফি! এ ধরনের লোককে আমার কাছে নিসে আসবে না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মুমিন ব্যাক্তি এক পেটে খায়। আর কাফির ব্যাক্তি সাত পেটে খায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০২ | 5002 | ۵۰۰۲

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০২। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন এক পেটে খায় আর কাফিব অথবা বলেছেন মুনাফিক। রাবী বলেন, এ দুটি কাজের মধ্যে আমার সন্দেহ আছে যে বর্ণনাকারী কোনটি বলেছেন। উবায়দুল্লাহ বলেনঃ সাত পেটে খায়। ইবনু বুকায়র বলেনঃ মালিক (রহঃ) নাফি (রহঃ) এর সূত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে এবং তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৩ | 5003 | ۵۰۰۳

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ নাহীক অত্যধিক আহারকারী ব্যাক্তি ছিলেন। ইবনু উমর (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাফির ব্যাক্তি সাত পেটে খায়। আবূ নাহীক বললেনঃ আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৪ | 5004 | ۵۰۰٤

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তি এক পেটে আহার করে আর কাফির সাত পেটে আহার করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৫ | 5005 | ۵۰۰۵

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি প্রচুর পরিমাণে আহার করতো। লোকটি মুসলমান হলে স্বল্পাহার করতে লাগলো। ব্যাপারটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ মুমিন এক পেটে আহার করে, আর কাফির আহার করে সাত পেটে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৬ | 5006 | ۵۰۰٦

পরিচ্ছদঃ ২১১৭. হেলান দিয়ে আহার করা
৫০০৬। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি হেলান দিয়ে আহার করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৭ | 5007 | ۵۰۰۷

পরিচ্ছদঃ ২১১৭. হেলান দিয়ে আহার করা
৫০০৭। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তিনি তাঁর কাছে উপবিষ্ট এক ব্যাক্তিকে বলেনঃ হেলান দেওয়া অবস্থায় আমি আহার করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৮ | 5008 | ۵۰۰۸

পরিচ্ছদঃ ২১১৮. ভুনা গোশত সম্বন্ধে। আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ: সে এক কাবার করা গো- বৎস নিয়ে আসলো
৫০০৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … খলিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) আনা হলে তিনি তা খাওয়ার উদেশ্যে হাত বাড়ালেন। তখন তাকে বলা হলঃ এটাতো দব্ব এতে তিনি হাত গুটিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকায় নেই তাই আমি এটা খাওয়া পছন্দ করি না। তারপর খালিদ (রাঃ) তা খেতে থাকেন, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখছিলেন।

মালিক ইবনু শিহাব সুত্রে ضَبٍّ مَشْوِيٍّ এর স্থলে ضَبٍّ مَحْنُوذٍ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৯ | 5009 | ۵۰۰۹

পরিচ্ছদঃ ২১১৯. খাযীরা সম্পর্কে। নযর বলেছেন: খাযীরা ময়দা দিয়ে এবং হারীরা দুধ দিয়ে তৈরী করা হয়
৫০০৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইতবান ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী আনসার সাহাবীদের একজন। একবার তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমি আমার গোত্রের লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি। কিন্তু বৃষ্টি হলে আমার ও তাদের মধ্যকার উপত্যকায় পানি প্রবাহিত হয়। তখন আমি তাদের মসজিদে আসতে পারি না যে তাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করব। তাই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার আকাঙ্ক্ষা আপনি এসে যদি আমার ঘরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তাহলে আমি সে স্থানে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য নির্ধারন করে নিতাম। তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আমি অচিরেই তা করবো।

ইতবান (রাঃ) বলেন পুরোভাবে সূর্য কিছু উপরে উঠলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি চাইলেন। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই তৎক্ষনাৎ ঘরে প্রবেশ করে আমাকে বললেনঃ তোমার ঘরের কোন স্থানে আমার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা তোমার পছন্দ? আমি ঘরের এক দিকে ইঙ্গিত করলাম। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে তাকবীর বললেন। আমরা কাতার ধরলাম। তিনি দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সালাম ফিরালেন।

আমরা যে খাযীরা তৈরী করেছিলাম তা খাওয়ার জন্য তাকে বললাম। তার মহল্লার বহু সংখ্যক লোক ঘরে প্রবেশ করতে লাগল। তারপর তারা সমবতে হলে তাদের একজন বললোঃ মালিক ইবনু দুখশান কোখায়? অন্য একজন বললোঃ সে মুনাফিক? অন্য একজন বললোঃ সে মুনাফিক সে আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসে না।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমন কথা বলোনা। তুমি কি জানো না, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য লা-ইলাহা ইলাল্লাহ পড়েছে? লোকটি বললোঃ আল্লাহ ও তার রাসুল-ই ভাল জানেন। সে পূনরায় বললোঃ কিন্তু আমরা যে মুনাফিকদের সাথে তার সম্পর্ক ও তাদের প্রতি শুভ কামনা দেখতে পাই? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তো জাহান্নামকে ঐ ব্যাক্তির জন্য হারাম করে দিয়েছেন যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করলো। ইবনু শিহাব বলেনঃ এরপর আমি হুসায়ন ইবনু মুহাম্মদ আনসারী যিনি ছিলেন বানূ সালিমের একজন নেতৃস্থানীয় লোক তাকে মাহমুদের এ হাদীসের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি এর সত্যতা স্বীকার করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১০ | 5010 | ۵۰۱۰

পরিচ্ছদঃ ২১২০. পনির প্রসঙ্গে। হুমায়ন (র) বলেন, আমি আনাস (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাফিয়্যার সাথে বাসর যাপন করলেন। তারপর তিনি (দস্তরখানে) খেজুর, পনির এবং ঘি রাখলেন। আমর ইবন আবূ আমর আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (উক্ত তিনি বস্তুর সংযোগে) “হায়স” তৈরী করেন।
৫০১০। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার খালা একটি দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) কিছু পনির এবং দুধ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাদিয়া দিলেন এবং দস্তরখানে দব্ব রাখা হয়। যদি তা হারাম হতো তাঁর দস্তরখানে রাখা হতো না। তিনি (শুধু) দুধ পান করলেন এবং পনির খেলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১১ | 5011 | ۵۰۱۱

পরিচ্ছদঃ ২১২১. সিলক ও যব প্রসঙ্গে
৫০১১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জুমআর দিন আসলে আমরা অত্যাধিক খুশী হতাম। এক বৃদ্ধা আমাদের জন্য সিলক (মূলা জাতীয় এক প্রকার সুস্বাদু সবজি) এর মূল তুলে তা তার ডেগে চড়িয়ে দিতেন। তারপর এতে সামান্য কিছু যব ছেড়ে দিতেন। সালাত (নামায/নামাজ) এর পর আমরা তাঁর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি এ খাবার আমাদের পরিবেশন করতেন। এ কারণেই জুমুআর দিন আসলে আমরা খুব খুশী হতাম। আমরা সকালের আহার এবং বিশ্রাম গ্রহণ করতাম না জুমুআর পর ছাড়া। আল্লাহর কসম! সে খাদ্যে কোন চর্বি বা চিকনাই থাকতো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১২ | 5012 | ۵۰۱۲

পরিচ্ছদঃ ২১২২. গোশত দাঁত দিয়ে ছিড়ে এবং তুলে নিয়ে খাওয়া
৫০১২। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্কন্ধের গোশত দাঁত দিয়ে ছিড়ে খেলেন। তারপর তিনি উঠে গিয়ে (নতুনভাবে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

অন্য সনদে আইমার ও আসিম (রহঃ) ই-করামার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেগ থেকে একটি গোশত যুক্ত হাড় বের করে তা খেলেন। তারপর (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৩ | 5013 | ۵۰۱۳

পরিচ্ছদঃ ২১২৩. বাহুর গোশত খাওয়া
৫০১৩। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হলাম। অন্য সনদে আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি মক্কার পথে কোন এক মনযিলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু সংখ্যক সাহাবীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামন্যই অবস্থান করছিলেন। আমি ছাড়া দলের সকলেই ছিলেন ইহরাম অবস্থায়। আমি আমার জুতা সেলাই এ করছিলাম। এমতাবস্থায় তারা একটি বন্য গাধা দেখতে পেল। কিন্তু আমাকে জানালো না। তবে তারা আশা করছিল, যদি আমি ওটা দেখতাম! তারপর আমি চোখ ফেরাতেই ওটা দেখে ফেরালাম। এরপর আমি ঘোড়ার কাছে গিয়ে তার জ্বীন লাগিয়ে তার উপর আরোহন করলাম। কিন্তু চাকু ও বর্শার কথা ভুলে গেলাম। কাজেই আমি তাদের বললাম, চাকু ও বর্শাটি আমাকে তুলে দাও। তারা বললোঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে তোমাকে আমরা কিছুই সাহায্য করবো না।

এতে আমি ক্রুদ্ধ হলাম এবং নীচে পৌছে ওদুটি নিয়ে পুনরায় সাওয়ার হলাম। তারপর আমি গাধাটির পেছনে দ্রুত ধাওয়া করে তাকে ঘায়েল করে ফেললাম। তখন সেটি মরে গেল এবং আমি তা নিয়ে এলাম। (পাকানোর পর) তারা সকলে এটা খাওয়া শুরু করলো। তারপর ইহরাম অবস্থায় এটা খাওয়া নিয়ে তারা সন্দেহে পড়লো। আমি সমস্যার দিকে রওনা দিলাম এবং এর একটি বাহু লুকিয়ে রাখলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে এর কিছু আছে? একথা শুনে আমি বাহুটি তাঁর সামনে পেশ করলাম। তিনি মুহরিম অবস্থায় তা খেলেন, এমন কি এর হাঁড়ের সাথে জড়িত গোশতোও দাঁত দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খেলেন। ইবনু জাফর বলেছেনঃ যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) আতা ইবনু ইয়াসার এর সূত্রে আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৪ | 5014 | ۵۰۱٤

পরিচ্ছদঃ ২১২৪. চাকু দিয়ে গোশত কাটা
৫০১৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (পাকানো) বকরীর কাঁধের গোশত নিজ হাতে খেতে দেথেকে। সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য তাকে আহবান করা হলে তিনি তা এবং যে চাকু দিয়ে কাটছিলেন সেটিও রেখে দেন। এর পর উঠে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। অথচ তিনি (নতুন করে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৫ | 5015 | ۵۰۱۵

পরিচ্ছদঃ ২১২৫. নবী (সাঃ) কখনো কোন খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না
৫০১৫। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোন খাবারের দোষ-ক্রটি প্রকাশ করেন নি। ভাল লাগলে তিনি খেয়েছেন এবং খারাপ লাগলে তা রেখে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৬ | 5016 | ۵۰۱٦

পরিচ্ছদঃ ২১২৬. যবের আটায় ফুঁক দেওয়া
৫০১৬। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … আবূ হামিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সাহল (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনারা কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ময়দা দেথেছেন? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ আপনারা কি যবের আটা চালনিতে চালতেন? তিনি বললেনঃ না। বরং আমরা তাতে ফুঁক দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৭ | 5017 | ۵۰۱۷

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৭। আবূ নুমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন তাঁর সাহাবীদের মধ্যে কিছু খেজুর ভাগ করে দিলেন। তিনি প্রত্যেককে সাতটি করে খেজুর দিলেন। আমাকেও সাতটি খেজুর দিলেন। তার মধ্যে একটি খেজুর ছিল খারাপ। তবে সাতটি খেজুরের মধ্যে এটই আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ছিল। কারণ এটি চিরতে আমার কাছে খুব শক্ত ঠেকছিল। (তাই এটি দীর্ঘ সময় আমার মুখে ছিল।)

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৮ | 5018 | ۵۰۱۸

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ছিলাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের মধ্যে (যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল) সপ্তম। হুবলা (কাটা যুক্ত গাছ) বা হাবলা (এক জাতীয় গাছ) ছাড়া আমাদের খাওয়ার অ্যর কিছু ছিল না। এমনকি আমাদের কেউ কেউ বকরীর ন্যায় মলত্যাগ করতো।। এরপরও বনূ আসাদ আমাকে ইসলামের ব্যাপারে তিরস্কার করছে? তাহলে তো আমি একদম ক্ষতিগ্রস্থ এবং আমার সমস্ত পরিশ্রমই বৃথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৯ | 5019 | ۵۰۱۹

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ময়দা খেয়েছেন? সাহল (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন খেতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাঠিয়েছেন তখন থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি ময়দা দেখেন নি। আমি পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কি আপনাদের চালুনি ছিল? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাঠানোর পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি চালুনিও দেখেন নি। আবূ হাযিম বলেন আমি বললামঃ তাহলে আপনারা চালা ব্যতীত যবের আটা কিভাবে খেতেন? তিনি বললেনঃ আমরা যব পিশে তাতে ঘাক দিতাম। এতে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত, আর যা অবশিষ্ট থাকতো তা মুখে নিতাম এরপর তা খেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২০ | 5020 | ۵۰۲۰

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক দল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন যাদের সামনে ছিল একটি ভুনা বকরী। তারা তাকে (খেতে) ডাকল। তিনি খেতে অস্বীকার করলেন এবং বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন অথচ তিনি কোন দিন যবের রুটিও পেট পুরে খান নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২১ | 5021 | ۵۰۲۱

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২১। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো “খিওয়ান” (টেবিল জাতীয় উচু স্থানে) এর উপর খাবার রেখে আহার করেননি এবং ছোট ছোট বাটীতেও আহার করেননি। আর তার জন্য কখনো পাতলা রুটি তৈরি করা হয়নি। ইউনুস বলেন, আমি কাতাদাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ তা হলে তারা কিসের উপর আহার করতেন? তিনি বললেনঃ দন্তরখানের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২২ | 5022 | ۵۰۲۲

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২২। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা একাধারে তিন রাত গমের রুটি পেটভরে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৩ | 5023 | ۵۰۲۳

পরিচ্ছদঃ ২১২৮. “তালবীনা” প্রসঙ্গে
৫০২৩। ইয়াইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে তার পরিবারের কোন ব্যাক্তি মারা গেলে মহিলারা এসে সমবেত হলো। তারপর তার আত্মীয়রা ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলারা ছাড়া বাকী সবাই চলে গেলে, তিনি ডেগে তালবীনা (আটা, মধু ইত্যাদি সংযোগে তৈরি খাবার) পাকাতে-নির্দেশ দিলেন। তা পাকানো হল। এরপর সারীদ (গোশতের মধ্যে রুটি টুকরো করে দিয়ে তৈরী খাবার) প্রন্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনা ঢালা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা এ থেকে খাও। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তালবীনা রুগ্ন ব্যাক্তির চিত্তে প্রশান্তি এনে দেয় এবং শোক দুঃখ কিছুটা লাঘব করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৪ | 5024 | ۵۰۲٤

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামালিয়াত অর্জন করেছে। কিন্তু স্ত্রীলোকদের মধ্যে ইমরান তনয়া মারইয়াম এবং ফিরাউন পত্নী আসিয়া ব্যতীত অন্য কেউ কামালিয়াত অর্জন করতে পারেনি। স্ত্রী লোকদের মধ্যে আয়িশার মর্যাদাও তেমন, খাদ্যের মধ্যে সারীদের মর্যাদা যেমন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৫ | 5025 | ۵۰۲۵

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৫। আমর ইবনু আওন (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে আয়িশার মর্যাদা তেমন, খাদ্যের মধ্যে সারীদের মর্যাদা যেমন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৬ | 5026 | ۵۰۲٦

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তার এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে গেলাম। সে তার সামনে সারীদের পেয়ালা উপস্থিত করলো এবং নিজের কাজে লিপ্ত হল। আনাস (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কদু বেড়ে নিতে শুরু করলে আমি কদুর টুকরাগুলো বেছে বেছে তার সামনে দিতে লাগলাম এবং এরপর থেকে আমি কদু পছন্দ করতে শুরু করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৭ | 5027 | ۵۰۲۷

পরিচ্ছদঃ ২১৩০. ভূনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ
৫০২৭। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আনাস ইবনু মালিকের কাছে গেলাম। তার বাবুর্চি সেখানে দাঁড়ানো ছিল। তিনি বললেনঃ আহার কর! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পাতলা রুটি দেখেছেন বলে আমি জানি না এবং তিনি পশম দুরীকৃত ভুনা বকরী কখনও চোখে দেখেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৮ | 5028 | ۵۰۲۸

পরিচ্ছদঃ ২১৩০. ভূনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ
৫০২৮। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা যামরী তাঁর পিতা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বকরীর স্কন্ধ থেকে গোশত কাটতে দেখেছি। তিনি তা থেকে আহার করলেন। তারপর যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর দিকে আহবান করা হলো তখন তিনি উঠলেন এবং রুটি রেখে দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। অথচ তিনি (নতুন করে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেন নি।)

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৯ | 5029 | ۵۰۲۹

পরিচ্ছদঃ ২১৩১. পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন। আবূ বকর তনয়া “আয়েশা ও আসমা (রা) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ও আবূ বকরের জন্য (মদীনায় হিজরতের সময়) পথের খাবার প্রস্তুত করে দিয়েছিলাম।
৫০২৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কুরবানীর পোশত তিন দিনের বেশী সময় খেতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেনঃ সেই বছরেই কেবল নিষেধ করেছিলেন যেই বছর মানুষ অনাহারে আক্রান্ত হয়েছিল। তখন তিনি চেয়েছিলেন যেন ধনীরা গরীবদের খাওয়ায়। আমরা তো বকরীর পায়াশুলো তুলে রাখতাম এবং পনের দিন পর তা খেতাম। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলঃ কি সে আপনাদের এগুলো খেতে বাধ্য করত? তিনি হেসে বললেনঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর পবিবার পরিজন একাধারে তিন দিন তরকারীসহ গমের রুটি পেট ভরে খান নি। অন্য সনদে ইবনু কাসীর বলেছেনঃ সুফিয়ান (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু আবিস সুত্রে উক্ত হাদীসটি আমার কাছে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩০ | 5030 | ۵۰۳۰

পরিচ্ছদঃ ২১৩১. পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন। আবূ বকর তনয়া “আয়েশা ও আসমা (রা) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ও আবূ বকরের জন্য (মদীনায় হিজরতের সময়) পথের খাবার প্রস্তুত করে দিয়েছিলাম।
৫০৩০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা কুরবানীর গোশত মদিনা পর্যন্ত সফরের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতাম। মুহাম্মদ (রহঃ) ইবনু উয়ায়না থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু জুরায়য বলেন, আমি আতাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ জাবির (রাঃ) কি এ কথা শুনেছেন যে, এমন কি আমরা মদিনা পর্যন্ত এলাম। তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩১ | 5031 | ۵۰۳۱

পরিচ্ছদঃ ২১৩২. হায়স প্রসঙ্গে
৫০৩১। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহাকে বললেনঃ তোমাদের লোকদের মধ্য থেকে একটি ছেলে খুজে আন, যে আমার খিদমত করবে। আবূ তালহা আমাকেই তাঁর সাওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিয়ে আসলেন। তাই আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করতে থাকলাম। যখনই তিনি কোন মনযিলে অবতরণ করতেন আমি তাকে প্রায়ই বলতে শুনতাম, আয় আল্লাহ! আমি তোমার কাছে, অস্বস্থি দুশ্চিন্তা, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋনের ভার এবং মানুষের আধিপত্য থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি সর্বদা তার খিদমতে নিয়োজিত ছিলাম। এমতাবস্থায় আমরা খায়বার থেকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তিনি (রাসুল) গনীমত হিসাবে প্রাপ্ত সফিয়্যা বিনত হুয়ায়কে সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন।

আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি তার সাওয়ারীর পেছনের দিকে তার আবা বা চাদর দিয়ে ঘিরে সেখানে তার পিছনে তাকে সাওয়ার করলেন। এভাবে যখন আমরা সাহবা নামক স্থানে উপস্থিত হই, তখন তিনি চামড়ার দস্তরখানে হায়স তৈরী করলেন। তারপর তিনি আমাকে পাঠালেন। আমি লোকজনকে দাওয়াত করলাম। (তারা এসে) আহার করলো। এই ছিল তার সঙ্গে তার বাসর যাপন। তারপর তিনি এগিয়ে চললেন। ওহোদ পাহাড় দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বললেনঃ এ পাহাড়টি আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তারপর যখন মদিনা তার দৃষ্টিগোচর হল, তখন তিনি বললেনঃ আয় আল্লাহ! আমি এর দু পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকাকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা করছি, যেভাবে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কাকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ইয়া আল্লাহ! এর অধিবাসীদের মুদ ও সা (দুটি মাপ যন্ত্র) এর মধ্যে তুমি বরকত দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩২ | 5032 | ۵۰۳۲

পরিচ্ছদঃ ২১৩৩. রৌপ্য খচিত পাত্রে আহার করা
৫০৩২। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার তারা হুযায়ফা (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পানি পান করতে চাইলে এক অগ্নি উপাসক তাকে পানি এনে দিল। সে যখনই পাত্রটি তার হাতে রাখলো, তিনি সেটা ছুড়ে মারলেন এবং বললেন, আমি যদি একবার বা দু’বারের অধিক তাকে নিষেধ না করতাম, তাহলেও হতো। অর্থাৎ তিনি যেন বলতে চান, তা হলেও আমি এরুপ করতাম না। কিন্তু আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা রেশম বা রেশম জাত কাপড় পরিধান করো না এবং সোনা ও রুপার পাত্রে পান করো না এবং এগুলোর বাসনে আহার করো না। কেননা তিনি এগুলো কাফিরদের জন্য আর পরকালে তোমাদের জন্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৩ | 5033 | ۵۰۳۳

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৩। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারী মুমিনের দৃষ্টান্ত নারাঙ্গির ন্যায়, যার ঘ্রানও উত্তম স্বাদও উত্তম। যে মুমিন কুরআন পাঠ করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের ন্যায়, যার কোন ঘ্রাণ নেই তবে এর স্বাদ আছে। আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে তার দৃটান্ত রায়হানার ন্যায় যার ঘ্রাণ আছে তবে স্বাদ ভিজা আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে না তার দৃষ্টান্ত হানযালা ফলের ন্যায়, যার সুঘ্রানও নাই, স্বাদও তিতা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৪ | 5034 | ۵۰۳٤

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত খাদ্যের মধ্যে সারীদের, যেমন মর্যাদা রয়েছে, তেমনি নারীদের মধ্যে আয়িশার (রাঃ) মর্যাদা রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৫ | 5035 | ۵۰۳۵

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৫। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সফর হলো আযাবের একটা টুকরা, যা তোমাদের সফরকারীকে নিদ্রা ও আহার থেকে বিরত রাখে। তাই তোমাদের কেউ যখন তার প্রয়োজন পূরণ করে তখন সে যেন অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ফিরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৬ | 5036 | ۵۰۳٦

পরিচ্ছদঃ ২১৩৫. সালন প্রসঙ্গে
৫০৩৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ বারীরার ঘটনায় শরীয়তের তিনটি বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। আয়িশা (রাঃ) তাকে ক্রয় করে মুক্ত করতে চাইলে তার মালিকেরা ওলা, (বিক্রয় এ শর্তে করবে যে,) ওায়ালা (উররাধিকার) আমাদের থাকবে। আয়িশা (রাঃ) বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্মুক্ষে উল্লেখ করলে বললেনঃ তুমি চাইলে তাদের জন্য ওলীর শর্ত মেনে নাও। কারন, প্রকৃকতপক্ষে ওলীর অধিকার লাভ করবে মুক্তিদাতা। তাকে আযাদ করে এখতিয়ার দেওয়া হলো চাইলে পুর্ব স্বামীর সংসারে থাকতে কিংবা চাইলে তার থেকে হতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আয়িশার গৃহে প্রবেশ করলেন। যে সময় চুলার উপর (গোশতের) ডেগচি বলকাচ্ছিল। তিনি সকালের খাবার আনতে বললে তার কাছে রুটি ও ঘরের কিছু তরকারী পেশ করা হলো। তিনি বললেনঃ আমি কি গোশত দেখছি না? তারা বললেনঃ হ্যাঁ (গোশত রয়েছে) ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিন্তু তা ঐ গোশত যা বারীরাকে সদকা করা হয়েছিল। এরপর সে তা আমাদের হাদিয়া দিয়েছে। তিনি বললেনঃ এটা তার জন্য সদকা, কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৭ | 5037 | ۵۰۳۷

পরিচ্ছদঃ ২১৩৬. হালুয়া ও মধু
৫০৩৭। ইসহাক ইবন ইবরাহীম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হালুয়া ও মধু পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৮ | 5038 | ۵۰۳۸

পরিচ্ছদঃ ২১৩৬. হালুয়া ও মধু
৫০৩৮। আবদুর রহমান ইবনু শায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উদর পূর্তির জন্যই যা পেতাম তাতে সন্তুষ্ট হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সর্বদা লেগে থাকতাম। সে সময় রুটি খেতে পেতাম না। রেশমী কাপড় পরিধান করতাম না কোন চাকর-চাকরানাও আমার খিদমতে নিয়োজিত থাকত না। আমি পাথরের সাথে পেট লাগিয়ে রাখতাম। আয়াত জানাসত্তেও কোন ব্যাক্তিকে তা পাঠ করার জনা বলতাম যাতে সে আমাকে ঘরে নিয়ে যায় এবং আহার করায়। মিসকীনদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ব্যাক্তি ছিলেন জাফর ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)। তিনি আমাদের নিয়ে খেতেন এবং ঘরে যা থাকতো তাই আমাদের খাওয়াতেন। এমনকি তিনি আমাদের কাচের পাত্রটিও বের কসে আনতেন, যাতে ঘি থাকতো না। আমরা সেটাই ফেড়ে ফেলতাম এবং এর গায়ে যা লেগে থাকতো তাই চেটে খেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৯ | 5039 | ۵۰۳۹

পরিচ্ছদঃ ২১৩৭. কদূ প্রসঙ্গে
৫০৩৯। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে আসলেন। (আহার কালে) তাঁর সামনে কদু উপস্থিত করা হলে তিনি (বেছে বেছে) কদু খেতে লাগলেন। সে দিন থেকে আমিও কদু খেতে ভালবাসি, যেদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কদু খেতে দেখলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪০ | 5040 | ۵۰٤۰

পরিচ্ছদঃ ২১৩৮. ভাইদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা
৫০৪০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ শুআয়ব নামক আনসার গোত্রের এক ব্যাক্তির এক কসাই গোলাম ছিল। সে তাকে বললো আমার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত কর, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করতে চাই। পাঁচজনের মধ্যে তিনি হবেন একজন। তারপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করল। তিনি ছিলেন পাঁচ জনের অন্যতম। তখন এক ব্যাক্তি তাদের পিছে পিছে আসতে লাগল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তো আমাকে আমাদের পাঁচ জনের পঞ্চম ব্যাক্তি হিসাবে দাওয়াত দিয়েছ। এ লোকটা আমাদের পিছে পিছে এসেছে। তুমি ইচ্ছা করলে তাকে অনুমতি দিতে পার আর ইচ্ছা করলে বাদও দিতে পার। সে বললো আমি বরং তাকে অনুমতি দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪১ | 5041 | ۵۰٤۱

পরিচ্ছদঃ ২১৩৯. কাউকে খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে নিজে অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া
৫০৪১। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (তখন) ছোট ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে চলাফেরা করতাম। একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক গোলামের কাছে গেলেন সে ছিল দর্জি। সে তার সামনে একটি পাত্র হাযির করল যাতে খাবার ছিল। আর তাতে কদুও ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেছে বেছে কদু খেতে লাগলেন। এ দেখে আমি কদূর টুকরাগুলো তার সামনে জমা করতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ গোলাম তার কাজে ব্যস্ত হল। আনাস (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যেদিন এরূপ করতে দেখলাম তারপর থেকে আমিও কদু খাওয়া পছন্দ করতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪২ | 5042 | ۵۰٤۲

পরিচ্ছদঃ ২১৪০. শুরুয়া প্রসঙ্গে
৫০৪২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক দর্জি কিছু খাবার প্রস্তুত করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলো। আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে গেলাম। সে যবের রুটি আর কিছু শুরুয়া, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল, পরিবেশন করল। আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার চারদিক থেকে কদু বেচে বেছে খাচ্ছেন। সে দিনের পর থেকে আমিও কদু পছন্দ করতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৩ | 5043 | ۵۰٤۳

পরিচ্ছদঃ ২১৪১. শুকনা গোশত প্রসঙ্গে
৫০৪৩। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু শুরুয়া উপস্থিত করা হল, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল। আমি তাকে কদূ বেছে বেছে খেতে দেখলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৪ | 5044 | ۵۰٤٤

পরিচ্ছদঃ ২১৪১. শুকনা গোশত প্রসঙ্গে
৫০৪৪। কাবীসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (তিন দিনের বেশী কুরবানীর গোশত রাখার) নিষেধাজ্ঞা কেবল সে বছরেরই জন্যই ছিল যে বছর লোক দুর্ভিক্ষে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন ধনীরা যেন গরীবদের খাওয়ায়। নইলে আমরা তো পরবর্তী সময় পায়াগুলো পনের দিন রেখে দিতাম। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার উপর্যপরি তিন দিন পর্যন্ত সালন-সহ যবের রুটি পেট ভরে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৫ | 5045 | ۵۰٤۵

পরিচ্ছদঃ ২১৪২. একই দস্তরখানে সাথীকে কিছু এগিয়ে দেওয়া বা তার কাছ থেকে কিছু নেওয়া। ইব্‌ন মুবারক বলেনঃ একজন অপরজনকে কিছু দেওয়ায় কোন দোষ নেই। তবে এক দস্তরখান থেকে অন্য দস্তরখানে দিবে না
৫০৪৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একজন দর্জি কিছু খাবার রান্না করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করল। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি সে দাওয়াতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে গেলাম। লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যবের রুটি এবং কিছু শুরুয়া, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল, পেশ করল। আনাস (রাঃ) বলেন আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার চারপাশ থেকে কদু খুঁজে খাচ্ছেন। সেদিন থেকে আমি কদু ভালবাসতে লাগলাম। সুলামা (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ আমি কদুর টুকরাগুলো তাঁর সামনে একত্রিত করে দিতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৬ | 5046 | ۵۰٤٦

পরিচ্ছদঃ ২১৪৩. তাজা খেজুর ও কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৫০৪৬। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফর ইবন আবূ তালিব থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাজা খেজুর কাঁকুড়ের সাথে মিশিয়ে খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৭ | 5047 | ۵۰٤۷

পরিচ্ছদঃ ২১৪৪. রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৪৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার আমি সাত দিন পর্যন্ত আবূ হুরায়রার মেহমান ছিলাম। (আমি লক্ষ্য করলাম) তিনি, তার স্ত্রী ও খাদেম পালাক্রমে রাতকে তিনভাগে বিভক্ত করে নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আরেক জনকে জাগিয়ে দিলেন। আর আমি তাকে এ কথাও বলতে শুনেছি যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদের মাঝে কিছু খেজুর বন্টন করলেন। আমি ভাগে সাতটি পেলাম, তার মধ্যে একটি ছিল রদ্দি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৮ | 5048 | ۵۰٤۸

পরিচ্ছদঃ ২১৪৪. রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৪৮। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে কিছু খেজুর বণ্টন করলেন। আমি ভাগে পেলাম পাঁচটি। চারটি খেজুর (উৎকৃষ্ট) আর একটি রদ্দি। এই রদ্দি খেজুরটই আমার দাতে খুব শক্তবোধ হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৯ | 5049 | ۵۰٤۹

পরিচ্ছদঃ ২১৪৫. তাজা ও শুকনা খেজুর প্রসঙ্গে। আর মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি তোমার দিকে খেজুন বৃক্ষের কান্ডে নাড়া দাও, তা তোমার জন্য সুপক্ক তাজা খেজুর ঝরাবে। মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ (র)… আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ইন্তিকাল করেন, তখন আমরা দুই কালো বস্তু দ্বারা পরিতৃপ্ত হতাম- খেজুর এবং পানি দ্বারা।
৫০৪৯। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনায় এক ইয়াহুদী ছিল। সে আমাকে কর্জ দিত, আমার খেজুর পাড়ার মিয়াদ পর্যন্ত। রামা নামক স্থানের পথের ধারে জাবির (রাঃ) এর এক খন্ড জমি ছিল। আমি কর্জ পরিশোধে এক বছর বিলম্ব করলাম। এরপর খেজুর পাড়ার মৌসুমে ইয়াহুদী আমার কাছে আসলো, আমি তখনো খেজুর পাড়তে পারিনি। আমি তার কাছে আগামী বছর পর্যন্ত অবকাশ চাইলাম। সে অস্বীকার করছেন। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানোান হলো। তিনি সাহাবীদের বললেনঃ চলো জাবিরের জন্য ইয়াহুদী থেকে অবকাশ নেই। তারপর তারা আমার বাগানে আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহুদীর সাথে এ নিয়ে কথাবার্তা বললেন। সে বললোঃ হে আবূল কাসিম। আমি তাকে আর অবকাশ দেব না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কথা শুনে উঠলেন এবং বাগানটি প্রদক্ষিন করে তার কাছে এসে আবার আলাপ করলেন। সে এবারও অস্বীকার করল।

এরপর আমি উঠে পিঠে সামান্য কিছু তাজা খেজুর নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে রাখলাম। তিনি কিছু খেলেন। তারপর বললেনঃ হে জাবির! তোমার ছাপড়াটা কোথায়? আমি তাকে জানিয়ে দিলাম। তিনি বললেনঃ সেখানে আমার জন্য বিছানা দাও। আমি বিছানা বিছিয়ে দিলে তিনি এতে ঢুকে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে জাগ্রত হলে আমি তার কাছে আরেক মুষ্টি খেজুর নিয়ে আসলাম। তিনি তা থেকে খেলেন। তারপর উঠে আবার ইয়াহুদীর সাথে কথা বললেন। সে অস্বীকার করলো। তখন তিনি দ্বিতীয়বার খেজুর বাগানে গেলেন এবং বললেনঃ হে জাবির তুমি খেজুর কাটতে থাক এবং কর্জ পরিশেধি কর। এই বলে, তিনি খেজুর পাড়ার স্থানে বললেনঃ আমি খেজুর পেড়ে ইয়াহুদীর পাওনা শোধ করলাম। এরপর আরও সে পরিমাণ খেজুর উদ্বৃত্ত রইল। আমি বেরিয়ে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ সুসংবাদ দিলাম। তিনি বললেনঃ তুমি সাক্ষ্য থাক যে, আমি আল্লাহর রাসুল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫০ | 5050 | ۵۰۵۰

পরিচ্ছদঃ ২১৪৬. খেজুর গাছের মাথী খাওয়া প্রসঙ্গে
৫০৫০। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় তাঁর কাছে কিছু খেজুর বৃক্ষের মাথী আনা হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমন একটি বৃক্ষ আছে যার বরকত মুসলমানের বরকতের ন্যায়। আমি ভাবলাম তিনি খেজুর বৃক্ষ উদ্দেশ্য করেছেন। আমি বলতে চাইলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! সেটি কি খেজুর বৃক্ষ? কিন্তু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম আমি উপস্থিত দশ জনের দশম ব্যাক্তি এবং সকলের ছোট, তাই আমি চুপ রইলাম। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেটা খেজুর গাছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫১ | 5051 | ۵۰۵۱

পরিচ্ছদঃ ২১৪৭. আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৫১। জুম্‌আ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি প্রত্যহ সকালে সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন তাকে কোন বিষ ও যাদু ক্ষতি করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫২ | 5052 | ۵۰۵۲

পরিচ্ছদঃ ২১৪৮. একসঙ্গে মিলিয়ে একাধিক খেজুর খাওয়া
৫০৫২। আদম (রহঃ) … জাবাল ইবনু সুহায়ম (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবায়র এর আমলে আমাদের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল। তখন তিনি খাদ্য হিসাবে আমাদের কিছু খেজুর দিলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় আমরা খাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ একত্রে একাধিক খেজুর খেয়ো না। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একত্রে একাধিক খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, তবে কেউ যদি তার ভাইকে অনুমতি দেয় তাহলে এতে কোন দোষ নেই। শুবা বলেন, অনুমতির বিষয়টি ইবনু উমরের নিজের কথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৩ | 5053 | ۵۰۵۳

পরিচ্ছদঃ ২১৪৯. কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৫০৫৩। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাকুড় (ক্ষীরা বা শসা জাতীয় ফল) এর সাথে খেজুর খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৪ | 5054 | ۵۰۵٤

পরিচ্ছদঃ ২১৫০. খেজুর বৃক্ষের বরকত
৫০৫৪। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বৃক্ষসমূহের মধ্যে একটি বৃক্ষ আছে, যা (বরকত ও উপকারিতায়) মুসলমানের সদৃশ আর তা হলো- খেজুর গাছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৫ | 5055 | ۵۰۵۵

পরিচ্ছদঃ ২১৫১. একই সঙ্গে দু’রকম খাদ্য বা সু-স্বাদের খাদ্য খাওয়া
৫০৫৫। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাঁকুড়ের সাথে খেজুর খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৬ | 5056 | ۵۰۵٦

পরিচ্ছদঃ ২১৫২. দশজন দশজন করে মেহমান ভিতরে ডাকা এবং দশজন দশজন করে আহারে বসা
৫০৫৬। সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার মা উম্মে সুলায়ম (রাঃ) এক মুদ যব নিয়ে তা পিষলেন এবং এ দিয়ে ‘খতীফা’ (দুধ ও আটা মিশ্রিত) তৈরী করলেন এবং ঘি এর পাত্র নিংড়িয়ে দিলেন। তারপর তিনি আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠালেন। তিনি সাহাবাদের মাঝে ছিলেন। এ সময় আমি তার কাছে এসে তাকে দাওয়াত করলাম। তিনি বললেনঃ আমার সঙ্গে যারা আছে? আমি বাড়ীতে এসে বললাম। সে জিজ্ঞেস করছেন আমার সঙ্গে যারা আছে? তারপর আবূ তালহা (রাঃ) তার কাছে গিয়ে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এতো অতি সামান্য খাবার যা উম্মে সুলায়ম তৈরী করেছে। এরপর তিনি আসলেন। তার কাছে সেগুলো আনা হল। তিনি বললেনঃ দশ জনকে আমার কাছে প্রবেশ করতে দাও। তারা এসে তৃপ্তি সহকারে খেলেন। তিনি পুনরায় বললেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে প্রবেশ করতে দাও। তারা এসে পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। তিনি আবার বলেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে আসতে দাও। এভাবে তিনি শেষ সংখ্যা পর্যন্ত উল্লেখ করলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেলেন এবং চলে গেলেন। আমি দেখতে লাগলাম, তা থেকে কিছু কমেছে কিনা? অর্থাৎ কিছুমাত্র কমেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৭ | 5057 | ۵۰۵۷

পরিচ্ছদঃ ২১৫৩. রসূন ও (দুর্গন্ধ যুক্ত) তরকারী মাকরূহ হওয়া প্রসঙ্গে। এ ব্যাপারে ইব্‌ন উমার (রা) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে
৫০৫৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদূল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল আপনি রসুনের ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে কী শুনেছেন? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি তা খাবে সে যেন আমাদের মসজিদের কাছেও না আসে (এ উক্তি)।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৮ | 5058 | ۵۰۵۸

পরিচ্ছদঃ ২১৫৩. রসূন ও (দুর্গন্ধ যুক্ত) তরকারী মাকরূহ হওয়া প্রসঙ্গে। এ ব্যাপারে ইব্‌ন উমার (রা) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে
৫০৫৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) মনে করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রসূন বা পেঁয়াজ খাবে সে যেন আমাদের থেকে দুরে থাকে। অথবা তিনি বলেছেনঃ সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দুরে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৯ | 5059 | ۵۰۵۹

পরিচ্ছদঃ ২১৫৪. কাবাছ-পিলু গাছের পাতা প্রসঙ্গে
৫০৫৯। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মক্কার যাহরান নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম এবং পিলু ফল পাড়ছিলাম। তিনি বললেনঃ কালোটা নিও। কেননা, সেটা সুস্বাদু। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলোঃ আপনি কি বকরী চরিয়েছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এমন নাবী নেই যিনি বকরী চরান নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬০ | 5060 | ۵۰٦۰

পরিচ্ছদঃ ২১৫৫. আহারের পর কুলি করা
৫০৬০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নূমান (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে রওয়ানা হলাম। সাহবা নামক স্থানে পৌছলে তিনি খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছু আনা হল না। আমরা তা-ই খেলাম। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য উঠে কুলি করলেন। আমরাও কুলি করলাম। ইয়াহইয়া বলেনঃ আমি বুশায়রকে সুওয়ায়েদ সুত্রে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বরের দিকে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন সাহবা নামক স্থানে পৌহুলাম, ইয়াহইয়া বলেন, এ স্থানটি খায়বর থেকে এক মনযিলের পথে, তিনি খাবার নিয়ে আসতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া অন্য কিছু আনা হলো না। আমরা তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করে খেয়ে ফেললাম। তিনি পানি আনতে বললেন এবং কুলি করলেন, আমরাও কুলি করলাম। এরপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬১ | 5061 | ۵۰٦۱

পরিচ্ছদঃ ২১৫৬. রুমাল দিয়ে মুছে ফেলার আগে আঙ্গুল চেটে ও চুষে খাওয়া
৫০৬১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন আহার করে সে যেন তার হাত না মোছে, যতক্ষন না সে তা নিজে চেটে খায় কিংবা অন্যকে দিয়ে চাটিয়ে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬২ | 5062 | ۵۰٦۲

পরিচ্ছদঃ ২১৫৭. রুমাল প্রসঙ্গে
৫০৬২। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আগুনে স্পর্শ বস্তু খাওয়ার পর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা সম্বন্ধে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ না, উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হবে না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তো আমরা এরুপ খাদ্য কমই পেতাম। যখন আমরা তা পেতাম তখন আমাদের তো হাতের তার, হাত ও পা ছাড়া কোন রুমাল ছিল না (আমরা এগুলোতে মুছে ফেলতাম)। তারপর (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই আমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৩ | 5063 | ۵۰٦۳

পরিচ্ছদঃ ২১৫৮. আহারের পর কি পড়বে?
৫০৬৩। আবূ নূআয়ম (রহঃ) … আবূ উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তর খান তুলে নেয়া হল। তিনি বলতেনঃ পবিত্র বরকতময় অনেক অনেক প্রশংসা আল্লাহর জন্য। হে আমাদের রব, এ থেকে কখনো বিমুখ হতে পারবো না, বিদায় নিতে পারবো না এবং এ থেকে অমুখাপেক্ষী হতেও পারবো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৪ | 5064 | ۵۰٦٤

পরিচ্ছদঃ ২১৫৮. আহারের পর কি পড়বে?
৫০৬৪। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আহার শেষ করতেন, রাবী আরো বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখান যখন তুলে নেয়া হতো তখন তিনি বলতেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি যথেষ্ট খাইয়েছেন এবং পরিতৃপ্ত করেছেন। তার থেকে বিমুখ হওয়া যায় না এবং তার প্রতি অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করা যায় না। রাবী কখনো বলেনঃ হে আমাদের রব, তোমার জন্যই সকল প্রশংসা, এর থেকে বিমুখ হওয়া যাবে না, একে পরিত্যাগ করাও যাবে না এবং এর থেকে অমুখাপেক্ষীও হওয়া যাবে না; হে, আমাদের রব।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৫ | 5065 | ۵۰٦۵

পরিচ্ছদঃ ২১৫৯. খাদেমের সাথে আহার করা
৫০৬৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো খাদেম যখন তার খাবার নিয়ে আসে তখন তাকে সাথে বসিয়ে না খাওয়ালেও সে যেন তাকে এক লুকমা বা দু’ লুকমা খাবার দেয়, কেননা সে তার গরম ও ক্লেশ সহ্য করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৬ | 5066 | ۵۰٦٦

পরিচ্ছদঃ ২১৬১. কাউকে আহারের দাওয়াত দিলে একথা বলা যে, এ ব্যক্তি আমার সঙ্গের। আনাস (রাঃ) বলেন, তুমি কোন মুসলমানের কাছে গেলে তার আহার থেকে খাও এবং তার পানীয় থেকে পান কর।
بَابُ الطَّاعِمُ الشَّاكِرُ مِثْلُ الصَّائِمِ الصَّابِرِ
فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

২১৬০. পরিচ্ছেদঃ কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল সিয়াম পালনকারীর মতো। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদীস বর্ণিত আছে।

৫০৬৬। আবদুল্লাহ ইবনু আবুল আসওয়াদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনসার গোত্রের এক ব্যাক্তি যার কুনিয়াত (ডাক নাম) ছিল আবূ শুআয়ব তার একটি কসাই গোলাম ছিল। সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো, তখন তিনি সাহাবীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। তখন সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারায় ধরন লক্ষ্য করলো, লোকটি তার কসাই গোলামের কাছে গিয়ে বললঃ আমার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত কর যা পাঁচজনের জন্য যথেষ্ট হয়। আমি রাতে পাঁচ জনকে দাওয়াত করব, যার পঞ্চম ব্যাক্তি হবেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। গোলামটি তার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত করলো। লোকটি তার কাছে এসে তাকে দাওয়াত করলো। এক ব্যাক্তি তাদের সঙ্গে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে শুআয়ব! এক ব্যাক্তি আমাদের সঙ্গে এসেছে। তুমি চাইলে তাকে অনুমতি দিতে পার, আর চাইলে তাকে বিদায়ও করতে পার। সে বললঃ না। আমি তাকে অনুমতি দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৭ | 5067 | ۵۰٦۷

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৭। আবূল ইয়ামান ও লায়স (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ হাতে বকরীর স্কন্ধ থেকে কেটে খেতে দেথেছেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর প্রতি আহবান করা হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং সে ছুরিটিও যা দিয়ে কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৮ | 5068 | ۵۰٦۸

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি রাতের খাবার পরিবেশিত হয় এবং সালাত (নামায/নামাজ) এর আযান দেয়া হয়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নিবে। অন্য সনদে আইয়্যুব, নাফি (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকেও অনুরুপ হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। আইয়্যুব নাফি (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে আরো বর্ণনা করেছেন যে, তিনি একবার রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, এ অবস্থায় ইমামের কিরআতও শুনছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৯ | 5069 | ۵۰٦۹

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৯। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর ইকামাত দেয়া হয় এবং রাতের খাবারও উপস্থিত হয়ে যায়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭০ | 5070 | ۵۰۷۰

পরিচ্ছদঃ ২১৬৩. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ খাওয়া শেষ হলে তোমরা চলে যাবে
৫০৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি পর্দা (আয়াত নাযিল হওয়া) সম্পর্কে সর্বাধিক অবহিত। এ ব্যাপারে উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করতেন। যায়নাব বিনত জাহশের সঙ্গে নববিবাহিত হিসেবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভোর হল। তিনি মদিনায় তাকে বিবাহ করেছিলেন। ওঠার পর তিনি লোকজনকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে ছিলেন। (আহারের পর) অনেক লোক চলে যাওয়ার পরও কিছু লোক তাঁর সাথে বসে থাকলো। অবশেষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে গেলেন আমিও তার সাথে সাথে গেলাম। তিনি আয়িশা (রাঃ) এর হুজরার দরজায় পৌছলেন। তারপর ভাবলেন লোকেরা হয়তো চলে গেছে। আমিও তার সাথে ফিরে আসলাম। (এসে দেখলাম) তারা স্বস্থানে বসেই রয়েছে। তিনি পুনরায় ফিরে গেলেন। আমিও তার সঙ্গে পুনয়রায় ফিরে গেলাম। এমন কি তিনি আয়িশা (রাঃ) এর গৃহের দরজা পর্যন্ত পৌছে আবার ফিরে আসলেন। আমিও তার সঙ্গে ফিরে আসলাম। এবার (দেখলাম) তারা উঠে গেছে। তারপর তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন পর্দার আয়াত নাযিল হলো।

 আকীকা অধ্যায় (৫০৭১-৫০৭৯)

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭১ | 5071 | ۵۰۷۱

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭১। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে আমি তাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইবরাহীম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দু আ করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। সে ছিল আবূ মূসার বড় সন্তান।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭২ | 5072 | ۵۰۷۲

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাহনীক করার জন্য এক শিশুকে আনা হলো, শিশুটি তার কোলে পেশাব করে দিল তিনি এতে পানি ঢেলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৩ | 5073 | ۵۰۷۳

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৩। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে মক্কায় গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেনঃ গর্ভকাল পূর্ণ হওয়া অবস্থায় আমি বেরিয়ে মদিনায় আসলাম এবং কুবায় অবতরণ করলাম। কুবাতেই আমি তাকে প্রসব করি। তারপর তাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে তার কোলে রাখলাম। তিনি একটি খেজুর আনতে বললেন। তা চিবিয়ে তিনি তার মুখে দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই লালাই সর্ব প্রথম তার পেটে প্রবেশ করল। তারপর তিনি খেজুর চিবিয়ে তাহনীক করলেন এবং তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। (হিজরতের পরে) ইসলামে সেই ছিল প্রথম জন্মগ্রহনকারী। তাই তার জন্য মুসলিমরা অতন্তে খুশী হয়েছিলেন কারন, তাদের বলা হতো ইয়াহুদীরা তোমাদের যাদু করেছে তাই তোমাদের সন্তান হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৪ | 5074 | ۵۰۷٤

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৪। মাতার ইবনু ফাযল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ তালহার এক ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লো। আবূ তালহা (রাঃ) বাইরে গেলেন তখন ছেলেটি মারা গেল। আবূ তালহা (রাঃ) ফিরে এসে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কি করছে? উম্মে সুলায়ম বললেনঃ সে আগের চাইতে শান্ত। তারপর তাকে রাতের খাবার দিলেন। তিনি আহার করলেন। তারপর উম্মে সুলায়মের সাথে সহবাস করলেন। সহবাস শেষে উম্মে সুলায়ম বললেনঃ ছেলেটিকে দাফন করে আস। সকাল হলে আবূ তালহা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে এ ঘটনা বললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ গত রাতে তুমি কি স্ত্রীর সঙ্গে রয়েছ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! তাদের জন্য তুমি বরকত দান কর।

কিছু দিন পর উম্মে সুলায়ম একটি সন্তান প্রসব করলো (রাবী বলেনঃ) আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, তাকে তুমি দেখাশোনা কর যতক্ষণ না আমি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাই। তারপর তিনি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। উম্মে সুলায়ম সাথে কিছু খেজুর দিয়ে দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (কোলে) নিলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন তার সাথে কিছু আছে? তারা বললেন হ্যাঁ, আছে। তিনি তা নিয়ে চর্বণ করলেন তারপর মুখ থেকে বের করে বাচ্চাটির মুখে দিলেন। তিনি এর দ্বারাই তার তাহনীক করলেন এবং তার নাম রাখলেন আবদুল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৫ | 5075 | ۵۰۷۵

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৫। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উক্ত হাদীসটই বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৬ | 5076 | ۵۰۷٦

পরিচ্ছদঃ ২১৬৫. আকীকার মাধ্যমে শিশুর অশুচি দূর করা
৫০৭৬। আবূ নুমান (রহঃ) … সালমান ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সন্তানের সাথে আকীকা সম্পর্কিত। সালমান ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, সন্তানের সাথে আকীকা সম্পর্কিত। তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত (অর্থাৎ আকীকার জন্তু যবাহ) কর এবং তার অশুচি (চুল, নখ ইত্যাদি) দূর করে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৭ | 5077 | ۵۰۷۷

পরিচ্ছদঃ ২১৬৫. আকীকার মাধ্যমে শিশুর অশুচি দূর করা
৫০৭৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … হাবীব ইবনু শহীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু সিরীন আমাকে আদেশ দিলেন, আমি যেন হাসানকে জিজ্ঞাসা করি তিনি আকীকার হাদীসটি কার থেকে শুনেছেন? আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৮ | 5078 | ۵۰۷۸

পরিচ্ছদঃ ২১৬৬. ফারা’ প্রসঙ্গে
৫০৭৮। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (ইসলামে) ফারা বা আতীরা নেই। ফারা হল উটের সে প্রথম বাচ্চা, যা তারা তাদের দেব-দেবীর নামে যবাহ করত। আর আতীরা হলো রজবে যে জন্তু যবাহ দিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৯ | 5079 | ۵۰۷۹

পরিচ্ছদঃ ২১৬৭. আতীরা
৫০৭৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (ইসলামে) ফারা ও আতীরা নেই। ফারা হল উটের প্রথম বাচ্চা যা তারা তাদের দেব-দেবীর নামে যবাহ দিত। আর আতীরা যা রজবে যবাহ করতো।

 

যবাহ, শিকার ও বিসমিল্লাহ বলা অধ্যায় (৫০৮০-৫১৪৬)

বুখারি হাদিস নং ৫০৮০-৫০৭৯

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত…. সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না; বরং শুধু আমাকেই ভয় করো (মায়িদাহঃ ৩) পর্যন্ত এবং আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তোমাদিগেকে পরীক্ষা করবেন কিছু শিকার সম্বন্ধে…… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৯৪) ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, الْعُقُودُ অঙ্গীকারসমূহ যা কিছু হালাল করা হয় বা হারা করা হয়। إِلاَّ مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ শুকুর। يَجْرِمَنَّكُمْ তোমাদেরকে যেন প্ররোচিত করে। شَنَآنُ শত্রুতা। الْمُنْخَنِقَةُ যে প্রাণীটি শ্বাসরুদ্ধ করার কারণে মারা গিয়েছে। الْمَوْقُوذَةُ যে প্রাণীকে লাঠির দ্বারা আঘাত করার দরুন তার দেহ থেতলিয়ে গিয়ে মারা যায়। الْمُتَرَدِّيَةُ যে প্রাণী পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে মারা গিয়েছে। النَّطِيحَةُ যে বকরী শিং এর গুতায় মারা গিয়েছে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, এর মধ্যে জন্তুটির তুমি লেজ বা চোখ নড়াচড়া করা অবস্থায় পাবে। সেটাকে যবাহ করবে এবং আহার করবে।
৫০৮০। আবূ নুআইম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের ফলকের আঘাতের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তীরের ধারাল অংশের দ্বারা যেটি নিহত হয়েছে সেটি খাও। আর ফলকের বাঁটের আঘাতে যেটি নিহত হয়েছে সেটি অকীয- (অর্থাৎ থেতলিয়ে যাওয়া মৃতের অন্তর্ভুক্ত)। আমি তাকে কুকুরের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে তিনি বললেনঃ যে শিকারকে কুকুর তোমার জন্য ধরে রাখে সেটি খাও। কেননা, কুকুরের ঘায়েল করা যবাহর হুকুম রাখে। তবে তুমি যদি তোমার কুকুর বা কুকুরগুলোর সঙ্গে অন্য কুকুর পাও, এবং তুমি আশংকা কর যে, অন্য কুকুরটিও তোমার কুকুরের শিকার পাকড়াও করেছে এবং হত্যা করেছে, তা হলে তা খেও না। কেননা, তুমি তো কেবল নিজের কুকুর ছাড়াকালে বিসমিল্লাহ বলেছ। অন্যের কুকুরের ক্ষেত্রে তা বলনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮১ | 5081 | ۵۰۸۱

পরিচ্ছদঃ ২১৬৮. তীর লব্ধ শিকার। বন্দুকের গুলিতে শিকার সম্বন্ধে ইব্‌ন উমর (রা) বলেছেনঃ এটি মাওকুযাহ বা থেতলিয়ে যাওয়া শিকারের অন্তর্ভূক্ত। সালিম, কাসিম, মুজাহিদ, ইব্‌রাহীম, আতা ও হাসান বসীর (র) একে মাকরূহ মনে করেন। হাসানের মতে গ্রাম এলাকা ও শহর এলাকায় বন্দুক দিয়ে শিকার করা মাকরূহ। থবে অন্যত্র শিকার করতে কোন দোষ নেই।
৫০৮১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তীরের ধারাল অংশ দ্বারা আঘাত করে থাক তাহলে খাও আর যদি ফলকের আঘাত লেগে থাকে এবং শিকারটি মারা যায়, তাহলে খেওনা। কেননা, সেটি, ওয়াকীয বা থেতলিয়ে মরার অন্তর্ভুক্ত। আমি বললামঃ আমি তো শিকারের জন্য কুকুর ছেড়ে দেই। তিনি উত্তর দিলেনঃ যদি তোমার কুকুরকে তুমি বিসমিল্লাহ পড়ে ছেড়ে থাক, তা হলে খাও। আমি আবার বললামঃ যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে? তিনি বললেনঃ তা হলে খেও না। কেননা, সে তা তোমার জন্য ধরে রাখেনি বরং সে ধরেছে নিজের জন্যই। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরকে পাঠাবার পর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুরকেও দেখতে পাই, তখন? তিনি বললেনঃ তাহলে খেওনা। কেননা, তুমি তো কেবল তোমার কুকুর ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলেছ, অন্য কুকুরের ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ বলনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮২ | 5082 | ۵۰۸۲

পরিচ্ছদঃ ২১৬৯. তীরের ফলকে আঘাত প্রাপ্ত শিকার
৫০৮২। কাবীসা (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে শিকারে পাঠিয়ে থাকি। তিনি বললেনঃ কুকুরগুলো তোমার জন্য যেটি ধরে রাখে সেটি খাও। আমি বললামঃ যদি ওরা হত্যা করে ফেলে? তিনি বললেনঃ যদি ওরা হত্যাও করে ফেলে। আমি বললাম আমরা তো ফলকের সাহায্যেও শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ সেটি খাও যেটি তীরে যখম করেছে। আর যেটি তীরের পার্শ্বের আঘাতে মারা গেছে সেটি খেওনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৩ | 5083 | ۵۰۸۳

পরিচ্ছদঃ ২১৭০. ধনুকের সাহায্যে শিকার করা। হাসান ও ইব্‌রাহীম (র) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি শিকারকে আঘাত করে, ফলে তার হাত কিম্বা পা পৃথক হয়ে যায়, তাহলে পৃথক অংশটি খাওয়া যাবে না, অবশিষ্ট অংশটি খাওয়া যাবে। ইব্‌রাহীম (র) বলেছেনঃ তুমি যদি শিকারের ঘাড়ে কিম্বা মধ্যভাগে আঘাত কর, তা হলে তা খাও। যায়েদের সূত্রে আ’মাশ (র) বলেছেন যে, আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাস’উদের গোত্রে একটি গাধা নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। তখন তিনি আদেশ দিয়েছিলেনঃ তার দেহের যে অংশই সম্ভব হয় সেখানেই আঘাত কর। তারপর যে অংশটি ছিঁড়ে যাবে তা ফেলে দাও, আর অবশিষ্ট অংশ খাও।
৫০৮৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা আল খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আল্লাহর নাবী! আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি। আমরা কি তাদের থালায় খেতে পারি? তাছাড়া আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি। তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দিয়ে শিকার করে থাকি ও এমতাবস্থায় আমার জন্য কোনটি দুরস্ত হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তুমি যে সকল আহলে কিতাবের কথা উল্লেখ করলে তাতে বিধান হল যদি ভিন্ন পাও তাহলে তাদের পাত্রে খাবে না। আর যদি না পাও তাহলে তাদের পাত্রগুলো ধৌত করে নাও। তারপর তাতে আহার কর। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার তীর ধনূকের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ সেটি খাও। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ। সেটি খাও আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দ্বারা শিকার করেছ সেটি যদি যবাহ করার সুযোগ পাও, তা হলে খেতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৪ | 5084 | ۵۰۸٤

পরিচ্ছদঃ ২১৭১. ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করা ও বন্দুক মারা
৫০৮৪। ইউসুফ ইবনু রাশেদ (রহঃ) … আবদুলাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক ব্যাক্তিকে দেখলেন সে ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করছে। তখন তিনি তাকে বললেনঃ পাথর নিক্ষেপ করোনা। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর করতে নিষেধ করেছেন অথবা রাবী বলেছেনঃ পাথর ছোড়াকে তিনি অপছন্দ করতেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেতেনঃ এর দ্বারা কোন প্রানী শিকার করা হয় না এবং কোন শত্রুকেও ঘায়েল করা হয় না। তবে এটি কারো দাত ভেংগে ফেলতে পারে এবং চোখ উপড়ে দিতে পারে। তারপর তিনি আবার তাকে পাথর ছুড়তে দেখলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস বর্ণনা করেছিলাম যে, তিনি পাথর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন অথবা তিনি তা অপছন্দ করেছেন। অথচ তুমি পাথর নিক্ষেপ করছ? আমি তোমার সঙ্গে কথাই বলব না এতকাল এতকাল পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৫ | 5085 | ۵۰۸۵

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন তিনি বলতেনঃ যে ব্যাক্তি এমন কুকুর পালন করে যেটি পশু রক্ষার জন্যও নয় কিংবা শিকারের জন্যও নয়। তার আমল থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ হ্রাস পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৬ | 5086 | ۵۰۸٦

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৬। মাককী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যাক্তি শিকারী কুকুর কিংবা পশু রক্ষাকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পোষে, সেই ব্যাক্তির আমলের সাওয়াব থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ কমে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৭ | 5087 | ۵۰۸۷

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫৩৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি পশু রক্ষাকারী কিংবা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করে, তার আমল থেকে প্রতিদিন দুই কীরাত পরিমান সওয়াব কমে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৮ | 5088 | ۵۰۸۸

পরিচ্ছদঃ ২১৭৩. শিকারী কুকুর যদি শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে এবং মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ লোকেরা আপনাকে প্রশ্ন করে থাকে যে, তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে? …. নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর- পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৫:৪)। اجْتَرَحُوا তারা যা উপার্জন করেছে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে, তবে সে শিকার নস্ট করে ফেলল। কেননা, সে তো তখন নিজের জন্য ধরেছে বলে গণ্য হবে। অথচ আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেনঃ যেগুলোকে তোমরা শিকার শিক্ষা দিয়েছ যে ভাবে আল্লাহ্‌ তোমাদিগকে শিক্ষা দান করেছেন। কাজেই কুকুরকে প্রহার করতে হবে এবং শিক্ষা দিতে হবে, যাতে সে শিকার খাওয়া বর্জন করে। ইবন উমর (রা) এটিকে মাকরূহ বলতেন। আতা (রহঃ) বলেছেন, কুকুর যদি রক্ত পান করে আর গোশত না খায় তাহলে (সেই শিকার) খেতে পারে।
৫০৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) খেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠিয়ে থাক তাহলে ওরা যেগুলো তোমাদের জন্য ধরে রাখে, তা খাও যদিও শিকারকে কুকুর হত্যা করে ফেলে। তবে যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে (তাহলে খাবে না)। কেননা, তখন আমার আশংকা হয় যে সে শিকার নিজেরই উদ্দেশ্যে ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুর মিলে যায় তাহলে খাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৯ | 5089 | ۵۰۸۹

পরিচ্ছদঃ ২১৭৪. শিকার যদি দুই বা তিনদিন শিকারী থেকে অদৃশ্য থাকে
৫০৮৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেনঃ যদি তোমার কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠাও, এরপর কুকুর শিকার পাকড়াও করে এবং মেরে ফেলে, তবে তা খেতে পার। আর যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে খাবে না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এমন কুকুরদের সঙ্গে মিশে যায়, যাদের উপর বিসমিল্লাহ পড়া হয়নি এবং সেজন্য শিকার ধরে মেরে ফেলে, তা হলে তা খাবে না। কেননা, তুমি তো জানো না যে কোন কুকুরটি হত্যা করেছে? আর যদি তুমি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে থাক; এরপর তা একদিন বা দুইদিন পর এমতাবস্থায় হাতে পাও যে, তার গায়ে তোমার তীরের আঘাত ছাড়া অন্য কিছু নেই, তাহলে খাও। আর যদি তা পানির মধ্যে পড়ে থাকে, তা হলে তা খাবে না।

আবদুল আলা দাউদ সুত্রে আদী থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করেছিলেনঃ যদি কোন বাক্তি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে এবং দুই তিন দিন পর্যন্ত সেই শিকারের অনুসন্ধানের পর মৃত অবস্থায় পায় এবং দেখে যে, তার গায়ে তার তীর লেগে রয়েছে (তখন সে কি করবে)? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইচ্ছা করলে সে তা খেতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯০ | 5090 | ۵۰۹۰

পরিচ্ছদঃ ২১৭৫. শিকারের সাথে যদি অন্য কুকুর পাওয়া যায়
৫০৯০। আদম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বিসমিল্লাহ পড়ে আমার কুকুরকে পাঠিয়ে থাকি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি বিসমিল্লাহ পড়ে তোমার কুকুরটিকে পাঠিয়ে থাক, এরপর সে শিকার ধরে মেরে ফেলে এবং কিছুটা খেয়ে ফেলে, তা হলে তুমি খেয়ো না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই তা ধরেছে। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরটিরে পাঠালাম পরে তার সঙ্গে অন্য কুকুরও দেখতে পেলাম। আমি ঠিক জানিনা উভয়ের কে শিকার ধরেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তা খেয়ো না। কেননা, তুমি তো তোমার কুকুরের উপরই বিসমিল্লাহ পড়েছ, অন্যটির উপর পড়নি। আমি তাকে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তুমি তীরের ধার দিয়ে আঘাত করে থাক, তাহলে খাও। আর যদি পার্শ্বের দ্বারা আঘাত কর আর তাতে তা মারা যায় তাহলে সেটি থেতলিয়ে মারার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তা খেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯১ | 5091 | ۵۰۹۱

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯১। মুহাম্মদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করে বলছিলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করতে অভ্যস্ত। তিনি বললেনঃ তুমি যদি আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে পাঠাও, তাহলে কুকুরগুলো তোমার জন্য যা ধরে রাখবে, তুমি তা খেতে পার। তবে কুকুর যদি কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে তুমি খেয়ো না। কেননা, আমার আশংকা হয় যে, সে তখন নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্যান্য কুকুর মিলিত হয়, তাহলেও খেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯২ | 5092 | ۵۰۹۲

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯২। আবূ আসিম ও আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি, তাদের পাত্রে আহার করি। আর আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি, শিকার করি তীর ধনুক দিয়ে, প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় এমন কুকুর দিয়েও। অতএব আমাকে বলে দিন, এর মধ্যে আমাদের জন্য কোনটি হালাল? তিনি বললেনঃ তুমি যা উল্লেখ করেছো তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস কর, তাদের পাত্রে খানা খাও। তরে যদি তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও, তাহলে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি না পাও তাহলে ঐগুলো ধৌত করে তারপর তাতে আহার করবে। আর তুমি উল্লেখ করেছ যে তুমি শিকারের অঞ্চলে থাক। তুমি যা তীর ধনুক দ্বারা শিকার কর, তাতে তুমি বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ে যা শিকার কর, তাতে বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। আর তুমি যা শিকার কর তোমার এমন কুকুরের দ্বারা যেটি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নয় সেখানে যদি যবাহ করার সুযোগ পাও তাহলে খেতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৩ | 5093 | ۵۰۹۳

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা মক্কার যাহরান নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। লোকজন তার পেছনে ছুটতে থাকে এবং তারা ব্যর্থ হয়। এরপর আমি তার পেছনে ছুটলাম। অবশেষে সেটি ধরে ফেললাম। তারপর আমি এটিকে আবূ তালহার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি এটির উভয় রান ও নিতম্ব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি গ্রহণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৪ | 5094 | ۵۰۹٤

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। অবশেষে তিনি মক্কার কোন এক রাস্তা পর্যন্ত পৌছলে তিনি তার কয়েকজন সঙ্গীসহ পেছনে পড়ে গেলেন। তারা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর তিনি ছিলেন ইহরাম ছাড়া অবস্থায়। তিনি একটি বন্য গাধা দেখতে পেয়ে তার ঘোড়ার উপর আরোহণ করলেন। তারপর সাথীদের তার হাতে তাঁর চাকু তুলে দিতে অনুরোধ করলেন। তারা অস্বীকার করলেন। অবশেষে তিনি নিজেই সেটি তুলে নিলেন এবং গাধাটির পিছনে দ্রুতবেগে ছুটলেন এবং সেটিকে হত্যা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের কেউ কেউ তা খেলেন আবাব কেউ কেউ তা খেতে অস্বীকার করলেন। পরিশেষে তারা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলেন তখন তারা বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেনঃ এটি তো এমন খাদ্য যা আল্লাহ তাআলা তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৫ | 5095 | ۵۰۹۵

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) এর সুত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এতে রয়েছে যে, তিনি বললেনঃ তোমাদের সাথে কি তার কিছু গোশত আছে?

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৬ | 5096 | ۵۰۹٦

পরিচ্ছদঃ ২১৭৭. পাহাড়ে শিকার করা
৫০৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী সফরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে ছিলাম। অন্যরা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর আমি ছিলাম ইহরাম বিহীন এবং ঘোড়ার উপর সাওয়ার। পর্বত আরোহনে আমি ছিলাম দৃঢ়। এমন সময়ে আমি লোকজনকে দেখছিলাম যে, তারা আগ্রহ সহকারে কি যেন দেখছে। কাজেই আমিও দেখতে লাগলাম। হঠাৎ দেখি একটি বন্য গাধা। আমি লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এটি কি? তারা উত্তর দিলঃ আমরা জানি না। আমি বললামঃ এটি বন্য গাধা? তারা বললঃ এটি তাই তুমি যা দেখছ। আমি আমার চাবুকের কথা ভুলে গিয়েছিলাম তাই তাদের বললামঃ আমাকে আমার চাবুকটি তুলে দাও। তারা বললঃ আমরা তোমাকে এ কাজে সাহয্য করব না। অগত্যা আমি নেমে চাবুকটি তুলে নিলাম। তারপর সেটির পেছনে ছুটলাম।

অবশেষে আমি সেটিকে ঘায়েল করলাম এবং তাদের কাছে এসে বললামঃ যাও, এটাকে তুলে নিয়ে আসো।। তারা বললঃ আমরা ওটিকে স্পর্শ করবো না। তখন আমি নিজেই সেটিকে তুলে তাদের কাছে নিয়ে এলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন তা খেতে অসম্মতি প্রকাশ করল। আর কয়েকজন তা খেল। আমি বললামঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে তোমাদের জন্য বিষয়টি জেনে নেব। এরপর আমি তাকে পেলাম এবং এ ঘটনা শুনলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ তোমাদের সঙ্গে সেটির অবশিষ্ট কিছু আছে কি? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ খাও। কেননা, এটি তো এমন খাবারের জিনিস যা আল্লাহ তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৭ | 5097 | ۵۰۹۷

পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্‌র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্‌র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্‌ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্‌ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্‌ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘জায়শুল খাবত’ অভিযানে ছিলাম। আমাদের সেনাপতি নিয়োগ করা হয়েছিল আবূ উবায়দা (রাঃ) কে। এক সময় আমরা ভীষনভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লে, সমুদ্র এমন একটি মৃত মাছ তীরে নিক্ষেপ করল যে এত বড় মাছ কখনো দেখা যায়নি। এটিকে ‘আম্বর’ বলা হয়। আমরা অর্ধমাস যাবত এটি খেলাম। আবূ উবায়দা (রাঃ) এর একটি হাড় তুলে ধরলেন এবং এর নীচে দিয়ে একজন অশ্বারোহী অনায়াসে বেরিয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৮ | 5098 | ۵۰۹۸

পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্‌র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্‌র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্‌ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্‌ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্‌ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তিনশ’ সাওয়ার পাঠালেন আমাদের সেনাপতি ছিলেন আবূ উবায়দা (রাঃ)। উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেন কুরাইশদের একটি কাফেলার অপেক্ষা করি। তখন আমাদের ভীষণ ক্ষিধে পেল। এমন কি আমরা خبط (গাছের পাতা) খেতে আরম্ভ করলাম। ফলে এ বাহিনীর নামকরণ করা হয় “জায়শুল খাবত”। তখন সমুদ্র আম্বর নামক একটি মাছ পাড়ে তুলে দেয়। আমরা এটি থেকে অর্ধমাস যাবত আহার করলাম। আমরা এর চর্বি তেল রুপে গায়ে মাখতাম। ফলে আমাদের শরীর সতেজ হয়ে উঠে। আবূ উবায়দা (রাঃ) মাছটির পাজরের কাটাগুলোর একটি খাড়া করে ধরলেন, তখন একজন অশ্বারোহী তার নীচ দিবে অতিক্রিম করে গেল। আমাদের মধ্যে (কোয়স ইবনু না’দ) এক ব্যাক্তি ছিলেন, খাদ্যাভাব তখন ভীষণ আকার ধারণ করেছিল। তখন তিনি তিনটি উট যবাহ করেন। তারপর আরো তিনটি যবাহ করেন। এরপর আবূ উবায়দা (রাঃ) তাকে বারণ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৯ | 5099 | ۵۰۹۹

পরিচ্ছদঃ ২১৭৯. ফড়িং খাওয়া
৫০৯৯। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাতটি কিংবা ছয়টি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। আমরা তার সঙ্গে ফড়িংও খাই। সুফিয়ান, আবূ আওয়ালা ও ইসরাইল এরা আবূ ইয়াফুর ইবনু আওফার সুত্রে বর্ননা করেছেন সাতটি যুদ্ধে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০০ | 5100 | ۵۱۰۰

পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০০। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় বাস করি। তাদের পাত্রে খাই এবং আমরা শিকারের এলাকায় বাস করি, তীর-ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা আহলে কিতাবের ভুখণ্ডে থাক, অপারগ না হলে তুমি তাদের বাসন পত্রে খেও না যদি কোন উপায় না পাও তাহলে সেগুলো ধুয়ে তাতে খেয়ো। আর তুমি যে বললে তোমরা শিকারের অঞ্চলে বাস কর যদি তুমি তোমার তীরের দ্বারা যা শিকার করতে চাও সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা তোমার প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার কর, সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা শিকার কর তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুরের সাহায্যে এবং তা যবাহ করার সুযোগ (অর্থাৎ জীবিত) পাও তবে তা (যবাহ করে) খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০১ | 5101 | ۵۱۰۱

পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০১। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বার বিজয়ের দিন সন্ধায় মুসলমানগন আগুন জ্বালালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জন্য এ সব আগুন জালিয়েছ? তারা বললঃ গৃহ পালিত গাধার গোশত। তিনি বললেনঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দাও এবং পাতিলগুলো ভেঙ্গে ফেল। দলের একজন দাঁড়িয়ে বললঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দেই এবং পাতিলগুলো ধুয়ে নেই? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাও করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০২ | 5102 | ۵۱۰۲

পরিচ্ছদঃ ২১৮১. যবাহের বস্তুর উপর বিস্‌মিল্লাহ্‌ বলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যে বিসমিল্লাহ তরক করে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ কেউ বিসমিল্লাহ্‌ বলতে ভুলে গেলে তাতে কোন দোষ নেই। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ যে সব প্রাণীর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারন করা হয়নি, তা থেকে আহার করো না। তা অবশ্যই গুনাহের কাজ। আর যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলেতে ভুলে যায়, তাতে গুনাহগার বলা যায় না। আল্লাহ আরো ইরশাদ করেনঃ শয়তানরা তাদের বন্ধুদের প্ররোচনা দেয় …… (শেষ পর্যন্ত
৫১০২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুল হুলায়ফা নামক স্থানে ছিলাম। লোকজন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। তখন আমরা কিছু সংখ্যাক উট ও বকরী (গনীমত স্বরূপ) লাভ করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সকলের পেছনে। সবাই তাড়াতাড়ি করল এবং পাতিল চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এসে পৌছলেন। তখন তিনি পাতিলগুলো ঢেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। পাতিলগুলো ঢেলে দেওয়া হল। তারপর তিনি (প্রাপ্ত গনীমত) বণ্টন করলেন। দশটি বকরী একটি উটের সমান গণ্য করলেন। এ সময়ে একটি উট পালিয়ে গেল। দলে অশ্বারোহীর সংখ্যা ছিল খুব কম। তারা উটটির পেছনে ছুটল কিন্তু তারা সেটি কাবু করতে ব্যর্থ হল। অবশেষে একজন উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ প্রানীর মধ্যে বন্য জানোয়ারের ন্যায় পালিয়ে যাওয়ার স্বভাব আছে। কাজেই যখন কোন প্রানী তোমাদের থেকে পালিয়ে যায়, তখন তার সাথে তোমরা অনুরুপ ব্যবহার করবে। বর্ণনাকারী বলেন আমার দাদা বলেছেন, আমরা আশা করছিলাম কিংবা তিনি বলেছেন, আমরা আশংকা করছিলাম যে আগামীকাল আমরা তাদের সম্মুখীন হতে পারি। অথচ আমাদের নিকট কোন ছুরি নেই। তাহলে আমরা কি বাঁশের (বাখায়ী) দিয়ে যবাহ কববো? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে দেয় এবং তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয় তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। এ সম্পর্কে আমি তোমাদের অবহিত করছি যে, দাঁত হল হাড় বিশেষ, আর নখ হল হাবশী সম্প্রদায়ের ছুরি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৩ | 5103 | ۵۱۰۳

পরিচ্ছদঃ ২১৮২. যে জন্তুকে দেব-দেবী ও মূর্তির নামে যবাহ করা হয়
৫১০৩। মুআলা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বালদাহ’ নামক স্থানে নিম্ন অঞ্চলে সায়েদ ইবনু আমর ইবনু নুফায়লের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ঘটনাটি ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অহী নাযিল হওয়ার আগের। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দস্তরখান বিছানো হল। তাতে ছিল গোশত। তখন যায়েদ ইবনু আমর তা থেকে খেতে অস্বীকার করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যা যবাহ কর, তা থেকে আমি খাই না। আমি কেবল তাই খাই যা আল্লাহর নামে যবাহ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৪ | 5104 | ۵۱۰٤

পরিচ্ছদঃ ২১৮৩. নবী (সাঃ) এর ইরশাদঃ আল্লাহর নামে যবাহ্‌ করবে
৫১০৪। কুতায়বা (রহঃ) … জুনদুব ইবনু সুফিয়ান বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুরবানী উদযাপন করলাম। তখন কতক লোক সালাত (নামায/নামাজ)-এর আগেই তাদের কুরবানীর পশুগুলো যবাহ করে নিয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ফিরে যখন দেখলেন, তারা সালাত (নামায/নামাজ) এর আগেই যবাহ করে ফেলেছে। তখন বললেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) এর আগে যবাহ করেছে সে সেন তার বদলে আরেকটি যবাহ করে নেয়। আর যে ব্যাক্তি আমাদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা পর্যন্ত যবাহ করেনি। সে যেন এখন আল্লাহর নাম নিয়ে যবাহ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৫ | 5105 | ۵۱۰۵

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৫। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) … ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে জানিয়েছেন যে তার পিতা (কা’ব) তাকে বলেছেনঃ তাদের একটি দাসী ‘সালা’ নামক স্থানে বকরী চরাত। এক সময় সে দেখতে পেল পালের একটি বকরী মারা যাচ্ছে। সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে সেটি যবাহ করল। তখন তিনি (কা’ব) পরিবারের লোকজনকে বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আসার আগে তোমরা তা খেয়ো না। অথবা তিনি বললেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করার এমন কাউকে পাঠিয়ে জেনে নেওয়ার আগে তোমরা তা খেয়ো না। এরপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন অথবা তিনি কাউকে তার নিকট পাঠালেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি খেতে আদেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৬ | 5106 | ۵۱۰٦

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, কা’ব ইবনু মালিকের একটি দাসী বাজারের কাছে অবস্থিত ‘সালা’ নামক ছোট পাহাড়ের উপর তার বকরী চরাতো। তন্মধ্যে একটি বকরি মরণাপন্ন হয়ে পড়ে। সে এটিকে ধরল এবং পাথর ভেংগে তা দিয়ে সেটিকে যবাহ করে। তখন লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ঘটনাটি উল্লেখ করলে তিনি তাদের তা খাওয়ার অনুমতি দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৭ | 5107 | ۵۱۰۷

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৭। আবদান (রহঃ) … রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। নখ হল হাবশীদের ছুরি, আর দাঁত হল হাড়। তখন একটি উট পালিয়ে গেল। তীর নিক্ষেপ করে সেটিকে আটকানো হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল উটৈর মধ্যে বন্য জন্তুর মত পালিযে যাওয়ার অভ্যাস আছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, তাহলে তার সাথে এরুপ ব্যবহার কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৮ | 5108 | ۵۱۰۸

পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৮। সাদকা (রহঃ) … কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে জনৈক মহিলা পাথরের সাহায্যে একটি বকরী যবাহ করেছিল। এ ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সেটি খাওয়ার নির্দেশ দেন। লায়স (রহঃ) নাফি (রহঃ) সুত্রে বলেনঃ তিনি জনৈক আনসারকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল্লাহ সম্পর্কে বলতে শুনেছেন যে, কা’ব (রাঃ) এর একটি দাসী……। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরূপ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৯ | 5109 | ۵۱۰۹

পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৯। ইসমাঈল (রহঃ) … জনৈক আনসারী থেকে তিনি মু’আয ইবনু সা’দ কিংবা সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, কাব ইবনু মালিক (রাঃ) এর একটি দাসী ‘সালা’ পাহাড়ে বকরী চরাতো। বকরীগুলোর মধ্যে একটিকে মরে যাচ্ছে দেখে সে একটি পাথর দিয়ে সেটিকে যবাহ কবল। এই ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল তিনি বললেনঃ সেটি খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১০ | 5110 | ۵۱۱۰

পরিচ্ছদঃ ২১৮৬. দাঁত, হাড় ও নখের সাহায্যে যবাহ্‌ করা যাবে না
৫১১০। কাবীসা (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খাও অর্থাৎ যা রক্ত প্রবাহিত করে তবে দাঁত ও নখের দ্বারা নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১১ | 5111 | ۵۱۱۱

পরিচ্ছদঃ ২১৮৭. বেদুঈন ও তাদের মত লোকের যবাহকৃত জন্তু
৫১১১। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললঃ কিছু সংখ্যক মানুষ আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানিনা যে, পশুটির যবাহের সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরাই এতে বিসমিল্লাহ পড় এবং তা খাও। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ প্রশ্নকারী দলটি ছিল কুফর থেকে নতুন ইসলাম গ্রহনকারী।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ দ্বারাওয়ারদী (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবূ খালিদ ও তুফাবী (রহঃ) অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১২ | 5112 | ۵۱۱۲

পরিচ্ছদঃ ২১৮৮. আহলে কিতাবের যবাহকৃত জন্তু ও এর চর্বি। তারা দারুল হারবের হোক কিংবা না হোক। মহান আল্লাহর ইরশাদঃ আজ তোমাদের জন্য পবিত্র জিনিসসমূহ হালাল করে দেওয়া হল। আহলে কিতাবের খাবার তোমাদের জন্য হালাল, তোমাদের খাবারও তাদের জন্য হালাল (মায়িদাহ: ৫) যুহরী (র) বলেছেনঃ আরব এলাকার খৃস্টানদের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই। তবে তুমি যদি তাকে গায়রুল্লাহর নাম পড়তে শোন, তাহলে খেয়ো না। আর যদি না শুনে থাক, তাহলে মনে রেখ যে, আল্লাহ তাদের কুফরীকে জেনে নেওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। হাসান ও হবরাহীম বলেছেনঃ খাতনা বিহীন লোকের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই।
৫১১২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা খায়বরের একটি কিল্লা অবরোধ করে রেখেছিলাম। এমন সময়ে এক ব্যাক্তি চর্বি ভর্তি একটি থলে ছুড়ে মারল। আমি সেটি তুলে নেয়ার জন্য ছুটে গেলাম। ফিরে তাকিয়ে দেখি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাকে দেখে আমি লজ্জিত হয়ে গেলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তাদের খাবার দ্বারা তাদের যবাহকৃত জন্তু বুঝান হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৩ | 5113 | ۵۱۱۳

পরিচ্ছদঃ ২১৮৯. যে জন্তু পালিয়ে যায় তার হুকুম বন্য জন্তুর মত। ইবন মাসঊদ (রা) ও এ ফতোয়া দিয়েছেন। ইবন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ তোমার অধীনস্থ যে জন্তু তোমাকে অক্ষম করে দেয়, সে শিকারের ন্যায়। যে উট কুয়ায় পড়ে যায়। তার যে স্থানে তোমার পক্ষে সম্ভব হয়, আঘাত (যবাহ) কর। আলী ইবন উমর এবং আয়েশা (রাঃ)ও এইমত পোষন করেন।
৫১১৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আগামী দিন শত্রুর সন্মিখীন হব, অথচ আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি ত্বরান্বিত করবে কিংবা তিনি বলেছেনঃ তাড়াতাড়ি (যবাহ) করবে। যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং এতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দ্বারা নয়। তোমাকে বলছিঃ দাঁত হল হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। আমরা কিছু উট ও কস্তুরী গনীমত হিসাবে পেলাম। সেগুলো থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। একজন সেটির উপর তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটি আটকিয়ে দেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল গৃহপালিত উটের মধ্যে বন্যপশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়, তা হলে তার সাথে অনুরুপ ব্যবহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৪ | 5114 | ۵۱۱٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৪। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আসমা বিনত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করে তা খেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৫ | 5115 | ۵۱۱۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৫। ইসহাক (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া যবাহ করেছি। তখন আমরা মদিনায় থাকতাম। পরে আমরা সেটি খেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৬ | 5116 | ۵۱۱٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৬। কুতায়বা (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া নহর করেছি। এরপর তা খেয়েছি। নহর কথাটির বর্ণনা এ সঙ্গে হিশামের সূত্র দিয়ে ওয়াকী ও ইবনু উয়ায়না অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৭ | 5117 | ۵۱۱۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … হিশাম ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আনাস (রাঃ) এর সঙ্গে হাকাম ইবনু আইয়্যুবের কাছে গেলাম। তখন আনাস (রাঃ) দেখলেন, কয়েকটি বালক, কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন কয়েকজন তরুণ একটি মুরগি বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছে। আনাস (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবন্তকে বেধে এভাবে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৮ | 5118 | ۵۱۱۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৮। আহমাদ ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় ইয়াহইয়া পরিবারের একটি বালক একটি মুরগীকে বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। ইবনু উমর (রাঃ) মুরগীটির দিকে এগিয়ে গিয়ে সেটি মুক্ত করে দিলেন। তারপর মুরগী ও বালকটিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বললেনঃ তোমরা তোমাদের বালকদের হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে বেঁধে পাখি মারতে বাধা দিও। কেননা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছিঃ তিনি হত্যার উদেশ্যে জন্তু জানোয়ার বেধে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৯ | 5119 | ۵۱۱۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৯। আবূ নুমান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বললেনঃ আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। এরপর আমরা একদল তরুণ, কিংবা তিনি বলেছেন, একদল মানুষের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম, তারা একটি মুরগি বেধে তার প্রতি তীর ছুড়ছে। তারা যখন ইবনু উমর (রাঃ) কে দেখতে পেল, তখন তারা তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ইবনু উমর (রাঃ) বললেনঃ এ কাজ কে করেছে? এ কাজ যে করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর অভিশাপ দিয়েছেন।

শুবা (রহঃ) থেকে সুলায়মান অনুরূপ বর্ননা করেছেন। মিনহাল ইবনু উমার (রাঃ) এর সুত্রে বলেন, যে ব্যাক্তি পশুর অঙ্গহানি ঘটায় তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২০ | 5120 | ۵۱۲۰

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১২০। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি লুটতরাজ ও অঙ্গহানি ঘটাতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২১ | 5121 | ۵۱۲۱

পরিচ্ছদঃ ২১৯২. মুরগীর গোশত
৫১২১। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ মূসা আশ-আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি।

আবূ মা’মার (রহঃ) … যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাবার আনা ছিল। তাতে ছিল মোরগের গোশত। দলের মধ্যে লালচে রংয়ের এক ব্যাক্তি বসা ছিল। সে খাবারের দিকে অগ্রসর হল। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) তখন বলেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোরগের গোশত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাবো। কিংবা তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করবো।

আমি আশআরীদের এক দল সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। এরপর আমি তার সামনে এসে উপস্থিত হই যখন তিনি ছিলেন রাগান্বিত। তখন তিনি বণ্টন করছিলেন সাদাকার কিছু জানোয়ার। আমরা তার কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওসারী দিবেন না এবং বললেনঃ তোমাদের সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন জন্তু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়?

আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদাচুল বিশিষ্ট বলিষ্ট পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দুরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোনদিন সফলকাম হবো না। কাজেই আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে গিয়ে তাকে বলা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নিকট সাওয়ায়ী চেয়েছিলাম তখন আপনি আমাদের সাওসারী দেবেন না বলে কসম করেছিলেন। আমাদের মনে হয় আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গিয়েছেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন ব্যাপারে কসম করি এরপর কসমের বিপরীত কাজ তার চাইতে মঙ্গলজনক মনে করি, তখন আমি মঙ্গলজনক কাজটিই করি এবং কাফফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২২ | 5122 | ۵۱۲۲

পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২২। হুমায়দী (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করলাম এবং সেটি খেলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৩ | 5123 | ۵۱۲۳

পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। আর ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে তিনি অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৪ | 5124 | ۵۱۲٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৪ সাদাকা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, খায়বরের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৫ | 5125 | ۵۱۲۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। ইবনু মুবারক, উবায়দুল্লাহ (রহঃ) সুত্রে থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন। উবায়দুল্লাহ সালিম সুত্রে আবূ উসামা (রহঃ) অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৬ | 5126 | ۵۱۲٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের বছর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতআ (স্বল্পকালের জন্য বিয়ে করা) থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৭ | 5127 | ۵۱۲۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তবে ঘোড়ার গোশত খেতে অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৮ | 5128 | ۵۱۲۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারাআ ও ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৯ | 5129 | ۵۱۲۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম করেছেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে যুবায়দী ও উকায়ল অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহঃ) এর বরাত দিয়ে মালিক, মা’মার, মাজিশুন, ইউনুস ও ইবনু ইসহাক বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সকল হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩০ | 5130 | ۵۱۳۰

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩০। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলোকে নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণাকারীকে ঘোষণার আদেশ দিলেন। সে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলঃ আল্লাহ ও তার রাসুল তোমাদের গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা, এগুলো ঘৃন্য। তখন ডেকচিগুলোকে উলটিয়ে দেয়া হল, অথচ তাতে গোশত টগবগ করছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩১ | 5131 | ۵۱۳۱

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি জাবির ইবনু যায়দকে জিজ্ঞাসা করলামঃ মনে করে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বললেনঃ হাকাম ইবনু আমর গিফারীও বসরায় আমাদের কাছে এ কথা বলতেন। কিন্তু ইবনু আব্বাস (রাঃ) তা অস্বীকার করেছেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেছেনঃ “বলুন আমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে তাতে, লোকজন যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না … শেষ পর্যন্ত। (সুরা আন-আমঃ ১৪৫)।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩২ | 5132 | ۵۱۳۲

পরিচ্ছদঃ ২১৯৫. মাংসভোজী সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খাওয়া
৫১৩২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। যুহরী (রহঃ) থেকে ইউনুস, মা’মার ইবনু উয়ায়না ও মাজিশুন অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৩ | 5133 | ۵۱۳۳

পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৩। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা এটির চামড়াটি কেন কাজে লাগালে না? লোকজন উক্তি করলঃ এটি মৃত জানোয়ার। তিনি বললেনঃ শুধু তার খাওয়া হারাম করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৪ | 5134 | ۵۱۳٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৪। খাত্তাব ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটির মালিকের কি হল? যদি এটির চামড়া থেকে তারা উপকার গ্রহণ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৫ | 5135 | ۵۱۳۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন আঘাত প্রাপ্ত লোক যে আল্লাহর পথে আঘাত পায়, সে কিয়ামতেয় দিন এমতাবস্থায় আসবে যে তার ক্ষত স্থান থেকে টকটকে লাল রক্ত ঝরছে এবং তার সুগন্ধি হবে কস্তুরীর সুগন্ধির ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৬ | 5136 | ۵۱۳٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৬। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উপমা হল কস্তুরী বহনকারী (আতর বিক্রেতা) ও কামারের হাপরের ন্যায়। মৃগ-কস্তুরী বহনকারী হযত তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি লাভ করবে সুবাস। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৭ | 5137 | ۵۱۳۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯৮. খরগোশ
৫১৩৭। আল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা ‘মাররুয যাহরান’ নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। তখন লোকজনও এর পেছনে ছুটল এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এরপর আমি সেটিকে ধরতে সক্ষম হালাম এবং আবূ তালহার নিকই নিয়ে এলাম। তিনি এটিকে যবাহ করলেন এবং তার পিছনের অংশ কিংবা তিনি বলেছেন দুই রান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা গ্রহণ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৮ | 5138 | ۵۱۳۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৮। ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গুই সাপ আমি খাই না, আর হারামও বলিনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৯ | 5139 | ۵۱۳۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে গেলেন। সেখানে ভুনা করা গুই পেশ করা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দিকে হাত বাড়ালেন। এ সময় জনৈকা মহিলা বললঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানিয়ে দাও, তিনি কি জিনিস খেতে যাচ্ছেন। তখন তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি গুই সাপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে হাত সরিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, হারাম নয়। তবে আমাদের অঞ্চলে এটি নেই। তাই আমি একে ঘৃণা করি। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি তা আমার দিকে এনে খেতে লাগলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকিয়ে দেখছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪০ | 5140 | ۵۱٤۰

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪০। হুমায়দী (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একটি ইঁদুর ঘিয়ের মধ্যে পড়ে মরে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ ইঁদুরটি এবং তার আশ-পাশের অংশ ফেলে দাও। এরপর তা খাও। সুফিয়ান (রহঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, মা’মার এ হাদীসটি যুহরী সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সনদে বর্ননা করেন। তিনি বললেনঃ আমি যুহরী (রহঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি উবায়দুল্লাহ ইবনু আব্বাস, মায়মুনা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছেন। তিনি আরো বলেন যে, আমি যুহরী থেকে উক্ত সনদে এ হাদীসটি একাধিকবার শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪১ | 5141 | ۵۱٤۱

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪১। আবদান (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয় জমাট কিংবা তরল তৈল বা ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর ইত্যাদি জানোয়ার পড়ে মারা গেলে তার কি হুকুম? তিনি বললেনঃ আমাদের কাছে উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ সূত্রে হাদীস পৌছেছে যে, ঘিয়ের মধ্যে পড়ে একটি ইদুর মারা গিয়েছিল, সেটির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ দিয়েছিলেন, ইদুর ও এর সংলগ্ন অংশ ফেলে দিতে, এরপর তা ফেলে দেওয়া হয় এবং খাওয়া হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪২ | 5142 | ۵۱٤۲

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এমন একটি ইঁদুর সম্পর্কে যা ঘিয়ের মধ্যে পড়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন ইঁদুরটি এবং তার আশপাশের অংশ ফেলে দাও এবং অবশিষ্ট অংশ খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৩ | 5143 | ۵۱٤۳

পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি জানোয়ারের মুখে চিহ্ন লাগানোকে মাকরূহ মনে করতেন। ইবনু উমর (রাঃ) আরো বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানোয়ারের মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন। আনকাযী (রহঃ) হানযালা সূত্রে কুতায়বা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ تُضْرَبُ الصُّورَةُ অর্থাৎ মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৪ | 5144 | ۵۱٤٤

পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৪। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি আমার এক ভাইকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম, যেন তিনি তাকে তাহনীক করেন অর্থাৎ খেজুর বা অন্য কিছু একবার চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে দেন। এ সময়ে তিনি তার উট বাধার স্থানে ছিলেন। তখন আমি তাকে দেখলাম তিনি একটি বকরীর গায়ে চিহ্ন লাগাচ্ছেন। বর্ননাকারী বলেন আমার মনে হয় তিনি (হিশাম) বলেছেন বকরীর কানে চিহ্ন লাগাচ্ছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৫ | 5145 | ۵۱٤۵

পরিচ্ছদঃ ২২০২. কোন দল মালে গণীমত লাভ করার পর যদি তাদের কেউ সাথীদের অনুমতি ছাড়া কোন বকরী কিংবা উট যবাহ করে ফেলে তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণিত রাফি (রা) এর হাদীস অনুসারে সেই গোশত খাওয়া যাবে না। চোরের যবাহকৃত পশুর ব্যাপারে তাউস ও ইকরিমা (র) বলেছেন, তা ফেলে দাও।
৫১৪৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম। আগামী দিন আমরা শক্রর মুকাবিলা করবো; অথচ আমাদের সঙ্গে কোন ছুরি নেই। তিনি বললেনঃ সতর্ক দৃষ্টি রাখো কিংবা তিনি বলেছেনঃ জলদি করো। যে জিনিস রক্ত বহায় এবং যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, সেটি খাও। যতক্ষন না সেটি দাত কিংবা নখ হয়। এ ব্যাপারে তোমাদের জানোাচ্ছি, দাঁত হলো হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। দলের দ্রুতগামী লোকেরা আগে বেড়ে গেল এবং গনীমতের মালামাল লাভ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন লোকজনের পেছনে। তারা ডেকচি চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে তা উল্টিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন, তারপর সেগুলো উল্টিয়ে দেয়া হল। এরপর তিনি তাদের মধ্যে মালে গনীমত বণ্টন করলেন এবং দশটি বকরীকে একটি উটের সমান গন্য করলেন। দলে অগ্রবর্তীদের কাছ থেকে একটি উট ছুটে গিয়েছিল। অথচ তাদের সঙ্গে কোন অশ্বারোহী ছিল না। এ অবস্থায় এক ব্যাক্তি উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই, তন্মধ্যে কোনটি যদি এরুপ করে, তাহলে তার সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৬ | 5146 | ۵۱٤٦

পরিচ্ছদঃ ২২০৩. কোন দলের উট ছুটে গেলে তাদের কেউ যদি সেটিকে তাদের উপকারের উদ্দেশ্যে তীর নিক্ষেপ করে এবং হত্যা করে, তাহলে রাফি (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীস অনুযায়ী তা জায়েয
৫১৪৬। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … রাফী ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন এক সফরে আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন উটগুলোর মধ্য থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। তিনি বলেন তখন এক ব্যাক্তি সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ সেটিকে থামিয়ে দেন। তিনি বলেন এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল পশুর মধ্যে বন্যপশুর চাঞ্চল্য আছে। সুতরাং তার মধ্যে যেটি তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠলে সেটির সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করো। তিনি বলেন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা অনেক সময় যুদ্ধ অভিযানে বা সফরে থাকি, যবাহ করতে ইচ্ছা করি কিন্তু ছুরি থাকে না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আঘাত করো এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত প্রবাহিত করে অথবা তিনি বলেছেনঃ এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত ঝরায় এবং যার উপরে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে সেটি খাও, তবে দাঁত ও নখ ব্যতীত। কেননা দাঁত হল হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।

২২০৪. পরিচ্ছেদঃ অনন্যোপায় ব্যক্তির খাওয়া। আল্লাহ তা’আলার বাণী: “হে মু’মিনগণ, তোমাদের আমি সেসব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা থেকে তোমরা আহার কর, এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত কর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর- মাংস এবং যার উপর আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তা তোমাদের হারাম করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ নাফরমান কিংবা সীমালংঘনকারী নয়, তার কোন পাপ হবে না ( ২: ১৭২-১৭৩)। আল্লাহ্‌ আরো বলেন: তোমরা আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাসী হলে, যে জন্তুর উপর তাঁর নাম নেওয়া হয়েছে, তা আহার কর। তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, তোমরা তা আহার করবে না? যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তা তিনি বিশেষভাবে-ই তোমাদের নিকট বিবৃত করেছেন তবে তোমরা নিরুপায় হলে তা আলাদা। অনেক অজ্ঞানতাবশত: নিজেদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অবশ্যই অন্যকে বিপদগামী করে, আপনার প্রতিপালক সীমালংঘনকারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত (৬: ১১৮-১১৯)। আল্লাহ আরো বলেন: “বলুন, আমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ হয়েছে তাতে লোকে যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না, মরা, বহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ব্যতীত- কেননা, এটা অবশ্যই অপবিত্র”- অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গের কারণে, “তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে তা গ্রহণে নিরুপায় হলে, আপনার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৬: ১৪৫)।

আল্লাহ আরো বলেনঃ আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তার মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র তা তোমরা আহার কর এবং তোমরা যদি কেবল আল্লাহরই ইবাদত কর, তবে তাঁর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল্লাহ তো কেবল মরা, রক্ত, শূকর-মাংস এবং যা যবাহকালে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যের নাম নেওয়া হয়েছে, তা-ই তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু কেউ অন্যায়কারী কিংবা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে, আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়াল (১৬:১১৪-১১৫)।

কুরবানী অধ্যায় (৫১৪৭-৫১৭৪)

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৭ | 5147 | ۵۱٤۷

পরিচ্ছদঃ ২২০৫. কুরবানীর বিধান। ইবন উমর (রাঃ) বলেছেনঃ কুরবানী সুন্নাত এবং স্বীকৃত প্রথা
৫১৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের এ দিনে আমরা সর্ব প্রথম যে কাজটি করবো তা হল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবো। এরপর ফিরে এসে আমরা কুরবানী করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে তা আদায় করল সে আমাদের নীতি অনুসরণ করল। আর যে ব্যাক্তি আগেই যবাহ করল, তা এমন গোশতরুপে গন্য যা সে তার পরিবার পরিজনের জন্য আগাম ব্যবস্থা করল। এটা কিছুতেই কুরবানী বলে গন্য নয়। তখন আবূ বুরদা ইবনু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়ালেন, আর তিনি (সালাত (নামায/নামাজ) এর) আগেই যবাহ করেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমার নিকট একটি বকরীর বাচ্চা আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাই যবাহ কর। তবে তোমার পরে আর কারোর পক্ষে তা যথেষ্ঠ হবে না।

মুতাররাফ বারা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) এর পর যবাহ করল তার কুরবানি পূর্ন হলো এবং সে মুসলমানদের নীতি পালন করলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৮ | 5148 | ۵۱٤۸

পরিচ্ছদঃ ২২০৫. কুরবানীর বিধান। ইবন উমর (রাঃ) বলেছেনঃ কুরবানী সুন্নাত এবং স্বীকৃত প্রথা
৫১৪৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের আগে যবাহ করল সে নিজের জন্যই যবাহ করল। আর যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর যবাহ করল। তার কুরবানী পূর্ন হল এবং সে মুসলমানদের নীতি অনুসরণ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৯ | 5149 | ۵۱٤۹

পরিচ্ছদঃ ২২০৬. ইমাম কর্তৃক জনগণের মধ্যে কুরবাণীর পশু বন্টন
৫১৪৯। মু’আয ইবনু ফাযালা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগনের মধ্যে কতগুলো কুরবানীর পশু বণ্টন করলেন। তখন উকবা (রাঃ) এর ভাগে পড়ল একটি বকরীর বাচ্চা। উকবা (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ভাগে এসেছে একটি বকরীর বাচ্চা। তিনি বললেনঃ সেটিই কুরবানী করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫০ | 5150 | ۵۱۵۰

পরিচ্ছদঃ ২২০৭. মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা
৫১৫০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে প্রবেশ করলেন। অথচ মক্কা প্রবেশ করার পূর্বেই সারিফ নামক স্থানে তার মাসিক শুরু হল। তখন তিনি কাঁদতে লাগলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? মাসিক শুরু হয়েছে না কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটা তো এমন এক বিষয় যা আল্লাহ আদম (আলাইহিস সালাম) এর কন্যা সন্তানের উপর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি আদায় করে যাও, হাজীগণ যা করে থাকে, তুমিও অনুরুপ করে যাও। তবে তুমি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবে না। এরপর আমরা যখন মিনায় ছিলাম, তখন আমার কাছে গরুর গোশত নিয়ে আসা হল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি? লোকজন উত্তর করলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫১ | 5151 | ۵۱۵۱

পরিচ্ছদঃ ২২০৮. কুরবানীর দিন গোশত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
৫১৫১। সাদাকা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বে যবাহ করেছে, সে যেন পুনরায় যবাহ করে। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটাতো এমন দিন যাতে গোশত খাওয়ার প্রতি আকাঙ্ক্ষা হয়। তখন সে তার প্রতিবেশীদের কথাও উল্লেখ করল এবং বলল আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা আছে যেটি গোশতের দিক থেকে দুটি বকরী অপেক্ষাও উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সেটিই কুরবানী করতে অনুমতি দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেন আমি জানিনা, এ অনুমতি এই ব্যাক্তি ব্যতীত অন্যের বেলায় প্রযোজ্য কিনা? এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং সে দুটিকে যবাহ করলেন। লোকজন ক্ষুদ্র একটি বকরীর পালের দিকে উঠে গেল। এরপর ঐ গুলোকে বণ্টন করলো কিংবা তিনি বলেছেন সেগুলোকে তারা যবাহ করে টুকরা টুকরা করে কাটলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫২ | 5152 | ۵۱۵۲

পরিচ্ছদঃ ২২০৯. যারা বলে যে, ইয়াওমুননাহারই কুরবানীর দিন
৫১৫২। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাল আবর্তিত হয়েছে তার সেই অবস্থানের উপর যেভাবে আল্লাহ আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। বছর বার মাসের। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি পরপর যুল কাদা, যূল-হাজ্জাহ ও মুহাররম। আরেকটি মুদার গোত্রের রজব মাস, সেটি জুমাদা ও শাবানের মাঝখানে। (এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন) এটি কোন মাস? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অধিক জ্ঞাত। তখন তিনি নীরব রইলেন। এমন কি আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এটিকে অন্য নামে আখ্যায়িত করবেন। তিনি বললেন এটি কি যুল-হাজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললাম আল্লাহ ও তার রাসুল অধিক জ্ঞাত। তিনি নীরব রইলেন এমন কি আমরা ভাবতে লাগলাম, হয়ত তিনি এটির জন্য কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি মক্কা নগর নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন এটি কোন দিন? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অধিক জ্ঞাত। তিনি নীরব রইলেন। এমনকি আমরা ধারনা করলাম যে হয়ত তিনি এর নামের পরিবর্তে অন্য নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটা কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা উত্তর করলামঃ হ্যাঁ।

এরপর তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ বলেনঃ সম্ভবত আবূ বাকরা (রাঃ) বলেছেন এবং তোমাদের ইজ্জত তোমাদের পরস্পরের উপর এমন সম্মানিত যেমন সম্মানিত তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই শহর, তোমাদের এই মাস। অচিরেই তোমরা তোমাদের রবের সাক্ষাত লাভ করবে। তখন তিনি তোমাদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করবেন। সাবধান! আমার পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে ফিরে যেয়ো না। তোমাদের কেউ যেন কাউকে হত্যা না করে। মনে রেখ, উপস্থিত ব্যাক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যাক্তির কাছে (আমার বানী) পৌছে দেয়। হয়ত যাদের কাছে পৌছানো হবে তাদের কেউ কেউ বর্তমানে যারা শুনেছে তাদের কারো চাইতে অধিক সংরক্ষণকারী হবে। রাবী মুহাম্মদ যখন এ হাদীস উল্লেখ করতেন তখন বলতেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যই বলেছেন। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সাবধান, আমি কি পৌছে দিয়েছি? সাবধান, আমি কি পৌছে দিয়েছি?

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৩ | 5153 | ۵۱۵۳

পরিচ্ছদঃ ২২১০. ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা
৫১৫৩। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দামী (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) কুরবানী করার স্থানে কুরবানী করতেন। উবায়দুল্লাহ বলেনঃ অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানী করার স্থানে (কুরবানী করতেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৪ | 5154 | ۵۱۵٤

পরিচ্ছদঃ ২২১০. ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা
৫১৫৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যবাহ করতেন এবং নহর করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৫ | 5155 | ۵۱۵۵

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৫। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি মেষ দ্বারা কুরবানী আদায় করতেন। আমিও কুরবানী আদায় করতাম দুটি মেষ দিয়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৬ | 5156 | ۵۱۵٦

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৬। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি সাদা কলো রংবিশিষ্ট শিংওয়ালা ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং নিজ হাতে সে দুটিকে যবাহ করলেন। ইসমাঈল ও হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, ইবনু সীরীন, আনাস (রাঃ) সুত্রে বর্ণনা করেছেন। আইউব থেকেও অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৭ | 5157 | ۵۱۵۷

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৭। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর পশু হিসাবে সাহাবীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার জন্য তাকে এক পাল বকরী দান করেন। সেখান থেকে একটি বকরীর বাচ্চা অবশিষ্ট রয়ে গেলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তা উল্লেখ করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি নিজে তা কুরবানী করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৮ | 5158 | ۵۱۵۸

পরিচ্ছদঃ ২২১২. আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ তুমি বকরীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারোর জন্য এ অনুমতি থাকবে না
৫১৫৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বুরদাহ (রাঃ) নামক আমার এক মামা সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বেই কুরবানী করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন তোমার বকরী কেবল গোশতের বকরী হল। তিনি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার নিকট একটি ঘরে পোষা বকরীর বাচ্চা রয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেটাকে কুরবানী করে নাও। তবে তা তুমি ব্যতীত অন্য কারোর জন্য ঠিক হবে না। এরপর তিনি বললেন যে ব্যাক্তি; সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছে, সে নিজের জন্যই যবাহ করেছে (কুরবানীর জন্য নয়) আর যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর যবাহ করেছে তার কুরবানী পূর্ণ হয়েছে। আর সে মুসলমানদের নীতি-পদ্ধতি অনুসরনই করেছে।

শাবী ও ইবরাহীম থেকে উবায়দা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হুরায়স সুত্রে শাবী থেকে ওয়াকী অনুরূপ বর্ণনা করেন। শাবী থেকে আসিম ও দাউদ আমার নিকট পাঁচ মাসের দুধের বকরীর বাচ্চা আছে বলে বর্ণনা করেছেনঃ আবূল আহওয়াস বলেনঃ মানসুর আমাদের কাছে দুই মাসের দুধের বাচ্চা আছে বলে বর্ণনা করেছেন ইবনু আউন বলেছেনঃ দুধের বাচ্চা।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৯ | 5159 | ۵۱۵۹

পরিচ্ছদঃ ২২১২. আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ তুমি বকরীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারোর জন্য এ অনুমতি থাকবে না
৫১৫৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ বুরদা (রাঃ) সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন এটার বদলে আরেকটি যবাহ কর। তিনি বললেনঃ আমার কাছে একটি ছয়-সাত মাসের বকরীর বাচ্চা ব্যতীত কিছুই নেই। শু’বা বলেন, আমার ধারনা তিনি আরো বলেছেন যে, বকরীর বাচ্চাটি পূর্ন এক বছরের বকরীর চাইতে উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে এটিকেই যবাহ কর। কিন্তু তোমার পরে অন্য কারোর জন্য কখনো এই অনুমতি থাকবে না। হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, মুহাম্মাদ, আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (দুধের বাচ্চা) শব্দে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬০ | 5160 | ۵۱٦۰

পরিচ্ছদঃ ২২১৩. কুরবানীর পশু নিজ হাতে যবাহ করা
৫১৬০। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি সাদা-কালো বর্ণের ভেড়া দ্বারা কুরবানী করেছেন। তখন আমি তাকে দেখতে পাই তিনি ভেড়া দু-টোর পার্শ্বদেশে পা রেখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার পড়ে নিজের হাতে সে দুটোকে যবাহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬১ | 5161 | ۵۱٦۱

পরিচ্ছদঃ ২২১৪. অন্যের কুরবানীর পশু যবাহ করা। জনৈক ব্যক্তি ইবন উমর (রাঃ) কে কুরবানীর পশুর (উটের) ব্যাপারে সহযোগীতা করেছিল। আবূ মূসা (রহঃ) তার কন্যাদের আদেশ করেছিলেন, তারা যেন নিজেদের হাতে কুরবানী করে।
৫১৬১। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সারিফ নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। সে সময় আমি কাঁদছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি হল? তুমি কি ঋতুমতী হয়ে পড়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটাতো এমন এক বিষয় যা আল্লাহ আদম-কন্যাদের উপর নির্ধারণ করে রেখেছেন। কাজেই হাজীগণ যে সকল কাজ আদায় করে তুমিও তা আদায় কর। তবে তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে না। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সহধর্মীণীগণের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬২ | 5162 | ۵۱٦۲

পরিচ্ছদঃ ২২১৫. সালাত (ঈদের) আদায়ের পরে যবাহ করা
৫১৬২। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খুতবা দেওয়ার সময় বলতে শুনেছি আমাদের আজকের এই দিনে সর্ব প্রথম আমরা যে কাজটি করবো তা হল সালাত (নামায/নামাজ) আদায়। এরপর আমরা ফিরে গিয়ে কুরবানী করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে করবে সে আমাদের সুন্নাতকে অনুসরণ করবে। আর যে ব্যাক্তি পূর্বেই যবাহ করে তা তার পরিবার পরিজনের জন্য অগ্রিম গোশত (হিসেবে গন্য), তা কিছুতেই কুরবানী বলে গণ্য নয়। তখন আবূ বুরদা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বেই যবাহ করে ফেলেছি এবং আমার কাছে একটি বকরীর বাচ্চা আছে। যেটি পূর্ণ এক বছরের বকরীর চাইতে উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি সেটিকে কুরবানী কর। তোমার পরে এ নিয়ম আর কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না কিংবা তিনি বলেছেনঃ আদায় যোগ্য হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৩ | 5163 | ۵۱٦۳

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বে যবাহ করেছে সে যেন পূনরায় যবাহ করে। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ এটা তো এমন দিন যে দিন গোশত খাওয়ার আগ্রহ হয়। সে তার প্রতিবেশীদের অভাবের কথাও উল্লেখ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন তার ওজর অনুধাবন করলেন। লোকটি বলল আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা রয়েছে সেটি দুটি গোশতবহুল বকরী অপেক্ষা উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে সেটি কুরবানী করার অনুমতি দিলেন। (বর্ননাকারী বলেনঃ) আমি জানিনা, এ অনুমতি অন্যদের পর্যন্ত পৌছেছে কি না। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভেড়া দু টির দিকে ঝুকলেন অর্থাৎ তিনি সে দুটিকে যবাহ করলেন। এরপর লোকজন বকরীয় একটি ক্ষুদ্র পালের দিকে গেল এবং সেগুলোকে যবাহ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৪ | 5164 | ۵۱٦٤

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৪। আদম (রহঃ) … জুনদুব ইবনু সুফিয়ান বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছে সে যেন এর স্থলে আবার যবাহ করে। আর যে যবাহ করেনি, সে যেন যবাহ করে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৫ | 5165 | ۵۱٦۵

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের ন্যায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আমাদের কিবলাকে কিবলা বলে গ্রহন করে সে যেন (ঈদের সালাত (নামায/নামাজ) শেষ না করা পর্যন্ত যবাহ না করে। তখন আবূ বুরদা ইবনু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমিতো যবাহ করে ফেলেছি। তিনি উত্তর দিলেনঃ এটি এমন জিনিস না যা তুমি জলদী করে ফেলেছ। আবূ বুরদা (রাঃ) বললেনঃ আমার কাছে একটি কম বয়সী বকরী আছে। সেটি পূর্ণ বয়স্ক দুটি বকরীর চাইতে উত্তম। আমি কি সেটি যবাহ করতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন হ্যাঁ। তবে তোমার পরে অন্য কারো পক্ষে তা যবাহ করা যথেষ্ট হবে না। আমের (রহঃ) বলেনঃ এটি হল তার উত্তম কুরবানী।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৬ | 5166 | ۵۱٦٦

পরিচ্ছদঃ ২২১৭. যবাহের পশুর পার্শ্বদেশ পা দিয়ে চেপে ধরা
৫১৬৬। হাজাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি শিং বিশিষ্ট সাদা-কালো রং এর ভেড়া কুরবানী করতেন। তিনি পশুগুলোর পার্শ্বদেশ তার পা দিয়ে চেপে ধরে সেগুলোকে নিজ হাতে যবাহ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৭ | 5167 | ۵۱٦۷

পরিচ্ছদঃ ২২১৮. যবাহ করার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা
৫১৬৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি সাদা-কালো বর্ণের শিংবিশিষ্ট ভেড়া কুরবানী করেন। তিনি ভেড়া দুটির পার্শ্বদেশে তার কদম মুবারক স্থাপন করে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে নিজ হাতেই সেই দুটিকে যবাহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৮ | 5168 | ۵۱٦۸

পরিচ্ছদঃ ২২১৯. যবাহ করার জন্য কেউ যদি হারামে কুরবানীর পশু পঠিয়ে দেয়, তাহলে তার উপর ইহরামের বিধান থাকে না
৫১৬৮। আহমাদ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন হে উম্মুল মুমিনীন! কোন ব্যাক্তি যদি কাবার উদ্দেশ্যে হাদী (কুরুবানীর পশু) পাঠিয়ে দেয় এবং নিজে আপন শহরে অবস্থান করে নির্দেশ দেয় যে, তার হাদীকে যেন মালা পরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে সে দিন থেকে লোকদের হালাল হওয়া পর্যন্ত কি সেই ব্যাক্তির ইহরাম অবস্থায় থাকতে হবে? মাসরুক বলেনঃ তখন আমি পর্দার আড়াল থেকে তার [আয়িশা (রাঃ)] হাতের উপর হাত মারার আওয়াজ শুনলাম। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীর (কুরবানীর পশু) গলায় রশি পাকিয়ে পরিয়ে দিতাম। এরপর তিনি হাদীকে কাবার উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিতেন। তখন স্বামী-স্ত্রীর বৈধ কাজ লোকেরা ফিরে আসা পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ইহা হারাম হতো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৯ | 5169 | ۵۱٦۹

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৬৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কুরবানীর গোশত জমা করে রাখতাম। রাবী সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না একাধিকবার لُحُومَ الأَضَاحِيِّ এর স্থলে لُحُومَ الْهَدْىِ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭০ | 5170 | ۵۱۷۰

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি (দীর্ঘ দিন) বাইরে ছিলেন, পরে ফিরে আসলে তার সামনে গোশত পরিবেশন করা হল। তিনি বললেনঃ এটি কি আমাদের কুরবানীর গোশত? এরপর তিনি বললেনঃ এটি সরিয়ে নাও, আমি তা খাব না। তিনি বলেন এরপর আমি উঠে গেলাম এবং ঘর থেকে বেরিয়ে আমার ভাই আবূ কাতাদা ইবনু নুমান এর নিকট এলাম। আবূ কাতাদা (রাঃ) ছিলেন তার বৈপিত্রেয় ভাই এবং তিনি ছিলেন বদরী সাহাবী। তিনি বলেন, এরপর আমি তার কাছে ব্যাপারটি উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তোমার অনুপহিস্থিতে এরুপ বিধান জারী হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭১ | 5171 | ۵۱۷۱

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭১। আবূ আসিম (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি কুরবানী করেছে, সে যেন তৃতীয় দিবসে এমতাবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কুরবানীর গোশত কিছু পরিমান অবশ্যই থাকে। এরপর যখন পরবর্তী বছর আসল, তখন সাহাবীগন বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কি সে রূপ করবো যে রূপ গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি বললেনঃ তোমরা নিজেরা খাও অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ কেননা, গত বছর তো মানুষের মধ্যে ছিল অভাব অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম যে, তোমরা তাতে সাহায্য কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭২ | 5172 | ۵۱۷۲

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, মদিনায় অবস্থানের সময় আমরা কুররানীর গোশতের মধ্যে লবন মিশ্রিত করে রেখে দিতাম। এরপর তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পেশ করতাম। তিনি বলতেনঃ তোমরা তিন দিনের পর খাবে না। তবে এটি জরুরী নয়। বরং তিনি চেয়েছেন যে, তা থেকে যেন অন্যদের খাওয়ান হয়। আল্লাহ অধিক অবগত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৩ | 5173 | ۵۱۷۳

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭৩। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আযহাবের আযাদকৃত দাস আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর সঙ্গে কুরবানীর ঈদের দিন ঈদগাহে হাযির ছিলেন। উমর (রাঃ) খুৎবার পুর্বে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর সমবেত জনতার সামনে খুৎবা দেন। তখন তিনি বলেন হে লোক সকল! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুই ঈদের দিনে সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন। তন্মধ্যে একটি তো হল তোমাদের জন্য তোমাদের সিয়াম ভংগ করার দিন (অর্থাৎ ঈদুল ফিতর)। আর অপরটি হল এমন দিন যে দিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশত আহার করবে।

আবূ উবায়দ বলেনঃ এরপর আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর সময়ও হাযির হয়েছি। সেদিন ছিল জুমুআর দিন। তিনি খুতবা দানের আগে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি খুতবা দিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে লোক সকল! এটি এমন দিন যে দিন তোমাদের জন্য দুটি ঈদ একত্রিত হয়ে গেছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে আওয়ালী (মদিনার চার মাইল পূর্বে অবস্থিত একটি স্থানের নাম) এলাকার যে ব্যাক্তি জুমু আর সালাত (নামায/নামাজ) এর অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করে সে যেন অপেক্ষা করে। আর যে ফিরে যেতে চায়, তার জন্য আমি অনুমতি দিলাম। আর উবায়দ বলেনঃ এরপর আমি ঈদগাহে হাযির হয়েছি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এর সময়ে তিনি খুতবার পূর্বে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর লোকজনের উদ্দেশ্যে খুৎবা দেন। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশত তিন দিনের অধিক কাল খেতে নিষেধ করেছেন।

মা’মার যুহরী আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৪ | 5174 | ۵۱۷٤

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭৪। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরবানীর গোশত থেকে তোমরা তিন দিন পর্যন্ত আহার কর। আবদুল্লাহ (রাঃ) মিনা থেকে ফিরার পর কুরবানীর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে যায়তুন দিয়ে আহার করতেন।

পানীয় দ্রব্যসমূহ অধ্যায় (৫১৭৫-৫২৩৭)

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৫ | 5175 | ۵۱۷۵

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি দুনিয়াতে মদ পান করেছে এরপর সে তা থেকে তওবা করেনি, সে ব্যাক্তি আখিরাতে তা থেকে বঞ্চিত থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৬ | 5176 | ۵۱۷٦

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইসরা মিরাজের রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে শরাব ও দুধের দু’ টি পেয়ালা পেশ করা হয়েছিল। তিনি উভয়টির দিকে নযর করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করেন। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ সকল প্রসংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত জিনিসের দিকে পথ দেখিয়েছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মত গুমরাহ হয়ে যেত। যুহরী (রহঃ) থেকে মা’মার, ইবনু হাদী, উসমান, ইবনু উমর যুবায়দী অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৭ | 5177 | ۵۱۷۷

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৭। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে এমন একটি হাদীস শুনেছি যা আমি ব্যতীত অন্য কেউ তোমাদের বর্ণনা করবে না। তিনি বলেন, কিয়ামতের লক্ষন সমূহের কতক হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, ইল্‌ম (দ্বীনী) কমে যাবে, ব্যাভিচার প্রকাশ্য হতে থাকবে, মদ্যপানের ছাড়াছড়ি চলবে, পুরুযের সংখ্যা কমে যাবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, শেষ অবধি অবস্থা এমন দাঁড়াবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর জন্য তাদের পরিচালক হবে একজন পুরুষ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৮ | 5178 | ۵۱۷۸

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৮। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ব্যাভিচারী ব্যাভিচার করার সময়ে মুমিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মুমিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মুমিন থাকে না। ইবনু শিহাব বলেনঃ আবদুল মালিক ইবনু আবূ বকর ইবনু আবদুর রহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবূ বকর (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, আবূ বকর উপরোক্ত হাদীসের সঙ্গে এটিও সংযুক্ত করতেন যে, ছিনতাইকারী এমন মুল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঠিয়ে তাকিয়ে থাকে, তা ছিনতাই করার সময়ে মুমিন থাকে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৯ | 5179 | ۵۱۷۹

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৭৯। হাসান ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমতাবস্থায় যে মদিনার আঙ্গুরের মদের তেমন কিছু অবশিষ্ট ছিল না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮০ | 5180 | ۵۱۸۰

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৮০। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমাদের উপর মদ হারাম ঘোষিত হল। তখন আমরা মদিনায় আঙ্গুর থেকে প্রস্তুতকৃত মদ অনেক কম পেতাম। সাধারণত আমাদের মদ ছিল কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮১ | 5181 | ۵۱۸۱

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৮১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেন (হামদ ও সালাতের পর জেনে রাখ) মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ প্রকারের জিনিস থেকে আঙ্গুর, খেজুর মধু, গম, ও যব। আর মদ হল তাই, যা বিবেক-বুদ্ধিকে বিলোপ করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮২ | 5182 | ۵۱۸۲

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আবূ উবায়দা, আবূ তালহা ও উবাই ইবনু কাব (রাঃ) কে কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তিনি মদ পান করতে দিয়েছিলাম। এমন সময়ে তাদের নিকট জনৈক আগন্তক এসে বলল, মদ হারাম ঘোষিত হয়ে গেছে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বললেন হে আনাস দাঁড়াও এবং এগুলো ঢেলে দাও। আমি সেগুলো তখন ঢেলে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৩ | 5183 | ۵۱۸۳

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মু’তামির তার পিতার সুত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেনঃ একটি আসনে দাঁড়িয়ে আমি তাদের অর্থাৎ চাচাদের ফাযীখ অর্থাৎ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে মদ পান করাচ্ছিলাম। তখন আমি ছিলাম সকলের ছোট। এমন সময় বলা হলঃ মদ হারাম হয়ে গেছে। তখন তারা বললেনঃ ঢেলে দাও। সুতরাং আমি তা ঢেলে দিলাম। রাবী বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বললাম তাদের শরাব কি ধরনের ছিল? তিনি উত্তর দিলেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী। তখন আনাস (রাঃ) এর পুত্র আবূ বকর (যিনি তখন উপস্থিত ছিলেন) বললেনঃ সেটিই কি ছিলল তাদের মদ? জবাবে আনাস (রাঃ) কোন অসম্মতি প্রকাশ করলেন না। রাবী সুলায়মান আরো বলেন, আমার কতিপয় সঙ্গী আমাকে বর্ণনা করেছেন যে তাঁরা আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, সেকালে এটিই ছিল তাদের মদ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৪ | 5184 | ۵۱۸٤

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮৪। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দমী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, মদ হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর সেকালে মদ তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুরে থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৫ | 5185 | ۵۱۸۵

পরিচ্ছদঃ ২২২৩. মধু তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় ‘বিতা’ বলে। মা’ন (র) বলেন, আমি মারিক ইব্‌ন আনাসকে ‘ফুককা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেনঃ যদি তা নেশাগ্রস্ত না করে তাহলে কোন ক্ষতি নেই। ইবন দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, তখন তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।
৫১৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘বিতা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ সব নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৬ | 5186 | ۵۱۸٦

পরিচ্ছদঃ ২২২৩. মধু তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় ‘বিতা’ বলে। মা’ন (র) বলেন, আমি মারিক ইব্‌ন আনাসকে ‘ফুককা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেনঃ যদি তা নেশাগ্রস্ত না করে তাহলে কোন ক্ষতি নেই। ইবন দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, তখন তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।
৫১৮৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘বিতা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। ‘বিতা’ হল মধু থেকে তৈরী নাবীয। ইয়ামানের অধিবাসীরা তা পান করত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে সব পানীয় দ্রব্য নেশার সৃষ্টি করে তাই হারাম।

যুহরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা দুব্বা (কদুর খোল) এর মধ্যে নাবীয তৈরী করবে না মুযাফফাতের (আলকাতরা যুক্ত পাত্র) মধ্যেও নয়। যুহরী বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এগুলোর সঙ্গে হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) ও নাফীরের (খেজুর বুক্ষের মূলের খোল) কথাও সংযুক্ত করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৭ | 5187 | ۵۱۸۷

পরিচ্ছদঃ ২২২৪. মদ এমন পানীয় দ্রব্য যা বিবেক বিলোপ করে দেয়
৫১৮৭। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুতুবা দিতে গিয়ে বললেনঃ নিশ্চয়ই মদ হারাম সম্পর্কীয় আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরি হয় পাঁচটি বস্তু থেকে আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর খামর (মদ) হল তা যা বিবেক বিলোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে, আমি চাইছিলাম যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ননা করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান। বিষয়গুলো হলঃ দাদা এর মীরাস, কালালা এর ব্যখ্যা এবং সুদের প্রকার সমুহ।

রাবী আবূ হাইয়্যান বলেনঃ আমি বললামঃ হে আবূ আমর! এক প্রকারের পানীয় জিনিস যা সিঞ্চন অঞ্চলে চাউল দিয়ে তৈরি করা হয় তার হুকুম কি? তিনি বললেনঃ সেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে ছিল না। কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেটি উমর (রাঃ) এর আমলে ছিল না। হাম্মাদ সুত্রে আবূ হাইয়্যান থেকে হাজ্জাজ الْعِنَبِ এর স্থলে الزَّبِيبَ কিসমিস বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৮ | 5188 | ۵۱۸۸

পরিচ্ছদঃ ২২২৪. মদ এমন পানীয় দ্রব্য যা বিবেক বিলোপ করে দেয়
৫১৮৮। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, মদ তৈরী করা হয় পাঁচটি জিনিস থেকে। সেগুলো হল কিসমিস, খেজুর, গম, যব ও মধু।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৯ | 5189 | ۵۱۸۹

পরিচ্ছদঃ ২২২৫. যে ব্যক্তি মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে হালাল মনে করে
৫১৮৯। হিশাম ইবনু আম্মার (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশআরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার নিকট আবূ আমের কিংবা আবূ মালেক আশ-আরী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন আমার উম্মতের মাঝে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে যারা ব্যাভিচার, রেশমী কাপড় মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে। অনুরূপভাবে এমন অনেক দল হবে যারা পর্বতের কিনারায় বসবাস করবে, বিকাল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের কাছ কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা উত্তর দেবে আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। এদিকে রাতের অন্ধকারেই আল্লাহ তাদের ধংশ করে দিবেন। পর্বতটি ধসিয়ে দিবেন, আর অবশিষ্ট লোকদের তিনি কিয়ামত দিবস পর্যন্ত বানর ও শুকর বানিয়ে রাখবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯০ | 5190 | ۵۱۹۰

পরিচ্ছদঃ ২২২৬. বড় ও ছোট পাত্রে “নাবীয” তৈরী করা
৫১৯০। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বিয়ের অনুঠানে দাওয়াত দিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী নববধু ছিলেন। তাদের মধ্যে পরিবেশনকারিণী সে নববধু বলেনঃ তোমরা কি জানো আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি জিনিস পান করতে দিয়েছিলাম? (তিনি বলেন) আমি রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯১ | 5191 | ۵۱۹۱

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯১। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতগুলো পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। তখন আনসারগণ বললেনঃ সেগুলো ব্যতীত আমাদের কোন উপায় নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ব্যবহার করতে পার। খলীফা বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আমাদের কাছে সুফিয়ান, মানসূর, সালিম ইবনু আবূল জাদ-জাবির (রাঃ) থেকে এরূপ বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯২ | 5192 | ۵۱۹۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩৭. পান করার ক্ষেত্রে প্রথমে ডানের ব্যক্তি, তারপর ক্রমান্বয়ে ডানের ব্যক্তির অগ্রাধিকার
৫১৯২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ধরনের পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল, সব মানুষের নিকট তো মাশক মউজুদ নেই। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কলসীর জন্য অনুমতি দেন। তবে আলকাতরার প্রলেপ দেওয়া পাত্রের জন্য অনুমতি দেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৩ | 5193 | ۵۱۹۳

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুব্বা ও মুযাফফাত ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। উসমান (রহঃ) বলেন, জারীর (রহঃ) আমাশ (রহঃ) সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৪ | 5194 | ۵۱۹٤

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৪। উসমান (রহঃ) … ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আসওয়াদকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি কি উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কোন কোন পাত্রের মধ্যে ‘নাবীয’ তৈরী করা মাকরূহ। তিনি উত্তর করলেনঃ হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে উম্মুল মুমিনীন! কোন কোন পাত্রের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাবীয তৈরী করতে নিষেধ করেছেন? তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অর্থাৎ আহলে বাইতকে দুব্বা ও মুযাফফাত নামক পাত্রে নাবীয তৈরি করতে নিষেধ করেছেন। ইবরাহীম বলেন) আমি বললাম আয়িশা (রাঃ) কি জার (মাটির কলসী) হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) নামক পাত্রের কথা উল্লেখ করেননি? তিনি বললেনঃ আমি যা শুনেছি কেবল তাই তোমাকে বর্ননা করেছি। আমি যা শুনি নাই তাও কি আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করবো?

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৫ | 5195 | ۵۱۹۵

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবুজ বর্ণের কলসী ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। আমি বললামঃ তাহলে সাদা বর্ণের পাত্রে (নাবীয) পান করা যাবে কি? তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৬ | 5196 | ۵۱۹٦

পরিচ্ছদঃ ২২২৮. শুকনো খেজুরের রস যতক্ষণ না তা নেশার সৃষ্টি করে
৫১৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর ওলীমা অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছিলেন। সে দিন তার স্ত্রী নববধূ অবস্থায় সবার খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনারা কি জানেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কিসের রস পান করতে দিয়েছিলাম? আমি তার জন্য রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৭ | 5197 | ۵۱۹۷

পরিচ্ছদঃ ২২২৯. ‘বাযাক’ (অর্থাৎ আঙ্গুরের সামান্য পাকানো রস)-এর বর্ণনা এবং যারা উদ্রেককারী যাবতীয় পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তা বর্ণন। উমর, আবূ উবায়দা ও মুৱআয (রাঃ) ’তিলা’ অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করার জায়েয মনে করেন। বার ও আবূ জুহায়ফা (রাঃ) পাকিয়ে অর্ধেক থাকাবস্থায় রস পান করছেন। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন : আমি তাজা অবস্থায় থাকা পর্যন্ত আঙ্গুরের রস পান করেছি। উমর (রা) বলেছেনঃ আমি উবায়দুল্লাহ্‌র মূখ থেকে শরাবের ঘ্রাণ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহেল আমি বেত্রাঘাত করতাম।
৫১৯৭। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূল জুওয়ায়রিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে ‘বাযাক’ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তর দিলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বাযাক’ উৎপাদনের পূর্বে চলে গেছেন। কাজেই যে জিনিস নেশা সৃষ্টি করে থাকে তাই হারাম। তিনি বলেনঃ হালাল পানীয় পবিত্র। তিনি বলেন হালাল ও পবিত্র পানীয় ব্যতীত অন্যান্য পানীয় ঘৃণ্য হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৮ | 5198 | ۵۱۹۸

পরিচ্ছদঃ ২২২৯. ‘বাযাক’ (অর্থাৎ আঙ্গুরের সামান্য পাকানো রস)-এর বর্ণনা এবং যারা উদ্রেককারী যাবতীয় পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তা বর্ণন। উমর, আবূ উবায়দা ও মুৱআয (রাঃ) ’তিলা’ অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করার জায়েয মনে করেন। বার ও আবূ জুহায়ফা (রাঃ) পাকিয়ে অর্ধেক থাকাবস্থায় রস পান করছেন। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন : আমি তাজা অবস্থায় থাকা পর্যন্ত আঙ্গুরের রস পান করেছি। উমর (রা) বলেছেনঃ আমি উবায়দুল্লাহ্‌র মূখ থেকে শরাবের ঘ্রাণ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহেল আমি বেত্রাঘাত করতাম।
৫১৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিাষ্ট ও মধু পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৯ | 5199 | ۵۱۹۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫১৯৯। মুসলিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি আবূ তালহা আবূ দুজানা এবং সুহায়ল ইবনু বায়দা (রাঃ) কে কাঁচা ও শুকনো খেজুরের মিশ্রিত রস পান করাচ্ছিলাম। এ সময়ে মদ হারাম ঘোষিত হল, তখন আমি তা ফেলে দিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের পরিবেশকারী এবং তাঁদের সবার ছোট। আর সেকালে আমরা এটিকে মদ বলে গণ্য করতাম। আমর ইবনু হারিস বলেনঃ কাতাদা (রহঃ) আমাদের নিকট عَنْ أَنَسٍ এর স্থলে سَمِعَ أَنَسًا‏ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০০ | 5200 | ۵۲۰۰

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫২০০। আবূ আসিম (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসমিস, শুকনো খেজুর, কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশ্রন করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০১ | 5201 | ۵۲۰۱

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫২০১। মুসলিম (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুরমা ও আধাপাকা খেজুর এবং খুরমা ও কিসমিস একত্রিত করতে নিষেধ করেছেন। আর এগুলো প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথকেভাবে ভিজিয়ে ‘নাবীয’ তৈরি করা যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০২ | 5202 | ۵۲۰۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০২। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভ্রমণ করানো হয় (মিরাজের রাতে), সে রাতে তাঁর সামনে পেশ করা হয়েছিল দুধের একটি পেয়ালা এবং শরারের একটি পেয়ালা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৩ | 5203 | ۵۲۰۳

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৩। হুমায়দী (রহঃ) … উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম আদায় করার ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ কবেন। তখন আমি তার নিকট দুধ ভর্তি একটি পেয়ালা পাঠালাম। তিনি তা পান করলেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান অনেক সময় এভাবে বলতেন, আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম আদায়ের ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করছিল। তখন উম্মুল ফাযল (রাঃ) তাঁর কাছে দুধ পাঠিয়ে দিলেন। হাদীসটি মাউসূল না মুরসাল, এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন এটি উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৪ | 5204 | ۵۲۰٤

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৪। কুতায়বা (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) এক পাত্র দুধ নিয়ে আসলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে রাখলে না কেন? এর উপর একটি কাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৫ | 5205 | ۵۲۰۵

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৫। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) নামক এক আনসারী নাকি’ নামক স্থান থেকে এক পেয়ালা দুধ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে আননি কেন? এর উপর একটি কাঠি স্থাপন করে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল। আবূ সুফিয়ান (রহঃ) এ হাদীসটি জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৬ | 5206 | ۵۲۰٦

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৬। মাহমুদ (রহঃ) বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে রওয়ানা হলেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমরা এক রাখালের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে সময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন খুব পিপাসার্ত। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন একটি পাত্রে ভেড়ার দুধ দোহন করলাম। তিনি তা পান করলেন, আমি খুব আনন্দিত হলাম। এমন সময় সুরাকা ইবনু জুশুম একটি ঘোড়ার উপর আরোহণ করে আমাদের কাছে আসলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বদ দুআর মনস্থ করলে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আবেদন জানোান যেন তিনি তার প্রতি বদ দুআ না করেন এবং সে যেন নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৭ | 5207 | ۵۲۰۷

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরাররা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল উপহার হিসেবে প্রদত্ত দুধেল উঠনী কিংবা দুধেল বকরী। যা সকালে একটি পাত্র ভরে দেবে আর বিকালে আরেকটি পাত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৮ | 5208 | ۵۲۰۸

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৮। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধপান করেছেন এরপর তিনি কুলি করেছেন এবং বলেছেন এর মধ্যে তৈলাক্ততা আছে।

ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার কাছে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ তুলে ধরা হল। তখন দেখলাম চারটি নহর। দু’টি নহর হল যাহেরী আর দুটি নহর হল বাতেনী। যাহেরী দুটি হল নীল ও ফোরাত। আর বাতেনী দুটি হল, জান্নাতের দুটি নহর। আমার সামনে তিনটি পেয়ালা পেশ করা হল একটি পেয়ালার মধ্যে আছে দুধ, একটি পেয়ালার মধ্যে আছে মধু আর একটি পেয়ালার মধ্যে আছে শরাব। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করলাম এবং পান করলাম। তখন আমাকে বলা হল, আপনি এবং আপনার উম্মত স্বভাবজাত জিনিস লাভ করেছেন। তবে তারা তিনটি পেয়ালার কথা উল্লেখ করেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৯ | 5209 | ۵۲۰۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩২. সুপেয় পানি তালাশ করা
৫২০৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ তালহা (রাঃ) ছিলেন মদিনার আনসারীদের মধ্যে সবার চাইতে বেশী খেজুর গাছের মালিক। আর তার নিকট তার প্রিয় সম্পদ ছিল ‘বায়রুহা’ নামক বাগানটি। সেটি ছিল মসজিদে নববীর ঠিক সামনে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাগানে যেতেন এবং সেখানে অবস্থিত সুপেয় পানি পান করতেন।

আনাস (রাঃ) বলেন, যখন আয়াত অবর্তীর্ণ হলঃ তোমরা ততক্ষন পর্যন্ত কল্যাণ অর্জন করতে সক্ষম হবে না যতক্ষন তোমরা তোমাদের প্রিয় জিনিস থেকে ব্যয় করবে”। তখন আবূ তালহা (রাঃ) দাড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ ইরশাদ করেছেন যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পূণ্য লাভ করবে না। (আলে ইমরানঃ ৯২)। আর আমার নিকট সবচাইতে প্রিয় সম্পপদ হল ‘বায়রুহা’ নামক বাগান। এটিকে আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাদকা করে দিলাম এবং আমি আল্লাহর কাছে এটির সাওয়াব এবং এটির সঞ্চয় আশা করি। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটিকে গ্রহন করুন আল্লাহর ইচ্ছায় যেখানে ব্যয় করতে আপনি ভাল মনে করেন! সেখানে ব্যয় করুন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন খুব ভাল, এটিতো লাভজনক সম্পপদ কিংবা তিনি বলেছেন এটিতো মুনাফা দানকারী সম্পদ। কথাটির মধ্যে রাবী আবদুল্লাহ দ্বিধা পোষণ করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। তবে আমি ভাল মনে করি যে, তুমি এটিকে আপন আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। আবূ তালহা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি এমনটই করবো। এরপর আবূ তালহা (রাঃ) বাগানটি তার আত্মীয়দের মধ্যে এবং তার চাচাত ভাইদেয় মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ইসমাঈল ও ইয়াহইয়া رَابِحٌ এর স্থলে رائح বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১০ | 5210 | ۵۲۱۰

পরিচ্ছদঃ ২২৩৩. পানি মিশ্রিত দুধ পান করা
৫২১০। আবদান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বাড়ীতে এসে দুধ পান করতে দেখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একটি বকরী দোহন করলাম। এবং কূপ থেকে পানি তুলে তা মিশিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলাম। তিনি পেয়ালাটি নিয়ে পান করেন। তার বাঁদিকে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) ও ডান দিকে ছিল জনৈক বেদুঈন। তিনি বেদুঈনকে তার অবশিষ্ট দুধ দিলেন। এরপর বললেনঃ ডান দিকের রয়েছে অগ্রাধিকার।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১১ | 5211 | ۵۲۱۱

পরিচ্ছদঃ ২২৩৩. পানি মিশ্রিত দুধ পান করা
৫২১১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির নিকট গেলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক সাহাবী। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীকে বললেনঃ তোমার নিকট যদি মশকে রক্ষিত গত রাতের পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাও আর না থাকলে আমরা সামনে গিয়ে পান করব। রাবী বলেন লোকটি তখন তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি উত্তর করল ইয়া রাসুলাল্লাহ আমার কাছে গত রাতের পানি আছে। আপনি ঝুপড়ীতে চলুন। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর লোকটি তাদের দুজনকে নিয়ে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি নিয়ে তাতে তার একট বকরীর দুধ দোহন করল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন, তারপর তাঁর সঙ্গে আগন্তক লোকটিও পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১২ | 5212 | ۵۲۱۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩৪. মিষ্টি দ্রব্য ও মধু পান করা। যুহরী (র) বলেছেন, ভীষণ মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হলেও মানুষের পেশাব নাপাক। কেননা পেশাব অপবিত্র। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদঃ “তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সকল পবিত্র জিনিস।” ইবন মাসউদ (রাঃ) নেশাদ্রব্য সম্পর্কে বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের উপর যে সকল জিনিস হারাম করেছেন তাতে তোমাদের জন্য কোন নিরাময় রাখেন নি।
৫২১২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় জিনিস ছিল মিষ্টি দ্রব্য ও মধু।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৩ | 5213 | ۵۲۱۳

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৩। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … নাযযাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুফা মসজিদের ফটকে আলী (রাঃ) এর নিকট পানি আনা হলে তিনি দন্ডায়মান অবস্থায় তা পান করলেন। এরপর বললেনঃ লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ দণ্ডায়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তোমরা আমাকে যেরূপভাবে পান করতে দেখলে তিনিও সে রূপ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৪ | 5214 | ۵۲۱٤

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৪। আদম (রহঃ) … নাযযাল ইবনু সাবরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর তিনি মানুষের নানাবিধ প্রয়োজনীয় কাজে কুফা মসজিদের চত্বরে বসে পড়লেন। অবশেষে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের সময় হয়ে গেল। তখন পানি আনা হল। তিনি পানি পান করলেন এবং নিজের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত ধৌত করলেন। বর্ণনাকারী আদম এখানে তাঁর মাথার কথাও উল্লেখ করেন এবং ধৌত করার কথাও উল্লেখ করেন। এরপর আলী (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং তিনি দাঁড়ান অবস্থায় উযূ (ওজু/অজু/অযু)র উদ্বৃত্ত পানি পান করে নিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লোকজন দণ্ডায়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি যেমন করেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তেমন করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৫ | 5215 | ۵۲۱۵

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৫। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান অবস্থায় যমযমের পানি পান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৬ | 5216 | ۵۲۱٦

পরিচ্ছদঃ ২২৩৬. উটের পিঠে আরোহী অবস্থায় পান করা
৫২১৬। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মুল ফাযল বিনত হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাতে বিকালে অবস্থান করছিলেন। তিনি নিজ হাতে পেয়ালাটি গ্রহন করেন এবং তা পান করেন। আবূন নাযর থেকে মালিক عَلَى بَعِيرِهِ (তাঁর উটের উপর আরোহী অবস্থায় ছিলেন) কথাটি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৭ | 5217 | ۵۲۱۷

পরিচ্ছদঃ ২২৩৭. পান করার ক্ষেত্রে প্রথমে ডানের ব্যক্তি, তারপর ক্রমান্বয়ে ডানের ব্যক্তির অগ্রাধিকার
৫২১৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পানি মেশানো দুধ পবিরেশন করা হল। তার ডান পার্শ্বে ছিল জনৈক বেদুঈন ও বাম পার্শ্বে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধ পান করলেন। তারপর বেদুঈন লোকটিকে তা দিয়ে বললেনঃ ডানের লোকের অগ্রাধিকার। এরপর তার ডানের লোকের।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৮ | 5218 | ۵۲۱۸

পরিচ্ছদঃ ২২৩৮. পান করতে দেয়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক (বয়োজ্যেষ্ঠ) লোকদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য তার ডানে অবস্থিত লোক থেকে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে কি?
৫২১৮। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে শরবত পবিবেশন করা হলে তিনি তা থেকে পান করলেন। তার ডানে ছিল একটি বালক, আর বামে ছিলেন কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালকটিকে বললেনঃ তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি ঐ বয়স্ক লোকদের আগে পান করতে দেই? বালকটি বললঃ আল্লাহর কসম! ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার কাছ থেকে আমার ভাগে আসা জিনিসের ক্ষেত্রে আমি কাউকে আমার উপর অগ্রাধিকার দেব না। রাবী বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন পেয়ালাটি তার হাতে তুলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৯ | 5219 | ۵۲۱۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩৯. অঞ্জলি দ্বারা হাউজের পানি পান করা
৫২১৯। ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির কাছে গেলেন। তার সঙ্গে ছিল তাঁর এক সাহাবী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবী সালাম দিলে লোকটি সালামের জবাব দিল। এরপর সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার জন্য আমার পিতা ও মাতা কুরবান, এটি ছিল প্রচণ্ড গরমের সময়। এ সময় লোকটি তার বাগানে পানি দিতে ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তোমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাতে পার। অন্যথায় আমরা আমাদের সন্মুখস্থ পানি থেকে পান করে নেব। তখন লোকটি বাগানে পানি দিতে ছিল। এরপর লোকটি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ। আমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি আছে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঝুপড়ীতে নিযে গেল। একটি পাত্রে কিছু পানি ঢেলে তাতে ঘরে পোষা বকরীর দুধ দোহন করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর সে আবার দোহন করল। তখন তার সঙ্গে যিনি ছিলেন তিনি তা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২০ | 5220 | ۵۲۲۰

পরিচ্ছদঃ ২২৪০. ছোটরা বড়দের খিদমত করবে
৫২২০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রীয় লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাদেরকে অর্থাৎ আমার চাচাদেরকে ‘ফাযীখা’ নামক শরাব পান করাতে ছিলাম। আমি ছিলাম তাদের মধ্যে সকলের চাইতে ছোট। এমন সময় ঘোষণা করা হলঃ শরাব হারাম হয়ে গেছে। তারা বললেনঃ এ শরাবগুলো ঢেলে দাও। আমি তা ঢেলে দিলাম। বর্ণনাকারী (সুলায়মান তায়মী) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ তাদের শরাব কিসের তৈরী ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুরের তৈরী। আনাস (রাঃ) এর পৃত্র আবূ বকর বললেন, (সম্ভবত তিনি তখন উপস্থিত ছিলেন)। এটিই ছিল তাদের আমলের শরাব। তাতে আনাস (রাঃ) কোন অস্বীকৃতি প্রকাশ করেননি। সুলায়মান বলেনঃ আমার কতিপয় বন্ধু আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেনঃ সেকালে এটিই ছিল তাঁদের শরাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২১ | 5221 | ۵۲۲۱

পরিচ্ছদঃ ২২৪১. পাত্রগুলো ঢেকে রাখা
৫২২১। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সন্ধ্যা হয় তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকিয়ে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু সময় অতিক্রান্ত হলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করে দেবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোন জিনিস আড়াআড়িভাবে রেখে হলেও। আর (শয়নকালে) তোমরা তোমাদের চেরাগগুলো নিভিয়ে দেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২২ | 5222 | ۵۲۲۲

পরিচ্ছদঃ ২২৪১. পাত্রগুলো ঢেকে রাখা
৫২২২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন চেরাগ নিভিয়ে দেবে দরজা বন্ধ করে ফেলবে, মাশকের মুখ বন্ধ করে দেবে, খাবার ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন অন্তত একটি কাঠ আড়াআড়িভাবে পাত্রের উপর স্থাপন করে হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৩ | 5223 | ۵۲۲۳

পরিচ্ছদঃ ২২৪২. মশ্‌কের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা
৫২২৩। আদম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ খুলে, তাতে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৪ | 5224 | ۵۲۲٤

পরিচ্ছদঃ ২২৪২. মশ্‌কের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা
৫২২৪। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘ইখতিনাছিল আসকিয়া’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, মামার কিংবা অন্য একজন বলেছেন, ‘ইখতিনাছ’ হল মাশকের মুখ থেকে পানি পান করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৫ | 5225 | ۵۲۲۵

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আইউব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইকরামা আমাদের বললেন, আমি তোমাদের সংক্ষিপ্ত এমন কতগুলো কথা জানাবো কি যেগুলো আমাদের কাছে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন? (কথাগুলো হল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় কিংবা ছোট মশকের মুখে পানি পান করতে এবং প্রতিবেশীকে এর দেয়ালের উপর খুটি গাঁড়তে বাধা দিতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৬ | 5226 | ۵۲۲٦

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৭ | 5227 | ۵۲۲۷

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৮ | 5228 | ۵۲۲۸

পরিচ্ছদঃ ২২৪৪. পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা
৫২২৮। আবূ নুআইম (রহঃ) … আবদুল্লাহর পিতা আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন পানি পান করবে সে যেন তখন পান-পাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে। আর তোমাদের কেউ যখন পেশাব করবে, সে যেন ডান হাতে তার লজ্জাস্থান স্পর্শ না করে এবং তোমাদের কেউ যখন শৌচ কাজ করবে তখন সে যেন ডান হাতে তা না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৯ | 5229 | ۵۲۲۹

পরিচ্ছদঃ ২২৪৫. দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা
৫২২৯। আবূ আসিম ও আবূ নুআয়ম (রহঃ) … সুমামা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ) এর নিয়ম ছিল, তিনি দুই কিংবা তিন নিশ্বাসে পানি পান করতেন। তিনি ধারনা করতেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩০ | 5230 | ۵۲۳۰

পরিচ্ছদঃ ২২৪৬. সোনার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩০। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হুযায়ফা (রাঃ) মাদায়েন অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিনি পানি পান করতে চাইলেন। তখন জনৈক গ্রামবাসী একটি রুপার পেয়ালায় পানি এনে তাঁকে দিল। তিনি পানি সহ পেয়ালাটি ছুঁড়ে মারলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি এটি ছুড়ে ফেলতাম না কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করা সত্তেও সে তা থেকে বিরত হয়নি। অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিষেধ করেছেন মোটা ও পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করতে, সোনা ও রুপার পান-পাত্র ব্যবহার করতে। তিনি আরো বলেছেনঃ উল্লেখিত জিনিসগুলো হল দুনিয়াতে কাকির সম্প্রদায়ের জন্য আর আখিরাতে তোমাদের জন্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩১ | 5231 | ۵۲۳۱

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩১। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু আবূ লায়লা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা হুযায়ফা (রাঃ) এর সঙ্গে বাইরে বেরুলাম। এ সময় তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা আলোচনা করেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সোনা ও রুপার পাত্রে পান করবে না। আর মোটা বা পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করবে না। কেননা, এগুলো দুনিয়াতে তাদের (অমুসলিম সম্প্রদায়ের) জন্য ভোগ্যবস্তু। আর তোমাদের (মুসলিম সম্প্রদায়ের) জন্য হল আখিরাতের ভোগ্য সামগ্রী।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩২ | 5232 | ۵۲۳۲

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩২। ইসমাঈল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রুপার পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৩ | 5233 | ۵۲۳۳

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের হুকুম দিয়েছেন এবং সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা করতে, জানাযার পেছনে যেতে, তিনি দানকারীর জবাব দিতে দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহন করতে বেশী বেশী সালাম দিতে, মাযলুমের সাহায্য করতে এবং কসম ঠিক রাখার সুযোগ কবে দিতে। আর আমাদের তিনি নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে, কিংবা তিনি বলেছেন রুপার পাত্রে পানি পান করতে মায়াসির অর্থাৎ এক জাতীয় নরম ও মসৃণ রেশমী কাপড় কাসসী অর্থাৎ রেশম মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতে এবং পাতলা কিংবা মোটা এবং অলংকার খচিত রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৪ | 5234 | ۵۲۳٤

পরিচ্ছদঃ ২২৪৮. পেয়ালায় পান করা
৫২৩৪। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, লোকজন আরাফার দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম পালনের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করলো। তখন আমি তাঁর নিকট একটি পেয়ালায় করে কিছু দুধ পাঠালাম তিনি তা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৫ | 5235 | ۵۲۳۵

পরিচ্ছদঃ ২২৪৯. নাবী (সাঃ) এর ব্যবহৃত পেয়ালায় পান করা এবং তাঁর পাত্রসমূহের বর্ণনা। আবূ বুরদাহ (র) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে সেই পাত্রে পান করতে দেব না যে পাত্রে নাবী (সাঃ) পান করেছেন?
৫২৩৫। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরবের জনৈকা মহিলার কথা আলোচনা করা হলে, তিনি আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) কে আদেশ দিলেন, সেই মহিলার নিকট কাউকে পাঠাতে। তখন তিনি তার নিকট একজনকে পাঠালে সে আসলো এবং সায়িদা গোত্রের দুর্গে অবতরন করলো। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এসে তার কাছে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুর্গে তার কাছে প্রবেশ করে দেখলেন, একজন মহিলা মাথা ঝুঁকিয়ে বসে আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার সঙ্গে কথোপকথন করলেন, তখন সে বলে উঠল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তখন তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে পানাহ দিলাম।

তখন লোকজন তাকে বললো তুমি কি জানো ইনি কে? সে উত্তর করল না। তারা বললঃ ইনি তো আল্লাহর রাসুল। তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছিলেন। সে বলল, এ মর্যাদা থেকে আমি চির বঞ্চিতা! এরপর সেই দিনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রসর হলেন এবং তিনি ও তাঁর সাহাবীগগ অবশেষে বনী সায়িদাহ চত্বরে এসে বসে পড়লেন। এরপর বললেনঃ হে সাহল! আমাদের পানি পান করাও। সাহল (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাদের জন্য এই পেইয়ালাটিই বের করে আনি এবং তা দিয়ে তাদের পান করাই। বর্ননাকারী বলেন, সাহল (রাঃ) তখন আমাদের কাছে সেই পেইয়ালা বের করে আনলে আমরা তাতে করে পানি পান করি। তিনি বলেছেন পরবর্তীকালে উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তার কাছ থেকে সেটি দান হিসাবে পেতে চাইলে তিনি তাকে তা হেবা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৬ | 5236 | ۵۲۳٦

পরিচ্ছদঃ ২২৪৯. নাবী (সাঃ) এর ব্যবহৃত পেয়ালায় পান করা এবং তাঁর পাত্রসমূহের বর্ণনা। আবূ বুরদাহ (র) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে সেই পাত্রে পান করতে দেব না যে পাত্রে নাবী (সাঃ) পান করেছেন?
৫২৩৬। হাসান ইবনু মুদরিক (রহঃ) … আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যবহৃত একটি পেয়ালা দেখেছি। সেটি ফেটে গিয়েছিল। এরপর তিনি তা রূপা মিশিয়ে জোড়া দেন। বর্ণনাকারী আসিম বলেন, সেটি ছিল উত্তম, চওড়া ও নযর কাঠের তৈরী। আসিম বলেন আনাস (রাঃ) বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ পেয়ালায় কবার পানি পান করিয়েছি। আসিম বলেনঃ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেছেনঃ পেয়ালাটিতে বৃত্তাকারে লোহা লাগানো ছিল। তাই আনাস (রাঃ) ইচ্চা করে ছিলেন লোহার বৃত্তের স্থল্র সোনা বা রুপা একটি বৃত্ত স্থাপন করতে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তাকে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ তৈরী করেছেন তাতে কোন পরিবর্তন করো না। ফলে তিনি সে ইচ্ছা ত্যাগ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৭ | 5237 | ۵۲۳۷

পরিচ্ছদঃ ২২৫০. বরকত পান করা ও বরকতযুক্ত পানির বর্ণনা
৫২৩৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম এ সময় আসরের সময় হয়ে গেল। অথচ আমাদের সঙ্গে বেঁচে যাওয়া সামান্য পানি ব্যতীত কিছুই ছিল না। তখন সেটুকু একটি পাত্রে রেখে পাত্রটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পেশ করা হল। তিনি পাত্রটির মধ্যে নিজের হাত ঢ়ুকিয়ে দিলেন এবং আঙ্গুল ছড়িয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ এস যাদের উযূ (ওজু/অজু/অযু)-র প্রয়োজন আছে। বরকত তো আসে আল্লাহর কাছ থেকে। জাবির (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আঙ্গুলগুলোর ফাঁক থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লোকজন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করল এবং পানি পান করল। আমিও আমার উদরে যতটুকু সম্ভব ছিল ততটুকু পান করতে ক্রটি করলাম না। কেননা আমরা জানতাম এটি বরকতের পানি। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাঃ) কে বললাম সে দিন আপনারা কত লোক ছিলেন? তিনি বললেনঃ এক হাজার চারশ- জন।

জাবির (রাঃ)-এর সুত্রে আমর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। সালিম, জাবির (রাঃ) সুত্রের মাধ্যমে হুসাইন ও আমর ইবনু মুররা চৌদ্দশ’র স্থানে পনেরশ’র কথা বলেছেন। সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব জাবির (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

 

রোগীদের বর্ণনা অধ্যায় (৫২৩৮-৫২৭৫)

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৮ | 5238 | ۵۲۳۸

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৮। আবূল ইয়ামান হাকাম ইবনু নাফি (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান ব্যাক্তির উপর যে সকল বিপদ আপদ আপতিত হয় এর দ্বারা আল্লাহ তার পাপ মোচন করে দেন। এমনকি যে কাটা তার শরীরে বিদ্ধ হয় এর দ্বারাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৯ | 5239 | ۵۲۳۹

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম ব্যাক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ ব্যাধি, উদ্দেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪০ | 5240 | ۵۲٤۰

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন ব্যাক্তির উদাহরণ হল সে শস্যক্ষত্রের নরম চারা গাছের ন্যায়, যাকে বাতাস একবার কাত করে ফেলে, আরেক বার সোজা করে দেয়। আর মুনাফিকের উদাহরন, সে যেন ভূমির উপর কঠিনভাবে স্থাপিত বৃক্ষ, যাকে কোন ক্রমেই নোয়ানো যায় না। অবশেষে এক ঝটকায় মূলসহ তা উৎপাটিত হয়ে যায়। যাকারিয়্যা তার পিতা কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪১ | 5241 | ۵۲٤۱

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪১। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তির উপমা হল সে যেন শস্যক্ষেত্রের কোমল চারাগাছ। যে কোন দিক থেকেই তার দিকে বাতাস আসলে বাতাস তাকে নুইয়ে দেয়। আবার (যখন বাতাসের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন তা সোজা হয়ে দাঁড়ায়। (তদ্রূপ অবস্থা হল মু’মিনের) বালা মুসিবত তাকে নোয়াতে থাকে। আর ফাসিক হল ভূমির উপর কঠিনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানো বৃক্ষের ন্যায়, যাকে আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন ভেংগে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪২ | 5242 | ۵۲٤۲

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ যে ব্যাক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি মুসীবতে লিপ্ত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৩ | 5243 | ۵۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৩। কাবীসা (রহঃ) ও বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৪ | 5244 | ۵۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিড়িত অবস্থায় তাঁর কাছে গেলাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমি বললাম নিশ্চয়ই আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। আমি এও বললাম যে, এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুন সওয়াব রয়েছে। তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, তার উপর থেকে গুনাহ সমুহ এভাবে ঝরে যায়, যে ভাবে বৃক্ষ থেকে ঝরে যায় তার পাতাগুলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৫ | 5245 | ۵۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২২৫২. মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন নবীগণ। এর পরে ক্রমান্বয়ে প্রথম ব্যক্তি এবং পরবর্তী প্রথম ব্যক্তি
৫২৪৫। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তোমাদের দু’ব্যাক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জুরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম এটি এজন্য সে, আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ ব্যাপারটি এমনই। কেননা যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, চাই একটি কাটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেভাবে গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৬ | 5246 | ۵۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ মূসা আশাআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, রোগীর সেবা কর এবং কয়েদীকে মুক্ত কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৭ | 5247 | ۵۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের আদেশ দিয়েছেন এবং সাতটি বিষয়ে নিষেধ করেছেন। তিনি আামাদের নিষেধ করেছেনঃ সোনার আংটি, মোটা ও পাতলা এবং কারুকার্য খচিত রেশমী কাপড় ব্যাবহার করতে এবং কাসসী ও মিয়সারা কাপড় ব্যবহার করতে। আর তিনি আমাদের আদেশ করেছেনঃ আমরা যেন জানাযার অনুসরন করি, রোগীর সেবা করি এবং বেশী বেশী করে সালাম করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৮ | 5248 | ۵۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২২৫৪. সংজ্ঞাহীন ব্যক্তির সেবা করা
৫২৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) পায়ে হেঁটে আমার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আমার নিকট আসলেন। তাঁরা আমাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পেলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি তার অবশিষ্ট পানি আমার গায়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন। ফলে আমি সংজ্ঞা ফিরে পেয়ে দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সম্পদের ব্যাপারে আমি কি করবো? আমার সম্পদের ব্যাপারে কি পদ্ধতিতে আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো? তিনি তখন আমাকে কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে মীরাসের আয়াত নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৯ | 5249 | ۵۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৪৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আতা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতী মহিলা দেখাবো না? আমি বললাম অবশ্যই। তখন তিনি বললেনঃ এই কৃষ্ণ বর্ণের মহিলাটি, সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসেছিল। অরপর সে বললঃ আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার ছতর খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি চাও, ধৈর্য ধারণ করতে পার। তোমার জন্য থাকবে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দুআ করি, যেন তোমাকে নিরাময় করেন। মহিলা বলল আমি ধৈর্য ধারণ করবো। সে বলল তবে যে সে অবস্থায় ছতর খুলে যায়। কাজেই আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন আমার ছতর খুলে না যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দু’আ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫০ | 5250 | ۵۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৫০। মুহাম্মদ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সেই উম্মে যুফার (রাঃ) কে দেখেছেন কাবার গিলাফ ধরা অবস্থায়। সে ছিল দীর্ঘ দেহী কৃঞ্চ বর্ণের এক মহিলা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫১ | 5251 | ۵۲۵۱

পরিচ্ছদঃ ২২৫৬. যে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তিচলে গেছে তার ফযীলাত
৫২৫১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ বলেছেনঃ আমি যদি আমার কোন বান্দাকে তার অতি প্রিয় দুটি জিনিসের ব্যাপারে পরীক্ষায় ফেলি, আর সে তাতে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আমি তাকে সে দুটির বিনিময়ে দান করবো জান্নাত। আনাস (রাঃ) বলেন, দুটি প্রিয় জিনিস বলে তার উদ্দেশ্য হল সে ব্যাক্তির চক্ষুদ্বয়। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন আশআস ইবনু জাবির ও আবূ যিলাল (রহঃ) আনাস (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫২ | 5252 | ۵۲۵۲

পরিচ্ছদঃ ২২৫৭. মহিলাদের পুরুষ রোগীর সেবা করা। উম্মু দারাদা (রাঃ) মসজিদে অবস্থানকারী জনৈক আনসার ব্যক্তির সেবা করেছিলেন
৫২৫২। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসলেন, তখন আবূ বকর ও বিলাল (রাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম হে আব্বাজান! আপনি কেমন অনুভব করছেন? হে বিলাল, আপনি কেমন অনুভব করছেন? আবূ বকর (রাঃ) এর অবস্থা ছিল, তিনি যখন জ্বরে আক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃতি করতেনঃ

সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজনের মধ্যে, আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চেয়ে সন্নিকটে। বিলাল (রাঃ) এর জ্বর যখন থামত তখন তিনি বলতেন হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরণ হতো কোন দিন মাজিন্নার কূপের কাছে। হায়! আমি কি কখনো দেখা পাব শামা ও তাফীলের।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে এদের অবস্থা জানালাম। তখন তিনি দুআ করে বললেনঃ হে আল্লাহ! মদিনাকে আমাদের কাছে প্রিয় করে দাও, যে রূপে তুমি আমাদের কাছে মক্কা প্রিয় করে দিয়েছ কিংবা সে অপেক্ষা আরো অধিক প্রিয় করে দাও। হে আল্লাহ! আর মদিনাকে উপযোগী করে দাও এবং মদিনার মুদ্দ ও সা’ এর ওযনে বরকত দাও। আর এখানকার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে জুহফা এলাকায় স্থাপন করে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৩ | 5253 | ۵۲۵۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫৮. অসুস্থ শিশুদের সেবা করা
৫২৫৩। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক কন্যা (যায়নাব) তাঁর কাছে সংবাদ পাঠিয়েছেন, এ সময় উসমা, সা’দ ও সম্ভবত উবায় (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। সংবাদ ছিল এ মর্মে যে, (যায়নাব বলেছেন) আমার এক শিশুকন্যা মৃত্যুশয্যায় শায়িত। কাজেই আপনি আমাদের এখানে আসুন। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে সালাম পাঠিয়ে বলে দিলেনঃ সব আল্লাহর ইখতিয়ার। তিনি যা চান নিয়ে নেন, আবার যা চান দিয়ে যান। তার কাছে সব কিছু একটি নির্ধারিত সমতা আছে। কাজেই তুমি ধৈর্যধারণ কর এবং উত্তম প্রতিদানের আশায় থাকো।

তারপর আবারো তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কসম ও তাগিদ দিয়ে সংবাদ পাঠালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন। আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম। এরপর শিশুটিকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে তুলে দেওয়া হল। এ সময় তার নিঃশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু-চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো। সা’দ (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এটা রহমত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা করেন তার অন্তরে এটিকে স্থাপন করেন। আর আল্লাহ তার মেহেরবান বান্দাদের প্রতই মেহেরবানী করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৪ | 5254 | ۵۲۵٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫৯. অসুস্থ বেদুঈনদের সেবা করা
৫২৫৪। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক বেদুঈনের কাছে গিয়েছিলেন! তার রোগের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। বর্ণনাকারী বলেনঃ আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল তিনি যখন কোন রোগীকে দেখতে যেতেন তখন তাকে বলতেন কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ তুমি তোমার গুনাহ থেকে পবিত্রতা লাভ করবে। তখন বেদুঈন বললঃ আপনি কি বলেছেন যে, এটা গুনাহ থেকে পবিত্র করে দেবে? কখনো নয়, বরং এটা এমন এক জ্বর যা এক অতি বৃদ্ধকে গরম করছে কিংবা সে বলেছিল উত্তপ্ত করছে, যা তাকে কবরস্থান দেখিয়ে ছাড়বে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ তবে তেমনই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৫ | 5255 | ۵۲۵۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬০. মুশরিক রোগীর দেখাশুনা করা
৫২৫৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ইয়াহুদীর ছেলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করত। ছেলেটির অসুখ হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে এলেন। এরপর তিনি বললেন তুমি ইসলাম গ্রহন করো। সে ইসলাম গ্রহন করলো। সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আবূ তালিব মৃত্যুমুখে পতিত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে এসেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৬ | 5256 | ۵۲۵٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬১. কোন রোগীকে দেখতে গিয়ে সালাতের সময় হলে সেখানেই উপস্থিত লোকদের নিয়ে জামা’আতবদ্ধভাবে সালাত আদায় ক
৫২৫৬। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতার সময় লোকজন তাকে দেখার জন্য তাঁর কাছে আসলে তিনি তাদের নিয়ে বসা অবস্থায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। লোকজন তার পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করেছিল। ফলে তিনি তাদের বসার জন্য ইশারা করেন। এরপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে তিনি বলেনঃ ইমাম হল এমন ব্যাক্তি যাকে অনুসরন করতে হয়। কাজেই সে যখন রুকু করবে তখন তোমরাও রুকু করবে। সে যখন মাথা উঠাবে, তোমরা মাথা উঠাবে। আর সে যখন বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন তোমরাও বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৭ | 5257 | ۵۲۵۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৭। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) …. আয়েশা বিনত সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা বলেছেন, আমি যখন মক্কায় কঠিনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখার জন্য আসেন। আমি বললামঃ হে আল্লার নবী! আমি সম্পদ রেখে যাচ্ছি। আর আমার একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আর কেউ নেই। এ অবস্থায় আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ সম্পদের ব্যাপারে অসীয়ত করে এক-তৃতীয়াংশ রেখে যাব? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তা হলে অর্ধেক রেখে দিয়ে আর অর্ধেকের ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি। তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে দু’তৃতীয়াংশ রেখে দিয়ে এক-তৃতীয়াংশ এর ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এক-তৃতীয়াংশের পার, তবে এক-তৃতীয়াংশও অনেক। তারপর তিনি আমার কপালের উপর তাঁর হাত রাখলেন এবং আমার চেহারা ও পেটের উপর হাত বুলিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ, সা’দকে তুমি নিরাময় কর। তার হিজরত পুর্ন করতে দিন। আমি তার হাতের হিমেল পরশ এখনও পাচ্ছি এবং মনে করি আমি তা কিয়ামত পর্যন্ত পাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৮ | 5258 | ۵۲۵۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রবেশ করলাম। তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত বুলালাম এবং বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! আমি এমন কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হই, যা তোমাদের দু’জনের হয়ে থাকে। আমি বললাম এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য প্রতিদানও হল দ্বিগুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন যন্ত্রণা, রোগ ব্যাধি বা এ ধরনের অন্য কিছু আপতিত হলে তাতে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ঝরিয়ে দেন, যে ভাবে গাছ তার পাতাগুলো ঝরিয়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৯ | 5259 | ۵۲۵۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৫৯। কাবীসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতার সময় তার কাছে এলাম। এরপর তাঁর শরীরে হাত বুলালাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত এবং এটা এ জন্য যে আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ! কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন কষ্ট আপতিত হলে তার উপর থেকে গুনাহগুলো এভাবে ঝরে যায়, যেভাবে বৃক্ষ থেকে পাতা ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬০ | 5260 | ۵۲٦۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৬০। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রোগীকে দেখার জন্য তার কাছে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি বলেনঃ কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ গুনাহ থেকে তোমার পবিত্রতা লাভ হবে। রোগী বলে উঠলঃ কখনো না বরং এটি এমন জ্বর, যা এক অতি বৃদ্ধের গায়ে টগবগ করছে আশংকা হয় যেন তাকে কবরে পৌঁছাবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, হবে তাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬১ | 5261 | ۵۲٦۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার পিঠে আরোহন করলেন। গাধাটির পিঠে ছিল ‘ফাদক’ এলাকায় তৈরী চাদর মোড়ানো একটি গদি। তিনি নিজের পেছনে উসামা (রাঃ) কে বসিয়ে অসুস্থ সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) কে দেখতে গিয়েছিলেন। এটা বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলতে চলতে এক পর্যায়ে এক মজসিসের পাশ অতিক্রম করতে লাগলেন। সেখানে ছিল আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল। এ ঘটনা ছিল আবদুল্লাহর ইসলাম গ্রহনের আগের। মজলিসটির মধ্যে মুসসিম, মুশরিক, মূর্তিপূজক ও ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের লোকও ছিল। আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। সাওয়ারী জানোয়ারটির পায়ের ধূলা-বালি যখন মজলিসের লোকদের মাঝে উড়াতে লাগল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তার চাঁদর দিয়ে নিজের নাক চেপে ধরল এবং বলল আমাদের উপর ধূলা-বালু উড়াবেন না।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম দিলেন এবং নীচে অবতরণ করে তাদের আল্লাহর প্রতি আহবান জানালেন। এরপর তিনি তাদের সামনে কুরআন পাঠ করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তাঁকে বললঃ জনাব, আপনি যা বলেছেন আমার কাছে তা পছন্দনীয় নয়। যদি এ সব কথা সত্য হয়, তাহলে আপনি এ মজলিসে আমাদের কষ্ট দিবেন না। বরং আপনি নিজ বাড়ীতে চলে যান এবং সেখানে যে আপনার কাছে যাবে, তার কাছে এসব বৃত্তান্ত প্রকাশ করবেন। ইবনু রাওয়াহা বলে উঠলেনঃ অবশ্যই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এসব বক্তব্য নিয়ে আমাদের মজলিসে আসবেন। আমরা এগুলো পছন্দ করি। এরপর মুসলিম, মুশরিক, ও ইয়াহুদীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আরম্ভ হয়ে গেল, এমন কি তারা পরস্পর মারামারি করতে উদ্যত হলো।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের শান্ত ও নীরব করতে চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে সবাই শান্ত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীর উপর আরোহন করেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর বাড়ীতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি তাঁকে অর্থাৎ সা’দ (রাঃ) কে বললেন তুমি কি শুনতে পাওনি আবদুল্লাহ ইবনু উবায় কি উক্তি করেছে? সা’দ (রাঃ) উত্তর দিলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। আল্লাহ আপনাকে যে মর্যাদা দান করার ইচ্ছা করেছেন তা দান করেছেন। আমাদের এ উপদ্বীপ এলাকার লোকজন একমত হয়েছিল তাকে রাজমুকট পরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং তাকে নেতৃত্ব দান করার জন্য। এরপর যখন আপনাকে আল্লাহ যে হক ও সত্য দান করেছেন তখন এর দ্বারা তার ইচ্ছা পণ্ড হয়ে গেল। এতে সে গভীর মনোক্ষুন্ন হল। আর আপনি তার যে আচরণ দেখলেন, তার কারণ এটই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬২ | 5262 | ۵۲٦۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬২। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার অসুস্থতা দেখার জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। এ সময় তিনি না কোন গাধার পিঠে আরোহী ছিলেন, আর না কোন ঘোড়ার পিঠে ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৩ | 5263 | ۵۲٦۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৩। কাবীসা (রহঃ) … কাব ইবনু উকবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, এ সময় আমি পাতিলের নীচে লাকড়ী জ্বালাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার মাথার উকুন কি তোমাকে খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমি বললাম জ্বি-হ্যাঁ। তখন তিনি নাপিত ডাকলেন। সে মাথা মুড়িয়ে দিল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফিদইয়া আদায় করে দিতে আদেশ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৪ | 5264 | ۵۲٦٤

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ যাকারিয়্যা (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রনায় আমার মাথা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো, তোমার জন্য দু’আ করবো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় আফসুস, আল্লাহর কসম। আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর এমনটি হচ্ছে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য সহধর্মিনাদের সঙ্গে রাত যাপন করতে পারবেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার বেশি যোগ্য। আমি তো ইচ্ছা করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলাম আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাবো এবং অসীয়ত করে যাবো, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার অবকাশ না থাকে। তারপর শুনলাম আল্লাহ (আবূ বকর ব্যতীত অন্য কেউ খিলাফতের আকাঙ্ক্ষা করুক) তা অপছন্দ করবেন, মুমিনগণ তা পরিহার করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা পরিহার করবেন এবং মুমিনগণ তা অপছন্দ করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৫ | 5265 | ۵۲٦۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৫। মূসা (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত রাখলাম এবং বললামঃ আপনি কঠিন জ্বরে ভুগছেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ যেমনটি তোমাদের দু’জনকে ভুগতে হয়। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বললেন আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুন সাওয়াব। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ কোন মুসলিম ব্যাক্তি, কোন কষ্ট বা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় কিংবা অন্য কোন যন্ত্রনায় নিপতিত হয়, আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মোচন করে দেন, যেমনভাবে বৃক্ষ তার পাতাসমূহ ঝেড়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৬ | 5266 | ۵۲٦٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আমির ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমার রোগ কঠিন আকার ধারন করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দেখতে আসলেন। আমি বললামঃ (মৃত্যু) আমার সন্নিকটে এসে গেছে যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন অথচ আমি একজন বিত্তবান ব্যাক্তি। একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আমার কোন ওয়ারিস নেই। এখন আমি আমার সম্পদের দু’তৃতীয়াংশ সাদকা করতে পারি কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেনঃ এও অনেক বেশী। নিশ্চয়ই তোমার ওয়ারিসদের সাবলম্বী রেখে যাওয়াই উত্তম তাদের নিঃস্ব ও মানুষের দারগ্রস্ত বানিয়ে যাওয়ার চাইতে। আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে যে ব্যয়ই কর না কেন, তার বিনিময়ে তোমাকে সাওয়াব দেওয়া হবে। এমন কি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে আহার তুলে দাও, তাতেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৭ | 5267 | ۵۲٦۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬৬. তোমারা উঠে যাও, রোগীর এ কথা বলা
৫২৬৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের সময় ঘনিয়ে এলো, তখন ঘরের মধ্যে অনেক মানুষের সমাবেশ ছিল। যাদের মধ্যে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-ও ছিলেন। তখন তিনি (রোগ যন্ত্রনায় কাতর অবস্থায়) বললেনঃ লও, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেব, যাতে পরবর্তীতে তোমরা বিভ্রান্ত না হও। তখন উমর (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর বেশি যাতনা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আর তোমাদের নিকট কুরআন বিদ্যমান। আর আল্লাহর কিতাবই আমাদের জন্য যথেষ্ট। এ সময়ে আহলে বাইতর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হল। তারা বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হলেন। তারপরে কেউ কেউ বলতে লাগলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কাগজ পৌছিয়ে দাও এবং তিনি আমাদের জন্য কিছু লিখে দেবেন, যাতে পরবর্তীতে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হও। আবার তাদের মধ্যে অন্যরা উমর (রাঃ) যা বললেন তা বলে যেতে লাগলেন। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁদের বাকবিতণ্ডা ও মতানৈক্য বেড়ে চলল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা উঠে যাও। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলতেন, বড় মুসীবত হল লোকজনের সেই মতানৈক্য ও তর্ক-বিতর্ক, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সেই লিখে দেওয়ার মধ্যে অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৮ | 5268 | ۵۲٦۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬৭. দু’আর উদ্দেশ্যে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে যাওয়া
৫২৬৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … সায়েব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমর বোনের ছেলেটি অসুস্থ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। এরপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। আমি তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পিঠের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন আমি মোহরে নবুওয়াতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেটি তার দুকাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং খাটিয়ার গোল ঘুন্টির মত।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৯ | 5269 | ۵۲٦۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৬৯। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মলিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দুঃখ দৈন্যে নিপতিত হওয়ার কারণে যেন মৃত্যু কামনা না করে। যদি এমন একটা কিছু করতেই হয়, তা হলে সে যেন বলে হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ, যতদিন পর্যন্ত আমার জন্য জীবিত থাকা কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭০ | 5270 | ۵۲۷۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭০। আদম (রহঃ) … কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা অসুস্থ খাব্বাব (রাঃ) কে দেখতে গেলাম। এ সময় (তার পেটে চিকিৎসার জন্য) সাতবার দাগ লাগানো হয়েছিল। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের সংগীরা যারা (পূর্বেই) ইন্তেকাল করেছেন তাঁরা এমতাবস্থায় চলে গেছেন যে, দুনিয়া তাঁদের আমলের সাওয়াবে কোন রকম কমতি করতে পারেনি। আর আমরা এমন জিনিস লাভ করেছি, যা মাটি ছাড়া অন্য কোথাও রাখার জায়গা পাই না। যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ কামনা করতে নিষেধ না করতেন, তবে আমি মৃত্যুর জন্য দু’আ করতাম। এরপর আমরা অন্য এক সময় তার কাছে এসেছিলাম। তখন তিনি তার বাগানের দেয়াল তৈরী করছিলেন। তিনি বললেনঃ মুসলমান ব্যাক্তিকে তার সকল প্রকার ব্যয়ের উপর সওয়াব দান করা হয় তবে এ মাটিতে স্থাপিত জিনিসের কথা ভিন্ন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭১ | 5271 | ۵۲۷۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তোমাদের কাউকে তার নেক আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে সক্ষম হবে না। লোকজন প্রশ্ন করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকেও নয়? তিনি বললেনঃ আমাকেও নয়, ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে তার করুণা ও মেহেরবানীর দ্বারা ঢেকে না দেন। কাজেই মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে যাও। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কেননা, সে ভাল লোক হলে (বেশী বয়স পাওয়ার দরুন) তার নেক আমল বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পাবে। পক্ষান্তরে মন্দ লোক হলে সে লজ্জিত হয়ে তওবা করার সুযোগ লাভ করতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭২ | 5272 | ۵۲۷۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭২। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার পায়ের উপর হেলান দেওয়া অবস্থায় বলতে শুনেছি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আর আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৩ | 5273 | ۵۲۷۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৯. রোগীর জন্য পরিচর্যাকারীর দু’আ করা। আয়শা বিনত সা’দ তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! সা’দকে নিরাময় কর
৫২৭৩। মূসা ইবনু ইসমাইল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তার নিকট যখন কোন রোগীকে আনা হত তখন তিনি বলতেন কষ্ট দূর করে দাও হে মানুষের রব, শেফা দান কর, তুমিই একমাত্র শেফাদানকারী। তোমার শেফা ব্যতীত অন্য কোন শেফা নেই। এমন শেফা দান কর যা সামান্য রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে। আমর ইবনু আবূ কায়স ও ইবরাহীম ইবনু তুহমান হাদীসটি মানসুর ইবরাহীম ও আবূযযোহা থেকে إِذَا أُتِيَ بِالْمَرِيضِ “যখন কোন রোগীকে আনা হতো”, এভাবে বর্ননা করেছেন। জারীর হাদীসটি মানসুর আবূযযোহা সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি “যখন রোগীর কাছে আসতেন” এ শব্দসহ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৪ | 5274 | ۵۲۷٤

পরিচ্ছদঃ ২২৭০. রোগীর পরিচর্যাকারীর অযু করা
৫২৭৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে প্রবেশ করলেন তখন আমি ছিলাম অসুস্থ। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। এরপর আমর শরীরের উপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি ছিটিয়ে দিলেন। কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন এরপর তিনি উপস্থিত লোকদের বলেছেনঃ তার শরীরে পানি ছিটিয়ে দাও। ফলে আমি চেতনা ফিরে পেলাম। আমি বললাম কালালাহ (পিতাও নেই, সন্তানও নেই) ব্যতীত আমার কোন ওয়ারিস নেই। সুতরাং আমার পরিত্যক্ত সম্পদ কিভাবে বণ্টন করা হবে? তখন ফারায়েয সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৫ | 5275 | ۵۲۷۵

পরিচ্ছদঃ ২২৭১. জ্বর, প্লেগ ও মহামারী দূর হবার জন্য কোন ব্যক্তির দু’আ করা
৫২৭৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মদিনা) আসলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) ও বিলাল (রাঃ) জ্বরাক্রান্ত হলেন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম আব্বাজান, আপনার কাছে কেমন লাগছে? হে বিলাল! আপনি কিরূপ অনুভব করছেন? তিনি বললেনঃ আবূ বকর (রাঃ) যখন জ্বরাক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃত্তি করতেনঃ সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজন নিয়ে। আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চাইতেও সন্নিকটে।

আর বিলাল (রাঃ) এর নিয়ম ছিল যখন তার জ্বর ছেড়ে যেত, তিনি তখন স্বর উচ্চস্বরে বলতেনঃ হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যেখানে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরন হতো কোন দিন মাযিন্না অঞ্চলের কুপের কাছে, যদি আমার চোখে ভেসে আসতো শামা ও তাফীল। আয়িশা (রাঃ) বলেন এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের কাছে মদিনাকে প্রিয় বানিয়ে দাও যেভাবে আমাদের কাছে প্রিয় ছিল মক্কা এবং মদিনাকে স্বাস্থ্যকর বানিয়ে দাও। আর মদিনার মুদ্দ ও সা’ কে বরকতময় করে দাও এবং মদিনার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে “জুহফা” অঞ্চলে স্থাপন করে দাও।

চিকিৎসা অধ্যায় (৫২৭৬-৫৩৬৬)

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৬ | 5276 | ۵۲۷٦

পরিচ্ছদঃ ২২৭২. আল্লাহ এমন কোন ব্যাধি অবতীর্ণ করেন নি যার নিরাময়ের কোন উপকরণ সৃষ্টি করেন নি
৫২৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেন নি যার নিরাময়ের উপকরন তিনি সৃষ্টি করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৭ | 5277 | ۵۲۷۷

পরিচ্ছদঃ ২২৭৩. পুরুষ নারীর এবং নারী পুরুষের চিকিৎসা করতে পারে কি?
৫২৭৭। কুতায়বা (রহঃ) … রুবায়ঈ বিনত মুআওয়ায ইবনু আফরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে যুদ্ধে শরীক হতাম। তখন আমরা লোকজনকে পানি পান করাতাম, তাদের সেবা-যত্ন করতাম। নিহত ও আহতদের মদিনায় পৌছে দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৮ | 5278 | ۵۲۷۸

পরিচ্ছদঃ ২২৭৪. তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগের নিরাময় আছে
৫২৭৮। হুসায়ন (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগমুক্তির ব্যবস্থা নিহিত আছে। মধু পান করা ও ব্যবহার করা, শিঙ্গা লাগান এবং আগুন (তপ্ত লৌহ) দিয়ে দাগ লাগানো। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে দাগ লাগাতে নিষেধ করছি। হাদীসটি “মারফূ”। কুম্মী হাদীসটি লায়স, মুজাহিদ, ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে فِي الْعَسَلِ وَالْحَجْمِ‏ শব্দে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৯ | 5279 | ۵۲۷۹

পরিচ্ছদঃ ২২৭৪. তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগের নিরাময় আছে
৫২৭৯। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রোগমুক্তি তিনটি জিনিসের মধ্যে নিহিত। শিঙ্গা লাগানোতে, মধু পানে এবং আগুন দিয়ে গরম দাগ দেওয়ার মধ্যে। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে গরম দাগ দিতে নিষেধ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮০ | 5280 | ۵۲۸۰

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টি জাত দ্রব্য ও মধু বেশী পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮১ | 5281 | ۵۲۸۱

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮১। আবূ নু’আইম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের ঔষধসমূহের কোনটির মধ্যে যদি কল্যান বিদ্যমান থেকে থাকে তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গাদানের মধ্যে কিংবা মধু পানের মধ্যে কিংবা আগুনের দ্বারা ঝলসিয়ে দেয়ার মধ্যে। তবে তা রোগ অনুযায়ী হতে হবে। আর আমি আগুন দ্বারা দাগ দেওয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮২ | 5282 | ۵۲۸۲

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮২। আয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে তৃতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি পুনরায় এসে বললঃ আমি অনুরূপই করেছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন, কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য বলছে। তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করাল। এবার সে আরোগ্য লাভ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৩ | 5283 | ۵۲۸۳

পরিচ্ছদঃ ২২৭৬. উটের দুধের সাহায্যে চিকিৎসা
৫৩৮৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কতিপয় লোক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল, তারা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের আশ্রয়দান করুন এবং আমাদের আহারের ব্যবস্থা করে দিন। এরপর যখন তারা সুস্থ হল, তখন তারা বললঃ মদিনার বায়ু ও আবহাওয়া অনুকূল নয়। তখন তিনি তাদের তার কতগুলো উট নিয়ে “হাররা” নামক স্থানে থাকতে দিলেন। এরপর বললেন তোমরা এগুলোর দুধ পান কর। যখন তারা আরোগ্য লাভ করল তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালকে হত্যা করে ফেলল এবং তাঁর উটগুলোকে হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। তিনি তাদের পেছনে ধাওয়াকারীদের পাঠালেন। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন এবং তাদের চক্ষুগুলোকে ফুঁড়ে দেন।

বর্ননাকারী বলেনঃ আমি তাদের মধ্যকার এক ব্যাক্তিকে দেখেছি। সে নিজের জিহবা দিয়ে মাটি কামড়াতে থাকে এবং অবশেষে মারা যায়। বর্ননাকারী সাল্লাম বলেনঃ আমার নিকট সংবাদ পৌছেছে যে হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ আনাস (রাঃ) কে বলেছিলেন, আপনি আমাকে কঠোরতম শাস্তি সম্পর্কে বর্ণনা করুন, যেটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রয়োগ করেছিলেন। তখন তিনি এ হাদীসটি বর্ননা করেন। এ সংবাদ হাসান বসরীর নিকট পৌছলে তিনি বলেছিলেনঃ যদি তিনি এ হাদীস বর্ননা না করতেন তবে সেটাই আমার মতে ভাল ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৪ | 5284 | ۵۲۸٤

পরিচ্ছদঃ ২২৭৭. উটের পেশাব ব্যবহার করে চিকিৎসা
৫২৮৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কতিপয় ব্যাক্তি মদিনায় তাদের প্রতিকুল আবহাওয়া অনুভব করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হুকুম দিলেনঃ তারা যেন তার রাখাল অর্থাৎ তার উটগুলোর কাছে গিয়ে থাকে এবং উটের দুধ ও পেশাব পান করে। সুতরাং তারা রাখালের সংগে গিয়ে মিলিত হল এবং উটের দুধ ও পেশাব পান করতে লাগল। অবশেষে তাদের শরীর সুস্থ হলে তারা রাখালটিকে হত্যা করে ফেলল এবং উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ সংবাদ পৌছলে তিনি তাদের তালাশে লোক পাঠান। এরপর তাদের ধরে আনা হল। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন। এবং তাদের চক্ষুগুলো ফূড়ে দেন। কাতাদা (রহঃ) বলেছেনঃ মুহাম্মদ ইবনু সীরীন আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, এটি হুদুদ (শাস্তির আইন) নাযিল হওয়ার পুর্বকার ঘটনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৫ | 5285 | ۵۲۸۵

পরিচ্ছদঃ ২২৭৮. কালোজিরা
৫২৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … খালিদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। আমাদের সংগে ছিলেন গালিব ইবনু আবযার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এরপর আমরা মদিনায় আসলাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনু আবূ আতীক। তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা এই কালো জিরা সংগে রেখো। এ থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে খাবে, তারপর তন্মধ্যে যায়তুনের কয়েক ফোটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এ দিক-ওদিকের ছিদ্র পথে ফোটা ফোটা করে ঢ়ুকিয়ে দেবে। কেননা আয়িশা (রাঃ) আমাদের নিকট বর্বনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এই কালো জিরা ‘সাম’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমি বললামঃ সাম- কি? তিনি বললেনঃ সাম- অর্থ মৃত্যু।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৬ | 5286 | ۵۲۸٦

পরিচ্ছদঃ ২২৭৮. কালোজিরা
৫২৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ কালো জিরা ‘সাম’ ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ। ইবনু শিহাব বলেছেনঃ আর ‘সাম’ অর্থ হল মৃত্যু। আর কালো জিরা ‘শূনীয’ কে বলা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৭ | 5287 | ۵۲۸۷

পরিচ্ছদঃ ২২৭৯. রোগীর জন্য তালবীনা বা তরল লঘুপাক খাদ্য
৫২৮৭। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রোগীকে এবং কারো মৃত্যুর কারণে শোকাতুর ব্যাক্তিকে তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহনের আদেশ দিতেন। তিনি বলতেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ‘তালবীনা’ রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির কলিজা দৃঢ় করে এবং অনেক দুশ্চিন্তা দূর করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৮ | 5288 | ۵۲۸۸

পরিচ্ছদঃ ২২৭৯. রোগীর জন্য তালবীনা বা তরল লঘুপাক খাদ্য
৫২৮৮। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তালবীনা খেতে আদেশ দিতেন এবং বলতেনঃ এটি হল অপছন্দনীয় তবে উপকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৯ | 5289 | ۵۲۸۹

পরিচ্ছদঃ ২২৮০. নাসিকায় ঔষধ ব্যবহার
৫২৮৯। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে-বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং শিঙ্গা প্রয়োগকারী বক্তিকে পারিশ্রমিক দিয়েছেন আর তিনি (শ্বাস দ্বারা) নাকে ঔষধ টেনে নিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯০ | 5290 | ۵۲۹۰

পরিচ্ছদঃ ২২৮১. ভারতীয় ও সামুদ্রিক এলাকার চন্দন কাঠের (ধোঁয়ার) সাহায্যে নাকে ঔষধ টেনে নেওয়া। قُسْطِ কে كُسْتُ ও বলা হয়। যেমন كَافُورِ কে قَافُورِ ও বলা যায়। অনুরূপভাবে كُشِطَتْ কে قُشِطَتْ পড়া যায়। كُشِطَتْ এর অর্থ হল نُزِعَتْ আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ قُشِطَتْ পড়েছেন।
৫২৯০। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … উম্মে কায়স বিনত মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তোমরা ভারতীয় এই চন্দন কাঠ ব্যবহার করবে। কেননা তার মধ্যে সাত ধরনের চিকিৎসা (নিরাময়) রয়েছে। শ্বাসনালীর ব্যথার জন্য এর (ধোয়া) নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়। নিউমোনিয়া দূর করার জন্যও তা সেবন করা যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আমার এক শিশু পুত্রকে নিয়ে এলাম, সে খাবার খেতে চাইত না। এ সময় সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনার জন্য ডেকে পাঠালেন। এরপর তিনি কাপড়ে পানি ঢেলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯১ | 5291 | ۵۲۹۱

পরিচ্ছদঃ ২২৮২. কোন সময় শিঙ্গা লাগাতে হয়। আবু মুসা (রাঃ) রাতে শিঙ্গা লাগাতেন
৫২৯১। আবূ মামার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯২ | 5292 | ۵۲۹۲

পরিচ্ছদঃ ২২৮৩. সফর ও ইহরাম অবস্থায় শিঙ্গা লাগানো। ইবন বুজায়না (রাঃ) এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৫২৯২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৩ | 5293 | ۵۲۹۳

পরিচ্ছদঃ ২২৮৪. রোগ নিরাময়ের জন্য শিংগা লাগানো
৫২৯৩। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাকে শিঙ্গা প্রয়োগের পারিশ্রমিক প্রদানের ব্যপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়েছেন। আবূ তায়বা তাকে শিঙ্গা লাগায়। এরপর তিনি তাকে দুই সা’ খাদ্যবস্তু প্রদান করেন। সে তার মালিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করলে তারা তার থেকে পারিশ্রমিকের পরিমান লাঘব করে দেয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমরা যে সকল জিনিসের দ্বারা চিকিৎসা কর সেগুলোর মখ্যে সবচেয়ে উত্তম হল শিঙ্গা লাগানো এবং সামুদ্রিক চন্দন কাঠ ব্যাবহার করা। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের শিশুদের জিহবা তালু টিপে কষ্ট দিও না। বরং তোমরা চন্দন কাঠ (ধোয়া) ব্যবহার কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৪ | 5294 | ۵۲۹٤

পরিচ্ছদঃ ২২৮৪. রোগ নিরাময়ের জন্য শিংগা লাগানো
৫২৯৪। সাঈদ ইবনু তালীদ (রহঃ) … আসিম ইবনু উমর ইবনু কাতাদা থেকে বর্ণিত যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) অসুস্থ মুকান্নাকে দেখতে যান। এরপর তিনি বললেনঃ আমি সরবো না, যতক্ষ না তাকে শিঙ্গা লাগানো হয়। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি নিশ্চয় এর (শিঙ্গার) মধ্যে রয়েছে নিরাময়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৫ | 5295 | ۵۲۹۵

পরিচ্ছদঃ ২২৮৫. মাথায় শিংগা লাগানো
৫২৯৫। ঈসমাইল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু বুজায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাধা অবস্থায় মক্কার “লাহয়ী জামাল” নামক স্থানে তার মাথার মধ্যখানে শিঙ্গা লাগান। আনসারী (রহঃ) হিশাম ইবনু হাসসান (রহঃ) ইকরামার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাথায় শিঙ্গা লাগান।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৬ | 5296 | ۵۲۹٦

পরিচ্ছদঃ ২২৮৬. অর্ধেক মাথা কিংবা পুরো মাথা ব্যথার কারণে শিংগা লাগানো
৫২৯৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মাথায় বেদনার কারণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় ‘লাহয়ি জামাল’ নামক একটি কুপের নিকটে মাথার শিঙ্গা লাগান। মুহাম্মাদ ইবনু সাওয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাধা অবস্থায় অর্ধ মাথা বেদনার কারনে তার মাথায় শিঙ্গা লাগান।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৭ | 5297 | ۵۲۹۷

পরিচ্ছদঃ ২২৮৬. অর্ধেক মাথা কিংবা পুরো মাথা ব্যথার কারণে শিংগা লাগানো
৫২৯৭। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যদি তোমাদের ঔষধ সমুহের কোনটির মধ্যে কল্যাণ বিদ্যমান থাকে তাহলে তা আছে মধুপান করার মধ্যে কিংবা শিঙ্গা লাগানোর মধ্যে কিংবা আগুন দ্বারা দাগ লাগানোর মধ্যে। তবে আমি আগুনের দাগ দেওয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৮ | 5298 | ۵۲۹۸

পরিচ্ছদঃ ২২৮৭. কষ্টের কারনে মাথা মুড়িয়ে ফেলা
৫২৯৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কাব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হুদায়বিয়ার সফরকালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। আমি তখন পাতিলের নীচে আগুন দিতে ছিলাম, আর আমার মাথা থেকে তখন উকুন ঝরছিল। তিনি বললেন তোমার উকুনগুলো তোমাকে কি খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি মাথা মুণ্ডন করে নাও এবং তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর অথবা ছয়জন (মিসকীন) কে আহার দাও কিংবা একটি কুরবানীর পশু যবাহ করে নাও। আইউব (রহঃ) বলেনঃ আমি সঠিক বলতে পারি না, এগুলোর মধ্যে প্রথমে তিনি কোনটির কথা বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৯ | 5299 | ۵۲۹۹

পরিচ্ছদঃ ২২৮৮. যে ব্যক্তি আগুনের দ্বারা দাগ দেয় কিংবা অন্যকে দাগ লাগিয়ে দেয় এবং যে ব্যক্তি এভাবে দাগ দেয়নি তার ফাযীলাত
৫২৯৯। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদুল মালিক (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যদি তোমাদের চিকিৎসাগুলোর কোনটির মধ্যে নিরাময় থাকে, তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গা লাগানোর মধ্যে কিংবা আগুনের দ্বারা দাগ লাগানোর মধ্যে, তবে আমি আশুনের দ্বারা দাগ দেয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০০ | 5300 | ۵۳۰۰

পরিচ্ছদঃ ২২৮৮. যে ব্যক্তি আগুনের দ্বারা দাগ দেয় কিংবা অন্যকে দাগ লাগিয়ে দেয় এবং যে ব্যক্তি এভাবে দাগ দেয়নি তার ফাযীলাত
৫৩০০। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বদ-নযর কিংবা বিষাক্ত দংশন ব্যতিরেকে অন্য কোন ব্যাপারে ঝাড়ফুঁক নেই। বর্ননাকারী বলেন, এরপর এ হাদীস আমি সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ আমাদের নিকট ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয়েছিল। (তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ অতিক্রম করতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাদের সংগে রয়েছে লোকজনের ছোট ছোট দল। কোন কোন নবী এমনও রয়েছেন যার সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল সমাবেশ। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ এটা কি? এ কি-আমার উম্মত? উত্তর দেয়া হলঃ না, ইনি মূসা (আলাইহিস সালাম) এর সঙ্গে তার কাওম। আমাকে বলা হলঃ আপনি ঊর্ধাকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলামঃ বিশাল একটি দল যা দিগন্তকে ঢেকে রখেছে। তারপর আমাকে বলা হলঃ আকাশের দিগন্তের এদিক ওদিক দৃষ্টিপাত করুন। তখন দেখলাম বিশাল একটি দল, যা আকাশের দিগন্তসমূহ ঢেকে দিয়েছে। তখন বলা হল এরা হলঃ আপনার উম্মত। আর তাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার ব্যাক্তি বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোন ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। (যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকদের মধ্যে তারা বিতর্ক শুরু হল। তারা বললঃ আমরা আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছি এবং তার রাসুলের অনুসরণ করে থাকি, সুতরাং আমরাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সন্তান-সন্ততি যারা ইসলামের যুগে জন্মগ্রহন করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহেলী যুগে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তারা হল সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, বদফালী (শুভ অশুভ) গ্রহন করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উক্‌কাসা ইবনু মিহসান (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বললঃ তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেনঃ উক্‌কাসা এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০১ | 5301 | ۵۳۰۱

পরিচ্ছদঃ ২২৮৯. চোখের রোগের কারনে সুরমা ব্যবহার করা। উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকেও বর্ণনা রয়েছে
৫৩০১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈকা মহিলার স্বামী মারা গেলে তার চোখে অসুখ দেখা দেয়। লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মহিলার কথা উল্লেখ করে সুরমা ব্যবহারের কথা আলোচনা করল এবং তার চোখ আশংকাগ্রস্ত বলে জানাল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের এক একটি মহিলার অবস্থাতো এরুপ ছিল যে, তার ঘরে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাপড়ে আচ্ছাদিত হয়ে থাকত কিংবা তিনি বলেছেনঃ সে তার কাপড়ের দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘরে (বছরের পর বছর ধরে) অবস্থান করতে থাকতো। এরপর যখন কোন কুকুর হেঁটে যেত, তখন সে কুকুরটির দিকে উটের বিষ্টা নিক্ষেপ করে (বেরিয়ে আসার অনুমতি লাভ করতো)। কাজেই, সে চোখে সুরমা লাগাবে না বরং চার মাস দশ দিন পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০২ | 5302 | ۵۳۰۲

পরিচ্ছদঃ ২২৯১. জমাট শিশির চোখের জন্য শেফা
باب الْجُذَامِ

وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ، وَفِرَّ مِنَ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنَ الأَسَدِ

২২৯০. পরিচ্ছেদঃ কুষ্ঠ রোগ। ‘আফফান (রহঃ) বলেন, সালিম ইবনু হায়য়ান, আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোগের কোন সংক্রমণই নেই, কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের প্রতিক নয়, সফর মাসের কোন অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি দূরে থাক তুমি বাঘ থেকে।

৫৩০২। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি ছত্রাক এক জাতীয় শিশির থেকে হয়ে থাকে। আর এর রস চোখের জন্য শেফা। শুবা (রহঃ) বলেনঃ হাকাম ইবনু উতায়বা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমার কাছে এরূপ বর্ণনা করেছেন। শুবা (রহঃ) বলেনঃ হাকাম যখন আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করেন তখন আবদুল মালিক বর্ণিত হাদীসকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৩ | 5303 | ۵۳۰۳

পরিচ্ছদঃ ২২৯২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আবূ বকর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃতদেহ মুবারকে চুমু নিয়েছেন। বর্ননাকারী বলেন আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় আমরা তার মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তখন তিনি আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মুখে ঔষধ ঢেল না। আমরা মনে করলাম এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেনঃ আমি কি তোমাদের আমার মুখে ঔষধ ঢেলে দিতে নিষেধ করিনি? আমরা বললামঃ আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ অনীহা মনে করেছিলাম। তখন তিনি বললেন আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলের মুখেই ঔষুধ ঢালা হবে। আব্বাস (রাঃ) ছাড়া কেউ বাদ যাবে না। কেননা, তিনি তোমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৪ | 5304 | ۵۳۰٤

পরিচ্ছদঃ ২২৯২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উম্মে কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার এক পুত্র সন্তানকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফোলার কারণে আমি তা দাবিয়ে দিয়েছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ ধরনের রোগ-ব্যাধি দমনে তোমরা নিজেদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাক? তোমরা ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার কর। কেননা তাতে সাত রকমের নিরাময় বিদ্যমান। তন্মধ্যে আছে পাজরের ব্যাথা। আলাজিহ্বা ফোলার কারণে এটির ধোয়া নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়। পাজরের ব্যখার রোগীকে তা সেবন করান যায়।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি যুহরীকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আমাদের কাছে দুটির কথা বর্ণনা করেছেন। আর পাঁচটির কথা বর্ণনা করেননি। বর্ননাকারী আলী বলেনঃ আমি সুফিয়ানকে বললাম মা’মার স্মরণ রাখতে পারেন নি। তিনি বলেছেন علقت عَلَيْهِ আর যুহরী তো বলেছেন أَعْلَقْتُ عَنْهُ শব্দ দ্বারা। আমি তার মুখ থেকে শুনে মুখস্থ করেছি। আর সুফিয়ানের রেওয়াতে তিনি ছেলেটির অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন যে, আঙ্গুলের সাহায্যে যার তালু দাবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সুফিয়ান নিজের তালুতে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দেখিয়েছেন অর্থাৎ তিনি তাঁর আঙ্গুলের দ্বারা তালুকে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু أَعْلِقُوا عَنْهُ شَيْئًا‏ এভাবে কেউ বর্ণনা করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৫ | 5305 | ۵۳۰۵

পরিচ্ছদঃ ২২৯৩. পরিচ্ছেদ নাই
৫৩০৫। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগযন্ত্রণা বেড়ে গেল এবং তীব্র আকার ধারণ করল, তখন তিনি তার সহধর্মিণীগনের কাছে অনুমতি চাইলেন যে, তিনি যেন আমার গৃহে অসুস্থকালীন সময় অবস্থান করতে পারেন। এরপর তাঁরা অনুমতি দিলে তিনি দু’ব্যাক্তি অর্থাৎ আব্বাস (রাঃ) ও আরেকজনের সাহায্যে এভাবে বেরিয়ে আসলেন যে, যমীনের উপর তাঁর দু’পা হেঁচড়াতে ছিলেন। আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে হাদীসটি অবহিত করলে তিনি বলেনঃ আপনি কি জানেন আরেক ব্যাক্তি যার নাম আয়িশা (রাঃ) উল্লেখ করেননি, তিনি কে ছিলেন? আমি উত্তর দিলামঃ না। তিনি বললেনঃ আলী (রাঃ)।

আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ যখন তাঁর রোগ-যন্ত্রণা আরো তীব্র হল তখন তিনি বললেন, যে সব মশকের মুখ এখনো খোলা হয়নি এমন সাত মাশক পানি আমার গায়ের উপর ঢেলে দাও। আমি লোকজনের কাছে কিছু অসীয়ত করে আসার ইচ্ছা পোষণ করছি। তিনি বলেন, তখন আমরা তাকে তার সহধর্মিণী হাফসা (রাঃ) এর একটি কাপড় কাচার জায়গায় নিয়ে গিয়ে বসালাম। এরপর তার গায়ের উপর সেই মাশরুক থেকে পানি চাইতে লাগলাম। অবশেষে তিনি আমাদের দিকে ইশারা দিলেন যে, তোমরা কাজ সমাধা করেছ। তিনি বলেনঃ এরপর লোকজনের দিকে বেরিয়ে গেলেন। আর তাদের নিরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তাদের সামনে খুতবা দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৬ | 5306 | ۵۳۰٦

পরিচ্ছদঃ ২২৯৪. উযরা-আলা-জিহবা যন্ত্রণা রোগের বর্ণনা
৫৩০৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আসাদ গোত্রের অর্থাৎ আসা’দ খুযায়মা গোত্রের উম্মে কায়স বিনত মিহসান আসা’দিয়া (রাঃ) ছিলেন প্রথম যুগের হিজরতকারিনাদের অন্তর্ভুক্ত। যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বায়আত গ্রহণ করেছিলেন। আর তিনি ছিলেন উককাশা (রাঃ) এর বোন। তিনি বলেছেন যে, তিনি তার এক ছেলেকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসেছিলেন। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফোলার কারণে তিনি তা দাবিয়ে দিয়েছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এ সকল ব্যাধি দমনে তোমাদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাক? তোমরা এই ভারতীয় চন্দন কাঠ সংগ্রহ করে রেখে দিও। কেননা এতে সাত রকমের চিকিৎসা আছে, তন্মধ্যে একটি হল পাঁজর ব্যথা। কথাটির দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য হল কোস্ত। আর কোস্ত হল হিন্দী চন্দন কাঠ। ইউনুস ও ইসহাক ইবনু রাশিদ-যুহরী থেকে عَلَّقَتْ عَلَيْهِ শব্দে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৭ | 5307 | ۵۳۰۷

পরিচ্ছদঃ ২২৯৫. পেটের পীড়ার চিকিৎসা
৫৩০৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল যে, আমার ভাইয়ের পেট খারাপ হয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু সেবন করাল। এরপর বলল, আমি তাকে মধু পান করিয়েছি কিন্তু পীড়া আরো বেড়ে চলছে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য প্রতিপন্ন করেছে। নযর (রহঃ) শু’বা থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৮ | 5308 | ۵۳۰۸

পরিচ্ছদঃ ২২৯৬. ‘সফর’ পেটের পীড়া ছাড়া কিছুই নয়
৫৩০৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমন নেই, সফরের কোন কুলক্ষণ নেই, পেঁচার মধ্যেও কোন কুলক্ষণ নেই। তখন জনৈক বেদুঈন বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাহলে আমার উটের এ অবস্থা হয় কেন? সে যখন চারণ ভূমিতে থাকে তখন সেগুলো যেন মুক্ত হরিণের পাল। এমন অবস্থায় চর্মরোগা উট এসে সেগুলোর মধ্যে ঢ়ুকে পড়ে এবং এগুলোকেও চর্ম রোগাক্রান্ত করে ফেলে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে প্রথমটিকে চর্ম রোগাক্রান্ত কে করেছে?

যুহরী হাদীসটি আবূ সালামা ও সিনান ইবনু আবূ সিনান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৯ | 5309 | ۵۳۰۹

পরিচ্ছদঃ ২২৯৭. পাঁজরের ব্যথা
৫৩০৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে কায়স বিনত মিহসান তিনি ছিলেন প্রথম কালের হিজরতকারিণী উক্‌কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ) এর বোন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বায়আত গ্রহণকারিণী মহিলা সাহাবী। তিনি বলেছেনঃ তিনি তাঁর এক ছেলেকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসেন। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফুলে গিয়েছিল। তিনি তা দাবিয়ে দিয়েছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহকে ভয় কর, কেন তোমরা তোমাদের সন্তানদের তালু দাবিয়ে কষ্ট দাও। তোমরা এই ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার কর। কেননা, এতে রয়েছে সাত প্রকারের চিকিৎসা। তন্মধ্যে একটি হল পাঁজরের ব্যথা। কাঠ বলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্য হল কোস্ত। قسط শব্দেও তার আভিধানিক ব্যবহার আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১০ | 5310 | ۵۳۱۰

পরিচ্ছদঃ ২২৯৭. পাঁজরের ব্যথা
৫৩১০। আরিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ তালহা ও আনাস ইবনু নাযর (রাঃ) তাকে আগুন দিয়ে দাগ দিয়েছেন। আর আবূ তালহা তাকে নিজ হাতে দাগ দিয়েছেন। আব্বাদ ইবনু মানসূর বলেন, আইউব আবূ কিলাবা … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জনৈক পরিবারের লোকদের বিষাক্ত দংশন ও কান ব্যথা জনিত কারণে ঝাঁড়ফুক গ্রহণ করার জন্য অনূমতি দেন। আনাস (রাঃ) বলেন আমাকে পাঁজর ব্যথা রোগের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবিত থাকাকালে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া হয়েছিল। তখন আমার নিকট উপস্থিত ছিলেন আবূ তালহা আনাস ইবনু নাযর এবং যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)। আর আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে দাগ দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১১ | 5311 | ۵۳۱۱

পরিচ্ছদঃ ২২৯৮. রক্ত বন্ধ করার জন্য চাটাই পুড়িয়ে ছাই লাগানো
৫৩১১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথায় লৌহ শিরস্রান (হেলমেট) চুর্ন করে দেয়া হল আর তার মুখমন্ডল রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেল এবং তাঁর রুবাঈ দাঁত ভেংগে গেল, তখন আলী (রাঃ) ঢাল ভর্তি করে পানি দিতে থাকলেন এবং ফাতিমা (রাঃ) এসে তার চেহারা মুবারক থেকে রক্ত ধুয়ে দিতে লাগলেন। ফাতিমা (রাঃ) যখন দেখলেন যে, পানি ঢালার পরেও অধিক পরিমাণ রক্ত ঝরে চলছে, তখন তিনি একটি চাটাই নিয়ে এসে তা পুড়ালেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যখমের উপর ছাই লাগিয়ে দিলেন। ফলে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১২ | 5312 | ۵۳۱۲

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১২। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্টি হয়। কাজেই তা পানির সাহায্যে নিভিয়ে দাও। নাফি (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) তখন বলতেন আমাদের উপর থেকে শাস্তিকে হালকা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৩ | 5313 | ۵۳۱۳

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … ফাতিমা বিনত মুনযির (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট যখন কোন জ্বরাক্রান্ত মহিলাকে দু’আর জন্য আনা হত, তখন তিনি পানি হাতে নিয়ে সেই মহিলার জামার ফাঁক দিয়ে তার গায়ে ছিটিয়ে দিতেন এবং বলতেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আদেশ দিতেন, আমরা যেন পানি দিয়ে জ্বর ঠাণ্ডা করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৪ | 5314 | ۵۳۱٤

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৪। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়। কাজেই তোমরা পানির দ্বারা তা ঠান্ডা করো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৫ | 5315 | ۵۳۱۵

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্টি হয়। কাজেই তোমরা তা পানির দ্বারা ঠাণ্ডা করে নিও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৬ | 5316 | ۵۳۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৩০০. অনুকূল নয় এমন এলাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়া
৫৩১৬। আবদুল আ’লা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উক্‌কাল ও উরায়না গোত্রের কতিপয় মানুষ কিংবা তিনি বলেছেন কতিপয় পুরুষ লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে ইসলাম সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করল। এরপর তারা বলল হে আল্লাহর নাবী! আমরা ছিলাম পশু পালন অঞ্চলের অধিবাসী। আমরা কখনো চাষাবাদকারী ছিলাম না। অতএব মদিনায় বসবাস করা তাদের জন্য অনুপযোগী হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য কিছু উট ও একজন রাখাল দেওয়ার আদেশ দিলেন এবং তাদের হুকুম দিলেন যেন এগুলো নিয়ে যায় এবং এগুলোর দুধ ও পেশাব পান করে। এরপর তারা রওয়ানা হয়ে যখন হারবা এলাকার কাছাকাছি গিয়ে পৌছল তখন তারা ইসলাম ত্যাগ করে কুফরী অবলম্বন করল এবং তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালটিকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ খবর পৌছল। তিনি তাদের পেছনে অনুসন্ধানকারী দল পাঠালেন। (ধরে আনার পর) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ব্যাপারে চুড়ান্ত আদেশ দিলেন। সে মতে সাহাবায়ে কেরাম তাদের চক্ষুগুলো ফুঁড়ে দিলেন। তাদের হাতগুলো কেটে দিলেন এবং তাদের হাররা এলাকায় ফেলে রাখা হল। অবশেষে তারা সেই অবস্থায় মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৭ | 5317 | ۵۳۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে সা’দ (রাঃ) এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাবের সংবাদ পাও তখন সেই এলাকায় প্রবেশ করো না। আর তোমরা যেখানে অবস্থান কর, তথায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। (বর্ণনাকারী হাবীব ইবনু আবূ সাবিত বলেন) আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি উসামা (রাঃ) কে এ হাদীস সা’দ (রাঃ) এর কাছে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, (সা’দ) তাতে কোন অসম্মতি প্রকাশ করেননি? ইবরাহীম ইবনু সা’দ বলেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৮ | 5318 | ۵۳۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়ার দিকে যাত্রা করেছিলেন। অবশেষে তিনি যখন সারগ এলাকায় গেলেন, তখন তার সঙ্গে সৈন্য বাহিনীর প্রধানগণ তথা আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহ ও তার সংগীগণ সাক্ষাত করেন। তারা তাকে অবহিত করেন যে, সিরিয়া এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন উমর (রাঃ) বলেনঃ আমার নিকট প্রবীণ মুহাজীরদের ডেকে আনো। তখন তিনি তাদের ডেকে আনলেন। উমর (রাঃ) তাঁদের সিরিয়ায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটার কথা অবহিত করে তাদের কাছে পরামর্শ চহিলেন। তখন তাদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল। কেউ বললেনঃ আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বের হয়েছেন; কাজেই তা থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা পছন্দ করি না। আবার কেউ কেউ বললেনঃ আপনার সঙ্গে রয়েছেন শেষ অবশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ, কাজেই আমাদের কাছে ভাল মনে হয় না যে, আপনি তাদের এই প্লেগের মধ্যে ঠেলে দিবেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা আমার নিকট থেকে চলে যাও। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনসারদের ডেকে আনো। আমি তাদের ডেকে আনলাম। তিনি তাদের কাছে পরামর্শ চাইলে তারাও মুহাজিরদের পথ অবলম্বন করলেন এবং তাঁদের ন্যায় মতভেদ করলেন। উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা উঠে যাও। এরপর আমাকে বললেনঃ এখানে যে সকল বয়োজ্যেষ্ঠ কুরায়শী আছেন, যারা মক্কা বিজয়ের বছর হিজরত করেছিলেন, তাদের ডেকে আনো। আমি তাদের ডেকে আনলাম, তখন তারা পরস্পরে কোন মতপার্থক্য করেননি। তাঁরা বললেনঃ আপনার লোকজনকে নিয়ে ফিরে যাওয়া এবং তাদের প্লেগের কবলে আপনার ঠেলো না দেওয়াই আমাদের কাছে ভাল মনে হয়। তখন উমর (রাঃ) লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আমি ভোরে সাওয়াবীর পিঠে আরোহন করবো (ফিরে যাওযার জন্য)। এরপর ভোরে সকলে এভাবে প্রস্তুতি নিল।

আবূ উবায়দা (রাঃ) বললেনঃ আপনি কি আল্লাহর নির্ধারণকৃত তাকদীর থেকে পলায়ন করার জন্য ফিরে যাচ্ছেন? উমর (রাঃ) বললেন হে আবূ উবায়দা! যদি তুমি ছাড়া অন্য কেউ কথাটি বলতো! হাঁ আমরা আল্লাহর এক তাকদীর থেকে আল্লাহর অন্য একটি তাকদীরের দিকে ফিরে যাচ্ছি। তুমি বলত তোমার কিছু উটকে যদি তুমি এমন কোন উপত্যকায় নিয়ে যাও আর সেখানে আছে দুটি মাঠ। তন্মধ্যে একটি হল সবুজ শ্যমল, আর অন্যটি হল শুষ্ক ও ধূসর। এবার বল ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, যদি তুমি সবুজ মাঠে চরাও তাহলে তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাও, তাহলে তাও আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ।

বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) আসলেন। তিনি এতক্ষণ যাবত তাঁর কোন প্রয়োজনের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে আমার নিকট একটি তখ্য আছে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা যখন কোন এলাকায় (প্লেগের) প্রাদুর্ভাবের কথা শোন, তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাকে তাহলে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উমর (রাঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন, তারপর প্রত্যাবর্তন করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৯ | 5319 | ۵۳۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, উমর (রাঃ) সিরিয়া যাওযার উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর তিনি ‘সারগ’ নমক স্থানে পৌছলে তার কাছে সংবাদ আসলো যে সিরিয়া এলাকায় মহামারী দেখা দিয়েছে। তখন আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) তাকে অবহিত করলেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন স্থানে এর প্রাদূর্ভাবের কথা শোন, তখন সে এলাকায় প্রবেশ করো না; আর যখন এর পাদূর্ভাব দেখা দেয়, আর তোমরা সেখানে বিদ্যমান থাকো তাহলে তা থেকে পলায়ন করার উদ্দেশ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২০ | 5320 | ۵۳۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না মাসীহ দাজ্জাল, আর না মহামারী।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২১ | 5321 | ۵۳۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … হাফসা বিনত সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়াহইয়া কি রোগে মারা গেছে? আমি বললামঃ প্লেগ রোগে। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্লেগ রোগের কারনে মৃত্যুবরণ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য শাহাদাত হিসাবে গণ্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২২ | 5322 | ۵۳۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২২। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ উদরাময় রোগে মৃত ব্যাক্তি শহীদ, আর প্লেগ রোগে মৃত ব্যাক্তি শহীদ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৩ | 5323 | ۵۳۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৩০২. প্লেগ রোগে ধৈর্যধারণকারীর সাওয়াব
৫৩২৩। ইসহাক (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তখন আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অবহিত করেন যে এটি হচ্ছে এক প্রকারের আযাব। আল্লাহ যার উপর তা পাঠাতে ইচ্ছা করেন পাঠান। কিন্তু আল্লাহ এটিকে মুমিনদের জন্য রহমত স্বরূপ বানিয়ে দিয়েছেন। অতএব গ্নেগ রোগে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধারণ করে এই বিশ্বাস নিয়ে আপন শহরে অবস্থান করতে থাকে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখছে তা ব্যতীত আর কোন বিপদ তার উপর আসবে না তাহলে সেই বান্দার জন্য থাকবে শহীদ ব্যাক্তির সাওয়াবের সমান সাওয়াব। দাউদ থেকে নাযরও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৪ | 5324 | ۵۳۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৩০৩. কুরআন পড়ে এবং সূরা নাস ও ফালাক (মু’আব্বিযাত) পড়ে ফুঁক দেওয়ার বর্ণনা
৫৩২৪। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ওফাত পান সেই রোগের সময়ে তিনি নিজ দেহে মুআব্বিযাত (সূরা নাস ও ফালাক) পড়ে ফুঁক দিতেন। এরপর যখন রোগ তীব্রে হয়ে গেল, তখন আমি সেগুলো পড়ে ফুঁক দিতাম। আর আমি তার নিজের হাত তার দেহের উপর বুলিয়ে দিতাম। কেননা তাঁর হাতে বরকত ছিল। রাবী বলেনঃ আমি যুহরীকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কিভাবে ফুঁক দিতেন? তিনি বললেনঃ তিনি তার দুই হাতের উপর ফুঁক দিতেন, এরপর সেই হস্তদ্বয় দ্বারা আপন মুখমণ্ডল বুলিয়ে নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৫ | 5325 | ۵۳۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৩০৪. সূরাহ ফাতিহার দ্বারা ফুঁক দেয়া। ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে নবী (সাঃ) সুত্রে এ ব্যাপারে উল্লেখ আছে
৫৩২৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের মধ্যে কতিপয় সাহাবী আরবের এক গোত্রের নিকট আসলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোন মেহমানাদারী করল না। তারা সেখানে থাকা কালেই হঠাৎ সেই গোত্রের নেতাকে সর্প দংশন করছেন। তখন তারা এসে বলল আপনাদের কাছে কি কোন ঔষধ আছে কিংবা আপনাদের মখ্যে ঝাড়-ফুঁককারী কোন লোক আছে কি? তারা উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তবে তোমরা আমাদের কোন মেহমানদারী করনি। কাজেই আমাদের জন্য কোন বিনিময় নির্ধারণ না করা পর্যন্ত আমরা তা করবো না। ফলে তারা তাদের জন্য এক পাল বকরী বিনিময় স্বরুপ দিতে রাযী হল। তখন একজন সাহাবী উম্মুল কুরআন (সূরা-‘ফাতিহা) পড়তে লাগলেন এবং মুখে থুথু জমা করে তা সে ব্যাক্তির গায়ে ছিঁটিয়ে দিলেন। ফলে সে আরোগ্য লাভ করল। এরপর তারা বকরীগুলো নিয়ে এসে বললো, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করার পুর্বে এটি স্পর্শ করবো না। এরপর তাঁরা এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে হেসে দিলেন এবং বললেন তোমরা কিভাবে জানলে যে এটি রোগ নিরাময়কারী? ঠিক আছে বকরীগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও এক অংশ রেখে দিও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৬ | 5326 | ۵۳۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৩০৫. ঝাড়-ফুঁক দেওয়ার বিনিময়ে একপাল বকরীর শর্ত
৫৩২৬। সীদান ইবনু মুদারিব আবূ মুহাম্মদ বাহিলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের একটি দল একটি কুপের পাশে নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। কুপের পাশে মধ্যে ছিল সাপে কাটা এক ব্যাক্তি কিংবা তিনি বলেছেন দংশিত এক ব্যাক্তি। তখন কুপের কাছে একজন এসে তাদের বলল আপনাদের মধ্যে কি কোন ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? কুপ এলাকায় একজন সাপ বা বিচ্ছু দংশিত লোক আছে। তখন সাহাবীগণের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বকরী দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন (এবং ফুঁক দিলেন)। ফলে লোকটি আরোগ্য লাভ করল। এরপর তিনি বকরীগুলো নিয়ে তাঁর সাথীদের নিকট আসলেন কিন্তু তাঁরা কাজটি পছন্দ করলেন না। তারা বললেনঃ আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। অবশেষে তারা মদিনায় পৌছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে যেয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময়ে গ্রহণ করে থাকো তম্মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর কিতাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৭ | 5327 | ۵۳۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৩০৬. বদ নযরের জন্য ঝাড়ফুঁক করা
৫৩২৭। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন কিংবা তিনি বলেছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন বদ নযরের কারণে ঝাড়ফঁক গ্রহনের।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৮ | 5328 | ۵۳۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৩০৬. বদ নযরের জন্য ঝাড়ফুঁক করা
৫৩২৮। মুহাম্মদ ইবনু খালিদ (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘরে একটি মেয়েকে দেখলেন যে, তার চেহারায় কালিমা রয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তাকে ঝাড়ফুক করাও, কেননা তার উপর (বদ) নযর লেগেছে। আবদুল্লাহ ইবনু সালিম (রহঃ) এ হাদীস যুবায়দী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। উকায়ল (রহঃ) বলেছেন, এটি যুহরী (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৯ | 5329 | ۵۳۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৩০৭. বদ নযর লাগা সত্য
৫৩২৯। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বদ নযর লাগা সত্য। আর তিনি উল্কি আঁকতে (খোদাই করতে) নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩০ | 5330 | ۵۳۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৩০৮. সাপ কিংবা বিচ্ছুর দংশনে ঝাড়-ফুঁক দেয়া
৫৩৩০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদের পিতা আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ) কে বিষাক্ত প্রানীর দংশনের কারণে ঝাড়-ফুঁক গ্রহনের ব্যাপার জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব রকমের বিষাক্ত প্রানীর দংশনে ঝাড়-ফুঁক গ্রহনের জন্য অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩১ | 5331 | ۵۳۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও সাবিত একবার আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট যাই। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা, আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস (রাঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে দেব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আনাস (রাঃ) পড়লেন হে আল্লাহ! তুমি মানুষের রব, ব্যথ্যা নিবারণকায়ী, শিফা দান করো তুমিই শিফা দানকারী। তুমি ব্যাতীত আর কেউ শিফা দানকারী নেই। এমন শিফা দাও যা কোন রোগ অবশিষ্ট রাখে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩২ | 5332 | ۵۳۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩২। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পড়ে ডান হাত দ্বারা বুলিয়ে দিতেন এবং পড়তেন হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূর করো এবং শিফা দান করো, তুমিই শিফা দানকারী, তোমার শিফা ছাড়া অন্য কোন শিফা নেই। এমন শিফা দাও, যা কোন রোগ অবশিষ্ট থাকে না। সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেন, আমি এ সম্বন্ধে মানসূরকে বলেছি। তারপর ইবরাহীম সুত্রে মাসরুকের বরাতে আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৩ | 5333 | ۵۳۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৩। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়ফুঁক করতেন। আর এ দুআ পাঠ কবতেনঃ ব্যথা সূর করে দাও, হে মানুষের পালনকর্তা। শিফাদানের ইখতিয়ার কেবল তোমারই হাতে। এ ব্যথা তুমি ব্যতীত আর কেউ দূর করতে পারে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৪ | 5334 | ۵۳۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) খেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগীর জন্য (মাটিতে) এ দুআ পড়তেনঃ আল্লাহর নামে আমাদের দেশের মাটি এবং আমাদের কারও থুথু, আমাদের খুরমা আমাদের রোগীকে আরোগ্য দান করে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৫ | 5335 | ۵۳۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৫। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়ফুঁক পড়তেনঃ আমাদের দেশের মাটি এবং আমাদের কারও থুথুতে আমাদের রবের হুকুমে আমাদের রোগী আরোগ্য লাভ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৬ | 5336 | ۵۳۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৬। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু দেখে যা তার কাছে খারাপ মনে হয় তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে উঠে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর অনিষ্ট থেকে পানাহ চায়। কেননা, তা হলে এ তার কোন ক্ষতি করবে না। আবূ সালামা (রাঃ) বললেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়। তখন এ হাদীস শোনার কারনে আমি তার তখন পরোয়াই করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৭ | 5337 | ۵۳۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ উয়ায়সী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আপন বিছানায় আসতেন, তখন তিনি তার উভয় হাতের তালুতে সূরা ইখলাস এবং মুআওব্বিযাতায়ন অর্থ্যৎ সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফুঁক দিতেন। তারপর উভয় তালু দ্বারা আপন চেহারা ও দু’ হাত শরীরের যতদূর পৌছায় ততদুর পর্যন্ত মাসাহ করতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অসুস্থ হন তখন তিনি আমাকে অনুরূপ করার নির্দেশ দিতেন। ইউনুস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু শিহাব (রহঃ) কে, যখন তিনি তার বিছানায় শুতে যেতেন, তখন অনুরূপ করতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৮ | 5338 | ۵۳۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একদল সাহাবী একবার এক সফরে গমন করেন। অবশেষে তারা আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে এক গোত্রের নিকট এসে গোত্রের কাছে মেহমান হতে চান। কিন্তু সে গোত্র তাঁদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করে। ঘটনাক্রমে সে গোত্রের সর্দারকে সাপে দংশন করে। তারা তাকে সুস্থ করার জন্য সবরকম চেষ্টা করে, কিন্তু কোন ফল হয় না। তখন তাদের কেউ বললোঃ তোমরা যদি ঐ দলের কাছে যেতে যারা তোমাদের মাঝে এসেছিল। হয়তো তাদের কারও কাছে কোন তদবীর থাকতে পারে। তখন তারা সে দলের কাছে এসে বলল হে দলের লোকেরা! আমাদের সর্দারকে সাপে দংশন করেছে। আমরা তার জন্য সবরকমের চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন ফল হয়নি। তোমাদের কারও নিকট কি কোন তদবীর আছে? একজন বললেন হ্যাঁ। আল্লাহর কসম আমি ঝাড়ফুঁক জানি। তবে আল্লাহর কসম! আমরা তোমাদের নিকট মেহমান হতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমরা আমাদের মেহমানদারী করনি। তাই আমি ততক্ষন পর্যন্ত ঝাড়-ফুঁক করবো না যতক্ষন না তোমরা আমাদের জন্য মজুরী নির্ধারণ করবে।

তখন তারা তাদের একপাল বকরী দিতে সম্মত হল। তারপর সে সাহাবী সেখানে গেলেন এবং আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে ফুঁক দিতে থাকলেন। অবশেষে সে ব্যাক্তি এমন সুস্থ হল যেন বন্ধন থেকে মুক্তি পেল। সে চলাফেরা করতে লাগলো, যেন তার কোন রোগই নেই। রাবী বলেনঃ তখন তারা যে মজুরী ঠিক করেছিল, তা পরিশোধ করলাম। এরপর সাহাবীদের মধ্যে একজন বললেনঃ এগুলো বন্টন করে দাও। এতে যিনি ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তিনি বললেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যেয়ে যতক্ষন না এসব ঘটনা ব্যক্ত করবো এবং তিনি আমাদের কি নির্দেশ দেন তা প্রত্যক্ষ করব, ততক্ষন তোমরা তা বণ্টন করো না। তারপর তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে ঘটনা ব্যক্ত করলেন। তিনি বললেন তুমি কি করে জানলে যে এর দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা যায়? তোমরা সঠিকই করেছ। তোমরা এগুলো বণ্টন করে নাও এবং সে সঙ্গে আমার জন্য এক ভাগ নির্ধারণ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৯ | 5339 | ۵۳۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৩১১. ঝাড়-ফুঁককারীর ডান হাত দিয়ে ব্যথিত স্থান মাসাহ করা
৫৩৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাউকে ঝাড়ার সময় ডান হাত দিয়ে মাসহ করতেন (এবং বলতেন) হে মানুষের রব! তুমি রোগ দূর করে দাও এবং শিফা দান কর। তুমিই তো শিফাদানকারী, তোমার শিফা ভিন্ন আর কোন শিফা নেই এমন শিফা দাও, যার পর কোন রোগ থাকে না। এ হাদীস আমি মানসূরের কাছে উল্লেখ করায় তিনি ইবরাহীম, মাসরুক, আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪০ | 5340 | ۵۳٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৩১২. মেয়েলোকের দ্বারা পুরুষকে ঝাড়-ফুঁক করা
৫৩৪০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ইন্তেকাল করেন, সে রোগে তিনি সুরা নাস ও সূরা ফালাক পড়ে নিজের উপর ফুঁক দিতেন। যখন রোগ বেড়ে যায়, তখন আমি সেগুলো পড়ে ফুঁক দিতাম এবং তার হাত বুলিয়ে দিতাম বরকতের উদ্দেশ্যে। [বর্ণনাকারী মা’মার (রহঃ)] বলেন, আমি ইবনু শিহাবকে জিজ্ঞাস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে ফুঁক দিতেন? তিনি বললেনঃ প্রথমে নিজের উভয় হাতে ফুঁক দিতেন, তারপর তা দিয়ে চেহারা মুছে নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪১ | 5341 | ۵۳٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৩১৩. যে ব্যক্তি ঝাড়-ফুঁক করে না
৫৩৪১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করেন এবং বলেনঃ আমার সামনে (পূর্ববর্তী নাবীগণের) উম্মাতদের পেশ করা হল। (আমি দেখলাম) একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাচ্ছেন তার সাথে রয়েছে মাত্র একজন লোক এবং আর একদল নাবী যার সঙ্গে রয়েছে দু’ জন লোক। অন্য এক নাবীকে দেখলাম, তার সঙ্গে আছে একটি দল, আর একজন নাবী তার সাথে কেউ নেই। আবার দেখলাম, একটি বিরাট দল যা দিগন্ত জুড়ে আছে। আমি আকাঙ্খা করলাম যে এ বিরাট দলটি যদি আমার উম্মাত হতো। বলা হল এটা মূসা (আলাইহিস সালাম) ও তার কাওম। এরপর আমাকে বলা হলঃ এইদিকে দেখুন। দেখলাম, একটি বিরাট দল দিগন্ত জুড়ে ছেয়ে আছে। আবার বলা হলোঃ এ দিকে দেখুন। ওদিকে দেখুন। দেখলাম বিরাট বিরাট দল দিগন্ত জুড়ে ছেয়ে আছে। বলা হলঃ ঐ সবই আপনার উম্মত এবং ওদের সাথে সত্তর হাজার লোক এমন আছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।

এরপর লোকজন এদিক ওদিক চলে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর তাদের (সত্তর হাজারের) ব্যাখ্যা করেন নি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগগ এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা শুরু করে দিলেন। তারা বলাবলি করলেন আমরা তো শিরকের মধ্যে জন্মলাভ করেছি, পরে আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ঈমান এনেছি। বরং এরা আমাদের সন্তানরাই হবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ কথা পৌছলে তিনি বলেনঃ তারা (হবে) ঐ সব লোক যারা অবৈধভাবে মঙ্গল অমঙ্গল নির্ণয় করে না, ঝাড় ফুঁক করে না এবং আগুনে পোড়ানো লোহার দাগ লাগায় না, আর তারা তাদের রবের উপর একমাত্র ভরসা রাখে। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললো ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাদের মধ্যে আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আর একজন দাঁড়িয়ে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাদের মধো আছি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে উক্কাশা তোমাকে অতিক্রম করে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪২ | 5342 | ۵۳٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৩১৪. পশু-পাখি তাড়িয়ে শুভ-অশুভ নির্ণয়
৫৩৪২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোঁয়াচে ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। অমঙ্গল তিন বস্তুর মধ্যে – নারী ঘর ও জানোয়ার।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৩ | 5343 | ۵۳٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৩১৪. পশু-পাখি তাড়িয়ে শুভ-অশুভ নির্ণয়
৫৩৪৩। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়য়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, শুভ-অশুভ নির্ণয়ে কোন লাভ নেই, বরং শুভ লক্ষণ গ্রহণ করা ভাল। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা কবলেন শুভ লক্ষণ কি? তিনি বললেন ভাল বাক্য যা তোমাদের কেউ শুনে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৪ | 5344 | ۵۳٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৩১৫. শুভ-অশুভ লক্ষন
৫৩৪৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন শুভ-অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই এবং এর কল্যাণই হল শুভ লক্ষণ। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! শুভ লক্ষণ কি? তিনি বললেনঃ ভাল কথা, যা তোমাদের কেউ (বিপদের সময়) শুনে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৫ | 5345 | ۵۳٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৩১৫. শুভ-অশুভ লক্ষন
৫৩৪৫। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের সংক্রমণ ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। শুভ লক্ষনই আমার নিকট পছন্দনীয়, আর তা হল উত্তম বাক্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৬ | 5346 | ۵۳٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৩১৬. পেচাঁয় কুলক্ষন নেই
৫৩৪৬। মুহাম্মদ ইবনু হাকাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রোগের মধ্যে সংক্রমণ নেই; শুভ-অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই। পেঁচায় কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসে অকল্যাণ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৭ | 5347 | ۵۳٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়য়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হুযায়ল গোত্রের দুই মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাদের একজন অন্য জনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের ঝচ্চাকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অভিযোগ পেশ করে। তিনি বিচার করেন যে, এর পেটের সন্তানের পরিবর্তে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন আরোপিত হবে, যে পান করেনি, আহার করেনি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা মওকুফ হওয়ার যোগ্য। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ লোকটি তো (দেখা যায়) গণকদের ভাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৮ | 5348 | ۵۳٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। দুইজন মহিলার একজন অন্যজনের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে সে তার গর্ভপাত ঘটায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ঘটনায় বিচারে গর্ভস্থ শিশুর বিনিময়ে একটি দাস বা দাসী দেওয়ার ফয়সালা দেন। অপর এক সুত্রে … সাঈদ ইবনু মূসায়্যিব এর সুত্রে বর্ণিত যে, যে গর্ভস্থ শিশুকে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় হত্যা করা হয়, তার ক্ষতিপূরণ স্বরুপ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দাস বা দাসী প্রদানের ফয়সালা দেন। যার বিরুদ্ধে এ ফয়সালা দেওয়া হয়, সে বলে আমি কিরুপে এমন শিশুর জরিমানা আদায় করি যে পানাহার করেনি, কথা বলেনি এবং চীৎকারও দেয়নি। এ জাতীয় হত্যার জরিমানা রহিত হওয়ার যোগ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এ তো গণকদের ভাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৯ | 5349 | ۵۳٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য যিনাকারিণীর মজুরী ও গণকের পারিশ্রমিক দিতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫০ | 5350 | ۵۳۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৫০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কতিপয় লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ এ কিছুই নয়। তারা বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওরা কখনও কখনও আমাদের এমন কথা শোনায়, যা সত্য হয়ে থাকে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ কথা সত্য। জ্বীনেরা তা ছোঁ মেরে নেয়। পরে তাদের বন্ধু (গণক) এর কানে ঢেলে দেয়। তারা এর সাথে শত মিথ্যা মিশ্রিত করে। আলী (রহঃ) বলেন, আবদুর রাযযাক (রহঃ) বলেছেনঃ এ বানী সত্য মুরসাল। এরপর আমার কাছে সংবাদ পৌছেযে পরে এটি তিনি মুসনাদ রূপে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫১ | 5351 | ۵۳۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৩১৮. যাদু সম্পর্কে। মহান আল্লাহর বাণীঃ শায়তানরাই কুফুরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবিল শহরে হারুত ও মারুত ফেরেশতাদ্বয়ের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল ………… পরকালে তার কোন অংশ নেই পর্যন্ত(বাকারাঃ ১০২) মহান আল্লাহর বাণীঃ যাদুকর যে যেথায়ই আসুক, সফল হবে না- (ত্বহাঃ৬-৯)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কি দেখে শুনে যাদুর কবলে পড়বে? (আম্বিয়াঃ ৩)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তখন তাদের যাদুর কারনে মূসার মনে হল যে, তাদের রশি আর লাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে (ত্বহাঃ ৬৬)। মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং সে সব নারীর অনিষ্ট থেকে যারা গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দেয় (ফালাকঃ ৪) النَّفَّاثَاتُ অর্থ যাদুকর নারী, যারা যাদু করে চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেয়।
৫৩৫১। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যুরায়ক গোত্রের লাবীদ ইবনু আ’সাম নামক এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাদু করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেয়াল হতো যেন তিনি একটি কাজ করছেন, অথচ তা তিনি করেননি। এক দিন বা এক রাত্রি তিনি আমার কাছে ছিলেন। তিনি বার বার দু’আ করতে থাকেন। তারপর তিনি বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি কি উপলব্ধি করতে পেরেছ যে, আমি আল্লাহর কাছে যা জানতে চেয়েছিলাম, তিনি আমাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক আসেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন দু’পায়ের কাছে বসেন। একজন তাঁর সঙ্গীকে বলেনঃ এ লোকটির কি ব্যথা? তিনি বলেনঃ যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বলেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বলেন লাবীদ ইবনু আসাম। প্রথম জন জিজ্ঞাসা করেনঃ কিসের মধ্যে? দ্বিতীয় জন উত্তর দেন চিরুনী, মাথা আচড়ানোর সময় উঠা চুল এবং এক পুং খেজুর গাছের ‘জুব’ এর মধ্যে। প্রথম জন বলেনঃ তা কোথায়? দ্বিতীয় জন বলেনঃ ‘যারওয়ান’ নামক কুপের মধ্যে।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সাহাবী সঙ্গে নিয়ে তথায় যান। পরে ফিরে এসে বলেনঃ হে আয়িশা! সে কুপের পানি মেহদীর পানির মত (লাল) এবং তার পাড়ের খেজুর গাছের মাথাগুলো শয়তানের মাথার মত। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি এ কথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ আমাকে আরোগ্য দান করেছেন, আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ কবি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলে সেগুলো মাটিতে পুতে ফেলা হয়।

আবূ উসামা আবূ দামরা ও ইবনু আবূ যিনাদ (রহঃ) হিশাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। লাইস ও ইবনু উয়ায়না (রহঃ) হিশাম থেকে বর্ননা করেছেন, চিরুনি ও কাতানের টুকরায়। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ مُشَاطَةُ হল চিরুনি করার পর যে চুল বের হয়। মুশাকা হল কাত্তান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫২ | 5352 | ۵۳۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৩১৯. শিরক ও যাদু ধংসাত্মক
৫৩৫২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বেঁচে থাক। আর তা হল আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থির করা ও যাদু করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৩ | 5353 | ۵۳۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৩২০. যাদুর চিকিৎসা করা যাবে কি না? ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ জনৈক ব্যক্তিকে যাদু করা হয়েছে অথবা (যাদু করে) তার ও তার স্ত্রীর মধ্যে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, এমন ব্যক্তিকে যাদু মুক্ত করা যায় কি না অথবা তার থেকে যাদুর বন্ধন খুলে দেয়া বৈধ কি না? সাঈদ(রহঃ) বলেনঃ এতে কোন ক্ষতি নেই। কেননা, তারা এর দ্বারা তাকে ভাল করতে চাইছে। আর যা কল্যানকর তা নিষিদ্ধ নয়।
৫৩৫৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে তার মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেন নি। সুফিয়ান বলেনঃ এ অবস্থা হল যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি অবগত হও যে আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাকে তা বাতলিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং অন্যজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ লোকটির কি অবস্থা? দ্বিতিয় লোকটি বলেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লাবীদ ইবনু আসাম।

এ ইয়াহুদীদের মিত্র যুরায়ক গোত্রের একজন সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যাক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনি করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জবের মধ্যে রেখে যারওয়ান নামক কুপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কুপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখান হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়, আর এ কুপের (পার্শ্ববর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি এ কথা প্রচার করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে শিফা দান করেছেন আর আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৪ | 5354 | ۵۳۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৩২১. যাদু
৫৩৫৪। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যাদু করা হয়। এমনকি তার মনে হতো তিনি কাজটি করেছেন অথচ তা তিনি করেননি। অবশেষে এক দিন তিনি যথন আমার কাছে ছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর নিকট বার বার দু’আ করলেন। তারপর ঘুম থেকে জেগে বলেন, হে আয়িশা। তুমি কি বুঝতে পেরেছ? আমি যে বিষয়ে তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি তা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কী? তিনি বললেনঃ আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং আরেকজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। তারপর একজন অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এ লোকটির কী ব্যাথা? তিনি উত্তর দিলেনঃ তাঁকে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে তাকে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ যুরায়ক গোত্রের লাবীদ ইবনু আসম নামক ইয়াহুদী।

প্রথম জন জিজ্ঞাসা করলেনঃ যাদু কিসের দ্বারা করা হয়েছে? দ্বিতীয়জন বললেনঃ চিরুনি, চিরুনি আঁচড়াবার সময়ে উঠে আসা চুল ও নর খেজুর গাছের জুব এর মধ্যে। প্রথমজন জিজ্ঞাসা করলেনঃ তা কোথায়? দ্বীতিয় জন বললেনঃ যারওয়ান নামক কুপে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের কয়েকজনকে নিয়ে ঐ কুপের নিকট গেলেন এবং তা খনন করে দেখলেন। কুপের পাড়ে ছিল খেজুর গাছ। তারপর তিনি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট ফিরে এসে বললেনঃ আল্লাহর কসম। কুপটির পানি (রং) মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়। আবূ পার্শ্ববর্তী খেজুর গাছের মাথাও শয়তানের মাথার ন্যয়। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি সেগুলো বের করবেন না? তিনি বললেনঃ না আল্লাহ আমাকে আরোগ্য ও শিফাদান করেছেন, মানুষের উপর এঘটনা থেকে মন্দ ছড়িয়ে দিতে আমি সঙ্কোচবোধ করি। এরপর তিনি যাদুর জিনিসপত্রগুলোর ব্যাপারে নির্দেশ দিলে, সেগুলো মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৫ | 5355 | ۵۳۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৩২২. কোন কোন ভাষণ যাদু
৫৩৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার পূর্ব অঞ্চল (নজদ এলাকা) থেকে দু’জন লোক এল এবং দু’জনই ভাষন দিল। লোকজন তাদের ভাষনে তাজ্জব হয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন কোন ভাষণ অবশ্যই যাদুর ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৬ | 5356 | ۵۳۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আজওয়া খেজুর দিয়ে যাদুর চিকিৎসা
৫৩৫৬। আলী (রহঃ) … আমির ইবনু সা’দ তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি প্রতিদিন সকালে কয়েকটি আজওয়া খুরমা খাবে ঐ দিন রাত পর্যন্ত কোন বিষ ও যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না। অন্যান্য বর্ননাকারীগণ বলেছেনঃ সাতটি খুরমা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৭ | 5357 | ۵۳۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আজওয়া খেজুর দিয়ে যাদুর চিকিৎসা
৫৩৫৭। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি ভোর বেলা সাতটি আজওয়া (মদিনায় উৎপন্ন উন্নত মানের খুরমার নাম) খেজুর খাবে, সে দিন কোন বিষ বা যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৮ | 5358 | ۵۳۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৩২৪. পেঁচার মধ্যে কোন অশুভ লক্ষন নেই
৫৩৫৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের মধ্যে কোন সংক্রামক শক্তি নেই। সফর মাসের মধ্যে অমঙ্গলের কিছু নেই এবং পেঁচায় কোন অশুভ লক্ষণ নেই। তখন এক বেদুঈন বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা হলে যে উট পাল মরুভূমিতে থাকে, হরিণের ন্যায় তা সুস্থ ও সবল হয়। এ উট পালের মধ্যে একটি চর্মরোগ বিশিষ্ট উট মিশে মিশে সবগুলোকে চর্ম রোগগ্রস্থ করে ফেলে (এরূপ কেন হয়)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তবে প্রথম উটটির মধ্যে কে এ রোগ সংক্রমণ করেছিল?

আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যেন কখনও রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের সাথে না রাখে। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) প্রথম হাদীস অস্বীকার করেন। আমরা বললাম আপনি কি لاَ عَدْوَى হাদীস বর্ননা করেননি? এ সময় তিনি হাবশী ভাষায় কি যেন বললেন। আবূ সালামা (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে এ হাদীসটি ভিন্ন অন্য কোন হাদীস ভুলে যেতে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৯ | 5359 | ۵۳۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৫৯। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রোগে কোন সংক্রমণ নেই, শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই, অশুভ কেবল নারী, ঘোড়া ও ঘর এ তিন জিনিসের মধ্যেই হতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬০ | 5360 | ۵۳٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৬০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ (রোগে) কোন সংক্রমণ নেই। আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান বলেন আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের মধ্যে মিশাবে না। যুহরী সুত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (রোগে) সংক্রমণ নেই। তখন এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল এ ব্যাপারে অপনার কি মত যে, হরিণের ন্যায় সুস্থ উট প্রান্তরে থাকে। পরে কোন চর্মরোগগ্রস্ত উট এদের সাথে মিশে সবগুলোকে চর্মরোগে আক্রান্ত করে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা যদি হয় তবে প্রথমটিকে কে রোগাক্রান্ত করেছিল?

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬১ | 5361 | ۵۳٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৬১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (রোগের মধ্যে) কোন সংক্রমণ নেই এবং শুভ-অশুভ নেই আর আমার নিকট ‘ফাল’ পছন্দনীয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘ফাল’ কী? তিনি বললেনঃ উত্তম কথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬২ | 5362 | ۵۳٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৩২৬. নাবী (সাঃ) কে বিষ পান করানো প্রসঙ্গে উরওয়া (রহঃ) বর্ণনা করেছেন আয়শা (রাঃ) থেকে, তিনি নবী (সাঃ) থেকে
৫৩৬২। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খায়বার যখন বিজয় হয়, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি (ভুনা) বকরী প্রেরিত হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর। তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সন্মোধন করে বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে? তারা বললোঃ হ্যাঁ, হে আবূল কাসিম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের পিতা কে? তারা বললো আমাদের পিতা অমুক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক। তারা বললোঃ আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন।

এরপর তিনি বললেনঃ আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি, তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে? তারা বললো হ্যাঁ, হে আবূল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ জাহান্নামী কারা? তারা বললো আমরা সেখানে অল্প দিনের জন্য থাকবে। তারপর আপনারা আমাদের স্থনাভিষিক্ত হবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরাই সেখানে লাঞ্চিত হয়ে থাকো। আল্লাহর কসম! আমরা কখনও সেখানে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না।

এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বলেন আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বললো হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ? তারা বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে? তারা বললো। আমরা চেয়েছি, যদি আপনি (নবুওয়াতের দাবীতে) মিথ্যাবাদী হন, তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব। আর যদি আপনি (সত্য) নাবী হন, তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৩ | 5363 | ۵۳٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৩২৭. বিষ পান করা, বিষের সাহায্যে চিকিৎসা করা, মারাত্মক কিছু দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে মারা যাবার আশংকা আছে এবং হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা করা
৫৩৬৩। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্নহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরদিন সে জাহান্নামের মধ্যে অনুরূপভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে ব্যাক্তি বিষপান করে আত্নহত্যা করবে তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে। যে ব্যাক্তি লোহার আঘাতে আত্নহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনের মধ্যে সে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তা দ্বারা নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৪ | 5364 | ۵۳٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৩২৭. বিষ পান করা, বিষের সাহায্যে চিকিৎসা করা, মারাত্মক কিছু দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে মারা যাবার আশংকা আছে এবং হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা করা
৫৩৬৪। মুহাম্মদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি সকাল বেলা সাতটি আজওয়া খুরমা খেয়ে নিবে, তাকে সে দিন কোন বিষ অথবা যাদু ক্ষতি করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৫ | 5365 | ۵۳٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৩২৮. গাধীর দুধ
৫৩৬৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ ছালাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রকার নখ বিশিষ্ট হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমি সিরিয়ায় চলে আসা পর্যন্ত এ হাদীস শুনি নাই। লায়স বাড়িয়ে বলেছেন যে, ইউনুস (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন যে, আমি এ হাদীসের বর্ণনাকায়ী (আবূ ইদরীস) কে জিজ্ঞাসা করেছি যে, গাধীর দুধ, হিংস্র প্রানীর পিত্তরস এবং উটের পেশাব পান করা বা তা দিয়ে ওযু করা জায়েয কি না? তিনি বলেছেনঃ পূর্বেকার মুসলিমগণ উটের পেশাব দ্বারা চিকিৎসার কাজ করতেন এবং একে তারা কোন পাপ মনে করতেন না। আর গাধীর দুধ সম্পর্কে কথা হল গাধার গোস্ত খাওয়ার নিষেধ বাণী আমাদের কাছে পৌছে