নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ অবস্থা প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ন করলেনঃ তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা এর সাথে সঞ্চালন করো না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই (৭৫ঃ ১৬, ১৭)। তিনি বলেনঃ جَمْعُهُ এর অর্থ আপনার বক্ষে তা এভাবে সংরক্ষিত করা, যেন পরে তা পড়তে সক্ষম হন। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর (৭৫ঃ ১৮ )। এর অর্থ হচ্ছে, আপনি তা শ্রবণ করুন এবং চুপ থাকুন। এরপর আপনি কুরআন পাঠ করবেন সে দায়িত্ব আমাদের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) যখন আসতেন, তিনি তখন একাগ্রচিত্তে তা শ্রবণ করতেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) চলে গেলে তিনি ঠিক তেমনিভাবে পাঠ করতেন, যেমনি তাকে পাঠ করিয়েছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৭০১৭ | 7017 | ۷۰۱۷
পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৭। উমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মহান আল্লাহর বানীঃ সালাতে স্বর উচ্চ করবে না এবং অতিশয় ক্ষীনও করবে না … (১৭ঃ ১১০) এ প্রসঙ্গে বলেনঃ এ নির্দেশ যখন নাযিল হল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় গোপনে অবস্থান করতেন। অথচ তিনি যখন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, কুরআন উচ্চস্বরে পড়তেন। মুশরিকরা এ কুরআন শুনলে কুরআন, কুরআন এর অবতীর্ণকারী এবং বাহক সবাইকে গালমন্দ করত। এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলে দিলেন, আপনার সালাত (নামায/নামাজ) কে এমন উচ্চস্বরে করবেন না অর্থাৎ আপনার কিরাআতকে। তাহলে মুশরিকরা শুনতে পেয়ে কুরআন সম্পর্কে গালমন্দ করবে। আর এ কুরআন আপনার সাহাবীদের কাছে এত ক্ষীন স্বরেও পড়বেন না, যাতে আপনার কিরাআত তারা শুনতে না পায়। বরং এ দুয়ের মাঝামাঝি পথ অবলম্বন করুন।
হাদিস নম্বরঃ ৭০১৮ | 7018 | ۷۰۱۸
পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৮। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ আয়াতটি “আপনি আপনার সালাত (নামায/নামাজ) কে উচ্চস্বরেও পড়বেন না এবং ক্ষীনও করবেন না” দোয়া সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।
হাদিস নম্বরঃ ৭০১৯ | 7019 | ۷۰۱۹
পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ভাল আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের নয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) ছাড়া অন্যরা يَجْهَرُ بِهِ উচ্চস্বরে কুরআন পড়ে না, কথাটুকু বৃদ্ধি করেছেন।
হাদিস নম্বরঃ ৭০২০ | 7020 | ۷۰۲۰
পরিচ্ছদঃ ৩১৪৭. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ কুরআন দান করেছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে। আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেওয়া হতো, আমিও সেরূপ করতাম যেরূপ সে করছে। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে বলেন, ব্যক্তিটির কুরআনের সাথে কায়েম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা। এবং তিনি বললেন, তাঁর নির্দেশনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র (৩০ঃ ২২) নবী (সাঃ) তিলাওয়াত করলেন, وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার (২২ঃ ৭৭)
৭০২০। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি বিষয় ছাড়া ঈর্ঘা করা যায় না। এক ব্যাক্তি হচ্ছে, আল্লাহ যাকে কুরআন দান করেছেন, আর সে দিবারাত্র তা তিলাওয়াত করে। অপর ব্যাক্তি বলে, এ লোকটিকে যা দেওয়া হয়েছে আমাকে যদি অনুরূপ দেওয়া হতো, তা হলে আমিও অনুরূপ করতাম, সে যেরূপ করছে। আরেক ব্যাক্তি হচ্ছে সে, যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দিয়েছেন। ফলে সে তা যখাযথভাবে ব্যয় করছে। তখন অপর ব্যাক্তি বলে, একে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকেও যদি অনুরূপ দেওয়া হতো, আমিও তাই করতাম, সে যা করেছে।
হাদিস নম্বরঃ ৭০২১ | 7021 | ۷۰۲۱
পরিচ্ছদঃ ৩১৪৭. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ কুরআন দান করেছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে। আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেওয়া হতো, আমিও সেরূপ করতাম যেরূপ সে করছে। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে বলেন, ব্যক্তিটির কুরআনের সাথে কায়েম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা। এবং তিনি বললেন, তাঁর নির্দেশনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র (৩০ঃ ২২) নবী (সাঃ) তিলাওয়াত করলেন, وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার (২২ঃ ৭৭)
৭০২১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সালিম তার পিতা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একমাত্র দুটি বিষয়েই ঈর্ষা করা যায়। একজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ কুরআন দান করেছেন, আর সে তা রাতদিন তিলাওয়াত করে, আরেকজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন আর সে রাতদিন তা ব্যায় করে। আমি সুফয়ান (রহঃ) কে একাধিকবার শুনেছি কিন্তু তাকে الْخَبَرَ উল্লেখ করতে শুনিনি। অর্থাৎ এটি তার বিরুদ্ধ হাদীসগুলোর অন্যতম।