হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৩ | 6063 | ٦۰٦۳
পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৩। হাজ্জাজ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহব সাক্ষাত লাভ করা ভালবাসে, আল্লাহ তা’আালাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে না, আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করেন না। তখন আয়িশা (রাঃ) অথবা তাঁর অন্য কোন সহধর্মিণী বললেনঃ আমরাও তো মৃত্যুকে পছন্দ করি না। তিনি বললেনঃ বিষয়টা এরূপ নয়। আসলে ব্যাপারটা হল এই যে, যখন মুমিন বান্দার মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার সম্মানিত হওয়ার সুসংবাদ শোনানো হয়। তখন তার সামনের সুসংবাদের চাইতে তার নিকট বেশি পছন্দনীয় কিছু থাকে না। সুতরাং সে তখন আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করাকেই পছন্দ করে, আর আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর কাফিরের যখন অন্তিমকাল উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর আযাব ও শাস্তির সংবাদ দেওয়া হয়। তখন তার সামনের আযাবের সংবাদের চাইতে তার কাছে অধিক অপছন্দনীয় কিছুই থাকে না। সুতরাং সে (এ সময়) আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা অপছন্দ করে, আর আল্লাহ তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৪ | 6064 | ٦۰٦٤
পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর মূলাকাতকে ভালবাসে, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাতকে ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর মুলাকাতকে ভালবাসে না, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাত ভালবাসেন না।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৫ | 6065 | ٦۰٦۵
পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থাবস্থায় প্রায়ই এ কথা বলতেন যে, কোন নাবীরই (জান) কবয করা হয় না, যতক্ষন পর্যন্ত তাকে তাঁর জান্নাতের ঠিকানা না দেখানো হয়, আর তাকে (জীবন অথবা মৃত্যুর) অধিকার না দেওয়া হয়। সুতরাং যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু কাল ঘনিয়ে এলো, এ সময় তার মাথা আমার রানের উপর ছিল, তখন কিছুক্ষণের জন্য তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। বেহুশ থেকে সুস্থ হওয়ার পর তিনি তাঁর চোখ উপরের দিকে তুলে ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ “আল্লাহুম্মার রাফীকালআলা” (অর্থাৎ ইয়া আল্লাহ! আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম)। আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, তখনই আমি (মনে মনে) বললাম যে, তিনি এখন আর আমাদেরকে পছন্দ করবেন না। আর আমি বুঝতে পারলাম যে, এটাই হচ্ছে সেই হাদীসের মর্ম, যা তিনি ইতিপূর্বে প্রায়ই বর্ণনা করতেন এবং এটাই ছিল তার শেষ কথা, যা তিনি বলেছেনঃ اللَّهُمَّ الرَّفِيقَ الأَعْلَى আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৬ | 6066 | ٦۰٦٦
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ ইবনু মায়মুন (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে চামড়ার অথবা কাঠের একপাত্রে কিছু পানি রাখা ছিল (উমর সন্দেহ করতেন) তিনি তাঁর উভয় হাত ঐ পানির মধ্যে দাখিল করতেন। এরপর নিজ মুখমণ্ডলে উভয় হাত দ্বারা মাসেহ করতেন এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন। আরও বলতেনঃ নিশ্চয়ই মৃত্যুর অনেক যন্ত্রণা রয়েছে। এরপর দু’হাত তুলে দোয়া করতে লাগলেন। ইয়া আল্লাহ! আমাকে সর্বোচ্চ বন্ধুর নিকটে পৌছিয়ে দিন। এ সময়ই তার (রূহ) কবয করা হল। আর হাত দু’টি ঢলে পড়ল।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৭ | 6067 | ٦۰٦۷
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৭। সাদাকা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিছু সংখ্যক কঠিন মেজাজের গ্রাম্য লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করতো কিয়ামত কবে হবে? তখন তিনি তাদের সর্ব-কনিষ্ঠ ব্যাক্তির দিকে তাকিয়ে বলতেনঃ যদি এ ব্যাক্তি কিছু দিন বেঁচে থাকে তবে তার বুড়ো হওয়ার আগেই তোমাদের কিয়ামত এসে যাবে। হিশাম বলেন যে, এ কিয়ামতের অর্থ হলো, তাদের মৃত্যু।
হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৮ | 6068 | ٦۰٦۸
পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৮। ইসমাঈল (রহঃ) … কাতাদা ইবনু রিবঈ আনসারী (রাঃ) বর্ণনা করেন। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হল। তিনি তা দেখে বললেনঃ সে শান্তি প্রাপ্ত অথবা তার থেকে শাস্তিপ্রাপ্ত। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ‘মুস্তারিহ’ ও ‘মুস্তারাহ মিনহু’ এর অর্থ কি? তিনি বললেনঃ মুমিন বান্দা মরে যাওয়ার পর দুনিয়ার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে আল্লাহর রহমতের দিকে পৌছে শান্তি প্রাপ্ত হয়। আর গুনাহগার বান্দা মরে যাওয়ার পর তার আচার-আচরণ থেকে সকল মানুষ, শহর-বন্দর, গাছ-পেলা ও প্রানীকূল শান্তিপ্রাপ্ত হয়।