হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৬ | 4916 | ٤۹۱٦
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে-সাহরী থেকে বিরত না রাখে। কেননা, সে আযান দেয়, যাতে তোমাদের রাত্রি জাগরণকারীরা (রাতের ইবাদতকারীরা) কিছু আরাম করতে পারে। সকাল বা ফজর হয়েছে এমন কিছু বুঝানো তার উদ্দেশ্য নয়। ইয়াযীদ তার হাত দুটি সম্মূখে প্রসারিত করে দু-দিকে ছড়িয়ে দিলেন। (সুবহে সা’দিক কিভাবে উদ্ভাসিত হয় তা দেখানোর জন্য)।
লায়স (রহঃ) বলেনঃ জাফর ইবনু রাবীআ, আবদূর রহমান ইবনু হরমুয থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর কাছে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন ও দাতা ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন দু-ব্যাক্তির ন্যায়, যাদের পরিধানে বক্ষস্থল থেকে গলার হাড় পর্যন্ত লৌহ-নির্মিত পোশাক রয়েছে। দানকারী যখনই কিছু দান করে, তখনই তার শরীরে পোশাকটি বড় ও প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি এটা তার আঙ্গুল ও অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ঢেকে ফেলে।
পক্ষন্তরে, কৃপণ যখনই দান করার ইচ্ছা করে, তখনই তার পোশাকের প্রতিটি হলকা চেপে যায়। সে প্রশস্ত করার চেষ্টা করলেও সেটা প্রশস্ত হয় না। এ কথা বলে তিনি নিজের আঙ্গুল দ্বারা কণ্ঠনালীর প্রতি ইশারা করলেন (অর্থাৎ দাতা ব্যাক্তি দান করার ইচ্ছা করলে তার অন্তর প্রশান্তি হয়, সে উদার হতে দান করতে পারে; কিন্তু কৃপণ দান করতে ইচ্ছা করলেই তার অন্তর সঙ্কুচিত হয়, তার হাত গুটিয়ে আসে, সে দান করতে পারে না।)
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৭ | 4917 | ٤۹۱۷
পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের বলব কি, আনসারদের মধ্যে সর্বোত্তম গোত্র কোনটি? তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ বলুন। তিনি বললেনঃ তারা বনূ নাজ্জার। এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী, বনূ আবদুল আশহাল, এরপর তাদের নিকটবর্তী যারা বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ। এরপর তাদের সন্নিকটে যারা বনূ সাঈদা। এরপর তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। হাতের আঙ্গুলগুলোকে সংকুচিত করে পূনরায় তা সাম্প্রসারিত করলেন। যেমন কেউ কিছু নিক্ষেপকালে করে থাকে। এরপর বলেনঃ আনসারদের প্রত্যেকটি গোত্রেই কল্যাণ নিহিত আছে।