হাদিস নম্বরঃ ৪৯১০ | 4910 | ٤۹۱۰
পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯১০। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) যে ঈলার কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন সে সস্বন্ধে বলতেন, সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে প্রত্যেকেরই উচিৎ হয় স্ত্রীর সৌজন্যর সাথে গ্রহণ করবে, না হয় তালাক দেওয়ার সিধান্ত নিবে, যেমনভাবে আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন।
ইসমাঈল আমাকে আরও বলেছেন, মালিক (রহঃ) নাফি এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, চার মাস অতীত হয়ে গেলে তালাক দেওয়া পর্যন্ত তাকে আটকিয়ে রাখ হবে। আর তালাক না দেওয়া পর্যন্ত তালাক প্রযোজ্য হবে না। উসমান, আলী, আবূ জারদা আয়িশা (রাঃ) এবং আরও বার জন সাহাবী থেকেও উক্ত মতামত উল্লেখ করা হয়।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১১ | 4911 | ٤۹۱۱
পরিচ্ছদঃ ২০৬১. নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবার ও তার সম্পদের বিধান। ইব্ন মুসাইয়্যাব (র) বলেন, যুদ্ধের ব্যূহ থেকে কোন ব্যক্তি নিখোঁজ হলে এক বছর অপেক্ষা করবে। ইব্ন মাসউদ (রা) একটি দাসী ক্রয় করে এক পর্যন্ত তার মালিককে খুঁজলেন (মূল পরিশোধ করার জন্য)। তিনি তাকে পেলেন না, সে নিখোঁজ হয়ে যায়। অবশেষে তিনি এক দিরহাম, দুই দিরহাম করে দান করতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ্ ! এটা অমুকের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। যদি মালিক এসে যায়, তবে এর সাওয়াব আমি পাব, আর তার টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব হবে আমার। তিনি বলেনঃ হারনো প্রাপ্তির ব্যাপারেও তোমরা এরূপ কাজ করবে। ইব্ন মাসউদ (রা)-ও এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। ঠিকানা জানা আছে এরূপ কয়েদী সমবন্ধে যুহ্রী (র) বলেনঃ তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবে না এবং তার সম্পদও বন্টন করা হবে না। তবে তার খবরাখবর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর ব্যাপারে নিখোঁজ ব্যক্তির বিধান কার্যকর হবে।
৪৯১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মুনবাইস এর আযাদ কৃত গোলাম ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বকরী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ওটাকে ধরে নাও। কেননা, ওটা হল তোমার জন্য, না হয় তোমার (অন্য) ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তাঁকে আবার হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেগে গেলেন এবং তার উভয় গণ্ডদেশ রক্তিম বর্ন ধারন করল। এরপর তিনি বললেনঃ ওকে নিয়ে তোমার ভাবনা কিসের? তার সাথে (চলার জন্য) পায়ের তলায় ক্ষুর ও (পানাহারের জন্য) পেটে মশক আছে। সে পানি পান করতে থাকবে এবং বৃক্ষ-লতা খেতে থাকবে আর এর মধ্যে মালিক তার সন্ধান লাভ করবে। তাকে লুকতা (হারানো প্রাপ্তি) সমন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাপ্ত বস্তুর থলে ও মাথার বন্ধনটা চিনে নাও এবং এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি এ শনাক্তকারী (মালিক) আসে, তবে ভালো কথা, অন্যথায় এটাকে তোমার মালের সাথে মিলিয়ে নাও।
সুফিয়ান বলেনঃ আমি রাবীআ ইবনু আবূ আবদুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়া কিছুই পাইনি। আমি বললামঃ হারান প্রানী সম্পর্কে মুনবাইস এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদের হাদীসটি কি যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। ইয়াহইয়া বলেন, রাবীআ বলতেনঃ হাদীসটি মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ-এর সূত্রে যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত। সুফিয়ান বললেনঃ আমি রাবীআর সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে আলোচনা করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯১২ | 4912 | ٤۹۱۲
পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
২০৬২. পরিচ্ছেদঃ যিহার। (আল্লাহ্ বলেছেনঃ) “আল্লাহ্ শুনতে পেয়েছেন সেই মহিলাটির কথা যে, তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক করে থাকে আর যে ব্যক্তি এতে সক্ষম হবে না, সে যেন “ষাটজন মিসকীনকে খাবার দেয়া” পর্যন্ত। (বুখারী (রহঃ) বলেনঃ) ইসমাঈল আমাকে বলেছেন, মালিক (রহঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইবন শিহাবকে গোলামের যিহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ আযাদ ব্যক্তির অনুরূপ। মালিক (রহঃ) বলেনঃ গোলাম ব্যক্তি দু’মাস রোযা রাখবে। হাসান বলেনঃ আযাদ মহিলা বা বাঁদীর সাথে আযাদ পুরুষ বা গোলামের যিহার একই রকম। ইকরামা বলেনঃ বাঁদীর সাথে যিহার করলে কিছু হবে না। যিহার তো কেবল আযাদ রমনীর সাথেই হতে পারে।