হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৭ | 4907 | ٤۹۰۷
পরিচ্ছদঃ ২০৫৮. মুশরিক নারী মুসলমান হলে তার বিবাহ ও ইদ্দত
৪৯০৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিষয়ে মুশরিকরা দুটি দলে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল হরবী মুশরিক, তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন এবং তারাও তার বিরাদ্ধে যুদ্ধ করত। অন্যদল ছিল চুক্তিবদ্ধ মুশরিক। তিনি তাদের সঙ্গে লড়তেন না এবং তারাও তার সাথে লড়ত না। হরবীদের কোন মহিলা যদি হিজরত করে (মুসলমানদের) কাছে চলে আসত! তাহলে সে ঋতুমতী হয়ে পূনরায় পবিত্র না-হওয়া পর্যন্ত তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতো না। পবিত্র হলে পরেই তার সাথে বিবাহ বৈধ হত। তবে যদি বিয়ের পূর্বেই তার স্বামী হিজরত করত তাহলে মহিলাকে তার কাছেই ফিরিয়ে দিতে হত। আর যদি তাদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করত তবে তারা মুক্ত হয়ে যেত এবং মুহাজিরদের সমান অধিকার লাভ করত।
এরপর বর্ননাকারী (আতা) চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের প্রসঙ্গে মুজাহিদের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। যদি চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করে আসত, তাহলে তাদেরকে পূনরায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো না। তবে তাদের মুল্য ফিরিয়ে দেওয়া হতো। আতা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উমাইয়্যার কন্যা কুরায়বা উমর ইবনু খাত্তাবের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান তাকে বিবাহ করেন। আর আবূ সুফিয়ানের কন্যা উম্মুল হাকাম ইয়ায ইবনু গানম ফিহরীর বিবাহে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে আবদুল্লাহ ইবনু উসমান সাকাফী (রাঃ) তাকে বিয়ে করেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৮ | 4908 | ٤۹۰۸
পরিচ্ছদঃ ২০৫৯. যিম্মি বা হরবীর কোন মুশরিক বা খৃস্টান স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে। ‘আবদুল ওয়ারি (র)…. ইব্ন ‘আববাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি কোন খৃস্টান নারী তার স্বামীর পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে উক্ত মহিলা তার জন্য হারাম হয়ে যায়। দাউদ (র) ইব্রাহীম সায়েগ (র) থেকে বর্ণনা করেন, আতা (র) কে জিজ্ঞাসা করা হল, চুক্তিবদ্ধ কোন হরবীর স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে এবং ইদ্দতের মধ্যেই তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে, তবে কি মহিলা তার স্ত্রী থাকবে ? তিনি উত্তর দিলেন, না তবে সে মহিলা যদি নতুনভাবে বিবাহ ও মোহ্রে সম্মত হয়। মুজাহিদ (র) বলেন, মহিলার ইদ্দতের মধ্যে স্বামী মুসলমান হলে সে তাকে বিবাহ করে নিবে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ না তারা কাফিরদের জন্য হালাল, আর না কাফিরেরা তাদের জন্য হালাল। অগ্নি উপাসক স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হলে কাতাদা ও হাসান তাদের সমবন্ধে বলেন, তাদের পূর্ব বিবাহ বলবৎ থাকবে। আর যদি তাদের কেউ আগে ইসলাম কবূল করে, আর অন্যজন অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তবে মহিলা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্বামীর জন্য তাকে গ্রহণ করার কোন পথই থাকবে না। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেন, আমি ‘আতা’ (র) কে জিজ্ঞসা করলামঃ মুশরিকদের কোন মহিলা যদি ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমানদের নিকট চলে আসে, তাহলে তার স্বামী কি তার নিকট থেকে বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে ? আল্লাহ্ তা’আলা তো বলেছেনঃ ‘‘তারা যা ব্যয় করেছে তোমরা তাদেরকে তা দিয়ে দাও।’’ তিনি উত্তর দিলেনঃ না। এ আদেশ কেবল নবী (সাঃ) ও জিম্মীদের মধ্যে ছিল। (মুশরিকদের বেলায় এটা প্রযোজ্য নয়)। মুজাহিদ (র) বলেনঃ এ সব ছিল সে সন্ধির ক্ষেত্রে যা নবী (সাঃ) ও কুরায়শদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
৪৯০৮। ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ‘উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বলেন, ঈমানদার মহিলারা যখন হিজরত করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসত, তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশ “হে ঈমানদারগণ! কোন ঈমানদার মহিলা হিজরত করে তোমাদের কাছে আসলে তোমরা তাদেরকে যাচাই কর” অনুসারে তাদেরকে যাচাই করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ ঈমানদার মহিলাদের মধ্যে যারা (আয়াতে উল্লেখিত) শর্তাবলী মেনে নিত, তারা পরীক্ষায় কৃতকার্য হত। তাই যখনই তারা এ ব্যাপারে মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রকাশ করত তখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলতেন যাও, আমি তোমাদের বায়’আর গ্রহণ করেছি। আল্লাহর কসম! কথার মাধ্যমে বায়’আত গ্রহণ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত কখনো কোন নারীর হাত স্পর্শ করেনি। আল্লাহর শপথ। তিনি শুধুমাত্র সেইসব বিষয়েই বায়’আত গ্রহণ করতেন, যে সব বিষয়ে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ্ তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। বায়’আত গ্রহণ শেষে তিনি বলতেনঃ আমি কথায় তোমাদের বায়’আত গ্রহণ করলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৯ | 4909 | ٤۹۰۹
পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯০৯। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর সহধর্মিনাদের থেকে ঈলা (কাছে না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা) করলেন। সে সময় তার পা মচকে গিয়েছিল। তিনি তার কামরার মাচানে উনত্রিশ দিন অবস্থান করেন। এরপর সেখান থেকে নেমে আসেন। লোকেরা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি তো এক মাসের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস উনত্রিশ দিনেরও হয়।