হাদীস নং ৪৮৯২
আসবাগ রহ……….জাবির রা. থেকে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল; তখন তিনি ছিলেন মসজিদে। সে বলল, সে ব্যভিচার করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিকে মুখ ফিরিয়েছিলেন, সেদিকে এসে উক্ত ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে বারবার (ব্যভিচারের) সাক্ষ্য দিল। তিনি লোকটিকে ডেকে বললেন, তুমি কি পাগল হয়েছ? তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঈদগাহে নিয়ে রজম করার নির্দেশ দিলেন। প্রস্তরাঘাত যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুলল, তখন সে পালিয়ে গেল। অবশেষে তাকে হাররা নামক স্থানে পাকড়াও করা হল এবং হত্যা করা হল।
হাদীস নং ৪৮৯৩
আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এল, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটিতাকে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হতভাগ্য ব্যভিচার করেছে। সে একথা দিয়ে নিজেকে বোঝাতে চাইল। রাসুলুল্লাহ ﷺ এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি যে দিক ফিরলেন সে সেদিকে গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! হতভাগ্য যিনা করেছে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর সেও সে দিকে গেল যে দিকে তিনি মুখ ফিরালেন এবং পুনরায় সে কথা বলল। তিনি চতুর্থবার মুখ ফিরিয়ে নিলে সেও সেদিকে গেল। যখন সে নিজের সম্পর্কে চারবার সাক্ষী দিল, তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? সে বলল, না। নাবী ﷺ বললেনঃ তাকে নিয়ে যাও এবং রজম কর। (পাথর মেরে হত্যা কর) লোকটি ছিল বিবাহিত। যুহরী (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেনঃ রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা মদিনার মুসল্লায় (ঈদগাহে) তাকে রজম করলাম। পাথর যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুললো, সে তখন পালিয়েগেল। হাররা নামক স্থানে আমরা তাকে ধরলাম এবং রজম করলাম। অবশেষে সে মারা গেল।
হাদীস নং ৪৮৯৪ – খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম
আযহার ইবনে জামীল রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, সাবিত ইবনে কায়েস এর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! চারিত্রিক বা ধর্মীয় বিষয়ে সাবিত ইবনে কায়েসের উপর আমি কোন দোষারূপ করছি না। তবে আমি ইসলামে থেকে কুফরী করা (অর্থাৎ স্বামীর সাথে অমিল) পছন্দ করছি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা উত্তর দিল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বাগানটি নিয়ে তাকে (মহিলাকে) তালাক দিয়ে দাও।
হাদীস নং ৪৮৯৫
ইসহাক ওয়াসিতী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উবায়ের ভগ্নী থেকেও উক্ত হাদীসটি বর্ণিত। তাতে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তুমি কি তায় বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা বলল: হ্যা। পরে সে বাগানটি ফেরত দিল, আর রাসুলুল্লাহ ﷺ , তাকে তালাক দেওয়ার জন্য তার স্বামীকে নির্দেশ দিলেন। ইবরাহীম ইবনু তাহমান খালিদ থেকে, তিনি ইকরামা থেকে তিনি নাবী ﷺ থেকে তাকে তালাক দাও কথাটিও বর্ননা করেছেন। অন্য বর্ননায় ইবনু আবূ তামীমা ইকরামা সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ সাবিত ইবনু কায়স- (রাঃ)-এর স্ত্রী রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ সাবিতের দ্বীনদারী ও চরিত্র সম্পর্কে আমি কোন দোষ দিচ্ছি না তবে আমি তার সাথে সংসার জীবন যাপন করতে পারছি না। রাসুলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? সে বললঃ হ্যা।
হাদীস নং ৪৮৯৬
মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক মুখাররেমী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ)-এর স্ত্রী নাবী ﷺ -এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি সাবিতের ধর্ম ও-চরিত্র সম্পর্কে কোন দোষ দিচ্ছি না। তষে আমি কুফরীর আশংকা করছি। রাসুসুল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি তার বাগানটি ফেরৎ দিতে প্রস্তুত আছ? সে বল (রহঃ) হ্যা। এরপর সে বাগানটি তাকে। (তার স্বামীকে) ফিরিয়ে দিল। আর রাসুলুল্লাহ ﷺ তার স্বামীকে নির্দেশ দিলে, সে মহিলাকে পৃথক করে দিল।
হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৭
পরিচ্ছদঃ ২০৫১. খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমরা নারীদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল হবে না ……. অত্যাচারী পর্যন্ত।’’ উমার (রা) কাযীর অনুমতি ছাড়া খুলা’কে বৈধ বলেছেন। ‘উসমান (রা) মাথার বেনী ছাড়া অন্য সব কিছুর পরিবর্তে খুলা’ করার অনুমতি দিয়েছেন। তাউস (র) বলেন, যদি তারা উভয় আল্লাহর সীমা ঠিক না রাখতে পারার আশংকা করে অর্থাৎ সংসার জীবনে তাদের প্রত্যেকের উপর যে দায়িত্ব আল্লাহ্ অর্পণ করেছেন সে ব্যপারে তিনি বোকাদের মাঝে একথা বলেননি যে, খুলা ততক্ষণ বৈধ হবে না, যতক্ষণ না মহিলা তাকে সহবাস থেকে বাধা দিবে।
৪৮৯৭। সুলায়মান (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জামীলা (সাবিতের স্ত্রী) এরপর উক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেন।