হাদীস নং ৪৮৮৭ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল, “তুমি আমার জন্য হারাম”।
মুহাম্মদ রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্য স্বামীকে বিবাহ করে। পরে সেও তাকে তালাক দেয়। তার লিঙ্গ ছিল কাপড়ের কিনারা সদৃশ। সুতরাং মহিলা তার থেকে নিজের মনস্কামনা সিদ্ধ করতে পারল না। দ্বিতীয় স্বামী অবিলম্বে তালাক দিলে সে (মহিলা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার স্বামী আমাকে তালাক দিলে আমি অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এরপর সে আমার সাথে সংগত হয়। কিন্তু তার সাথে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তাই সে একবারের অধিক আমার নিকটস্থ হল না এবং আপন মনস্কামনা সিদ্ধ করতে সক্ষম হল না। এরূপ অবস্থায় আমি আমার প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হব কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না দ্বিতীয় স্বামী তোমার কিছু স্বাদ উপভোগ করে আর তুমিও তার কিছু স্বাদ আস্বাদন কর।
হাদীস নং ৪৮৮৮ – (মহান আল্লাহর বাণী) : এমন বস্তুকে আপনি কেন হারাম করছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করে দিয়েছেন?
হাসান ইবনে সাব্বাহ রহ………..সাঈদ ইবনে যুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাস রা.-কে বলতে শুনেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হারাম ঘোষণা করে তবে তাতে কিছু (তালাক) হয় না। তিনি আরও বলেন : নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।
হাদীস নং ৪৮৮৯
হাসান ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সাব্বাহ রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট কিছু বিলম্ব করতে এবং সেখানে তিনি মধু পান করতেন। আমি ও হাফসা পরামর্শক্রমে ঠিক করলাম যে, আমাদের মধ্যে যার কাছেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করবেন, সেই যেন বলি- আমি আপনার থেকে মাগফীর-এর গন্ধ পাচ্ছি। আপনিকি মাগাফীর খেয়েছেন। এরপর তিনি তাদের একজনের নিকট প্রবেশ করলে তিনি তাকে অনুরূপ বললেন। তিনি বললেন, বরং আমি যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট মধু পান করেছি। আমি পুনঃ এ কাজ করব না। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় (মহান আল্লাহ বাণী): ‘হে নবী ! এমন বস্তুকে হারাম করছেন কেন, যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন……..যদি তোমরা উভয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা কর’ পর্যন্ত। এখানে আয়েশা ও হাফসা রা.-কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। আর আল্লাহর বাণী: যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের একজনকে গোপনে কিছু বলেছিলেন-বরং আমি মধু পান করেছি- এ কথার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়।
হাদীস নং ৪৮৯০
ফারওয়া ইবনে আবুল মাগরা রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু ও হালুয়া (মিষ্টি) পছন্দ করতেন। আসরের সালাত শেষে তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের নিকট যেতেন। এরপর তাদের একজনের ঘনিষ্ঠ হতেন। একদা তিনি হাফসা বিনতে উমরের কাছে গেলেন এবং অন্যান্য দিন অপেক্ষা বেশী সময় অতিবাহিত করলেন। এতে আমি ঈর্ষা করলাম। পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে অবগত হলাম যে, তাঁর (হাফসার) গোত্রের জনৈকা মহিলা তাকে এক পাত্র মধু হাদিয়া দিয়েছিল। তা থেকেই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কিছু পান করিয়েছেন। আমি বললাম : আল্লাহর কসম, আমরা এজন্য একটি ফন্দি আটব। এরপর আমি সাওদা বিনতে যামআকে বললাম তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তো এখনই তোমার কাছে আসছেন, তিনি তোমার নিকটবর্তী হলেই তুমি বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিন বললেন: হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। তুমি তখন বলবে, এর মৌমাছি মনে হয় উরফুত (এক জাতীয় গাছ) নামক বৃক্ষ থেকে মধু আহরণ করেছে। আমিও তাই বলব। সাফিয়্যা তুমিও তাই বলবে। আয়েশা রা. বলেন, সাওদা রা. বললেন, আল্লাহর কসম! তিনি দরজার নিকট আসতেই আমি তোমার ভয়ে তোমার আদিষ্ট কাজ পালনে প্রস্তুত হলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর নিকটবর্তী হলেন, তখন সাওদা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি বললেন, হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। সাওদা বললেন, এর মধু মক্ষিকা উরফুত নামক বৃক্ষের মধু আহরণ করেছে। এরপর তিনি ঘুরে যখন আমার এলেন, তখন আমিও অনুরূপ বললাম। তিনি সাফিয়্যার কাছে গেলে তিনিও এরূপ উক্তি করলেন। পরদিন যখন তিনি হাফসার কাছে গেলেন: তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে মধু পান করাব কি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর আমার কোন প্রয়োজন নেই। আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, সাওদা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তাকে বিরত রেখেছি। আমি তাকে বললাম, চুপ কর।
হাদীস নং ৪৮৯১ – বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় তালাক দেওয়া এবং এতদুভয়ের বিধান সম্বন্ধে।
মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে জাগ্রত ধারণা সমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে কার্যে পরিণত করে বা ব্যক্ত করে। কাতাদা রহ. বলেন, মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুই হবে না।