হাদীস নং ৪৮৮১ – যারা তিন তালাক কে জায়েয মনে করেন।
আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………সাহল ইবনে সাদ সাঈদী রা. থেকে বর্ণিত যে, উওয়াইমির আজলানী রা. আসেম ইবনে আদী আনসারী রা.-এর নিকট এসে তাকে বললেন, হে আসিম! যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন পুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায় তবে সে তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে কি তোমরা তাকে হত্যা করবে? (আর যদি হত্যা না করে) তবে সে কি করবে? হে আসিম! আমার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদকে অপছন্দনীয় এবং দূষণীয় মনে করলেন। এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি শুনে আসিম রা. ঘাবড়ে গেলেন। এরপর আসিম রা. স্বীয় গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির রা. এসে বললেন, হে আসিম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না তুমি কল্যাণকর কিছু নিয়ে আমার কাছে আসনি। তোমার জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না পছন্দ করেছেন। উওয়াইমির রা. বললেন, আল্লাহর কসম! (উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত) এ বিষয়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতেই থাকব। উওয়াইমির রা. এসে লোকদের মাঝে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ রাসূল ! যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায়, আর তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে আপনার কি তাকে হত্যা করবেন? আর যদি সে (স্বামী) হত্যা না করে, তবে কি করবে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তুমি গিয়ে তাকে (তোমার পত্নীকে) নিয়ে আস। সাহল রা. বলেন, এরপর তারা দু’জনে লিআন করল। আমি সে সময (অন্যান্য) লোকের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ছিলাম। উভয়ের লিআন করা হয়ে গেলে উওয়াইমির রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন যদি আমি তাকে (স্ত্রীত্বে) রাখি তবে এটা তার উপর মিথ্যা আরোপ করা হবে। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, পরবর্তীতে লিআনকারীদ্বয়ের পন্থা হল ঐ বিচ্ছিন্নতা।
হাদীস নং ৪৮৮২
সাঈদ ইবনে উফাইর রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রিফাআ কুরাযীর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! রিফাআ আমাকে পূর্ণ সম্পর্কচ্ছেদ তালাক (তিন তালাক) দিয়েছে। পরে আমি আবদুর রহমান ইবনে যুবাইর কুরাযীকে বিবাহ করি। কিন্তু তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছু নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সম্ভবত তুমি রিফাআর নিকট ফিরে যেতে ইচ্ছা করছ। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়, যতক্ষণ না সে তোমার স্বাদ গ্রহণ করে এবং তুমি তার স্বাদ গ্রহণ কর।
হাদীস নং ৪৮৮৩
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্যত্র বিবাহ করল। পরে দ্বিতীয় স্বামীও তাকে তালাক দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল: মহিলাটি কি প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে? তিনি বললেন, না। যতক্ষণ না সে (দ্বিতীয় স্বামী) তার স্বাদ গ্রহণ করবে, যেমন করেছিল প্রথম স্বামী।
হাদীস নং ৪৮৮৪ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দিল।
আবুল ইয়ামান রহ………নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বীয় স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদিষ্ট হলে প্রথমে তিনি আমার নিকট এসে বলেন, আমি তোমার নিকট এমন একটি বিষয় উল্লেখ করছি, সে সম্পর্কে তুমি আপন মাতা-পিতার সাথে পরামর্শ ব্যতীত তড়িঘড়ি করে কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। আয়েশা রা. বলেন, আর তিনি তো জানেন যে, আমার মাতা-পিতা আমাকে তাঁর থেকে বিচ্ছেদের আদেশ দিবেন না। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী ! আপনার সহধর্মিণীদেরকে বলুন –তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ চাও, তবে এস আমি তোমাদেরকে ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই……..। আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম, এই তুচ্ছ বিষয়ে আমাকে মাত-পিতার সাথে পরামর্শ করতে হবে? আমি তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকালের আবসই কামনা করছি। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য স্ত্রীও আমার ন্যায় উত্তর দিলেন।
হাদীস নং ৪৮৮৫
উমর ইবনে হাফস রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিলে আমরা ও তাঁর রাসূলকেই গ্রহণ করলাম। আর এতে আমাদের প্রতি তালাক সাব্যস্ত হয়নি।
হাদীস নং ৪৮৮৬
মুসাদ্দাদ রহ………..মাসরূক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা.-কে ইখতিয়ার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম (অর্থাৎ এতে তালাক হবে কিনা) তিনি উত্তর দিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন। তাহলে সেটা কি তালাক ছিল? মাসরূক বলেন, তবে সে (স্ত্রী) আমাকে গ্রহণ করার পর আমি তাকে একবার ইখতিয়ার দিই বা শতবার দিই-(তাতে কিছু মনে করব না)।