[বর্ণনাকারী সাহল (রাঃ) বলেন, তার অন্য কোন চাঁদর ছিল না] এর অর্ধেক তাকে দিয়ে দেব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমার এ তদবন্দ দ্বারা কি হবে? যদি তুমি পরিধান কর, তার ওপর কিছুই থাকবে না, আর যদি সে পরিধান করে তাহলে তোমার জন্যও কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি বসে পড়ল। দীর্ঘক্ষণ পরে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন এবং ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কুরআন কতটুকু জানা আছে? সে বলল, হ্যাঁ, আমার অমুক, অমুক, অমুক সূরা জানা আছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি এগুলো মুখস্থ পড়তে পার? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, যাও যে পরিমাণ কুরআন শরীফ মুখস্থ জানো, এর বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার সাথে শাদী করিয়ে দিলাম।
হাদিস নম্বরঃ ৪৭৫১ | 4751 | ٤۷۵۱
পরিচ্ছদঃ ২৪৬২. যারা বলে, ওলী বা অভিভাবক ব্যতীত শাদী শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ্ তা’আলার কালাম দলীল হিসাবে পেশ করেঃ ‘‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যখন স্ত্রীদের তালাক দাও তাদের নির্দিষ্ট ইদ্দত পূর্ণ করে তখন তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী স্বামীর সাথে বিবাহে বাধা দিও না‘‘-এ নির্দেশের আওতায় বয়স্কা বিবাহিতা মহিলারা যেমন, তদ্রম্নপ কুমারী মেয়েরাও এসে গেছে। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, ‘‘তোমরা মুশরিক মহিলাদেরকে কখনও বিবাহ করবে না, যতক্ষণ পর্যমত্ম তারা ঈমান না আনবে।’’ আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেন, ‘‘তোমাদের ভিতরে যারা অবিবাহিতা আছে তাদের শাদী দিয়ে দাও’’
৪৭৫১। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলায়মান ও আহমদ ইবনু সালিহ্ (রহঃ) … উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলছে অর্থাৎ কোন ব্যাক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করবে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হওয়ার পর এই কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যাক্তির কাছে যাও এবং তার সাথে যৌন মিলন কর। এরপর তার স্বামী নিজ স্ত্রী থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না, যতক্ষণ না সে অন্য ব্যাক্তির দ্বারা গর্ভবতী হত, যার সাথে স্ত্রীর যৌন মিলন হত। যখন তার গর্ভ সুস্পষ্টবাবে প্রকাশ হত তখন ইচ্ছা করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করত। এটা ছিল তার স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করতে পারে। এ ধরণের বিবাহকে ‘নিকাহুল ইস্তিবদা’ বলা হত।
তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কতিপয় ব্যাক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সাথে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর ফলে গর্ভবতী হত এবং কোন সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যাক্তিকে ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জানো- তোমরা কি করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি, সুতরাং হে অমুক! এটা তোমারই সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন এ ব্যাক্তি উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত।
চতুর্থ প্রকারের বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ একই মহিলার সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার কাছে যত পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-শায়ী করতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল বারবনিতা (পতিতা), যার চিহ্ন হিসাবে নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছা করলে অবাধে এদের সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হতে পারত। যদি এ সকল মহিলাদের মধ্য থেকে কেউ গর্ভবতী হত এবং কোন সন্তান প্রসব করত তাহলে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ্ পুরুষ এবং একজন ‘কাফাহ্’ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান) কে ডেকে আনা হত সে সন্তানটির যে লোকটি সাথে এ সা’দৃশ্য দেখতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি ঐ সন্তানকে নিজের হিসাবে অস্বীকার করতে পারত না। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি জাহেলী যুগের সমস্ত বিবাহ প্রথাকে বাতিল করে দিলেন এবং বর্তমানে প্রচলিত শাদী ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিলেন।
হাদিস নম্বরঃ ৪৭৫২ | 4752 | ٤۷۵۲
পরিচ্ছদঃ ২৪৬২. যারা বলে, ওলী বা অভিভাবক ব্যতীত শাদী শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ্ তা’আলার কালাম দলীল হিসাবে পেশ করেঃ ‘‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যখন স্ত্রীদের তালাক দাও তাদের নির্দিষ্ট ইদ্দত পূর্ণ করে তখন তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী স্বামীর সাথে বিবাহে বাধা দিও না‘‘-এ নির্দেশের আওতায় বয়স্কা বিবাহিতা মহিলারা যেমন, তদ্রম্নপ কুমারী মেয়েরাও এসে গেছে। মহান আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, ‘‘তোমরা মুশরিক মহিলাদেরকে কখনও বিবাহ করবে না, যতক্ষণ পর্যমত্ম তারা ঈমান না আনবে।’’ আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেন, ‘‘তোমাদের ভিতরে যারা অবিবাহিতা আছে তাদের শাদী দিয়ে দাও’’
৪৭৫২। ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এই আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এবং যা কিছু তোমার কাছে তিলাওয়াত করা হয় ইয়াতীম নারী সম্পর্কে তোমরা যাদের প্রাপ্য পরিশোধ কর না এবং যাদের তোমরা শাদী করতে আগ্রহী” তিনি বলেন, এই আয়াত হচ্ছে ঐ ইয়াতীম নারীদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকের আওতাধীন রয়েছে এবং তার ধন-সম্পদে সে শরীকানা রাখে কিন্তু তাকে শাদী করা পছন্দ করে না এবং তার সম্পদের জন্য অন্যের কাছে শাদী দিতে আগ্রহীও নয়, যাতে করে অন্য লোক এ সম্পত্তিতে তাদের সাথে অংশীদার হয়ে না বসে (উক্ত আয়াতে অভিভাবকদের এরূপ গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়ছে)।